Ajker Patrika

দার্জিলিংয়ে ঘুরতে যাবেন যেসব জায়গায়

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৩, ১০: ০৮
দার্জিলিংয়ে ঘুরতে যাবেন যেসব জায়গায়

দার্জিলিং সব সময় বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যের একটি। সহজে ও কম খরচে যাতায়াতের পাশাপাশি বই, সিনেমার কল্যাণে দার্জিলিংয়ের প্রতি অন্যরকম এক টান আমাদের। আমার যেমন দার্জিলিংয়ের প্রতি ভালোবাসা ও দার্জিলিংকে চেনা শুরু সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজের ‘দার্জিলিং জমজমাট’ বইটি দিয়ে। তারপর অঞ্জন দত্তের গানেসহ আরও কত ভাবে যে পেলাম দার্জিলিং আর কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। তাই ২০১৭-তে প্রথমবার ভারত সফরে ওটি, শিমলা, মসুরির মতো লোভনীয় হিল স্টেশনগুলোকে বাদ দিয়ে দার্জিলিংকেই বেছে নেই। আজ পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দেব দার্জিলিংয়ের জনপ্রিয় কিছু ভ্রমণগন্তব্যের সঙ্গে। 

টাইগার হিল
টাইগার হিল থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার রোমাঞ্চই আলাদা। শহর থেকে টাইগার হিলের দূরত্ব এগারো-বারো কিলোমিটার। সাগর সমতল থেকে উচ্চতা ২৫৯০ মিটার। কাঞ্চনজঙ্ঘার দর্শন পেতে অন্ধকার থাকতে থাকতে বেরিয়ে পড়তে হবে আপনাকে। আমরাও তাই করেছিলাম। গাড়িতে মিনিট চল্লিশেক লাগবে পাহাড়ি রাস্তায় পাহাড়চূড়ার কাছাকাছি পৌঁছাতে। গাড়ি থেকে নেমে কিছুটা পথ হেঁটে যেতে হবে।

ভিড়-বাট্টায় ভালো একটা জায়গা পাওয়াটা মুশকিল হবে। আমরা যখন গিয়েছিলাম শুরুতে মেঘের ছিটেফোঁটা না থাকলেও আকাশ ফরসা হতে শুরু করার আগেই চারপাশে বিশেষ করে ডানে উঁচু সব মেঘের পাহাড় সত্যিকারের পাহাড়দের ঢেকে দিতে লাগল। কতক্ষণ পর বলতে পারব না, হঠাৎ একজনের চিৎকারে চোখ গেল সোজাসুজি সামনে। মেঘের ফাঁক গলে দিগন্তে দেখা যাচ্ছে উঁচু এক পর্বত, মাথার শ্বেতশুভ্র টুপি, সূর্যের কাঁচা রোদে সোনা রং ধারণ করেছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা। মিনিট পনেরো অপলক চোখে দেখলাম তার রূপ। তবে অদ্ভুত সুন্দর পাহাড়টি তার একটা পাশের অবগুণ্ঠনই কেবল মেলে আমাদের সামনে। তবে ভাগ্য যাদের ভালো তাঁরা টাইগার হিল থেকে আরও চমৎকারভাবে উপভোগ করতে পারবেন কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ। 

একটি তথ্য দিয়ে রাখছি, ১৮৫২ সাল পর্যন্ত ধারণা করা হতো এটিই পৃথিবীর উচ্চতম চূড়া। পরে নিশ্চিত হয় ৮৫৮৬ মিটার উঁচু কাঞ্চনজঙ্ঘার অবস্থান তিনে। 

দার্জিলিংয়ের বিখ্যাত টয় ট্রেন।দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে
দার্জিলিংয়ে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের কাছে বড় আকর্ষণ দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে। এতে চলা ট্রেনগুলো অবশ্য টয় ট্রেন নামেই পরিচিত। দার্জিলিং থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত চলে যাওয়া দুই ফুট চওড়া ন্যারো গেজ লাইন এটি। ১৮৭৯ থেকে ১৮৮১ সালের মধ্যে তৈরি হয় এটি। ১৯৯৯ সালে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করে ইউনেসকো। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে টয় ট্রেনে দার্জিলিং ভ্রমণের সময় দুই পাশের পাহাড়, জঙ্গলের অসাধারণ দৃশ্য উপভোগের সুযোগ মিলবে। আবার দার্জিলিং রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঘুম পর্যন্ত টয় ট্রেন ভ্রমণের সুযোগও আছে পর্যটকদের জন্য। 

ম্যাল রোড
দার্জিলিংয়ের বড় আকর্ষণ বলতে পারেন ম্যাল বা ম্যাল রোডকে। সূর্যাস্তের ঠিক আগে ম্যালের দিকে রওনা দিয়েছিলাম। যারা জানেন না তাদের বলছি খোলামেলা একটা চত্বরমতো জায়গা এই ম্যাল। বলতে পারেন দার্জিলিংয়ের প্রতীকে পরিণত হয়েছে এটি। গন্তব্যে পৌঁছানোর ঠিক আগেই হয়তো পথের ঢালে দেখা পেয়ে যাবেন হাসি-খুশি এক নারীর, দুটো আলাদা হট পটে ভেজিটেবল ও চিকেন মেমো বিক্রি করছেন গরম গরম। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আচ্ছাসে মেমো খাবেন, আর তারিফ করবেন ভারি সুস্বাদু মোমোর। মানে আমরা তাঁর দেখা পেয়েছিলাম, মোমোও খেয়েছিলাম।

বইয়ে ম্যালের বর্ণনা পড়েছি বহুবার, সিনেমায় দেখেছিও। সেবার চর্মচক্ষে দেখলাম, চারটা পথ এসে এক হয়েছে এখানে। আসলে ম্যাল হলে চৌরাস্তা। একপাশে কিওরিও, রেস্ট্যুরেন্ট, চা পাতার বনেদি সব দোকান। বসার ব্যবস্থা আছে চত্বরের এক পাশে। ম্যাল থেকেও ভোরে অনেক সময়ই কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মেলে। 

পদ্মজা নাইডু জুওলজিক্যাল ন্যাশনাল পার্কে লাল পান্ডাপদ্মজা নাইডু জুওলজিক্যাল ন্যাশনাল পার্কে
ভারতের উচ্চতম চিড়িয়াখানাটি সাগর সমতল থেকে গড়ে ৭০০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। সার্কভক্ত দেশগুলোর পর্যটকদের জন্য টিকিটে ছাড় আছে। ভেতরে ঢুকে গোর্খাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ছবি তুলতে পারেন।

বড় বড় বেষ্টনীর মধ্যে রাখা বুনো জন্তুগুলো। হিমালয়ের উঁচু এলাকায় বাস করা নানান দুর্লভ প্রাণীদের সংরক্ষণ করা হয়েছে। তুষার চিতা, তিব্বতি নেকড়ে, লাল পান্ডা দেখছিলাম প্রথমবারের মতো মুগ্ধ বিস্ময়ে। এখানে নাকি তুষার চিতার সফল ব্রিডিংও হয়েছে। জঙ্গলে কালো চিতা দেখার সাধ অনেক দিনের, এখানে বন্দী অবস্থায় দেখার সুযোগ মিলে। এই চিড়িয়াখানার ভেতরের পথ ধরেই চলে যাই হিমালয়ান মাউন্টেরিয়ান ইন্সটিটিউটে। 

হিমালয়ান মাউন্টেরিয়ান ইনস্টিটিউট
হিমালয়ান মাউন্টেরিয়ান ইনস্টিটিউটকে (এইচএমআই) বলা হয় দুনিয়ার পর্বতারোহীদের তীর্থস্থান। আমরা যখন গিয়েছিলাম সংস্কার কাজ চলছে দালানগুলোর। ওখানকার রেস্তোঁরাটি মশহুর। হালকা নাশতা সারতে পারেন চত্বরে বসে চারপাশের দৃশ্য দেখতে দেখতে।

জাদুঘরটিতে পর্বতারোহণের কাজে ব্যবহার করা নানা ধরনের সামগ্রী প্রদর্শন করা হয়। পর্বতারোহীদের নানান স্মারকও সাজানো আছে এখানে। এখানে পর্বতারোহণ নিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে চায় এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বোর্ডিং স্কুলের ব্যবস্থাও আছে। এইচএমআইয়ে ফিল্ড ট্রেইনিং বিভাগের প্রথম পরিচালক ছিলেন তেনজিং নোরগে। 

তেনজিং রকতেনজিং রক
হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট যাওয়ার পথে ছোট্ট একটা যাত্রা বিরতি নেবেন। ওখানে দুই পাশে দুটো বিশাল পাথর। বামের পাথরটি তেনজিং নোরগের নামে তেনজিং রক। আর পাহাড়ের গায়ে ডানেরটা গমবু রক। তেনজিংয়ের ভাতিজা নাওয়াং গমবুর নামে এর নাম, প্রথম ব্যক্তি হিসাবে দু-বার এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন গমবু। এই অতিকায় পাথরদুটোতে চড়ে প্রশিক্ষণ চলে হিমালয়ান মাউন্টেরিয়ান ইনস্টিটিউটের পর্বতারোহীদের। 

হ্যাপি ভ্যালি চা বাগানহ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট
হ্যাপি ভ্যালি টি স্টেট, প্রতিষ্ঠা করেন ব্রিটিশ প্ল্যান্টাররা। ৪৩৭ একরের চা বাগানটি সাগর সমতল থেকে ২ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। সিলেট, চট্টগ্রামে চা বাগান দেখেছি বিস্তর, তবে এর বিশেষত্ব উচ্চতায়, পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু চা বাগানগুলোর একটি এটি। এখানে প্রায় এক শ বছরের পুরোনো কিছু চা ঝাড় আছে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ চা বাগানেই এখন আর চিতা বাঘদের দেখা না গেলেও এই বাগানে হঠাৎ হঠাৎ হাজির হয় অদ্ভুত সুন্দর এই প্রাণীটি, অবশ্য ভারতের অনেক বাগানের বেলাতেই কথাটা খাটে। 

বাতাসিয়া লুপে ওয়ার মেমোরিয়ালবাতাসিয়া লুপ
বেশ অনেকটা ঢাল বেয়ে নেমে বিখ্যাত টয় ট্রেন চক্রাকার একটি পথে ঘুরে বলে এই নাম। একটা সুড়ঙ্গ পথও পেরোতে হয় এখানে ট্রেনকে। তাই এই জায়গা থেকে ট্রেনের কুউউ ঝিক ঝিক শব্দে চলা দেখা ভারি আনন্দময় অভিজ্ঞতা। তেমনি গোটা জায়গাটির সবুজ লন, নানান ধরনের গাছগাছালি মিলিয়ে বাগানের মতো। বাগানটির আকার ৫০ হাজার বর্গফুট। উঁচু থেকে চারপাশের পাহাড়সারির দৃশ্য আর গোটা দার্জিলিং দেখে মুগ্ধ হবেন। এখান থেকেও নাকি কাঞ্চনজঙ্ঘাসহ হিমালয়ের চূড়াগুলোর ঠাহর পাওয়া যায় কখনো-সখনো। গোর্খা সেনাদের সম্মান জানিয়ে বানানো ওয়ার মেমোরিয়ালটাও দেখবেন ঘুরে ঘুরে। 

দার্জিলিং রোপওয়ে
দার্জিলিংয়ে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের জন্য বড় আকর্ষণ রোপওয়ের বা ক্যাবল কার। আমরা যখন গিয়েছিলাম তখন অবশ্য এটি সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল। এতে চড়ে রঙ্গিত নদী ও রঙ্গিত উপত্যকার অসাধারণ দৃশ্য উপভোগের সুযোগ মেলে। মোটামুটি ৪৫ মিনিট ভ্রমণের সময় চা বাগান ও আশপাশের জঙ্গলও নজর কাড়বে। 

ঘুম মনাস্ট্রি
বাতাসিয়া লুপের ধারেই ঘুম মনাস্ট্রি। এটিই দার্জিলিংয়ের প্রথম তিব্বতি গুম্ফা বা বৌদ্ধ মন্দির। ১৮৭৫ সালের দিকে তৈরি করা হয় ঘুম মনাস্ট্রি। আমরা এখানে বুদ্ধ মূর্তি দেখি, গোটা গুম্ফা ঘুরে দেখি। বের হয়ে কয়েকটা খুদে প্রেয়ার হুইল আর কিওরিও কিনেছিলাম সামনে বসা এক নারী দোকানদারের কাছ থেকে।

রক গার্ডেনের জলপ্রপাতরক গার্ডেন
শহর থেকে রক গার্ডেনের দূরত্ব দশ কিলোমিটার। একজন নেপালি চালককে ঠিক করেছিলাম আমরা। ঘুমে পৌঁছার আগেই ডানে ঢালু এক পথ ধরে নামতে শুরু করে গাড়ি। পথ ভয়ানক খাড়া, আর একটু পর পর সে কী বাঁক। এক দিকে পাহাড়ের গায়ে গাছপালা, আরেক দিকে খাদ। মাঝে মাঝে পাথরের স্ল্যাব বসানো হয়েছে রাস্তার কিনারে। কোনো ভাবে ভারসাম্য হারালে এই স্ল্যাব আটকানোর জন্য মোটেই যথেষ্ট নয়। তবে পাহাড়ের গায়ে চা বাগান, গাছপালা দেখতে দেখতে চড়াই-ওতরাই উপভোগই করবেন।

পাকদণ্ডী এই পথ শেষে যখন রক গার্ডেনে পৌঁছাবেন তখন খুশি হয়ে উঠবেন। বড় একটা জায়গা নিয়ে পাহাড়ের মধ্যে একটা বাগানের মতো। এখানে সেখানে হাতি, বানরসহ নানা প্রাণীর মূর্তি, বসার ব্যবস্থা। রেলিং দেওয়া আঁকাবাঁকা পথ ধরে এগিয়ে যেতে হয়। রক গার্ডেনের সেরা আকর্ষণ চুন্নু নামের আশ্চর্য সুন্দর এক জলপ্রপাত। প্রাকৃতিক জলপ্রপাতটিকে নিয়ন্ত্রণ করে পাথরের মাঝখান দিয়ে ধাপে ধাপে প্রবাহিত করা হয়েছে। 

গঙ্গামায়া পার্কগঙ্গামায়া পার্ক
রক গার্ডেন থেকে গঙ্গামায়া যাওয়ার পথটা ঢালু, এবড়োখেবড়ো, তবে সুন্দর। স্থানীয়দের কয়েকটা বসতি পড়বে। সুন্দর সুন্দর বাড়ি, ক্যাফে, হোম স্টেগুলো নজর কাড়বে। এক সময় পৌঁছাবেন গাছপালা ঘেরা একটা জায়গায়। পার্কের বাম পাশে পাথরের বুকে তর তর করে বয়ে চলেছে, মিষ্টি একটা জলের ধারা। সুন্দর সুন্দর ফুল ফুটে থাকতে দেখবেন। নানা জাতের পাখির কল-কাকলিতে মুখর থাকে জায়গাটি। 

অবজারভেটরি হিল
দার্জিলিংয়ের একটি বিখ্যাত ভিউ পয়েন্ট ও পর্যটকদের পছন্দের জায়গা অবজারভেটরি হিল। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মেলে। সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদার বইয়ে অবজারভেটরি হিল থেকেও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার বর্ণনা দেওয়া হয়েছিল, ওখান থেকেও সূর্যোদয়টা দেখতে পারেন! 
 
সূত্র: ট্রান্স ইন্ডিয়া ট্রাভেল ডট কম, নোমাডিক উইকএন্ডস ডট কম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পৌষের হাওয়া লেগে ফাটছে গোড়ালি? সমাধান আছে ঘরেই

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সাধারণত যাঁদের বয়স ত্রিশ বা তার বেশি, তাঁরা গোড়ালি ফাটার সমস্যায় বেশি ভোগেন। ছবি: পেক্সেলস
সাধারণত যাঁদের বয়স ত্রিশ বা তার বেশি, তাঁরা গোড়ালি ফাটার সমস্যায় বেশি ভোগেন। ছবি: পেক্সেলস

শীতের দিনে ত্বকের সাধারণ সমস্যার একটি হলো ফাটা গোড়ালি। সাধারণত যাঁদের বয়স ত্রিশ বা তার বেশি, তাঁরা ত্বকের অতিরিক্ত মরা কোষ ও ফাটা গোড়ালির সমস্যায় বেশি ভোগেন। ফলে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগেই হয়তো পারলার থেকে পেডিকিউর করে এসেছেন, কিন্তু সপ্তাহ পার হতে না হতেই আবার পায়ের গোড়ালির ত্বক পুরু হয়ে শক্ত হয়ে গেছে, খানিকটা ফেটেও যেতে পারে। তাই সাবধান হতে হবে আগে থেকে। এই শীতে ফাটা গোড়ালির সমস্যা এড়াতে হলে নিয়মিত যত্নের বাইরে কোনো দাওয়াই নেই। ফাটা গোড়ালি সারানোর জন্য বিশেষ লোশন বা ক্রিমের খোঁজ না করে ভরসা রাখতে পারেন কিছু ঘরোয়া টোটকায়। এসব উপাদান নিয়মিত ব্যবহারে সুফল মিলবে।

ময়শ্চারাইজেশন আসল চিকিৎসা

গোড়ালি শুষ্ক হয়ে এলেই ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। ছবি: পেক্সেলস
গোড়ালি শুষ্ক হয়ে এলেই ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। ছবি: পেক্সেলস

ত্বক ও গোড়ালি ফাটার মূল কারণ শুষ্কতা। শীতের হাওয়া লেগে আমাদের ত্বক আর্দ্রতা হারায় দ্রুত। তাই ত্বকের হাইড্রেশনে জোর দিলে ফাটা গোড়ালি থেকে মুক্তি মিলবে সহজে। এর জন্য গোড়ালি শুষ্ক হয়ে এলেই ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। সম্ভব হলে কয়েক লেয়ারে ময়শ্চারাইজার মেখে তারপর সুতির মোজা পরুন। এই যেমন প্রথমে গ্লিসারিন, তারপর অলিভ অয়েল এবং সবশেষে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষার পর সুতি মোজা পরুন। তাতে পায়ের ত্বক কোমল থাকবে আর গোড়ালি ফাটাও রোধ করা যাবে। এই কাজে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ হিল বামে ভরসা রাখতে পারেন।

ফুট স্ক্রাব জরুরি

ফাটা গোড়ালির ত্বক অপেক্ষাকৃত বেশি শুষ্ক ও পুরু হয়। ফলে হাঁটার সময় বেশি চাপ পড়লে গোড়ালি আরও ফাটে। তাই নিয়মিত ফুট স্ক্রাব করতে হবে। তাহলে গোড়ালি ফাটার সমস্যা ধীরে ধীরে কমবে। ফুট স্ক্রাব করতে এক কাপ লবণ, এক কাপ চিনি, দুই টেবিল চামচ মধু, সামান্য নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে পায়ে স্ক্রাব করুন। ম্যাসাজ শেষে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে সাধারণ তাপমাত্রার পানিতে পা ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া আধা কাপ লবণ, এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং ৪ থেকে ৫ ফোঁটা পিপারমিন্ট অয়েল একটি কাচের পাত্রে একসঙ্গে মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে রেখে দিন। এই স্ক্রাব সপ্তাহে দুদিন পায়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানিতে পা ধুয়ে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

২০ মিনিটের পুটবাথ

প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরে সরাসরি গোসলে না ঢুকে একটি বাটিতে হালকা গরম পানি নিয়ে তাতে হালকা কোনো বডি ওয়াশ ও অল্প পরিমাণ লবণ মিশিয়ে নিন। এই পানিতে কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েলও যোগ করতে পারেন। এবার এতে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। এতে গোড়ালির ত্বক কিছুটা নরম হয়ে আসবে। তারপর ঝামা, লুফা বা ফুট স্ক্রাবার দিয়ে গোড়ালি ঘষে নিন। তারপর গোসল সেরে পায়ে ভারী ময়শ্চারাইজার লাগান। সবশেষে পায়ে মোজা পরতে ভুলবেন না যেন!

বিশেষ ভাবে ফোচানো পানিতে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। ছবি: পেক্সেলস
বিশেষ ভাবে ফোচানো পানিতে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন। ছবি: পেক্সেলস

ক্ষতি সারাবে টি ট্রি অয়েল

অ্য়ান্টিমাইক্রোবিয়াল টি ট্রি অয়েল গোড়ালি ফাটা সারাতে খুব কার্যকর। তবে সরাসরি টি ট্রি অয়েল ত্বকে ব্যবহার করবেন না। এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে তারপর ত্বকে ব্যবহার করুন। এ ক্ষেত্রে পরিমাণটা বোঝা জরুরি। একটি কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ অলিভ অয়েল নিন। তাতে ৬ থেকে ৭ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার হালকা গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখার পর এই মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে ফুট ম্যাসাজ করে ফেলুন। এই ঘরোয়া টোটকাতে ফাটা গোড়ালি ধীরে ধীরে ভালো হয়ে উঠবে।

প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে মধু

অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণসমৃদ্ধ মধু যেকোনো ত্বকের ক্ষত ও ফেটে যাওয়া অংশ সারিয়ে তুলতে সাহায্য় করে; পাশাপাশি ত্বক আর্দ্র ও মসৃণ রাখতেও সহায়ক। তাই ফাটা গোড়ালি সারাতে বাড়তি কিছু করতে না চাইলে মধুর ওপর ভরসা রাখতে পারেন। সিনেমা দেখতে বসার আগে পায়ের গোড়ালিতে মধু মেখে তারপর টিভির সামনে পা এলিয়ে বসুন। ২ থেকে ৩ ঘণ্টায় খুব ভালো কাজ করবে এই মধু। নিয়মিত করলে ফাটা গোড়ালি সেরে উঠবে খুব দ্রুত।

সূত্র: বি বিউটিফুল, নেটমেডস ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে সব ধরনের চুলের জন্য ৫টি সেরা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
চুলের সার্বিক সুস্থতার জন্য এই ঋতুতে কিছু ঘরোয়া ডিপ কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে পুরো শীতে চুল থাকবে নরম, মসৃণ ও জেল্লাদার। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
চুলের সার্বিক সুস্থতার জন্য এই ঋতুতে কিছু ঘরোয়া ডিপ কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। এতে পুরো শীতে চুল থাকবে নরম, মসৃণ ও জেল্লাদার। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

শীতকাল আমাদের জন্য উদ্‌যাপনের ঋতু হলেও চুলের জন্য আতঙ্কের। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুলে নির্জীব ভাব আসার পাশাপাশি আগা ফাটার সমস্যাও বাড়তে থাকে। তাই এই ঋতুতে চুলের ডিপ কন্ডিশনিং রীতিনীতি মেনে চলা অপরিহার্য। তবে রোজ শ্যাম্পু করার পর বোতলজাত যে কন্ডিশনার আমরা ব্যবহার করি; সেগুলোর ব্যবহার করলেই যে চুল কোমল, সুন্দর ও মসৃণ থাকবে, এ কথা ভাবাটা বোকামি। চুলের সার্বিক সুস্থতার জন্য এই ঋতুতে কিছু ঘরোয়া ডিপ কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করেও চুলে ব্যবহার করতে হবে। এতে পুরো শীতে চুল থাকবে নরম, মসৃণ ও জেল্লাদার। দেখে নিন, কী কী ঘরোয়ার উপকরণ দিয়ে চুলের জন্য ডিপ কন্ডিশনিং প্যাক তৈরি করবেন।

পাকা কলার প্যাক

কলা খুব ভালো ময়শ্চারাইজিং উপাদান। এটি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাওয়া চুল নিরাময়ে সহায়ক। কলা ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, প্রোটিন এবং অন্যান্য পুষ্টিতে পরিপূর্ণ। ফলে এটি মাথার ত্বক ও চুলে গভীরভাবে পুষ্টি জোগায়। কেবল একটি পাকা কলা বেটে তার সঙ্গে মধু, ডিম ও সামান্য দুধ মিশিয়ে নিন। এরপর এই পেস্ট মাথার ত্বক এবং পুরো চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। তারপর ভালো কোনো শ্যাম্পু দিয়ে চুল সুন্দর করে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এই প্যাক ব্যবহারে চুল খুব দ্রুত ঝলমলে হয়।

দইয়ের জাদুকরি প্যাক

দই মাথার ত্বক পরিষ্কার করে, চুল মসৃণ করে মাথার ত্বকে চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে। ছবি: পেক্সেলস
দই মাথার ত্বক পরিষ্কার করে, চুল মসৃণ করে মাথার ত্বকে চুলকানি দূর করতে সহায়তা করে। ছবি: পেক্সেলস

প্রচুর প্রোটিন ও ল্যাকটিক অ্যাসিডে ভরা দই আমাদের চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি মাথার ত্বক পরিষ্কার করে, চুল মসৃণ করে মাথার ত্বকে চুলকানি দূর করতেও সহায়ক। টক দই, কলা, মধু ও জলপাই তেল দিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই প্যাক মাথার ত্বকে লাগিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। সবশেষে ভালো মানের শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে এটিকে বলা যেতে পারে জাদুকরি প্যাক। তবে যাঁদের ঠান্ডা লাগে, তাঁরা ৩০ মিনিটের পরিবর্তে ১০ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে নিতে পারেন।

চুলের তরতাজা ভাব ফেরাবে অ্যালোভেরা

অ্যালোভেরা মাথার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার এবং চুল বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ আপনার চুলে লাগিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু করে চুলে রেগুলার কন্ডিশনার মাখুন। নিজেই টের পাবেন চুলের তরতাজা ভাব। সপ্তাহে দুবার এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন।

অ্যালোভেরা জেল চুল বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। ছবি: পেক্সেলস
অ্যালোভেরা জেল চুল বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে। ছবি: পেক্সেলস

তৈলাক্ত চুলের সেরা কন্ডিশনার আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগার অ্যাসিটিক অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস। এটি তৈলাক্ত মাথার ত্বক, খুশকি এবং কুঁকড়ে যাওয়া চুলের জন্য চমৎকার সমাধান। এটি মাথার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার এবং ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এর জন্য চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর ২ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এক মগ পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ মাথার ত্বক ও চুলে ঢেলে দিন। ৫ মিনিট ধরে আপনার মাথার ত্বক ম্যাসাজ করুন। হালকা করে চুল আবার শ্যাম্পু করে এরপর কন্ডিশনার মাখুন। সবশেষে সুন্দর করে চুল ধুয়ে নিন।

সহজ সমাধান নারকেল তেল

আমরা সবাই নারকেল তেলের বিস্ময়কর গুণাবলির কথা শুনে বড় হয়েছি। এই তেল যে চুলের যত্নে জাদুকরি উপাদান—এ কথা একেবারে মিথ্য়া নয়। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে চুল করে তোলে নরম ও মসৃণ। নারকেল তেল দিয়ে প্রাকৃতিক কন্ডিশনার তৈরি করতে, ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রসের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার সময় এটি লাগান। ২০ মিনিট রেখে দিন এবং তারপর হালকা গরম পানি ও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৬
আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

মেষ

সঞ্চয় করার দক্ষতা নিয়ে আজ লোকে আপনার প্রশংসা করবে। তবে সাবধান! কিপটেমি আর সঞ্চয়ের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। বন্ধুদের ট্রিট দেওয়ার সময় হুট করে ‘মানিব্যাগ ভুলে রেখে এসেছি’ বা ‘আমার নেট কাজ করছে না’ বলার পুরোনো কৌশলটি আজ বন্ধুদের কাছে ধরা পড়ে যেতে পারে। পরিবারে শান্তি বজায় থাকবে, যদি আপনি রিমোটের দখল ছেড়ে দেন। মানিব্যাগে সব সময় কিছু খুচরা টাকা রাখুন, ইজ্জত বাঁচতে পারে।

বৃষ

স্ত্রী বা পরিবারের কারোর মধুর ব্যবহারে আজ আপনি মুগ্ধ হতে পারেন, তবে এর পেছনে কোনো দামি শাড়ি, গয়না বা অনলাইন শপিংয়ের আবদার লুকিয়ে আছে কি না, তা ‘শার্লক হোমস’ স্টাইলে যাচাই করে নিন। সঞ্চয়ের জন্য দিনটি ভালো, কিন্তু লটারি জেতার আশায় অফিসের কলিগের কাছে ধার চাইবেন না। আবেগের চেয়ে আজ পেটভরা খাবারকে বেশি গুরুত্ব দিন। মিষ্টি কথায় ভুলে যাওয়ার আগে ব্যাংকের ব্যালেন্স চেক করুন।

মিথুন

মনের কথা বাড়ির লোককে বলে ফেলার জন্য আজ দারুণ দিন। তবে অফিসের বসের নামে কোনো ‘গোপন ছড়া’ বা ‘নিকনেম’ আবার ভুল করে বাড়ির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দেবেন না! পুরোনো অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে আবেগময় হয়ে পড়তে পারেন, সঙ্গে গামছা বা টিস্যু বক্স রাখুন। মেসেজ পাঠানোর আগে ‘রিসিভার’ কে, তা দুবার চেক করুন।

কর্কট

কারও কাছ থেকে আজ ধার নেবেন না, আর কাউকে দেবেনও না। কারণ, আজ যাকে টাকা দেবেন, তাকে খুঁজে পেতে ভবিষ্যতে আপনাকে ইন্টারপোল নিয়োগ করতে হতে পারে। সন্ধ্যার পর শরীর বেশ সতেজ থাকবে, চাইলে এক কাপ কড়া চা নিয়ে পাড়ার মোড়ে আড্ডা জমাতে পারেন। তবে পলিটিকস নিয়ে জ্ঞান দিতে যাবেন না। টাকা চাইলে ‘মানিব্যাগটা ধুতে দিয়েছি’ বলে এড়িয়ে যান।

সিংহ

বড় কোনো অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা আছে। তবে সেই টাকা হাতে আসার আগেই অনলাইনে আইফোন বা দামি গ্যাজেটের রিভিউ দেখা শুরু করবেন না। অতিরিক্ত রাগ আপনার কর্মক্ষেত্রে ক্ষতি করতে পারে। বসের ঝাড়ি খেয়েও আজ ‘মোনালিসা হাসি’ বজায় রাখার চেষ্টা করুন, এতে বস কনফিউজড হয়ে ঝাড়ি থামিয়ে দেবে। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাসার প্র্যাকটিস করুন।

কন্যা

বাড়িতে যদি অবিবাহিত কেউ থাকে, তবে আজ তার বিয়ের আলোচনা তুঙ্গে উঠতে পারে। বিয়ের মেনুতে বিরিয়ানি থাকবে কি না, তা নিয়ে আজ থেকেই তর্ক শুরু হতে পারে। খাওয়ার অভ্যাসে বদল আনুন; রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়ার আগে বিক্রেতার হাত ধোয়া কি না, তা একটু জুম করে দেখে নিন। প্রবীণদের কথা শুনুন, মাঝেমধ্যে তারা ইন্টারনেটের চেয়েও ভালো সমাধান দেন! ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলবেন, পেটের অবস্থা ভালো নয়।

তুলা

হয়তো ভালো মনেই কাউকে উপদেশ দেবেন, কিন্তু লোকে সেটাকে পার্সোনাল অ্যাটাক হিসেবে ধরে নেবে। আজ আপনার মিষ্টি কথা মানুষের কানে ‘নিমপাতার জুস’ মনে হতে পারে। অফিসে আপনার নামে কেউ কানকথা দিতে পারে, কিন্তু উল্টো তাদের মিষ্টি খাইয়ে কনফিউজ করে দিন। চুপ থাকাই আজ আপনার সেরা অস্ত্র।

বৃশ্চিক

পাড়ার দুই খালা বা চাচির ঝগড়ায় বিচার করতে যাবেন না। অন্যের ঝামেলা মেটাতে গিয়ে নিজেই ‘ভিলেন’ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল হতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে যুক্তিসংগত কথা বলুন। আজ আপনার কোনো পুরোনো শখ (যেমন গিটার বাজানো বা বাথরুমে গান গাওয়া) আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। অন্যের ব্যাপারে বাঁ হাত ঢোকাবেন না।

ধনু

আজ আপনার মধ্যে আধুনিক চিন্তা কাজ করবে। অফিসের কাজে এআই ব্যবহার করে বসকে চমকে দিতে পারেন; তবে সাবধান, যেন ধরা না পড়েন! সৃজনশীল কাজে সাফল্য আসবে। ভ্রমণে যাওয়ার আগে ব্যাগে ছাতা নিতে ভুলবেন না। কারণ, আবহাওয়া অফিস রোদ বললেও আজ বৃষ্টির সঙ্গে আপনার মোলাকাত হতে পারে। ল্যাপটপ চার্জ দিয়ে রাখুন।

মকর

আপনার পকেটে আজ অদৃশ্য ফুটো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিশেষ করে শপিং মলে গেলে ক্রেডিট কার্ডটি বাসায় ফেলে যান। বিরোধীরা আজ আপনার ছোট কোনো ব্যাকরণগত ভুলকেও বড় করে দেখাতে পারে। তাই কথা বলার আগে মুখে ‘কাল্পনিক ফিল্টার’ ব্যবহার করুন। ‘সুলভ মূল্যে’ লেখা বোর্ড দেখলে উল্টো দিকে হাঁটুন।

কুম্ভ

দিনটি আপনার জন্য বেশ শুভ। নতুন কারোর সঙ্গে দেখা হতে পারে যে আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে (সেটা বিমা কোম্পানি বা এমএলএম মার্কেটিংয়ের লোকও হতে পারে, সাবধান!)। রাতে ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যদি না মশার দল আপনার কানে গান গাওয়ার কনসার্ট আয়োজন করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিংয়ের লোকদের থেকে দূরে থাকুন।

মীন

আজ সারা দিন অফিসের বা বাড়ির কাজে এতটাই ব্যস্ত থাকবেন যে নিজের আয়নায় মুখ দেখার সময় পাবেন না। তবে এই ব্যস্ততার শেষে একটা মিষ্টি ক্লান্তি আসবে। সন্তানের বায়না মেটাতে গিয়ে পকেটে টান পড়তে পারে। শরীরের প্রতি যত্ন নিন, লিফট থাকতে সিঁড়ি দিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে যাবেন না। দুপুরের খাবারটা ঠিক সময়ে খেয়ে নিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতের সকাল শুরু হোক সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর স্যুপ দিয়ে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৭
চীনের লানঝাউ বিফ নুডলস স‍্যুপ। ছবি: উইকিপিডিয়া
চীনের লানঝাউ বিফ নুডলস স‍্যুপ। ছবি: উইকিপিডিয়া

আমাদের দেশে ধীরে ধীরে স্যুপ খাওয়াটা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মূলত চায়নিজ রেস্তোরাঁগুলোর কারণে। সুস্বাদু ও বিচিত্র নুডলস স্যুপ পাওয়া যায় এখন ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের রেস্তোরাঁগুলোতে। ভাবার কোনো কারণ নেই, স্যুপ শুধু রেস্তোরাঁয় গিয়েই খেতে হবে। বাড়িতেও তৈরি করতে পারেন মজাদার বিভিন্ন স্যুপ। কিন্তু মনে রাখা চাই, মাংস দিয়ে কিছু স্যুপ রান্না করতে গেলে খানিক সময় লাগবে। তারপরই উপভোগ করা যাবে মজাদার স্যুপ।

আপনাদের জন্য দুটি স্যুপের রেসিপি রইল।

লানঝাউ বিফ নুডলস স্যুপ, চীন

চীনে নুডলস দিয়ে তৈরি খাবার ও চায়নিজ নুডলস স্যুপ রেসিপির কোনো ঘাটতি নেই। বলা হয়, এর বৈচিত্র্য চীনের ভূগোলের মতোই বিশাল এবং প্রতিটি অত্যন্ত সুস্বাদু। কিন্তু অসংখ্য নুডলস ডিশের, বিশেষ করে নুডলস স্যুপের মধ্যে যেটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, তা হলো লানঝাউ বিফ নুডলস স্যুপ।

সুস্বাদু, স্বচ্ছ ঝোল, পাতলা করে কাটা গরুর মাংস, নরম চায়নিজ মুলার ফালি, প্রচুর ধনেপাতা ও পেঁয়াজ কলি, গাঢ় লাল মরিচের তেল এবং হাতে তৈরি নুডলস দিয়ে রান্না করা হয় লানঝাউ বিফ নুডলস স্যুপ।

উপকরণ

৪ পাউন্ড গরুর মাংস, ১ কেজি গরুর হাঁটুর মাংস, অর্ধেক ভাজা মুরগি, ১০ কাপ পানি, ১ লিটার চিকেন স্টক, স্বাদ অনুযায়ী লবণ, ছোট চায়নিজ মুলার অর্ধেক, ১ পাউন্ড তাজা বা শুকনো সাদা নুডলস, গরম মরিচের তেল, পেঁয়াজ কলি, ধনেপাতা।

মসলা মিশ্রণের জন্য

৭টি তারকা মৌরি, ১২টি লবঙ্গ, ১টি দারুচিনি, ৫টি তেজপাতা, ৬টি বড় স্যান্ড জিঞ্জারের টুকরো, দেড় চা-চামচ মৌরি বীজ, ১ চা-চামচ জিরা বীজ, ২ চা-চামচ সিচুয়ান গোলমরিচ, দেড় চা-চামচ সাদা গোলমরিচ, ৫টি লিকোরিস মূলের টুকরো, ৩টি শুকনো কমলার খোসা, ১টি কালো এলাচি।

গরম মরিচের তেলের জন্য

এক কাপের ৪ ভাগের ৩ ভাগ তেল, ২টি তারকা মৌরি, ছোট দারুচিনির অর্ধেক, আধা চা-চামচ সিচুয়ান গোলমরিচ, ৩ টেবিল চামচ লাল মরিচ গুঁড়া, ১ চা-চামচ লবণ, সামান্য চিনি।

প্রস্তুত প্রণালি

মাংসের হাড়গুলো ধুয়ে নিন। ৪০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় বেকিং শিটে ৪৫ মিনিট বেক করে নিন। একটি বড় পাত্রে পানি ফুটিয়ে তাতে গরুর হাঁটুর মাংস এবং মুরগির মাংস যোগ করুন। সবকিছু আবার ফুটতে দিন। একবার ফুটে উঠলে হাঁটুর মাংস এবং মুরগি বের করে নিয়ে পানি ফেলে দিন এবং পাত্রটি পরিষ্কার করে নিন।

এরপর গরুর হাঁটুর মাংস এবং মুরগি আবার পাত্রে দিন। সঙ্গে বেক করে নেওয়া হাড়। এর সঙ্গে আরও ১০ কাপ পানি এবং ৪ কাপ চিকেন স্টক যোগ করুন। মসলার সব উপকরণ একত্র করে একটি পাতলা কাপড়ে পুঁটলি করে শক্তভাবে বেঁধে মসলার মিশ্রণ তৈরি করুন। এটি পাত্রে রেখে দিন। এরপর পাত্রে পরিমাণমতো লবণ দিয়ে সবকিছু ফুটতে দিন।

একবার ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে দিয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে সেদ্ধ হতে দিন। ২ ঘণ্টা পরে গরুর হাঁটুর মাংস বের করে সরিয়ে রাখুন। বাকি অংশে কাটা মুলা যোগ করে আরও ঘণ্টাখানেক সেদ্ধ হতে দিন। তারপর মসলার ব্যাগ, মুরগির হাড় বের করে ফেলে দিন। ঝোলে লবণের স্বাদ নিন এবং প্রয়োজন হলে মসলা সমন্বয় করুন। এতে স্যুপের বেজ তৈরি হয়ে যাবে।

উপকরণগুলো সেদ্ধ হওয়ার সময় মরিচের তেল তৈরি করে ফেলুন। একটি ছোট পাত্রে তেল, তারকা মৌরি, দারুচিনি এবং সিচুয়ান গোলমরিচ নিন। খুব কম আঁচে সবকিছু ধীরে ধীরে ১৫ মিনিট একসঙ্গে ভুনে নিন। একটি ছাঁকনি চামচ দিয়ে মসলাগুলো তেল থেকে আলাদা করে নিন। এরপর প্রায় ৫ মিনিট তেল ঠান্ডা করে তাতে মরিচগুঁড়া যোগ করে সেই হালকা গরম তেলে ধীরে ধীরে ভুনে নিন; যতক্ষণ না খুব সুগন্ধ ছড়ায়। লাল হয়ে গেলে তাতে লবণ ও চিনি মেশাতে হবে।

একবার ঝোল ও মরিচের তেল তৈরি হয়ে গেলে, আলাদা পাত্রে প্যাকেটের নির্দেশ অনুযায়ী নুডলস রান্না করুন। সেদ্ধ নুডলস ৬টি বাটিতে ভাগ করুন। ঠান্ডা হওয়া গরুর হাঁটুর মাংস পাতলা করে কেটে নুডলসের ওপর সাজান। এরপর তাতে একে একে ঝোল, মুলা, এক চামচ গরম মরিচের তেল এবং এক মুঠো করে কুচি করা পেঁয়াজ কলি এবং ধনেপাতা যোগ করে পরিবেশন করুন।

তুরস্কের ইয়াইলা চোর্বসি স‍্যুপ। ছবি: উইকিপিডিয়া
তুরস্কের ইয়াইলা চোর্বসি স‍্যুপ। ছবি: উইকিপিডিয়া

ইয়াইলা চোর্বাসি, তুরস্ক

তুরস্কের স্যুপের নাম ইয়াইলা চোর্বাসি। এর প্রধান উপকরণ সেদ্ধ চাল বা বার্লি। এর সঙ্গে যোগ করা হয় দই। বিশ্বাস করা হয়, এটি শীতকালে সর্দি প্রতিরোধ করে; কিছু তুর্কি হাসপাতালে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের দই স্যুপ পরিবেশন করা হয়।

শুকনো পুদিনা গুঁড়া দইয়ের হালকা টক স্বাদকে ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে। তাজা পাউরুটির সঙ্গে এটি পরিবেশন করুন।

উপকরণ

বাসমতী বা জেসমিনসহ যেকোনো ধরনের সাদা চাল, গ্রিক দই বা সাধারণ দই, স্যুপ ঘন করতে ডিম ও ময়দার সংমিশ্রণ, শুকনো পুদিনাপাতার গুঁড়া। 

প্রস্তুত প্রণালি

যে চাল ব্যবহার করবেন, স্বাভাবিকের চেয়ে তাতে বেশি পানি দিয়ে প্রথমে নরম করে ভাত রান্না করুন। পানি ও ভাত এই স্যুপের ভিত্তি। একটি বাটিতে দই, ডিম, ময়দা ও লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। পানি কমে গেলে ভাতে আরও পানি যোগ করুন এবং ভালোভাবে নাড়ুন। হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। এরপর সুবিধামতো পাত্র নিয়ে ধীরে ধীরে ভাত ও পানি দই ও ডিমের মিশ্রণে যোগ করুন এবং ভালোভাবে নাড়তে থাকুন। এরপর এই পুরো মিশ্রণ আবারও গরম পানিতে দিয়ে মাঝারি আঁচে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ফুটতে দিন। এ সময়েও মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন। চেখে দেখুন। লাগলে প্রয়োজনে আরও লবণ যোগ করুন।

একটি ছোট প্যানে মাখন গলিয়ে সুগন্ধ বের হওয়া পর্যন্ত শুকনো পুদিনা সেদ্ধ করে নিন। তারপর এটি স্যুপে যোগ করুন এবং ভালোভাবে নাড়ুন। তারপর নামিয়ে পরিবেশন করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত