Ajker Patrika

তথ্য যাচাই ছাড়া টিকা বাড়াবে আরেক ঝুঁকি

আশিকুর রিমেল ও আজাদুল আদনান, ঢাকা
তথ্য যাচাই ছাড়া টিকা বাড়াবে আরেক ঝুঁকি

রাজধানীর কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে গত রোববার করোনার প্রথম ডোজের টিকা নেন ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম রেজা (৪৫)। টিকা নেওয়ার এক সপ্তাহ আগে সামান্য জ্বর ও ঠান্ডায় ভুগছিলেন তিনি। তবে তিন দিন পরই সেরে যাওয়ায় করোনার পরীক্ষা করাননি। টিকা নেওয়ার দিন তাঁর কোনো উপসর্গ ছিল না, কেন্দ্র থেকেও বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়নি। তিনি নিজেও জানেন না করোনামুক্ত হওয়ার চার সপ্তাহ পর টিকা নিতে হয়। 

রেজা বলেন, ‘নিবন্ধনের কাগজ দেখাইলাম, স্বাক্ষর নিয়ে টিকার জন্য পাঠিয়ে দিল।’ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম আলমগীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, শরীরে করোনার জীবাণু থাকা অবস্থায় কেউ যদি টিকা নেয়, তাহলে ভাইরাসটির কার্যকারিতা তীব্রভাবে বেড়ে যেতে পারে। তাই, অবশ্যই করোনামুক্ত হওয়ার অন্তত চার সপ্তাহ পর টিকা নিতে হবে।

টিকা দেওয়ার সময় করোনা আক্রান্ত বা এ-সংক্রান্ত তথ্য জানতে না চাওয়ার বিষয়ে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ সিহাব উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি দেখা হবে। যাঁরা ভ্যাকসিন কমিটিতে আছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি টিকা নিলে তাঁর শরীরে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। অথবা টিকার কার্যকারিতাও হারাতে পারে।
করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় বা সেরে ওঠার পর একটা নির্দিষ্ট সময়ের আগ পর্যন্ত করোনার টিকা নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। এ জন্য টিকার নিবন্ধনের সময় বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। ডায়াবেটিস, ক্যানসার, কিডনি ও উচ্চ রক্ষচাপের মতো রোগে আক্রান্ত কি না, সে তথ্যও নেওয়া হয়। এর বাইরে টিকা দেওয়ার সময়ও বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া আছে টিকাদান কর্মীদের। কিন্তু টিকা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না।

এই অবস্থায় টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করতে নিবন্ধন ছাড়াই টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ ওই সব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ে আরও শিথিলতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে টিকাদানের লক্ষ্য অর্জন কঠিন হতে পারে। কখনো কখনো ঝুঁকিতে পড়তে পারেন টিকাগ্রহীতা। ৭ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাচ্ছে গণটিকাদান কার্যক্রম। ওই দিন থেকে সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মতে, করোনামুক্ত হওয়ার চার সপ্তাহ পর টিকা নিতে পারবেন আক্রান্ত ব্যক্তি, তার আগে নয়। টিকা নিতে আসা ব্যক্তিকে এসব তথ্য জানাতে প্রতিটি কেন্দ্রে নির্দেশনাও দেওয়া আছে। কিন্তু ৯০ শতাংশের বেশি কেন্দ্রে সেই নির্দেশনার বাস্তবায়ন নেই।

এ ছাড়া টিকার নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে কিডনি, হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিসসহ করোনায় আক্রান্ত কি না এবং হলে কবে হয়েছেন, সে বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশনার কথা বলা হয়েছে। টিকা দেওয়ার সময় এসব বিষয়েও প্রায়ই জানতে চাওয়া হয় না। যারা টিকা নিচ্ছেন তাঁরাও খুব একটা সচেতন নন।

গত শনিবার (৩১ জুলাই) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেন সৌদিপ্রবাসী মো. মাজহারুল ইসলাম। তিনিও জানেন না টিকার নির্দেশনাটি। করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না–এমন প্রশ্নের জবাবে মাজহারুল জানান, পরীক্ষাই তো করা হয়নি। টিকা দেওয়ার সময়ও বুথ থেকে কেউ জানতে চায়নি।

একই চিত্র দেখা যায় রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও। প্রতিদিন টিকা নিতে ভিড় বাড়তে থাকায় বিষয়টি আরও এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে করেই বাড়ছে শঙ্কা।

ঢাকার বাইরেও রাজশাহী, রংপুর, কক্সবাজার, খুলনা, ঠাকুরগাঁও, গোপালগঞ্জ, পাবনাসহ অনেক জেলায় একই চিত্র পাওয়া যায়। রাজশাহী সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ১৬টি বুথে প্রতিদিন কয়েক শ মানুষ টিকা নিতে আসেন। কিন্তু প্রায় কারও কাছ থেকেই টিকাগ্রহীতা করোনায় আক্রান্ত কি না, কিংবা হলেও কবে হয়েছিলেন, এসব তথ্য জানতে চাওয়া হচ্ছে না।

বিষয়টি স্বীকার করে ওই কেন্দ্রের নার্স ইনচার্জ রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘এত মানুষের চাপ থাকে যে সব সময় জিজ্ঞেস করা হয়ে ওঠে না।’ এমন বাস্তবতা যখন দৃশ্যমান তখন করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গ্রামাঞ্চলেও শুরু করতে যাচ্ছে গণটিকাদান কার্যক্রম। কিন্তু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষই এখনো নমুনা পরীক্ষার বাইরে। তাঁরা জানেনই না কোভিডে আক্রান্ত কি না।

এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যদি কারও মধ্যে সামান্য পরিমাণে লক্ষণ থাকে এবং তিনি টিকা নেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর শরীরে টিকার কার্যকারিতা কমে যাবে। করোনায় আক্রান্ত কিন্তু লক্ষণ ছিল না–এমন কিছু মানুষকেও আমরা ঢাকায় টিকা নিতে দেখেছি। গ্রামে এই ঝুঁকিটা আরও বেশি। তাই তাদের উচিত হবে লক্ষণ থাকা অবস্থায় টিকা নেওয়া থেকে বিরত থাকা।’

এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত কোনো টিকাই শতভাগ কার্যকর নয়। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মত, যদি কোনো টিকা ৫০ ভাগের বেশি কার্যকরী হয়, তাহলে সেটি ব্যবহার করা যাবে। তার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, মডার্না ও ফাইজারের টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ সুরক্ষা দেবে অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। চীনের সিনোফার্ম দেবে ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, মডার্না ৯৪ শতাংশ এবং ফাইজার দেবে ৯৫ শতাংশ সুরক্ষা।
এমতাবস্থায় টিকা গ্রহণকারী ও প্রদানকারীর অসচেতনতার কারণে গণটিকার সফলতার বড় অংশই পণ্ড হয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে টিকা কেনা থেকে শুরু করে সংরক্ষণ, পরিবহনসহ যে ধরনের ব্যয় হচ্ছে, তা কিছুটা হলেও বৃথা যেতে পারে।

আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম আলমগীর হোসেন বলেন, সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। সেখানে জনে জনে জিজ্ঞাসা করা তো সম্ভব হবে না। তবে কারও যদি শারীরিক অবস্থা নিয়ে সন্দেহ থাকে, তাহলে তিনি টিকা নিতে পারবেন কি না, তা যেন কেন্দ্রে এসে জেনে নেন।

টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. ফরিদ হোসেন মিঞা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গ্রাম পর্যায়ে যেহেতু টিকাদান শুরু হবে, সেখানে কেউ যাতে করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় টিকা না নেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে। এ জন্য মাইকিং করার পাশাপাশি ও স্বাস্থ্য সহকারীদের জানানোর বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিষিদ্ধ দলের নেতারা আটকে যেতে পারেন তফসিলের শর্তে

তানিম আহমেদ, ঢাকা 
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাওয়া প্রার্থীদের নিষিদ্ধ কিংবা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন—এমন অঙ্গীকার করতে হবে। সঙ্গে দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্যও জমা দিতে হবে। নির্বাচনে মনোনয়ন ফরমে এমন বিধান রাখা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের এমন বিধানকে অস্পষ্ট মনে করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক দিনে একাধিক রাজনৈতিক নেতা দল বদল করেছেন। আবার কেউ কেউ দল বিলুপ্ত করে বড় দলে যোগ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন রাজনৈতিক দলের নেতারা অন্য কোনো দলে যোগ দিলে কী বিধান থাকবে, তা পরিষ্কার করা হয়নি।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. মো. আবদুল আলীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেন এবং কী কারণে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নির্বাচন কমিশনকে পরিষ্কার করতে হবে। যেহেতু এক দল থেকে আরেক দলে যোগদান করা নিষিদ্ধ নয়, এ রকম অনেক উদাহরণ গত কয়েক দিনে হয়েছে।’

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রার্থীকে বলতে হবে, তিনি কোনো নিষিদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন রাজনৈতিক দলের সদস্য নন।

পরে যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে বিষয়টি মিথ্যাচার হিসেবে গণ্য হবে। সে ক্ষেত্রে তিনি মিথ্যাবাদী।

কেউ নিষিদ্ধ দলের সঙ্গে জড়িত কি না, ইসি কীভাবে সেটি প্রমাণ করবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, ‘আপনারা (গণমাধ্যম) জানিয়ে দেবেন, উনি (প্রার্থী) মিথ্যা কথা বলছেন। এরপর ইসি তদন্ত করে দেখবে, অভিযোগটি সত্য নাকি মিথ্যা।’ সে ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে—জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘সেটা নির্ভর করবে অপরাধের মাত্রার ওপরে।’

কী কারণে এমন বিধান ‍যুক্ত করা হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, কর্তৃপক্ষ মনে করেছে, এবার এমন একটা অঙ্গীকারনামা থাকা ভালো।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। যেখানে ২৩ পাতার মনোনয়ন ফরম পূরণ করতে হবে প্রার্থীদের। যার শেষ দুই পাতার তফসিল-১ ও ২ প্রার্থীদের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হবে।

তফসিল-১ অঙ্গীকারনামায় দলীয় প্রার্থী নিষিদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা সমমর্যাদার পদধারী এমন দুজনকে স্বাক্ষর দিতে হবে। যেখানে রাজনৈতিক দলের নাম ও নিবন্ধন নম্বর দিতে হবে।

রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকারনামার ক্ষেত্রে বলা আছে, ‘আমার দল এবং দল মনোনীত সব প্রার্থী সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ বিধান মেনে চলব। দল বা দল মনোনীত কোনো প্রার্থী এই আচরণ বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে আইন ও বিধিমালার বিধান অনুযায়ী শাস্তি মেনে নিতে বাধ্য থাকব।’

প্রার্থীর অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, ‘আমি অঙ্গীকার করেছি, আমি কোনো নিষিদ্ধ বা নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই।’ প্রার্থীর স্বাক্ষরের সঙ্গে দুজন সাক্ষীর নাম, স্বাক্ষর ও এনআইডি নম্বর দিতে হবে।

আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী আইন সংশোধন করে বলা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলার অভিযোগপত্র গঠিত হলেই নির্বাচনে অযোগ্য হবেন অভিযুক্ত। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) বলা হয়েছে, ফেরারি আসামিরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেরারি আসামিদের নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষণার প্রতিফলন হচ্ছে মনোনয়ন ফরমে নতুন বিধান যুক্ত করা। আর এখন যেহেতু আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, তাই বিষয়টি বলা হয়েছে। দলটির নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের বাইরে রাখতেই এমন বিধান রাখা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের এমন উদ্যোগের সমালোচনা করেছে আওয়ামী লীগের গত তিন সরকারের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশ)। গতকাল দলের প্রার্থী ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেন দলের মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

সংবাদ সম্মেলনে শামীম হায়দার বলেন, ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের কর্মীদের মনোনয়ন না দেওয়ার বিধান অসাংবিধানিক। দল নিষিদ্ধ হলে তিনি স্বাভাবিকভাবে অন্য যেকোনো দলে আসতেই পারেন এবং ভোট করতে পারেন। এটা তো সাংবিধানিক অধিকার। তিনি সাজাপ্রাপ্ত ও নির্বাচনে অযোগ্য নন। ইসির এমন তফসিল অবিবেচনাপ্রসূত ও অসাংবিধানিক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা

সরকারের কোনো না কোনো অংশ এই হামলা ঘটতে দিয়েছে: নূরুল কবীর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫২
শনিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নূরুল কবির। ছবি: সংগৃহীত
শনিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বক্তব্য দেন সাংবাদিক নূরুল কবির। ছবি: সংগৃহীত

প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার এবং ছায়ানট ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি পরিকল্পিত এবং সরকারের কোনো না কোনো অংশের মদদেই এটি ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর।

আজ শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা কার্যালয়গুলোতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং ব্যাপক লুটপাট চালায়। বিশেষ করে প্রথম আলো কার্যালয় আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। একই রাতে ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সংহতি জানাতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হন সম্পাদক নূরুল কবীর। সাংবাদিক সমাজ এই ঘটনাকে ‘গণমাধ্যমের জন্য কালো দিন’ হিসেবে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

সম্মেলনে নূরুল কবীর বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে জানি, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানটকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এক-দুই দিন আগে থেকেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। কারা এই ঘোষণা দিয়েছে, তা এ দেশের মানুষ জানে এবং সরকারও জানে। ফৌজদারি অপরাধের এমন প্রকাশ্য ঘোষণার পরও সরকার তাদের গ্রেপ্তার করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সরকার হামলাকারীদের আগেভাগে থামায়নি বলেই আমরা মনে করি, সরকারের কোনো না কোনো অংশ এই ঘটনাটি ঘটতে দিয়েছে। একটি সংগঠিত শক্তি সেখানে গিয়ে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ইতিমধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে স্পষ্ট রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া গেছে।’

বিজেসি ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অনুষ্ঠানে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনেরা গণমাধ্যমের ওপর এ ধরনের হামলাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত বলে বর্ণনা করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন—সাবেক গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও ডেইলি স্টারের কনসালটিং এডিটর কামাল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিজেসি ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বিজেসি উপদেষ্টা খায়রুল আনোয়ার।

বক্তারা বলেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার যেকোনো চেষ্টা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি। এই হামলার ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে স্বাধীন সাংবাদিকতা ঝুঁকির মুখে পড়বে।

হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা করা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে সাংবাদিক নেতারা এই হামলার নেপথ্যের মূল পরিকল্পনাকারীদের খুঁজে বের করার এবং গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তারেক রহমান-জাইমার ভোটার হওয়া নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত রোববার: আখতার আহমেদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৭
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

তারেক রহমান ও জাইমা রহমানের ভোটার হওয়ার নথি রোববার কমিশনে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আজ শনিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান সিনিয়র সচিব।

আখতার আহমেদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর মেয়ে জাইমা রহমান গুলশান এলাকায় ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার হওয়ার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। আজকেই হয়তো তাঁদের এনআইডি নম্বর দেওয়া হবে। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর ভোটার হওয়ার জন্য কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। তাই আগামীকাল তাঁদের ভোটার হওয়ার নথি কমিশনে উপস্থাপন করা হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর মেয়ে জাইমা রহমান ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। আজ শনিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রথমে জাইমা রহমান এবং পরে তারেক রহমান এ দুই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কক্সবাজার-হাতিয়ায় সমুদ্রে মিসাইল ফায়ারিং পরিচালনা, নৌযান চলাচলে সতর্কতা আইএসপিআরের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৫৭
কক্সবাজার-হাতিয়ায় সমুদ্রে মিসাইল ফায়ারিং পরিচালনা, নৌযান চলাচলে সতর্কতা আইএসপিআরের

২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর কক্সবাজার ও হাতিয়ার মধ্যবর্তী সমুদ্র এলাকায় মাছ ধরার নৌকা, ট্রলারসহ সব ধরনের নৌযানকে অবস্থান ও চলাচল এড়িয়ে যেতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আজ শনিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে আইএসপিআর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগামী ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ বাংলাদেশ নৌবাহিনী কর্তৃক কক্সবাজার ও হাতিয়ার মধ্যবর্তী সমুদ্র এলাকায় মিসাইল ফায়ারিং পরিচালিত হবে। এ সময় জানমালের নিরাপত্তায় সকল নৌযান, মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উক্ত এলাকায় অবস্থান ও চলাচল পরিহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মারা গেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের কোচ, শোকাচ্ছন্ন বিপিএল

তারেক রহমানের পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল

আজকের রাশিফল: ভুঁড়িটা বাড়ছে—শরীরের দিকে নজর দিন, প্রাক্তনের মেসেজে রিপ্লাই দিলে বিপদ

কোন স্বার্থে মুসলিমপ্রধান সোমালিল্যান্ডকে সবার আগে স্বীকৃতি দিল ইসরায়েল

ফরিদপুরে জেমসের কনসার্ট পণ্ড, কী ঘটেছিল সেখানে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত