কামরুল হাসান

অভ্যর্থনাকক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী, সঙ্গে এক ছেলে ও এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
এটুকু বলায় চেনা গেল না। স্বামীর নাম বললেন আমিন রসুল সাগর। চিনতে আর বাকি রইল না। বললাম, আপনি তাহলে টোকাই সাগরের স্ত্রী? তিনি মাথা নাড়লেন। সাগরের সঙ্গে এই নারীকে কোনোভাবেই মেলানো যায় না। বাচ্চারা একজন বিআইটিতে, অন্যজন আইআইটিতে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মুখে বাংলা আসে না।
জানতে চাইলাম, শীর্ষসন্ত্রাসীকে বিয়ে করলেন কেন? হেসে বললেন, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। তাঁর বাবা আগারগাঁও কৃষি ইনস্টিটিউটে চাকরি করেন। আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, আগের দিন তাঁর স্বামীর ব্যবহারের কারণে তিনি ক্ষমা চাইতে এসেছেন।
এই নারীর স্বামী শীর্ষসন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে ‘টোকাই সাগর’ নামে পরিচিত ছিলেন। গুলশানের ডিসিসি মার্কেটে আমিন রসুল ট্রেডার্সে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় আমার। সেই সাক্ষাতের সময় তিনি গুলিভর্তি অস্ত্রটি টেবিলের ওপর রেখে আমাকে বলেছিলেন: ‘বলেন, কী জানতে চান?’
এটা ২০০০ সালের প্রথম দিকের ঘটনা। পরদিন জনকণ্ঠে টোকাই সাগরকে নিয়ে যে রিপোর্ট করি, সেখানে অস্ত্র দেখানোর কথাটা এড়িয়ে যাই। সেই ঘটনার পর সাগর তাঁর স্ত্রীকে পাঠিয়েছেন দুঃখ প্রকাশের জন্য।
সাগর তখন আন্ডারওয়ার্ল্ড ও রাজনৈতিক অঙ্গন—দুই দিকেই প্রতাপশালী। তিনি ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সেই কমিটির সভাপতি প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। কী কী অভিযোগ নিয়ে কথা হয়েছিল, তার সব মনে নেই। তবে এটা মনে আছে, তিনি বলেছিলেন, যুবলীগের নেতা আওরঙ্গ ও শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকত তাঁর ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য এসব করেছেন। পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে যেসব খবর লেখা হচ্ছে, সবই তাঁদের দেওয়া। এমনকি তাঁর নামের আগে ‘টোকাই’ উপাধিটাও লিয়াকতের দেওয়া বলে দাবি করেছিলেন।
সাগরের স্ত্রী চলে যাওয়ার পর আমি কিছুটা চিন্তামুক্ত হলেও ভয়ে ভয়ে ছিলেন আমার এক বন্ধু সাংবাদিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভার সূত্র ধরে তিনি টোকাই সাগরের বিরুদ্ধে একটি নিউজ করেন। সেই নিউজ ছাপার পর সাগর তাঁকে হুমকি দেন। সেই বন্ধুকে মারার ছকও কষেন।
টোকাই সাগরকে নিয়ে আমি প্রথম বড় একটি নিউজ করি ১৯৯৮ সালের প্রথম দিকে, জনকণ্ঠে। বিমানবন্দর থেকে পাচার করা একটি সোনার চালান টোকাই সাগরের লোকজন মেরে দিয়েছিলেন। চালানটি ছিল কলকাতার এক ব্যবসায়ীর। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, চালানটা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সোনার পাইকারি বাজারে যাবে। চালান ধরতে পুলিশ ওত পেতে ছিল বিমানবন্দর মোড়ে। ঠিক সময়ে চালানটি বিমানবন্দর থেকে বের হলেও ৮ নম্বর হ্যাঙ্গার গেটের মুখে টোকাই সাগরের লোকজন আটকে দেন। সোনার বাহকেরা তাঁদের পুলিশের লোক ভেবে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান। সোনা চলে যায় সাগরের লোকজনের হাতে।
এই সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে ওই সময় বেশ হইচই হয়। গোয়েন্দা পুলিশের এসি মিয়া আবদুস ছালাম (বর্তমানে অবসরে) আমাকে বলেছিলেন, ওই চালানে নাকি ২০ কেজির মতো সোনা ছিল। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় অন্ধকার জগতের জিনিস অন্ধকারেই হারিয়ে যায়।
সোনা চোরাচালানের ক্ষেত্রে ঢাকা বরাবরই ছিল ট্রানজিট রুট। সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে টনে টনে সোনা নামে ঢাকায়। সেই সোনা চলে যায় ভারতের ব্যবসায়ীদের হাতে। এসব সোনা কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুজন সন্ত্রাসীর নাম সবচেয়ে আলোচিত ছিল—একজন মুরগি মিলন, অন্যজন টোকাই সাগর। একসময় দুজন একসঙ্গে এই কাজ করতেন। আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় টোকাই সাগর বলেছিলেন, ‘মগবাজার মোড়ে বিএনপির মিছিলে হামলার আগপর্যন্ত আমি লিয়াকত-মিলনের বাসায় দাওয়াতও খেয়েছি।’
পুলিশের খাতা অনুযায়ী, টোকাই সাগরের জন্ম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাউরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা সাগরে মাছ ধরতেন। সাগরের আসল নাম আমির হোসেন। টোকাই সাগর আমাকে বলেছিলেন, তিনি সন্দ্বীপের বাউরিয়া হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ি ছাড়েন। সন্দ্বীপ থেকে আসেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে। সেখানে এক মাস্তানের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে কর্ণফুলী মার্কেটে চাঁদাবাজি নিয়ে এক যুবক খুন হন। সেই মামলায় তাঁর নাম আসে। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। আগারগাঁও বস্তিতে এসে নিজের নাম বদলে রাখেন আমিন রসুল সাগর। এখানে এসেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮৯ সালে ডাকাতির অভিযোগে ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
শোনা যায়, জেলে যাওয়ার পর সাগরের সঙ্গে ছাত্রদলের ক্যাডার নীরু ও বি. সেলিমের পরিচয় হয়। বি. সেলিম পরে ‘বাস্টার্ড সেলিম’ নামে পরিচিতি পান। তাঁরা সাগরকে অস্ত্র সংগ্রহের কাজে লাগান।
এরশাদ সরকারের পতনের পর আগারগাঁও থেকে আস্তানা গুটিয়ে আশকোনায় চলে যান সাগর। সেখানে সিভিল অ্যাভিয়েশনের এক কর্মচারীর মাধ্যমে সোনা চোরাচালানকারী ‘গোল্ড মজিবরের’ সঙ্গে পরিচয়। বলা যায়, মজিবরের হাত ধরেই এই কারবারে নামেন সাগর।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন বাস্টার্ড সেলিম। তখন বি. সেলিম, গোল্ড মজিবর ও সাগর মিলে সোনা চোরাচালানের কাজে নেমে পড়েন।
১৯৯৪ সালে সাগরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে যান। ১৯৯৫ সালে বিমানবন্দরে গোলাগুলির সময় অস্ত্রসহ ল্যাংড়া রফিক ধরা পড়েন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাগরকে গ্রেপ্তার করে ডিটেনশনে দেওয়া হয়। জেল থেকে বেরিয়ে কাওলার কামালের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। কামাল গুলিতে আহত হলে এলাকার লোকজন সাগরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কিন্তু এরই মধ্যে বিমানবন্দর এলাকায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন সাগর। বিমানবন্দরের গাড়ি পার্কিং ও কনকর্স হল ইজারা নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুবলীগের লিয়াকত ও মুরগি মিলনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন সাগর। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে সাগরের হাত থেকে বিমানবন্দরের ইজারা চলে যায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরীর হাতে। এতে মুরগি মিলনের লাভ হয়। বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ আসে মিলনের হাতে। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাগর ও মিলনের মধ্যে বিরোধ। পরে কালা জাহাঙ্গীর ও সুব্রত বাইনের সঙ্গে মিলে মুরগি মিলনকে খুন করেন সাগর। মিলন খুন হওয়ার পর সাগর একটি পত্রিকাকে বলেছিলেন, মামলায় তাঁর নাম ঢুকিয়েছিলেন লিয়াকত ও আওরঙ্গ।
পুলিশের খাতায় সাগরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১২টি। সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছিলেন। ওই সময় তিনি গুলশানে একটি ফ্ল্যাট ও নিকুঞ্জে একটি প্লট কেনেন। আশকোনায় তাঁর একটি চারতলা বাড়িও ছিল। ঢাকাই সন্ত্রাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বিত্তবান ছিলেন সাগর।
২০০১ সালের ৩ এপ্রিল দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পথে সাগরকে গ্রেপ্তার করেন এসবির সাব ইন্সপেক্টর রেজা। তিনি ছিলেন এএসপি খলিলুর রহমানের টিমের সদস্য। সাগরকে নিয়ে যাওয়া হয় ১০/এ নিউ বেইলি রোডের সিটি এসবি অফিসে। এসবির বিশেষ সুপার (এসএস) ছিলেন ইমামুল হক ফিরোজ (হাইকোর্টের আইনজীবী)। এখনকার অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এসএসের রুমে কয়েকজন সাংবাদিক বসা। আমাদের সামনে টোকাই সাগরকে আনা হয়। ঠিক এ সময় সেই কক্ষে আসেন আমার সেই বন্ধু সাংবাদিক। তাঁকে দেখেই চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাগর। অশ্লীল ভাষায় বলেন: ‘...তোকে আমি দেখে নেব।’
দিন কয়েক আগে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন বলেন, টোকাই সাগরের সেই চোখরাঙানির কথা তাঁর এখনো মনে আছে।
টোকাই সাগরকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলে পাঠানো হয়। বেশ কয়েক মাস জেলে থাকেন। এরপর একদিন সবার অজান্তে জামিনে বেরিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। এত অপরাধ করেও তাঁকে কোনো বিচারের মুখোমুখি হতে হলো না। আমরাও নানান ইস্যুর ভিড়ে তাঁকে ভুলে গেলাম।
একদিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ সাগরের স্ত্রীর ফোন। তিনি বললেন, তাঁর দেবরের পরিবার ডিভিওয়ানে আমেরিকায় গেছে। তাঁরাও সপরিবারে আমেরিকায় চলে যাচ্ছেন। আমার কাছে আবারও সেই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন, ক্ষমা চাইলেন।
এভাবেই সবার চোখের সামনে দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেলেন শীর্ষ চোরাকারবারি ও সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। শুনেছি, সাগর এখন নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিং এলাকায় বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসায় বেশ নামডাক করেছেন।

অভ্যর্থনাকক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী, সঙ্গে এক ছেলে ও এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
এটুকু বলায় চেনা গেল না। স্বামীর নাম বললেন আমিন রসুল সাগর। চিনতে আর বাকি রইল না। বললাম, আপনি তাহলে টোকাই সাগরের স্ত্রী? তিনি মাথা নাড়লেন। সাগরের সঙ্গে এই নারীকে কোনোভাবেই মেলানো যায় না। বাচ্চারা একজন বিআইটিতে, অন্যজন আইআইটিতে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের মুখে বাংলা আসে না।
জানতে চাইলাম, শীর্ষসন্ত্রাসীকে বিয়ে করলেন কেন? হেসে বললেন, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। তাঁর বাবা আগারগাঁও কৃষি ইনস্টিটিউটে চাকরি করেন। আসার কারণ জানতে চাইলে বলেন, আগের দিন তাঁর স্বামীর ব্যবহারের কারণে তিনি ক্ষমা চাইতে এসেছেন।
এই নারীর স্বামী শীর্ষসন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে ‘টোকাই সাগর’ নামে পরিচিত ছিলেন। গুলশানের ডিসিসি মার্কেটে আমিন রসুল ট্রেডার্সে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় আমার। সেই সাক্ষাতের সময় তিনি গুলিভর্তি অস্ত্রটি টেবিলের ওপর রেখে আমাকে বলেছিলেন: ‘বলেন, কী জানতে চান?’
এটা ২০০০ সালের প্রথম দিকের ঘটনা। পরদিন জনকণ্ঠে টোকাই সাগরকে নিয়ে যে রিপোর্ট করি, সেখানে অস্ত্র দেখানোর কথাটা এড়িয়ে যাই। সেই ঘটনার পর সাগর তাঁর স্ত্রীকে পাঠিয়েছেন দুঃখ প্রকাশের জন্য।
সাগর তখন আন্ডারওয়ার্ল্ড ও রাজনৈতিক অঙ্গন—দুই দিকেই প্রতাপশালী। তিনি ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সেই কমিটির সভাপতি প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকা। কী কী অভিযোগ নিয়ে কথা হয়েছিল, তার সব মনে নেই। তবে এটা মনে আছে, তিনি বলেছিলেন, যুবলীগের নেতা আওরঙ্গ ও শীর্ষসন্ত্রাসী লিয়াকত তাঁর ক্যারিয়ার ধ্বংসের জন্য এসব করেছেন। পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে যেসব খবর লেখা হচ্ছে, সবই তাঁদের দেওয়া। এমনকি তাঁর নামের আগে ‘টোকাই’ উপাধিটাও লিয়াকতের দেওয়া বলে দাবি করেছিলেন।
সাগরের স্ত্রী চলে যাওয়ার পর আমি কিছুটা চিন্তামুক্ত হলেও ভয়ে ভয়ে ছিলেন আমার এক বন্ধু সাংবাদিক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভার সূত্র ধরে তিনি টোকাই সাগরের বিরুদ্ধে একটি নিউজ করেন। সেই নিউজ ছাপার পর সাগর তাঁকে হুমকি দেন। সেই বন্ধুকে মারার ছকও কষেন।
টোকাই সাগরকে নিয়ে আমি প্রথম বড় একটি নিউজ করি ১৯৯৮ সালের প্রথম দিকে, জনকণ্ঠে। বিমানবন্দর থেকে পাচার করা একটি সোনার চালান টোকাই সাগরের লোকজন মেরে দিয়েছিলেন। চালানটি ছিল কলকাতার এক ব্যবসায়ীর। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, চালানটা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সোনার পাইকারি বাজারে যাবে। চালান ধরতে পুলিশ ওত পেতে ছিল বিমানবন্দর মোড়ে। ঠিক সময়ে চালানটি বিমানবন্দর থেকে বের হলেও ৮ নম্বর হ্যাঙ্গার গেটের মুখে টোকাই সাগরের লোকজন আটকে দেন। সোনার বাহকেরা তাঁদের পুলিশের লোক ভেবে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যান। সোনা চলে যায় সাগরের লোকজনের হাতে।
এই সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে ওই সময় বেশ হইচই হয়। গোয়েন্দা পুলিশের এসি মিয়া আবদুস ছালাম (বর্তমানে অবসরে) আমাকে বলেছিলেন, ওই চালানে নাকি ২০ কেজির মতো সোনা ছিল। কিন্তু প্রমাণ না থাকায় অন্ধকার জগতের জিনিস অন্ধকারেই হারিয়ে যায়।
সোনা চোরাচালানের ক্ষেত্রে ঢাকা বরাবরই ছিল ট্রানজিট রুট। সৌদি আরব, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া থেকে টনে টনে সোনা নামে ঢাকায়। সেই সোনা চলে যায় ভারতের ব্যবসায়ীদের হাতে। এসব সোনা কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে দুজন সন্ত্রাসীর নাম সবচেয়ে আলোচিত ছিল—একজন মুরগি মিলন, অন্যজন টোকাই সাগর। একসময় দুজন একসঙ্গে এই কাজ করতেন। আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় টোকাই সাগর বলেছিলেন, ‘মগবাজার মোড়ে বিএনপির মিছিলে হামলার আগপর্যন্ত আমি লিয়াকত-মিলনের বাসায় দাওয়াতও খেয়েছি।’
পুলিশের খাতা অনুযায়ী, টোকাই সাগরের জন্ম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বাউরিয়া গ্রামে। তাঁর বাবা সাগরে মাছ ধরতেন। সাগরের আসল নাম আমির হোসেন। টোকাই সাগর আমাকে বলেছিলেন, তিনি সন্দ্বীপের বাউরিয়া হাইস্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাড়ি ছাড়েন। সন্দ্বীপ থেকে আসেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে। সেখানে এক মাস্তানের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। ১৯৮৬ সালে কর্ণফুলী মার্কেটে চাঁদাবাজি নিয়ে এক যুবক খুন হন। সেই মামলায় তাঁর নাম আসে। এরপর চলে আসেন ঢাকায়। আগারগাঁও বস্তিতে এসে নিজের নাম বদলে রাখেন আমিন রসুল সাগর। এখানে এসেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৮৯ সালে ডাকাতির অভিযোগে ডিবি তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
শোনা যায়, জেলে যাওয়ার পর সাগরের সঙ্গে ছাত্রদলের ক্যাডার নীরু ও বি. সেলিমের পরিচয় হয়। বি. সেলিম পরে ‘বাস্টার্ড সেলিম’ নামে পরিচিতি পান। তাঁরা সাগরকে অস্ত্র সংগ্রহের কাজে লাগান।
এরশাদ সরকারের পতনের পর আগারগাঁও থেকে আস্তানা গুটিয়ে আশকোনায় চলে যান সাগর। সেখানে সিভিল অ্যাভিয়েশনের এক কর্মচারীর মাধ্যমে সোনা চোরাচালানকারী ‘গোল্ড মজিবরের’ সঙ্গে পরিচয়। বলা যায়, মজিবরের হাত ধরেই এই কারবারে নামেন সাগর।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেন বাস্টার্ড সেলিম। তখন বি. সেলিম, গোল্ড মজিবর ও সাগর মিলে সোনা চোরাচালানের কাজে নেমে পড়েন।
১৯৯৪ সালে সাগরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন পর ছাড়া পেয়ে যান। ১৯৯৫ সালে বিমানবন্দরে গোলাগুলির সময় অস্ত্রসহ ল্যাংড়া রফিক ধরা পড়েন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাগরকে গ্রেপ্তার করে ডিটেনশনে দেওয়া হয়। জেল থেকে বেরিয়ে কাওলার কামালের সঙ্গে বিরোধে জড়ান। কামাল গুলিতে আহত হলে এলাকার লোকজন সাগরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কিন্তু এরই মধ্যে বিমানবন্দর এলাকায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলেন সাগর। বিমানবন্দরের গাড়ি পার্কিং ও কনকর্স হল ইজারা নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে নেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুবলীগের লিয়াকত ও মুরগি মিলনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন সাগর। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে সাগরের হাত থেকে বিমানবন্দরের ইজারা চলে যায় আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরীর হাতে। এতে মুরগি মিলনের লাভ হয়। বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ আসে মিলনের হাতে। এই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাগর ও মিলনের মধ্যে বিরোধ। পরে কালা জাহাঙ্গীর ও সুব্রত বাইনের সঙ্গে মিলে মুরগি মিলনকে খুন করেন সাগর। মিলন খুন হওয়ার পর সাগর একটি পত্রিকাকে বলেছিলেন, মামলায় তাঁর নাম ঢুকিয়েছিলেন লিয়াকত ও আওরঙ্গ।
পুলিশের খাতায় সাগরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১২টি। সব মামলায় তিনি জামিন পেয়েছিলেন। ওই সময় তিনি গুলশানে একটি ফ্ল্যাট ও নিকুঞ্জে একটি প্লট কেনেন। আশকোনায় তাঁর একটি চারতলা বাড়িও ছিল। ঢাকাই সন্ত্রাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বিত্তবান ছিলেন সাগর।
২০০১ সালের ৩ এপ্রিল দুবাই থেকে ঢাকায় ফেরার পথে সাগরকে গ্রেপ্তার করেন এসবির সাব ইন্সপেক্টর রেজা। তিনি ছিলেন এএসপি খলিলুর রহমানের টিমের সদস্য। সাগরকে নিয়ে যাওয়া হয় ১০/এ নিউ বেইলি রোডের সিটি এসবি অফিসে। এসবির বিশেষ সুপার (এসএস) ছিলেন ইমামুল হক ফিরোজ (হাইকোর্টের আইনজীবী)। এখনকার অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এসএসের রুমে কয়েকজন সাংবাদিক বসা। আমাদের সামনে টোকাই সাগরকে আনা হয়। ঠিক এ সময় সেই কক্ষে আসেন আমার সেই বন্ধু সাংবাদিক। তাঁকে দেখেই চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাগর। অশ্লীল ভাষায় বলেন: ‘...তোকে আমি দেখে নেব।’
দিন কয়েক আগে অতিরিক্ত আইজিপি মাহবুব হোসেন বলেন, টোকাই সাগরের সেই চোখরাঙানির কথা তাঁর এখনো মনে আছে।
টোকাই সাগরকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলে পাঠানো হয়। বেশ কয়েক মাস জেলে থাকেন। এরপর একদিন সবার অজান্তে জামিনে বেরিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান। এত অপরাধ করেও তাঁকে কোনো বিচারের মুখোমুখি হতে হলো না। আমরাও নানান ইস্যুর ভিড়ে তাঁকে ভুলে গেলাম।
একদিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ সাগরের স্ত্রীর ফোন। তিনি বললেন, তাঁর দেবরের পরিবার ডিভিওয়ানে আমেরিকায় গেছে। তাঁরাও সপরিবারে আমেরিকায় চলে যাচ্ছেন। আমার কাছে আবারও সেই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন, ক্ষমা চাইলেন।
এভাবেই সবার চোখের সামনে দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেলেন শীর্ষ চোরাকারবারি ও সন্ত্রাসী টোকাই সাগর। শুনেছি, সাগর এখন নিউইয়র্কের ফ্ল্যাশিং এলাকায় বাড়ি কেনাবেচার ব্যবসায় বেশ নামডাক করেছেন।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু-সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী–সঙ্গে এক ছেলে, এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু-সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী–সঙ্গে এক ছেলে, এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
২ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু-সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী–সঙ্গে এক ছেলে, এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ দিন আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় কর হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়েকে খুন করার পর কথিক গৃহকর্মী আয়েশা ওই বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করেন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলার এজাহারে এই দাবি করা হয়েছে। তবে আয়েশা নামে পরিচয় দেওয়া ওই তরুণীর প্রকৃত পরিচয় মেলেনি এখনো।
স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫) হত্যার ঘটনায় গতকাল মামলাটি করেন নাটোরের স্থায়ী বাসিন্দা আ জ ম আজিজুল ইসলাম। মামলায় কথিত গৃহকর্মী মোছা. আয়েশাকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর বাবার নাম ও ঠিকানায় ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রকিবুজ্জামান তালুকদার। গতকাল সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী আজিজুল লিখেছেন, তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। মোহাম্মদপুরে পরিবার নিয়ে থাকেন। চার দিন আগে উল্লিখিত আসামি তাঁর বাসায় খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গতকাল সকাল ৭টার দিকে তিনি (আজিজুল) তাঁর কর্মস্থল উত্তরায় চলে যান। কর্মস্থলে থাকাকালে তিনি তাঁর স্ত্রীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
পরে তিনি বেলা ১১টার দিকে বাসায় আসেন। এসে দেখতে পান, তাঁর স্ত্রীর গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কাটা। স্ত্রী রক্তাক্ত জখম হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন আর মেয়ের গলার নিচে ডান পাশে কাটা। মেয়ে গুরুতর অবস্থায় বাসার প্রধান ফটকে পড়ে আছে। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিনি দ্রুত তাকে উদ্ধার করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিকের মাধ্যমে মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
মামলায় আজিজুল আরও লিখেছেন, তিনি বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেন। এতে তিনি দেখতে পান, আসামি সকাল ৭টা ৫১ মিনিটের সময় কাজ করার জন্য বাসায় আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের সময় আসামি তাঁর (বাদী) মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় একটি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ অন্যান্য মূলবান সামগ্রী নিয়ে যান আসামি।
মামলায় বাদী লিখেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে তিনি নিশ্চিত হন যে, অজ্ঞাত কারণে আসামি তাঁর (বাদী) স্ত্রী ও মেয়েকে ছুরি বা অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে হত্যা করেন।
মা-মেয়ে হত্যার আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ জানায়, গৃহকর্মীর পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।

অভ্যর্থনা কক্ষ থেকে কে যেন ফোন করে বললেন, এক নারী দুই বাচ্চা নিয়ে দেখা করতে এসেছেন। সঙ্গে এক বন্ধু-সাংবাদিক। একটু পর এলেন সেই নারী–সঙ্গে এক ছেলে, এক মেয়ে। মার্জিত পোশাক, কথাবার্তায় ভীষণ বিনয়ী। পরিচয় দিয়ে বললেন, ‘আমি মাহবুবা রসুল লিপি।’
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
২ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৪ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৩ দিন আগে