Ajker Patrika

জামায়াত ৭০ অনুচ্ছেদ রাখার পক্ষে, বিএনপি চায় সংস্কার

  • মুক্তিযুদ্ধ মেনে নিয়েই জুলাই অভ্যুত্থানের স্বীকৃতির প্রস্তাব জামায়াতের।
  • প্রায় সব দলই দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের সুপারিশ করেছে কমিশনে।
  • সংবিধান পুনর্লিখনের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও এবি পার্টি।
তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪: ৪৫
জামায়াত ৭০ অনুচ্ছেদ রাখার পক্ষে, বিএনপি চায় সংস্কার

বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম বিতর্কিত অংশ ৭০ অনুচ্ছেদ। এই অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ সদস্যরা (এমপি) দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারেন না। ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে সংবিধান থেকে এই অনুচ্ছেদের বিলোপ চায় অনেক রাজনৈতিক দল। বিএনপিসহ কিছু দল চায় ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার বা সংশোধন, যাতে অর্থবিল ও অনাস্থা ভোট ছাড়া বাকি সব বিষয়ে এমপিরা দলে বিপক্ষে কথা বলতে পারেন। তবে এখনই ৭০ অনুচ্ছেদে হাত দেওয়ার পক্ষে নয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া প্রস্তাব পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

অধ্যাপক আলী রিয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশনে মোট ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট সংস্কার নিয়ে লিখিত প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। এর মধ্যে বেশির ভাগ দলই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল বা সংস্কার চেয়েছে। তবে একমাত্র ব্যতিক্রম জামায়াতে ইসলামী। দলটি তাদের প্রস্তাবে অনুচ্ছেদ ৬৭ ও ৭০ নিয়ে বলেছে—‘ফ্লোর ক্রসিং বর্তমানে বন্ধ করা উচিত নয়। এটি সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা স্থিতিশীল করতে যুক্ত করা হয়েছিল। আমরা এটি আরও দুই মেয়াদ পর্যন্ত রাখতে চাই।...যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার হয়, তাহলে এমপিদের বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে, তখন অনুচ্ছেদ ৭০ পুনর্বিবেচনা করা যাবে।’

বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিলে সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। এই বিধানের পরিবর্তন চেয়েছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। এমপিরা অর্থবিল ছাড়া সবক্ষেত্রে দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবে—এমন সুপারিশ হয় কমিশনের প্রস্তাবে।

কমিশনের এই সুপারিশের সঙ্গে অনেকটি মিল আছে বিএনপির প্রস্তাবের।

কমিশনকে দেওয়া বিএনপি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সংসদকে অধিকতর কার্যকর করার লক্ষ্যে ফ্লোর ক্রসিং সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা যাইতে পারে। তবে আস্থা ভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা জড়িত প্রশ্নে দলের বিপক্ষে এমপিরা ভোট দিতে পারবে না বলেও দলটির প্রস্তাবে বলা হয়।

অন্যদিকে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে সংযুক্ত শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ও ২৫ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণার বিধানটি বাতিলের প্রস্তাব করেছে বিএনপি।

এ ছাড়া অন্য দলগুলোর মধ্যে ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার বা সংশোধন চেয়েছে জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, ভাসানি অনুসারী পরিষদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাসদ ও বাংলাদেশ জাসদ। তবে ৭০ অনুচ্ছেদের বাতিল চেয়েছে গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাসদ (মার্কসবাদী)। এই দলগুলো ছাড়া আরও বেশ কিছু দল ৭০ অনুচ্ছেদের বাতিল বা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের কাঠামোতে চর্চিত হচ্ছে একক নেতার ক্ষমতা। সেখানে রাজনৈতিক দলের সংস্কার না করলে তার প্রভাব দলীয় নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ওপর পড়বে। এখন যদি ৭০ অনুচ্ছেদ সংস্কার হয়ে আসে কিন্তু দল যদি উৎসাহিত না করে, একক নেতার দল তৈরি হয় তখন নির্বাচিত হয়ে আসলেও ব্যবহার করবে না। কারণ তারা জানেন দলের বিরোধিতা করলে ছিটকে পড়বেন কিংবা নেতার বিরাগভাজন হবেন। তাই দলের সংস্কার হওয়া উচিত।

সংবিধান সংস্কার কমিশনে দলগুলোর জমা দেওয়া প্রস্তাবের মধ্যে আরেকটি আলোচিত বিষয় ছিল সংবিধানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি। এ ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাকে মেনে নিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসহ গণতান্ত্রিক সব আন্দোলনের সংবিধানিক স্বীকৃতির প্রস্তাব দিয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিফলন ও স্বীকৃতি সংবিধানের প্রস্তাবনায় থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে কমিশনও ।

মুক্তিযুদ্ধ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতিসহ জামায়াতের প্রস্তাবের বিষয়ে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রস্তাবে আমরা আমাদের কথা বলেছি। অন্যান্য দলও তাদের মতামত দিয়েছি, সবগুলো মিলিয়ে কমিশন প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এখন কোনটা গ্রহণ করবে, যোগ-বিয়োগ করবে সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত। তার আগে কিছু বলা সমীচীন মনে করি না।’

সংবিধানের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি জামায়াত ছাড়াও জাতীয় নাগরিক কমিটি, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি) পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দলও করে। সংবিধান সংস্কার কমিশনও তাদের সুপারিশে মুক্তিযুদ্ধসহ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিফলন ও স্বীকৃতি অবশ্যই সংবিধানে প্রস্তাবনায় থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অগ্রগতি বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাদের শুধু প্রস্তাবনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে, সবাই বোধ হয় তাই চাইবে। তারা প্রকাশ্যে বলুক, তারা যা করেছে অন্যায় হয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা যেহেতু লিখিতভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সুতরাং তাদের দিক থেকে অগ্রগতি। এটা রাজনীতিতে জামায়াতের ইতিবাচক পরিবর্তন।

৭০ অনুচ্ছেদ বাংলাদেশের ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা কোন দলই বাদ দেবে বলে মনে করেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা বাদ দিলে দলের ওপর নেতার নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে। দলের এমপিরা নেতৃত্বের নির্দেশ মানবে না। এটা এখন যে আকারে প্রস্তাব থাকুক না কেন কেউ মানবে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কেনাবেচার যে সংস্কৃতি, এটাকে (৭০ অনুচ্ছেদ) পুরোপুরি তুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। এটাকে হয়তো কিছুটা সংস্কার করার সুযোগ রয়েছে। সেটাও করবে কিনা সন্দেহ আছে।

যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে সংরক্ষিত মহিলা আসন নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশেও বিধানটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করে জামায়াত। তবে উচ্চকক্ষে নারীদের জন্য ২০টি আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করে দলটি। জামায়াত ছাড়া অন্যান্য ইসলামি দলগুলোও এটি না রাখার অনুরোধ করেছে। তবে সংবিধান সংস্কার কমিশন নারীদের জন্য ৫০টি আসনের পরিবর্তে ১০০টি আসনের সুপারিশ করে, যা দেশের নির্ধারিত ১০০টি আসনের জনগণের ভোটে নির্বাচনের পরামর্শ দেয় তারা।

প্রায় সব দলই দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের সুপারিশ সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে করেছে। এর মধ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির প্রস্তাবে বলা আছে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের মেয়াদ চার বছর। একই প্রস্তাব জাতীয় নাগরিক কমিটি, গণ অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। সংস্কার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্নকক্ষের মেয়াদ চার বছর।

এদিকে সংবিধান পুনর্লিখনের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। নাগরিক কমিটি লিগ্যাল ফ্রেম অর্ডারের অধীনে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের দাবি করে। সংবিধান সংস্কার বা পুনর্লিখনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ শাসনতান্ত্রিক মর্যাদা ফিরে পাবে বলে আশা প্রকাশ করে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। তারা তিন পার্বত্য জেলাকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঘোষণার পাশাপাশি পাহাড়ি জাতিগুলোর জন্য ১টি মহিলা আসনসন চারটি সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব করে। যা পাহাড়ি জাতিসমূহের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হওয়ার বিধান যুক্ত করার সুপারিশ করে।

সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত প্রত্যেকটা প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে কি, হবে না তা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের মাধ্যমে নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই মাসের চুক্তিতে স্বাস্থ্যের ডিজি ও সচিব নিয়োগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।

২৪ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সামিউল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী মো. সাইদুর রহমানকে তাঁর অবসরোত্তর ছুটি ও তৎসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিত এবং অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

একই আইনের সমধারায় দুই মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরও। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. শাদরুল আলমকে। এত দিন তিনি সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের (সিএমই) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাঁকে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।

খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।

ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পি কে হালদার। ফাইল ছবি
পি কে হালদার। ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।

কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলার তদন্ত-বিচারকাজে আইনি পরামর্শক হলেন সমাজী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর সমাজীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদার সুবিধায় ওই দায়িত্ব দিয়ে আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি আততায়ীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগরীর পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। ডিএমপির অধীনে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

হাদি হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্তসংশ্লিষ্টদের এবং পরে আদালতে বিচারকালে বিচারসংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন টিমকে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত