অন্তর্বর্তী সরকারের ৩ মাস
ডয়চে ভেলে

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূঞ্জীভূত ক্ষোভের জমিনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের ফসল হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস পার করতে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার স্লোগান দিচ্ছে এই সরকার। কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কি?
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেয়৷ মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে গণপিটুনি বা তথাকথিত ‘মব জাস্টিসের’ শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ৬৮ জন। অথচ, গত সরকারের আমলে ২০২৩ সালে পুরো বছরে ওভাবে নিহত হন ৫১ জন।
আসকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ২০ জন৷ আর চলতি বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস আগস্ট থেকে অক্টোবরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ওভাবে নিহত হন সাত জন৷ চলতি নভেম্বরেও একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷
এবিষয়ে জানতে চাইলে মানবাধিকার কর্মী ও গুম কমিশনের সদস্য নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘এখন আমরা দেখছি মব জাস্টিসের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা ভয়াবহভাবে ফিরে এসেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে।’
আর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘পতিত শেখ হাসিনা সরকারের গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসের তুলনায় বর্তমান সরকারের তিন মাসে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও মব জাস্টিসের নামে হত্যা বেড়েছে।’
এই সময়ে যারা কথিত গণপিটুনি বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না৷
গত বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ইয়াকুব ও আলমগীর নামে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের চাচা আব্দুল হালিম ফোনে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘পিটিয়ে হত্যার পর আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই। কিন্তু কেন হত্যা করা হয়েছে, কারা হত্যা করেছে তার কিছুই আমরা জানি না।’
পুলিশের ভাষ্য, উত্তেজিত জনতা ‘ছিনতাইকারী’ বলে তাঁদের পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের বোনের ছেলে শেখ আরিফুজ্জামান রূপমকে (৩৪) গতকাল সোমবার সকালে খুলনায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মত্যু নিয়ে কথা বলতে চাননি তার চাচা এস এম মাহমুদ৷ আজ মঙ্গলবার তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরা এখন তাঁর দাফন নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলা সম্ভব নয়। কারা মেরেছে, কেন মেরেছে বলতে পারছি না। আর পুলিশের কাছে যেয়ে কী হবে?’
গত ৩০ অক্টোবর নড়াইলে মাইকিং করে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ১ নভেম্বর ভোর রাতে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালি এলাকায় যৌথ বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের সময় তথাকথিত গণপিটুনিতে কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
এর আগের তথাকথিত মব জাস্টিসের শিকার হয়ে বেশকিছু মৃত্যু দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছে৷ গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে ‘চোর’ সন্দেহের ধরে নিয়ে গিয়ে রীতিমতো পরিকল্পনা করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তোফায়েলের খিদে পেলে তাকে ভাত খেতে দেয়া হয়। ভাত খাওয়ার পর আবার তাকে পেটানো হয়। হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷
একই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে৷ এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷
চট্টগ্রামে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নেচে-গেয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ হত্যার এক মাস পর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় চোর সন্দেহে মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ তার জেরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে চার জন আদিবাসী নিহত হন৷ ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়৷
কয়েকদিন পর আবারো পাহাড়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সোহেল রানা নামের ওই শিক্ষকে পিটিয়ে হত্যার পর পাহাড়ি বাঙালি সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়৷
নূর খান বলেন, ‘একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে একজনকে হত্যার ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ছাড়া এই ধরনের ঘটনায় আর কোনো গ্রেপ্তারের খবর আমার জানা নাই৷’
গুম কমিশন মঙ্গলবার জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের কাছে প্রায় এক হাজার ৬০০ গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে৷ এগুলো গত সরকারের আমলের ঘটনা৷ এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে৷ পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
৪০০ অভিযোগের মধ্যে ১৭২টি অভিযোগের সঙ্গে র্যাবের সংশ্লিষ্টতা আছে৷ কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৩৭টি অভিযোগের সঙ্গে৷ ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৫৫টির সঙ্গে৷ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৬টির সঙ্গে৷ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৫টি অভিযোগের সঙ্গে৷
অন্যদিকে ২০০৪ সালে র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২০ বছরে অন্তত দুই হাজার ৯৫৪টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছে আসক।
মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো প্রক্রিয়া দেখছি না৷ আগের সরকারের আমলে হয়েছে, এখন আবার হচ্ছে৷ এটা তো জট পাকিয়ে যাচ্ছে৷ আগের বিচারই হচ্ছে না৷ এখনকার বিচার কে, কখন করবে?’
এলিনা খান মনে করেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে এই ধরনের অপরাধের বিচারের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন কমত৷ কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। আগে বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রভাবাধীন ছিল আর এখন বিচার ব্যবস্থার কাঠামোই নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত র্যাব ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে৷ তা-ও করা হচ্ছে না।’
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে ‘নতুন আলামত’ তুলে ধরে মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘আগে করতো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, এখন সেটা মব জাস্টিসের নামে করা হচ্ছে; গণপিটুনির নামে হচ্ছে— এটা আরো ভয়াবহ আকারে এসেছে। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও নিহত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আসলে এইসব বন্ধ এবং বিচারের জন্য সরকারের কমিটমেন্ট খুব জরুরি। কিন্তু সেটা দৃশ্যমান নয়। বিচারের আওতায় আনা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া খুব জরুরি৷’
বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এই অল্প সময় (তিন মাসের) তুলনা করলে আগের সরকারের চেয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মব জাস্টিস বেড়েছে। এটা হয়েছে সরকারের কমিটমেন্টের অভাবে। সরকার মুখে বলছে, কিন্তু কাজে করছে না। এর মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার রক্ষা সুদূরপরাহত।’
আর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘মব জাস্টিসের নামে যা চলছে তা গ্রহণযোগ্য নয়৷ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। মানবাধিকার, মানুষের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার— এগুলো প্রতিষ্ঠা করতে হলে ওইসব অপরাধ বন্ধ করতে হবে। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সময়ে যা দেখেছি, এখনো তা দেখতে চাই না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট না থাকলে এই সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ হবে না। এজন্যই তো আমরা দ্রুত নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা সম্পর্কে চেষ্টা করেও পুলিশ সদর দপ্তরের বক্তব্য জানা যায়নি৷
তবে এর আগে পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠকে মব জাস্টিস বন্ধ করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। দেশের থানাসহ সব পুলিশ ইউনিটকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা কোথাও ঘটলে পুলিশকে দ্রুত খবর দিতে জনসাধারণকে বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে। পুলিশ সর্বনিম্ন সময়ের মধ্যে রেসপন্স করবে। আর পুলিশ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটায় তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূঞ্জীভূত ক্ষোভের জমিনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের ফসল হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস পার করতে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার স্লোগান দিচ্ছে এই সরকার। কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কি?
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেয়৷ মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে গণপিটুনি বা তথাকথিত ‘মব জাস্টিসের’ শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ৬৮ জন। অথচ, গত সরকারের আমলে ২০২৩ সালে পুরো বছরে ওভাবে নিহত হন ৫১ জন।
আসকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ২০ জন৷ আর চলতি বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস আগস্ট থেকে অক্টোবরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ওভাবে নিহত হন সাত জন৷ চলতি নভেম্বরেও একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷
এবিষয়ে জানতে চাইলে মানবাধিকার কর্মী ও গুম কমিশনের সদস্য নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘এখন আমরা দেখছি মব জাস্টিসের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা ভয়াবহভাবে ফিরে এসেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে।’
আর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘পতিত শেখ হাসিনা সরকারের গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসের তুলনায় বর্তমান সরকারের তিন মাসে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও মব জাস্টিসের নামে হত্যা বেড়েছে।’
এই সময়ে যারা কথিত গণপিটুনি বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না৷
গত বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ইয়াকুব ও আলমগীর নামে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের চাচা আব্দুল হালিম ফোনে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘পিটিয়ে হত্যার পর আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই। কিন্তু কেন হত্যা করা হয়েছে, কারা হত্যা করেছে তার কিছুই আমরা জানি না।’
পুলিশের ভাষ্য, উত্তেজিত জনতা ‘ছিনতাইকারী’ বলে তাঁদের পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের বোনের ছেলে শেখ আরিফুজ্জামান রূপমকে (৩৪) গতকাল সোমবার সকালে খুলনায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মত্যু নিয়ে কথা বলতে চাননি তার চাচা এস এম মাহমুদ৷ আজ মঙ্গলবার তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরা এখন তাঁর দাফন নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলা সম্ভব নয়। কারা মেরেছে, কেন মেরেছে বলতে পারছি না। আর পুলিশের কাছে যেয়ে কী হবে?’
গত ৩০ অক্টোবর নড়াইলে মাইকিং করে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ১ নভেম্বর ভোর রাতে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালি এলাকায় যৌথ বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের সময় তথাকথিত গণপিটুনিতে কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
এর আগের তথাকথিত মব জাস্টিসের শিকার হয়ে বেশকিছু মৃত্যু দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছে৷ গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে ‘চোর’ সন্দেহের ধরে নিয়ে গিয়ে রীতিমতো পরিকল্পনা করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তোফায়েলের খিদে পেলে তাকে ভাত খেতে দেয়া হয়। ভাত খাওয়ার পর আবার তাকে পেটানো হয়। হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷
একই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে৷ এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷
চট্টগ্রামে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নেচে-গেয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ হত্যার এক মাস পর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় চোর সন্দেহে মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ তার জেরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে চার জন আদিবাসী নিহত হন৷ ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়৷
কয়েকদিন পর আবারো পাহাড়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সোহেল রানা নামের ওই শিক্ষকে পিটিয়ে হত্যার পর পাহাড়ি বাঙালি সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়৷
নূর খান বলেন, ‘একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে একজনকে হত্যার ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ছাড়া এই ধরনের ঘটনায় আর কোনো গ্রেপ্তারের খবর আমার জানা নাই৷’
গুম কমিশন মঙ্গলবার জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের কাছে প্রায় এক হাজার ৬০০ গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে৷ এগুলো গত সরকারের আমলের ঘটনা৷ এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে৷ পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
৪০০ অভিযোগের মধ্যে ১৭২টি অভিযোগের সঙ্গে র্যাবের সংশ্লিষ্টতা আছে৷ কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৩৭টি অভিযোগের সঙ্গে৷ ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৫৫টির সঙ্গে৷ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৬টির সঙ্গে৷ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৫টি অভিযোগের সঙ্গে৷
অন্যদিকে ২০০৪ সালে র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২০ বছরে অন্তত দুই হাজার ৯৫৪টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছে আসক।
মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো প্রক্রিয়া দেখছি না৷ আগের সরকারের আমলে হয়েছে, এখন আবার হচ্ছে৷ এটা তো জট পাকিয়ে যাচ্ছে৷ আগের বিচারই হচ্ছে না৷ এখনকার বিচার কে, কখন করবে?’
এলিনা খান মনে করেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে এই ধরনের অপরাধের বিচারের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন কমত৷ কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। আগে বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রভাবাধীন ছিল আর এখন বিচার ব্যবস্থার কাঠামোই নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত র্যাব ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে৷ তা-ও করা হচ্ছে না।’
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে ‘নতুন আলামত’ তুলে ধরে মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘আগে করতো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, এখন সেটা মব জাস্টিসের নামে করা হচ্ছে; গণপিটুনির নামে হচ্ছে— এটা আরো ভয়াবহ আকারে এসেছে। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও নিহত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আসলে এইসব বন্ধ এবং বিচারের জন্য সরকারের কমিটমেন্ট খুব জরুরি। কিন্তু সেটা দৃশ্যমান নয়। বিচারের আওতায় আনা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া খুব জরুরি৷’
বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এই অল্প সময় (তিন মাসের) তুলনা করলে আগের সরকারের চেয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মব জাস্টিস বেড়েছে। এটা হয়েছে সরকারের কমিটমেন্টের অভাবে। সরকার মুখে বলছে, কিন্তু কাজে করছে না। এর মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার রক্ষা সুদূরপরাহত।’
আর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘মব জাস্টিসের নামে যা চলছে তা গ্রহণযোগ্য নয়৷ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। মানবাধিকার, মানুষের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার— এগুলো প্রতিষ্ঠা করতে হলে ওইসব অপরাধ বন্ধ করতে হবে। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সময়ে যা দেখেছি, এখনো তা দেখতে চাই না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট না থাকলে এই সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ হবে না। এজন্যই তো আমরা দ্রুত নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা সম্পর্কে চেষ্টা করেও পুলিশ সদর দপ্তরের বক্তব্য জানা যায়নি৷
তবে এর আগে পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠকে মব জাস্টিস বন্ধ করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। দেশের থানাসহ সব পুলিশ ইউনিটকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা কোথাও ঘটলে পুলিশকে দ্রুত খবর দিতে জনসাধারণকে বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে। পুলিশ সর্বনিম্ন সময়ের মধ্যে রেসপন্স করবে। আর পুলিশ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটায় তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের ৩ মাস
ডয়চে ভেলে

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূঞ্জীভূত ক্ষোভের জমিনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের ফসল হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস পার করতে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার স্লোগান দিচ্ছে এই সরকার। কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কি?
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেয়৷ মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে গণপিটুনি বা তথাকথিত ‘মব জাস্টিসের’ শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ৬৮ জন। অথচ, গত সরকারের আমলে ২০২৩ সালে পুরো বছরে ওভাবে নিহত হন ৫১ জন।
আসকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ২০ জন৷ আর চলতি বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস আগস্ট থেকে অক্টোবরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ওভাবে নিহত হন সাত জন৷ চলতি নভেম্বরেও একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷
এবিষয়ে জানতে চাইলে মানবাধিকার কর্মী ও গুম কমিশনের সদস্য নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘এখন আমরা দেখছি মব জাস্টিসের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা ভয়াবহভাবে ফিরে এসেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে।’
আর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘পতিত শেখ হাসিনা সরকারের গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসের তুলনায় বর্তমান সরকারের তিন মাসে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও মব জাস্টিসের নামে হত্যা বেড়েছে।’
এই সময়ে যারা কথিত গণপিটুনি বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না৷
গত বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ইয়াকুব ও আলমগীর নামে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের চাচা আব্দুল হালিম ফোনে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘পিটিয়ে হত্যার পর আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই। কিন্তু কেন হত্যা করা হয়েছে, কারা হত্যা করেছে তার কিছুই আমরা জানি না।’
পুলিশের ভাষ্য, উত্তেজিত জনতা ‘ছিনতাইকারী’ বলে তাঁদের পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের বোনের ছেলে শেখ আরিফুজ্জামান রূপমকে (৩৪) গতকাল সোমবার সকালে খুলনায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মত্যু নিয়ে কথা বলতে চাননি তার চাচা এস এম মাহমুদ৷ আজ মঙ্গলবার তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরা এখন তাঁর দাফন নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলা সম্ভব নয়। কারা মেরেছে, কেন মেরেছে বলতে পারছি না। আর পুলিশের কাছে যেয়ে কী হবে?’
গত ৩০ অক্টোবর নড়াইলে মাইকিং করে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ১ নভেম্বর ভোর রাতে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালি এলাকায় যৌথ বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের সময় তথাকথিত গণপিটুনিতে কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
এর আগের তথাকথিত মব জাস্টিসের শিকার হয়ে বেশকিছু মৃত্যু দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছে৷ গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে ‘চোর’ সন্দেহের ধরে নিয়ে গিয়ে রীতিমতো পরিকল্পনা করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তোফায়েলের খিদে পেলে তাকে ভাত খেতে দেয়া হয়। ভাত খাওয়ার পর আবার তাকে পেটানো হয়। হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷
একই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে৷ এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷
চট্টগ্রামে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নেচে-গেয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ হত্যার এক মাস পর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় চোর সন্দেহে মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ তার জেরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে চার জন আদিবাসী নিহত হন৷ ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়৷
কয়েকদিন পর আবারো পাহাড়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সোহেল রানা নামের ওই শিক্ষকে পিটিয়ে হত্যার পর পাহাড়ি বাঙালি সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়৷
নূর খান বলেন, ‘একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে একজনকে হত্যার ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ছাড়া এই ধরনের ঘটনায় আর কোনো গ্রেপ্তারের খবর আমার জানা নাই৷’
গুম কমিশন মঙ্গলবার জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের কাছে প্রায় এক হাজার ৬০০ গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে৷ এগুলো গত সরকারের আমলের ঘটনা৷ এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে৷ পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
৪০০ অভিযোগের মধ্যে ১৭২টি অভিযোগের সঙ্গে র্যাবের সংশ্লিষ্টতা আছে৷ কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৩৭টি অভিযোগের সঙ্গে৷ ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৫৫টির সঙ্গে৷ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৬টির সঙ্গে৷ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৫টি অভিযোগের সঙ্গে৷
অন্যদিকে ২০০৪ সালে র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২০ বছরে অন্তত দুই হাজার ৯৫৪টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছে আসক।
মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো প্রক্রিয়া দেখছি না৷ আগের সরকারের আমলে হয়েছে, এখন আবার হচ্ছে৷ এটা তো জট পাকিয়ে যাচ্ছে৷ আগের বিচারই হচ্ছে না৷ এখনকার বিচার কে, কখন করবে?’
এলিনা খান মনে করেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে এই ধরনের অপরাধের বিচারের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন কমত৷ কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। আগে বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রভাবাধীন ছিল আর এখন বিচার ব্যবস্থার কাঠামোই নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত র্যাব ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে৷ তা-ও করা হচ্ছে না।’
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে ‘নতুন আলামত’ তুলে ধরে মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘আগে করতো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, এখন সেটা মব জাস্টিসের নামে করা হচ্ছে; গণপিটুনির নামে হচ্ছে— এটা আরো ভয়াবহ আকারে এসেছে। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও নিহত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আসলে এইসব বন্ধ এবং বিচারের জন্য সরকারের কমিটমেন্ট খুব জরুরি। কিন্তু সেটা দৃশ্যমান নয়। বিচারের আওতায় আনা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া খুব জরুরি৷’
বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এই অল্প সময় (তিন মাসের) তুলনা করলে আগের সরকারের চেয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মব জাস্টিস বেড়েছে। এটা হয়েছে সরকারের কমিটমেন্টের অভাবে। সরকার মুখে বলছে, কিন্তু কাজে করছে না। এর মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার রক্ষা সুদূরপরাহত।’
আর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘মব জাস্টিসের নামে যা চলছে তা গ্রহণযোগ্য নয়৷ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। মানবাধিকার, মানুষের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার— এগুলো প্রতিষ্ঠা করতে হলে ওইসব অপরাধ বন্ধ করতে হবে। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সময়ে যা দেখেছি, এখনো তা দেখতে চাই না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট না থাকলে এই সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ হবে না। এজন্যই তো আমরা দ্রুত নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা সম্পর্কে চেষ্টা করেও পুলিশ সদর দপ্তরের বক্তব্য জানা যায়নি৷
তবে এর আগে পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠকে মব জাস্টিস বন্ধ করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। দেশের থানাসহ সব পুলিশ ইউনিটকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা কোথাও ঘটলে পুলিশকে দ্রুত খবর দিতে জনসাধারণকে বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে। পুলিশ সর্বনিম্ন সময়ের মধ্যে রেসপন্স করবে। আর পুলিশ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটায় তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূঞ্জীভূত ক্ষোভের জমিনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের ফসল হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস পার করতে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার স্লোগান দিচ্ছে এই সরকার। কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কি?
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের সরকার দায়িত্ব নেয়৷ মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে গণপিটুনি বা তথাকথিত ‘মব জাস্টিসের’ শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ৬৮ জন। অথচ, গত সরকারের আমলে ২০২৩ সালে পুরো বছরে ওভাবে নিহত হন ৫১ জন।
আসকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ২০ জন৷ আর চলতি বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস আগস্ট থেকে অক্টোবরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ওভাবে নিহত হন সাত জন৷ চলতি নভেম্বরেও একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷
এবিষয়ে জানতে চাইলে মানবাধিকার কর্মী ও গুম কমিশনের সদস্য নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘এখন আমরা দেখছি মব জাস্টিসের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা ভয়াবহভাবে ফিরে এসেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে।’
আর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘পতিত শেখ হাসিনা সরকারের গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসের তুলনায় বর্তমান সরকারের তিন মাসে বিচার বহির্ভূত হত্যা ও মব জাস্টিসের নামে হত্যা বেড়েছে।’
এই সময়ে যারা কথিত গণপিটুনি বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না৷
গত বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ইয়াকুব ও আলমগীর নামে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের চাচা আব্দুল হালিম ফোনে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘পিটিয়ে হত্যার পর আমরা খবর পেয়ে হাসপাতালে যাই। কিন্তু কেন হত্যা করা হয়েছে, কারা হত্যা করেছে তার কিছুই আমরা জানি না।’
পুলিশের ভাষ্য, উত্তেজিত জনতা ‘ছিনতাইকারী’ বলে তাঁদের পিটিয়ে হত্যা করেছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের বোনের ছেলে শেখ আরিফুজ্জামান রূপমকে (৩৪) গতকাল সোমবার সকালে খুলনায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর মত্যু নিয়ে কথা বলতে চাননি তার চাচা এস এম মাহমুদ৷ আজ মঙ্গলবার তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘আমরা এখন তাঁর দাফন নিয়ে ব্যস্ত, কথা বলা সম্ভব নয়। কারা মেরেছে, কেন মেরেছে বলতে পারছি না। আর পুলিশের কাছে যেয়ে কী হবে?’
গত ৩০ অক্টোবর নড়াইলে মাইকিং করে গরু চোর সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ১ নভেম্বর ভোর রাতে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালি এলাকায় যৌথ বাহিনীর অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের সময় তথাকথিত গণপিটুনিতে কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
এর আগের তথাকথিত মব জাস্টিসের শিকার হয়ে বেশকিছু মৃত্যু দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছে৷ গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে ‘চোর’ সন্দেহের ধরে নিয়ে গিয়ে রীতিমতো পরিকল্পনা করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তোফায়েলের খিদে পেলে তাকে ভাত খেতে দেয়া হয়। ভাত খাওয়ার পর আবার তাকে পেটানো হয়। হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷
একই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে৷ এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদের ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷
চট্টগ্রামে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নেচে-গেয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ হত্যার এক মাস পর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় চোর সন্দেহে মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ তার জেরে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে চার জন আদিবাসী নিহত হন৷ ঘর-বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়৷
কয়েকদিন পর আবারো পাহাড়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ খাগড়াছড়িতে ধর্ষণের অভিযোগে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সোহেল রানা নামের ওই শিক্ষকে পিটিয়ে হত্যার পর পাহাড়ি বাঙালি সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়৷
নূর খান বলেন, ‘একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে একজনকে হত্যার ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ছাড়া এই ধরনের ঘটনায় আর কোনো গ্রেপ্তারের খবর আমার জানা নাই৷’
গুম কমিশন মঙ্গলবার জানিয়েছে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের কাছে প্রায় এক হাজার ৬০০ গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে৷ এগুলো গত সরকারের আমলের ঘটনা৷ এর মধ্যে ৪০০ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে৷ পর্যায়ক্রমে বাকিগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
৪০০ অভিযোগের মধ্যে ১৭২টি অভিযোগের সঙ্গে র্যাবের সংশ্লিষ্টতা আছে৷ কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৩৭টি অভিযোগের সঙ্গে৷ ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ৫৫টির সঙ্গে৷ প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৬টির সঙ্গে৷ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে ২৫টি অভিযোগের সঙ্গে৷
অন্যদিকে ২০০৪ সালে র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২০ বছরে অন্তত দুই হাজার ৯৫৪টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছে আসক।
মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোনো প্রক্রিয়া দেখছি না৷ আগের সরকারের আমলে হয়েছে, এখন আবার হচ্ছে৷ এটা তো জট পাকিয়ে যাচ্ছে৷ আগের বিচারই হচ্ছে না৷ এখনকার বিচার কে, কখন করবে?’
এলিনা খান মনে করেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে এই ধরনের অপরাধের বিচারের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন কমত৷ কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। আগে বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রভাবাধীন ছিল আর এখন বিচার ব্যবস্থার কাঠামোই নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত র্যাব ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে৷ তা-ও করা হচ্ছে না।’
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে ‘নতুন আলামত’ তুলে ধরে মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, ‘আগে করতো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, এখন সেটা মব জাস্টিসের নামে করা হচ্ছে; গণপিটুনির নামে হচ্ছে— এটা আরো ভয়াবহ আকারে এসেছে। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতেও নিহত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আসলে এইসব বন্ধ এবং বিচারের জন্য সরকারের কমিটমেন্ট খুব জরুরি। কিন্তু সেটা দৃশ্যমান নয়। বিচারের আওতায় আনা, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া খুব জরুরি৷’
বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘এই অল্প সময় (তিন মাসের) তুলনা করলে আগের সরকারের চেয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও মব জাস্টিস বেড়েছে। এটা হয়েছে সরকারের কমিটমেন্টের অভাবে। সরকার মুখে বলছে, কিন্তু কাজে করছে না। এর মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবাধিকার রক্ষা সুদূরপরাহত।’
আর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘মব জাস্টিসের নামে যা চলছে তা গ্রহণযোগ্য নয়৷ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। মানবাধিকার, মানুষের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার— এগুলো প্রতিষ্ঠা করতে হলে ওইসব অপরাধ বন্ধ করতে হবে। অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সময়ে যা দেখেছি, এখনো তা দেখতে চাই না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট না থাকলে এই সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ হবে না। এজন্যই তো আমরা দ্রুত নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য ঘটনা সম্পর্কে চেষ্টা করেও পুলিশ সদর দপ্তরের বক্তব্য জানা যায়নি৷
তবে এর আগে পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর ডয়চে ভেলেকে বলেছিলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠকে মব জাস্টিস বন্ধ করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। দেশের থানাসহ সব পুলিশ ইউনিটকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা কোথাও ঘটলে পুলিশকে দ্রুত খবর দিতে জনসাধারণকে বার বার অনুরোধ করা হচ্ছে। পুলিশ সর্বনিম্ন সময়ের মধ্যে রেসপন্স করবে। আর পুলিশ যদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটায় তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
২ মিনিট আগে
দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্
৫ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
১৭ মিনিট আগে
মেট্রোর র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করে
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।
খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।
ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।
ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।
আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।
খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।
ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।
ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।
আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূঞ্জীভূত ক্ষোভের জমিনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের ফসল হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস পার করতে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার র
০৬ নভেম্বর ২০২৪
দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্
৫ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
১৭ মিনিট আগে
মেট্রোর র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করে
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।
আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।
মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।
তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।
আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।
কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।
আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।
মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।
তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।
আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।
কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।
২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূঞ্জীভূত ক্ষোভের জমিনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের ফসল হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস পার করতে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার র
০৬ নভেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
২ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
১৭ মিনিট আগে
মেট্রোর র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করে
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর সমাজীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদার সুবিধায় ওই দায়িত্ব দিয়ে আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি আততায়ীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগরীর পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। ডিএমপির অধীনে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হাদি হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্তসংশ্লিষ্টদের এবং পরে আদালতে বিচারকালে বিচারসংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন টিমকে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর সমাজীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদার সুবিধায় ওই দায়িত্ব দিয়ে আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি আততায়ীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগরীর পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। ডিএমপির অধীনে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হাদি হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্তসংশ্লিষ্টদের এবং পরে আদালতে বিচারকালে বিচারসংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন টিমকে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূঞ্জীভূত ক্ষোভের জমিনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের ফসল হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস পার করতে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার র
০৬ নভেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
২ মিনিট আগে
দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্
৫ মিনিট আগে
মেট্রোর র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করে
১ ঘণ্টা আগেতৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা

মেট্রোর র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য র্যাপিড পাস অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে।
ডিটিসিএ সূত্র জানিয়েছে, এক মাস ধরে র্যাপিড পাস অ্যাপটি নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। অ্যাপটি তৈরি করে ইতিমধ্যে গুগলের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে গুগল বিভিন্ন ধাপে অ্যাপটির পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার আজ সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, র্যাপিড পাস অ্যাপটি মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী দুই–এক দিনের মধ্যে এটি জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এতে যাত্রীদের আরও বেশি সুবিধা হবে।
অ্যাপটি ব্যবহারের নিয়ম
ডিটিসিএ সূত্র জানায়, র্যাপিড পাস অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে যেসব গ্রাহক ইতিমধ্যে rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁরা একই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপে লগইন করতে পারবেন। লগইনের পর ব্যবহারকারী ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত অ্যামাউন্ট সেট করে রিচার্জের জন্য প্রসেস দিতে পারবেন। এ সময় ব্যাংকের কার্ডের পাশাপাশি বিকাশ ও নগদের মাধ্যমেও সহজে রিচার্জ করা যাবে।
অনলাইনে রিচার্জ সম্পন্ন হওয়ার পর র্যাপিড পাস বা এমআরটি পাস কার্ডটি মেট্রো স্টেশনে থাকা এভিএমে (অ্যাড ভ্যালু মেশিন) ট্যাগ করলেই রিচার্জ করা অর্থ কার্ডে অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে কার্ডে থাকা বর্তমান ব্যালেন্স, কোথায় কোথায় ভ্রমণ করা হয়েছে—এসব বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। একই সঙ্গে যদি ব্যবহারকারীর মোবাইলে নিয়ার–ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সুবিধা থাকে, তাহলে মোবাইলের নিচে র্যাপিড পাস কার্ড ধরলেই অ্যাপের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডে থাকা টাকার পরিমাণ মোবাইলের স্ক্রিনে দেখা যাবে।
ডিটিসিএ জানিয়েছে, র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জের সুবিধা নিশ্চিত করতে মেট্রোর ১৬টি স্টেশনে দুটি করে মোট ৩২টি এভিএম বসানো হয়েছে। যাত্রীরা অনলাইনে রিচার্জ করার পর স্টেশনে থাকা এভিএম মেশিনে কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ সক্রিয় হয়ে যাবে।
ডিটিসিএ সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৭ লাখ গ্রাহক র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ২ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, অর্থাৎ তাঁরা অনলাইনে রিচার্জ সুবিধা ব্যবহার করছেন।
ডিটিসিএ কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীদের সময় ও ঝামেলা কমাতেই অ্যাপের মাধ্যমে রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজেই অর্থ যোগ করা যাবে, ফলে যাতায়াত আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে। মেট্রোরেল চালুর পর থেকে যাত্রীরা স্বল্প সময়ে র্যাপিড পাস ব্যবহার করে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইন রিচার্জ যুক্ত হওয়ায় ডিজিটাল সেবার পরিধি আরও বাড়বে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৫ নভেম্বর মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার থেকে র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন রিচার্জ সেবা চালু করা হয়েছিল। সেই সময় প্রধান উপদেষ্টার সড়ক, সেতু ও রেলযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন।

মেট্রোর র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড গত মাস থেকে অনলাইনে রিচার্জের সুবিধা চালু হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঘরে বসেই মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ব্যবহার করে র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে রিচার্জ করতে পারছেন। এবার সেই সেবাকে আরও সহজ ও ব্যবহারবান্ধব করতে র্যাপিড পাসের জন্য একটি অ্যাপ প্রস্তুত করেছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য র্যাপিড পাস অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে।
ডিটিসিএ সূত্র জানিয়েছে, এক মাস ধরে র্যাপিড পাস অ্যাপটি নিয়ে কাজ করছে সংস্থাটি। অ্যাপটি তৈরি করে ইতিমধ্যে গুগলের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে গুগল বিভিন্ন ধাপে অ্যাপটির পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার আজ সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, র্যাপিড পাস অ্যাপটি মোটামুটি প্রস্তুত। আগামী দুই–এক দিনের মধ্যে এটি জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এতে যাত্রীদের আরও বেশি সুবিধা হবে।
অ্যাপটি ব্যবহারের নিয়ম
ডিটিসিএ সূত্র জানায়, র্যাপিড পাস অ্যাপ ব্যবহার করতে হলে যেসব গ্রাহক ইতিমধ্যে rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁরা একই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপে লগইন করতে পারবেন। লগইনের পর ব্যবহারকারী ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত অ্যামাউন্ট সেট করে রিচার্জের জন্য প্রসেস দিতে পারবেন। এ সময় ব্যাংকের কার্ডের পাশাপাশি বিকাশ ও নগদের মাধ্যমেও সহজে রিচার্জ করা যাবে।
অনলাইনে রিচার্জ সম্পন্ন হওয়ার পর র্যাপিড পাস বা এমআরটি পাস কার্ডটি মেট্রো স্টেশনে থাকা এভিএমে (অ্যাড ভ্যালু মেশিন) ট্যাগ করলেই রিচার্জ করা অর্থ কার্ডে অ্যাকটিভ হয়ে যাবে। পাশাপাশি অ্যাপের মাধ্যমে কার্ডে থাকা বর্তমান ব্যালেন্স, কোথায় কোথায় ভ্রমণ করা হয়েছে—এসব বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। একই সঙ্গে যদি ব্যবহারকারীর মোবাইলে নিয়ার–ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) সুবিধা থাকে, তাহলে মোবাইলের নিচে র্যাপিড পাস কার্ড ধরলেই অ্যাপের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্ডে থাকা টাকার পরিমাণ মোবাইলের স্ক্রিনে দেখা যাবে।
ডিটিসিএ জানিয়েছে, র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন রিচার্জের সুবিধা নিশ্চিত করতে মেট্রোর ১৬টি স্টেশনে দুটি করে মোট ৩২টি এভিএম বসানো হয়েছে। যাত্রীরা অনলাইনে রিচার্জ করার পর স্টেশনে থাকা এভিএম মেশিনে কার্ড স্পর্শ করলেই রিচার্জ সক্রিয় হয়ে যাবে।
ডিটিসিএ সূত্র অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৭ লাখ গ্রাহক র্যাপিড পাস ও এমআরটি পাস ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ২ লাখ ৩০ হাজার গ্রাহক rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন, অর্থাৎ তাঁরা অনলাইনে রিচার্জ সুবিধা ব্যবহার করছেন।
ডিটিসিএ কর্মকর্তারা জানান, যাত্রীদের সময় ও ঝামেলা কমাতেই অ্যাপের মাধ্যমে রিচার্জ সুবিধা চালু করা হচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজেই অর্থ যোগ করা যাবে, ফলে যাতায়াত আরও নিরবচ্ছিন্ন হবে। মেট্রোরেল চালুর পর থেকে যাত্রীরা স্বল্প সময়ে র্যাপিড পাস ব্যবহার করে যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন। অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইন রিচার্জ যুক্ত হওয়ায় ডিজিটাল সেবার পরিধি আরও বাড়বে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৫ নভেম্বর মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার থেকে র্যাপিড পাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন রিচার্জ সেবা চালু করা হয়েছিল। সেই সময় প্রধান উপদেষ্টার সড়ক, সেতু ও রেলযোগাযোগবিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যাপক সমালোচিত। এই সরকারের বিরুদ্ধে পূঞ্জীভূত ক্ষোভের জমিনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার অভুত্থানের ফসল হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার তিন মাস পার করতে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার র
০৬ নভেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।
২ মিনিট আগে
দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্
৫ মিনিট আগে
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।
১৭ মিনিট আগে