Ajker Patrika

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে রহস্যজনক আগুন

� কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন

� পাঁচ মন্ত্রণালয়-বিভাগের নথিসহ সব পুড়ে ছাই

� উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক, তদন্ত কমিটি

� নাশকতার ইঙ্গিত, মুখ খুলতে চান না কেউ

� ট্রাকচাপায় ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীর মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১: ৩০
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের চারটি ফ্লোর আগুনে পুড়েছে। আগুন লাগার কয়েক মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস এলেও তা নেভাতে সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টা। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায়। ছবি: মেহেদী হাসান
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের চারটি ফ্লোর আগুনে পুড়েছে। আগুন লাগার কয়েক মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস এলেও তা নেভাতে সময় লেগেছে ১০ ঘণ্টা। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায়। ছবি: মেহেদী হাসান

গভীর রাতের আগুনে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ের একটি ভবনের চারটি ফ্লোর পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ৭ নম্বর ভবনের এসব ফ্লোরে পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আংশিক কার্যালয় এবং একটি বিভাগের পুরো কার্যালয়ের অবকাঠামোর সঙ্গে সব নথিপত্রও পুড়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে পানি ছিটানোর জন্য পাইপ লাগাতে গিয়ে সড়কে ট্রাকচাপায় নিহত হয়েছেন সোয়ানুর জামান নয়ন নামের ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী। তবে ভয়াবহ এই আগুনের কারণ রহস্যঘেরা; যার কিনারা গতকাল রাত পর্যন্ত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কেউ কেউ এটিকে নাশকতা বলেও অভিযোগ করেছেন। তবে সন্দেহভাজন হিসেবে কারও দিকে ইঙ্গিত করেননি কেউ। ঘটনা তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষ থেকেও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে আলাদা আলাদা কমিটি করা হয়েছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লোরগুলো দেখেন। একজন কর্মকর্তা বলেন, আগুনে নয়তলাবিশিষ্ট ৭ নম্বর ভবনের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলা পুড়ে গেছে। এসব তলায় কিছুই অক্ষত নেই। কোথাও কোথাও দেয়ালের পলেস্তারা, সিঁড়ির ঢালাই খসে পড়েছে।

বড়দিন উপলক্ষে গত বুধবার সাধারণ ছুটি থাকায় সচিবালয়ও বন্ধ ছিল। প্রশাসনের এই প্রাণকেন্দ্র সুরক্ষিত। বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার খবর পায়। দ্রুত ছয়টি ইউনিট সেখানে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে আরও ১৩টি ইউনিট যোগ দেয়। কিন্তু আগুন একপর্যায়ে ভবনের ষষ্ঠ তলা থেকে নবম তলায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে গতকাল সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

পুড়ে যাওয়া ফ্লোরগুলোয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের আংশিক কার্যালয় রয়েছে। এ ছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পুরো কার্যালয় রয়েছে। তবে ভবনটির পঞ্চম তলা থেকে নিচের দিকে আগুন ছড়ায়নি।

আগুনে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সবকিছু পুড়ে গেছে। এই মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের কার্যালয় বনানীর সেতু ভবনে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সেতু ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে এই মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ।

সকাল থেকে সচিবালয়ে ঘুরে দেখা যায়, ৭ নম্বর ভবনের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ভাঙা কাচের টুকরো। ভবনের দক্ষিণ পাশে কয়েকটি কবুতর মরে পড়ে আছে। আটতলায় একটি মৃত কুকুর পাওয়া গেছে। ভবনের চারটি প্রবেশপথে পাহারায় রয়েছে পুলিশ। চারজন উপদেষ্টা ছাড়া কাউকেই ভবনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তবে ভবনের বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভেতরে চারটি ফ্লোর পুরো পুড়ে গেছে। শুধু তিনটি সিঁড়ির স্থান দিয়ে বের হওয়া ধোঁয়ার কারণে ওই অংশগুলো আগুনের চিহ্ন ধারণ করে কালো হয়ে আছে।

একজন কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো নিজেদের মতো করে তাদের করিডরে কাঠ ও বোর্ড দিয়ে ইন্টেরিয়র করেছে। ফলে আগুন দ্রুত পুরো ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ আগুন জ্বলার পর ধোঁয়ার কুণ্ডলী বাইরে বের হওয়ার পর আগুন লাগার বিষয়টি বোঝা যায়। আগুন নেভাতে কেন এত সময় লাগল, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেক কর্মকর্তা।

বিকেলে সচিবালয় থেকে বের হওয়ার সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সচিবালয়ের অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থার যে অবস্থা, তাতে তাঁরা কেউই নিরাপদ নন।

সচিবালয়ের প্রতিটি স্থান সিসি ক্যামেরার আওতায়। ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার পর থেকে ওই ভবনের সব সিসি ক্যামেরা অচল হয়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যার দিকে সিসি ক্যামেরা সচল করতে আলাদা কেব্‌ল স্থাপনের কাজ চলছিল।

সচিবালয়ে বিভিন্ন ভবনের যেসব ফ্লোরে উপদেষ্টা (মন্ত্রী) ও সচিবদের দপ্তর, সেখানে ফ্লোরের এক পাশে মন্ত্রী এবং আরেক পাশে সচিবের দপ্তর। বাইরে থেকে দেখলে উপদেষ্টা (মন্ত্রী) ও সচিবের দপ্তরেই শুধু আগুন লেগেছে বলে মনে হয়। কিন্তু বাস্তবে পুড়েছে পুরো ফ্লোর।

বিকেল ৫টার দিকেও পোড়া ফ্লোরগুলো থেকে উৎকট গন্ধ আসছিল। আগুন নেভাতে ব্যবহৃত পানি বিকেলেও ভবনের বিভিন্ন স্থান দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল।

ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লোরগুলোয় যেসব কর্মকর্তার দপ্তর, তাঁরা সচিবালয়ে ঢুকে আক্ষেপ করেন। নিজেদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও পুড়ে যাওয়ায় অনেকের মন খারাপ ছিল। একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারি নথির সঙ্গে কক্ষে থাকা তাঁর ব্যক্তিগত জিনিসের সবই পুড়ে গেছে। আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, অফিসের কম্পিউটারে তাঁর ব্যক্তিগত ও খুব প্রয়োজনীয় ডেটা ছিল, সবই শেষ।

গতকাল সচিবালয়ের চিত্র ছিল একেবারে অচেনা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল ৯টার মধ্যে সচিবালয়ের সামনে আসার আগেই প্রবেশের সব ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শুধু ৫ নম্বর ফটক খুলে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়। ঢোকার পর অনেকে ৭ নম্বর ভবনের সামনে ভিড় করেন। কোনো গাড়ি সচিবালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

আগুনের কারণে ৭ নম্বর ভবন বিদ্যুৎহীন হওয়ার জেরে আরও কয়েকটি ভবনে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে বিশেষ ব্যবস্থায় সেসব ভবনে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়।

কাজ না থাকায় বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী আগুনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সময় কাটান। বেলা ১টার পর থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৫ নম্বর ফটক দিয়ে সচিবালয় থেকে বের হতে থাকেন। অফিস ছুটির নির্ধারিত সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিস করেছেন।

সচিবালয়ে কোনো সাংবাদিক ও টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবশ্য কড়াকড়ি শুরুর আগে কয়েকজন সাংবাদিক প্রবেশ করেন।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব মো. হামিদুর রহমান খান রাতে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ৭ নম্বর ভবনে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যালয় রয়েছে, আগামী রোববার থেকে সেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মন্ত্রণালয়ের করা বিকল্প ব্যবস্থায় অফিস করবেন। এখন ভবনটি নিরাপত্তা বাহিনীর অধীনে রয়েছে। সেখানে প্রবেশের অনুমতি পেলে ভবনটি আর ব্যবহার উপযোগী কি না, তা পরীক্ষা করা হবে।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মন্ত্রণালয়গুলোর কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে পরিচালনার জন্য তাঁরা সচিবালয়ে খালি জায়গা খুঁজছেন।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ভবনটি পরিদর্শন করেন। আসিফ মাহমুদ এ সময় সাখাওয়াত হোসেনকে বলেন, ‘আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে।’ সাখাওয়াত হোসেন তাঁকে সান্ত্বনা দেন।

ঘটনাটি নাশকতা কি না, পরিদর্শনের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তের আগে এটি নিশ্চিত করে বলা যাবে না। কী হয়েছে, তা আমরা দেখব। পুরোটা তল্লাশির পর কিছু পাওয়া যায় কি না জানাব।’

৫ আগস্টের পর পুলিশের পাশাপাশি সেনাসদস্যরাও সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন। সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সচিবালয়ের আগুনের ঘটনায় তদন্ত হলে পেছনের কারণ জানা যাবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গতকাল পুড়ে যাওয়া ভবন থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। উপদেষ্টা পরিষদের গঠন করা উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির সদস্যরাও রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন সচিবালয়ের অগ্নিকাণ্ডকে দেশের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা বলে অভিহিত করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, বড়দিনের ছুটির দিন রাতে জনমানবহীন অবস্থায় সংঘটিত ঘটনাটি সুপরিকল্পিত বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত থেকে প্রতীয়মান হয়েছে। কারও কারও মতে এরূপ নাশকতামূলক কাজের পেছনে সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে শেখ হাসিনার মদদপুষ্ট তথা স্বৈরাচারের দোসরেরা জড়িত থাকতে পারে। তাদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ সহযোগিতায় ঘটনাটি ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

কী কী নথি পুড়েছে

আগুনে ওই চার ফ্লোরের কাগজের সব নথিই পুড়ে গেছে। তবে বেশির ভাগ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এখন ই-নথিতে কাজ হয়। ফলে কম্পিউটার পুড়ে গেলেও এসব নথি সার্ভারে রয়েছে। তবে ই-নথি শুরুর আগে ম্যানুয়ালি যেসব কাজ হয়েছে, সেসব তথ্য-উপাত্ত পুড়েছে। সেগুলো আর পাওয়া যাবে না। তবে গুরুত্বপূর্ণ কী পরিমাণ নথি সেসব ফ্লোরে ছিল, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব চুক্তি হয়েছিল, সেগুলোর মূল কপিও পুড়ে গেছে। কিছু কিছু নকশাও পুড়ে গেছে।

ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নথি কার্যক্রম অনলাইনে থাকায় আমরা সেগুলো উদ্ধার করতে পারব। তবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের পুরোটাই অ্যানালগভাবে হয়। তাই যে শাখাগুলোর নথি পুড়েছে, সেগুলোর কতটা উদ্ধার করা যাবে, তা নিরূপণে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে একটা কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটি কাজ করে প্রতিবেদন দিলে বোঝা যাবে, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি সভা

আগুনের ঘটনায় বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ে তাঁর সভাপতিত্বে জরুরি সভা করে উপদেষ্টা পরিষদ। পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জরুরি বৈঠকে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঘটনাটি সরকার খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কারণ, এটা আমাদের সবার নিরাপত্তার বিষয় এবং এখানে রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলিল থাকে।’

আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগার বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘আগুন আরও আগে নেভানো যেত কি না, আগুন নেভাতে বিলম্ব হয়েছে কি না, কমিটির প্রতিবেদন না পেলে আমরা এগুলোর উত্তর দিতে পারব না। এ ঘটনার অবশ্যই একটা সুষ্ঠু এবং বিস্তারিত তদন্ত হতে হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্য থাকলে সরকার ব্যবস্থা নিত। আগুনের উৎসের বিষয়ে তদন্ত কমিটিই সঠিক বলতে পারবে। প্রাথমিক তথ্যের বিষয়টি সবাই জেনে গেছেন।

সচিবালয়ের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সচিবালয়ের নিরাপত্তার জন্য একজন করে এসপি ও এএসপি এবং ৫৬০ জনের মতো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

তদন্তে যত কমিটি

উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে আহ্বায়ক করে আট সদস্যের উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান, বুয়েটের অধ্যাপক ড. তানভীর মনজুর, অধ্যাপক ড. মো. ইয়াছির আরাফাত ও ইয়াসির আরাফাতকে সদস্য এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে সদস্যসচিব করা হয়েছে। কমিটিকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং পরবর্তী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি কমিটি করা হয়। তবে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের পর এটি বাতিল করা হয়।

এ ছাড়া মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কী কী ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণে আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি করা হচ্ছে। গতকাল শ্রম মন্ত্রণালয় দুটি, স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ একটি কমিটি করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তারেক রহমানকে মোদির শোকবার্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১২
খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তারেক রহমানকে মোদির শোকবার্তা

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

গতকাল মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পাঠানো এক শোকবার্তায় নরেন্দ্র মোদি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তিনি গভীরভাবে শোকাহত। এই ব্যক্তিগত ক্ষতির মুহূর্তে তারেক রহমানের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়ে তিনি মরহুমার আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন।

শোকবার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের জুন মাসে ঢাকায় বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও আলোচনার কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন দৃঢ়সংকল্প ও প্রত্যয়ের এক বিরল নেত্রী। বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি বিশেষ মর্যাদা অর্জন করেছিলেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথাও উল্লেখ করেন মোদি।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে একটি অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হলেও তাঁর দর্শন ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার দীর্ঘদিন ধরে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি বেগম জিয়ার আদর্শকে এগিয়ে নেবে এবং ভারত ও বাংলাদেশের গভীর ও ঐতিহাসিক অংশীদারত্ব আরও সমৃদ্ধ হবে।

শোকবার্তায় মোদি বাংলাদেশের জনগণের প্রতিও সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, ইতিহাসের নানা সংকটে বাংলাদেশি জনগণ যে দৃঢ়তা ও মর্যাদা প্রদর্শন করেছে, তা প্রশংসনীয়। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, ঐতিহ্য ও জাতীয় ঐক্যের শক্তিতে ভর করে বাংলাদেশ শান্তি ও সম্প্রীতির পথে এগিয়ে যাবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান ও তাঁর পরিবারের জন্য সর্বশক্তিমানের কাছে শক্তি ও ধৈর্য কামনা করেন এবং তারেক রহমানের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের জন্য শুভকামনা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৬
প্রেস সচিব শফিকুল আলম । ছবি: সংগৃহীত
প্রেস সচিব শফিকুল আলম । ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, ‘গতকাল থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্য আমার মনটা খুব বিষণ্ন হয়ে আছে। অনেক বছর ধরে তিনি আমার অন্যতম রাজনৈতিক আদর্শ। একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, তিনি কতটা কষ্ট সহ্য করেছেন। কীভাবে দলের কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ঠিক নিজের সন্তান বা নিকটাত্মীয়ের মতো।’

রাজধানীর জিয়া উদ্যানে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে আজ বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দাফন শেষে ফেসবুকে রাত ৮টার দিকে শফিকুল আলম এই পোস্ট দেন।

পোস্টে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘শহীদ বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পর থেকে আমার মনে হচ্ছে তিনি (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) ভীষণ একা হয়ে পড়েছেন। একত্রে এই দুই নেতা আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম এক সম্মানিত ও নির্ভরযোগ্য অংশীদারিত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। সহমর্মিতা এবং নীরবে ধৈর্য ধরার ক্ষমতার জন্য তাঁরা দুজনেই সমধিক পরিচিত ছিলেন। তাঁরা খুব কমই মেজাজ হারাতেন। অহংকার তাঁদের ছুঁতে পারতো না বললেই চলে। কঠিন সময়ে তাঁরা অত্যন্ত যত্ন এবং সংযমের সাথে জনগণকে পথ দেখিয়েছেন।’

বিএনপির মহাসচিবের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে শফিকুল আলম আরও লেখেন, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মির্জা ফখরুলের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে। তিনি এখন আর সেই চেনা মহাসচিব নেই, যিনি একসময় দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চষে বেড়াতেন। খালেদা জিয়া যখন তাঁকে মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দেন, তখন তিনি বিএনপির একজন মধ্যম সারির নেতা ছিলেন এবং তাঁর সেন্টার-লেফট আদর্শিক ঝোঁকের জন্য পরিচিত ছিলেন। তবুও সংকটের মুহূর্তে তিনিই সবচেয়ে দক্ষ কাণ্ডারি হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। শহীদ বেগম খালেদা জিয়ার পাশে থেকে তিনি দলটিকে সুসংগঠিত ও অটল রেখেছিলেন। কিন্তু জুলাই মাস যখন এলো, তখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে। খালেদা জিয়া মৃত্যুশয্যায় ছিলেন এবং মির্জা ফখরুল নিজেও তাঁর শরীরের শক্তি অনেকটা হারিয়ে ফেলেছেন। এ এক যুগের অবসান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

বাসস, ঢাকা  
মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান। ফাইল ছবি
মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান। ফাইল ছবি

টাঙ্গাইল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

আজ বুধবার বেলা ৩টায় রাজধানীর নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

মাহমুদুল হাসানের মৃত্যুতে টাঙ্গাইলে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু ও প্রচার সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

শোকবার্তায় তাঁরা বলেন, মাহমুদুল হাসান আজীবন আদর্শ টাঙ্গাইল গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজসেবক, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল মানুষ। শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তাঁর মৃত্যুতে টাঙ্গাইল সদর একজন অভিভাবক হারাল।

সেই সঙ্গে তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মাহমুদুল হাসান ১৯৩৬ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাকোরকোল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি এরশাদের শাসনামলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবনে ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন এবং ২০১২ সালের উপনির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৫ সালে গণপিটুনি বেড়ে দ্বিগুণ: এমএসএফ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালে গণপিটুনি বেড়ে দ্বিগুণ: এমএসএফ

সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত ৪৬০ জনের মধ্যে ৫৫ জন কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দল আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ সদস্য।

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালে গণপিটুনি বা মব সন্ত্রাস আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় জনমনে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি প্রশ্নাতীতভাবে এগিয়ে রয়েছে। প্রচলিত আইন অবজ্ঞা করে গণপিটুনির ঘটনাগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হয়। নাগরিকের ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার মূল উৎস এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মব সহিংসতা। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের পাওয়ামাত্র গণপিটুনি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার লক্ষণীয় প্রভাব থাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এমএসএফের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার ৫৯৯টি ঘটনায় শিকার হয়েছে ৫ হাজার ৬০৪ জন। তাদের মধ্যে ৮৬ জন নিহত ও ৫ হাজার ৫১৮ জন আহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৫ জন বিএনপি, আটজন আওয়ামী লীগ, তিনজন জামায়াতে ইসলামী এবং ১০ জন বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও বয়সের সাধারণ নাগরিক, যাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। ২০২৫ সালে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলার ১৬৯টি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ১৮৭ জন আহত হয়েছেন।

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সরকার পতন ও গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ৬৭টি মামলা হয়েছে। মামলায় ৭ হাজার ৭৮০ জনকে সুনির্দিষ্টভাবে আসামি করা হয়েছে এবং ১১ হাজার ১৭৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলাগুলোর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ২৯টি মামলা হয়েছে। সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতন-সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩ হাজার ৬৯৫ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’—এর আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২২ হাজার ২৮৪ জন। গ্রেপ্তার ১১ হাজার ৩১৩ জন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় লোকজন।

এমএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের কমপক্ষে ১৯টি ঘটনা ঘটেছে। সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ২২ জন নিহত হয়েছেন। এ বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারা হেফাজতে ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়ে পালাতে গিয়ে আট যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ৬৪১ জন সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হত্যা, হামলা, হুমকি, আইনি হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০২৫ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলাসহ মোট ২৫টি মামলায় ৫৫ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মির্জা ফখরুলের জন্য মনটা কাল থেকে খুব বিষণ্ন হয়ে আছে: প্রেস সচিব

তারেক রহমানের বাড়ি-গাড়ি নেই, আছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসান আর নেই

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

এরশাদের ১২৬টি আসনের টোপ প্রত্যাখ্যান করে সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন খালেদা জিয়া

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত