Ajker Patrika

স্বাধীন দুদকে আধিপত্য প্রশাসন ক্যাডারের

সৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৫: ১৩
স্বাধীন দুদকে আধিপত্য প্রশাসন ক্যাডারের

দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হওয়ার পর ২০ বছরে ছয়জন চেয়ারম্যান পেয়েছে দুদক। প্রথমজন বিচারপতি, দ্বিতীয়জন সাবেক সেনাপ্রধান, পরবর্তী চার চেয়ারম্যানই সাবেক আমলা অর্থাৎ প্রশাসন ক্যাডারের।

এ ছাড়া দুই কমিশনারের অন্তত একজন জনপ্রশাসনের। দুদক সূত্র জানায়, সংস্থার সচিবসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অন্তত ৫০ কর্মকর্তাই প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্যাডার থেকে প্রেষণে আসা। অর্থাৎ আইনে স্বাধীন সংস্থা দুদকে শুরু থেকে নিজস্ব কর্মকর্তা নয়, আমলাদেরই আধিপত্য।

দুদকের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রেষণে আসা রাজনৈতিক পছন্দের কর্মকর্তাদের কারণে তদন্তের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। এ ছাড়া ২০২২ সালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদায়ন-বদলির ক্ষমতা সচিবকে দেওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক ও পরিচালক পদের কর্মকর্তাদের বদলির ক্ষমতা সচিবের কাছে থাকায় অনুসন্ধান-তদন্তে তাঁর প্রভাব খাটানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এ চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনার নিয়োগের সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। দুদক গঠনের পর ২০০৪ সালে প্রথম চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন বিচারপতি সুলতান হোসেন খান। ২০০৭ সালে চেয়ারম্যান হন সাবেক সেনাপ্রধান হাসান মশহুদ চৌধুরী।

২০০৯ সালে চেয়ারম্যান হন গোলাম রহমান, ২০১৪ সালে মো. বদিউজ্জামান, ২০১৬ সালে ইকবাল মাহমুদ, ২০২১ সালে নিযুক্ত হন বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ। এই চারজনই ছিলেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা।

কমিশনার নিয়োগের বিষয়ে দুদক আইনে বলা হয়েছে, আইন, শিক্ষা, প্রশাসন, বিচার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী—এই পাঁচ বিভাগ থেকে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কেউ কমিশনার হওয়ার যোগ্য হবেন। ২০০৯ সালের তৃতীয় কমিশন থেকে দুদকের চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারের মধ্যে দুজন নিয়োগ পেয়েছেন প্রশাসনের ও রাজনৈতিক পছন্দে।

দুদকের তথ্য বলছে, বর্তমান কমিশনে চেয়ারম্যান, একজন কমিশনার, একজন সচিব ছাড়াও প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্যাডার থেকে প্রেষণে আসা অন্তত ৫০ কর্মকর্তা দুদকে বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে রয়েছেন। তদন্ত-১, তদন্ত-২, মানি লন্ডারিং, লিগ্যাল ও প্রসিকিউশন—এই পাঁচ শাখার মহাপরিচালকদের চারজনই প্রশাসন থেকে প্রেষণে আসা এবং অপরজন প্রেষণে এসেছেন বিচার বিভাগ থেকে। একসময় মহাপরিচালকের আটটি পদের সাতটিতেই ছিলেন প্রশাসন ক্যাডারের। দুদকের নিজস্ব তিনজন মহাপরিচালক পদে পদোন্নতি পাওয়ায় তা কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচে।

দুদকের চাকরিবিধিতে রয়েছে, প্রেষণের সময়কাল ব্যতিক্রম ছাড়া তিন বছরের বেশি হবে না। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্তত ১০ জন কর্মকর্তা তিন বছরের বেশি সময় ধরে দুদকে প্রেষণে আছেন। তাঁদের কেউ কেউ আছেন পাঁচ-ছয় বছরের বেশি।

দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের কারণে প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজে বাধা তৈরি হয়েছে। দুদক আইনে একটি স্বাধীন প্রসিকউশন থাকার কথা থাকলেও কোনো কমিশনই তা করেনি। দলীয় লোকদের এসব পদে চুক্তিভিত্তিক কাজ করিয়েছে। ফলে দুদক দুর্নীতি দমনে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। 

সচিবের হাতে বদলি-পদায়ন
দুদক আইনে সংস্থাটির নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যান ও দুই কমিশনারকে। আইনের ১৬(১) ধারায় বলা হয়েছে, কমিশনের একজন সচিব থাকবেন, তাঁকে নিয়োগ দেবে কমিশন। দুদক আইনের ১৬(২) ধারায় বলা হয়েছে, সচিবের দায়িত্ব হবে চেয়ারম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী কমিশনের সভার আলোচ্য বিষয় এবং কমিশনের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে সভার তারিখ ও সময় নির্ধারণ, কার্যবিবরণী প্রস্তুত করা, কমিশনারদের সম্পাদিত কার্যাবলির বিবরণ ও সংশ্লিষ্ট নথি সংরক্ষণ এবং কমিশন নির্দেশিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন ও কার্য সম্পাদন। তবে ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর কমিশনের এক আদেশে দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদায়ন ও বদলির ক্ষমতা দেওয়া হয় দুদক সচিবকে। এতে ‘উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক’ সমমানের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নের পূর্ণ ক্ষমতা পান দুদক সচিব।

ওই সিদ্ধান্তের পরপরই গণমাধ্যমে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় প্রশ্ন তুলেছিলেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেছিলেন, ‘পদায়ন ও বদলির মতো নির্বাহী ক্ষমতা ঢালাওভাবে সচিবের হাতে অর্পণের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কোন যুক্তিতে হলো? কমিশন কেন নিজের হাতে থাকা ক্ষমতা আমলাতন্ত্রের হাতে নিরঙ্কুশভাবে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল, সেটি জানা জরুরি।’

দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, সচিবের দায়িত্ব কী, দুদক আইনে তা বলা আছে। সেখানে কোথাও বদলি-পদায়নের বিষয় নেই। ছোট পর্যায়ের বদলির ক্ষমতা সচিবকে দিলে সেটা কমিশনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে না, বরং কাজের গতি বাড়বে। তবে তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক, উপপরিচালকের বদলির ক্ষমতা সচিবকে না দেওয়াই ভালো। এতে ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে। এতে অনুসন্ধান-তদন্তে সচিবের প্রভাব খাটানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষিণ সুদানে যাত্রা করলেন নৌবাহিনীর ৭১ সদস্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ নৌসদস্য। ছবি: আইএসপিআর
‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ নৌসদস্য। ছবি: আইএসপিআর

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন ‘ইউনাইটেড নেশনস মিশন ইন সাউথ সুদান’ (আনমিস)-এ নিয়োজিত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১১’-এর দ্বিতীয় গ্রুপের ৭১ জন নৌসদস্য আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে তাঁরা দক্ষিণ সুদানের উদ্দেশে রওনা হন। এই কন্টিনজেন্ট সেখানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। এর আগে ৯ ডিসেম্বর প্রথম গ্রুপে ৯৯ জন নৌসদস্য এই মিশনে যোগ দিতে দেশ ছাড়েন।

দক্ষিণ সুদানের প্রতিকূল ও দুর্গম এলাকায় বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মানবিক দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে—নীল নদের নৌপথে নিত্যপ্রয়োজনীয় জ্বালানি, খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ ও মানবিক সাহায্য বহনকারী বার্জসমূহের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা। নৌপথে জলদস্যুতা পর্যবেক্ষণ ও তা কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। স্থানীয় জনগণের অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা এবং বেসামরিক নাবিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজ উদ্ধার এবং মিশনে নিয়োজিত সামরিক-বেসামরিক সদস্যদের রসদসামগ্রী দুর্গম স্থানে পৌঁছে দেওয়া।

এই কন্টিনজেন্ট সুদানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। ছবি: আইএসপিআর
এই কন্টিনজেন্ট সুদানে আগে থেকে কর্মরত ‘বাংলাদেশ ফোর্স মেরিন ইউনিট-১০’-এর স্থলাভিষিক্ত হবে। ছবি: আইএসপিআর

গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা নিষ্ঠা ও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আসছেন। নীল নদের ১ হাজার ৩১১ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এখন পর্যন্ত ৭১টি লজিস্টিক অপারেশন (অপারেশন লাইফ লাইন) সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন নৌসদস্যরা।

দক্ষিণ সুদান ছাড়াও লেবাননের ভূমধ্যসাগরে উপমহাদেশের একমাত্র মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’ নিয়োজিত রয়েছে। নৌবাহিনীর এই গৌরবময় অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম উজ্জ্বল করছে।

উল্লেখ্য, ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই-তে সন্ত্রাসী কর্তৃক ইউএন ঘাঁটি আক্রমণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী নিহত ও আটজন আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জানুয়ারির মাঝামাঝি সাংবাদিকদের মহাসম্মেলনের ঘোষণা নোয়াব সভাপতির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৩
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন সভাপতি এ কে আজাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখছেন সভাপতি এ কে আজাদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী জানুয়ারির মাঝামাঝিতে সাংবাদিকদের মহাসম্মেলন আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছেন সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ।

তিনি জানিয়েছেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, আগুন এবং সম্পাদক পরিষদের সভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা করার প্রতিবাদে সারা দেশের সাংবাদিকদের নিয়ে এ মহাসম্মেলন করা হবে। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

আজ সোমবার প্রতিবাদ সভায় এ কে আজাদ এ কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে ‘মব ভায়োলেন্সে আক্রান্ত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই যৌথ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ ও মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (নোয়াব)।

সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যমের কার্যালয়ে যখন হামলা হলো, তখন ডেইলি স্টার সম্পাদক সরকারের সব সংস্থাকে অনুনয় করেছিলেন নিরাপত্তা দিতে। কিন্তু কারও সাহায্য তিনি পাননি।

সভায় নোয়াব সভাপতি বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রথম আলোতে প্রথম আগুন দেওয়া হয়। তখনই ডেইলি স্টার সম্পাদক আশঙ্কা করেছিলেন এরপরে হামলাকারীরা ডেইলি স্টারে যাবে। তখন তিনি সরকারের এমন কোনো সংস্থা নাই, এমন কোনো ব্যক্তি নাই, যাকে অনুরোধ, অনুনয়-বিনয় করেন নাই যে আপনারা ডেইলি স্টারের সামনে ‘প্রোটেকশন’ দেন। কিন্তু তিনি কোনো সাহায্য সাড়া পাননি। যখন পেয়েছেন পোড়ার পরে পেয়েছেন।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ কে আজাদ আরও বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক যখন অসহায়ের মতো নিচে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর সামনে দিয়ে লুটকারীরা কম্পিউটার, চেয়ার, মাথায় করে নিয়ে যাচ্ছে। ওখানে তখন আইনশৃঙ্খলার সমস্ত বাহিনী ছিল। কিন্তু বাহিনীগুলোর কেউ একটা প্রতিবাদ করেনি।

নোয়াব সভাপতি আরও বলেন, সেই রাতে ডেইলি সম্পাদক তাঁকে জানান, ভবনটিতে ২৮ থেকে ২৯ জন আটকা পড়েছিল। আর ১৫ মিনিট আগুন জ্বললে তাদের অনেকেই সেই ধোঁয়ায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যেত।

একে আজাদ বলেন, আমরা এভাবে মারা যেতে চাই না। এভাবে আমাদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করা যাবে না।

প্রতিবাদ সভায় জানানো হয়, সাংবাদিকদের মতামতের ভিত্তিতে সারা দেশের সাংবাদিকদের নিয়ে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে মহাসম্মেলন আয়োজন করা হবে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, উদীচী, ছায়ানটে যারা আগুন দিয়েছে যত দিন তাদের বিচার না হবে, সাংবাদিকেরা যত দিন মত প্রকাশের স্বাধীনতা না পাবে, তত দিন পর্যন্ত এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

প্রতিবাদ সভায় সংহতি জানিয়ে দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে শুধু প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার নয়, আজকে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। তাই গণতন্ত্রী সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।

ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ডেইলি স্টার, প্রথম আলোর সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ওই দিন ২৬-২৭ জন স্টাফ ভবনের ভেতরে আটকে ছিল, ফায়ার সার্ভিসকে যেতে দেওয়া হয়নি। তাদের উদ্দেশ্য শুধু ভবনে আগুন দেওয়া ছিল না, হত্যা করার উদ্দেশ্য ছিল।

প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে তাঁদের শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ার প্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ-ভারত উত্তেজনা আর বাড়তে না দেওয়ার আহ্বান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের

বাসস, ঢাকা  
ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন সোমবার দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন সোমবার দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার গ্রিগোরিয়েভিচ খোজিন দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিরাজমান উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ সোমবার ঢাকায় রাশিয়ান ফেডারেশনের দূতাবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।

রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যকার বর্তমান উত্তেজনা যত দ্রুত সম্ভব নিরসন করা প্রয়োজন। তবে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, রাশিয়া দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। খোজিন বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হওয়া উচিত।’ বর্তমান পরিস্থিতিকে আর বাড়তে না দেওয়ার বিষয়েও তিনি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সতর্ক করেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। রাষ্ট্রদূত খোজিন আশা প্রকাশ করেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়েই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি নির্বাচনের আগে দেশে একটি অনুকূল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে।’

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, রাশিয়া এ বিষয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর জন্য তারা এখন কমিশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণের অপেক্ষায় রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে

২০২৬ সালের হজে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমে প্রাথমিক নিবন্ধনকারীদের আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হজ প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা দিতে নির্দেশনা দিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক স্বাক্ষরিত হজ-১ শাখা থেকে জারিকৃত পত্রে বলা হয়েছে, ‘হজ ২০২৬-এর সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা জমাদানপূর্বক প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। হজ প্যাকেজ ও গাইডলাইন ২০২৬ অনুযায়ী প্রত্যেক হজযাত্রীকে প্যাকেজ মূল্যের সমুদয় অর্থ ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে আবশ্যিকভাবে জমা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। বর্ণিতাবস্থায়, হজ ২০২৬ এর যে সকল হজযাত্রী নির্বাচিত প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ জমা প্রদান করেননি তাদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে অবশিষ্ট সমুদয় অর্থ জমা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’

এ সময়ের মধ্যে কোনো নিবন্ধিত হজযাত্রী প্যাকেজের অবশিষ্ট টাকা জমা না দিলে সেই হজযাত্রীর হজে গমন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত