Ajker Patrika

অস্থায়ী পশুর হাট

ছোট ও মাঝারি গরুতে ক্রেতার আগ্রহ বেশি

  • ঈদের ছুটি শুরুর আগেই জমেছে রাজধানীর হাট।
  • বড় আকারের গরুর চাহিদা কম থাকায় হতাশা।
  • আজ ও আগামীকাল ক্রেতা আরও বাড়ার আশা।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ০৯: ৪৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দর-কষাকষি শেষে মুখে হাসি। গরুর গলায় বাঁধা রশির প্রান্ত ধরার হাতবদল। গরু নিয়ে বাড়ির পথ ধরা। এমন দৃশ্য গতকাল বুধবার বারবার চোখে পড়েছে রাজধানীর অস্থায়ী ও স্থায়ী পশুর হাটগুলোয়। দাম গতবারের চেয়ে বেশি না কম, এ নিয়ে ভিন্নমত থাকলেও ব্যাপারীদের অপেক্ষা কেটে ঈদের ছুটি শুরুর আগেই জমেছে কোরবানির পশুর হাটগুলো।

রাজধানীর অস্থায়ী হাটগুলোয় দুই-তিন দিন আগে পর্যাপ্ত গরু-ছাগল উঠলেও ক্রেতার দেখা ছিল না। অলস সময়ই কেটেছে ব্যাপারী ও তাঁদের সঙ্গের লোকদের। তবে গতকাল সকাল থেকেই দৃশ্য বদলে যায়। বাড়ে ক্রেতা সমাগম। আজ বৃহস্পতিবার ও কাল শুক্রবার ক্রেতা আরও বাড়বে বলে আশা হাটসংশ্লিষ্টদের।

এবারও চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর। বড় গরু দেখতে উৎসাহী দর্শনার্থীরা ভিড় করলেও কেনার আগ্রহ নিয়ে গেছেন দু-একজন। ব্যাপারীরা বলছেন, বড় আকারের গরুতে কৃষকের খরচ বেশি, কিন্তু লাভ কম। কিন্তু ছোট ও মাঝারি গরুতে লাভ বেশি। বিক্রিও হয় বেশি।

পুরান ঢাকার রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি মাঠের অস্থায়ী পশুর হাটে কুষ্টিয়া থেকে বড় আকারের ২০টি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারী কিসমত আলী। গতকাল দুপুর পর্যন্ত একটিও বিক্রি হয়নি। আলাপকালে হতাশা নিয়ে বললেন, ভবিষ্যতে ঢাকায় আর বড় গরু আর আনবেন না। একটি গরুর পেছনে অনেক খরচ হলেও যে দাম বলছেন, তাতে খরচই উঠবে না।

একই হাটে গরু নিয়ে আসা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চাপাইগাজী গ্রামের ফরিদ উদ্দিন অবশ্য আছেন ফুরফুরে মেজাজে। বললেন, ছোট ১৮টি গরু এনেছিলেন, একটি বিক্রি করেছেন। ছোট গরুর চাহিদা থাকায় তিনি খুশি। তিন মণের বেশি মাংস হবে এমন গরুর দাম চাইছেন এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। ক্রেতা ৯৫ হাজার টাকা বলছেন। ছয় মণের বেশি মাংস হবে এমন একটি গরু ২ লাখ ২০ হাজারেই ছেড়ে দেবেন।

রহমতগঞ্জ মাঠে গরু কিনতে কামরাঙ্গীরচর থেকে আসা হাসিবুর রহমান বলেন, এবার দাম বেশি হাঁকা হচ্ছে। তবে পছন্দ হলে গরু কিনেই ফিরবেন। একই মত আরও কয়েকজন ক্রেতার। তাঁরা দর-কষাকষি করছিলেন। কিন্তু ক্রেতা-বিক্রেতার দামের বেশি ব্যবধান হাসি ফোটাচ্ছিল না কারও মুখে।

রহমতগঞ্জ হাটে কয়েকটি গোলাপি ও কালো রঙের মহিষও উঠেছে। অবশ্য এই হাটের বড় আকর্ষণ মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমের সাদা গরু। হাট পরিচালনাকারীরা জানান, মিরকাদিমের গরু ঈদের দু-এক দিন আগে ওঠে। ব্যাপক চাহিদা থাকায় অল্প সময়েই বিক্রি হয়ে যায়।

দুপুরে শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ ক্লাব মাঠের অস্থায়ী পশুর হাটে দাম গতবারের মতো বলে জানালেন কমলাপুরের বাসিন্দা তাহমীদ। তিনি ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছেন। বললেন, গত বছরও প্রায় একই দামে একই আকারের একটি গরু কিনেছিলেন।

ওই হাটে পাবনা থেকে ১৯টি গরু নিয়ে এসেছেন ব্যাপারী হামিদুল হক। তিনি বলেন, দাম কম-বেশি যা-ই হোক, কিছু লাভ থাকলেই ছেড়ে দেবেন। মাঝেমধ্যে বৃষ্টি এলে সমস্যা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে কাদা। এমন পরিবেশে গরু কয়েক দিন থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

শাহজাহানপুর হাট পরিচালনাকারীদের একজন আশরাফুল ইসলাম জানান, তাঁদের হাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল থেকে বিক্রি পুরোদমে শুরু হয়েছে।

দুপুরে শাহজাহানপুর হাট পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, গরুর এমন একটা স্বাভাবিক দাম থাকুক, যেখানে কৃষক বা খামারি লাভবান হন এবং ক্রেতাও লাভবান হন। গরুর দাম যদি খুব কমে যায়, তখন কৃষক বা খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আবার দাম বেড়ে গেলে ভোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গতকাল রাজধানীর প্রতিটি পশুর হাটেই ব্যাংকের অস্থায়ী এটিএম বুথ খোলা হয়েছে। সেখানে টাকা তোলা ছাড়াও জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। হাটে রয়েছে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন।

যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ মাঠের অস্থায়ী পশুর হাটের গরু কলেজ মাঠ ছাড়িয়ে প্রতিবারের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের খালি জায়গা, পাশের সরু সড়কসহ আশপাশের সব সড়কে বিস্তৃত হয়েছে। ওই হাটের ‘সাদা বাবু’ নামের গরুটি সবার নজর কেড়েছে। বিশালদেহী গরুটির রং সাদা হওয়ায় এই নাম বলে জানান মালিক বাবুল মাতব্বর। ২৭ মণ ওজনের গরুটি গত রোববার আনা হয়েছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে। দাম হাঁকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। এক ক্রেতা আট লাখ টাকা দাম বলেছেন। উৎসাহী শিশু-কিশোরেরা গরুটির সঙ্গে সেলফি তুলছিল। ওই হাটে প্রচুর গরু উঠেছে।

হাটের ইজারাদার তারিকুল ইসলাম জানান, এই হাটে ৬০টি সিসি ক্যামেরা, জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন, তিনটি ব্যাংকের বুথসহ বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৮
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া পোস্টে এক শোকবার্তায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দুটি ছবি যুক্ত করেছেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। সর্বশক্তিমান যেন তাঁর পরিবারকে এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দান করেন।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটির উন্নয়ন এবং ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

মোদি বলেন, ‘২০১৫ সালে ঢাকায় তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। আমরা আশা করি, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও উত্তরাধিকার আমাদের অংশীদারত্বকে ভবিষ্যতেও পথ দেখাবে। তাঁর আত্মা শান্তিতে বিশ্রাম নিক।’

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা অন্যতম জননেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে আমি শোকাহত। আমি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীদের আমার সমবেদনা জানাচ্ছি।’

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক বার্তায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। খালেদা জিয়ার পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তিনি বার্তায় লেখেন, ‘খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব এবং ত্যাগ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গভীর শোক প্রকাশ করে খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের একজন ‘নিবেদিত বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সেবা এবং দেশটির অগ্রগতি ও উন্নয়নে তাঁর অবদান একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে গেছে। এই কঠিন সময়ে আমাদের চিন্তা ও প্রার্থনা খালেদা জিয়ার পরিবার, বন্ধুস্বজন এবং বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে রয়েছে।’

ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে দূতাবাস জানায়, ‘বেগম জিয়া তাঁর দেশের আধুনিক ইতিহাস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে তাঁর নেতৃত্ব ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়, বেলা ২টায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৫
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা আগামীকাল বুধবার বেলা ২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন অনুষ্ঠানে সাধারণ জনগণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজা ও দাফনস্থলে কোনো ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪২
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদ

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে।

এসব গণমাধ্যমে খালেদা জিয়াকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের শক্তি, শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইত্যাদি অভিধায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির শিরোনাম করা হয়েছে—‘বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ৮০ বছর বয়সে মারা গেলেন’।

কাতারি সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে শিরোনাম করা হয়েছে—‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মারা গেছেন, বয়স হয়েছিল ৮০ বছর’।

হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের শিরোনামে বলা হয়েছে, দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা গেলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে শিরোনাম করা হয়েছে—‘খালেদা জিয়া, সাবেক বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী ও হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, ৮০ বছরের বয়সে মারা গেছেন’।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা এপির শিরোনাম—‘খালেদা জিয়া, সাবেক বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী ও হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, ৮০ বছরের বয়সে মারা গেছেন’।

আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের শিরোনাম—‘খালেদা জিয়া, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের শক্তি, ৮০ বছরের বয়সে মারা গেলেন’।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের শিরোনাম করা হয়েছে—‘খালেদা জিয়া, সাবেক বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী ও হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, ৮০ বছরের বয়সে মারা গেছেন’।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে একই শিরোনাম করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের শিরোনাম—‘খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, ৮০ বয়সে প্রয়াণ’।

এ ছাড়া ভারতীয় ও পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলোতেও খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৮
খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

বিএনপির চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তথ্য জানিয়েছেন বলে জানান উপদেষ্টা। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি নির্ধারণে আয়োজিত উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল।

ব্রিফিংয়ে আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল থেকে তিন দিনের জন্য রাষ্ট্রীয় শোক ও কাল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।’

সভায় শুরুতেই খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন মোনাজাত পরিচালনা করেন।

সভায় খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ও আগামীকাল এক দিনের সাধারণ ছুটির সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়, যা পাঠ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং তথ্য উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান।

রাষ্ট্রীয় শোকের তিন দিন দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একই সঙ্গে আগামীকাল দেশের প্রতিটি মসজিদে খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হবে। অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়েও আয়োজন হবে বিশেষ প্রার্থনার।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোকবই খোলা হবে।

সভায় বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাসহ সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।

মির্জা ফখরুল জানান, আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা ও এর সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাঁকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে দাফন করা হবে।

সভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দাফন ও জানাজা সম্পর্কিত বিষয়ে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে গভীর শোকের সময় আমরা সবাই সমবেত হয়েছি। পুরো জাতি বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করছিল, যাতে তিনি আমাদের সাথে আরও অনেক বছর থাকেন। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। জাতির পক্ষ থেকে আমরা তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। তাঁর দাফন ও জানাজার বিষয়ে যা যা কিছু প্রয়োজন সব ধরনের সহায়তা সরকার করবে।’

স্মৃতিচারণা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সর্বশেষ উনার সাথে দেখা হয়েছিল ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে। সেদিন তিনি খুব উৎফুল্ল ছিলেন। আমার সাথে অনেকক্ষণ গল্প করেছেন। আমার, আমার স্ত্রীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন। তিনি নিজে অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু সবার সুস্থতা নিয়ে তাঁর উদ্বেগ ছিল। তিনি আমাদের সাথে ছিলেন। জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, যখন আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে, এ সময় তাঁর উপস্থিতি আমাদের ভীষণ প্রয়োজন ছিল। তার চলে যাওয়া জাতির বিরাট ক্ষতি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত