Ajker Patrika

রাজনৈতিক পক্ষগুলোর বিবাদে জনপ্রত্যাশা পূরণ নিয়ে সংশয়

  • সংবিধানসহ রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কার কীভাবে হবে, তা নিয়ে তীব্র মতভেদ।
  • সরকারে থেকে নতুন দল গঠন নিয়ে হুঁশিয়ারি বিএনপির।
  • পরিস্থিতি সামাল দিতে সংসদ নির্বাচনের বিকল্প নেই, মত বিশেষজ্ঞদের।
সাহিদুল ইসলাম চৌধুরীরেজা করিম, ঢাকা 
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯: ৪৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে জনমনে কিছুটা স্বস্তি দেখা দেয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ধীরে হলেও দেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে, এমন আশাবাদের কথা শোনা যায়। এতে দেড় দশকের ভোটের খরা কাটবে এবং সরাসরি ভোটে নির্বাচিতদের নিয়ে নতুন সরকার গঠন হলে দেশের অবস্থা ভালো হবে—এমন আশায় বুক বাঁধে মানুষ। তবে সরকারের দুর্বলতা ও রাজনৈতিক পক্ষগুলোর বিবাদের মধ্যে সেই আশা কতটা পূরণ হবে, সে বিষয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন আছে।

শেখ হাসিনার সরকারের বিদায়ের পর থেকে সংবিধানসহ রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কার কীভাবে হবে, কারা করবে, সে বিষয়ে তীব্র মতভেদ প্রকাশ্যে আনছে রাজনৈতিক পক্ষগুলো। এই পক্ষগুলোর একটি জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগামী শুক্রবার একটি নতুন দল মাঠে আনছে। দলের প্রধান হতে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন সরকারের প্রভাবশালী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

সরকারে থেকে দল গঠনের বিষয়ে বরাবরই হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে এ মুহূর্তে ভোটের মাঠের বড় শক্তিগুলোর একটি বিএনপি। নাহিদ সরকার ছাড়ার পর দলটির অনেক নেতা বলছেন, এ পদত্যাগ যথেষ্ট নয়।

নাহিদ পদত্যাগের পর তাঁকে পাশে নিয়ে তোলা ছবি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ফেসবুক পোস্টের উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব লিখেছেন একদিন তিনি (নাহিদ) দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। প্রেস সচিবের এই কথা যদি প্রধান উপদেষ্টারও কথা হয়ে থাকে, তাহলে নাহিদের পদত্যাগ যথেষ্ট নয়। এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’

২৬ বছর বয়সের নাহিদকে অন্যতম তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক চিন্তাশক্তির অধিকারী অভিহিত করে শফিকুল আলম বলেন, তিনি আগামী কয়েক দশকে দেশের রাজনীতিতে বড় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, নাহিদ যে দলটির নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন, সেটির কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ‘পদত্যাগ করে’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে যাওয়ার পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে কোন নির্বাচন আগে হবে এবং ভবিষ্যতের আইনসভার সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হবেন, সে বিষয়ে মতভেদ দেখা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক কমিটি (জানাক) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈছাআ) মধ্যে। বিএনপি কিছু সংস্কার করে সরাসরি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেতে বলছে সরকারকে। অন্য তিন সংগঠন বলছে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য শেখ হাসিনার বিচার, তারপর গণপরিষদ নির্বাচন ও ভোটের আনুপাতিক হারে পরবর্তী আইনসভা গঠন করে সেখানে সংবিধান বদলানোর কথা।

ভোটের আগে আগে ঢাকাসহ সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় রয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও এর সমমনা সংগঠনগুলো। খুলনার কুয়েটসহ কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে তাদের মধ্যে।

রাজনৈতিক শক্তিগুলোর বিবাদে জড়ানো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বড় কারণ, এমনটা মনে করছেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও। দেশে ‘অরাজক পরিস্থিতি’ বিরাজ করছে, এমনটা উল্লেখ করে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গতকাল বলেন, ‘আমরা নিজেরা হানাহানির মধ্যে ব্যস্ত। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গারে ব্যস্ত। এটা একটা চমৎকার সুযোগ অপরাধীদের জন্য।’ সবাইকে সতর্ক করে গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ না করতে পারেন, নিজেরা যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, মারামারি কাটাকাটি করেন, এই দেশ এবং জাতির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে।’

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শাসনকাঠামোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা দুর্বল হওয়াতে সবাই যার যার আকাঙ্ক্ষা মেটানোর জন্য নেমে পড়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, শাসনব্যবস্থার যে স্তম্ভগুলো, তার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। অনেক অপরাধীকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক অস্ত্র বেহাত হয়ে গেছে; সেগুলো আর ফিরিয়ে আনা যায়নি। এমন ব্যর্থতায় পরিস্থিতির অবনতি হওয়ারই কথা।

পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ দায়িত্ব দেওয়া ছিল, এমনটা উল্লেখ করে সাব্বীর আহমেদ বলেন, ‘তাঁরা কী করলেন? কতটা করলেন? যদি না করে থাকেন, কেন করলেন না, এমন প্রশ্ন তো জনমনে আছে।’

সরকারে থেকে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে সাব্বীর আহমেদ বলেন, সরকারে থেকে দল গঠন করা নতুন কিছু নয়। যাঁরা অভিযোগটি করেছেন, তাঁদের দল কীভাবে এসেছে, সেটা তাঁরা নিজেরা খুঁজে দেখতে পারেন।

দল কীভাবে গঠন হলো, সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, এমন মন্তব্য করে অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ বলেন, কী উদ্দেশ্যে দলটি করা হচ্ছে, দলটির নেতাদের কথা ও কাজে মিল আছে কি না, এটা গুরুত্বপূর্ণ। কথা আর কাজে মিল না থাকায় অনেক দল হারিয়ে গেছে।

নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দেশ সংকটে থাকার ঝুঁকি আছে, এমনটা মনে করেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। তিনি বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

সব বড় দলকে এ নির্বাচনে আসার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন, এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো বড় দলকে স্বাভাবিক রাজনৈতিক অবস্থা থেকে দূরে ঠেলে দিলে তারা ভিন্ন পথ খুঁজবে। এটা ঠিক হবে না।

গত ৫ আগস্টের পরিবর্তন যে আশাবাদ জাগিয়েছিল, রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনেরা সতর্ক না হলে তার (আশাবাদ) বাস্তবায়ন মরীচিকায় পরিণত হওয়ার ঝুঁকি আছে, এমন হুঁশিয়ারিও জানিয়ে রাখলেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।

অন্যদিকে, প্রতিবেশী ভারতসহ আশপাশের দেশগুলো এবং পশ্চিমা বিভিন্ন শক্তি বাংলাদেশের ওপর নজর রাখছে, এমনটা মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির।

‘পরিস্থিতি স্বস্তিকর মনে হচ্ছে না’, এমনটা উল্লেখ করে গতকাল আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘অপরাধ বাড়তে থাকলে বাইরের শক্তি যারা আছে, তাদের হাত দেওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। দেশের ভেতরেও তাদের লোক আছে।’

মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের প্রতি শুরু থেকেই মানুষের সমর্থন আছে, এটা উল্লেখ করে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মানুষ আশা করে যে তিনি নেতৃত্ব দেবেন। প্রশ্ন হচ্ছে তিনি কি (নেতৃত্ব) দিচ্ছেন না, নাকি দিতে চাচ্ছেন না।’

স্থানীয় রাজনীতিতে ধর্মীয় উগ্রবাদের প্রভাব বাড়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নজর আছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনীতিক বলেন, মিসর ও তিউনিসিয়ায় ডানপন্থীদের উত্থানে ভালো কিছু হয়নি। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অন্তর্বর্তী সরকারকে মোদির ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে বিবৃতি জারি করতে হবে: আখতার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪১
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। একই সঙ্গে অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়িত্ব নিয়ে মোদির ‘ইতিহাস বিকৃতি’র বিরুদ্ধে বিবৃতি জারির আহ্বান জানিয়েছেন এই নেতা।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা’ শেষে সমাবেশে আখতার হোসেন এসব কথা বলেন।

সমাবেশে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, ১৬ ডিসেম্বরকে নরেন্দ্র মোদি ভারতের বিজয় দিবস হিসেবে উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে, বাংলাদেশের জনযুদ্ধকে, বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রামকে ভারতের বিজয় হিসেবে দেখানোর মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদি দৃশ্যত ইতিহাস বিকৃতি করেছেন। বাংলাদেশের জন্মের সাথে লেগে থাকা ইতিহাসকে বিকৃতির দায়ে নরেন্দ্র মোদিকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে আখতার বলেন, ‘এটা কোনো ছেলেখেলা নয়। বাংলাদেশের বিজয়কে ভারতের বিজয় দেখিয়ে ইতিহাস বিকৃতি করার ছেলেখেলাকে প্রশ্রয় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়িত্ব নিয়ে মোদির ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে বিবৃতি জারি করতে হবে।’

সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এবারের নির্বাচন সংস্কারের নির্বাচন। আপনারা সংস্কারের পক্ষে থাকবেন, বাংলাদেশের পক্ষে থাকবেন।’

এদিন বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে ‘আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা’ শুরু হয়। কাঁটাবন মোড়, নীলক্ষেত মোড় ও পলাশীর মোড় হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় এ পদযাত্রা। এতে দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

এ সময় তাঁরা বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। ‘গণভোটে হ্যাঁ বলি, সংস্কারের সাথে চলি’, ‘মুক্তির মূল সনদ গণভোট-গণভোট’, ‘এক হাদির কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’সহ নানা স্লোগান দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভক্ত করা যাবে না: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩০
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভক্ত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা’ শেষে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের নামে যেমন দেশকে বিভাজন করা যাবে না, ইসলামের নামেও দেশকে বিভাজন করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ এবং ইসলামকে মুখোমুখি দাঁড় করার যে রাজনীতি গত ৫৪ বছর হয়েছে, সে রাজনীতি থেকে আমরা বের হয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব। ইসলাম আমার, মুক্তিযুদ্ধ আমার, জুলাইও আমার। যারা এগুলোকে বিভক্ত করতে চায়, তারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়।’

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নের সুরাহা হয়নি বলে উল্লেখ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখনো আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নের সুরাহা করতে পারিনি। ৫৪ বছর পর এসেও আমরা দেখি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং বিপক্ষের রাজনীতি। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা ভেবেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এবং বিপক্ষের বিভাজনের রাজনীতির সুরাহা হবে। সে রাজনীতি বাংলাদেশ থেকে দূর হবে। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি, ৫ আগস্টের পর সে রাজনীতি আবারও ফিরে এসেছে। যে রাজনীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এবং মুজিববাদী বামপন্থীরা বাংলাদেশকে সব সময় বিভাজিত করে রেখেছিল, বাংলাদেশে সব সময় একটা ফ্যাসিবাদ কায়েম করে রেখেছিল।’

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এনসিপির অবস্থান এবং বক্তব্য খুবই পরিষ্কার বলে জানান নাহিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তি। আমরা মনে করি, ১৯৪৭ এবং তার পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশের মানুষ আজাদির জন্য উপনিবেশবাদবিরোধী যে লড়াই শুরু করছিল, তার অন্যতম পরিণতি হচ্ছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম। এই স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন ভূখণ্ড পেয়েছিলাম; কিন্তু আমরা সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি অর্জন করতে পারিনি। আমাদের পাশের রাষ্ট্র বারবার এখানে তাঁবেদারি রাষ্ট্র, তাঁবেদারি দেশ কায়েম করতে চেয়েছে।’

সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এবারের নির্বাচন সংস্কারের নির্বাচন। আপনারা সংস্কারের পক্ষে থাকবেন, বাংলাদেশের পক্ষে থাকবেন।

এদিন বিকেল ৪টায় রাজধানীর বাংলামোটর এলাকা থেকে ‘আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা’ শুরু হয়। কাঁটাবন মোড়, নীলক্ষেত মোড় ও পলাশীর মোড় হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় এই পদযাত্রা। এতে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

এ সময় তাঁরা বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা-সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। ‘গণভোটে হ্যাঁ বলি, সংস্কারের সাথে চলি’, ‘মুক্তির মূল সনদ গণভোট-গণভোট’, ‘এক হাদির কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’সহ নানা স্লোগান দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর পরও স্বাধীনতাযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয়নি: ব্যারিস্টার ফুয়াদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩১
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর পরেও স্বাধীনতাযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরের বিজয় চত্বরে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এবি পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের একের পর এক লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। স্বাধীনতাযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন আমরা আজও পাইনি।’

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ আরও বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন, সেটিও বাস্তবায়িত হয়নি বলেই আজ আমাদের আবার লড়াই করতে হচ্ছে। সেই কারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে জেল-জুলুম সহ্য করতে হয়েছে, ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ হতে হয়েছে এবং তারেক রহমানকে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হচ্ছে।’

নির্বাচনের আগে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে উল্লেখ করে ফুয়াদ বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সিরিয়াস উদ্যোগ আমরা দেখছি না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত হতাশাজনক।’

ফুয়াদ বলেন, আগামী নির্বাচনে ফ্যাসিবাদী শক্তি নির্বাচনকে ভন্ডুল করার ষড়যন্ত্র করছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা প্রমাণ করে যে তারেক রহমানসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখনো হুমকির মুখে রয়েছেন।

এবি পার্টির নেতা আরও বলেন, ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অন্যথায় দেশের পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠবে।

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইন, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সেলিম খান, মহানগর দক্ষিণের সদস্যসচিব বারকাজ নাসির আহমদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির আরেকটি অপারেশন প্রয়োজন, কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতি নেই: ইনকিলাব মঞ্চ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় আততায়ীর গুলিতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির আরেকটি অপারেশন প্রয়োজন হলেও শারীরিক পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এতথ্য জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এরপর হাদির অবস্থার কিছুটা অবনতি হলেও এখন স্থিতিশীল রয়েছে।

ইনকিলাব মঞ্চ আরো জানায়, শরিফ ওসমান হাদির ‘আরেকটি অপারেশনের প্রয়োজন তবে সেটি করার মতো শারীরিক পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি।

ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল সোমবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা।

প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়; পরে সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে।

এই ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানায় করা মামলার তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিবির মতিঝিল বিভাগ।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম গতকাল বলেন, এখন পর্যন্ত এই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন ভারতীয় নারী, গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারে গিয়ে আটক

বগুড়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

পাকিস্তানি বলে গুঞ্জন—বন্ডাই বিচের হামলাকারীরা আসলে ভারতীয়

ফয়সালের সঙ্গে ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গেছি, এতটুকুই—আদালতে কবির

রেকর্ড ৯ কোটি ২০ লাখ রুপিতে মোস্তাফিজকে নিল কলকাতা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত