কামরুল হাসান

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি ফাইল পড়ছিলেন। জিনসের প্যান্ট আর টি-শার্ট পরা যুবককে ওসির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে লোকটি বললেন, এই নিন আপনার আসামি, শীর্ষ সন্ত্রাসী। ওসি চোখ কপালে তুলে যুবকের কাছে জানতে চাইলেন, কী নাম? যুবক নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললেন, কামাল পাশা। ওসি একবার বৃদ্ধের দিকে, আরেকবার যুবকের দিকে তাকালেন। কিছুই বলতে পারছেন না। ততক্ষণে ঝোড়ো গতিতে থানায় রটে গেছে, সরকারের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশা ‘সারেন্ডার’ করেছেন।
আগের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, থানা আর খেয়াঘাটে কোনো কথা গোপন থাকে না। মোহাম্মদপুর থানাতেও শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো, নিমেষে খবর পৌঁছে গেল ক্রাইম রিপোর্টারদের কানে। আমি যখন থানায় এলাম, ততক্ষণে কামাল পাশাকে হাজতে ঢোকানো হয়েছে। আর তাঁর বাবা লিয়াকত আলী ডিউটি অফিসারের সামনে নির্বিকার বসে আছেন।
ডিউটি অফিসার আর লিয়াকত আলীর মুখ থেকে আমি পুরো ঘটনা শুনলাম। মনে হলো, তাঁরা কিছুই গোপন করেননি। কিন্তু ওসির রুমে গিয়ে শুনি, এরই মধ্যে দৃশ্যপট বদলে গেছে। ওসি এখন বলছেন, তিনি বৃদ্ধকে চাপ দিয়ে তাঁর সন্ত্রাসী ছেলে কামাল পাশাকে আত্মসমর্পণ করাতে বাধ্য করেছেন। আরও বললেন, এটা নাকি আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ কৌশল। এ ঘটনার যাবতীয় কৃতিত্ব ওসির। তাঁর সঙ্গে আর তর্কে জড়ালাম না, পাছে তিক্ততা বাড়ে! ওসি আমাকে কামাল পাশার সঙ্গে কথার বলার অনুমতি দিলেন।
থানাহাজতের দিকে একটু উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশা দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, কেন আত্মসমর্পণ করলেন? তিনি চুপ করে থাকলেন। আবার একই প্রশ্ন করলাম। এবার তিনি বললেন, ‘ভাই, এটা না করলে আমার মা-বাবা সুইসাইড করবে। বলেন, আপনি হলে কী করতেন?’ আমি তাঁর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে একটার পর একটা প্রশ্ন করছি। মনে আছে, সেদিন তিনি প্রায় সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন।
এটা ছিল ২০০২ সালের ২০ মের বিকেল। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে তখন কামাল পাশার অনেক নামডাক। সব সময় অস্ত্রধারী সহযোগী নিয়ে চলাফেরা করেন। তবে তাঁর পরিচিতির আরেকটি কারণ ছিল, তিনি সব খুনই করেছিলেন দিনের বেলায়। শত শত লোকের উপস্থিতিতে। খুন করার পরমুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যেতেন। সম্ভবত প্রথমে তিনি একজন ঠিকাদারকে খুন করেছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২২ মে শাহবাগে পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ঠিকাদার আশিক ইকবালকে গুলি করে খুন করেন।
এ সময় কামালের সঙ্গে তাঁর সহযোগী রাশেদ মোস্তফা রতনও ছিলেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় শেরাটন হোটেলের সামনে এক সার্জেন্ট জীবনবাজি রেখে তাঁদের গতিরোধ করে আটক করেন। পরে কামাল পাশা জামিনে বেরিয়ে আসেন।
২০০০ সালের প্রথম দিকে উত্তরায় আরেক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন কামাল পাশা ও তাঁর লোকজন। বনানীর একজন ডিশ ব্যবসায়ীও তাঁর হাতে খুন হন।
২০০০ সালের মে মাসে মোহাম্মদপুরে আশরাফ হোসেন জুয়েল ও মোহাম্মদ আলী রিভেল নামের দুই ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেন কামাল। এরপরই পত্রপত্রিকায় তাঁর নাম বেশি বেশি আসতে থাকে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে কামাল পাশার নাম ছিল। তাঁকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার।
সেদিন থানায় কামাল পাশার সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, তিনি কীভাবে সন্ত্রাসী হলেন। কামাল পাশা বলছিলেন, ঢাকা কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে কিছুদিন একমি ল্যাবরেটরিজে চাকরি করেন। সেখানে এক সন্ত্রাসীর সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন। কিছুদিন পর সেই সন্ত্রাসী খুন হয়। এরপর তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা বন্ধ করে দেন।
জানতে চাইলাম, এত দিন গোপনে থাকতেন কোথায়? তিনি বললেন, মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে। এটা ছিল মোহাম্মদপুর থানার পাঁচ শ গজের মধ্যে। বললেন, আজ সকাল পর্যন্ত ওই হোস্টেলেই ছিলেন। কার রুমে থাকতেন? তিনি বললেন, এটা বলা ঠিক হবে না।
কামাল পাশা বলছিলেন, তিনি ছিলেন জোট সরকারের প্রয়াত এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ঘনিষ্ঠ। বিএনপির পুরো সময়ে তিনি পিন্টুর সহযোগিতা নিয়েই ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন বাস করেন কলকাতায়। সেখানে থাকার সময় জানতে পারেন, আরেক সন্ত্রাসী ইমনকে সে দেশের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এরপর তিনি কলকাতা ছেড়ে আজমির শরিফে চলে যান। সেখানে আরও কিছুদিন কাটান। পরে পিন্টুর সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে পিন্টুর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন। আমাকে বললেন, টেলিফোনে পিন্টু ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। ঢাকায় আসার পর নিরাপদ জায়গা না পেয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ঝাপড়াজানে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরে ঢাকায় ফিরে আসেন। এবার মোহাম্মদপুর থানার উল্টো দিকে গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট হোস্টেলের একটি রুমে পাকাপাকি আস্তানা গাড়েন। তাঁর কাছে জায়গাটি ছিল খুব নিরাপদ। সহজে কেউ সন্দেহ করত না।
বললাম, তাহলে আপনি ধরা দিতে রাজি হলেন কেন? কামাল বললেন, কয়েক দিন আগে বড় ভাই পারভেজ আহমেদকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। বাবার চাকরি নেই। পারভেজ ভাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি না থাকলে বাসার সবাই না খেয়ে থাকবে। এই অবস্থায় আব্বা ওসির কাছে কথা দিয়ে যান, আমি এলে তিনি পুলিশকে খবর দেবেন। সম্ভবত এ ধরনের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েই তিনি ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এরপর একদিন ভোরে আমি বাড়ি এলাম। সেদিন সবাই আমাকে নিয়ে বসলেন। তাঁরা আমাকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দিলেন। আমি প্রথমে রাজি হইনি। পরে মা-বাবা অনেক কান্নাকাটি করলেন। একপর্যায়ে মা বললেন, তিনি আত্মহত্যা করবেন। মায়ের এই কান্না আমার সহ্য হলো না। মনে হলো, মায়ের জন্য কিছু একটা করি। রাজি হয়ে গেলাম, দেখি কী আছে কপালে। আমি কামাল পাশার দিকে তাকালাম, তিনি হাজতের মেঝের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁর গলা ধরে এসেছে।
আত্মসমর্পণের পর কামাল পাশাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দেশের সব কাগজে তা ফলাও করে ছাপাও হয়। তিনটি খুনের মামলার আসামি হিসেবে পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেয়। এভাবে একের পর এক মামলায় তাঁকে আসামি হিসেবে দেখানো হতে থাকে। এগুলোর মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর ও রমনা থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলা এবং তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলা। এসব মামলায় তাঁর ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ স্থানান্তর করা হয়।
এরপর দিনে দিনে কামাল পাশা হারিয়ে যান। অনেক দিন তাঁর আর খোঁজ করিনি। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই শুনলাম, কামাল পাশা মারা গেছেন। কাশিমপুরের জেলার বলেছিলেন, কারাগারে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কামাল পাশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। রচিত হয় জীবনকাহিনির শেষ অধ্যায়।
অনেক দিন পর পুরোনো ডায়েরি খুঁজতে গিয়ে কামাল পাশার ইন্টারভিউর সেই নোটটা পেয়ে গেলাম। পড়তে গিয়ে মনে হলো, সেদিন থানা থেকে বের হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। বের হওয়ার পথে ডিউটি অফিসারের রুমে উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশার বাবা লিয়াকত আলী তখনো বসে আছেন। আমি আবার তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এবার আর তিনি কিছুই বললেন না। আমার দিকে তাকালেনও না। টলমল চোখে শূন্যের দিকে চেয়ে আছেন। আমার খুব ইচ্ছে করছিল, অসহায় এই বাবার সঙ্গে আরেকটু কথা বলি। কিন্তু অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে, তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। বেরিয়ে এলাম থানা থেকে। ‘সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।’
আরও পড়ুন:

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি ফাইল পড়ছিলেন। জিনসের প্যান্ট আর টি-শার্ট পরা যুবককে ওসির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে লোকটি বললেন, এই নিন আপনার আসামি, শীর্ষ সন্ত্রাসী। ওসি চোখ কপালে তুলে যুবকের কাছে জানতে চাইলেন, কী নাম? যুবক নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললেন, কামাল পাশা। ওসি একবার বৃদ্ধের দিকে, আরেকবার যুবকের দিকে তাকালেন। কিছুই বলতে পারছেন না। ততক্ষণে ঝোড়ো গতিতে থানায় রটে গেছে, সরকারের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশা ‘সারেন্ডার’ করেছেন।
আগের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, থানা আর খেয়াঘাটে কোনো কথা গোপন থাকে না। মোহাম্মদপুর থানাতেও শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো, নিমেষে খবর পৌঁছে গেল ক্রাইম রিপোর্টারদের কানে। আমি যখন থানায় এলাম, ততক্ষণে কামাল পাশাকে হাজতে ঢোকানো হয়েছে। আর তাঁর বাবা লিয়াকত আলী ডিউটি অফিসারের সামনে নির্বিকার বসে আছেন।
ডিউটি অফিসার আর লিয়াকত আলীর মুখ থেকে আমি পুরো ঘটনা শুনলাম। মনে হলো, তাঁরা কিছুই গোপন করেননি। কিন্তু ওসির রুমে গিয়ে শুনি, এরই মধ্যে দৃশ্যপট বদলে গেছে। ওসি এখন বলছেন, তিনি বৃদ্ধকে চাপ দিয়ে তাঁর সন্ত্রাসী ছেলে কামাল পাশাকে আত্মসমর্পণ করাতে বাধ্য করেছেন। আরও বললেন, এটা নাকি আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ কৌশল। এ ঘটনার যাবতীয় কৃতিত্ব ওসির। তাঁর সঙ্গে আর তর্কে জড়ালাম না, পাছে তিক্ততা বাড়ে! ওসি আমাকে কামাল পাশার সঙ্গে কথার বলার অনুমতি দিলেন।
থানাহাজতের দিকে একটু উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশা দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, কেন আত্মসমর্পণ করলেন? তিনি চুপ করে থাকলেন। আবার একই প্রশ্ন করলাম। এবার তিনি বললেন, ‘ভাই, এটা না করলে আমার মা-বাবা সুইসাইড করবে। বলেন, আপনি হলে কী করতেন?’ আমি তাঁর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে একটার পর একটা প্রশ্ন করছি। মনে আছে, সেদিন তিনি প্রায় সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন।
এটা ছিল ২০০২ সালের ২০ মের বিকেল। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে তখন কামাল পাশার অনেক নামডাক। সব সময় অস্ত্রধারী সহযোগী নিয়ে চলাফেরা করেন। তবে তাঁর পরিচিতির আরেকটি কারণ ছিল, তিনি সব খুনই করেছিলেন দিনের বেলায়। শত শত লোকের উপস্থিতিতে। খুন করার পরমুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যেতেন। সম্ভবত প্রথমে তিনি একজন ঠিকাদারকে খুন করেছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২২ মে শাহবাগে পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ঠিকাদার আশিক ইকবালকে গুলি করে খুন করেন।
এ সময় কামালের সঙ্গে তাঁর সহযোগী রাশেদ মোস্তফা রতনও ছিলেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় শেরাটন হোটেলের সামনে এক সার্জেন্ট জীবনবাজি রেখে তাঁদের গতিরোধ করে আটক করেন। পরে কামাল পাশা জামিনে বেরিয়ে আসেন।
২০০০ সালের প্রথম দিকে উত্তরায় আরেক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন কামাল পাশা ও তাঁর লোকজন। বনানীর একজন ডিশ ব্যবসায়ীও তাঁর হাতে খুন হন।
২০০০ সালের মে মাসে মোহাম্মদপুরে আশরাফ হোসেন জুয়েল ও মোহাম্মদ আলী রিভেল নামের দুই ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেন কামাল। এরপরই পত্রপত্রিকায় তাঁর নাম বেশি বেশি আসতে থাকে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে কামাল পাশার নাম ছিল। তাঁকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার।
সেদিন থানায় কামাল পাশার সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, তিনি কীভাবে সন্ত্রাসী হলেন। কামাল পাশা বলছিলেন, ঢাকা কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে কিছুদিন একমি ল্যাবরেটরিজে চাকরি করেন। সেখানে এক সন্ত্রাসীর সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন। কিছুদিন পর সেই সন্ত্রাসী খুন হয়। এরপর তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা বন্ধ করে দেন।
জানতে চাইলাম, এত দিন গোপনে থাকতেন কোথায়? তিনি বললেন, মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে। এটা ছিল মোহাম্মদপুর থানার পাঁচ শ গজের মধ্যে। বললেন, আজ সকাল পর্যন্ত ওই হোস্টেলেই ছিলেন। কার রুমে থাকতেন? তিনি বললেন, এটা বলা ঠিক হবে না।
কামাল পাশা বলছিলেন, তিনি ছিলেন জোট সরকারের প্রয়াত এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ঘনিষ্ঠ। বিএনপির পুরো সময়ে তিনি পিন্টুর সহযোগিতা নিয়েই ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন বাস করেন কলকাতায়। সেখানে থাকার সময় জানতে পারেন, আরেক সন্ত্রাসী ইমনকে সে দেশের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এরপর তিনি কলকাতা ছেড়ে আজমির শরিফে চলে যান। সেখানে আরও কিছুদিন কাটান। পরে পিন্টুর সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে পিন্টুর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন। আমাকে বললেন, টেলিফোনে পিন্টু ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। ঢাকায় আসার পর নিরাপদ জায়গা না পেয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ঝাপড়াজানে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরে ঢাকায় ফিরে আসেন। এবার মোহাম্মদপুর থানার উল্টো দিকে গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট হোস্টেলের একটি রুমে পাকাপাকি আস্তানা গাড়েন। তাঁর কাছে জায়গাটি ছিল খুব নিরাপদ। সহজে কেউ সন্দেহ করত না।
বললাম, তাহলে আপনি ধরা দিতে রাজি হলেন কেন? কামাল বললেন, কয়েক দিন আগে বড় ভাই পারভেজ আহমেদকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। বাবার চাকরি নেই। পারভেজ ভাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি না থাকলে বাসার সবাই না খেয়ে থাকবে। এই অবস্থায় আব্বা ওসির কাছে কথা দিয়ে যান, আমি এলে তিনি পুলিশকে খবর দেবেন। সম্ভবত এ ধরনের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েই তিনি ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এরপর একদিন ভোরে আমি বাড়ি এলাম। সেদিন সবাই আমাকে নিয়ে বসলেন। তাঁরা আমাকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দিলেন। আমি প্রথমে রাজি হইনি। পরে মা-বাবা অনেক কান্নাকাটি করলেন। একপর্যায়ে মা বললেন, তিনি আত্মহত্যা করবেন। মায়ের এই কান্না আমার সহ্য হলো না। মনে হলো, মায়ের জন্য কিছু একটা করি। রাজি হয়ে গেলাম, দেখি কী আছে কপালে। আমি কামাল পাশার দিকে তাকালাম, তিনি হাজতের মেঝের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁর গলা ধরে এসেছে।
আত্মসমর্পণের পর কামাল পাশাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দেশের সব কাগজে তা ফলাও করে ছাপাও হয়। তিনটি খুনের মামলার আসামি হিসেবে পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেয়। এভাবে একের পর এক মামলায় তাঁকে আসামি হিসেবে দেখানো হতে থাকে। এগুলোর মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর ও রমনা থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলা এবং তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলা। এসব মামলায় তাঁর ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ স্থানান্তর করা হয়।
এরপর দিনে দিনে কামাল পাশা হারিয়ে যান। অনেক দিন তাঁর আর খোঁজ করিনি। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই শুনলাম, কামাল পাশা মারা গেছেন। কাশিমপুরের জেলার বলেছিলেন, কারাগারে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কামাল পাশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। রচিত হয় জীবনকাহিনির শেষ অধ্যায়।
অনেক দিন পর পুরোনো ডায়েরি খুঁজতে গিয়ে কামাল পাশার ইন্টারভিউর সেই নোটটা পেয়ে গেলাম। পড়তে গিয়ে মনে হলো, সেদিন থানা থেকে বের হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। বের হওয়ার পথে ডিউটি অফিসারের রুমে উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশার বাবা লিয়াকত আলী তখনো বসে আছেন। আমি আবার তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এবার আর তিনি কিছুই বললেন না। আমার দিকে তাকালেনও না। টলমল চোখে শূন্যের দিকে চেয়ে আছেন। আমার খুব ইচ্ছে করছিল, অসহায় এই বাবার সঙ্গে আরেকটু কথা বলি। কিন্তু অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে, তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। বেরিয়ে এলাম থানা থেকে। ‘সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।’
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি ফাইল পড়ছিলেন। জিনসের প্যান্ট আর টি-শার্ট পরা যুবককে ওসির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে লোকটি বললেন, এই নিন আপনার আসামি, শীর্ষ সন্ত্রাসী। ওসি চোখ কপালে তুলে যুবকের কাছে জানতে চাইলেন, কী নাম? যুবক নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললেন, কামাল পাশা। ওসি একবার বৃদ্ধের দিকে, আরেকবার যুবকের দিকে তাকালেন। কিছুই বলতে পারছেন না। ততক্ষণে ঝোড়ো গতিতে থানায় রটে গেছে, সরকারের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশা ‘সারেন্ডার’ করেছেন।
আগের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, থানা আর খেয়াঘাটে কোনো কথা গোপন থাকে না। মোহাম্মদপুর থানাতেও শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো, নিমেষে খবর পৌঁছে গেল ক্রাইম রিপোর্টারদের কানে। আমি যখন থানায় এলাম, ততক্ষণে কামাল পাশাকে হাজতে ঢোকানো হয়েছে। আর তাঁর বাবা লিয়াকত আলী ডিউটি অফিসারের সামনে নির্বিকার বসে আছেন।
ডিউটি অফিসার আর লিয়াকত আলীর মুখ থেকে আমি পুরো ঘটনা শুনলাম। মনে হলো, তাঁরা কিছুই গোপন করেননি। কিন্তু ওসির রুমে গিয়ে শুনি, এরই মধ্যে দৃশ্যপট বদলে গেছে। ওসি এখন বলছেন, তিনি বৃদ্ধকে চাপ দিয়ে তাঁর সন্ত্রাসী ছেলে কামাল পাশাকে আত্মসমর্পণ করাতে বাধ্য করেছেন। আরও বললেন, এটা নাকি আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ কৌশল। এ ঘটনার যাবতীয় কৃতিত্ব ওসির। তাঁর সঙ্গে আর তর্কে জড়ালাম না, পাছে তিক্ততা বাড়ে! ওসি আমাকে কামাল পাশার সঙ্গে কথার বলার অনুমতি দিলেন।
থানাহাজতের দিকে একটু উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশা দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, কেন আত্মসমর্পণ করলেন? তিনি চুপ করে থাকলেন। আবার একই প্রশ্ন করলাম। এবার তিনি বললেন, ‘ভাই, এটা না করলে আমার মা-বাবা সুইসাইড করবে। বলেন, আপনি হলে কী করতেন?’ আমি তাঁর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে একটার পর একটা প্রশ্ন করছি। মনে আছে, সেদিন তিনি প্রায় সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন।
এটা ছিল ২০০২ সালের ২০ মের বিকেল। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে তখন কামাল পাশার অনেক নামডাক। সব সময় অস্ত্রধারী সহযোগী নিয়ে চলাফেরা করেন। তবে তাঁর পরিচিতির আরেকটি কারণ ছিল, তিনি সব খুনই করেছিলেন দিনের বেলায়। শত শত লোকের উপস্থিতিতে। খুন করার পরমুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যেতেন। সম্ভবত প্রথমে তিনি একজন ঠিকাদারকে খুন করেছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২২ মে শাহবাগে পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ঠিকাদার আশিক ইকবালকে গুলি করে খুন করেন।
এ সময় কামালের সঙ্গে তাঁর সহযোগী রাশেদ মোস্তফা রতনও ছিলেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় শেরাটন হোটেলের সামনে এক সার্জেন্ট জীবনবাজি রেখে তাঁদের গতিরোধ করে আটক করেন। পরে কামাল পাশা জামিনে বেরিয়ে আসেন।
২০০০ সালের প্রথম দিকে উত্তরায় আরেক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন কামাল পাশা ও তাঁর লোকজন। বনানীর একজন ডিশ ব্যবসায়ীও তাঁর হাতে খুন হন।
২০০০ সালের মে মাসে মোহাম্মদপুরে আশরাফ হোসেন জুয়েল ও মোহাম্মদ আলী রিভেল নামের দুই ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেন কামাল। এরপরই পত্রপত্রিকায় তাঁর নাম বেশি বেশি আসতে থাকে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে কামাল পাশার নাম ছিল। তাঁকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার।
সেদিন থানায় কামাল পাশার সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, তিনি কীভাবে সন্ত্রাসী হলেন। কামাল পাশা বলছিলেন, ঢাকা কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে কিছুদিন একমি ল্যাবরেটরিজে চাকরি করেন। সেখানে এক সন্ত্রাসীর সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন। কিছুদিন পর সেই সন্ত্রাসী খুন হয়। এরপর তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা বন্ধ করে দেন।
জানতে চাইলাম, এত দিন গোপনে থাকতেন কোথায়? তিনি বললেন, মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে। এটা ছিল মোহাম্মদপুর থানার পাঁচ শ গজের মধ্যে। বললেন, আজ সকাল পর্যন্ত ওই হোস্টেলেই ছিলেন। কার রুমে থাকতেন? তিনি বললেন, এটা বলা ঠিক হবে না।
কামাল পাশা বলছিলেন, তিনি ছিলেন জোট সরকারের প্রয়াত এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ঘনিষ্ঠ। বিএনপির পুরো সময়ে তিনি পিন্টুর সহযোগিতা নিয়েই ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন বাস করেন কলকাতায়। সেখানে থাকার সময় জানতে পারেন, আরেক সন্ত্রাসী ইমনকে সে দেশের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এরপর তিনি কলকাতা ছেড়ে আজমির শরিফে চলে যান। সেখানে আরও কিছুদিন কাটান। পরে পিন্টুর সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে পিন্টুর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন। আমাকে বললেন, টেলিফোনে পিন্টু ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। ঢাকায় আসার পর নিরাপদ জায়গা না পেয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ঝাপড়াজানে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরে ঢাকায় ফিরে আসেন। এবার মোহাম্মদপুর থানার উল্টো দিকে গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট হোস্টেলের একটি রুমে পাকাপাকি আস্তানা গাড়েন। তাঁর কাছে জায়গাটি ছিল খুব নিরাপদ। সহজে কেউ সন্দেহ করত না।
বললাম, তাহলে আপনি ধরা দিতে রাজি হলেন কেন? কামাল বললেন, কয়েক দিন আগে বড় ভাই পারভেজ আহমেদকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। বাবার চাকরি নেই। পারভেজ ভাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি না থাকলে বাসার সবাই না খেয়ে থাকবে। এই অবস্থায় আব্বা ওসির কাছে কথা দিয়ে যান, আমি এলে তিনি পুলিশকে খবর দেবেন। সম্ভবত এ ধরনের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েই তিনি ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এরপর একদিন ভোরে আমি বাড়ি এলাম। সেদিন সবাই আমাকে নিয়ে বসলেন। তাঁরা আমাকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দিলেন। আমি প্রথমে রাজি হইনি। পরে মা-বাবা অনেক কান্নাকাটি করলেন। একপর্যায়ে মা বললেন, তিনি আত্মহত্যা করবেন। মায়ের এই কান্না আমার সহ্য হলো না। মনে হলো, মায়ের জন্য কিছু একটা করি। রাজি হয়ে গেলাম, দেখি কী আছে কপালে। আমি কামাল পাশার দিকে তাকালাম, তিনি হাজতের মেঝের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁর গলা ধরে এসেছে।
আত্মসমর্পণের পর কামাল পাশাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দেশের সব কাগজে তা ফলাও করে ছাপাও হয়। তিনটি খুনের মামলার আসামি হিসেবে পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেয়। এভাবে একের পর এক মামলায় তাঁকে আসামি হিসেবে দেখানো হতে থাকে। এগুলোর মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর ও রমনা থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলা এবং তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলা। এসব মামলায় তাঁর ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ স্থানান্তর করা হয়।
এরপর দিনে দিনে কামাল পাশা হারিয়ে যান। অনেক দিন তাঁর আর খোঁজ করিনি। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই শুনলাম, কামাল পাশা মারা গেছেন। কাশিমপুরের জেলার বলেছিলেন, কারাগারে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কামাল পাশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। রচিত হয় জীবনকাহিনির শেষ অধ্যায়।
অনেক দিন পর পুরোনো ডায়েরি খুঁজতে গিয়ে কামাল পাশার ইন্টারভিউর সেই নোটটা পেয়ে গেলাম। পড়তে গিয়ে মনে হলো, সেদিন থানা থেকে বের হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। বের হওয়ার পথে ডিউটি অফিসারের রুমে উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশার বাবা লিয়াকত আলী তখনো বসে আছেন। আমি আবার তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এবার আর তিনি কিছুই বললেন না। আমার দিকে তাকালেনও না। টলমল চোখে শূন্যের দিকে চেয়ে আছেন। আমার খুব ইচ্ছে করছিল, অসহায় এই বাবার সঙ্গে আরেকটু কথা বলি। কিন্তু অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে, তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। বেরিয়ে এলাম থানা থেকে। ‘সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।’
আরও পড়ুন:

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি ফাইল পড়ছিলেন। জিনসের প্যান্ট আর টি-শার্ট পরা যুবককে ওসির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে লোকটি বললেন, এই নিন আপনার আসামি, শীর্ষ সন্ত্রাসী। ওসি চোখ কপালে তুলে যুবকের কাছে জানতে চাইলেন, কী নাম? যুবক নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললেন, কামাল পাশা। ওসি একবার বৃদ্ধের দিকে, আরেকবার যুবকের দিকে তাকালেন। কিছুই বলতে পারছেন না। ততক্ষণে ঝোড়ো গতিতে থানায় রটে গেছে, সরকারের পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশা ‘সারেন্ডার’ করেছেন।
আগের দিনের পুলিশ কর্মকর্তারা বলতেন, থানা আর খেয়াঘাটে কোনো কথা গোপন থাকে না। মোহাম্মদপুর থানাতেও শেষ পর্যন্ত তা-ই হলো, নিমেষে খবর পৌঁছে গেল ক্রাইম রিপোর্টারদের কানে। আমি যখন থানায় এলাম, ততক্ষণে কামাল পাশাকে হাজতে ঢোকানো হয়েছে। আর তাঁর বাবা লিয়াকত আলী ডিউটি অফিসারের সামনে নির্বিকার বসে আছেন।
ডিউটি অফিসার আর লিয়াকত আলীর মুখ থেকে আমি পুরো ঘটনা শুনলাম। মনে হলো, তাঁরা কিছুই গোপন করেননি। কিন্তু ওসির রুমে গিয়ে শুনি, এরই মধ্যে দৃশ্যপট বদলে গেছে। ওসি এখন বলছেন, তিনি বৃদ্ধকে চাপ দিয়ে তাঁর সন্ত্রাসী ছেলে কামাল পাশাকে আত্মসমর্পণ করাতে বাধ্য করেছেন। আরও বললেন, এটা নাকি আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের বিশেষ কৌশল। এ ঘটনার যাবতীয় কৃতিত্ব ওসির। তাঁর সঙ্গে আর তর্কে জড়ালাম না, পাছে তিক্ততা বাড়ে! ওসি আমাকে কামাল পাশার সঙ্গে কথার বলার অনুমতি দিলেন।
থানাহাজতের দিকে একটু উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশা দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, কেন আত্মসমর্পণ করলেন? তিনি চুপ করে থাকলেন। আবার একই প্রশ্ন করলাম। এবার তিনি বললেন, ‘ভাই, এটা না করলে আমার মা-বাবা সুইসাইড করবে। বলেন, আপনি হলে কী করতেন?’ আমি তাঁর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে একটার পর একটা প্রশ্ন করছি। মনে আছে, সেদিন তিনি প্রায় সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন।
এটা ছিল ২০০২ সালের ২০ মের বিকেল। ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে তখন কামাল পাশার অনেক নামডাক। সব সময় অস্ত্রধারী সহযোগী নিয়ে চলাফেরা করেন। তবে তাঁর পরিচিতির আরেকটি কারণ ছিল, তিনি সব খুনই করেছিলেন দিনের বেলায়। শত শত লোকের উপস্থিতিতে। খুন করার পরমুহূর্তেই হাওয়া হয়ে যেতেন। সম্ভবত প্রথমে তিনি একজন ঠিকাদারকে খুন করেছিলেন। ১৯৯৭ সালের ২২ মে শাহবাগে পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) ঠিকাদার আশিক ইকবালকে গুলি করে খুন করেন।
এ সময় কামালের সঙ্গে তাঁর সহযোগী রাশেদ মোস্তফা রতনও ছিলেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় শেরাটন হোটেলের সামনে এক সার্জেন্ট জীবনবাজি রেখে তাঁদের গতিরোধ করে আটক করেন। পরে কামাল পাশা জামিনে বেরিয়ে আসেন।
২০০০ সালের প্রথম দিকে উত্তরায় আরেক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলেন কামাল পাশা ও তাঁর লোকজন। বনানীর একজন ডিশ ব্যবসায়ীও তাঁর হাতে খুন হন।
২০০০ সালের মে মাসে মোহাম্মদপুরে আশরাফ হোসেন জুয়েল ও মোহাম্মদ আলী রিভেল নামের দুই ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খুন করেন কামাল। এরপরই পত্রপত্রিকায় তাঁর নাম বেশি বেশি আসতে থাকে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়, তাতে কামাল পাশার নাম ছিল। তাঁকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল সরকার।
সেদিন থানায় কামাল পাশার সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করছিলাম, তিনি কীভাবে সন্ত্রাসী হলেন। কামাল পাশা বলছিলেন, ঢাকা কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি করতেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে কিছুদিন একমি ল্যাবরেটরিজে চাকরি করেন। সেখানে এক সন্ত্রাসীর সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়েন। কিছুদিন পর সেই সন্ত্রাসী খুন হয়। এরপর তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা বন্ধ করে দেন।
জানতে চাইলাম, এত দিন গোপনে থাকতেন কোথায়? তিনি বললেন, মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে। এটা ছিল মোহাম্মদপুর থানার পাঁচ শ গজের মধ্যে। বললেন, আজ সকাল পর্যন্ত ওই হোস্টেলেই ছিলেন। কার রুমে থাকতেন? তিনি বললেন, এটা বলা ঠিক হবে না।
কামাল পাশা বলছিলেন, তিনি ছিলেন জোট সরকারের প্রয়াত এমপি নাসিরউদ্দীন পিন্টুর ঘনিষ্ঠ। বিএনপির পুরো সময়ে তিনি পিন্টুর সহযোগিতা নিয়েই ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ভারতে পালিয়ে যান। কিছুদিন বাস করেন কলকাতায়। সেখানে থাকার সময় জানতে পারেন, আরেক সন্ত্রাসী ইমনকে সে দেশের পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এরপর তিনি কলকাতা ছেড়ে আজমির শরিফে চলে যান। সেখানে আরও কিছুদিন কাটান। পরে পিন্টুর সঙ্গে কথা বলে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকায় এসে পিন্টুর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছিলেন। আমাকে বললেন, টেলিফোনে পিন্টু ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হতো। ঢাকায় আসার পর নিরাপদ জায়গা না পেয়ে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ঝাপড়াজানে গ্রামের বাড়িতে চলে যান। পরে ঢাকায় ফিরে আসেন। এবার মোহাম্মদপুর থানার উল্টো দিকে গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট হোস্টেলের একটি রুমে পাকাপাকি আস্তানা গাড়েন। তাঁর কাছে জায়গাটি ছিল খুব নিরাপদ। সহজে কেউ সন্দেহ করত না।
বললাম, তাহলে আপনি ধরা দিতে রাজি হলেন কেন? কামাল বললেন, কয়েক দিন আগে বড় ভাই পারভেজ আহমেদকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। বাবার চাকরি নেই। পারভেজ ভাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি না থাকলে বাসার সবাই না খেয়ে থাকবে। এই অবস্থায় আব্বা ওসির কাছে কথা দিয়ে যান, আমি এলে তিনি পুলিশকে খবর দেবেন। সম্ভবত এ ধরনের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েই তিনি ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। এরপর একদিন ভোরে আমি বাড়ি এলাম। সেদিন সবাই আমাকে নিয়ে বসলেন। তাঁরা আমাকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শ দিলেন। আমি প্রথমে রাজি হইনি। পরে মা-বাবা অনেক কান্নাকাটি করলেন। একপর্যায়ে মা বললেন, তিনি আত্মহত্যা করবেন। মায়ের এই কান্না আমার সহ্য হলো না। মনে হলো, মায়ের জন্য কিছু একটা করি। রাজি হয়ে গেলাম, দেখি কী আছে কপালে। আমি কামাল পাশার দিকে তাকালাম, তিনি হাজতের মেঝের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাঁর গলা ধরে এসেছে।
আত্মসমর্পণের পর কামাল পাশাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দেশের সব কাগজে তা ফলাও করে ছাপাও হয়। তিনটি খুনের মামলার আসামি হিসেবে পুলিশ তাঁকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নেয়। এভাবে একের পর এক মামলায় তাঁকে আসামি হিসেবে দেখানো হতে থাকে। এগুলোর মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর ও রমনা থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলা এবং তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলা। এসব মামলায় তাঁর ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট তাঁকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ স্থানান্তর করা হয়।
এরপর দিনে দিনে কামাল পাশা হারিয়ে যান। অনেক দিন তাঁর আর খোঁজ করিনি। ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই শুনলাম, কামাল পাশা মারা গেছেন। কাশিমপুরের জেলার বলেছিলেন, কারাগারে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কামাল পাশাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। রচিত হয় জীবনকাহিনির শেষ অধ্যায়।
অনেক দিন পর পুরোনো ডায়েরি খুঁজতে গিয়ে কামাল পাশার ইন্টারভিউর সেই নোটটা পেয়ে গেলাম। পড়তে গিয়ে মনে হলো, সেদিন থানা থেকে বের হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। বের হওয়ার পথে ডিউটি অফিসারের রুমে উঁকি দিয়ে দেখি, কামাল পাশার বাবা লিয়াকত আলী তখনো বসে আছেন। আমি আবার তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। এবার আর তিনি কিছুই বললেন না। আমার দিকে তাকালেনও না। টলমল চোখে শূন্যের দিকে চেয়ে আছেন। আমার খুব ইচ্ছে করছিল, অসহায় এই বাবার সঙ্গে আরেকটু কথা বলি। কিন্তু অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে, তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে। বেরিয়ে এলাম থানা থেকে। ‘সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।’
আরও পড়ুন:

গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি
২১ জানুয়ারি ২০২৩
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি
২১ জানুয়ারি ২০২৩
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি
২১ জানুয়ারি ২০২৩
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিকশাটি এসে থামল থানার ফটকের সামনে। দুই যাত্রীর একজন যুবক, অন্যজন ষাটোর্ধ্ব। যুবকের একটি হাত আলগোছে ধরে আছেন বয়স্ক লোকটি। কোনো রকম জোর-জবরদস্তি নেই। রিকশা থেকে নেমে দুজনে হেঁটে ভেতরে ঢুকলেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি তখন মুখ গুঁজে একটি
২১ জানুয়ারি ২০২৩
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে