Ajker Patrika

নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয়, প্রয়োজন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা

এহ্সান ইসলাম, ঢাকা
নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র নয়, প্রয়োজন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা

গণতন্ত্র নিয়ে কথা উঠলেই দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল থেকে অবধারিতভাবে উচ্চারণ করা হয়, ‘নির্বাচন’ শব্দটি। নির্বাচন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলেও এটিই সব নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের একেবারে কেন্দ্রের বিষয়। এ জন্যই আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘গণতন্ত্রের জন্য সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষা’। 

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস আজ। ২০০৭ সাল থেকে দিনটি পালন করে আসছে জাতিসংঘ। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে এবার দিবসটি পালিত হচ্ছে। 

দিবসটি নিয়ে এবারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনা সংকট সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছে বিশ্বের গণতন্ত্রের নীতিগুলোও ক্রমাগত হুমকির মধ্যে পড়ছে। গণতন্ত্র আগের চেয়ে অনেক বেশি পিছিয়ে গেছে। নাগরিক পরিসর সংকুচিত হচ্ছে এবং অবিশ্বাস, ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের জন্ম হচ্ছে। একই সঙ্গে সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীদের স্বাধীনতার প্রতি হুমকিও বাড়ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে এবার গণতন্ত্র দিবসে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। 

বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে। যদিও দেশে গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা এখন নির্বাচন ও ভোটাধিকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এ জন্য অবশ্য অনেকে গত দুটি জাতীয় নির্বাচনকে দায়ী করেন। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন গণতন্ত্রের একটা অংশ। মানে, জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবে, সেটার জন্য নির্বাচন প্রয়োজন। কিন্তু নির্বাচন মানেই গণতন্ত্র না। গণতন্ত্রের বিষয়টা আরও প্রসারিত। গণতন্ত্রের সংজ্ঞার মধ্যে আছে—এক. সব নাগরিকের অধিকার ও সুযোগের সমতা থাকবে। অধিকার শুধু না, সুযোগও থাকতে হবে; দুই. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ঘটাতে হবে এবং তিন. সর্বস্তরে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই তিনটাই হচ্ছে গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ।’ 

দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ জন্য স্বাধীন সংবাদমাধ্যম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃত। তবে দেশে বিদ্যমান ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ (আইসিটি) সাংবাদিক নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও কথা বলেছে। 

সম্প্রতি দেশের আইসিটি এবং ওটিটি নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়াকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতিসম্মত করতে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর। গত সোমবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় মানবাধিকার পরিষদের ৫১ তম অধিবেশনে বিষয়টি তোলেন সংস্থার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদা আল নাশিফ। দেশের বুদ্ধিজীবী মহল থেকেও এ নিয়ে বিভিন্ন সময় কথা উঠেছে। কিন্তু তেমন বদল হয়নি। 

এ নিয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অবশ্যই দরকার। মতপ্রকাশের স্বাধীনতারই অংশ হচ্ছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। এটা না থাকলে মানুষ কী চায়, তাদের কী আকাঙ্ক্ষা—এটা বলতে পারবে না। ফলে জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা হবে না। সংবাদপত্র থাকলে যে খবর বের হয়, যদি স্বাধীনভাবে খবর দিতে পারে, তাহলে রাষ্ট্রের যে কর্তা, তাদের একটা জবাবদিহিতে আসতে হয়। কাজেই একদিকে মতপ্রকাশের জন্য, আরেক দিকে জবাবদিহির জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দরকার।’ 

শুধু গণতন্ত্র দিবসের প্রতিপাদ্য হিসেবেই নয় বিভিন্ন সময়ই সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্বের প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গবেষণা ও জরিপ সংস্থা আগেও কথা বলেছে। এই প্রশ্নে বারবারই এসেছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) সূচক বলছে, ২০২১ সালে মহামারির মধ্যে বিশ্বে গণতন্ত্রের পরিসর সংকীর্ণ হয়েছে। সূচকে একই ফল (৫ দশমিক ৯৯) নিয়ে বাংলাদেশ অবস্থান গেলবারের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে ৭৫ হয়েছে। ওই সূচকে বাংলাদেশকে ‘মিশ্র শাসনের’ (হাইব্রিড রেজিম) দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সে হিসেবে দেশে নির্বাচনে অনিয়মসহ এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এ ছাড়া বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন, দুর্বল আইনি শাসন ও সাংবাদিক নির্যাতনের মতো গুরুতর বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করা হয় এতে। 

দেশে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সমাজ বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক চিন্তা এবং দেশে রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রের নামে যে কাজ করছে, এগুলো দিয়ে গণতন্ত্রের কিছুই রক্ষা পাচ্ছে না। বরং গণতন্ত্রবিরোধী নানা চিন্তা সামনে আসছে।’ তিনি বলেন, 'নির্বাচিত সরকার এলেই গণতন্ত্র হবে, এমন একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু তার আগে গণতন্ত্রের আদলে দল গঠন দরকার। দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকা দরকার। এদিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থা নিতান্তই খারাপ। এখানে গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা ছিল। এর জন্য কখনো কখনো নির্বাচনও হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এখানে গণতন্ত্র কখনো দানা বাঁধেনি।’ 

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের এই ভাষ্যের সমর্থন পাওয়া যায় ফ্রিডম হাউস প্রকাশিত ২০২১ সালের সূচকে। সেখানে বাংলাদেশকে রাখা হয়েছে ‘আংশিক মুক্ত’ (পার্টলি ফ্রি) দেশের কাতারে। এতে ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে মাত্র ৩৯ নম্বর। এতে ৪০ নম্বরের রাজনৈতিক অধিকারের মধ্যে ১৫ এবং ৬০ নম্বরের নাগরিক অধিকারের মধ্যে ২৪ নম্বর পেয়েছে বাংলাদেশ। ওই সূচকে অবশ্য দুর্নীতিকে গুরুতর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ ছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারাকেও বড় দুর্বলতা হিসেবে দেখা হয়েছে। 

আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘ভেতর থেকে সত্য কথা বলা না পারা, দেশে গণতন্ত্র না থাকারই ইঙ্গিত। গণতন্ত্র না থাকার পরও প্রশাসনে ন্যূনতম আইনের শাসন বজায় থাকলেও অবস্থা ভালোর দিকে যেতে পারত। সেই অর্থে দেশে আইনের শাসন নাই। রাজনীতির জন্য যে আইনি স্বাধীনতা দরকার, রাষ্ট্র, সমাজ, সংস্কৃতির জন্য চিন্তার যে স্বাধীনতা দরকার, এর একটাও নাই।’ 

এদিকে অর্থনৈতিক রিআর্টিকুলেশন ছাড়া গণতন্ত্র দিবস পালন তত কার্যকর কিছু নয় বলে মনে করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আ আল মামুন। তিনি বলেন, ‘উদার গণতন্ত্র বলতে আমরা যা বুঝি, তা অনেক আগেই সংকটে পড়েছে। নয়া-উদারবাদী গণতন্ত্রের নামে বিশ্বে এক ধরনের একনায়কতন্ত্রের উত্থান হয়েছে। নানা ধরনের নজরদারির কারণে গণতন্ত্রের বাজে অবস্থা তৈরি হয়েছে। অর্থনৈতিক রিআর্টিকুলেশন ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব না। গণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনও সেখানে ফল দিবে না।’ 

দেশে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতার সংকট থেকে উত্তরণের উপায় সম্পর্কে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের অবস্থা তো আমরা জানি। এটা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। এর থেকে উত্তরণের জায়গাটা হচ্ছে, সমাজে যারা বিবেকবান মানুষ আছেন, কেবল বিবেকবান নয়, বুদ্ধিমানও; তাঁদের এগিয়ে আসতে হবে, যাতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয়। গণতন্ত্র একটা সংস্কৃতির নাম। এটা গড়ে তুলতে হবে। এটা একদিনে হবে না। এর জন্য চিন্তা করতে হবে। যার জন্য আলাপ-আলোচনা, সংস্কৃতির চর্চা, নানা ধরনের বিতর্ক, সাহিত্য দরকার। আমাদের দেশে যারা বিবেকবান, বুদ্ধিমান মানুষ আছেন, তাঁরা এগিয়ে এলে এটা সম্ভব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই মাসের চুক্তিতে স্বাস্থ্যের ডিজি ও সচিব নিয়োগ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর ও মো. সাইদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমানকে দুই মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। একই মেয়াদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফরকে।

২৪ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সামিউল আমিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী মো. সাইদুর রহমানকে তাঁর অবসরোত্তর ছুটি ও তৎসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিত এবং অন্য যেকোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

একই আইনের সমধারায় দুই মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফরও। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. শাদরুল আলমকে। এত দিন তিনি সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের (সিএমই) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের উপসচিব দূর-রে শাহওয়াজ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাঁকে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ২৫৮২ জন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ২ হাজার ৫৮২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৩ হাজার ৪০৭ জন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন এ তথ্য জানান।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, রংপুর অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৩টি আসন থেকে ৩৩৮টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৭৮টি। রাজশাহী অঞ্চলের ৮ জেলার ৩৯ আসন থেকে ৩২৯টি মনোনয়ন বিতরণ করা হয়েছিল। জমা পড়েছে ২৬০টি। বরিশাল অঞ্চলের ৬ জেলার ২১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ২১২টি, জমা পড়েছে ১৬৬টি। ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলার ১৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয় ১৬৫টি, জমা পড়েছে ১৪২টি।

খুলনা অঞ্চলের ১০ জেলার ৩৬ আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৩৫৮টি, জমা পড়েছে ২৭৬টি। ঢাকা অঞ্চলের ৬ জেলার ৪১টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ৬৩৮টি, জমা পড়েছে ৪৪৪টি।

ময়মনসিংহের ৬টি জেলার ৩৮টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪০২টি, জমা পড়েছে ৩১১টি। সিলেটের ৪ জেলার ১৯টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে ১৭৬টি, জমা পড়েছে ১৪৬টি। কুমিল্লার ৬ জেলার ৩৫টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ৪৯৬টি, জমা পড়েছে ৩৬৫টি। চট্টগ্রামের ৫ জেলার ২৩টি আসন থেকে বিতরণ করা হয়েছিল ২৯৩টি, জমা পড়েছে ১৯৪টি।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত, রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল করার সময় ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি, নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোট শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগপর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

আর ভোট গ্রহণ করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সেদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৪৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ: পি কে হালদারসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পি কে হালদার। ফাইল ছবি
পি কে হালদার। ফাইল ছবি

দেশের আর্থিক খাতের পাচারের অন্যতম হোতা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৮ জনের নামে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দিয়া শিপিং লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় এই চার্জশিট অনুমোদন করে কমিশন।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক আসামি প্রশান্ত কুমার হালদার, দিয়া শিপিং লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিবপ্রসাদ ব্যানার্জী, পরিচালক পাপিয়া ব্যানার্জী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুণ্ডু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

তদন্তে আরও ছয়জনের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায় দুদক। তাঁরা হলেন ইটা অ্যান্ড টাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম নওশেরুল ইসলাম, দিয়া অয়েল লিমিটেডের এমডি বাসুদেব ব্যানার্জী, পরিচালক পূজা ব্যানার্জী, এমএসটি মেরিন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেডার্স লিমিটেডের পরিচালক অমল চন্দ্র দাস, মমতাজ বেগম এবং বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বারকি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে এফএএস (ফাস) ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে অবৈধ উপায়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে ঋণ হিসেবে ৪৪ কোটি টাকা গ্রহণ করে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমান মামলার অন্যতম আসামি এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক এম ডি রাসেল শাহরিয়ারকে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি টিম মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে এই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠায়।

কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরে গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলাদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা পি কে হালদার। তিনি শিবশংকর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আরও পাঁচজন। পরে প্রশান্ত কুমার ওরফে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে পি কে হালদার ভারতের কারাগারে রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদি হত্যা মামলার তদন্ত-বিচারকাজে আইনি পরামর্শক হলেন সমাজী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি
এহসানুল হক সমাজী। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যা মামলার তদন্ত ও বিচারের সময় প্রসিকিউশন টিমকে আইনি পরামর্শ দিতে এহসানুল হক সমাজীকে স্পেশাল প্রসিকিউটর অ্যাডভাইজরের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর সমাজীকে অ্যাটর্নি জেনারেলের পদমর্যাদার সুবিধায় ওই দায়িত্ব দিয়ে আজ সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-১ শাখা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনী প্রচারণাকালে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি আততায়ীর গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে ঢাকা মহানগরীর পল্টন থানায় ১৪ ডিসেম্বর মামলা হয়েছে। ডিএমপির অধীনে এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় মামলাটি দ্রুত তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

হাদি হত্যাকাণ্ডের মামলা তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্তসংশ্লিষ্টদের এবং পরে আদালতে বিচারকালে বিচারসংশ্লিষ্ট প্রসিকিউশন টিমকে প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য এহসানুল হক সমাজীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত