Ajker Patrika

ভিসা জটিলতায় অনিশ্চিত ৩৫০০০ মানুষের ওমরাহ

মনজুরুল ইসলাম ঢাকা
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

প্রস্তুতি নিলেও ওমরাহ পালন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশির। সৌদি আরব সরকার ওমরাহ ভিসা কমিয়ে দেওয়ায় এই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

উড়োজাহাজের টিকিট, সৌদি আরবে বাড়ি বা হোটেল বুকিং দিয়েও নির্ধারিত সময়ে ভিসা না পাওয়ায় ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের পাশাপাশি ওমরাহ এজেন্সিগুলোও আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছে। এয়ারলাইনসগুলোও সমস্যায় পড়ছে। হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করলেও এখনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।

হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সূত্র বলছে, সম্প্রতি সৌদি আরব ওমরাহ ভিসায় কোটা ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এর প্রভাব বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রীদের ওপরও পড়েছে। আগে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ ওমরাহ ভিসার আবেদন অনুমোদিত হলেও রমজান মাসের শুরুতে এই হার নামে ৮-১০ শতাংশে। রমজানের শেষ দিকে তা আরও কমে ২-৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

হাব বলছে, ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক ৩৫ থেকে ৪০ হাজার বাংলাদেশি ভিসার জন্য উড়োজাহাজের টিকিট ও হোটেল বুকিং করেছেন। তাঁদের অনেকে পরিবারসহ ওমরাহ পালনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা নির্ধারিত সময়ে ভিসা পাননি। ভিসা না পাওয়ার বিষয়টি জেনে আরও অন্তত ৫৫ হাজার ব্যক্তি ওমরাহ যাত্রার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। অবশ্য তাঁরা উড়োজাহাজের টিকিট বুকিং দেননি।

ভিসা না মেলায় ওমরাহপ্রত্যাশীদের মতো ওমরাহ এজেন্সিগুলোও বড় আর্থিক ক্ষতিতে পড়েছে। কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওমরাহ যাত্রীর জন্য আগাম টিকিট ও হোটেল বুকিং দেয় এজেন্সিগুলো। ক্ষতির কারণে কিছু এজেন্সি এই পরিস্থিতিতে কার্যক্রম স্থগিত রাখার চিন্তা করছে। এয়ারলাইনসগুলোরও একই অবস্থা। কারণ, যাত্রীরা ভিসা জটিলতার কারণে টিকিট বাতিল করছেন বা ফ্লাইট পুনর্নির্ধারণ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, সৌদি সরকারের আকস্মিক সিদ্ধান্তে ওমরাহ যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ভিসা জটিলতায় শত শত এজেন্সি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। অনেক এজেন্সি আগে থেকে টিকিট কেটেছে, সৌদি আরবে হোটেল ও বাসা ভাড়া করেছে। কিন্তু ভিসা না পাওয়ায় সব বুকিং বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে, যা বিপুল আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংকট সমাধানে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হাব সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে এখনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, সৌদি সরকার ওমরাহ ভিসার ক্ষেত্রে সম্প্রতি কোটার ব্যবস্থা চালু করেছে। এতে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিসা বরাদ্দ হচ্ছে। তবে এ সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা ও ধর্মীয় স্থানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অতিরিক্ত জনসমাগম ও ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ এড়াতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়।

কয়েক ওমরাহ যাত্রী বলেন, তাঁরা মাসখানেক আগে আবেদন করেও ভিসা পাচ্ছেন না। এতে আর্থিক ও মানসিক চাপে আছেন।

বেশ কয়েকটি ওমরাহ এজেন্সির অভিযোগ, ওমরাহ ভিসার কোটা ব্যবস্থায় বাংলাদেশিদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে খুব কম। ইতিমধ্যে প্যাকেজ বুকিং নেওয়া থাকলেও ভিসা না পাওয়ায় ওমরাহ যাত্রীদের যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ কারণে তারা আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

হাব ওমরাহ ভিসার অনুমোদন বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক পদক্ষেপ নিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে।

সূত্র বলেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে ওমরাহ ভিসার বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। ঢাকার সৌদি দূতাবাসকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, সৌদি আরব বাংলাদেশিদের জন্য ওমরাহ ভিসা পুরোপুরি বন্ধ করেনি। ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের হজ ও ওমরাহ এজেন্সিগুলোকে সৌদি এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ হয়।

এদিকে ওমরাহ ভিসার খরচ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সাধারণ সময়ে একটি ওমরাহ ভিসার খরচ ছিল ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমান সংকটের কারণে একেকটি ভিসার জন্য ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ছে, তা-ও পাওয়া নিশ্চিত নয়। প্রতি ১০ জন আবেদনকারীর মধ্যে বড়জোর একজন ভিসা পাচ্ছেন।

ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন ১৮ মার্চ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, সৌদি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ওমরাহ ভিসা বন্ধ না করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত বিষয়টি ধর্মসচিবকে নিশ্চিত করেছেন। টিকিট সংগ্রহকারী কোনো ওমরাহ যাত্রী ভিসা না পাওয়ার কারণে সৌদি আরব যেতে না পারলে তাঁকে বিধি মোতাবেক টাকা ফেরত দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সাউদিয়াসহ অন্যান্য এয়ারলাইনসকেও একইভাবে ভিসা জটিলতায় ওমরাহ পালনে যেতে না পারা যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

ধর্ম উপদেষ্টা জানান, বিমানের টিকিট সংগ্রহকারী যাত্রীরা যাতে রমজান মাসেই ওমরাহ পালন করতে যেতে পারেন, সে লক্ষ্যে জেদ্দায় বাংলাদেশ হজ কাউন্সিলর সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় চার শতাধিক সৌদি ওমরাহ কোম্পানিকে বিভিন্ন দেশের এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ওমরাহ কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে। এই কোম্পানিগুলোর অনুকূলে প্রতিবছর ওমরাহ যাত্রীর কোটা নির্ধারিত থাকে। এই নির্ধারিত কোটা শেষ হয়ে গেলে ওই কোম্পানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসা প্রদান কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। বাংলাদেশে অনুমোদিত ওমরাহ এজেন্সির পাশাপাশি সৌদি আরবের নুসুক অ্যাপের আইডি ও পাসওয়ার্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান ওমরাহ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদেশে নেওয়ার অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া

  • মেডিকেল বোর্ড বললেই চলে আসবে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
  • আজ রোববার যাত্রার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না
  • গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান চিকিৎসক জাহিদ হোসেনের।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উড়োজাহাজে দীর্ঘ পথ ভ্রমণে সক্ষম না হওয়ায় চিকিৎসার জন্য তাঁর লন্ডনযাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান মেডিকেল বোর্ডের সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত শুক্রবারই খালেদা জিয়াকে নিয়ে চিকিৎসকদের লন্ডনে রওনা হওয়ার কথা থাকলেও পরে তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। আজ রোববার যাত্রা করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।

এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী বলেছেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সবিষয়ক প্রস্তুতি সম্পন্ন। মেডিকেল বোর্ড পরামর্শ দিলেই ঢাকায় চলে আসবে কাতারের আমিরের ব্যবস্থা করা অ্যাম্বুলেন্সটি।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হৃদ্‌রোগের জটিলতায় তাঁর অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। খালেদা জিয়ার বড় পুত্রবধূ মেডিকেল বোর্ডের সদস্য জুবাইদা রহমান যুক্তরাজ্য থেকে শুক্রবার ঢাকায় এসে চিকিৎসাপ্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন। লন্ডনে থাকতেও চিকিৎসা কার্যক্রমে ভূমিকা রেখে আসছিলেন জুবাইদা রহমান।

সার্বিকভাবে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই রয়েছে। তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির চেয়ারপারসনকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও বিষয়টি মূলত তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে বলে জানান তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সব সময় প্রস্তুত আছে। তবে চিকিৎসাগত দিক থেকে উনার নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা প্রাধান্য পাচ্ছে। মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরাও উনার শারীরিক অবস্থার দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।’

খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়া বিলম্বিত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘(কাতারের আমিরের) এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের যান্ত্রিক ত্রুটি যেমন ছিল, একইভাবে মেডিকেল বোর্ডও সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ওই মুহূর্তে উনার ফ্লাই করা সঠিক হবে না। ভবিষ্যতে হয়তো শারীরিক অবস্থাই বলে দেবে, উনাকে কখন বিদেশে নিয়ে যাওয়া যাবে।’

জাহিদ হোসেন বলেন, ‘যেহেতু উনার স্বাস্থ্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, সেহেতু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তদারকির পাশাপাশি চিকিৎসকদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। দলও বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। গতকাল রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা, তাঁকে দেশের বাইরে নেওয়ার বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়া, গুজবে কান না দেওয়া এবং গুজব না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা যখন বিমানে ফ্লাই করবেন, তখন মানুষের শারীরিক যে পরিবর্তন হয়, তার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো একজন অসুস্থ মানুষের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না। বিষয়টি খেয়াল রেখে আপনারা দয়া করে বিভ্রান্ত হবেন না, দয়া করে কেউ বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবেন না।’

খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে কাতার সরকার এবং অন্তর্বর্তী সরকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতা করছে বলেও জানান খালেদা জিয়ার চিকিৎসক।

এদিকে বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড সবুজসংকেত দিলেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে কাতারের ব্যবস্থা করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। বাসস জানায়, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনামুল হক চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন। দলের পক্ষ থেকে তিনিই কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

এনামুল হক চৌধুরী বলেন, মেডিকেল বোর্ড যখনই সিদ্ধান্ত জানাবে, তখনই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে এবং খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যাবে। সবকিছুই কাতার কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় হচ্ছে।

বিকল্প এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে এনামুল হক বলেন, ‘আমরা নই, কাতার কর্তৃপক্ষই জার্মানি থেকে একটি অত্যাধুনিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।’

মেডিকেল বোর্ডের কয়েকজন সদস্য বাসসকে জানিয়েছেন, গত দুদিনে বোর্ড কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। সেগুলোর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। শুক্রবার দুই দফা মেডিকেল বোর্ডের বৈঠক হয়। প্রতিদিনই খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার নিয়মিত প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভোটের জোটে গতি নেই

  • বিএনপির ২৮টি আসন এখনো ফাঁকা। সেগুলো শরিকদের জন্য কি না খোলাসা করেনি
  • জামায়াতসহ আটটি দল মাঠে সক্রিয়। কিন্তু জোটের ঘোষণা এখনো আসেনি
  • বিএনপি বা জামায়াতে না ঘেঁষে এনসিপির ঝোঁক তৃতীয় শক্তি দাঁড় করানোয়
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগেই হয়ে যেতে পারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। এর পরেই পুরোদমে ভোটের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়বে রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত দলগুলোর মধ্যে ভোটের মেরুকরণে তেমন কোনো বড় নড়চড় চোখে পড়ছে না। ক্ষমতায় যাওয়ার পথ পাকা করার কৌশলে ভোটের আগ দিয়ে জোট গড়ার আলাপ বরাবরের মতো এবারও ছিল শুরু থেকে। কিন্তু সেই আলাপ যেন কোনো পরিণতিতে গড়াচ্ছে না।

যদিও সমন্বিতভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা এখনো বলে যাচ্ছে ছোট কয়েকটি দল। কিন্তু প্রথাগত নির্বাচনী জোটের ঘোষণা এখনো আসেনি কারও পক্ষ থেকে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—এই প্রধান তিন শক্তি এবং তাদের মিত্র দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে, নির্বাচনী জোট বলতে যা বোঝায়, তা যে হচ্ছে না, সেটা এখন অনেকটাই স্পষ্ট।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগপর্যন্ত ছোট ছোট অনেক দলকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে এসেছে বিএনপি। ভোটের আলাপ শুরু হওয়ার পর থেকে দলটি তাই রাজপথের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এবং জয়ী হলে সমন্বিতভাবে সরকার গঠনের কথা বলে আসছে। এখনো ওই অবস্থানে থেকেই মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি।

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, শরিকদের অবদানকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে সবার আগে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন দলের নীতিনির্ধারকেরা। দলের ভেতরে ও বাইরে মিত্রদের সঙ্গে আসন সমঝোতার ক্ষেত্রেও বিষয়টি সামনে আনছেন তাঁরা। নীতিনির্ধারকদের ভাষ্য অনুযায়ী, মিত্রদের সঙ্গে শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক নয়, নির্বাচনের পরেও এই সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং সবাইকে নিয়েও সরকার গঠন করা হবে। কিন্তু তার আগে দরকার নির্বাচনে বিজয়ী হওয়া। কারণ, নির্বাচনে বিজয়ী না হলে সব চেষ্টাই বৃথা হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যদিও এরই মধ্যে নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির মনোনয়ন ঘিরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শরিকদের অনেকের মধ্যে। ২৭২টি আসনে বিএনপির ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা নিয়ে এরই মধ্যে আপত্তি তুলেছে তারা।

গত শুক্রবার বিএনপির অন্যতম মিত্র ১২ দলীয় জোট সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছে, শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা না করে বিএনপির দুই ধাপে সংসদীয় আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। জোটের নেতারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচন এবং সরকার গঠনের যে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ২৭২টি আসনে মনোনয়ন ঘোষণার মাধ্যমে তার বরখেলাপ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে আগামীকাল সোমবার সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরার কথা বলেছেন জোটের নেতারা।

শরিকদের এসব অভিযোগের বিপরীতে বাস্তবতার আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পক্ষে বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। শরিক দলগুলোকে কতটি আসন ছাড়া হবে, তার আগে দেখছেন বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু। এ ক্ষেত্রে নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বাধ্যবাধকতা শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতার আলোচনায় আরও বেশি বিপাকে ফেলেছে বিএনপিকে। নিবন্ধিত শরিক দলের প্রার্থীরা তাঁদের নিজ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হতে পারবেন—এমন ভরসা রাখতে পারছে না বিএনপি।

নির্বাচনী জোট নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে জানিয়ে গতকাল শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যাঁরা যুগপৎ আন্দোলনে ছিলেন, তাঁদের অনেক এলাকা নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছি। এখনো ২৮টা আসন তো বাকি আছে। জোটের আলোচনা তো এখনো শেষ হয়নি।’

আওয়ামী লীগবিহীন ভোটের মাঠে নতুন বাস্তবতায় এবার বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে সামনে এসেছে জামায়াতে ইসলামী। তাদের নেতৃত্বে ইতিমধ্যে আটটি দল একযোগে সক্রিয় মাঠের আন্দোলনে। জামায়াতের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ আটটি ইসলামপন্থী দল থাকলেও ভোটের জোট বা নির্বাচনে আসন সমঝোতার ঘোষণা এখনো আসেনি তাদের দিক থেকে।

জামায়াতের একাধিক সূত্র বলছে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই শরিকদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে প্রতিটি আসনের চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশিত হবে। সমন্বিত কৌশলে ভোটযুদ্ধে লড়ার পরিকল্পনা চলছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া শেষ হতে পারে জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা তো আগেই নিজেদের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছি। এখন যেহেতু অন্য কয়েকটি দলের সঙ্গে সমঝোতা করতে হচ্ছে...এখানে আলাপ আলোচনার অনেক বিষয় আছে।’

এবার বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির কোনো জোট হয় কি না, বড় করে সেদিকেই শুরু থেকে সবার নজর। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি এখন পর্যন্ত নেই; বরং সংস্কারের পক্ষে থাকা মধ্যপন্থী দলগুলোর সঙ্গে জোটের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এনসিপি। তৃতীয় শক্তি বা তৃতীয় জোট গঠন করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতার প্রশ্নে শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে চাইছে বলে জানিয়েছেন এনসিপির একাধিক নেতা।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এবি পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ মধ্যমপন্থী রাজনীতি এবং সংস্কারের পক্ষে থাকা দলগুলোর সমন্বয়ে জোটের বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে।

তবে জোটের বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করব। তবে জোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।’

এনসিপির একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, জোট নিয়ে এনসিপির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আটকে আছে দুই ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের ওপর। এর মধ্যে একজন উপদেষ্টা মনে করেন, এনসিপি বিএনপির সঙ্গে জোট না করে এককভাবে নির্বাচন করলেও সুবিধাভোগী হবে জামায়াতে ইসলামী। আর জোট করলে পুরো সুবিধাই জামায়াত পাবে। এ ক্ষেত্রে এনসিপির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। দলটি রাজনৈতিক মাঠে অবস্থান তৈরি করতে পারবে না বলেও মনে করেন ওই উপদেষ্টা। যে কারণে দলটিতে থাকা দুই উপদেষ্টার অনুসারীরা এনসিপিকে বিএনপির দিকে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে দলটির নেতাদের একটা অংশ জামায়াতের সঙ্গে জোট করতে আগ্রহী। জোট নিয়ে নেতাদের মতভেদের কারণে এনসিপির মধ্যে বিভক্তি চলছে বলে জানা গেছে। দুই উপদেষ্টা এনসিপিতে যোগ দেবেন কি না, তা নিয়েও চলছে নানা আলোচনা।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘তাঁদের (দুই উপদেষ্টা) জন্য দলের দরজা খোলাই আছে। তাঁরা চাইলেই এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন এবং নির্বাচন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আইনি বিধিনিষেধ নেই।’

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের শরিক হিসেবে গত তিনটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দল হয়েছিল জাতীয় পার্টি। দলটিকে নিষিদ্ধের সঙ্গে ভোটে অযোগ্য ঘোষণার দাবিতে রাজপথে একাধিক দল আন্দোলনও করেছিল। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন করা জাপার নিজস্ব সিদ্ধান্ত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে জাতীয় পার্টিতে আরেক দফা ভাঙন দেখা দেয়। আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে একটি অংশ সম্মেলন করে নতুন কমিটি দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে এরই মধ্যে। দলটি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বোধীন আওয়ামী লীগের শরিক জাতীয় পার্টির (জেপি) সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। আগামীকাল সোমবার জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক জোট নামে নতুন জোটের ঘোষণা দিতে পারেন তাঁরা। এ জোটে নতুন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জনতা পার্টিসহ আরও ১৬টি রাজনৈতিক দল রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে।

অন্যদিকে গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির মূল অংশ এখনো নির্বাচনী জোট তৈরির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেনি। তবে কোনো দল তাদের আমন্ত্রণ জানালে জোট করতে আগ্রহী তাঁরা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে জোট গঠনে জাপা উদ্যোগ নেবে বলে জানা গেছে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্বাচন করলে কোনো একটা জোট হতেই পারে। জোট গঠন নিয়ে আমরা কারও সঙ্গে আলোচনা শুরু করেনি। তবে আমাদের ভোটব্যাংক রয়েছে, তাই অনেকে আমাদের জোটে নিতে আগ্রহী হবে। কারণ, আমাদের ভোট অনেক আসনে ফলাফল নির্ধারণ করবে।’

আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে একটি তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে বামপন্থী, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক ধারার ৯টি দল নিয়ে নতুন জোট ‘গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট’ করার ঘোষণা দিয়েছে বামপন্থী দলগুলো। দলগুলো হলো—বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, বাসদ (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল—বাসদ (মাহবুব) ও সোনার বাংলা পার্টি। গতকাল শনিবার এক রাজনৈতিক কনভেনশনের মাধ্যমে এই নতুন জোটের ঘোষণা করেন তাঁরা। নেতারা বলছেন, জোটের কলেবর বাড়াতে ঐক্য ন্যাপ, গণমুক্তি ইউনিয়ন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চাসহ আরও কয়েকটি বামপন্থী রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

এই জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ কাফি রতন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে যুক্তফ্রন্ট ঘোষণা করেছি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বামপন্থী গণতান্ত্রিক দলের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গেও আলোচনা চলমান। একই সঙ্গে সারা দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি জনতার সনদ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনের তফসিল চূড়ান্ত হবে আজ

  • আজ ইসির বৈঠকে সময় ও ভোটকক্ষের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে
  • বৈঠকের বিষয়গুলো রাষ্ট্রপতিকে জানানোর পর তফসিল ঘোষণা
  • গণভোটের প্রচারে থাকবে লিফলেট-ব্যানার
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তারিখ আজ রোববার চূড়ান্ত করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ১০ ডিসেম্বর (বুধবার) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে বিষয়গুলো অবহিত করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে দশম কমিশন সভা শুরু হবে। এই সভায় ভোটের দিন, সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হওয়ায় ভোট গ্রহণের সময় ১ ঘণ্টা বাড়ানো বা বুথ ও গোপন কক্ষ বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। আজকের কমিশন সভার আগে গতকাল শনিবার কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন ইসি সচিব।

রেওয়াজ অনুযায়ী, বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে সিইসির নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন। সেদিন দুপুর ১২টায় সময় দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। পরদিন বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন সিইসি। তবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর বুধবারও তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। আগামী ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যেকোনো দিন ভোট গ্রহণ করা হবে।

ভোটের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি কমিশন সচিবালয় থেকে নেওয়া আছে। বাকিটা রোববার (আজ) কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। এত বড় কর্মযজ্ঞে চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। চ্যালেঞ্জ থাকলেও তা উত্তরণ করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি জানান, সংসদ ও গণভোট একসঙ্গে হওয়ায় নির্বিঘ্নে ভোট গ্রহণ শেষ করতে ভোটের সময় বাড়ানো, বুথের সংখ্যা বাড়ানো ও গোপন কক্ষ বাড়ানোর প্রস্তাব কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

একসঙ্গে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য গত ২৯ নভেম্বর মহড়া (মক) ভোট করে ইসি। দুটি আলাদা ব্যালটে এই ভোট নিতে একজন ভোটারের গড়ে ৩ মিনিট ৫২ সেকেন্ড সময় লেগেছে। গণভোটের প্রশ্ন না পড়ে সিল মারলে ২ মিনিট এবং পড়ে সিল মারতে ৭-৮ মিনিট সময় লেগেছে।

সংসদ নির্বাচনে সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৮ ঘণ্টা ভোট গ্রহণ করা হয়। সূত্র জানায়, এবার সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হবে বলে ভোটের সময় সকাল ও বিকেলে ৩০ মিনিট করে মোট ১ ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আজকের কমিশন সভায় নেওয়া হতে পারে। ভোট গ্রহণের সময় না বাড়লে বুথ ও গোপন কক্ষের সংখ্যা বাড়াতে পারে কমিশন।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, তফসিল ঘোষণার আগে কমিশনকে মনোনয়নপত্র ছাপানো, মনোনয়নপত্র পূরণের নির্দেশিকা, আসনভিত্তিক ভোটার তালিকার সিডি প্রস্তুত রাখতে হবে। এর মধ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুত করবেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। তবে সংশোধিত রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা এবং নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা আইন মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই হয়ে না আসায় মনোনয়নপত্র ছাপাতে পারেনি কমিশন। এ কারণে নির্বাচনী ম্যানুয়েলও ছাপানো যায়নি। ইসি কর্মকর্তারা আশা করছেন, দু-এক দিনের মধ্যে এসব হাতে পাবেন তাঁরা।

ইসি সূত্র বলছে, এবারও জেলা প্রশাসকেরাই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পাচ্ছেন। তবে যেসব জেলায় সংসদীয় আসন বেশি, সেখানে একাধিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইসির কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকেও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়েও আজকের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

গণভোটের বিষয়ে ভোটারদের সচেতন করতে ব্যানার ও লিফলেট ছাপাচ্ছে ইসি। প্রতি উপজেলায় ৫০ হাজার করে লিফলেট ও প্রতি ইউনিয়নে কয়েকটি ব্যানার দেওয়া হবে। সরকারি অফিস, মাঠপর্যায়ে সব নির্বাচন কমিশনের অফিস, জনবহুল এলাকায় এসব ব্যানার টাঙানো হবে। স্কুল-কলেজসহ জনবহুল এলাকায় লিফলেট বিলি করা হবে। লিফলেট ও ব্যানারে গণভোটের চারটি প্রশ্ন উল্লেখ থাকবে।

ইসি সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকে তফসিল অর্থাৎ মনোনয়নপত্র জমা, বাছাই, রিটার্নিং কর্মকর্তার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল, আপিল নিষ্পত্তি, প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ, প্রচারের সময়, ভোট গ্রহণের দিন চূড়ান্ত করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তফসিলের আগে-পরের কার্যক্রম, মাঠপর্যায়ে যোগাযোগ, মতবিনিময়, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন পদ্ধতি পর্যালোচনা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা, মক ভোট থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা এবং মাঠপর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংসদ নির্বাচন: কারাগারে বন্দীরাও ভোট দেবেন, থাকবে না প্রচার ও এজেন্ট

মো. হুমায়ূন কবীর ও রাসেল মাহমুদ, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী কাজে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো সারা দেশের কারাগারগুলোতে বন্দী ব্যক্তিরাও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে কারা কর্তৃপক্ষকে দেওয়া লিংকে ভোট দিতে আগ্রহী বন্দীরা নিবন্ধন করতে পারবেন। তাঁরা যে নির্বাচনী এলাকার ভোটার, সেই আসনের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশন, কারা অধিদপ্তর ও জেলা কারাগার সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্রগুলো বলছে, কারাগারে বন্দীরা ভোট দিতে পারলেও সেখানে নির্বাচনী প্রচার হবে না এবং প্রার্থীদের এজেন্টও থাকবে না। ভোট গ্রহণের পর বন্দীদের ব্যালট ডাক বিভাগের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। এসব ভোট ফলাফলের সঙ্গে যোগ হবে। দেশের কারাগারগুলোতে সব মিলিয়ে প্রায় ৭৭ হাজার হাজতি ও কয়েদি রয়েছে।

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে ‘পোস্টাল বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন চলছে। আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ব্যক্তিদের ভোটের জন্য নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু হবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর। বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছে ইসি। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহর সভাপতিত্বে ৪ ডিসেম্বর এ নিয়ে অনলাইনে কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও জেলা কারাগারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছে কমিশন।

ওই সভা সূত্রে জানা যায়, তফসিল ঘোষণার পর ইসি থেকে কারা কর্তৃপক্ষকে একটি লিংক দেওয়া হবে। কারাগারের বন্দীদের মধ্যে যাঁরা ভোটদানে আগ্রহী হবেন এক্সেল শিটে তাঁদের তথ্য নেওয়া হবে। তফসিল ঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যে বন্দীর নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ভোটার নম্বর দিয়ে কারাগার কর্তৃপক্ষ তালিকা তৈরি করে ইসিতে পাঠাবে। ইসি তা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত তালিকা আবার কারাগারে পাঠাবে। সেই তালিকা অনুযায়ী কমিশন থেকে নির্বাচনের ৭ থেকে ১০ দিন আগে ডাক বিভাগের মাধ্যমে কারাগারগুলোতে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। কারাগারের নির্ধারিত স্থানে বুথ স্থাপন করে পোস্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়া হবে। ভোট গ্রহণ শেষে ব্যালট আবার ডাক বিভাগের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হবে। বন্দীদের ভোট মূল ফলাফলের সঙ্গে যুক্ত হবে।

সভা সূত্রে আরও জানা যায়, কারাবিধি অনুযায়ী নির্বাচনের সময় কারাগারের ভেতরে কোনো প্রচার-প্রচারণা হবে না এবং ভোটকেন্দ্রে প্রার্থীদের প্রতিনিধি থাকবেন না। কারাগারে অনুমোদিত জাতীয় টেলিভিশন, পত্রিকার মাধ্যমে বন্দীরা যতটুকু জানবেন, সেই অনুযায়ী নিজ এলাকার প্রার্থীকে ভোট দেবেন। অর্থাৎ তিনি যে আসনের ভোটার, সেই আসনের প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। তবে কারাগারে ভোটার নিবন্ধন করার পর নির্বাচনের আগে কারামুক্ত হলে বাইরে এসে ভোট দিতে পারবেন না।

ইসি সূত্র জানায়, আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ ব্যবহার করে নিবন্ধনের সুযোগ নেই। ভোট দিতে আগ্রহী বন্দীদের নিবন্ধনের জন্য প্রতিটি কারাগারে আলাদা আলাদা লিংক পাঠানো হবে। ইসির ধারণা, আইনি হেফাজতে থাকা অধিকাংশ ব্যক্তি এবার ভোটার নিবন্ধন করবেন।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন থেকে কারা কর্তৃপক্ষকে একটি লিংক দেওয়া হবে। আইনি হেফাজতে থাকা বন্দীদের মধ্যে যাঁরা ভোটদানে আগ্রহী হবে, তাঁদের তথ্য নেওয়া হবে। তালিকা যাচাই শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হবে।

কারা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশে বর্তমানে ৭৫টি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে কেন্দ্রীয় ও জেলা কারাগার রয়েছে ২০টি। সব কারাগারে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৭৬ হাজার ৮৫১ জন বন্দী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ৭৪ হাজার ৯৩ ও নারী ২ হাজার ৭৫৮ জন। বন্দীদের মধ্যে হাজতি ৫৬ হাজার ১৩৭ ও কয়েদি ২০ হাজার ৭১৪ জন। সর্বোচ্চ ৯ হাজার ১৬৩ জন বন্দী রয়েছেন কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।

মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর খান বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পেলে বন্দীদের ভোট দেওয়ার জন্য করণীয় বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। অধিকাংশ বন্দী যেহেতু আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন, তাই ভোটের সময় যাঁরা বন্দী থাকবেন, তাঁদের নিবন্ধনের জন্য বলা হবে। আগের চেয়ে এবার ভোট দেওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে।

কারা সূত্রে জানা যায়, কারাগারে নিবন্ধনের পর প্রত্যেক বন্দীকে ভোট দেওয়ার জন্য তিনটি খামযুক্ত ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। কারাগারে স্থাপিত বুথে গিয়ে তাঁরা ভোট দেবেন। ব্যালটগুলো প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনকারী কারা কর্তৃপক্ষের কাছে জমা হবে।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, কারাগারে প্রতিদিন বন্দীর সংখ্যা বাড়ে-কমে। হাজতিরা মামলার হাজিরার জন্য আদালতে যান, কেউ জামিনে মুক্তি পান। কয়েদিদেরও কেউ কেউ মুক্তি পান। ফলে যেসব কয়েদি বা হাজতির নির্বাচন পর্যন্ত কারাগারে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে, তাঁরা ছাড়া অন্যদের নিবন্ধনের আগ্রহ থাকে না। ফলে ২০ হাজার বন্দী ভোট দিলেও তা আশাব্যঞ্জক।

কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক মো. জান্নাত-উল ফরহাদ বলেন, কারাগারে থাকা আগ্রহী বন্দীরা নিবন্ধন করে ভোট দিতে পারবেন। তাঁরা যে এলাকার ভোটার, সেই আসনের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। তবে কেউ কারাগারে নিবন্ধন করার পর মুক্তি পেয়ে বাইরে গেলে ভোট দিতে পারবেন না। আগের চেয়ে এবার ভোট দেওয়ার প্রবণতা বাড়তে বলে আশা করা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ ইমরান খান ‘গাদ্দার’ শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত—পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতি

বিচারকদের নিরাপত্তায় গা ছাড়া ভাব

স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কের পর সেই চিকিৎসককে অব্যাহতি ও শোকজ নোটিশ

বাসার দরজা ভেঙে প্রধান শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার

খালেদা জিয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যেতে পারেন বুধবার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত