Ajker Patrika

বঙ্গবন্ধুকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ৩৭
বঙ্গবন্ধুকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী 

পঁচাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈচিত্র্যময় ও বহুমাত্রিক জীবন নিয়ে চিত্রশিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশের আঁকা দেড় শ ফুট আকারের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। 

জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন। 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘাতকেরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে আমাদের মাঝ থেকে কেড়ে নিয়েছিল। সে জন্য ২১ বছর এই জাতির জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। আর এ ২১ বছর একটা চেষ্টাই করা হয়েছিল যেন, জাতির পিতার নাম না থাকে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নামটাই মুছে ফেলা......সেটা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস হোক আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস হোক। সবকিছু থেকেই তাঁকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলার একটি চেষ্টা। 

শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান যেমন করেছে, পঁচাত্তরের পর যারা স্বাধীনতা বিরোধী তারাও করেছেন। কিন্তু আমাদের যারা শিল্পী-সাহিত্যিক আছেন, তারা তাদের লেখনীর মধ্য দিয়ে, তাদের তুলির আঁচড়ে, কবিতার মাধ্যমে, গানের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে এই নামটি চিরভাস্বর করে রেখেছেন। সে জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। 

সরকার প্রধান বলেন, ‘একটি প্রতিকূল অবস্থার মাঝেও প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমাদের শিল্পী, সাহিত্যিক, কবি থেকেই শুরু করে সকলেই কাজ করেছেন। আর আমরা রাজনৈতিকভাবেও চেষ্টা চালিয়েছি। আমাদের দেশের প্রতিটি অর্জন ও সংগ্রামে আমাদের শিল্পীদের অনেক অবদান রয়েছে।’ 

 ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবন পট’ এর চিত্রকরের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অনন্য সৃষ্টিকর্ম আমাদের শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশের অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে যে তথ্যগুলি প্রকাশ হচ্ছে সেটা কিন্তু আমাদের অনেক কিছু জানায়।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পী বিকাশ স্বাধীনতার সংগ্রাম থেকে শুরু করে সবকিছু চিত্রকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। আমি এবং আমার ছোট বোন রেহানা সত্যিই বিস্মিত হয়েছি। এটি একটি অসাধারণ শিল্পকর্ম।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটিকে এমনভাবে প্রদর্শন করা উচিত, যেন সকল মানুষ এটিকে দেখতে পাই। শুধু এয়ারপোর্ট না, টুঙ্গিপাড়ায় এমন একটা প্রদর্শনীর ব্যবস্থা হবে, এমন একটা জায়গায় করার চেষ্টা করছি। যারা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে যান, তারাও এই চিত্রকর্মটি দেখতে পারেন। তার জন্য একটা স্থান তৈরি করা হবে।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই চিত্রকর্মটি অনলাইনেও যেন মানুষ দেখতে পারে, সে ব্যবস্থাটি আমরা করব। বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, সেখানে আমরা এটিকে স্থাপন করব। এই চিত্রকর্মটি যেন বাংলাদেশের সব জায়গায় প্রদর্শিত হয়, সে ব্যবস্থা করব। সেই সঙ্গে আমাদের প্রবাসে যারা আছেন, তাদের দেখার ব্যবস্থা করব।’ 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, চিত্রকর্মটির শিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ, অভিনেতা আফজাল হোসেন প্রমুখ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ২০
বিজয় দিবসে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে কেক কাটেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
বিজয় দিবসে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে কেক কাটেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবসে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তাঁর সহধর্মিণী ড. রেবেকা সুলতানা। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্য ও বিভিন্ন স্তরের আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি কুশল বিনিময় করেন এবং তাঁদের বিজয় দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বঙ্গভবনের সবুজ লনে আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্তদের পরিবারের সদস্যসহ ৭ হাজার ২১৮ জন অতিথি অংশ নেন। এর মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারভুক্ত সদস্য ছিলেন প্রায় ২৬৬ জন।

বিজয় দিবসে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
বিজয় দিবসে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা, তিন বাহিনীর প্রধান, জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী নেতারা, শিল্পী, বিশিষ্ট নাগরিক, সাংবাদিক এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধান বিচারপতি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন।

রাষ্ট্রপতি দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গুলশানে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে গুলশানে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে গুলশানে ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

২০১১ সালে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের স্মরণে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটি ‘ফেলানী অ্যাভিনিউ’ নামে নামকরণ করেছে। আজ মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে উক্ত সড়কের নামফলকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

সড়কের নামফলক উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের আঠারো কোটি মানুষ সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায়। আমাদের বোন ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রাণ দিয়েছিল। তার ওপর সংঘটিত নিষ্ঠুরতা প্রতিদিন আমাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই সড়কের নামকরণ। একই সঙ্গে আমরা বিশ্বের বিবেকের কাছে তুলে ধরতে চাই যে, সীমান্ত হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ এখনও বাংলাদেশের সীমান্তে ঘটছে। এই কারণেই বর্তমান সরকার সব ধরনের সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিজয় দিবসে ফেলানীর নামে এই সড়কের উদ্বোধন করেছে।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে নিজেদের সম্মান বজায় রাখার প্রতীক ও প্রতিবাদ হিসেবেই ফেলানীর নামে এই সড়কের (গুলশান-২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়ক) নামকরণ করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের যে কোনো দেশের সঙ্গে কথা বলার সময় আমরা আমাদের মানবিক মর্যাদা ও সম্মান বজায় রেখেই কথা বলবো। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের সেই মানবিক মর্যাদার শিক্ষাই দেয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ‘ফেলানী হত্যাকাণ্ড নিছক একটি হত্যাকাণ্ড নয়; এটি একটি সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রি. জে. মঈন উদ্দীন, ডিএনসিসি সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এস এম শফিকুর রহমানসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতির উদ্দেশে ভাষণ

নির্বাচনের আগে ফিরে আসতেই পলাতকদের চোরাগোপ্তা হামলা— সতর্ক করলেন প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৯
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাটি স্মরণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচনের আগে ফিরে আসতেই পলাতকেরা এই চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, তারা চায় নির্বাচনের আগেই তাদের ফিরে আসা নিশ্চিত করতে। নানা ভঙ্গিতে এটা তারা করবে। এই চোরাগোপ্তা খুন করার উদ্যোগ তার একটা রূপ। আরও কঠিনতর পরিকল্পনা নিয়ে তাদের প্রস্তুতি আছে।

আজ মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় তিনি এ ভাষণ দেওয়া শুরু করেন।

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের সামনে আজ উপস্থিত হয়েছি অত্যন্ত ব্যথিত হৃদয়ে। এই আনন্দের দিনে গভীর বেদনার সঙ্গে জানাচ্ছি, জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সম্প্রতি যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, তা শুধু একজন ব্যক্তির ওপর আঘাত নয়—এটি বাংলাদেশের অস্তিত্বের ওপর আঘাত, আমাদের গণতান্ত্রিক পথচলার ওপর আঘাত।

‘শরিফ ওসমান হাদি বর্তমানে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তাঁর চিকিৎসা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। আপনারা তাঁর জন্য মহান আল্লাহ তাআলার কাছে অন্তরের অন্তস্থল থেকে দোয়া করুন।

‘সরকার এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা গেছে। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই—যারা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত, তারা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

‘আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই—পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের এই অপচেষ্টা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দেওয়া হবে। ভয় দেখিয়ে, সন্ত্রাস ঘটিয়ে বা রক্ত ঝরিয়ে এই দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।

‘আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাই—সংযম বজায় রাখুন। অপপ্রচার বা গুজবে কান দেবেন না। ফ্যাসিস্ট টেররিস্টরা, যারা অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়, আমরা অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের মোকাবিলা করব। তাদের ফাঁদে পা দেব না। পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি এ দেশের পবিত্র মাটিতে আর কোনো দিন ফিরে আসবে না।’

পরাজিত শক্তির কাছে চোরাগোপ্তা খুনের চেয়ে আরও কঠিনতর পরিকল্পনা আছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের তরুণদের রক্ষা করুন। তাহলে আমরা সবাই এবং আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি রক্ষা পাবে। যারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, তারা বুঝে গেছে, তরুণ যোদ্ধারা তাদের পুনরুত্থানের পক্ষে ভীষণ রকম বাধা। এই অস্ত্রহীন, ভীতিহীন, ব্যক্তিগত স্বার্থ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন দৈনন্দিন এই চেহারার ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাদের সাংঘাতিক ভীতি। তাদের লক্ষ্য হলো, নির্বাচন আসার আগেই পথের এই বাধাগুলো সরিয়ে ফেলা—নিজেদের রাজত্ব আবার কায়েম করা। তাদের বন্ধুরা যত দিন তাদের সঙ্গে আছে, তত দিন তারা এই স্বপ্ন দেখবে। নির্বাচন হয়ে গেলে তাদের বন্ধুরা সমর্থন জোগাতে বেকায়দায় পড়বে। সেজন্যই তো এত তাড়াহুড়া। তারা চায় নির্বাচনের আগেই তাদের ফিরে আসা নিশ্চিত করতে। নানা ভঙ্গিতে এটা তারা করবে। এই চোরাগোপ্তা খুন করার উদ্যোগ তার একটা রূপ। আরও কঠিনতর পরিকল্পনা নিয়ে তাদের প্রস্তুতি আছে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের সবাইকে জোর গলায় বলতে হবে—আমরা তরুণদের রক্ষা করব। এখানে পুরোনো আমলের দাসত্ব মেনে যারা আছে, তাদেরকে দাসত্ব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করে আমরা সবাই মিলে দেশের ওপর আমাদের পরিপূর্ণ দখল প্রতিষ্ঠিত করব। নির্বাচনের আর বাকি মাত্র দুই মাস। আমরা তাদের ওপর নজর রাখব এবং বাকি দিনের প্রতিটি দিন উৎসবমুখর করে রাখব। যেহেতু আমাদের কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের মনে কোনো ভয়ডর নেই, তাই তারা নির্বাচনের আগের দুই মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে উৎসবমুখর করে রাখবে। সব রকমের হিংসা, কোন্দল থেকে দেশকে বাঁচিয়ে রাখবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভোট দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চাকা, এটি কাউকে চুরি করতে দেবেন না: প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৩৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া

ভোট দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গাড়ির চাকা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে এই চাকা কাউকে চুরি করতে না দেওয়ার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকারে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এমনটি বলেন।

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মনে রাখবেন, ভোট রক্ষা করা দেশ রক্ষা করার সমান দায়িত্ব। ভোট রক্ষা করুন। দেশকে রক্ষা করুন। ভোট দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গাড়ির চাকা। এই চাকা কাউকে চুরি করতে দেবেন না।

‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে প্রশাসনকে আরও কার্যকর, নিরপেক্ষ ও নির্বাচনী পরিবেশের উপযোগী করতে সরকার মাঠ প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনে বেশ কিছু রদবদল করেছে। এই পরিবর্তনগুলো কারও প্রতি অনুরাগ বা বিরাগ প্রসূত নয়। এগুলো করা হয়েছে দক্ষতা, যোগ্যতা এবং পেশাগত সক্ষমতার ভিত্তিতে।

‘আমাদের লক্ষ্য একটাই—দেশের প্রতিটি ভোটার যেন ভোট দিতে পারেন নিরাপদ পরিবেশে, ভয়মুক্ত মনে এবং সর্বোচ্চ স্বাধীনতায়। নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে আরও কোনো পদক্ষেপ প্রয়োজন—তা কমিশন অবশ্যই গ্রহণ করবে।’

প্রিয় দেশবাসী, ‘জুলাই সনদ জাতির ভবিষ্যৎ পথযাত্রায় একটি ঐতিহাসিক দলিল। এই সনদে আমরা যে সংস্কারমালা প্রস্তাব করেছি—রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন, প্রশাসনিক জবাবদিহি, দুর্নীতি হ্রাস, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং সমাজে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা—এসব বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন জনগণের সুস্পষ্ট মতামত। কারণ, একটি জাতীয় রূপান্তর কখনোই একক নেতৃত্ব বা একটি প্রশাসনের মাধ্যমে টেকসই হয় না; জনগণকেই চূড়ান্ত সম্মতি দিতে হয়।

‘এই কারণেই আমরা গণভোটের আয়োজন করেছি—যাতে দেশের ভবিষ্যৎ সংস্কার দিশা নির্ধারণে জনগণ সরাসরি সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। এই গণভোট হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক। এখানে আপনাদের প্রতিটি ভোট আগামী দিনের রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করবে।

‘এবারের নির্বাচনটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একই দিনে এবার দুটি ভোট। একটি সংসদ সদস্য নির্বাচনের ভোট। আরেকটি গণভোট—যার প্রভাব হবে শতবর্ষব্যাপী। কাজেই অবশ্যই ভোট দিন। ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন।

‘এর মাধ্যমে আপনারা জানান, আপনারা কি জুলাই সনদের সংস্কার কাঠামোকে এগিয়ে নিতে চান কি না। আপনাদের ভোটই নির্ধারণ করবে রাষ্ট্র কোন পথে অগ্রসর হবে, প্রশাসন কোন কাঠামোয় পুনর্গঠিত হবে এবং নতুন বাংলাদেশ কেমন রূপ পাবে।’

প্রিয় দেশবাসী, ‘আপনারা জানেন, জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আমাদের প্রবাসী ভাইবোনেরা কী তৎপরতার সঙ্গে এগিয়ে এসেছিলেন। ফ্যাসিবাদের মসনদ গুঁড়িয়ে দিতে তাঁরা অভূতপূর্ব ভূমিকা রেখেছেন। প্রবাসীদের এই ভূমিকা শুধু জুলাইয়েই নয়, আমরা দেখেছি ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ও। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, আমাদের এই প্রবাসী ভাইবোনেরা কখনোই ভোটাধিকার পাননি।

‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সক্রিয় উদ্যোগের ফলে প্রথমবারের মতো লাখ লাখ প্রবাসী এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে যাচ্ছেন।

‘এর ফলে প্রবাসীরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরাও আনন্দিত। একই সঙ্গে অনেক প্রবাসী নানা জটিলতায় এই উদ্যোগে শামিল হতে না পেরে ব্যথিতও। আপনাদের আবেগের প্রতি আমরা শ্রদ্ধা রেখে বলছি—এবারের যে ধারা শুরু হলো, তা ভবিষ্যতে থামবে না। আগামীতে আপনারাও এই প্রক্রিয়ায় শামিল হতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পটিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদ্‌যাপন, ক্ষুব্ধ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকারীরা

‘নিরাপত্তার’ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের বিএনপি প্রার্থীর

আজকের রাশিফল: বাবা-মা আজ আবদার রাখবেন, সিঙ্গেলরা দ্রুত প্রোফাইল পিক বদলান

ধানমন্ডি ৩২-এ ভাসানী, সিরাজ সিকদার, হাদির ছবি টানালেন জুলাই যোদ্ধারা

ভোলায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াত মারামারি, আহত ১৫

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত