Ajker Patrika

বন্যার ক্ষতি কমাতে ৪৫০০ কোটি টাকার ঋণ বিশ্বব্যাংকের 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বন্যার ক্ষতি কমাতে ৪৫০০ কোটি টাকার ঋণ বিশ্বব্যাংকের 

প্রায় প্রতি বছরই ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল। সম্প্রতি সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলা এমন বন্যার কবলে পড়েছে। এ অবস্থায় বন্যা প্রবণ এলাকাগুলোতে আগাম প্রস্তুতি, বন্যা মোকাবিলা ও পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। দেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে চার হাজার কোটি টাকারও বেশি।

ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় শুক্রবার বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড সভায় এ ঋণ অনুমোদন পায়। শনিবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে। 

বিশ্ব ব্যাংকের এ ঋণে দেশের বন্যা প্রবণ ১৪টি জেলার সাড়ে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ঋণের অর্থ ‘রেসিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার অব অ্যাডাপ্টেশন অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি রিডাকশন (রিভার)’—প্রকল্পে ব্যয় করা হবে।

প্রকল্পের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলায় পাঁচ শতাধিক বহুমুখী-বহুতল বন্যা আশ্রয়ণকেন্দ্র নির্মাণ, সংযোগ সড়ক এবং জলবায়ু সহনশীল সামাজিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। যা নদীভাঙ্গনজনিত ক্ষতি ও হঠাৎ বন্যার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। স্বাভাবিক সময়ে কেন্দ্রগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে ব্যবহার করা হবে। বন্যায় আপৎকালীন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সৌরশক্তি ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সুবিধা রাখা হবে। নারী ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য এসব আশ্রয়কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। এ প্রকল্প বন্যার আগাম প্রস্তুতিতে এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় মানুষজন ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার সক্ষমতা বাড়াবে। 

বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলের ভয়াবহ বন্যা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির কথা মনে করিয়ে দেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন, অনাকাঙ্ক্ষিত এবং তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে। উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের গত ৫ দশকের অংশীদারত্বের ওপর ভিত্তি করে প্রকল্পে উপকূলীয় এলাকার বাইরে বিভিন্ন বন্যা প্রবণ এলাকায় দুর্যোগ প্রস্তুতির উন্নতি করতে সাহায্য করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এটি শুধু দুর্যোগ পরবর্তী পদক্ষেপের পরিবর্তে দেশে শক্তিশালী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি তৈরিতে সহায়ক হবে।’
 
বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ নিচু এলাকায় অবস্থিত একটি ব-দ্বীপ। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়সহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবের এটি অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বন্যার মাত্রা ও তীব্রতাও বাড়ছে। প্রতি বছর বন্যা ও নদী ভাঙনে প্রায় ১০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোনো কোনো বছর ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। আলোচ্য প্রকল্পটি তিস্তা–ব্রহ্মপুত্র–যমুনা, পদ্মা এবং সুরমা–মেঘনা নদীর অববাহিকায় অবস্থিত বন্যা প্রবণ জেলাগুলোর জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সাহায্য করবে। নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ জেলার মানুষ এ প্রকল্পের উপকার পাবে।

এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের টিম লিডার ইগনাসিও উরুতিয়া বলেন, ‘এই প্রকল্প বন্যার সময় স্থানান্তর সুবিধা তৈরিতে সহায়তা করবে। এতে ওয়াশ (পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন) সুবিধা প্রদান করবে। একই সঙ্গে বন্য আক্রান্ত লোকজন ও গবাদি পশুর জন্য পর্যাপ্ত জায়গার সংস্থানও করা হবে। স্বাভাবিক সময় তারা এসব অবকাঠামো অন্য কাজেও লাগাতে পারবে।’

প্রকল্পের আওতায় দেশের বন্যা আশ্রয়ণকেন্দ্রগুলোর সংখ্যা ও সেগুলো কি অবস্থায় আছে ওপর একটি ডেটাবেইস তৈরি করা হবে। যা দুর্যোগ প্রস্তুতি জন্য এবং ভবিষ্যতের এ খাতে বিনিয়োগ পরিকল্পনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। একই সঙ্গে প্রকল্পটি বাংলাদেশের ডেলটা প্ল্যান–২১০০ এর জন্যও সহায়ক হবে। 

এই নমনীয় ঋণ বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে পাওয়া যাবে। ৫ বছরের রেয়াতকাল (এ সময় কিস্তি দিতে হবে না) সহ ৩০ বছরে তা পরিশোধ করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যার প্রতিবাদে গণমাধ্যমের ওপর হামলার দায় সরকার এড়াতে পারে না: টিআইবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত ও নির্মম হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্‌স্বাধীনতার ওপর সংঘটিত ও অভূতপূর্ব ধ্বংসাত্মক হামলার ঘটনাকে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ভিত্তি, নাগরিক নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক লিখিত বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টার্গেটেড শুটিংয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতা এবং পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অদূরদর্শিতা ও অদক্ষতারই প্রতিফলন। এর ফলে গণরোষ থেকে সৃষ্ট অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি আরও বেড়েছে, যার দায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর বিজয়ের দাবিদার কিছু শক্তির আক্রোশপূর্ণ ও প্রতিশোধপ্রবণ আচরণ রাষ্ট্র ও সমাজে নতুন ধরনের দমনমূলক প্রবণতা তৈরি করছে। এর সরাসরি শিকার হচ্ছে মুক্ত গণমাধ্যম, ভিন্নমত ও বাক্‌স্বাধীনতা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর অবস্থান নিতে ব্যর্থ হয়েছে; বরং অতীতে অনুরূপ সংকটে নতজানু অবস্থান গ্রহণ করে রাষ্ট্র নিজেই অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার ক্ষেত্র প্রসারিত করেছে।

টিআইবি জানায়, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের মতো শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা, সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটে আক্রমণ এবং কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাসকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই বিচ্ছিন্ন নয়। বরং এসবই মুক্তচিন্তা, ভিন্নমত ও স্বাধীন মতপ্রকাশকে পরিকল্পিতভাবে দমনের জ্বলন্ত উদাহরণ।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে যেভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মৌলিক মানবাধিকার পদদলিত হয়েছিল, আজ সেই একই দমনমূলক বাস্তবতা নতুন রূপে ফিরে আসছে। যারা বিগত ১৬ বছর অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন এবং জুলাই আন্দোলনের বিজয়ী হিসেবে নিজেদের দাবি করছেন, তাঁদেরই একাংশের হাতে আজ মুক্ত গণমাধ্যম ও ভিন্নমতের অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান সতর্ক করে বলেন, এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ও মূল্যবোধ চরম হুমকির মুখে পড়ছে। বৈষম্যমুক্ত সমাজ, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও বহু সংস্কৃতির সহাবস্থানের যে স্বপ্ন একাত্তর ও জুলাই ধারণ করেছিল, তা আজ গভীর সংকটে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট আবেগকে কাজে লাগিয়ে মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের বিরোধী স্বার্থান্বেষী মহল পতিত শক্তির ইন্ধনে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার, উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি এবং মুক্ত গণমাধ্যম ও নাগরিক অধিকারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর, সমন্বিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

ড. ইফতেখারুজ্জামান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এসব পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং একাত্তর ও জুলাইয়ের মৌলিক আদর্শ আরও গভীর সংকটে পড়বে, যার দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির জানাজার সময় এগিয়ে শনিবার বেলা দুইটায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩২
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদি। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজার সময় এগিয়ে এনে আগামীকাল শনিবার বেলা দুইটায় নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বেলা দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে নামাজে জানাজা বেলা আড়াইটায় অনুষ্ঠিত হবার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

শহিদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় যারা অংশ নিতে আসবেন তারা কোনো প্রকার ব‍্যাগ বা ভারী বস্তু বহন না করার জন‍্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন উড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভাঙচুর ও লুটতরাজকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান ছায়ানটের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছায়ানটের ভেতর ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছায়ানটের ভেতর ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ওসমান হাদির মৃত্যুর পর ছায়ানট ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের প্রতি সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১২টার পর ওসমান হাদির মর্মান্তিক মৃত্যুকে উপলক্ষ করে একজোট লোক ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে জোরপূর্বক প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটতরাজ চালায় এবং অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। তারা ছয়তলা ভবনের সব সিসি ক্যামেরাসহ অধিকাংশ কক্ষ, প্রক্ষালণ কক্ষ এবং বহু বাদ্যযন্ত্র, মিলনায়তন, কম্পিউটার ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে। সার্ভারসহ ছায়ানটের কিছু বাদ্যযন্ত্র ও আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। অন্তত সাতটি ল্যাপটপসহ গোটা চারেক ফোন ও কিছু হার্ডডিস্ক লুট করেছে। তাদের ভাঙচুরে বৈদ্যুতিক সংযোগ ও সরঞ্জামও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

‘ছায়ানট একটি স্বেচ্ছাসেবী ও স্বনির্ভর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। ছায়ানট কোনো সরকার, বিদেশি সংস্থা বা করপোরেট অনুদান নেয় না। সুতরাং, ছায়ানট আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে এই ক্ষতি পূরণ করবে এবং সংগীত ও শিশুদের সাধারণ শিক্ষায় এই সাময়িক বিঘ্নের দ্রুত প্রতিকার করতে বদ্ধপরিকর।’

এতে আরও বলা হয়, ‘ছায়ানটের কাজের ক্ষেত্র রাজনীতি নয়, সংগীত-সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তাকে ধারণ করে ছায়ানট। ছায়ানট সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের সমাজ গড়তে প্রয়াসী। আমরা ওসমান হাদির মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে শোকাহত। কিন্তু ওই সূত্র ধরে ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে কেন হামলা সংঘটিত হলো, তা মোটেই বোধগম্য নয়। হয়তো পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করেছে সংস্কৃতিচর্চার বিরোধী গোষ্ঠী।’

সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটি আরও বলে, ছায়ানট এই উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ অনানুষ্ঠানিক সংগীতশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীরা দেশে ও বিদেশে সমাদৃত। বাংলা গানের চর্চা বিস্তৃতির পাশাপাশি স্বাধীনতা-সংগ্রামে ছায়ানটের ভূমিকাও সারা বিশ্বে স্বীকৃত। তাই ছায়ানট-সংস্কৃতি ভবনে এই নিন্দনীয় হামলা মাতৃভূমি সম্পর্কে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিতে পারে বিশ্বে।

দেশ ও বিদেশ থেকে যে অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী তাঁদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা জানিয়েছেন, তাঁদের সবার কাছে ছায়ানট কৃতজ্ঞ।

বাঙালির আবহমান সংগীতসংস্কৃতির সাধনা ও প্রসারে ছায়ানট তার স্থির প্রত্যয় যাত্রায় অবিচল থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির লাশের আগমন ঘিরে শাহজালাল বিমানবন্দরজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির লাশ ঢাকায় পৌঁছানোকে কেন্দ্র করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরজুড়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা।

আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বিমানবন্দর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে ডোমেস্টিক ও আন্তর্জাতিক টার্মিনালের প্রতিটি প্রবেশপথে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুরো বিমানবন্দর এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও নিরাপত্তা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

এ ছাড়া ভিআইপি গেটে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়নের (এএফবি) সদস্যদের কঠোর দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত নজরদারি রাখা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ওসমান হাদির লাশের বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে বের করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ওই গেট এলাকাতেও সেনাবাহিনী, আর্মড ফোর্স ব্যাটালিয়ন ও পুলিশের সদস্যদের কড়া অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৫৮৫ ফ্লাইটে করে সিঙ্গাপুর থেকে আনা হয় ওসমান হাদির লাশ। ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৫টা ৪৯ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত