বাসস, ঢাকা

দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আত্মগোপনে থাকা সাবেক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ। স্ত্রী-কন্যা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ নামে-বেনামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেখে রীতিমতো চোখ যেন কপালে উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মককর্তাদের।
বাসস’র হাতে আসা ব্যাংক হিসাবে তথ্যে দেখা যায়, হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরান ফাতেমা, মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ ও তাদের নামীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ৭০টি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। সেসব একাউন্টগুলো থেকে প্রায় সাড়ে ৭ শত কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই ব্যাংক হিসাবগুলোতে বর্তমানে স্থিতি আছে ২৩ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার ২০২ টাকা। দেশের মেঘনা ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউিরিটি ইসলামি ব্যাংক, মিউচ্যুাল ট্রাস্ট ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, পুবালী ব্যাংকসহ আরো কয়েকটি ব্যাংকে এই লেনদেন হয়েছে। যে সব ব্যাংকে হিসাবগুলো পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে গ্লোবাল ইসলামি ব্যংকে ১৬টি, মেঘনা ব্যাংকে ১৭টি, এবি ব্যাংকে নয়টি, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে দু’টি, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকে ১৮টি জনতা ব্যাংকে একটি, ইউনিয়ন ব্যাংকে চারটি এবং পুবালী ব্যাংকে একটি একাউন্ট। অথচ হাছান মাহমুদ ও স্ত্রীর নুরান ফাতেমার আয়কর ফাইলের সঙ্গে এসব আয় সঙ্গতিপূর্ণ নয়। হিসাব কষে দেখা যায়, আয়কর ফাইলের তথ্যের চেয়ে বর্তমানে খুঁজে পাওয়া সম্পদ অর্জনের হার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার গুণ বেশি।
হাছান মাহমুদের স্ত্রী কন্যা ছাড়াও তার দু’ভাই এরশাদ মাহমুদ এবং খালেদ মাহমুদের নামেও বিপুল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ গড়েছেন। তাদের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় জমি দখল, বন বিভাগের পাহাড় দখল, বাংলো বাড়ি ও বাগান বাড়ি নির্মাণ, পুকুর কেটে মৎস্য চাষ, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অট্টালিকা ভবন ও ফ্ল্যাট এর মালিকানা, আবুধাবির আজমান এলাকায় বিশাল জায়গা নিয়ে রিসোর্ট তৈরির মতো বিভিন্ন অভিযোগ জমা হচ্ছে।
হাছান মাহমুদ ও পরিবারের সদস্যদের নামে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান টিম। টিমের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে, উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-পরিচালক কমলেশ মন্ডল, সহকারী পরিচালক আল আমিন, সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম। তারা দেশে ও দেশের বাইরে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে। যা যাছাই বাছাই করা হচ্ছে।
হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগের টানা ১৬ বছরের শাসনামলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময় ২৪ এর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে আত্নগোপনে চলে যান।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, হাছান মাহমুদ মন্ত্রী থাকা অবস্থায় স্ত্রী নুরান ফাতেমাকে জাহাজ ব্যবসায়ী হিসেবে লাইসেন্স পেতে সহায়তা করেছেন। একটি কন্টেইনার জাহাজসহ দু’টি জাহাজ নির্মাণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামের এক জাহাজ তৈরি প্রতিষ্ঠান এফএমসি গ্রুপ’র পক্ষ থেকে সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এর স্ত্রী নুরান ফাতেমাসহ সাতজনের নামোল্লেখ করে ১৯জনের বিরুদ্ধে জাহাজ নির্মাণের চুক্তির টাকা পরিশোধ না করা এবং হামলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে। মামলায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পানিতে জাহাজ ভাসানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক অনুসন্ধানকালে অভিযোগ পেয়েছে, হাছান মাহমুদ বন ও পরিবেশ মন্ত্রী থাকাকালীন রাতারাতি নিজের স্ত্রীকে জাহাজের লাইসেন্স দিয়ে জাহাজ ব্যবসায়ী বানিয়ে দেন। জাহাজ তৈরির জন্য রূপালী ব্যাংক থেকে ১২ কোটি টাকা গ্রহণ করলেও তা পরিশোধ না করায় এখন সুদাসলে সাড়ে ১৯ কোটি টাকা হয়েছে।
হাছান মাহমুদের একমাত্র কন্যা নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের জন্ম ২০০০ সালের ৭ অক্টোবর। সেই হিসেবে জুমাইনার বয়স ২৪ বছর ৪ মাস। জুমাইনার নামে মেঘনা ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউিরিটি ইসলামি ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকে একক নামে একাউন্ট রয়েছে চারটি। এসব একাউন্টে লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা রয়েছে ৯৬ লাখ টাকা। দি ডেইলি পিপলস লাইফ নামে একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রকাশক নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ। পত্রিকাটির সম্পাদক হিসাবে রয়েছেন আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া। পিতা হাছান মাহমুদ তথ্যমন্ত্রী থাকার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই পত্রিকার ডিক্লারেশন নেয়া হয়েছে। দি ডেইলি পিপলস লাইফ পত্রিকার নামে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের বনশ্রী শাখায় একটি একাউন্ট খোলা হয়েছে ২০২৩ সালের ৫ জুন। পত্রিকার নামে খোলা এই একাউন্টে লেনদেন হয়েছে ৭২ লাখ ১৬ হাজার ৫১৬ টাকা। জমা রয়েছে ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৪ টাকা। অথচ আয়কর প্রদানের কোনো নথির তথ্য পাওয়া যায়নি।
দুদকের তদন্তে হাছান মাহমুদের নামে ছয়টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। সবগুলো একাউন্ট খোলা হয়েছে মেঘনা ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক চট্টগ্রামে বিভিন্ন ব্রাঞ্চে। হিসাবগুলোর মধ্যে রয়েছে- এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের পোর্টকানেক্টিং শাখার একাউন্ট নম্বর- ৪১২৭-০৭১৬৬০২৮২, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, চট্টগ্রামের নবাব সিরাজদৌলা রোড় শাখার একাউন্ট নম্বর-১১১১০০০৫৫৮৪৭৮ এবং ১১১১০০০০২৪৯২৩। মেঘনা ব্যাংক, আগ্রাবাদ শাখার হিসাব নম্বর- ২১০১১২১০০০০১২৬৮, ২১০১৩০৫০০০০০৫৫৯, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক জুবলী রোড় মঅখার হিসাব নম্বর -০০১৮০৩৩০০০৮১৭৪।
এছাড়াও হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরান ফাতেমা’র নামে ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে ১১টি। কন্যা নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের নামে চারটি, হাছান মাহমুদ ও স্ত্রী নুরান ফাতেমার যৌথ নামে দু’টি, নুরান ফাতেমা ও সালাহউদ্দিন যৌথ নামে একটি, বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’র ব্যবসায়িক পার্টনার দেখানো হয়েছে হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী নুরান ফাতেমাকে। বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’র নামে দু’জনের যৌথ একাউন্ট রয়েছে ১৯টি। মেসার্স বিসমিল্লাহ সার্ভিসেস’র নামে একাউন্ট রয়েছে আটটি, দি বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস লিমিটেড নামে একাউন্ট পাঁচটি, মেসার্স বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস জে.এ.এস লি. নামে একটি, মেসার্স বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট এন্ড হোল্ডিংসের নামে ছয়টি একাউন্ট রয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়- বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’কে আগে পরে শব্দ ব্যবহার করে অনেকগুলো একাউন্ট খোলার প্রতারনা করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ সোলার পাওয়ার লিমিটেডের নামে তিনটি একাউন্ট ও সুখি বাংলা ফাউন্ডেশনের নামে দু’টি একাউন্টে লেনদেন।
বাসস’র হাতে আসা ব্যাংক হিসাবে দেখা যায়, আলোচ্য ব্যাংক হিসাবের মধ্যে ১১টি একাউন্ট থেকে ২৭ কোটি ৫৪ লাখ ৫৯ হাজার ৭৪৯ টাকা সম্পুর্ণ তুলে নিয়ে একাউন্ট শূন্য করেছেন। এর মধ্যে দেখা যায়, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক চট্টগ্রামের মেহেদিবাগ শাখায় খোলা দু’টি একাউন্টের মধ্যে ১৩২০০০০০৪৩৪৭৭ একাউন্ট টি ৪১ দিন পর ক্লোজড করে ২ কোটি ৯৪ হাজার ৭২২ টাকা তুলে নেয়া হয়। একই শাখার ১১১১০০০০২০২৪৬ একাউন্টটি খোলার ৪৭ দিন পর ১ কোটি টাকা তুলে নিয়ে হিসাব ক্লোজড করা হয়।
সর্বশেষ নির্বাচনী হলফনামায় হাছান মাহমুদ বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকানভাড়া খাতে বছরে আয় ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, কৃষিখাতে ১ লাখ ৩০ হাজার, ব্যাংক ও অন্যান্য খাত থেকে সম্মানী বাবদ আয় ১ লাখ ২২ হাজার ২৬৩ টাকা উল্লেখ করেন। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্ত ভাতা বাদ দিলে হাছান মাহমুদের বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। আর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বার্ষিক আয় ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় এবার তার নামে ঋণ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকে তার ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। জামানত বিহীন ঋণ আছে ৯১ লাখ টাকার। ভাইদের কাছ থেকে ঋণ রয়েছে ১২ লাখ টাকার।
দুদকের অনুসন্ধান টিম সূত্র জানান, চট্টগ্রামের দেওয়ানবাজার এলাকায় একটি ১৫ তলা ভবনসহ তিনটি বহুতল ভবন রয়েছে হাছান মাহমুদের। একই এলাকার দেওয়ানজি পুকুর পাড় এলাকায় রয়েছে স্ত্রীর নামে বহুতল ভবন। ঢাকার পিংক সিটিতে রয়েছে তিনটি বাড়ি। প্লট ও বাড়ি আছে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাতেও। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে পুরো একটি এলাকা কিনে করেছেন বাড়ি, হোটেলসহ বহু স্থাবর সম্পদ। রাজধানীর চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) পাশে শতকোটি টাকা মূল্যের একটি বাণিজ্যিক প্লট কিনেছেন তিনি।
নিজ নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় জমি দখলেরও অভিযোগ আছে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ১৬ দশমিক ১৯ একর পাহাড় দখল করে আবাসন প্রকল্প করেন। চট্টগ্রামের খুলশী, বাকলিয়া ও গাজীপুরের বিভিন্ন মৌজায় রয়েছে তার কয়েক একর সম্পত্তি। বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন চট্টগ্রামের সিরাজুদ্দৌলা সড়কেও। বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও এফডিআর। বাড়ি কিনেছেন কানাডায়। চট্টগ্রামের মাতারবাড়ীতে কয়লাবিদ্যুৎ ও গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজের নানা ঠিকাদারি তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এসবের কোনোটিই তার আয়কর বিবরণী বা হলফনামায় উল্লেখ নেই।
জানা গেছে, হাছান মাহমুদ মাছ ধরার ট্রলার নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে রূপালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। ১১ বছরের বেশি সময় ধরে ১ টাকাও পরিশোধ করেননি। এরপরও নিয়মিত আছে তার ঋণ। প্রভাব খাটিয়ে অভিনব কায়দায় কিস্তি পরিশোধের সময় এলেই গ্রেস পিরিয়ড তথা পরিশোধ শুরুর সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সুদ মওকুফ করে নিয়েছেন কয়েক দফা। এখন ব্যাংকের পাওনা সাড়ে ১৯ কোটি টাকা। এদিকে সরকার পতনের পর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ও তার স্ত্রী ফাতেমাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে ১২জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা হয়েছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম নগরীর হিলভিউ হাউজিং সোসাইটিস্থ এফ.এম.সি গ্রুপের হেড ক্লার্ক ফিরোজ আহমদ। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ড. হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরেন ফাতেমা, ২য় আসামি ড. হাছান মাহমুদ, তার দুইভাই খালেদ মাহমুদ, এরশাদ মাহমুদ এবং অন্যান্য আসামিরা হলেন- ইমরুল করিম রাশেদ, দি বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’র জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ নুর উদ্দিন ও হিসাব বিভাগ প্রধান এরাদুল হক।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর হিলভিউ হাউজিং সোসাইটিস্থ এফ.এম.সি গ্রুপ নামে জাহাজ নির্মাণকারী একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রীর মালিকানধীন দি বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’র একটি কন্টেনার ও একটি ফিশিং জাহাজ নির্মাণের চুক্তি হয়। কিন্তু আসামিরা বল প্রয়োগ করে কোন ব্যয় বহন না করে একটি ফিশিং জাহাজ ডেলিভারি করে নেয়। পরে অরেকটি কন্টেইনার জাহাজও নির্মাণ ব্যয় বহন না করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ডেলিভারি নিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে আসামিরা দলবদ্ধভাবে জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে এবং অফিস কক্ষ ভাঙচুর করে ২ লাখ টাকা ক্ষতি সাধনের অভিযোগ করা হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, হাছান মাহমুদ বন ও পরিবেশ মন্ত্রী থাকাকালে নিজ নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় বন বিভাগের ২১২ একর জমি জোর দখল করে সেখানে বাগান বিলাস নির্মাণ করেছেন। গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বন বিভাগ সে সব জমি পুনরায় দখলে নিয়ে বাগান বাড়ির স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করেছে।
দুদক জানিয়েছে, গত ১৬ জানুয়ারি আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। অনুসন্ধানে পাওয়া অন্যান্য সম্পদ জব্দের ব্যাপারেও সম্পূরক তথ্য আদালতকে অবহিত করা হবে।

দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আত্মগোপনে থাকা সাবেক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ। স্ত্রী-কন্যা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ নামে-বেনামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেখে রীতিমতো চোখ যেন কপালে উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মককর্তাদের।
বাসস’র হাতে আসা ব্যাংক হিসাবে তথ্যে দেখা যায়, হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরান ফাতেমা, মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ ও তাদের নামীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ৭০টি ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে। সেসব একাউন্টগুলো থেকে প্রায় সাড়ে ৭ শত কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই ব্যাংক হিসাবগুলোতে বর্তমানে স্থিতি আছে ২৩ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার ২০২ টাকা। দেশের মেঘনা ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউিরিটি ইসলামি ব্যাংক, মিউচ্যুাল ট্রাস্ট ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, পুবালী ব্যাংকসহ আরো কয়েকটি ব্যাংকে এই লেনদেন হয়েছে। যে সব ব্যাংকে হিসাবগুলো পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে গ্লোবাল ইসলামি ব্যংকে ১৬টি, মেঘনা ব্যাংকে ১৭টি, এবি ব্যাংকে নয়টি, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে দু’টি, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকে ১৮টি জনতা ব্যাংকে একটি, ইউনিয়ন ব্যাংকে চারটি এবং পুবালী ব্যাংকে একটি একাউন্ট। অথচ হাছান মাহমুদ ও স্ত্রীর নুরান ফাতেমার আয়কর ফাইলের সঙ্গে এসব আয় সঙ্গতিপূর্ণ নয়। হিসাব কষে দেখা যায়, আয়কর ফাইলের তথ্যের চেয়ে বর্তমানে খুঁজে পাওয়া সম্পদ অর্জনের হার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার গুণ বেশি।
হাছান মাহমুদের স্ত্রী কন্যা ছাড়াও তার দু’ভাই এরশাদ মাহমুদ এবং খালেদ মাহমুদের নামেও বিপুল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ গড়েছেন। তাদের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় জমি দখল, বন বিভাগের পাহাড় দখল, বাংলো বাড়ি ও বাগান বাড়ি নির্মাণ, পুকুর কেটে মৎস্য চাষ, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অট্টালিকা ভবন ও ফ্ল্যাট এর মালিকানা, আবুধাবির আজমান এলাকায় বিশাল জায়গা নিয়ে রিসোর্ট তৈরির মতো বিভিন্ন অভিযোগ জমা হচ্ছে।
হাছান মাহমুদ ও পরিবারের সদস্যদের নামে অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান টিম। টিমের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে, উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-পরিচালক কমলেশ মন্ডল, সহকারী পরিচালক আল আমিন, সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিল ইসলাম ও সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম। তারা দেশে ও দেশের বাইরে কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে। যা যাছাই বাছাই করা হচ্ছে।
হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগের টানা ১৬ বছরের শাসনামলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সময় ২৪ এর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে আত্নগোপনে চলে যান।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, হাছান মাহমুদ মন্ত্রী থাকা অবস্থায় স্ত্রী নুরান ফাতেমাকে জাহাজ ব্যবসায়ী হিসেবে লাইসেন্স পেতে সহায়তা করেছেন। একটি কন্টেইনার জাহাজসহ দু’টি জাহাজ নির্মাণ করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামের এক জাহাজ তৈরি প্রতিষ্ঠান এফএমসি গ্রুপ’র পক্ষ থেকে সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এর স্ত্রী নুরান ফাতেমাসহ সাতজনের নামোল্লেখ করে ১৯জনের বিরুদ্ধে জাহাজ নির্মাণের চুক্তির টাকা পরিশোধ না করা এবং হামলার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে। মামলায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পানিতে জাহাজ ভাসানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক অনুসন্ধানকালে অভিযোগ পেয়েছে, হাছান মাহমুদ বন ও পরিবেশ মন্ত্রী থাকাকালীন রাতারাতি নিজের স্ত্রীকে জাহাজের লাইসেন্স দিয়ে জাহাজ ব্যবসায়ী বানিয়ে দেন। জাহাজ তৈরির জন্য রূপালী ব্যাংক থেকে ১২ কোটি টাকা গ্রহণ করলেও তা পরিশোধ না করায় এখন সুদাসলে সাড়ে ১৯ কোটি টাকা হয়েছে।
হাছান মাহমুদের একমাত্র কন্যা নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের জন্ম ২০০০ সালের ৭ অক্টোবর। সেই হিসেবে জুমাইনার বয়স ২৪ বছর ৪ মাস। জুমাইনার নামে মেঘনা ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউিরিটি ইসলামি ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকে একক নামে একাউন্ট রয়েছে চারটি। এসব একাউন্টে লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা রয়েছে ৯৬ লাখ টাকা। দি ডেইলি পিপলস লাইফ নামে একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রকাশক নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ। পত্রিকাটির সম্পাদক হিসাবে রয়েছেন আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া। পিতা হাছান মাহমুদ তথ্যমন্ত্রী থাকার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই পত্রিকার ডিক্লারেশন নেয়া হয়েছে। দি ডেইলি পিপলস লাইফ পত্রিকার নামে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের বনশ্রী শাখায় একটি একাউন্ট খোলা হয়েছে ২০২৩ সালের ৫ জুন। পত্রিকার নামে খোলা এই একাউন্টে লেনদেন হয়েছে ৭২ লাখ ১৬ হাজার ৫১৬ টাকা। জমা রয়েছে ১৯ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৪ টাকা। অথচ আয়কর প্রদানের কোনো নথির তথ্য পাওয়া যায়নি।
দুদকের তদন্তে হাছান মাহমুদের নামে ছয়টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। সবগুলো একাউন্ট খোলা হয়েছে মেঘনা ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক চট্টগ্রামে বিভিন্ন ব্রাঞ্চে। হিসাবগুলোর মধ্যে রয়েছে- এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের পোর্টকানেক্টিং শাখার একাউন্ট নম্বর- ৪১২৭-০৭১৬৬০২৮২, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক, চট্টগ্রামের নবাব সিরাজদৌলা রোড় শাখার একাউন্ট নম্বর-১১১১০০০৫৫৮৪৭৮ এবং ১১১১০০০০২৪৯২৩। মেঘনা ব্যাংক, আগ্রাবাদ শাখার হিসাব নম্বর- ২১০১১২১০০০০১২৬৮, ২১০১৩০৫০০০০০৫৫৯, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক জুবলী রোড় মঅখার হিসাব নম্বর -০০১৮০৩৩০০০৮১৭৪।
এছাড়াও হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরান ফাতেমা’র নামে ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে ১১টি। কন্যা নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের নামে চারটি, হাছান মাহমুদ ও স্ত্রী নুরান ফাতেমার যৌথ নামে দু’টি, নুরান ফাতেমা ও সালাহউদ্দিন যৌথ নামে একটি, বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’র ব্যবসায়িক পার্টনার দেখানো হয়েছে হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রী নুরান ফাতেমাকে। বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’র নামে দু’জনের যৌথ একাউন্ট রয়েছে ১৯টি। মেসার্স বিসমিল্লাহ সার্ভিসেস’র নামে একাউন্ট রয়েছে আটটি, দি বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস লিমিটেড নামে একাউন্ট পাঁচটি, মেসার্স বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস জে.এ.এস লি. নামে একটি, মেসার্স বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্ট এন্ড হোল্ডিংসের নামে ছয়টি একাউন্ট রয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়- বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’কে আগে পরে শব্দ ব্যবহার করে অনেকগুলো একাউন্ট খোলার প্রতারনা করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ সোলার পাওয়ার লিমিটেডের নামে তিনটি একাউন্ট ও সুখি বাংলা ফাউন্ডেশনের নামে দু’টি একাউন্টে লেনদেন।
বাসস’র হাতে আসা ব্যাংক হিসাবে দেখা যায়, আলোচ্য ব্যাংক হিসাবের মধ্যে ১১টি একাউন্ট থেকে ২৭ কোটি ৫৪ লাখ ৫৯ হাজার ৭৪৯ টাকা সম্পুর্ণ তুলে নিয়ে একাউন্ট শূন্য করেছেন। এর মধ্যে দেখা যায়, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংক চট্টগ্রামের মেহেদিবাগ শাখায় খোলা দু’টি একাউন্টের মধ্যে ১৩২০০০০০৪৩৪৭৭ একাউন্ট টি ৪১ দিন পর ক্লোজড করে ২ কোটি ৯৪ হাজার ৭২২ টাকা তুলে নেয়া হয়। একই শাখার ১১১১০০০০২০২৪৬ একাউন্টটি খোলার ৪৭ দিন পর ১ কোটি টাকা তুলে নিয়ে হিসাব ক্লোজড করা হয়।
সর্বশেষ নির্বাচনী হলফনামায় হাছান মাহমুদ বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও দোকানভাড়া খাতে বছরে আয় ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, কৃষিখাতে ১ লাখ ৩০ হাজার, ব্যাংক ও অন্যান্য খাত থেকে সম্মানী বাবদ আয় ১ লাখ ২২ হাজার ২৬৩ টাকা উল্লেখ করেন। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্ত ভাতা বাদ দিলে হাছান মাহমুদের বাৎসরিক আয় ২ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। আর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বার্ষিক আয় ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় এবার তার নামে ঋণ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকে তার ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। জামানত বিহীন ঋণ আছে ৯১ লাখ টাকার। ভাইদের কাছ থেকে ঋণ রয়েছে ১২ লাখ টাকার।
দুদকের অনুসন্ধান টিম সূত্র জানান, চট্টগ্রামের দেওয়ানবাজার এলাকায় একটি ১৫ তলা ভবনসহ তিনটি বহুতল ভবন রয়েছে হাছান মাহমুদের। একই এলাকার দেওয়ানজি পুকুর পাড় এলাকায় রয়েছে স্ত্রীর নামে বহুতল ভবন। ঢাকার পিংক সিটিতে রয়েছে তিনটি বাড়ি। প্লট ও বাড়ি আছে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাতেও। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে পুরো একটি এলাকা কিনে করেছেন বাড়ি, হোটেলসহ বহু স্থাবর সম্পদ। রাজধানীর চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) পাশে শতকোটি টাকা মূল্যের একটি বাণিজ্যিক প্লট কিনেছেন তিনি।
নিজ নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় জমি দখলেরও অভিযোগ আছে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ১৬ দশমিক ১৯ একর পাহাড় দখল করে আবাসন প্রকল্প করেন। চট্টগ্রামের খুলশী, বাকলিয়া ও গাজীপুরের বিভিন্ন মৌজায় রয়েছে তার কয়েক একর সম্পত্তি। বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন চট্টগ্রামের সিরাজুদ্দৌলা সড়কেও। বিভিন্ন ব্যাংকে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও এফডিআর। বাড়ি কিনেছেন কানাডায়। চট্টগ্রামের মাতারবাড়ীতে কয়লাবিদ্যুৎ ও গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজের নানা ঠিকাদারি তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এসবের কোনোটিই তার আয়কর বিবরণী বা হলফনামায় উল্লেখ নেই।
জানা গেছে, হাছান মাহমুদ মাছ ধরার ট্রলার নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে রূপালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। ১১ বছরের বেশি সময় ধরে ১ টাকাও পরিশোধ করেননি। এরপরও নিয়মিত আছে তার ঋণ। প্রভাব খাটিয়ে অভিনব কায়দায় কিস্তি পরিশোধের সময় এলেই গ্রেস পিরিয়ড তথা পরিশোধ শুরুর সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সুদ মওকুফ করে নিয়েছেন কয়েক দফা। এখন ব্যাংকের পাওনা সাড়ে ১৯ কোটি টাকা। এদিকে সরকার পতনের পর সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ও তার স্ত্রী ফাতেমাসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে ১২জন অজ্ঞাতনামা আসামি করে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলা হয়েছে। গত ৩ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম নগরীর হিলভিউ হাউজিং সোসাইটিস্থ এফ.এম.সি গ্রুপের হেড ক্লার্ক ফিরোজ আহমদ। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ড. হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরেন ফাতেমা, ২য় আসামি ড. হাছান মাহমুদ, তার দুইভাই খালেদ মাহমুদ, এরশাদ মাহমুদ এবং অন্যান্য আসামিরা হলেন- ইমরুল করিম রাশেদ, দি বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’র জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ নুর উদ্দিন ও হিসাব বিভাগ প্রধান এরাদুল হক।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর হিলভিউ হাউজিং সোসাইটিস্থ এফ.এম.সি গ্রুপ নামে জাহাজ নির্মাণকারী একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ ও তার স্ত্রীর মালিকানধীন দি বিসমিল্লাহ মেরিন সার্ভিসেস’র একটি কন্টেনার ও একটি ফিশিং জাহাজ নির্মাণের চুক্তি হয়। কিন্তু আসামিরা বল প্রয়োগ করে কোন ব্যয় বহন না করে একটি ফিশিং জাহাজ ডেলিভারি করে নেয়। পরে অরেকটি কন্টেইনার জাহাজও নির্মাণ ব্যয় বহন না করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ডেলিভারি নিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পরবর্তীতে আসামিরা দলবদ্ধভাবে জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে এবং অফিস কক্ষ ভাঙচুর করে ২ লাখ টাকা ক্ষতি সাধনের অভিযোগ করা হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, হাছান মাহমুদ বন ও পরিবেশ মন্ত্রী থাকাকালে নিজ নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় বন বিভাগের ২১২ একর জমি জোর দখল করে সেখানে বাগান বিলাস নির্মাণ করেছেন। গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বন বিভাগ সে সব জমি পুনরায় দখলে নিয়ে বাগান বাড়ির স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করেছে।
দুদক জানিয়েছে, গত ১৬ জানুয়ারি আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। অনুসন্ধানে পাওয়া অন্যান্য সম্পদ জব্দের ব্যাপারেও সম্পূরক তথ্য আদালতকে অবহিত করা হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে...
৯ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের...
১০ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকা মিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
১০ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন
১১ ঘণ্টা আগেআমানুর রহমান রনি, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রার্থীদের পুলিশের নিরাপত্তা প্রটোকল দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তবে পুলিশ বলেছে, প্রার্থীর ঝুঁকি বিবেচনায় ‘ক্যাটাগরি করে’ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলি করে দু্র্বৃত্তরা। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর ওপর প্রকাশ্যে হামলার ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের পাশাপাশি জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান। প্রচারে নিরাপত্তাঝুঁকি ও শঙ্কার কথাও বলছেন অনেকে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে নির্বাচনে ভোটার অংশগ্রহণ কম হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হবে।
অবশ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঝুঁকি বিবেচনায় নিরাপত্তার বিধান করা হবে। কেউ যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন ও ঝুঁকিতে আছেন মনে করেন, তিনি পুলিশের কাছে আসবেন, আমরা তাঁর ঝুঁকি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেব।’
নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, পারিবারিক ও নিরাপত্তাসহ একাধিক কারণে তিনি এই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সিকিউরিটি কনসার্ন হচ্ছে আমার পরিবার। আমার পরিবারের সঙ্গে এই জায়গায় নেগোসিয়েশন করতে পারছি না। তবে বিষয়টা এমন না যে সরকার নিরাপত্তা দিতে পারছে না, সেই কারণে সরে যাচ্ছি।’
তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থী, ভোটারসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল। সম্ভাব্য প্রার্থীরা অনানুষ্ঠানিক গণসংযোগেও নেমেছিলেন। কিন্তু হাদির ওপর হামলার পর তাঁরা মাঠে নামতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ফলে নির্বাচনী মাঠে এখন প্রার্থীদের তেমন তৎপরতা নেই বললেই চলে।
জানতে চাইলে গতকাল কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী আমির হামজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনার পর আমরা সতর্ক রয়েছি। পুলিশ সুপার, ওসির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা হয়তো সামনে নিরাপত্তা দেবে। প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকায় এখন বাইরে কোথাও যাই না। এখন যখনই কোথাও যাই, অন্তত ১৫ জন সঙ্গে নিয়ে যাই।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনে করছেন, বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন এনসিপির প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধারা। হাদি সম্মুখসারির জুলাই যোদ্ধা। এনসিপির নেতৃত্বে রয়েছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা।
নরসিংদী-২ আসনে এনসিপির মনোনীত প্রার্থী সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমরা শঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ, তবে আমরা ভীত নই। আমি যে আসন থেকে নির্বাচন করব, সেখানে নিয়মিত আমাকে ও আমার নেতা-কর্মীদের, এমনকি সাধারণ ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতি ছেড়ে দিতে আমার নেতা-কর্মীদের ওপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে।’
এর আগে ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের চালিতাতলীতে বিএনপির প্রার্থী এরশাদউল্লাহর গণসংযোগের গুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত এবং এরশাদউল্লাহসহ দুজন আহত হন। বাবলাকে হত্যার জন্য ওই হামলা হলেও আতঙ্ক ছড়ায় চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে হাদির ওপর হামলার পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করেন। সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। গত সোমবার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এবং তাঁদের জন্য সশস্ত্র ব্যক্তি (রিটেইনার) নিয়োগ নীতিমালা-২০২৫ জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-৪।
সূত্র জানায়, রোববার ও সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ কর্মকর্তারা একাধিক বৈঠক করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে করণীয় ঠিক করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তরেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। করণীয় ঠিক করতে প্রতিটি রেঞ্জ ও মহানগর পুলিশকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন আইজিপি।
তবে ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, অদৃশ্য একটি ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, অনেকেই নির্বাচন করতে দিতে চাইছে না। স্বাধীনতাবিরোধী শত্রুরা এখনো সক্রিয়। তারা পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা পাচ্ছে, এটি আরও ভয় তৈরি করছে।
একই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ফয়জুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বস্তি বোধ করছেন না। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক করতে হবে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, ঝুঁকি বিবেচনায় প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নিশ্চিত করা হবে। এগুলো হলো, অতিঝুঁকিতে, মাঝারি ঝুঁকিতে ও কম ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তি। ঝুঁকিতে থাকা প্রত্যেক প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধার সঙ্গে আলোচনা করে, যেভাবে তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেই অনুযায়ী নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, ইউনিফর্ম পরা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন, যা নির্বাচন পর্যন্ত বহাল থাকবে। প্রার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রনেতা, জুলাই যোদ্ধা, শিক্ষকসহ আরও কয়েকটি শ্রেণির ব্যক্তিও এই নিরাপত্তার আওতায় থাকবেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ইতিমধ্যে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং এ বিষয়ে কাজ চলছে।
যেসব প্রার্থীর নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি, তাঁরা সার্বক্ষণিক গানম্যান পাবেন। প্রয়োজনে বাসা ও অফিসে স্থায়ীভাবে গানম্যান নিয়োজিত থাকবে। এক্ষেত্রে জুলাই যোদ্ধা ও অতিঝুঁকিতে থাকা প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মূল্যায়নে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হলে প্রার্থীরা নিজেরা সশস্ত্র দেহরক্ষী রাখতে পারবেন, না পারলে পুলিশের পক্ষ থেকে দেহরক্ষী দেওয়া হবে। বাসা, অফিস ও যাতায়াতের সময় এ নিরাপত্তা কার্যকর থাকবে।
ঝুঁকিতে থাকা প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও চলাচলের সময়সূচি সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে আগাম জানাতে বলা হয়েছে, যাতে পুলিশ আগে থেকেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিতে পারে। সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং থানার সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচনী গণসংযোগ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি একটি সমন্বিত ‘নিরাপত্তা প্রটোকল’ তৈরি করছে, যেখানে প্রার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকনির্দেশনা থাকবে।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের সব ইউনিট ও থানাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনিরাপদবোধ করলে যে কেউ পুলিশের সহায়তা চাইতে পারবেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চায়, কেউ ক্ষমতা চায়। তাই দেশে এই অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভোটারদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। তাই সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের যেমন দায় রয়েছে, তেমনি নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোরও উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের সদাচরণ করতে হবে। তাহলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রার্থীদের পুলিশের নিরাপত্তা প্রটোকল দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ। তবে পুলিশ বলেছে, প্রার্থীর ঝুঁকি বিবেচনায় ‘ক্যাটাগরি করে’ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলি করে দু্র্বৃত্তরা। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর ওপর প্রকাশ্যে হামলার ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের পাশাপাশি জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান। প্রচারে নিরাপত্তাঝুঁকি ও শঙ্কার কথাও বলছেন অনেকে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে নির্বাচনে ভোটার অংশগ্রহণ কম হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হবে।
অবশ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঝুঁকি বিবেচনায় নিরাপত্তার বিধান করা হবে। কেউ যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন ও ঝুঁকিতে আছেন মনে করেন, তিনি পুলিশের কাছে আসবেন, আমরা তাঁর ঝুঁকি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেব।’
নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেন, পারিবারিক ও নিরাপত্তাসহ একাধিক কারণে তিনি এই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সিকিউরিটি কনসার্ন হচ্ছে আমার পরিবার। আমার পরিবারের সঙ্গে এই জায়গায় নেগোসিয়েশন করতে পারছি না। তবে বিষয়টা এমন না যে সরকার নিরাপত্তা দিতে পারছে না, সেই কারণে সরে যাচ্ছি।’
তফসিল ঘোষণার পর সম্ভাব্য প্রার্থী, ভোটারসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল। সম্ভাব্য প্রার্থীরা অনানুষ্ঠানিক গণসংযোগেও নেমেছিলেন। কিন্তু হাদির ওপর হামলার পর তাঁরা মাঠে নামতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ফলে নির্বাচনী মাঠে এখন প্রার্থীদের তেমন তৎপরতা নেই বললেই চলে।
জানতে চাইলে গতকাল কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী আমির হামজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনার পর আমরা সতর্ক রয়েছি। পুলিশ সুপার, ওসির সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁরা হয়তো সামনে নিরাপত্তা দেবে। প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকায় এখন বাইরে কোথাও যাই না। এখন যখনই কোথাও যাই, অন্তত ১৫ জন সঙ্গে নিয়ে যাই।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনে করছেন, বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন এনসিপির প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধারা। হাদি সম্মুখসারির জুলাই যোদ্ধা। এনসিপির নেতৃত্বে রয়েছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা।
নরসিংদী-২ আসনে এনসিপির মনোনীত প্রার্থী সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আমরা শঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ, তবে আমরা ভীত নই। আমি যে আসন থেকে নির্বাচন করব, সেখানে নিয়মিত আমাকে ও আমার নেতা-কর্মীদের, এমনকি সাধারণ ভোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। রাজনীতি ছেড়ে দিতে আমার নেতা-কর্মীদের ওপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে।’
এর আগে ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের চালিতাতলীতে বিএনপির প্রার্থী এরশাদউল্লাহর গণসংযোগের গুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেন বাবলা নিহত এবং এরশাদউল্লাহসহ দুজন আহত হন। বাবলাকে হত্যার জন্য ওই হামলা হলেও আতঙ্ক ছড়ায় চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে হাদির ওপর হামলার পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক করেন। সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে। গত সোমবার গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের অনুকূলে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স এবং তাঁদের জন্য সশস্ত্র ব্যক্তি (রিটেইনার) নিয়োগ নীতিমালা-২০২৫ জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-৪।
সূত্র জানায়, রোববার ও সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ কর্মকর্তারা একাধিক বৈঠক করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। এসব বৈঠকে করণীয় ঠিক করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তরেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। করণীয় ঠিক করতে প্রতিটি রেঞ্জ ও মহানগর পুলিশকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেন আইজিপি।
তবে ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রফিকুল ইসলাম জামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, অদৃশ্য একটি ঝুঁকি রয়েছে। কারণ, অনেকেই নির্বাচন করতে দিতে চাইছে না। স্বাধীনতাবিরোধী শত্রুরা এখনো সক্রিয়। তারা পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা পাচ্ছে, এটি আরও ভয় তৈরি করছে।
একই আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ফয়জুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বস্তি বোধ করছেন না। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক করতে হবে।
পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, ঝুঁকি বিবেচনায় প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে নিশ্চিত করা হবে। এগুলো হলো, অতিঝুঁকিতে, মাঝারি ঝুঁকিতে ও কম ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তি। ঝুঁকিতে থাকা প্রত্যেক প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধার সঙ্গে আলোচনা করে, যেভাবে তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন, সেই অনুযায়ী নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, ইউনিফর্ম পরা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন, যা নির্বাচন পর্যন্ত বহাল থাকবে। প্রার্থীদের পাশাপাশি ছাত্রনেতা, জুলাই যোদ্ধা, শিক্ষকসহ আরও কয়েকটি শ্রেণির ব্যক্তিও এই নিরাপত্তার আওতায় থাকবেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ইতিমধ্যে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং এ বিষয়ে কাজ চলছে।
যেসব প্রার্থীর নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি, তাঁরা সার্বক্ষণিক গানম্যান পাবেন। প্রয়োজনে বাসা ও অফিসে স্থায়ীভাবে গানম্যান নিয়োজিত থাকবে। এক্ষেত্রে জুলাই যোদ্ধা ও অতিঝুঁকিতে থাকা প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মূল্যায়নে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচিত হলে প্রার্থীরা নিজেরা সশস্ত্র দেহরক্ষী রাখতে পারবেন, না পারলে পুলিশের পক্ষ থেকে দেহরক্ষী দেওয়া হবে। বাসা, অফিস ও যাতায়াতের সময় এ নিরাপত্তা কার্যকর থাকবে।
ঝুঁকিতে থাকা প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও চলাচলের সময়সূচি সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে আগাম জানাতে বলা হয়েছে, যাতে পুলিশ আগে থেকেই নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিতে পারে। সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে এবং থানার সঙ্গে সমন্বয় করে নির্বাচনী গণসংযোগ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি একটি সমন্বিত ‘নিরাপত্তা প্রটোকল’ তৈরি করছে, যেখানে প্রার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকনির্দেশনা থাকবে।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, প্রার্থী ও জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের সব ইউনিট ও থানাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনিরাপদবোধ করলে যে কেউ পুলিশের সহায়তা চাইতে পারবেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, কেউ নির্বাচন বানচাল করতে চায়, কেউ ক্ষমতা চায়। তাই দেশে এই অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভোটারদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। তাই সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের যেমন দায় রয়েছে, তেমনি নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোরও উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের সদাচরণ করতে হবে। তাহলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। প্রার্থী ও ভোটারদের জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আত্মগোপনে থাকা সাবেক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ। স্ত্রী-কন্যা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ নামে-বেনামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেখে রীতিমতো চোখ যেন কপালে উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মককর্তাদের।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের...
১০ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকা মিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
১০ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন
১১ ঘণ্টা আগেস্মৃতিসৌধে জনতার ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধি, সাভার

মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। শহীদদের স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে তারা।
এরপর পর্যায়ক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলের নেতারা, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
মঙ্গলবার সকাল থেকে স্মৃতিসৌধ এলাকায় মানুষের ঢল নামে। হাতে লাল-সবুজের পতাকা, মুখে বিজয়ের গান, হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা—শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একত্র হয়।
স্বাধীনতার ৫৫তম বছরে প্রবেশের এই ঐতিহাসিক দিনে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে দেশকে ন্যায়, সাম্য ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে হবে।’
সাভারের উত্তরপাড়া থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন কলেজছাত্র বিশাল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ দেখতে চাই।’
ব্যবসায়ী সুমন ঘোষ বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় আজও আমাদের প্রেরণা।’
বিএনপির পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জামায়াত ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দেশের শান্তি কামনা করেনি, এমনকি এখনো করে না। তারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, এখনো চায় না। তারা চায় দেশটা একটা বিপাকে পড়ুক, একটা খারাপ অবস্থায় চলে যাক, অশান্তিময় থাকুক।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকার ও পুলিশের ওপর নির্ভর করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। আমাদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে।’
এ ছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণসংহতি আন্দোলন প্রভৃতি দলও জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানায়।
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যখন থেকে আমরা স্বাধীন হলাম, তখন থেকেই আমাদের প্রত্যাশা ছিল একটা গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থার। অনেক বছর পর এখন আবার মনে হচ্ছে, ওই জিনিসগুলো আমরা অর্জন করতে পারিনি। পারিনি বলেই তো গণ-অভ্যুত্থান হলো, বিপ্লব হলো।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। আমরা আশা করি, এ নির্বাচনের মাধ্যমে একটা ভিত্তি স্থাপন হবে। যে ভিত্তি গণতন্ত্রকে যেমন সুদৃঢ় করবে, তেমনি জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বরের যে প্রত্যয়, সেটা আমাদের মধ্যে ছিল দেখেই আমরা ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণের একটা সুযোগ করে নিতে পেরেছি। এখানে এলে ভালো লাগে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা আছেন, আহত মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা আছেন, যাঁরা ওই সময়ে নানান আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় মন সিক্ত হয়।’
এদিকে বিজয় দিবস ঘিরে সাভারে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত আমিনবাজার থেকে স্মৃতিসৌধ এবং বাইপাইল থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ ত্যাগের পর সড়কের ওই অংশে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের জন্য চার স্তরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। সাভারের আমিনবাজার থেকে শুরু করে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি পোশাকে এবং সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়।

মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে। শহীদদের স্মরণে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে তারা।
এরপর পর্যায়ক্রমে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলের নেতারা, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
মঙ্গলবার সকাল থেকে স্মৃতিসৌধ এলাকায় মানুষের ঢল নামে। হাতে লাল-সবুজের পতাকা, মুখে বিজয়ের গান, হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা—শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একত্র হয়।
স্বাধীনতার ৫৫তম বছরে প্রবেশের এই ঐতিহাসিক দিনে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে দেশকে ন্যায়, সাম্য ও মানবিকতার পথে এগিয়ে নিতে হবে।’
সাভারের উত্তরপাড়া থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন কলেজছাত্র বিশাল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ দেখতে চাই।’
ব্যবসায়ী সুমন ঘোষ বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয় আজও আমাদের প্রেরণা।’
বিএনপির পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, জামায়াত ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দেশের শান্তি কামনা করেনি, এমনকি এখনো করে না। তারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি, এখনো চায় না। তারা চায় দেশটা একটা বিপাকে পড়ুক, একটা খারাপ অবস্থায় চলে যাক, অশান্তিময় থাকুক।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকার ও পুলিশের ওপর নির্ভর করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না। আমাদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে।’
এ ছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণসংহতি আন্দোলন প্রভৃতি দলও জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানায়।
বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নতুন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যখন থেকে আমরা স্বাধীন হলাম, তখন থেকেই আমাদের প্রত্যাশা ছিল একটা গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থার। অনেক বছর পর এখন আবার মনে হচ্ছে, ওই জিনিসগুলো আমরা অর্জন করতে পারিনি। পারিনি বলেই তো গণ-অভ্যুত্থান হলো, বিপ্লব হলো।’
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সামনে নির্বাচন। আমরা আশা করি, এ নির্বাচনের মাধ্যমে একটা ভিত্তি স্থাপন হবে। যে ভিত্তি গণতন্ত্রকে যেমন সুদৃঢ় করবে, তেমনি জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বরের যে প্রত্যয়, সেটা আমাদের মধ্যে ছিল দেখেই আমরা ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণের একটা সুযোগ করে নিতে পেরেছি। এখানে এলে ভালো লাগে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা আছেন, আহত মুক্তিযোদ্ধা যাঁরা আছেন, যাঁরা ওই সময়ে নানান আত্মত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় মন সিক্ত হয়।’
এদিকে বিজয় দিবস ঘিরে সাভারে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। গত সোমবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত আমিনবাজার থেকে স্মৃতিসৌধ এবং বাইপাইল থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ ত্যাগের পর সড়কের ওই অংশে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের জন্য চার স্তরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। সাভারের আমিনবাজার থেকে শুরু করে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি পোশাকে এবং সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়।

দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আত্মগোপনে থাকা সাবেক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ। স্ত্রী-কন্যা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ নামে-বেনামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেখে রীতিমতো চোখ যেন কপালে উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মককর্তাদের।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে...
৯ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকা মিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
১০ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন
১১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকা মিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেটের সামনে থেকে শুরু হয়ে পতাকা মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন উদীচী সংগীত বিভাগের শিল্পীরা। তাঁরা পরিবেশন করেন—‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে’, ‘মাগো ভাবনা কেন’, ‘গেরিলা আমরা, আমরা গেরিলা’, ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’সহ বেশ কিছু গান। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন তিনটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
সমাবেশে মাহমুদ সেলিম বলেন, বিজয়ের ৫৪ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থামায়নি। তারা মুক্তিযুদ্ধের নিত্যনতুন ইতিহাস তৈরি করে তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টি করে জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব মিথ্যাবাদী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে না দিতে পারলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না। এসব অপশক্তিকে রুখে দিতে প্রয়োজনে একাত্তরের মতোই প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান মাহমুদ সেলিম।
মাহমুদ সেলিম বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস, স্বাধীন বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসে মুক্তি, আত্মত্যাগ ও অগ্রযাত্রার প্রতীক। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য পতাকা মিছিল ও মুক্তির গান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমরা বিজয়ের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য, মানবিকতা ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্নকে আরও শক্তিশালী করতে চাই।’
এর আগে বিজয় দিবসের সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ।

মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকা মিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেটের সামনে থেকে শুরু হয়ে পতাকা মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন উদীচী সংগীত বিভাগের শিল্পীরা। তাঁরা পরিবেশন করেন—‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে’, ‘মাগো ভাবনা কেন’, ‘গেরিলা আমরা, আমরা গেরিলা’, ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা’সহ বেশ কিছু গান। মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন তিনটি সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।
সমাবেশে মাহমুদ সেলিম বলেন, বিজয়ের ৫৪ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র থামায়নি। তারা মুক্তিযুদ্ধের নিত্যনতুন ইতিহাস তৈরি করে তরুণ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টি করে জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব মিথ্যাবাদী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে না দিতে পারলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক ও সাম্যবাদী বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না। এসব অপশক্তিকে রুখে দিতে প্রয়োজনে একাত্তরের মতোই প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান মাহমুদ সেলিম।
মাহমুদ সেলিম বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস, স্বাধীন বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসে মুক্তি, আত্মত্যাগ ও অগ্রযাত্রার প্রতীক। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য পতাকা মিছিল ও মুক্তির গান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমরা বিজয়ের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য, মানবিকতা ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্নকে আরও শক্তিশালী করতে চাই।’
এর আগে বিজয় দিবসের সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ।

দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আত্মগোপনে থাকা সাবেক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ। স্ত্রী-কন্যা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ নামে-বেনামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেখে রীতিমতো চোখ যেন কপালে উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মককর্তাদের।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে...
৯ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের...
১০ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন
১১ ঘণ্টা আগেমহান বিজয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙালি জাতি নিজেদের জন্য বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংযোজন করেছিল এক বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। দিবসটির প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা। দিবসটিকে কেন্দ্র করে সশস্ত্র বাহিনী মনোজ্ঞ ফ্লাই পাস্ট, প্যারা জাম্প ও বিশেষ অ্যারোবেটিক প্রদর্শনীর আয়োজন করে। বিজয় দিবস উদ্যাপনে নানা আয়োজন নিয়ে এই ছবির গল্প:
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

























দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আত্মগোপনে থাকা সাবেক মন্ত্রী ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ। স্ত্রী-কন্যা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ নামে-বেনামে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দেখে রীতিমতো চোখ যেন কপালে উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মককর্তাদের।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টা এবং সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। প্রচারের মাঠে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইতিমধ্যে...
৯ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল মঙ্গলবার সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের...
১০ ঘণ্টা আগে
মহান বিজয় দিবস, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হারিয়ে বিজয় অর্জনের ৫৪তম বার্ষিকীতে পতাকা মিছিল ও মুক্তির গান পরিবেশন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন।
১০ ঘণ্টা আগে