Ajker Patrika

‘শান্তির ঘরে হারা জীবন নামাজ পড়ে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করুম’

তানিম আহমেদ, শ্রীপুর (গাজীপুর) থেকে
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৩, ০৯: ৫৯
‘শান্তির ঘরে হারা জীবন নামাজ পড়ে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করুম’

৭০ বছর বয়সী হাসনা বেগম। নিজের কিংবা স্বামীর ভিটেমাটি না থাকায় জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়ে দিয়েছেন ভাড়া কিংবা অন্যের জায়গায় ঘর করে। জীবনসায়াহ্নে এসে পেয়েছেন নিজের নামে স্থায়ী ঠিকানা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে তাঁর চোখে আনন্দাশ্রু।

তিনি বলেন, ‘সুন্দর ঘর, শান্তির ঘর। এই ঘর জীবনে দিতে আরলাম না। মাঁইয়া শেখ হাসিনা মুন্ত্রী এই ঘর দিছে। মাঁইয়ারে আল্লা ভালো রাখুক।’ হাসনা বেগম বলেন, ‘শেখ হাসিনা শান্তির ঘর করে দিয়েছেন, হারা জীবন নামাজ পড়ে শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করুম।’

হাসনা বেগমের মতো ১৪২টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে পেয়েছেন মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন দেশের একটি মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। তাঁর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে তিন পর্যায়ে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ২ শতক জমিসহ একটি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। চতুর্থ পর্যায়ে আজ বুধবার আরও ৩৯ হাজার ৩৬৫টি পরিবারের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হবে। চতুর্থ পর্যায়ে ঘর নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাঁও ইউপির নওয়াগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং বরিশালের বানারীপাড়া পৌরসভার উত্তরপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে চতুর্থ পর্যায়ের প্রথম ধাপের ঘর হস্তান্তর করবেন। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে আরও ২২ হাজার ৬টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।

নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৮ একর সরকারি খাসজমির ওপর দুটি কক্ষ, রান্নাঘর ও টয়লেটের ব্যবস্থা রেখে ১৪২টি পরিবারকে সন্তানসন্ততি নিয়ে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে মসজিদ, প্রাথমিক স্কুল ও কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুকুর খনন করে দেওয়া হয়েছে সেখানে বসবাস করা অসহায় মানুষের জন্য। প্রতি ১০টি পরিবারের পানির জন্য একটি মোটরের ব্যবস্থাও রয়েছে। প্রত্যেক পরিবারের জন্য একটি ট্যাংক দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের আওতাধীন ওই ঘরগুলোতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোকে ঘর-জমিসহ এত সুবিধা দেওয়া হলেও এক টাকা খরচ করতে হয়নি অসহায় পরিবারগুলোকে।

নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পকে মডেল আশ্রয়ণ প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় সংসদ ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ। আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের জন্য শুধু ঘর নয়, স্কুল, মসজিদ, ছোট কমিউনিটি সেন্টার এবং খেলার মাঠ করে দেওয়া হয়েছে। তাই এটিকে কমপ্লেক্সও বলা চলে। ঈদের পূর্বে তাদের জন্য ঈদের আনন্দ।’

সুবিধাবঞ্চিত এসব অসহায় মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এই উপহার তাদের ভেতরে নতুন স্বপ্ন বোনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। খোলা আকাশের নিচে থাকা, বৃষ্টিতে ভেঁজা ও রোদে পোড়া গৃহহীন মানুষগুলোর স্বপ্নও পুড়ে অঙ্গার হতে থাকে, নিঃশেষ হতে থাকে। শেখ হাসিনার উপহারের ঘর সেই মানুষগুলোর নিঃশেষ হওয়া স্বপ্ন ফের ফিরিয়ে এনেছে। মাথার ওপর ছাদ সেই সব মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে শুরু করেছে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর পেয়ে তাঁরা পেয়েছেন মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠিকানাসেখানে কথা হয় বৃদ্ধ নাগর আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, বাপ-দাদার সম্পত্তি না থাকায় বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে তিনি মানুষের বাড়িতেই ছিলেন। কখনোই কল্পনাও করেননি নিজের জমিতে ঘর তুলবেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর অকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন।

নাগর বলেন, ‘এ রকম একটা ঘরে যে শুইয়া মরমু কল্পনা করি নাই। আল্লাহপাক আমারে এই ঘরে শোয়াইছে। এই জন্য শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি।’ 

হাসিমাখা মুখে ৬০ বছর বয়সের জামিলা খাতুন বলেন, ‘মানুষের গোয়ালঘর, রান্নাঘরে থেকেছি। সারের বস্তার কাগজের ছাউনি দিয়ে কোনোভাবে মাথা গুঁজেছি।’ নয়াপাড়ার পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জামিলা বলেন, ‘একসময় বাপের সম্পদ ছিল। যুদ্ধের সময় বাবা মোকসেদ আলী মারা যায়। এরপর চাচারা জমি দখল করে উচ্ছেদ করে দিয়েছে আমাদের তিন বোনকে। ঘরের সামনে টয়লেট বসিয়েছে। অপর দুই বোন আমেনা ও জাহিরা একেবারেই অসহায়, কেউ নেই আমাদের। চেয়ারম্যান-মেম্বার কেউ কিছু দেয় নাই আমাদের। শেখ হাসিনা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তিনটা ঘর পেয়েছি আমরা। মাথা গোঁজার জন্য ঘর পেয়েছি, আর কিছুই চাই না।’

৭০ বছর বয়সের দুধজান বলেন, ‘বাবা-মা যেটা দিয়ে যেতে পারেননি। শেখ হাসিনা সেটা দিয়েছেন। ঘরে উঠে কী যে ভালো লেগেছে, তা বোঝানো যাবে না। ঘরে উঠে শুধু কাঁদছি, শুকরিয়া আদায় করছি। এ কান্না আনন্দের, সুখের।’

গত জুলাই মাসে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ তিনি মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, রাজশাহী, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ও চুয়াডাঙ্গার সব উপজেলাসহ ১৫৯টি উপজেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন। এর মাধ্যমে দেশের ৯টি জেলার সব উপজেলাসহ ২১১টি উপজেলায় কোনো ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না বলে জানিয়েছে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমানের পদত্যাগ

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৪
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।

তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।

গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা চলছে, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৩৪
খালেদা জিয়ার জানাজার আনুষ্ঠানিকতা চলছে, সংসদ ভবন এলাকা লোকারণ্য
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত