সাইফুল মাসুম, ঢাকা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য সরকারি অফিসের মতো রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেও (ডিএই) চেয়ার দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। গত তিন মাসে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের সরিয়ে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। তবে বিগত সরকারের সুবিধাভোগী অধিকাংশ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) এখনো রয়ে গেছেন বহাল তবিয়তে। এই অবস্থায় তাঁদের সরিয়ে বড় প্রকল্পগুলোর পিডি হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপিপন্থী একদল কর্মকর্তা। অনেক দিন ধরে তৎপরতা চালিয়েও প্রকল্পের বর্তমান পিডি ও ডিপিডিদের সরাতে ব্যর্থ হয়ে এখন তাঁরা আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের তালিকা করে খামারবাড়ির সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে খামারবাড়িতে সরেজমিনে দেখা যায়, ডিএইর প্রবেশমুখেই দুটি বিশাল ব্যানার ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যানারে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, ডিএইর সাবেক দুজন মহাপরিচালকসহ ৩৯ জনের ছবি দেওয়া হয়েছে। এতে তুলনামূলক বড় প্রকল্পের পিডি, ডিপিডি ও গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তারা ঠাঁই পেয়েছেন। ব্যানারে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দু-একজন ছাড়া বেশির ভাগ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।
ব্যানারে ছবিও রয়েছে এমন এক প্রকল্প পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি চাকরি করি। আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। এখন ব্লেমগেম করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা হচ্ছে।’ সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের ডিপিডি মো. শফিকুল ইসলাম শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি পক্ষ যেভাবে সরাতে চাইছে, হয়তো প্রশাসন সেভাবে সায় দিচ্ছে না। তাই চাপে রাখার জন্য ব্যানারে আমার ছবি প্রকাশ করেছে।’ এর আগে বিএনপিপন্থী কিছু কর্মকর্তা চেয়ার ছাড়ার জন্য তাঁকে কয়েকবার চাপ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ডিএইর কয়েকজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের সুবিধাভোগী কয়েকজন পিডির নাম ও ছবি ব্যানারে আসেনি। তাঁদের কেউ কেউ রাজনৈতিক পরিচয় বদল করেছেন। আবার কেউ আর্থিক সুবিধা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। সুবিধাভোগীদের তালিকায় উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. মেহেদি মাসুদ, ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনি।
জানা গেছে, অধিদপ্তরে বর্তমানে ৩২টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে এক ডজন প্রকল্পে পিডি বদলের জন্য মন্ত্রণালয়ে তালিকাও পাঠানো হয়েছে। সেটা বাস্তবায়িত না হওয়ায় নতুন করে খসড়া তালিকা করা হচ্ছে। তালিকায় অগ্রাধিকার পাওয়া পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, পার্টনার প্রকল্প, কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প, সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প, মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প, জগন্নাথপুর ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় দুটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) স্থাপন প্রকল্প।
ডিএইতে গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি ও পদায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপপরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ ও রেজাউল ইসলাম মুকুল। দুজনই বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, রেজাউল ইসলাম বর্তমানে হবিগঞ্জ জেলায় কর্মরত রয়েছেন। জানতে চাইলে উপপরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ প্রশ্ন শুনে বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। শেষ করে আপনাকে কল দেব।’ পরে কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি আর কল করেননি।
ছবি দিয়ে ব্যানার টাঙানো শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ উল্লেখ করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাস্তবতার নিরিখে যদি পিডি বদল দরকার হয়, তার জন্য অফিশিয়াল নিয়ম আছে। ব্যানার ঝুলিয়ে তো কাউকে সরানো যাবে না।’ কৃষিসচিব আরও বলেন, ‘অনেকে পিডি হতে চায়। পিডি নিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষতা ও যোগ্যতাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য সরকারি অফিসের মতো রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেও (ডিএই) চেয়ার দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। গত তিন মাসে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের সরিয়ে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। তবে বিগত সরকারের সুবিধাভোগী অধিকাংশ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) এখনো রয়ে গেছেন বহাল তবিয়তে। এই অবস্থায় তাঁদের সরিয়ে বড় প্রকল্পগুলোর পিডি হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপিপন্থী একদল কর্মকর্তা। অনেক দিন ধরে তৎপরতা চালিয়েও প্রকল্পের বর্তমান পিডি ও ডিপিডিদের সরাতে ব্যর্থ হয়ে এখন তাঁরা আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের তালিকা করে খামারবাড়ির সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে খামারবাড়িতে সরেজমিনে দেখা যায়, ডিএইর প্রবেশমুখেই দুটি বিশাল ব্যানার ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যানারে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, ডিএইর সাবেক দুজন মহাপরিচালকসহ ৩৯ জনের ছবি দেওয়া হয়েছে। এতে তুলনামূলক বড় প্রকল্পের পিডি, ডিপিডি ও গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তারা ঠাঁই পেয়েছেন। ব্যানারে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দু-একজন ছাড়া বেশির ভাগ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী।
ব্যানারে ছবিও রয়েছে এমন এক প্রকল্প পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি চাকরি করি। আমার কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। এখন ব্লেমগেম করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করা হচ্ছে।’ সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের ডিপিডি মো. শফিকুল ইসলাম শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি পক্ষ যেভাবে সরাতে চাইছে, হয়তো প্রশাসন সেভাবে সায় দিচ্ছে না। তাই চাপে রাখার জন্য ব্যানারে আমার ছবি প্রকাশ করেছে।’ এর আগে বিএনপিপন্থী কিছু কর্মকর্তা চেয়ার ছাড়ার জন্য তাঁকে কয়েকবার চাপ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
ডিএইর কয়েকজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, বিগত সরকারের সুবিধাভোগী কয়েকজন পিডির নাম ও ছবি ব্যানারে আসেনি। তাঁদের কেউ কেউ রাজনৈতিক পরিচয় বদল করেছেন। আবার কেউ আর্থিক সুবিধা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। সুবিধাভোগীদের তালিকায় উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. মেহেদি মাসুদ, ক্লাইমেট-স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনি।
জানা গেছে, অধিদপ্তরে বর্তমানে ৩২টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে এক ডজন প্রকল্পে পিডি বদলের জন্য মন্ত্রণালয়ে তালিকাও পাঠানো হয়েছে। সেটা বাস্তবায়িত না হওয়ায় নতুন করে খসড়া তালিকা করা হচ্ছে। তালিকায় অগ্রাধিকার পাওয়া পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, পার্টনার প্রকল্প, কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প, সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প, মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প, জগন্নাথপুর ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় দুটি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) স্থাপন প্রকল্প।
ডিএইতে গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি ও পদায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপপরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ ও রেজাউল ইসলাম মুকুল। দুজনই বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত।
জানা গেছে, রেজাউল ইসলাম বর্তমানে হবিগঞ্জ জেলায় কর্মরত রয়েছেন। জানতে চাইলে উপপরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ প্রশ্ন শুনে বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। শেষ করে আপনাকে কল দেব।’ পরে কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তিনি আর কল করেননি।
ছবি দিয়ে ব্যানার টাঙানো শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ উল্লেখ করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাস্তবতার নিরিখে যদি পিডি বদল দরকার হয়, তার জন্য অফিশিয়াল নিয়ম আছে। ব্যানার ঝুলিয়ে তো কাউকে সরানো যাবে না।’ কৃষিসচিব আরও বলেন, ‘অনেকে পিডি হতে চায়। পিডি নিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষতা ও যোগ্যতাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে।’

প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার।
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
২ ঘণ্টা আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
২ ঘণ্টা আগে
ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলের পাঁচ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা মিলিত হচ্ছেন নয়াদিল্লিতে। এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে তিনি ভারত সফরে যাচ্ছেন।
২ ঘণ্টা আগেমানবতাবিরোধী অপরাধ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশে এই প্রথম কোনো সাবেক সরকারপ্রধানের ফাঁসির সাজা হলো। শেখ হাসিনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি।
এই মামলায় পতিত শেখ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাঁচ অভিযোগের দুটিতে এ দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অপর তিন অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এই দুজনের সব সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে জুলাই শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার অপর আসামি এবং পরে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল দুজনেই পলাতক।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে এই রায় ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এটিই ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়।
অন্তর্বর্তী সরকার এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছে। রায়ের গভীর তাৎপর্য উপলব্ধি করে সরকার সর্বস্তরের জনগণকে শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
রায় ঘোষণা শুরুর আগেই ট্রাইব্যুনালের এজলাসকক্ষ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আসন না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে জড়ো হন জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্য, জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা চৌধুরী মামুনকে এজলাসে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা শুরু হয় দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের উল্লেখযোগ্য অংশ পড়ে শোনানো হয়। রায় ঘোষণা শেষ হয় বেলা ২টা ৫০ মিনিটে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হতেই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আহত জুলাই যোদ্ধাদের অনেকে হাততালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। শহীদ পরিবারের অনেককেও কাঁদতেও দেখা যায়। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান দাঁড়িয়ে বলেন, ‘এটা আদালত। উচ্ছ্বাস বা যেকোনো প্রতিক্রিয়া ট্রাইব্যুনালের বাইরে দেখাতে হবে।’ পরে সবাই শান্ত হন। পুরোটা সময় নিশ্চুপ ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
অভিযোগ গঠনের চার মাস পর এই মামলার রায়
রায়ের সময় অ্যাটর্নি জেনারেল, ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটররা, তিন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম ও জিএস এস এম ফরহাদ, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী, শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত জুলাই যোদ্ধা, আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল এবং এর আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয় সেনাসদস্য, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যদের। ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের সময় সবাইকে তল্লাশি করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেও কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ অনলাইনে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।
রায় ঘোষণার শুরুতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান প্রসিকিউশন টিম, তদন্ত সংস্থা, ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। স্মরণ করেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের। পরে ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের আইন, রোম স্ট্যাটিউট ও অভিযোগগুলো পড়ে শোনান। এরপর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণ, শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ ফজলে নূর তাপস, হাসানুল হক ইনু ও ঢাবির তৎকালীন ভিসি মাকসুদ কামালের টেলিফোন কথোপকথন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন, সাক্ষীদের বক্তব্য, দুই পক্ষের উপস্থাপন করা যুক্তি তুলে ধরেন। বিদেশে অবস্থানরত লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং মুশফিকুল ফজল আনসারীর অবদান উল্লেখ করা হয়।
সব শেষে সাজার অংশ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। রায়ে বলা হয়, ট্রাইব্যুনালে যেসব কল রেকর্ড শোনানো হয়েছে, তা সঠিক। বিষয়টি ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। আন্দোলন দমনে হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় তিন আসামি যৌথভাবে দায়ী; যা চৌধুরী মামুন স্বীকার করেছেন।
রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনাল এই মামলার পাঁচটি অভিযোগকে দুই ভাগে ভাগ করেন। এর মধ্যে গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য, ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি মাকসুদ কামালকে ফোন করে আন্দোলনকারীদের রাজাকার আখ্যা দিয়ে তাদের ফাঁসি দেওয়ার কথা বলে উসকানি, আদেশ এবং অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের বাধা না দেওয়া এবং রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা তাপস এবং পরবর্তী সময়ে হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে কথোপকথনে ড্রোন ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয়, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি এবং লেথাল উইপন ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ, অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের বাধা না দেওয়া; ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যা এবং ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় ৬ জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এই মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী মামুনের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণে সহায়তা করায় তাঁর শাস্তির মাত্রা কম বলে জানান ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রসিকিউটররা জানান, পলাতক থাকায় এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ পাচ্ছেন না শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল। ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড একটি ঐতিহাসিক রায় বলে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রায়ের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, রায়-পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা, উত্তেজনাপ্রসূত আচরণ, সহিংসতা বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে বিশেষ অনুরোধ জানানো হচ্ছে। জনগণের, বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই রায় ঘিরে জনমনে স্বাভাবিকভাবেই আবেগ সৃষ্টি হতে পারে। সেই আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন কেউ জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়—সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সবাইকে সতর্ক করেছে। সরকার আরও স্পষ্ট করে জানাচ্ছে, যেকোনো ধরনের অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা বা জনশৃঙ্খলাভঙ্গের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, আজকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন।’ তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি এই রায়ে সন্তুষ্ট। শেখ হাসিনা এবং তাঁর সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের যে তাজা, অকাট্য, জোরালো, বিস্তৃত প্রমাণ রয়েছে, তাতে পৃথিবীর যেকোনো আদালতে বিচার হলেই সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা।
আসিফ নজরুল বলেন, তাঁরা যত দিন আছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকার্য পূর্ণ বেগে চলবে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এই দুই মামলায় সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডসহ আরও কয়েকটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের আমলে গত ১৪ বছরে ৫৫টি রায় দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনাল থেকে। ২০২৩ সালের ১৩ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার অবসরে যাওয়ার পর বিচারকাজ বন্ধ ছিল ট্রাইব্যুনালের। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জুলাই-আগস্টের প্রায় দেড় হাজার নিহত এবং ৩০ হাজার আহত হওয়ার ঘটনার বিচার করতে গত বছরের ১৪ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে তিনজনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মাধ্যমে শুরু হয় ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম। পরে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা আরেকটি বাড়ানো হয়।
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এই মামলায় চলতি বছরের ১ জুন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানি জারি করা হয়। তবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ গঠনের আগে ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন চৌধুরী মামুন।
৩ আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ও চিফ প্রসিকিউটরের সূচনা বক্তব্যের পর শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। এই মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রত্যক্ষদর্শীসহ ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। ২৩ অক্টোবর এই মামলার শুনানি শেষ হয়। ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য ১৭ তারিখ দিন ধার্য করে দেন ট্রাইব্যুনাল।

প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশে এই প্রথম কোনো সাবেক সরকারপ্রধানের ফাঁসির সাজা হলো। শেখ হাসিনা কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতি।
এই মামলায় পতিত শেখ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাঁচ অভিযোগের দুটিতে এ দুজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অপর তিন অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এই দুজনের সব সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে জুলাই শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার অপর আসামি এবং পরে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল দুজনেই পলাতক।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে এই রায় ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এটিই ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়।
অন্তর্বর্তী সরকার এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে অভিহিত করেছে। রায়ের গভীর তাৎপর্য উপলব্ধি করে সরকার সর্বস্তরের জনগণকে শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
রায় ঘোষণা শুরুর আগেই ট্রাইব্যুনালের এজলাসকক্ষ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। আসন না পেয়ে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে জড়ো হন জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্য, জুলাই যোদ্ধা, বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
রায় ঘোষণার আগে কারাগারে থাকা চৌধুরী মামুনকে এজলাসে হাজির করা হয়। ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণা শুরু হয় দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের উল্লেখযোগ্য অংশ পড়ে শোনানো হয়। রায় ঘোষণা শেষ হয় বেলা ২টা ৫০ মিনিটে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা হতেই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আহত জুলাই যোদ্ধাদের অনেকে হাততালি দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। শহীদ পরিবারের অনেককেও কাঁদতেও দেখা যায়। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান দাঁড়িয়ে বলেন, ‘এটা আদালত। উচ্ছ্বাস বা যেকোনো প্রতিক্রিয়া ট্রাইব্যুনালের বাইরে দেখাতে হবে।’ পরে সবাই শান্ত হন। পুরোটা সময় নিশ্চুপ ছিলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
অভিযোগ গঠনের চার মাস পর এই মামলার রায়
রায়ের সময় অ্যাটর্নি জেনারেল, ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটররা, তিন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম ও জিএস এস এম ফরহাদ, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদী, শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত জুলাই যোদ্ধা, আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল এবং এর আশপাশের এলাকায় মোতায়েন করা হয় সেনাসদস্য, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যদের। ট্রাইব্যুনালে প্রবেশের সময় সবাইকে তল্লাশি করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেও কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ অনলাইনে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করলেও কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।
রায় ঘোষণার শুরুতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান প্রসিকিউশন টিম, তদন্ত সংস্থা, ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গণমাধ্যমকর্মীদের ধন্যবাদ জানান। স্মরণ করেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের। পরে ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী ট্রাইব্যুনালের আইন, রোম স্ট্যাটিউট ও অভিযোগগুলো পড়ে শোনান। এরপর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ উপস্থাপিত সাক্ষ্য-প্রমাণ, শেখ হাসিনার সঙ্গে শেখ ফজলে নূর তাপস, হাসানুল হক ইনু ও ঢাবির তৎকালীন ভিসি মাকসুদ কামালের টেলিফোন কথোপকথন, জাতিসংঘের প্রতিবেদন, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন, সাক্ষীদের বক্তব্য, দুই পক্ষের উপস্থাপন করা যুক্তি তুলে ধরেন। বিদেশে অবস্থানরত লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, ড. কনক সরওয়ার এবং মুশফিকুল ফজল আনসারীর অবদান উল্লেখ করা হয়।
সব শেষে সাজার অংশ পড়ে শোনান ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। রায়ে বলা হয়, ট্রাইব্যুনালে যেসব কল রেকর্ড শোনানো হয়েছে, তা সঠিক। বিষয়টি ফরেনসিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে। আন্দোলন দমনে হত্যা-নির্যাতনের ঘটনায় তিন আসামি যৌথভাবে দায়ী; যা চৌধুরী মামুন স্বীকার করেছেন।
রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনাল এই মামলার পাঁচটি অভিযোগকে দুই ভাগে ভাগ করেন। এর মধ্যে গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য, ওই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি মাকসুদ কামালকে ফোন করে আন্দোলনকারীদের রাজাকার আখ্যা দিয়ে তাদের ফাঁসি দেওয়ার কথা বলে উসকানি, আদেশ এবং অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের বাধা না দেওয়া এবং রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা তাপস এবং পরবর্তী সময়ে হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে কথোপকথনে ড্রোন ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয়, আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি এবং লেথাল উইপন ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ, অপরাধ সংঘটনে অধীনস্থদের বাধা না দেওয়া; ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে ৬ জনকে গুলি করে হত্যা এবং ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় ৬ জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এই মামলায় গ্রেপ্তার একমাত্র আসামি তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী মামুনের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণে সহায়তা করায় তাঁর শাস্তির মাত্রা কম বলে জানান ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ফেরত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রসিকিউটররা জানান, পলাতক থাকায় এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ পাচ্ছেন না শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল। ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড একটি ঐতিহাসিক রায় বলে অভিহিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রায়ের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, রায়-পরবর্তী সময়ে কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা, উত্তেজনাপ্রসূত আচরণ, সহিংসতা বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে বিশেষ অনুরোধ জানানো হচ্ছে। জনগণের, বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজনদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই রায় ঘিরে জনমনে স্বাভাবিকভাবেই আবেগ সৃষ্টি হতে পারে। সেই আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন কেউ জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেয়—সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সবাইকে সতর্ক করেছে। সরকার আরও স্পষ্ট করে জানাচ্ছে, যেকোনো ধরনের অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা বা জনশৃঙ্খলাভঙ্গের চেষ্টা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, আজকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন।’ তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি এই রায়ে সন্তুষ্ট। শেখ হাসিনা এবং তাঁর সহযোগীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের যে তাজা, অকাট্য, জোরালো, বিস্তৃত প্রমাণ রয়েছে, তাতে পৃথিবীর যেকোনো আদালতে বিচার হলেই সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ার কথা।
আসিফ নজরুল বলেন, তাঁরা যত দিন আছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকার্য পূর্ণ বেগে চলবে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এই দুই মামলায় সাবেক ও বর্তমান বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডসহ আরও কয়েকটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। আওয়ামী লীগের আমলে গত ১৪ বছরে ৫৫টি রায় দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনাল থেকে। ২০২৩ সালের ১৩ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার অবসরে যাওয়ার পর বিচারকাজ বন্ধ ছিল ট্রাইব্যুনালের। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জুলাই-আগস্টের প্রায় দেড় হাজার নিহত এবং ৩০ হাজার আহত হওয়ার ঘটনার বিচার করতে গত বছরের ১৪ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে তিনজনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মাধ্যমে শুরু হয় ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম। পরে ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা আরেকটি বাড়ানো হয়।
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এই মামলায় চলতি বছরের ১ জুন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। সেদিন অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানি জারি করা হয়। তবে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হলে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরপরও হাজির না হলে ২৪ জুন তাঁদের দুজনের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর সাবেক বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আমির হোসেনকে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ গঠনের আগে ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হতে আবেদন করেন চৌধুরী মামুন।
৩ আগস্ট অ্যাটর্নি জেনারেল ও চিফ প্রসিকিউটরের সূচনা বক্তব্যের পর শুরু হয় সাক্ষ্য গ্রহণ। এই মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, প্রত্যক্ষদর্শীসহ ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। অডিও, ভিডিও, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন, জব্দ করা গুলি ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। ২৩ অক্টোবর এই মামলার শুনানি শেষ হয়। ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য ১৭ তারিখ দিন ধার্য করে দেন ট্রাইব্যুনাল।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য সরকারি অফিসের মতো রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেও (ডিএই) চেয়ার দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। গত তিন মাসে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের সরিয়ে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। তবে বিগত সরকারের সুবিধাভোগী অধিকাংশ
০৫ নভেম্বর ২০২৪
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
২ ঘণ্টা আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
২ ঘণ্টা আগে
ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলের পাঁচ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা মিলিত হচ্ছেন নয়াদিল্লিতে। এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে তিনি ভারত সফরে যাচ্ছেন।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
দুজনেই পলাতক থাকায় মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেত চাইলে চিফ প্রসিকিউটর মোহামামদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুজনকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে রাষ্ট্র দুই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে। একটি হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ২০১৩ সালের যে অপরাধীর বহিঃসমর্পণ চুক্তি। সেই চুক্তি অনুযায়ী তাদেরকে বাংলাদেশ ভারত সরকারের কাছে ফেরত চাইবে। তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত আনার মাধ্যমে সাজা কার্যকর করা যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘দ্বিতীয় প্রক্রিয়া হচ্ছে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে এনে সেই সাজা কার্যকর করা যেতে পারে। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আসামিরা চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আপিল দায়ের করতে পারবেন। কিন্তু পলাতকরা আপিল করতে পারবেন না। কারণ পলাতক ব্যক্তির আইনগত অধিকার থাকে না। আপিল করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশে এসে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তারপর কারাগারে গিয়ে দণ্ডিত ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করতে পারবেন।’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
দুজনেই পলাতক থাকায় মামলার পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানেত চাইলে চিফ প্রসিকিউটর মোহামামদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুজনকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে রাষ্ট্র দুই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে। একটি হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ২০১৩ সালের যে অপরাধীর বহিঃসমর্পণ চুক্তি। সেই চুক্তি অনুযায়ী তাদেরকে বাংলাদেশ ভারত সরকারের কাছে ফেরত চাইবে। তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত আনার মাধ্যমে সাজা কার্যকর করা যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘দ্বিতীয় প্রক্রিয়া হচ্ছে, ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে এনে সেই সাজা কার্যকর করা যেতে পারে। এই ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আসামিরা চাইলে ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে আপিল দায়ের করতে পারবেন। কিন্তু পলাতকরা আপিল করতে পারবেন না। কারণ পলাতক ব্যক্তির আইনগত অধিকার থাকে না। আপিল করতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশে এসে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তারপর কারাগারে গিয়ে দণ্ডিত ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করতে পারবেন।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য সরকারি অফিসের মতো রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেও (ডিএই) চেয়ার দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। গত তিন মাসে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের সরিয়ে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। তবে বিগত সরকারের সুবিধাভোগী অধিকাংশ
০৫ নভেম্বর ২০২৪
প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার।
১ ঘণ্টা আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
২ ঘণ্টা আগে
ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলের পাঁচ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা মিলিত হচ্ছেন নয়াদিল্লিতে। এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে তিনি ভারত সফরে যাচ্ছেন।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়, আজ বাংলাদেশের আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা সারা দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই রায় ও সাজা একটি মৌলিক নীতিকে পুনঃনিশ্চিত করেছে—যত ক্ষমতাবানই হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষ ও এখনো সেই ক্ষত বহনকারী পরিবারগুলোর জন্য এই রায় সীমিত মাত্রায় হলেও ন্যায়বিচার এনে দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বছরের পর বছর নিপীড়নে ভেঙে পড়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্নির্মাণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। যে অপরাধগুলো নিয়ে বিচার হয়েছে—তরুণ ও শিশু, যাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল তাদের কণ্ঠস্বর, তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের আদেশ, যা আমাদের আইন ও সরকার–নাগরিক সম্পর্কের মৌলিক বন্ধনকে লঙ্ঘন করেছে। এসব জঘন্য কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মূল মূল্যবোধ—মর্যাদা, দৃঢ়তা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারকে আঘাত করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁরা শুধুই সংখ্যা নন; তাঁরা ছিলেন আমাদের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও অধিকারসম্পন্ন নাগরিক। গত কয়েক মাসের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি—এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও—ব্যবহার করা হয়েছিল। এই রায় তাঁদের ভোগান্তিকে স্বীকৃতি দেয় এবং আমাদের বিচারব্যবস্থায় অপরাধীদের জবাবদিহির নিশ্চয়তা পুনর্ব্যক্ত করে।
‘বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক জবাবদিহির ধারায় পুনরায় যুক্ত হচ্ছে। পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়ানো শিক্ষার্থী ও নাগরিকেরা এটি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন এবং তাঁদের অনেকেই জীবন দিয়ে মূল্য দিয়েছেন, তাঁদের বর্তমান উৎসর্গ করেছেন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য।’
এতে আরও বলা হয়, ‘সামনের পথচলায় শুধু আইনি জবাবদিহি নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনও জরুরি। প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য মানুষ কেন সবকিছু ঝুঁকির মুখে ফেলে—তা বোঝা এবং সেই আস্থার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থা তৈরি করা অপরিহার্য। আজকের রায় সেই যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকারের মাধ্যমে ন্যায়বিচার বাংলাদেশে শুধু নামমাত্র টিকে থাকবে না; এটি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সুদৃঢ় হবে।’

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়, আজ বাংলাদেশের আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা সারা দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই রায় ও সাজা একটি মৌলিক নীতিকে পুনঃনিশ্চিত করেছে—যত ক্ষমতাবানই হোক, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষ ও এখনো সেই ক্ষত বহনকারী পরিবারগুলোর জন্য এই রায় সীমিত মাত্রায় হলেও ন্যায়বিচার এনে দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বছরের পর বছর নিপীড়নে ভেঙে পড়া গণতান্ত্রিক ভিত্তি পুনর্নির্মাণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। যে অপরাধগুলো নিয়ে বিচার হয়েছে—তরুণ ও শিশু, যাদের একমাত্র অস্ত্র ছিল তাদের কণ্ঠস্বর, তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বলপ্রয়োগের আদেশ, যা আমাদের আইন ও সরকার–নাগরিক সম্পর্কের মৌলিক বন্ধনকে লঙ্ঘন করেছে। এসব জঘন্য কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের মূল মূল্যবোধ—মর্যাদা, দৃঢ়তা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারকে আঘাত করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁরা শুধুই সংখ্যা নন; তাঁরা ছিলেন আমাদের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও অধিকারসম্পন্ন নাগরিক। গত কয়েক মাসের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, কীভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি—এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও—ব্যবহার করা হয়েছিল। এই রায় তাঁদের ভোগান্তিকে স্বীকৃতি দেয় এবং আমাদের বিচারব্যবস্থায় অপরাধীদের জবাবদিহির নিশ্চয়তা পুনর্ব্যক্ত করে।
‘বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক জবাবদিহির ধারায় পুনরায় যুক্ত হচ্ছে। পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়ানো শিক্ষার্থী ও নাগরিকেরা এটি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন এবং তাঁদের অনেকেই জীবন দিয়ে মূল্য দিয়েছেন, তাঁদের বর্তমান উৎসর্গ করেছেন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য।’
এতে আরও বলা হয়, ‘সামনের পথচলায় শুধু আইনি জবাবদিহি নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনও জরুরি। প্রকৃত প্রতিনিধিত্বের জন্য মানুষ কেন সবকিছু ঝুঁকির মুখে ফেলে—তা বোঝা এবং সেই আস্থার উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থা তৈরি করা অপরিহার্য। আজকের রায় সেই যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশ সাহস ও বিনয়ের সঙ্গে সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করবে। আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং প্রতিটি মানুষের সম্ভাবনার প্রতি অঙ্গীকারের মাধ্যমে ন্যায়বিচার বাংলাদেশে শুধু নামমাত্র টিকে থাকবে না; এটি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সুদৃঢ় হবে।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য সরকারি অফিসের মতো রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেও (ডিএই) চেয়ার দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। গত তিন মাসে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের সরিয়ে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। তবে বিগত সরকারের সুবিধাভোগী অধিকাংশ
০৫ নভেম্বর ২০২৪
প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার।
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
২ ঘণ্টা আগে
ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলের পাঁচ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা মিলিত হচ্ছেন নয়াদিল্লিতে। এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে তিনি ভারত সফরে যাচ্ছেন।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলের পাঁচ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা মিলিত হচ্ছেন নয়াদিল্লিতে। এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে তিনি ভারত সফরে যাচ্ছেন।
আগামী বুধবার থেকে শুক্রবার (১৯–২০ নভেম্বর) দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় সপ্তম ‘কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে’ নামে এই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন খলিলুর রহমান। গতবছর অভুত্থানে বাংলাদেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এমন সময়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার ভারত সফর আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তাঁর ওপর পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পলাতক অবস্থায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। এর আগেই বাংলাদেশ ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় বিষয়টি নতুন করে আলোচনার এসেছে।
অভুত্থানের সামনের সারিতে থাকা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। নিরাপত্তা উপদেষ্টা ‘শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন’ বলে তাঁর আশা।
নাহিদ বলেন, ‘আমরা জোর দাবি জানাব—এই রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। অবিলম্বে দিল্লি থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত আনতে হবে। সেটার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যথাযথ ভূমিকা ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা শুনতে পেয়েছি, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারত সফর করছেন। আমরা আশা করব, তিনি শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন।’
কিন্তু নাহিদের এই আশার ভিত্তি কতটা? জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের ভারত সফরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে, তা সরকারের কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এই সম্মেলনে কী কী আলোচনা হবে সে বিষয়ে এর আগে সরকার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে।
নয়াদিল্লির সম্মেলনে কী হবে
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯ থেকে ২০ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় সপ্তম ‘কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ’ নামে আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগ দিতে খলিলুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও মরিশাসের সঙ্গে গত বছর বাংলাদেশ পঞ্চম সদস্য হিসেবে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে যোগ দেয়।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বলছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আঞ্চলিক সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় গুরুত্ব দিচ্ছে এবং আঞ্চলিক বিভিন্ন সংস্থার বৈঠকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। বিমসটেকের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে জোরালোভাবে কাজ করছেন।
এর আগে চীনের কুনমিংয়ে চীন-ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক ফোরামে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর অংশগ্রহণ করেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পারস্পরিকভাবে লাভজনক আঞ্চলিক সহযোগিতা লালনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে প্রচেষ্টা, নয়াদিল্লির কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে তার অংশগ্রহণ সেটিরই ধারাবাহিকতা।’

ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলের পাঁচ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা মিলিত হচ্ছেন নয়াদিল্লিতে। এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের আমন্ত্রণে তিনি ভারত সফরে যাচ্ছেন।
আগামী বুধবার থেকে শুক্রবার (১৯–২০ নভেম্বর) দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় সপ্তম ‘কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে’ নামে এই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন খলিলুর রহমান। গতবছর অভুত্থানে বাংলাদেশে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এমন সময়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার ভারত সফর আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
তাঁর ওপর পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পলাতক অবস্থায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। এর আগেই বাংলাদেশ ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় বিষয়টি নতুন করে আলোচনার এসেছে।
অভুত্থানের সামনের সারিতে থাকা নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এক মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন। নিরাপত্তা উপদেষ্টা ‘শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন’ বলে তাঁর আশা।
নাহিদ বলেন, ‘আমরা জোর দাবি জানাব—এই রায় দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। অবিলম্বে দিল্লি থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত আনতে হবে। সেটার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যথাযথ ভূমিকা ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা শুনতে পেয়েছি, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারত সফর করছেন। আমরা আশা করব, তিনি শেখ হাসিনাকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন।’
কিন্তু নাহিদের এই আশার ভিত্তি কতটা? জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের ভারত সফরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে, তা সরকারের কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এই সম্মেলনে কী কী আলোচনা হবে সে বিষয়ে এর আগে সরকার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে।
নয়াদিল্লির সম্মেলনে কী হবে
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৯ থেকে ২০ নভেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় সপ্তম ‘কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ’ নামে আঞ্চলিক সম্মেলনে যোগ দিতে খলিলুর রহমানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও মরিশাসের সঙ্গে গত বছর বাংলাদেশ পঞ্চম সদস্য হিসেবে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে যোগ দেয়।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বলছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আঞ্চলিক সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার বিবেচনায় গুরুত্ব দিচ্ছে এবং আঞ্চলিক বিভিন্ন সংস্থার বৈঠকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। বিমসটেকের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে জোরালোভাবে কাজ করছেন।
এর আগে চীনের কুনমিংয়ে চীন-ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক ফোরামে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর অংশগ্রহণ করেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পারস্পরিকভাবে লাভজনক আঞ্চলিক সহযোগিতা লালনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে প্রচেষ্টা, নয়াদিল্লির কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভে তার অংশগ্রহণ সেটিরই ধারাবাহিকতা।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য সরকারি অফিসের মতো রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেও (ডিএই) চেয়ার দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। গত তিন মাসে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তাদের সরিয়ে বিএনপি ও জামায়াতপন্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। তবে বিগত সরকারের সুবিধাভোগী অধিকাংশ
০৫ নভেম্বর ২০২৪
প্রায় দেড় দশকের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতার দম্ভ চূর্ণ হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে চলে গেছেন ভারতে। সেই গণ-অভ্যুত্থান দমনে সারা দেশে নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতা-বিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হলো আজ সোমবার।
১ ঘণ্টা আগে
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারাদেশে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। আজ সোমবার রায় ঘোষণার সময় তাঁরা কেউ হাজির ছিলেন না, দুজনেই ভারতে অবস্থান করছেন।
২ ঘণ্টা আগে
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের মধ্য দিয়ে ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ কথাটি আবারও প্রমাণিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
২ ঘণ্টা আগে