Ajker Patrika

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে রহস্যজনক আগুন

� কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন

� পাঁচ মন্ত্রণালয়-বিভাগের নথিসহ সব পুড়ে ছাই

� উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক, তদন্ত কমিটি

� নাশকতার ইঙ্গিত, মুখ খুলতে চান না কেউ

� ট্রাকচাপায় ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীর মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১: ৩০
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের চারটি ফ্লোর আগুনে পুড়েছে। আগুন লাগার কয়েক মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস এলেও তা নেভাতে সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টা। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায়। ছবি: মেহেদী হাসান
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের চারটি ফ্লোর আগুনে পুড়েছে। আগুন লাগার কয়েক মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস এলেও তা নেভাতে সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টা। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায়। ছবি: মেহেদী হাসান

গভীর রাতের আগুনে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের একটি ভবনের চারটি ফ্লোর পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ৭ নম্বর ভবনের এসব ফ্লোরে পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আংশিক কার্যালয় এবং একটি বিভাগের পুরো কার্যালয়ের অবকাঠামোর সঙ্গে সব নথিপত্রও পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে পানি ছিটানোর জন্য পাইপ লাগাতে গিয়ে সড়কে ট্রাকচাপায় নিহত হয়েছেন সোয়ানুর জামান নয়ন নামের ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী। তবে ভয়াবহ এই আগুনের কারণ রহস্যঘেরা; যার কিনারা গতকাল রাত পর্যন্ত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কেউ কেউ এটিকে নাশকতা বলেও অভিযোগ করেছেন। তবে সন্দেহভাজন হিসেবে কারও দিকে ইঙ্গিত করেননি কেউ। ঘটনা তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষ থেকেও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে আলাদা আলাদা কমিটি করা হয়েছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লোরগুলো দেখেন। একজন কর্মকর্তা বলেন, আগুনে নয়তলাবিশিষ্ট ৭ নম্বর ভবনের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলা পুড়ে গেছে। এসব তলায় কিছুই অক্ষত নেই। কোথাও কোথাও দেয়ালের পলেস্তারা, সিঁড়ির ঢালাই খসে পড়েছে।

বড়দিন উপলক্ষে গত বুধবার সাধারণ ছুটি থাকায় সচিবালয়ও বন্ধ ছিল। প্রশাসনের এই প্রাণকেন্দ্র সুরক্ষিত। বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার খবর পায়। দ্রুত ছয়টি ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে আরও ১৩টি ইউনিট যোগ দেয়। কিন্তু আগুন একপর্যায়ে ভবনের ষষ্ঠ তলা থেকে নবম তলায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে গতকাল সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

পুড়ে যাওয়া ফ্লোরগুলোয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের আংশিক কার্যালয় রয়েছে। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পুরো কার্যালয় রয়েছে। তবে ভবনটির পঞ্চম তলা থেকে নিচের দিকে আগুন ছড়ায়নি।

আগুনে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সবকিছু পুড়ে গেছে। এই মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের কার্যালয় বনানীর সেতু ভবনে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সেতু ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এই মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ।

সকাল থেকে সচিবালয়ে ঘুরে দেখা যায়, ৭ নম্বর ভবনের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ভাঙা কাচের টুকরো। ভবনের দক্ষিণ পাশে কয়েকটি কবুতর মরে পড়ে আছে। আটতলায় একটি মৃত কুকুর পাওয়া গেছে। ভবনের চারটি প্রবেশপথে পাহারায় রয়েছে পুলিশ। চারজন উপদেষ্টা ছাড়া কাউকেই ভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তবে ভবনের বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভেতরে চারটি ফ্লোর পুরো পুড়ে গেছে। শুধু তিনটি সিঁড়ির স্থান দিয়ে বের হওয়া ধোঁয়ার কারণে ওই অংশগুলো আগুনের চিহ্ন ধারণ করে কালো হয়ে আছে।

একজন কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো নিজেদের মতো করে তাদের করিডরে কাঠ ও বোর্ড দিয়ে ইন্টেরিয়র করেছে। ফলে আগুন দ্রুত পুরো ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ আগুন জ্বলার পর ধোঁয়ার কুণ্ডলী বাইরে বের হওয়ার পর আগুন লাগার বিষয়টি বোঝা যায়। আগুন নেভাতে কেন এত সময় লাগল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেক কর্মকর্তা।

বিকেলে সচিবালয় থেকে বের হওয়ার সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সচিবালয়ের অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থার যে অবস্থা, তাতে তাঁরা কেউই নিরাপদ নন।

সচিবালয়ের প্রতিটি স্থান সিসি ক্যামেরার আওতায়। ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার পর থেকে ওই ভবনের সব সিসি ক্যামেরা অচল হয়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যার দিকে সিসি ক্যামেরা সচল করতে আলাদা কেব্‌ল স্থাপনের কাজ চলছিল।

সচিবালয়ে বিভিন্ন ভবনের যেসব ফ্লোরে উপদেষ্টা (মন্ত্রী) ও সচিবদের দপ্তর, সেখানে ফ্লোরের এক পাশে মন্ত্রী এবং আরেক পাশে সচিবের দপ্তর। বাইরে থেকে দেখলে উপদেষ্টা (মন্ত্রী) ও সচিবের দপ্তরেই শুধু আগুন লেগেছে বলে মনে হয়। কিন্তু বাস্তবে পুড়েছে পুরো ফ্লোর।

বিকেল ৫টার দিকেও পোড়া ফ্লোরগুলো থেকে উৎকট গন্ধ আসছিল। আগুন নেভাতে ব্যবহৃত পানি বিকেলেও ভবনের বিভিন্ন স্থান দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল।

ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লোরগুলোয় যেসব কর্মকর্তার দপ্তর, তাঁরা সচিবালয়ে ঢুকে আক্ষেপ করেন। নিজেদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও পুড়ে যাওয়ায় অনেকের মন খারাপ ছিল। একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি নথির সঙ্গে কক্ষে থাকা তাঁর ব্যক্তিগত জিনিসের সবই পুড়ে গেছে। আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, অফিসের কম্পিউটারে তাঁর ব্যক্তিগত ও খুব প্রয়োজনীয় ডেটা ছিল, সবই শেষ।

গতকাল সচিবালয়ের চিত্র ছিল একেবারে অচেনা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল ৯টার মধ্যে সচিবালয়ের সামনে আসার আগেই প্রবেশের সব ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শুধু ৫ নম্বর ফটক খুলে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। ঢোকার পর অনেকে ৭ নম্বর ভবনের সামনে ভিড় করেন। কোনো গাড়ি সচিবালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

আগুনের কারণে ৭ নম্বর ভবন বিদ্যুৎহীন হওয়ার জেরে আরও কয়েকটি ভবনে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে বিশেষ ব্যবস্থায় সেসব ভবনে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়।

কাজ না থাকায় বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী আগুনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সময় কাটান। বেলা ১টার পর থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৫ নম্বর ফটক দিয়ে সচিবালয় থেকে বের হতে থাকেন। অফিস ছুটির নির্ধারিত সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস করেছেন।

সচিবালয়ে কোনো সাংবাদিক ও টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবশ্য কড়াকড়ি শুরুর আগে কয়েকজন সাংবাদিক প্রবেশ করেন।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব মো. হামিদুর রহমান খান রাতে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ৭ নম্বর ভবনে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যালয় রয়েছে, আগামী রোববার থেকে সেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মন্ত্রণালয়ের করা বিকল্প ব্যবস্থায় অফিস করবেন। এখন ভবনটি নিরাপত্তা বাহিনীর অধীনে রয়েছে। সেখানে প্রবেশের অনুমতি পেলে ভবনটি আর ব্যবহার উপযোগী কি না, তা পরীক্ষা করা হবে।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে পরিচালনার জন্য তাঁরা সচিবালয়ে খালি জায়গা খুঁজছেন।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ভবনটি পরিদর্শন করেন। আসিফ মাহমুদ এ সময় সাখাওয়াত হোসেনকে বলেন, ‘আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে।’ সাখাওয়াত হোসেন তাঁকে সান্ত্বনা দেন।

ঘটনাটি নাশকতা কি না, পরিদর্শনের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তের আগে এটি নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কী হয়েছে, তা আমরা দেখব। পুরোটা তল্লাশির পর কিছু পাওয়া যায় কি না জানাব।’

৫ আগস্টের পর পুলিশের পাশাপাশি সেনাসদস্যরাও সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন। সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সচিবালয়ের আগুনের ঘটনায় তদন্ত হলে পেছনের কারণ জানা যাবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গতকাল পুড়ে যাওয়া ভবন থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। উপদেষ্টা পরিষদের গঠন করা উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির সদস্যরাও রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ডকে দেশের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা বলে অভিহিত করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, বড়দিনের ছুটির দিন রাতে জনমানবহীন অবস্থায় সংঘটিত ঘটনাটি সুপরিকল্পিত বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত থেকে প্রতীয়মান হয়েছে। কারও কারও মতে এরূপ নাশকতামূলক কাজের পেছনে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে শেখ হাসিনার মদদপুষ্ট তথা স্বৈরাচারের দোসরেরা জড়িত থাকতে পারে। তাদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ সহযোগিতায় ঘটনাটি ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

কী কী নথি পুড়েছে

আগুনে ওই চার ফ্লোরের কাগজের সব নথিই পুড়ে গেছে। তবে বেশির ভাগ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এখন ই-নথিতে কাজ হয়। ফলে কম্পিউটার পুড়ে গেলেও এসব নথি সার্ভারে রয়েছে। তবে ই-নথি শুরুর আগে ম্যানুয়ালি যেসব কাজ হয়েছে, সেসব তথ্য-উপাত্ত পুড়েছে। সেগুলো আর পাওয়া যাবে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ কী পরিমাণ নথি সেসব ফ্লোরে ছিল, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব চুক্তি হয়েছিল, সেগুলোর মূল কপিও পুড়ে গেছে। কিছু কিছু নকশাও পুড়ে গেছে।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নথি কার্যক্রম অনলাইনে থাকায় আমরা সেগুলো উদ্ধার করতে পারব। তবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের পুরোটাই অ্যানালগভাবে হয়। তাই যে শাখাগুলোর নথি পুড়েছে, সেগুলোর কতটা উদ্ধার করা যাবে, তা নিরূপণে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে একটা কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটি কাজ করে প্রতিবেদন দিলে বোঝা যাবে, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা

আগুনের ঘটনায় বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে তাঁর সভাপতিত্বে জরুরি সভা করে উপদেষ্টা পরিষদ। পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জরুরি বৈঠকে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঘটনাটি সরকার খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কারণ, এটা আমাদের সবার নিরাপত্তার বিষয় এবং এখানে রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলিল থাকে।’

আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগার বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘আগুন আরও আগে নেভানো যেত কি না, আগুন নেভাতে বিলম্ব হয়েছে কি না, কমিটির প্রতিবেদন না পেলে আমরা এগুলোর উত্তর দিতে পারব না। এ ঘটনার অবশ্যই একটা সুষ্ঠু এবং বিস্তারিত তদন্ত হতে হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্য থাকলে সরকার ব্যবস্থা নিত। আগুনের উৎসের বিষয়ে তদন্ত কমিটিই সঠিক বলতে পারবে। প্রাথমিক তথ্যের বিষয়টি সবাই জেনে গেছেন।

সচিবালয়ের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সচিবালয়ের নিরাপত্তার জন্য একজন করে এসপি ও এএসপি এবং ৫৬০ জনের মতো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

তদন্তে যত কমিটি

উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে আহ্বায়ক করে আট সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান, বুয়েটের অধ্যাপক ড. তানভীর মনজুর, অধ্যাপক ড. মো. ইয়াছির আরাফাত ও ইয়াসির আরাফাতকে সদস্য এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে সদস্যসচিব করা হয়েছে। কমিটিকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। তবে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের পর এটি বাতিল করা হয়।

এ ছাড়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কী কী ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণে আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি করা হচ্ছে। গতকাল শ্রম মন্ত্রণালয় দুটি, স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ একটি কমিটি করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানবন্দর-৩০০ ফুট-গুলশানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ১৬
বিমানবন্দর, ৩০০ ফুট ও গুলশানসহ রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
বিমানবন্দর, ৩০০ ফুট ও গুলশানসহ রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদারে বিমানবন্দর, ৩০০ ফুট ও গুলশানসহ রাজধানীর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর থেকে বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তারেক রহমান। স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও একমাত্র কন্যা জাইমা রহমানও তাঁর সঙ্গে আসছেন।

সকাল ৯টা ৩৪ মিনিটে একটি ছবি শেয়ার করে ফেসবুকে তারেক রহমান জানান দেশের সীমানায় প্রবেশ করেছেন তিনি। পোস্টে লেখেন ‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩শ ১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’

এর কিছুক্ষণ আগেই উড়োজাহাজের ভেতরে নির্দিষ্ট আসনে বসা তারেক রহমান বিমানের টিকিট হাতে নিয়ে একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন—ফেরা।

এদিকে তারেক রহমানকে সংবর্ধনা দিতে ঢাকার ৩০০ ফুট এলাকায় ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, কুড়িল থেকে সংবর্ধনা মঞ্চ পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন রঙের ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। মঞ্চের দুই পাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্টে লাগানো হয়েছে মাইক।

২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান তারেক রহমান। এরপর আর ফিরতে পারেননি। দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে আজ দেশে ফিরছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজ শুভ বড়দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬: ৪৩
আজ শুভ বড়দিন

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ ২৫ ডিসেম্বর। এই ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট আজকের এই দিনে প্রাচীন ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বের খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদ্‌যাপন করে থাকে। দিনটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটি।

খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের মাধ্যমে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতেই প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল। মুসলিমদের কাছে যিশুখ্রিষ্ট হজরত ঈসা (আ.) হিসেবে পরিচিত। ঈসা (আ.)-এর ওপর নাজিল হওয়া আসমানি কিতাবের নাম ইঞ্জিল শরিফ। তবে দুই ধর্মের বিশ্বাসে কিছু তফাতও রয়েছে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্টান ধর্মানুসারীরাও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদ্‌যাপন করবে।

বড়দিন উপলক্ষে সারা দেশে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বাড়ি ও গির্জা উৎসবের সাজে সাজানো হয়। এ দিন গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

অনেক পরিবার তাদের বাড়িতে তৈরি করে প্রতীকী গোয়ালঘর। বিদেশি অতিথিদের বিবেচনায় তারকা হোটেলগুলো ক্রিসমাস ট্রি, সান্তা ক্লজসহ বিভিন্ন অনুষঙ্গ দিয়ে সাজানো হয়।

বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, মহামতি যিশুখ্রিষ্ট ছিলেন মানবজাতির মুক্তির দূত এবং শান্তি, সত্য ও ন্যায়ের প্রচারক। তাঁর আদর্শ ভালোবাসা, সেবা ও ক্ষমার শিক্ষা দেয়। ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশ ও জনগণের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বড়দিন সবার জীবনে আনন্দ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনুক।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাণীতে বলেন, বড়দিন শান্তি, ন্যায় ও মানবমুক্তির বার্তা বহন করে। যিশুখ্রিষ্টের মানবসেবা, ভালোবাসা ও ক্ষমার আদর্শ অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বড়দিন উদ্‌যাপন দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরও সুদৃঢ় করবে। বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

আতশবাজি, পটকা ও ফানুস নিষিদ্ধ

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র বড়দিন উদ্‌যাপন উপলক্ষে আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুভ বড়দিন ভাবগম্ভীর ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশের ২৮ ধারার ক্ষমতাবলে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো এবং ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বড়দিনের অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও নিরাপদে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ নগরবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৪০
খোদা বকশ চৌধুরী। ফাইল ছবি
খোদা বকশ চৌধুরী। ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন। তিনি প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছিলেন।

খোদা বখশ চৌধুরীর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন জানিয়ে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে শেষ দিকে এসে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন ওঠে। ওই পদে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেও গুঞ্জন ছিল।

সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছিল, গত মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা ছিল খোদা বখশ চৌধুরীর। কিন্তু এ নিয়ে উপদেষ্টাদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন প্রধান উপদেষ্টা।

একটি সূত্র বলছে, উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হওয়ায় খোদা বখশ চৌধুরী পদত্যাগ করেছেন।

এর আগে গত ১০ মার্চ প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক এম আমিনুল ইসলামও এভাবে পদত্যাগ করেছিলেন।

অধ্যাপক আমিনুলকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু গত ৫ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও মানবাধিকারকর্মী সি আর আবরারকে শিক্ষা উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পাঁচদিন পর পদত্যাগ করেন অধ্যাপক আমিনুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই অভ্যুত্থানে চানখাঁরপুলে হত্যাকাণ্ডের রায় ২০ জানুয়ারি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ০১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী ২০ জানুয়ারি রায় দেবেন ট্রাইব্যুনাল। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বুধবার রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

এই মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে গত ১৪ জুলাই অভিযোগ গঠন করা হয়। আট আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার থাকা শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। আর পলাতক রয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আক্তারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

যাত্রাবাড়ীতে তাইম হত্যায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসান তাইম হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ১১ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। যাতে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারদের হাজিরের জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পলাতকদের গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ওসি আবুল হাসান ও তৎকালীন ওসি (তদন্ত) জাকির হোসাইন। আর পলাতক রয়েছেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, ওয়ারী জোনের সাবেক ডিসি ইকবাল হোসাইন ও এডিসি এস এম শামীম, ডেমরা জোনের তৎকালীন এডিসি মো. মাসুদুর রহমান মনির, তৎকালীন সহকারী পুলিশ কমিশনার নাহিদ ফেরদৌস, যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) ওহিদুল হক মামুন, এসআই (নিরস্ত্র) সাজ্জাদ উজ জামান ও মো. শাহদৎ আলী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত