Ajker Patrika

কোটাবিরোধী আন্দোলন: ক্যাম্পাসে ধর্মঘট, দেশজুড়ে অবরোধ আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯: ১০
কোটাবিরোধী আন্দোলন: ক্যাম্পাসে ধর্মঘট, দেশজুড়ে অবরোধ আজ

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে জোর আন্দোলন করে যাচ্ছেন দেশের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনে অঘোষিতভাবে কয়েক দিনের মতো গতকাল শনিবারও রাজধানীসহ দেশের প্রধান প্রধান মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা।

তাতেই সারা দেশে সড়ক যোগাযোগ বেহাল। এতেও কাজ না হওয়ায় আজ রোববার তাঁরা ঘোষণা দিয়ে মহাসড়ক অবরোধে নামছেন। আর রাজধানীতে তাঁরা কর্মসূচি দিয়েছেন ‘বাংলা ব্লকড’। দাবি আদায়ে প্রয়োজনে হরতাল কর্মসূচিরও হুমকি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

এত আন্দোলনের পরও কোটার বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আর এই আন্দোলনকে ‘ন্যায্য’ ও ‘যৌক্তিক’ উল্লেখ করে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি।

অন্যদিকে, আন্দোলনে অংশ নিতে গতকালও শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা। রাজধানীর শাহবাগে গতকাল বিকেলে অবরোধ শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কাল (আজ) বেলা তিনটা থেকে বাংলা ব্লকড কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, ঢাকা শহরের সায়েন্স ল্যাব, চানখাঁরপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিলসহ প্রতিটি পয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নেমে এসে কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করবেন।’

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে সড়কে নেমে এসেছেন দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন জায়গায় তাঁরা সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল দুপুরে টাঙ্গাইল সদরে নগর জলপাই এলাকায়দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত থাকবে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকেরা ক্লাসে ফিরে গেলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে ফিরে যাব না।’

এর আগে গতকাল বেলা আড়াইটার পর থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা আসতে থাকেন। অন্যদিকে মধুর ক্যানটিনে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। গ্রন্থাগারের সামনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আন্দোলনে অংশ না নিতে এদিনও বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা শিক্ষার্থীদের বাধা দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাস্টারদা সূর্য সেন হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, সূর্য সেনসহ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বিজয় একাত্তর হল, অমর একুশে হল, স্যার এ এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আন্দোলনে যোগ দিতে বাধা দিয়েছেন।

তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের কারণে নয়, নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁরা মধুর ক্যানটিনে জড়ো হয়েছেন।

বেলা সোয়া তিনটার দিকে গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের বিভিন্ন হল, ভিসি চত্বর, টিএসসি, বকশীবাজার, বুয়েট, পলাশী, আজিমপুর, ইডেন কলেজ, হোম ইকোনমিকস কলেজ, নীলক্ষেত মোড় ঘুরে পুনরায় রাজু ভাস্কর্য হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় শাহবাগে অবস্থান নেয়।

শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নেওয়ার আগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান করছিল। তবে তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়নি। শাহবাগ অবরোধের ফলে চারপাশের সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়। এক ঘণ্টা অবরোধ শেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।

আর বেলা তিনটার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে তাঁরা রায়সাহেব বাজার পৌঁছালে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। পরে তাঁতীবাজার মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন। আড়াই ঘণ্টা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধের ফলে সদরঘাট, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। 

সারা দেশে মহাসড়ক অবরোধ
গত পাঁচ দিনের মতো গতকালও রাজধানীর বাইরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বিক্ষোভ শেষে পার্শ্ববর্তী সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে বিভিন্ন মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। কিছু সময়ের জন্য রাজধানীর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের নগরজলপাই বাইপাস অবরোধ করেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলাসহ ২৪ জেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ সময় মহাসড়কে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।

অন্যদিকে, দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সাড়ে ১১টার দিকে ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে কোটা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

চট্টগ্রামে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে নগরীর ২ নং গেট এলাকার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বেলা সাড়ে তিনটা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের রাস্তার দুই পাশ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

উত্তরবঙ্গের মতো শিক্ষার্থীদের অবরোধের ফলে সড়ক যোগাযোগ কিছু সময়ের জন্য স্থবির হয়ে পড়েছিল দক্ষিণাঞ্চলের একাধিক জেলাতেও। বেলা ১১টার কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে বিকেল ৫টায় খুলনা মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে অবস্থান নেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ খুলনার সরকারি-বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে পুরো খুলনা শহরের যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে যায়। 

সরকার ও বিএনপির অবস্থান
আন্দোলনের এমন প্রেক্ষাপটে বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়েছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। কোটার বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অন্যদিকে আন্দোলনকে যৌক্তিক উল্লেখ করে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

গতকাল রাজধানীর বেইলি রোডে এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির কাজই হচ্ছে অন্যদের ইস্যুর ওপর ভর করা। এখন শিক্ষকদের আন্দোলনের ওপর ভর করবে। আবার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটা তো (কোটা) কোর্টের রায়ের ব্যাপার। আমরা তো কোথাও এই কোটা রাখিনি। আমাদের ব্যবস্থা ছিল কোটামুক্ত। আদালতে কারা মামলা করেছে? আদালতের রায়। সেখানে আমাদের কী বলার আছে? সরকারের কী দোষ?

তবে কোটা সংস্কার আন্দোলন ‘ন্যায্য’ ও ‘যৌক্তিক’ উল্লেখ করে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ, অনির্বাচিত, কর্তৃত্ববাদী সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে, অর্থাৎ আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে জনগণের ন্যায্য দাবিগুলো দমিয়ে রাখার ঘৃণ্য পুরোনো কৌশলেই ছাত্রসমাজের ন্যায্য আন্দোলনকে দমানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।’ 

সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা ছিল। এই কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় ছাত্র আন্দোলন হয়। সেই আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ৪ অক্টোবর সব ধরনের কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর ফলে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল হয়ে যায়।

তবে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। ফলে কোটা বহাল হয়ে যায়।

এতে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা। কোটা বাতিলের দাবিতে আবার রাস্তায় নামেন তাঁরা। ঈদুল আজহার আগে কয়েক দিন বিক্ষোভের পর দাবি মানতে সরকারকে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দেন আন্দোলনকারীরা। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ১ জুলাই থেকে জোর আন্দোলন শুরু করেছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে নোয়াবের শোক

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন, নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি এ. কে. আজাদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংগ্রাম সকল গোষ্ঠী ও মতের ঊর্ধ্বে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার ও দলের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবারও বাড়ল পোস্টাল ভোটের নিবন্ধনের সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আবারও বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, পোস্টাল ভোটের নিবন্ধনের সময়সীমা শেষবারের মতো বাড়িয়ে ৫ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইসি জানায়, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা ১০ লাখ ৫১ হাজার ছাড়িয়েছে।

এর আগে, গত ২৪ ডিসেম্বর ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময়সীমা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল। এটা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর একদিন আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। তিনি যে তিনটি আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন, সেগুলোতে নতুন করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল সোমবার ছিল নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার পক্ষে বগুড়া–৭, দিনাজপুর–৩ ও ফেনী–১ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। এই তিন আসনেই বিএনপির পক্ষ থেকে একজন করে ‘বিকল্প প্রার্থী’ রাখা হয়েছে, যারা নির্দিষ্ট সময়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খালেদা জিয়া শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই প্রয়াণের পর প্রশ্ন উঠেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী ওই তিন আসনে নতুন করে নির্বাচনের সময়সূচি বা তফসিল ঘোষণা করতে হবে কিনা।

জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে বলা আছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি এমন কোনো ‘বৈধভাবে মনোনীত’ প্রার্থীর মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট আসনে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করতে হয়। তবে বর্তমান ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন বলে মনে করছে ইসি।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবদুর রহমানেল মাছউদ গণমাধ্যমকে জানান, মনোনয়নপত্র জমা দিলেই কেউ বৈধ প্রার্থী হয়ে যান না। বাছাই প্রক্রিয়ায় টিকে যাওয়ার পর চূড়ান্তভাবে প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃত হন। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে, ফলে আইনিভাবে তিনি এখনো ‘বৈধ প্রার্থী’ হিসেবে বিবেচিত হননি। তাঁর মৃত্যুর কারণে সংশ্লিষ্ট তিন আসনে মনোনয়নপত্রটি স্থগিত থাকবে।

ইসি কমিশনার আরও উল্লেখ করেন, যেহেতু ওই তিনটি আসনেই বিএনপির বিকল্প প্রার্থী রয়েছে, তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। প্রতীক বরাদ্দের আগে দল থেকে যাঁর নামে চিঠি দেওয়া হবে, তিনিই দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হবেন।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনী তফসিলে কোনো পরিবর্তন আনার সুযোগ বা প্রয়োজন নেই। পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ওই আসনগুলোতে বাছাই এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির বিকল্প প্রার্থীরাই এখন ওই আসনগুলোতে দলের হাল ধরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে শেখ হাসিনার দায় আছে: আসিফ নজরুল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৬
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা প্রহসনমূলক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ব্যক্তিগতভাবে তিনি করেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের দায় রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘উনাকে একটা প্রহসনমূলক রায়ে জেলখানায় পাঠিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়াকে যে মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে, এটা যে প্রহসনের একটা রায় ছিল, এটা যে একটা সম্পূর্ণ সাজানো রায় ছিল, এটা আমাদের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল ও রিভিউয়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিলেট ডিভিশনের রায়ের মধ্যে বারবার বলা হয়েছে যে, বেগম জিয়াকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, এটা সম্পূর্ণ রংলি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জিঘাংসাপ্রসূতভাবে উনাকে সাজা দেওয়া হয়েছে।’

আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘উনাকে জেলখানায় বিভিন্ন সময় যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, উনাকে আমরা হয়তো এত তাড়াতাড়ি হারাতাম না, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বেগম জিয়ার এই মৃত্যুর পেছনে ফ্যাসিস্ট যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা এবং উনার যে সরকার আছে, অবশ্যই তাঁর দায় রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত