
চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে বাঘ দেখা যায় অনায়াসেই। তবে জঙ্গলে বাঘকে তার নিজের পরিবেশে দেখার যে আনন্দ কিংবা রোমাঞ্চ, তার কোনো তুলনা নেই। বাঘ দিবসে পৃথিবীর এমন কিছু জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব, যেখানে ভাগ্য ভালো থাকলে বুনো পরিবেশে রাজকীয় এই প্রাণীটির দেখা পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো, এই জঙ্গলগুলোর বেশির ভাগই ভারতে। অবশ্য পৃথিবীর মোট বুনো বাঘের একটি বড় অংশেরই বাস দেশটিতে।
রন্থাম্বর জাতীয় উদ্যান, ভারত
৩ লাখ ৩০ হাজার একরের রন্থাম্বর ন্যাশনাল পার্ক উত্তর ভারতের সবচেয়ে বড় জাতীয় উদ্যানগুলোর একটি। ২০২১ সালের হিসাবে অরণ্যটিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে ৮১টি। জায়গাটি একসময় ছিল জয়পুরের মহারাজাদের প্রিয় শিকারের জায়গা। আশ্চর্যজনক হলেও এর সীমানার ভেতরেই আছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন মন্দির, মসজিদ এমনকি ১০ শতকের একটি দুর্গও।
জঙ্গলটিতে গাড়িতে চাপিয়ে পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সাধারণত ছয় আসনের জিপ কিংবা ২০ আসনের এক গাড়িতে। অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত তিন ঘণ্টার এই ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয়। মোটামুটি ৯০ দিন আগে বুকিং দিয়ে রাখলে আশা করা যায় ভ্রমণের সুযোগ পেতে কোনো ঝামেলা হবে না।
এই জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে বাঘের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এ ছাড়া প্রাচীন সব ধ্বংসাবশেষ তো দেখবেনই। ভাগ্য ভালো থাকলে চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, কুমির, হায়েনার মতো প্রাণীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়ে যেতে পারে।
এখানে ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে সবচেয়ে চমৎকার আবহাওয়া পাবেন। তবে এপ্রিল কিংবা মের উষ্ণ দিনগুলোতে বাঘরা জলের উৎসগুলোতে যেতে প্রলুব্ধ হয় বেশি। কাজেই ওই সময় আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখার ভালো সুযোগ আছে।
জিম করবেট জাতীয় উদ্যান
১৯৩৬ সালে হেইলি ন্যাশনাল পার্ক নামে আত্মপ্রকাশ ঘটলেও পরে বিখ্যাত শিকারি ও প্রকৃতিবিদ জিম করবেটের নামে নামকরণ হয়। ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান এটি। ২০২০ সালের হিসাবে এখানকার শাল, জলাভূমির জঙ্গল ও ঘাসবহুল অঞ্চলে ২৩১টি বাঘের বাস। এটি ভারতের সেই অল্প কয়েকটি টাইগার রিজার্ভের একটি, যেখানে রাতে থাকার অনুমতি আছে আপনার। এতে ভয়ংকর সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখার সুযোগ বেড়েছে।
পাঁচটি আলাদা জায়গায় জিপ ও মিনি বাসে করে সাফারির সুযোগ আছে। আছে হাতির পিঠে চড়ে বন ভ্রমণের সুযোগও। ভারতের বন বিভাগ এই সাফারি বা ভ্রমণের আয়োজন করে। মোটামুটি পাঁচটি এলাকায়ই বাঘ দেখার সম্ভাবনা একই ধরনের। সকালে ও সন্ধ্যায় ট্যুরের আয়োজন করা হয়।
জঙ্গলটিতে ভ্রমণের সময় চোখ-কান খোলা রাখুন। বিশেষ করে গ্রীষ্মে বুনো হাতির দলের দেখা পেয়ে যেতে পারেন। চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক কিংবা বিভিন্ন প্রজাতির হরিণদের দেখাও মিলতে পারে রাতে থাকতে পারেন ঢিকালা ফরেস্ট লজে।
এপ্রিল থেকে জুনে বাঘ দেখার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। গ্রীষ্মের মাস গুলাতে ঝোপ-জঙ্গলের আশ্রয় ছেড়ে বেরিয়ে খোলামেলা জায়গায় অবস্থিত জলাশয়গুলোতে যায় পানি খেতে কিংবা শরীরটাকে একটু শীতল করতে। এ সময় স্বাভাবিকভাবেই এদের দেখার ভালো সুযোগ থাকে।
সুন্দরবন, বাংলাদেশ ও ভারত
বাংলাদেশ ও ভারতে অবস্থিত সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য। বাঘের জন্য বিখ্যাত এ বনটিতে বাঘ দেখা অবশ্য খুব সহজ নয়। জালের মতো ছড়িয়ে থাকা নদী-খাল আর ছোট ছোট দ্বীপে ভরা অরণ্যটির বাংলাদেশ অংশকে বাঘ দেখার জন্য বেশি উপযোগী বলেছে লোনলি প্লেনেট।
২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাস করা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ১১৪।
খুলনা, বাগেরহাটের মোংলা কিংবা সাতক্ষীরা থেকে লঞ্চে করে ভ্রমণ করে আসতে পারবেন সুন্দরবন। লঞ্চ থেকেই ছোট ছোট নৌকায় চেপে ঘুরতে পারবেন জঙ্গলের অন্দি-সন্ধিতে। বনপ্রহরীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরেও হেঁটে বেড়াতে পারবেন। তবে শ্বাসমূলের কারণে এই বনে হাঁটাটা একটু কষ্টকর।
বনে বাঘ ছাড়াও দেখা পেতে পারেন চিত্রা ও মায়া হরিণ, বুনো শূকরদের।
ভাগ্য ভালো থাকলে বছরের যেকোনো সময়ই বনটিতে বাঘের দেখা পেতে পারেন। তবে কম পর্যটক যখন থাকে তখন অর্থাৎ বর্ষাকাল বাঘ দেখার জন্য ভালো সময় হতে পারে। তখন এমনকি দিনের বেলাও বাঘ খোলামেলা জায়গায় চলে আসে। অপর দিকে পর্যটক বেশি থাকলে তাদের বিচরণটা হয় মূলত রাতেই।
রয়েল মানস জাতীয় উদ্যান, ভুটান
উত্তর হিমালয়ে অবস্থিত জঙ্গলটিতে ভুটানের প্রথম জাতীয় উদ্যান। নানা ধরনের গাছপালা ও বন্য প্রাণীর জন্য এটি বিখ্যাত। অরণ্যটি ইউনেসকো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এখানে বাস গন্ডার, বুনো হাতি, বুনো মহিষ এবং অবশ্যই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো প্রাণীদের। পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত অরণ্যটিতে বাঘের ঘনবসতির দিক থেকে পৃথিবীর বিখ্যাত জঙ্গলগুলোর একটি। ২০০৮ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এখানে বাঘের সংখ্যা।
মজার ঘটনা, এই জঙ্গলটিকে ঘিরে আছে ভারত ও ভুটানের বেশ কিছু বিখ্যাত অরণ্য। এদের মধ্যে আছে মানস টাইগার রিজার্ভ, ফিপসু বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, খালিং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, থ্রামশিংলা জাতীয় উদ্যান প্রভৃতি। আর এই সবগুলো জঙ্গল মিলিয়ে বড় এলাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে বাঘেরা।
এখানে ভারতের জঙ্গলগুলোর তুলনায় বাঘ দেখানোর সাফারির পরিমাণ কম। আবার পাহাড়ি বনটিতে বাঘ দেখার সম্ভাবনাও একটু কম। তবে এখানকার প্রকৃতি, বন্য প্রাণী আর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মিলিয়ে ভ্রমণের জন্য অসাধারণ এক জায়গা।
অভয়ারণ্যটিতে অসাধারণ কিছু প্রাণীর বাস। এগুলোর মধ্যে বাঘ ছাড়াও আছে মেঘলা চিতা, বামন শূকর, এক শিংয়ের গন্ডার, বুনো হাতি, বুনো মোষ প্রভৃতি।
রয়েল মানসের সেরা আবহাওয়া থাকে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে গ্রীষ্মে বাঘ দেখার সম্ভাবনা থাকে বেশি। বর্ষার সময়, মে থেকে সেপ্টেম্বর যখন কাছের ভারতের মানস জাতীয় উদ্যান বন্ধ থাকে তখন এই বনে ঘুরতে গেলে বৃষ্টি থেকে বাঁচার মতো জিনিসপত্র সঙ্গে রাখবেন।
চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক, নেপাল
নেপাল-ভারত সীমান্তে অবস্থান নেপালের চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক বা জাতীয় উদ্যানের। একশৃঙ্গ গন্ডার, বাঘ ও ঘড়িয়ালের জন্য বিখ্যাত জঙ্গলটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। এই অরণ্যে ৫০ জাতের বেশি স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে। ২০১৮ সালের হিসাবে চিতওয়ানের জঙ্গলে বাস করা বাঘের সংখ্যা ৯৩টি। এখানে ঘুরে বেড়ানোর সময় অনায়াসে গন্ডারদের দেখা মিললেও বাঘের দেখা পাওয়া সহজ নয়।
জঙ্গলটিতে গাড়িতে চড়ে ভ্রমণের যেমন সুযোগ আছে, তেমনি আছে হাতির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা। এখানে আরও দেখা মেলে বুনো হাতি, চিতা বাঘ, ডোরাকাটা হায়েনা, অ্যান্টিলোপ প্রভৃতির।
চিতওয়ান জাতীয় উদ্যানের আবহাওয়া সবচেয়ে ভালো থাকে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। তবে এপ্রিল-মে মাসে বাঘ এবং গন্ডার দেখার সম্ভাবনা থাকে বেশি।
তাবোদা জাতীয় উদ্যান, ভারত
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে অবস্থিত তাবোদা জাতীয় উদ্যানে অন্তত ৮০টি বাঘের উপস্থিতির পরও তুলনামূলকভাবে পর্যটকদের পা পড়ে কম। এর আশপাশের এলাকাগুলোতেও আরও শ দুয়েক বাঘ আছে। তাই বাঘ দেখার সুযোগও জঙ্গলটিতে বেশ বেশি থাকে।
পার্কটির তিনটি এলাকায় শীত ও গ্রীষ্মে জিপ সাফারির ব্যবস্থা থাকে। জুলাই-আগস্ট ছাড়া বাকি ১০ মাসই জঙ্গলটিতে ঘুরতে পারবেন। সাধারত সকালে ও সন্ধ্যায় সাফারির ব্যবস্থা থাকে।
চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, কুমির, অজগরের জন্যও বিখ্যাত বনটি। মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এখানে বাঘ দেখার সম্ভাবনা বেশি। তবে এ সময় জঙ্গলটিতে গেলে প্রচণ্ড গরমের বিষয়টি মাথায় রেখেই যেতে হবে।
বারদিয়া জাতীয় উদ্যান, নেপাল
উত্তর-পশ্চিম নেপালের দুর্গম এলাকায় জঙ্গলটির অবস্থান। সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের জঙ্গলগুলোয় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। পাঁচটি জাতীয় উদ্যানে ২৩৫টির বেশি বাঘের বিচরণ। এর মধ্যে বারদিয়া জাতীয় উদ্যানে বসবাস ৮০টির মতো বাঘের।
গাড়ির পাশাপাশি গাইড নিয়ে হেঁটেও জঙ্গলটি দেখতে পারেন। গাইডের হাতে আত্মরক্ষার জন্য থাকা কেবল একটি বাঁশের লাঠি রোমাঞ্চ আরও বাড়াবে। এ ছাড়া কপাল ভালো থাকলে দেখা পেতে পারেন বুনো হাতি, একশৃঙ্গ গন্ডার কিংবা কুমিরের।
গোটা বছরজুড়েই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে জঙ্গলটি। তবে স্বাভাবিকভাবেই গ্রীষ্মে বাঘ আর গন্ডার দেখার সম্ভাবনা বেশি। তখন বাঘদের প্রায়ই দেখা যায় গিরওয়া নদীতে।
হোয়াই খা খায়েনং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় প্রাণীর সমাবেশ ঘটেছে যেসব অরণ্যে তার একটি হোয়াই খা খায়েনং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য। ২ হাজার ৭৮০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের অরণ্যটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। ২০২১ সালের হিসাবে জঙ্গলটিতে বাস ৮৯টি বাঘের। এক দশক আগেও সংখ্যাটি ছিল ৪২। এই বনের বাঘগুলো কিন্তু বেঙ্গল টাইগার নয় বরং ইন্দো চাইনিজ বাঘ।
বনে দেখা মেলে চিতাবাঘ, মেঘলা চিতা, সোনালি চিতা, মালায়ান তাপির, বুনো হাতি, বান্টেং, বুনো মোষসহ আরও নানা ধরনের প্রাণীর।
তবে বনটিকে সংরক্ষণের জন্য বেশ কঠোর নিয়ম-নীতি থাকায় সাধারণত পর্যটকেরা তুলনামূলক কম যান। তবে বিশেষ করে স্তন্যপায়ী বন্য প্রাণী নিয়ে যাদের আগ্রহ তাঁদের অনেকেই হাজির হোন সেখানে। বাঘ দেখাটাও বেশ সৌভাগ্যের ব্যাপার এখানে।
কানহা জাতীয় উদ্যান, ভারত
ভারতের মধ্যপ্রদেশের অবস্থান কানহা জাতীয় উদ্যানের। এখানকার চারটি এলাকা পরিচিত মুক্কি, কানহা, কিসলি ও সারহি নামে। মুক্কি আর কানহা বন্য প্রাণী দেখার জন্য আদর্শ। তবে গোটা জঙ্গলের পরিবেশই অসাধারণ। এই অরণ্যে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ১০৮।
বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান, ভারত
পার্কটির বেশির ভাগ অংশই পাথুরে। তবে পাথুরে এই এলাকায় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর প্রাণীগুলোর একটি বাঘের বাস। বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে বেশি ভেতরে ঢুকতে হবে না। তবে বাঘ দেখাটা ভাগ্যের ব্যাপার। এ জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা ১২৪।
সূত্র: লোনলি প্লেনেট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, থাই ন্যাশনাল পার্কস

চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে বাঘ দেখা যায় অনায়াসেই। তবে জঙ্গলে বাঘকে তার নিজের পরিবেশে দেখার যে আনন্দ কিংবা রোমাঞ্চ, তার কোনো তুলনা নেই। বাঘ দিবসে পৃথিবীর এমন কিছু জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব, যেখানে ভাগ্য ভালো থাকলে বুনো পরিবেশে রাজকীয় এই প্রাণীটির দেখা পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো, এই জঙ্গলগুলোর বেশির ভাগই ভারতে। অবশ্য পৃথিবীর মোট বুনো বাঘের একটি বড় অংশেরই বাস দেশটিতে।
রন্থাম্বর জাতীয় উদ্যান, ভারত
৩ লাখ ৩০ হাজার একরের রন্থাম্বর ন্যাশনাল পার্ক উত্তর ভারতের সবচেয়ে বড় জাতীয় উদ্যানগুলোর একটি। ২০২১ সালের হিসাবে অরণ্যটিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে ৮১টি। জায়গাটি একসময় ছিল জয়পুরের মহারাজাদের প্রিয় শিকারের জায়গা। আশ্চর্যজনক হলেও এর সীমানার ভেতরেই আছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন মন্দির, মসজিদ এমনকি ১০ শতকের একটি দুর্গও।
জঙ্গলটিতে গাড়িতে চাপিয়ে পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সাধারণত ছয় আসনের জিপ কিংবা ২০ আসনের এক গাড়িতে। অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত তিন ঘণ্টার এই ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয়। মোটামুটি ৯০ দিন আগে বুকিং দিয়ে রাখলে আশা করা যায় ভ্রমণের সুযোগ পেতে কোনো ঝামেলা হবে না।
এই জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে বাঘের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এ ছাড়া প্রাচীন সব ধ্বংসাবশেষ তো দেখবেনই। ভাগ্য ভালো থাকলে চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, কুমির, হায়েনার মতো প্রাণীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়ে যেতে পারে।
এখানে ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে সবচেয়ে চমৎকার আবহাওয়া পাবেন। তবে এপ্রিল কিংবা মের উষ্ণ দিনগুলোতে বাঘরা জলের উৎসগুলোতে যেতে প্রলুব্ধ হয় বেশি। কাজেই ওই সময় আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখার ভালো সুযোগ আছে।
জিম করবেট জাতীয় উদ্যান
১৯৩৬ সালে হেইলি ন্যাশনাল পার্ক নামে আত্মপ্রকাশ ঘটলেও পরে বিখ্যাত শিকারি ও প্রকৃতিবিদ জিম করবেটের নামে নামকরণ হয়। ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান এটি। ২০২০ সালের হিসাবে এখানকার শাল, জলাভূমির জঙ্গল ও ঘাসবহুল অঞ্চলে ২৩১টি বাঘের বাস। এটি ভারতের সেই অল্প কয়েকটি টাইগার রিজার্ভের একটি, যেখানে রাতে থাকার অনুমতি আছে আপনার। এতে ভয়ংকর সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখার সুযোগ বেড়েছে।
পাঁচটি আলাদা জায়গায় জিপ ও মিনি বাসে করে সাফারির সুযোগ আছে। আছে হাতির পিঠে চড়ে বন ভ্রমণের সুযোগও। ভারতের বন বিভাগ এই সাফারি বা ভ্রমণের আয়োজন করে। মোটামুটি পাঁচটি এলাকায়ই বাঘ দেখার সম্ভাবনা একই ধরনের। সকালে ও সন্ধ্যায় ট্যুরের আয়োজন করা হয়।
জঙ্গলটিতে ভ্রমণের সময় চোখ-কান খোলা রাখুন। বিশেষ করে গ্রীষ্মে বুনো হাতির দলের দেখা পেয়ে যেতে পারেন। চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক কিংবা বিভিন্ন প্রজাতির হরিণদের দেখাও মিলতে পারে রাতে থাকতে পারেন ঢিকালা ফরেস্ট লজে।
এপ্রিল থেকে জুনে বাঘ দেখার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। গ্রীষ্মের মাস গুলাতে ঝোপ-জঙ্গলের আশ্রয় ছেড়ে বেরিয়ে খোলামেলা জায়গায় অবস্থিত জলাশয়গুলোতে যায় পানি খেতে কিংবা শরীরটাকে একটু শীতল করতে। এ সময় স্বাভাবিকভাবেই এদের দেখার ভালো সুযোগ থাকে।
সুন্দরবন, বাংলাদেশ ও ভারত
বাংলাদেশ ও ভারতে অবস্থিত সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য। বাঘের জন্য বিখ্যাত এ বনটিতে বাঘ দেখা অবশ্য খুব সহজ নয়। জালের মতো ছড়িয়ে থাকা নদী-খাল আর ছোট ছোট দ্বীপে ভরা অরণ্যটির বাংলাদেশ অংশকে বাঘ দেখার জন্য বেশি উপযোগী বলেছে লোনলি প্লেনেট।
২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাস করা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ১১৪।
খুলনা, বাগেরহাটের মোংলা কিংবা সাতক্ষীরা থেকে লঞ্চে করে ভ্রমণ করে আসতে পারবেন সুন্দরবন। লঞ্চ থেকেই ছোট ছোট নৌকায় চেপে ঘুরতে পারবেন জঙ্গলের অন্দি-সন্ধিতে। বনপ্রহরীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরেও হেঁটে বেড়াতে পারবেন। তবে শ্বাসমূলের কারণে এই বনে হাঁটাটা একটু কষ্টকর।
বনে বাঘ ছাড়াও দেখা পেতে পারেন চিত্রা ও মায়া হরিণ, বুনো শূকরদের।
ভাগ্য ভালো থাকলে বছরের যেকোনো সময়ই বনটিতে বাঘের দেখা পেতে পারেন। তবে কম পর্যটক যখন থাকে তখন অর্থাৎ বর্ষাকাল বাঘ দেখার জন্য ভালো সময় হতে পারে। তখন এমনকি দিনের বেলাও বাঘ খোলামেলা জায়গায় চলে আসে। অপর দিকে পর্যটক বেশি থাকলে তাদের বিচরণটা হয় মূলত রাতেই।
রয়েল মানস জাতীয় উদ্যান, ভুটান
উত্তর হিমালয়ে অবস্থিত জঙ্গলটিতে ভুটানের প্রথম জাতীয় উদ্যান। নানা ধরনের গাছপালা ও বন্য প্রাণীর জন্য এটি বিখ্যাত। অরণ্যটি ইউনেসকো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এখানে বাস গন্ডার, বুনো হাতি, বুনো মহিষ এবং অবশ্যই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো প্রাণীদের। পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত অরণ্যটিতে বাঘের ঘনবসতির দিক থেকে পৃথিবীর বিখ্যাত জঙ্গলগুলোর একটি। ২০০৮ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এখানে বাঘের সংখ্যা।
মজার ঘটনা, এই জঙ্গলটিকে ঘিরে আছে ভারত ও ভুটানের বেশ কিছু বিখ্যাত অরণ্য। এদের মধ্যে আছে মানস টাইগার রিজার্ভ, ফিপসু বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, খালিং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, থ্রামশিংলা জাতীয় উদ্যান প্রভৃতি। আর এই সবগুলো জঙ্গল মিলিয়ে বড় এলাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে বাঘেরা।
এখানে ভারতের জঙ্গলগুলোর তুলনায় বাঘ দেখানোর সাফারির পরিমাণ কম। আবার পাহাড়ি বনটিতে বাঘ দেখার সম্ভাবনাও একটু কম। তবে এখানকার প্রকৃতি, বন্য প্রাণী আর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মিলিয়ে ভ্রমণের জন্য অসাধারণ এক জায়গা।
অভয়ারণ্যটিতে অসাধারণ কিছু প্রাণীর বাস। এগুলোর মধ্যে বাঘ ছাড়াও আছে মেঘলা চিতা, বামন শূকর, এক শিংয়ের গন্ডার, বুনো হাতি, বুনো মোষ প্রভৃতি।
রয়েল মানসের সেরা আবহাওয়া থাকে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে গ্রীষ্মে বাঘ দেখার সম্ভাবনা থাকে বেশি। বর্ষার সময়, মে থেকে সেপ্টেম্বর যখন কাছের ভারতের মানস জাতীয় উদ্যান বন্ধ থাকে তখন এই বনে ঘুরতে গেলে বৃষ্টি থেকে বাঁচার মতো জিনিসপত্র সঙ্গে রাখবেন।
চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক, নেপাল
নেপাল-ভারত সীমান্তে অবস্থান নেপালের চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক বা জাতীয় উদ্যানের। একশৃঙ্গ গন্ডার, বাঘ ও ঘড়িয়ালের জন্য বিখ্যাত জঙ্গলটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। এই অরণ্যে ৫০ জাতের বেশি স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে। ২০১৮ সালের হিসাবে চিতওয়ানের জঙ্গলে বাস করা বাঘের সংখ্যা ৯৩টি। এখানে ঘুরে বেড়ানোর সময় অনায়াসে গন্ডারদের দেখা মিললেও বাঘের দেখা পাওয়া সহজ নয়।
জঙ্গলটিতে গাড়িতে চড়ে ভ্রমণের যেমন সুযোগ আছে, তেমনি আছে হাতির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা। এখানে আরও দেখা মেলে বুনো হাতি, চিতা বাঘ, ডোরাকাটা হায়েনা, অ্যান্টিলোপ প্রভৃতির।
চিতওয়ান জাতীয় উদ্যানের আবহাওয়া সবচেয়ে ভালো থাকে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। তবে এপ্রিল-মে মাসে বাঘ এবং গন্ডার দেখার সম্ভাবনা থাকে বেশি।
তাবোদা জাতীয় উদ্যান, ভারত
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে অবস্থিত তাবোদা জাতীয় উদ্যানে অন্তত ৮০টি বাঘের উপস্থিতির পরও তুলনামূলকভাবে পর্যটকদের পা পড়ে কম। এর আশপাশের এলাকাগুলোতেও আরও শ দুয়েক বাঘ আছে। তাই বাঘ দেখার সুযোগও জঙ্গলটিতে বেশ বেশি থাকে।
পার্কটির তিনটি এলাকায় শীত ও গ্রীষ্মে জিপ সাফারির ব্যবস্থা থাকে। জুলাই-আগস্ট ছাড়া বাকি ১০ মাসই জঙ্গলটিতে ঘুরতে পারবেন। সাধারত সকালে ও সন্ধ্যায় সাফারির ব্যবস্থা থাকে।
চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, কুমির, অজগরের জন্যও বিখ্যাত বনটি। মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এখানে বাঘ দেখার সম্ভাবনা বেশি। তবে এ সময় জঙ্গলটিতে গেলে প্রচণ্ড গরমের বিষয়টি মাথায় রেখেই যেতে হবে।
বারদিয়া জাতীয় উদ্যান, নেপাল
উত্তর-পশ্চিম নেপালের দুর্গম এলাকায় জঙ্গলটির অবস্থান। সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের জঙ্গলগুলোয় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। পাঁচটি জাতীয় উদ্যানে ২৩৫টির বেশি বাঘের বিচরণ। এর মধ্যে বারদিয়া জাতীয় উদ্যানে বসবাস ৮০টির মতো বাঘের।
গাড়ির পাশাপাশি গাইড নিয়ে হেঁটেও জঙ্গলটি দেখতে পারেন। গাইডের হাতে আত্মরক্ষার জন্য থাকা কেবল একটি বাঁশের লাঠি রোমাঞ্চ আরও বাড়াবে। এ ছাড়া কপাল ভালো থাকলে দেখা পেতে পারেন বুনো হাতি, একশৃঙ্গ গন্ডার কিংবা কুমিরের।
গোটা বছরজুড়েই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে জঙ্গলটি। তবে স্বাভাবিকভাবেই গ্রীষ্মে বাঘ আর গন্ডার দেখার সম্ভাবনা বেশি। তখন বাঘদের প্রায়ই দেখা যায় গিরওয়া নদীতে।
হোয়াই খা খায়েনং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় প্রাণীর সমাবেশ ঘটেছে যেসব অরণ্যে তার একটি হোয়াই খা খায়েনং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য। ২ হাজার ৭৮০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের অরণ্যটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। ২০২১ সালের হিসাবে জঙ্গলটিতে বাস ৮৯টি বাঘের। এক দশক আগেও সংখ্যাটি ছিল ৪২। এই বনের বাঘগুলো কিন্তু বেঙ্গল টাইগার নয় বরং ইন্দো চাইনিজ বাঘ।
বনে দেখা মেলে চিতাবাঘ, মেঘলা চিতা, সোনালি চিতা, মালায়ান তাপির, বুনো হাতি, বান্টেং, বুনো মোষসহ আরও নানা ধরনের প্রাণীর।
তবে বনটিকে সংরক্ষণের জন্য বেশ কঠোর নিয়ম-নীতি থাকায় সাধারণত পর্যটকেরা তুলনামূলক কম যান। তবে বিশেষ করে স্তন্যপায়ী বন্য প্রাণী নিয়ে যাদের আগ্রহ তাঁদের অনেকেই হাজির হোন সেখানে। বাঘ দেখাটাও বেশ সৌভাগ্যের ব্যাপার এখানে।
কানহা জাতীয় উদ্যান, ভারত
ভারতের মধ্যপ্রদেশের অবস্থান কানহা জাতীয় উদ্যানের। এখানকার চারটি এলাকা পরিচিত মুক্কি, কানহা, কিসলি ও সারহি নামে। মুক্কি আর কানহা বন্য প্রাণী দেখার জন্য আদর্শ। তবে গোটা জঙ্গলের পরিবেশই অসাধারণ। এই অরণ্যে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ১০৮।
বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান, ভারত
পার্কটির বেশির ভাগ অংশই পাথুরে। তবে পাথুরে এই এলাকায় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর প্রাণীগুলোর একটি বাঘের বাস। বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে বেশি ভেতরে ঢুকতে হবে না। তবে বাঘ দেখাটা ভাগ্যের ব্যাপার। এ জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা ১২৪।
সূত্র: লোনলি প্লেনেট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, থাই ন্যাশনাল পার্কস

চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে বাঘ দেখা যায় অনায়াসেই। তবে জঙ্গলে বাঘকে তার নিজের পরিবেশে দেখার যে আনন্দ কিংবা রোমাঞ্চ, তার কোনো তুলনা নেই। বাঘ দিবসে পৃথিবীর এমন কিছু জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব, যেখানে ভাগ্য ভালো থাকলে বুনো পরিবেশে রাজকীয় এই প্রাণীটির দেখা পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো, এই জঙ্গলগুলোর বেশির ভাগই ভারতে। অবশ্য পৃথিবীর মোট বুনো বাঘের একটি বড় অংশেরই বাস দেশটিতে।
রন্থাম্বর জাতীয় উদ্যান, ভারত
৩ লাখ ৩০ হাজার একরের রন্থাম্বর ন্যাশনাল পার্ক উত্তর ভারতের সবচেয়ে বড় জাতীয় উদ্যানগুলোর একটি। ২০২১ সালের হিসাবে অরণ্যটিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে ৮১টি। জায়গাটি একসময় ছিল জয়পুরের মহারাজাদের প্রিয় শিকারের জায়গা। আশ্চর্যজনক হলেও এর সীমানার ভেতরেই আছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন মন্দির, মসজিদ এমনকি ১০ শতকের একটি দুর্গও।
জঙ্গলটিতে গাড়িতে চাপিয়ে পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সাধারণত ছয় আসনের জিপ কিংবা ২০ আসনের এক গাড়িতে। অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত তিন ঘণ্টার এই ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয়। মোটামুটি ৯০ দিন আগে বুকিং দিয়ে রাখলে আশা করা যায় ভ্রমণের সুযোগ পেতে কোনো ঝামেলা হবে না।
এই জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে বাঘের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এ ছাড়া প্রাচীন সব ধ্বংসাবশেষ তো দেখবেনই। ভাগ্য ভালো থাকলে চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, কুমির, হায়েনার মতো প্রাণীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়ে যেতে পারে।
এখানে ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে সবচেয়ে চমৎকার আবহাওয়া পাবেন। তবে এপ্রিল কিংবা মের উষ্ণ দিনগুলোতে বাঘরা জলের উৎসগুলোতে যেতে প্রলুব্ধ হয় বেশি। কাজেই ওই সময় আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখার ভালো সুযোগ আছে।
জিম করবেট জাতীয় উদ্যান
১৯৩৬ সালে হেইলি ন্যাশনাল পার্ক নামে আত্মপ্রকাশ ঘটলেও পরে বিখ্যাত শিকারি ও প্রকৃতিবিদ জিম করবেটের নামে নামকরণ হয়। ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান এটি। ২০২০ সালের হিসাবে এখানকার শাল, জলাভূমির জঙ্গল ও ঘাসবহুল অঞ্চলে ২৩১টি বাঘের বাস। এটি ভারতের সেই অল্প কয়েকটি টাইগার রিজার্ভের একটি, যেখানে রাতে থাকার অনুমতি আছে আপনার। এতে ভয়ংকর সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখার সুযোগ বেড়েছে।
পাঁচটি আলাদা জায়গায় জিপ ও মিনি বাসে করে সাফারির সুযোগ আছে। আছে হাতির পিঠে চড়ে বন ভ্রমণের সুযোগও। ভারতের বন বিভাগ এই সাফারি বা ভ্রমণের আয়োজন করে। মোটামুটি পাঁচটি এলাকায়ই বাঘ দেখার সম্ভাবনা একই ধরনের। সকালে ও সন্ধ্যায় ট্যুরের আয়োজন করা হয়।
জঙ্গলটিতে ভ্রমণের সময় চোখ-কান খোলা রাখুন। বিশেষ করে গ্রীষ্মে বুনো হাতির দলের দেখা পেয়ে যেতে পারেন। চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক কিংবা বিভিন্ন প্রজাতির হরিণদের দেখাও মিলতে পারে রাতে থাকতে পারেন ঢিকালা ফরেস্ট লজে।
এপ্রিল থেকে জুনে বাঘ দেখার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। গ্রীষ্মের মাস গুলাতে ঝোপ-জঙ্গলের আশ্রয় ছেড়ে বেরিয়ে খোলামেলা জায়গায় অবস্থিত জলাশয়গুলোতে যায় পানি খেতে কিংবা শরীরটাকে একটু শীতল করতে। এ সময় স্বাভাবিকভাবেই এদের দেখার ভালো সুযোগ থাকে।
সুন্দরবন, বাংলাদেশ ও ভারত
বাংলাদেশ ও ভারতে অবস্থিত সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য। বাঘের জন্য বিখ্যাত এ বনটিতে বাঘ দেখা অবশ্য খুব সহজ নয়। জালের মতো ছড়িয়ে থাকা নদী-খাল আর ছোট ছোট দ্বীপে ভরা অরণ্যটির বাংলাদেশ অংশকে বাঘ দেখার জন্য বেশি উপযোগী বলেছে লোনলি প্লেনেট।
২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাস করা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ১১৪।
খুলনা, বাগেরহাটের মোংলা কিংবা সাতক্ষীরা থেকে লঞ্চে করে ভ্রমণ করে আসতে পারবেন সুন্দরবন। লঞ্চ থেকেই ছোট ছোট নৌকায় চেপে ঘুরতে পারবেন জঙ্গলের অন্দি-সন্ধিতে। বনপ্রহরীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরেও হেঁটে বেড়াতে পারবেন। তবে শ্বাসমূলের কারণে এই বনে হাঁটাটা একটু কষ্টকর।
বনে বাঘ ছাড়াও দেখা পেতে পারেন চিত্রা ও মায়া হরিণ, বুনো শূকরদের।
ভাগ্য ভালো থাকলে বছরের যেকোনো সময়ই বনটিতে বাঘের দেখা পেতে পারেন। তবে কম পর্যটক যখন থাকে তখন অর্থাৎ বর্ষাকাল বাঘ দেখার জন্য ভালো সময় হতে পারে। তখন এমনকি দিনের বেলাও বাঘ খোলামেলা জায়গায় চলে আসে। অপর দিকে পর্যটক বেশি থাকলে তাদের বিচরণটা হয় মূলত রাতেই।
রয়েল মানস জাতীয় উদ্যান, ভুটান
উত্তর হিমালয়ে অবস্থিত জঙ্গলটিতে ভুটানের প্রথম জাতীয় উদ্যান। নানা ধরনের গাছপালা ও বন্য প্রাণীর জন্য এটি বিখ্যাত। অরণ্যটি ইউনেসকো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এখানে বাস গন্ডার, বুনো হাতি, বুনো মহিষ এবং অবশ্যই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো প্রাণীদের। পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত অরণ্যটিতে বাঘের ঘনবসতির দিক থেকে পৃথিবীর বিখ্যাত জঙ্গলগুলোর একটি। ২০০৮ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এখানে বাঘের সংখ্যা।
মজার ঘটনা, এই জঙ্গলটিকে ঘিরে আছে ভারত ও ভুটানের বেশ কিছু বিখ্যাত অরণ্য। এদের মধ্যে আছে মানস টাইগার রিজার্ভ, ফিপসু বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, খালিং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, থ্রামশিংলা জাতীয় উদ্যান প্রভৃতি। আর এই সবগুলো জঙ্গল মিলিয়ে বড় এলাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে বাঘেরা।
এখানে ভারতের জঙ্গলগুলোর তুলনায় বাঘ দেখানোর সাফারির পরিমাণ কম। আবার পাহাড়ি বনটিতে বাঘ দেখার সম্ভাবনাও একটু কম। তবে এখানকার প্রকৃতি, বন্য প্রাণী আর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মিলিয়ে ভ্রমণের জন্য অসাধারণ এক জায়গা।
অভয়ারণ্যটিতে অসাধারণ কিছু প্রাণীর বাস। এগুলোর মধ্যে বাঘ ছাড়াও আছে মেঘলা চিতা, বামন শূকর, এক শিংয়ের গন্ডার, বুনো হাতি, বুনো মোষ প্রভৃতি।
রয়েল মানসের সেরা আবহাওয়া থাকে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে গ্রীষ্মে বাঘ দেখার সম্ভাবনা থাকে বেশি। বর্ষার সময়, মে থেকে সেপ্টেম্বর যখন কাছের ভারতের মানস জাতীয় উদ্যান বন্ধ থাকে তখন এই বনে ঘুরতে গেলে বৃষ্টি থেকে বাঁচার মতো জিনিসপত্র সঙ্গে রাখবেন।
চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক, নেপাল
নেপাল-ভারত সীমান্তে অবস্থান নেপালের চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক বা জাতীয় উদ্যানের। একশৃঙ্গ গন্ডার, বাঘ ও ঘড়িয়ালের জন্য বিখ্যাত জঙ্গলটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। এই অরণ্যে ৫০ জাতের বেশি স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে। ২০১৮ সালের হিসাবে চিতওয়ানের জঙ্গলে বাস করা বাঘের সংখ্যা ৯৩টি। এখানে ঘুরে বেড়ানোর সময় অনায়াসে গন্ডারদের দেখা মিললেও বাঘের দেখা পাওয়া সহজ নয়।
জঙ্গলটিতে গাড়িতে চড়ে ভ্রমণের যেমন সুযোগ আছে, তেমনি আছে হাতির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা। এখানে আরও দেখা মেলে বুনো হাতি, চিতা বাঘ, ডোরাকাটা হায়েনা, অ্যান্টিলোপ প্রভৃতির।
চিতওয়ান জাতীয় উদ্যানের আবহাওয়া সবচেয়ে ভালো থাকে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। তবে এপ্রিল-মে মাসে বাঘ এবং গন্ডার দেখার সম্ভাবনা থাকে বেশি।
তাবোদা জাতীয় উদ্যান, ভারত
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে অবস্থিত তাবোদা জাতীয় উদ্যানে অন্তত ৮০টি বাঘের উপস্থিতির পরও তুলনামূলকভাবে পর্যটকদের পা পড়ে কম। এর আশপাশের এলাকাগুলোতেও আরও শ দুয়েক বাঘ আছে। তাই বাঘ দেখার সুযোগও জঙ্গলটিতে বেশ বেশি থাকে।
পার্কটির তিনটি এলাকায় শীত ও গ্রীষ্মে জিপ সাফারির ব্যবস্থা থাকে। জুলাই-আগস্ট ছাড়া বাকি ১০ মাসই জঙ্গলটিতে ঘুরতে পারবেন। সাধারত সকালে ও সন্ধ্যায় সাফারির ব্যবস্থা থাকে।
চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, কুমির, অজগরের জন্যও বিখ্যাত বনটি। মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এখানে বাঘ দেখার সম্ভাবনা বেশি। তবে এ সময় জঙ্গলটিতে গেলে প্রচণ্ড গরমের বিষয়টি মাথায় রেখেই যেতে হবে।
বারদিয়া জাতীয় উদ্যান, নেপাল
উত্তর-পশ্চিম নেপালের দুর্গম এলাকায় জঙ্গলটির অবস্থান। সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের জঙ্গলগুলোয় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। পাঁচটি জাতীয় উদ্যানে ২৩৫টির বেশি বাঘের বিচরণ। এর মধ্যে বারদিয়া জাতীয় উদ্যানে বসবাস ৮০টির মতো বাঘের।
গাড়ির পাশাপাশি গাইড নিয়ে হেঁটেও জঙ্গলটি দেখতে পারেন। গাইডের হাতে আত্মরক্ষার জন্য থাকা কেবল একটি বাঁশের লাঠি রোমাঞ্চ আরও বাড়াবে। এ ছাড়া কপাল ভালো থাকলে দেখা পেতে পারেন বুনো হাতি, একশৃঙ্গ গন্ডার কিংবা কুমিরের।
গোটা বছরজুড়েই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে জঙ্গলটি। তবে স্বাভাবিকভাবেই গ্রীষ্মে বাঘ আর গন্ডার দেখার সম্ভাবনা বেশি। তখন বাঘদের প্রায়ই দেখা যায় গিরওয়া নদীতে।
হোয়াই খা খায়েনং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় প্রাণীর সমাবেশ ঘটেছে যেসব অরণ্যে তার একটি হোয়াই খা খায়েনং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য। ২ হাজার ৭৮০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের অরণ্যটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। ২০২১ সালের হিসাবে জঙ্গলটিতে বাস ৮৯টি বাঘের। এক দশক আগেও সংখ্যাটি ছিল ৪২। এই বনের বাঘগুলো কিন্তু বেঙ্গল টাইগার নয় বরং ইন্দো চাইনিজ বাঘ।
বনে দেখা মেলে চিতাবাঘ, মেঘলা চিতা, সোনালি চিতা, মালায়ান তাপির, বুনো হাতি, বান্টেং, বুনো মোষসহ আরও নানা ধরনের প্রাণীর।
তবে বনটিকে সংরক্ষণের জন্য বেশ কঠোর নিয়ম-নীতি থাকায় সাধারণত পর্যটকেরা তুলনামূলক কম যান। তবে বিশেষ করে স্তন্যপায়ী বন্য প্রাণী নিয়ে যাদের আগ্রহ তাঁদের অনেকেই হাজির হোন সেখানে। বাঘ দেখাটাও বেশ সৌভাগ্যের ব্যাপার এখানে।
কানহা জাতীয় উদ্যান, ভারত
ভারতের মধ্যপ্রদেশের অবস্থান কানহা জাতীয় উদ্যানের। এখানকার চারটি এলাকা পরিচিত মুক্কি, কানহা, কিসলি ও সারহি নামে। মুক্কি আর কানহা বন্য প্রাণী দেখার জন্য আদর্শ। তবে গোটা জঙ্গলের পরিবেশই অসাধারণ। এই অরণ্যে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ১০৮।
বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান, ভারত
পার্কটির বেশির ভাগ অংশই পাথুরে। তবে পাথুরে এই এলাকায় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর প্রাণীগুলোর একটি বাঘের বাস। বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে বেশি ভেতরে ঢুকতে হবে না। তবে বাঘ দেখাটা ভাগ্যের ব্যাপার। এ জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা ১২৪।
সূত্র: লোনলি প্লেনেট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, থাই ন্যাশনাল পার্কস

চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে বাঘ দেখা যায় অনায়াসেই। তবে জঙ্গলে বাঘকে তার নিজের পরিবেশে দেখার যে আনন্দ কিংবা রোমাঞ্চ, তার কোনো তুলনা নেই। বাঘ দিবসে পৃথিবীর এমন কিছু জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব, যেখানে ভাগ্য ভালো থাকলে বুনো পরিবেশে রাজকীয় এই প্রাণীটির দেখা পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো, এই জঙ্গলগুলোর বেশির ভাগই ভারতে। অবশ্য পৃথিবীর মোট বুনো বাঘের একটি বড় অংশেরই বাস দেশটিতে।
রন্থাম্বর জাতীয় উদ্যান, ভারত
৩ লাখ ৩০ হাজার একরের রন্থাম্বর ন্যাশনাল পার্ক উত্তর ভারতের সবচেয়ে বড় জাতীয় উদ্যানগুলোর একটি। ২০২১ সালের হিসাবে অরণ্যটিতে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে ৮১টি। জায়গাটি একসময় ছিল জয়পুরের মহারাজাদের প্রিয় শিকারের জায়গা। আশ্চর্যজনক হলেও এর সীমানার ভেতরেই আছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন মন্দির, মসজিদ এমনকি ১০ শতকের একটি দুর্গও।
জঙ্গলটিতে গাড়িতে চাপিয়ে পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সাধারণত ছয় আসনের জিপ কিংবা ২০ আসনের এক গাড়িতে। অক্টোবর থেকে জুন পর্যন্ত তিন ঘণ্টার এই ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয়। মোটামুটি ৯০ দিন আগে বুকিং দিয়ে রাখলে আশা করা যায় ভ্রমণের সুযোগ পেতে কোনো ঝামেলা হবে না।
এই জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে বাঘের দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এ ছাড়া প্রাচীন সব ধ্বংসাবশেষ তো দেখবেনই। ভাগ্য ভালো থাকলে চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, কুমির, হায়েনার মতো প্রাণীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়ে যেতে পারে।
এখানে ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে সবচেয়ে চমৎকার আবহাওয়া পাবেন। তবে এপ্রিল কিংবা মের উষ্ণ দিনগুলোতে বাঘরা জলের উৎসগুলোতে যেতে প্রলুব্ধ হয় বেশি। কাজেই ওই সময় আশ্চর্য সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখার ভালো সুযোগ আছে।
জিম করবেট জাতীয় উদ্যান
১৯৩৬ সালে হেইলি ন্যাশনাল পার্ক নামে আত্মপ্রকাশ ঘটলেও পরে বিখ্যাত শিকারি ও প্রকৃতিবিদ জিম করবেটের নামে নামকরণ হয়। ভারতের প্রথম জাতীয় উদ্যান এটি। ২০২০ সালের হিসাবে এখানকার শাল, জলাভূমির জঙ্গল ও ঘাসবহুল অঞ্চলে ২৩১টি বাঘের বাস। এটি ভারতের সেই অল্প কয়েকটি টাইগার রিজার্ভের একটি, যেখানে রাতে থাকার অনুমতি আছে আপনার। এতে ভয়ংকর সুন্দর এই প্রাণীটিকে দেখার সুযোগ বেড়েছে।
পাঁচটি আলাদা জায়গায় জিপ ও মিনি বাসে করে সাফারির সুযোগ আছে। আছে হাতির পিঠে চড়ে বন ভ্রমণের সুযোগও। ভারতের বন বিভাগ এই সাফারি বা ভ্রমণের আয়োজন করে। মোটামুটি পাঁচটি এলাকায়ই বাঘ দেখার সম্ভাবনা একই ধরনের। সকালে ও সন্ধ্যায় ট্যুরের আয়োজন করা হয়।
জঙ্গলটিতে ভ্রমণের সময় চোখ-কান খোলা রাখুন। বিশেষ করে গ্রীষ্মে বুনো হাতির দলের দেখা পেয়ে যেতে পারেন। চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক কিংবা বিভিন্ন প্রজাতির হরিণদের দেখাও মিলতে পারে রাতে থাকতে পারেন ঢিকালা ফরেস্ট লজে।
এপ্রিল থেকে জুনে বাঘ দেখার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। গ্রীষ্মের মাস গুলাতে ঝোপ-জঙ্গলের আশ্রয় ছেড়ে বেরিয়ে খোলামেলা জায়গায় অবস্থিত জলাশয়গুলোতে যায় পানি খেতে কিংবা শরীরটাকে একটু শীতল করতে। এ সময় স্বাভাবিকভাবেই এদের দেখার ভালো সুযোগ থাকে।
সুন্দরবন, বাংলাদেশ ও ভারত
বাংলাদেশ ও ভারতে অবস্থিত সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য। বাঘের জন্য বিখ্যাত এ বনটিতে বাঘ দেখা অবশ্য খুব সহজ নয়। জালের মতো ছড়িয়ে থাকা নদী-খাল আর ছোট ছোট দ্বীপে ভরা অরণ্যটির বাংলাদেশ অংশকে বাঘ দেখার জন্য বেশি উপযোগী বলেছে লোনলি প্লেনেট।
২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাস করা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ১১৪।
খুলনা, বাগেরহাটের মোংলা কিংবা সাতক্ষীরা থেকে লঞ্চে করে ভ্রমণ করে আসতে পারবেন সুন্দরবন। লঞ্চ থেকেই ছোট ছোট নৌকায় চেপে ঘুরতে পারবেন জঙ্গলের অন্দি-সন্ধিতে। বনপ্রহরীদের সঙ্গে নিয়ে জঙ্গলের ভেতরেও হেঁটে বেড়াতে পারবেন। তবে শ্বাসমূলের কারণে এই বনে হাঁটাটা একটু কষ্টকর।
বনে বাঘ ছাড়াও দেখা পেতে পারেন চিত্রা ও মায়া হরিণ, বুনো শূকরদের।
ভাগ্য ভালো থাকলে বছরের যেকোনো সময়ই বনটিতে বাঘের দেখা পেতে পারেন। তবে কম পর্যটক যখন থাকে তখন অর্থাৎ বর্ষাকাল বাঘ দেখার জন্য ভালো সময় হতে পারে। তখন এমনকি দিনের বেলাও বাঘ খোলামেলা জায়গায় চলে আসে। অপর দিকে পর্যটক বেশি থাকলে তাদের বিচরণটা হয় মূলত রাতেই।
রয়েল মানস জাতীয় উদ্যান, ভুটান
উত্তর হিমালয়ে অবস্থিত জঙ্গলটিতে ভুটানের প্রথম জাতীয় উদ্যান। নানা ধরনের গাছপালা ও বন্য প্রাণীর জন্য এটি বিখ্যাত। অরণ্যটি ইউনেসকো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। এখানে বাস গন্ডার, বুনো হাতি, বুনো মহিষ এবং অবশ্যই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো প্রাণীদের। পার্বত্য এলাকায় অবস্থিত অরণ্যটিতে বাঘের ঘনবসতির দিক থেকে পৃথিবীর বিখ্যাত জঙ্গলগুলোর একটি। ২০০৮ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এখানে বাঘের সংখ্যা।
মজার ঘটনা, এই জঙ্গলটিকে ঘিরে আছে ভারত ও ভুটানের বেশ কিছু বিখ্যাত অরণ্য। এদের মধ্যে আছে মানস টাইগার রিজার্ভ, ফিপসু বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, খালিং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, থ্রামশিংলা জাতীয় উদ্যান প্রভৃতি। আর এই সবগুলো জঙ্গল মিলিয়ে বড় এলাকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারে বাঘেরা।
এখানে ভারতের জঙ্গলগুলোর তুলনায় বাঘ দেখানোর সাফারির পরিমাণ কম। আবার পাহাড়ি বনটিতে বাঘ দেখার সম্ভাবনাও একটু কম। তবে এখানকার প্রকৃতি, বন্য প্রাণী আর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য মিলিয়ে ভ্রমণের জন্য অসাধারণ এক জায়গা।
অভয়ারণ্যটিতে অসাধারণ কিছু প্রাণীর বাস। এগুলোর মধ্যে বাঘ ছাড়াও আছে মেঘলা চিতা, বামন শূকর, এক শিংয়ের গন্ডার, বুনো হাতি, বুনো মোষ প্রভৃতি।
রয়েল মানসের সেরা আবহাওয়া থাকে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে গ্রীষ্মে বাঘ দেখার সম্ভাবনা থাকে বেশি। বর্ষার সময়, মে থেকে সেপ্টেম্বর যখন কাছের ভারতের মানস জাতীয় উদ্যান বন্ধ থাকে তখন এই বনে ঘুরতে গেলে বৃষ্টি থেকে বাঁচার মতো জিনিসপত্র সঙ্গে রাখবেন।
চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক, নেপাল
নেপাল-ভারত সীমান্তে অবস্থান নেপালের চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক বা জাতীয় উদ্যানের। একশৃঙ্গ গন্ডার, বাঘ ও ঘড়িয়ালের জন্য বিখ্যাত জঙ্গলটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। এই অরণ্যে ৫০ জাতের বেশি স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে। ২০১৮ সালের হিসাবে চিতওয়ানের জঙ্গলে বাস করা বাঘের সংখ্যা ৯৩টি। এখানে ঘুরে বেড়ানোর সময় অনায়াসে গন্ডারদের দেখা মিললেও বাঘের দেখা পাওয়া সহজ নয়।
জঙ্গলটিতে গাড়িতে চড়ে ভ্রমণের যেমন সুযোগ আছে, তেমনি আছে হাতির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা। এখানে আরও দেখা মেলে বুনো হাতি, চিতা বাঘ, ডোরাকাটা হায়েনা, অ্যান্টিলোপ প্রভৃতির।
চিতওয়ান জাতীয় উদ্যানের আবহাওয়া সবচেয়ে ভালো থাকে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত। তবে এপ্রিল-মে মাসে বাঘ এবং গন্ডার দেখার সম্ভাবনা থাকে বেশি।
তাবোদা জাতীয় উদ্যান, ভারত
ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে অবস্থিত তাবোদা জাতীয় উদ্যানে অন্তত ৮০টি বাঘের উপস্থিতির পরও তুলনামূলকভাবে পর্যটকদের পা পড়ে কম। এর আশপাশের এলাকাগুলোতেও আরও শ দুয়েক বাঘ আছে। তাই বাঘ দেখার সুযোগও জঙ্গলটিতে বেশ বেশি থাকে।
পার্কটির তিনটি এলাকায় শীত ও গ্রীষ্মে জিপ সাফারির ব্যবস্থা থাকে। জুলাই-আগস্ট ছাড়া বাকি ১০ মাসই জঙ্গলটিতে ঘুরতে পারবেন। সাধারত সকালে ও সন্ধ্যায় সাফারির ব্যবস্থা থাকে।
চিতাবাঘ, শ্লথ ভালুক, কুমির, অজগরের জন্যও বিখ্যাত বনটি। মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে এখানে বাঘ দেখার সম্ভাবনা বেশি। তবে এ সময় জঙ্গলটিতে গেলে প্রচণ্ড গরমের বিষয়টি মাথায় রেখেই যেতে হবে।
বারদিয়া জাতীয় উদ্যান, নেপাল
উত্তর-পশ্চিম নেপালের দুর্গম এলাকায় জঙ্গলটির অবস্থান। সাম্প্রতিক সময়ে নেপালের জঙ্গলগুলোয় বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। পাঁচটি জাতীয় উদ্যানে ২৩৫টির বেশি বাঘের বিচরণ। এর মধ্যে বারদিয়া জাতীয় উদ্যানে বসবাস ৮০টির মতো বাঘের।
গাড়ির পাশাপাশি গাইড নিয়ে হেঁটেও জঙ্গলটি দেখতে পারেন। গাইডের হাতে আত্মরক্ষার জন্য থাকা কেবল একটি বাঁশের লাঠি রোমাঞ্চ আরও বাড়াবে। এ ছাড়া কপাল ভালো থাকলে দেখা পেতে পারেন বুনো হাতি, একশৃঙ্গ গন্ডার কিংবা কুমিরের।
গোটা বছরজুড়েই পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে জঙ্গলটি। তবে স্বাভাবিকভাবেই গ্রীষ্মে বাঘ আর গন্ডার দেখার সম্ভাবনা বেশি। তখন বাঘদের প্রায়ই দেখা যায় গিরওয়া নদীতে।
হোয়াই খা খায়েনং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, থাইল্যান্ড
থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় প্রাণীর সমাবেশ ঘটেছে যেসব অরণ্যে তার একটি হোয়াই খা খায়েনং বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য। ২ হাজার ৭৮০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের অরণ্যটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। ২০২১ সালের হিসাবে জঙ্গলটিতে বাস ৮৯টি বাঘের। এক দশক আগেও সংখ্যাটি ছিল ৪২। এই বনের বাঘগুলো কিন্তু বেঙ্গল টাইগার নয় বরং ইন্দো চাইনিজ বাঘ।
বনে দেখা মেলে চিতাবাঘ, মেঘলা চিতা, সোনালি চিতা, মালায়ান তাপির, বুনো হাতি, বান্টেং, বুনো মোষসহ আরও নানা ধরনের প্রাণীর।
তবে বনটিকে সংরক্ষণের জন্য বেশ কঠোর নিয়ম-নীতি থাকায় সাধারণত পর্যটকেরা তুলনামূলক কম যান। তবে বিশেষ করে স্তন্যপায়ী বন্য প্রাণী নিয়ে যাদের আগ্রহ তাঁদের অনেকেই হাজির হোন সেখানে। বাঘ দেখাটাও বেশ সৌভাগ্যের ব্যাপার এখানে।
কানহা জাতীয় উদ্যান, ভারত
ভারতের মধ্যপ্রদেশের অবস্থান কানহা জাতীয় উদ্যানের। এখানকার চারটি এলাকা পরিচিত মুক্কি, কানহা, কিসলি ও সারহি নামে। মুক্কি আর কানহা বন্য প্রাণী দেখার জন্য আদর্শ। তবে গোটা জঙ্গলের পরিবেশই অসাধারণ। এই অরণ্যে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ১০৮।
বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান, ভারত
পার্কটির বেশির ভাগ অংশই পাথুরে। তবে পাথুরে এই এলাকায় পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর প্রাণীগুলোর একটি বাঘের বাস। বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে বেশি ভেতরে ঢুকতে হবে না। তবে বাঘ দেখাটা ভাগ্যের ব্যাপার। এ জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা ১২৪।
সূত্র: লোনলি প্লেনেট, টাইমস অব ইন্ডিয়া, থাই ন্যাশনাল পার্কস

জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
৪ ঘণ্টা আগে
ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
৫ ঘণ্টা আগে
বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
৬ ঘণ্টা আগে
আত্মবিশ্বাস একেবারে হিমালয়ের চূড়ায়। পৈতৃক সম্পত্তি পাওয়ার যোগ আছে। বাতের ব্যথায় কষ্ট পেতে পারেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় নিজেকে স্পাইডারম্যান ভাববেন না। বেশি লাফঝাঁপ করলে কপালে হাড়ের ডাক্তার আছে। সকাল-সন্ধ্যা রিজিক বৃদ্ধির দোয়া করতে থাকুন।
৬ ঘণ্টা আগেসুমন্ত গুপ্ত

জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
প্রকৃতির পালাবদলে শীতকাল এসেছে। তাই প্রকৃতির মাঝে চলেছে ঋতুবরণের পালা। আমরা চলেছি নতুন গন্তব্যে। পাগলা বাজারে এসে নামলাম। ঢুকে পড়লাম দয়াল মিষ্টান্ন ভান্ডারে। গরম-গরম পরোটা আর ভাজি দেওয়া হলো। পেটপূজা শেষ করে আমরা এগিয়ে চললাম গন্তব্যের পানে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এসে পৌঁছালাম সুনামগঞ্জ শহরে। সেখান থেকে যেতে হবে তাহিরপুর। প্রায় আড়াই ঘণ্টা যাত্রা শেষে হাজির হলাম সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের রোজ গার্ডেনে। এখানে দুপুরের খাওয়া শেষে আবারও রওনা দিলাম তাহিরপুরের দিকে।
গ্রামীণ পথে চলার মজাই আলাদা। দুই পাশে ধানখেত। মাঝ দিয়ে আমরা এগিয়ে চলছি। প্রায়
দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে এসে আমরা পৌঁছালাম তাহিরপুর বাজারে। এবার আমাদের পাড়ি দিতে
হবে টাঙ্গুয়ার হাওর। সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। মনে মনে সবাই খুশিই হলাম টাঙ্গুয়ার হাওর দেখা যাবে বলে। বাহন রয়েছে দুই ধরনের—ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। আমরা চেপে বসলাম ইঞ্জিন নৌকায়।
টাঙ্গুয়ার ঢেউয়ের তালে তালে এগিয়ে চলছি। নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবনধারা আমাদের মোহিত করছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পেরিয়ে পৌঁছালাম ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর গ্রামে। সেখানে জন্য অপেক্ষা করছিলেন সোহাগ আর মুনিম নামে দুজন। আমরা চেপে বসলাম দুই চাকার বাহনে। এখান থেকে মহিষখোলা গ্রামের দূরত্ব ১০ মিনিট। এই বাইকে করেই সেখানে যেতে হবে। সময়মতো পৌঁছানো গেল মহিষখোলা গ্রামে।
শান্ত নীরব পরিবেশ। ঘাসফড়িং মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে। এগিয়ে চললাম মহিষখোলা নদীর পূর্বপাড় ঘেঁষে একখানা প্রায় নিশ্চিহ্ন টিনের ঘরের উদ্দেশে। এর অস্তিত্ব সরেজমিনে দেখেও কল্পনায় তার পূর্ণ রূপ দেখা কল্পনাবিলাসীদের জন্যও হয়তো দুরূহ হবে। তার আশপাশে ৪২ বছর ধরে মানুষের ছোঁয়া পড়েনি, তাই জঙ্গলাকীর্ণ। সেই ঘরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতেন। পাকিস্তানি হানাদারদের মাঝেমধ্যে ধরে বন্দী করেও রাখতেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এই অঞ্চল ছিল ১১ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর সাব-সেক্টর। এর পশ্চিমে গা ঘেঁষে মহিষখোলা নদী, উত্তরে ২০০ গজের মধ্যে ভারত সীমান্তে মেঘালয় পর্বতমালা, পূর্বে সংখ্যাহীন খালবিল এবং বিশাল টাঙ্গুয়ার হাওর। এর সঙ্গে রাগে-অনুরাগে জড়িয়ে আছে আরেকটি স্নিগ্ধ নদী—জাদুকাটা। শ্রীচৈতন্যের জ্যেষ্ঠ পার্ষদ অদ্বৈতাচার্য এই নদীপারের সন্তান ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক ভয়াল সংঘর্ষ হয়। এতে অনেক যোদ্ধা মারা যান। মহিষখোলা নদীর পাড়ঘেঁষা সেই বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায় তখনই, শহীদ যোদ্ধাদের গণকবর রচিত হয় তারই এদিক-সেদিক। তারপর ৪২ বছর লতা-গুল্ম-বৃক্ষের চাদরে ঢাকা ছিল এই ইতিহাস। বলছিলেন আমাদের সঙ্গী স্থপতি রাজন দাস। তিনি এখানে তৈরি করেছেন মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মারক। এখানে শায়িত আছেন একাত্তরের শহীদ হওয়া বীর প্রাণেরা।
পূর্ব-পশ্চিম অক্ষ বরাবর সমান্তরাল দুটি সুউচ্চ দেয়াল ৯ ফুট বেদির ওপর এসে দাঁড়ায়, তার ওপর ছায়া হয়ে ছাদ এসে বসে। সিঁড়ি ভেঙে পূর্ব দিকের প্রবেশবিন্দুতে চোখ রাখলে পশ্চিমের নদী আর তার গায়ে এসে পড়া আকাশ দেখা যায়। পূর্ব-পশ্চিম উন্মুক্ত হওয়ায় দুই দেয়ালের ঘর রচিত হয়ে যায়। উত্তর-দক্ষিণের ২৭ ফুট উঁচু দেয়ালে ব্যাকরণ ভেঙে অনেক ছোট-বড় জানালা আড়াল খুলে আলোর উৎস হয়ে ওঠে। ঠিক চোখ মেলে তাকানোর মতো। ‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’ তারা তো বদ্ধ ঘরে থাকে না, যে ঘরে দোর-জানালায় অর্গল টানা, যে ঘরে আলোর ঝলক নেই, দোলা নেই, সে ঘরে স্বাধীনতা প্রবেশ করে না! তাই ‘সব কয়টা জানালা’ই খুলে রাখা হয়েছে। জানালা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যাংশ, যার ব্যবহারিক ও মনস্তাত্ত্বিক মূল্য অতুলনীয়। এটি আমাদের দর্শনেন্দ্রিয়ের মতো।
চোখ দিয়ে যেমন আমাদের দেহ-ঘরে আলো প্রবেশ করে, আমাদের প্রথম অভিজ্ঞতা চোখ দিয়ে হয়, তেমনই দেয়ালকে মুক্তি দেয় জানালা। তবেই দেয়ালের চোখ ফুটে আলো-বাতাস প্রবেশ করে গৃহে প্রাণের সঞ্চার হয়। এ জন্যই ‘খোলা জানালা’ আর ‘স্বাধীনতার চেতনা’ সমার্থক হয়ে উঠেছে। বেদির তিন দিক ঘিরে রয়েছে পানির আধার, যা পশ্চিমে নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। প্রতি বর্ষাতেই মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল নামলে নদী উপচে বেদির তলায় কিছুক্ষণের জন্য হাঁটুপানি জমে। এটা হাওরাঞ্চলের চেনা দৃশ্য। এভাবে হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে ‘সব কটা জানালা’ খুলে আমাদের ডাকছে ওরা, ‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’।
যাবেন কীভাবে
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ সরাসরি এনা, হানিফ, শ্যামলী, ইউনিকসহ অনেক কোম্পানির বাস এই পথে চলাচল করে। তবে অবশ্যই অগ্রিম টিকিট কেটে রাখুন। তাহলে ঝামেলায় পড়তে হবে না। সুনামগঞ্জ শহরে এসে এম এ খান সেতুর কাছে পাবেন মোটরবাইক অথবা গাড়ি। সেগুলোতে যেতে হবে তাহিরপুর বাজার। সেখান থেকে নৌকায় করে যেতে হবে মধ্যনগর গ্রামে। মধ্যনগর থেকে মহিষখোলা গ্রাম ১০ মিনিটের রাস্তা। দল বেঁধে ঘুরতে গেলেই বেশি আনন্দ করতে পারবেন।

জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
প্রকৃতির পালাবদলে শীতকাল এসেছে। তাই প্রকৃতির মাঝে চলেছে ঋতুবরণের পালা। আমরা চলেছি নতুন গন্তব্যে। পাগলা বাজারে এসে নামলাম। ঢুকে পড়লাম দয়াল মিষ্টান্ন ভান্ডারে। গরম-গরম পরোটা আর ভাজি দেওয়া হলো। পেটপূজা শেষ করে আমরা এগিয়ে চললাম গন্তব্যের পানে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এসে পৌঁছালাম সুনামগঞ্জ শহরে। সেখান থেকে যেতে হবে তাহিরপুর। প্রায় আড়াই ঘণ্টা যাত্রা শেষে হাজির হলাম সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের রোজ গার্ডেনে। এখানে দুপুরের খাওয়া শেষে আবারও রওনা দিলাম তাহিরপুরের দিকে।
গ্রামীণ পথে চলার মজাই আলাদা। দুই পাশে ধানখেত। মাঝ দিয়ে আমরা এগিয়ে চলছি। প্রায়
দুই ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে এসে আমরা পৌঁছালাম তাহিরপুর বাজারে। এবার আমাদের পাড়ি দিতে
হবে টাঙ্গুয়ার হাওর। সময় লাগবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। মনে মনে সবাই খুশিই হলাম টাঙ্গুয়ার হাওর দেখা যাবে বলে। বাহন রয়েছে দুই ধরনের—ইঞ্জিনচালিত নৌকা আর স্পিডবোট। আমরা চেপে বসলাম ইঞ্জিন নৌকায়।
টাঙ্গুয়ার ঢেউয়ের তালে তালে এগিয়ে চলছি। নদীকেন্দ্রিক মানুষের জীবনধারা আমাদের মোহিত করছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পেরিয়ে পৌঁছালাম ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর গ্রামে। সেখানে জন্য অপেক্ষা করছিলেন সোহাগ আর মুনিম নামে দুজন। আমরা চেপে বসলাম দুই চাকার বাহনে। এখান থেকে মহিষখোলা গ্রামের দূরত্ব ১০ মিনিট। এই বাইকে করেই সেখানে যেতে হবে। সময়মতো পৌঁছানো গেল মহিষখোলা গ্রামে।
শান্ত নীরব পরিবেশ। ঘাসফড়িং মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্তে। এগিয়ে চললাম মহিষখোলা নদীর পূর্বপাড় ঘেঁষে একখানা প্রায় নিশ্চিহ্ন টিনের ঘরের উদ্দেশে। এর অস্তিত্ব সরেজমিনে দেখেও কল্পনায় তার পূর্ণ রূপ দেখা কল্পনাবিলাসীদের জন্যও হয়তো দুরূহ হবে। তার আশপাশে ৪২ বছর ধরে মানুষের ছোঁয়া পড়েনি, তাই জঙ্গলাকীর্ণ। সেই ঘরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতেন। পাকিস্তানি হানাদারদের মাঝেমধ্যে ধরে বন্দী করেও রাখতেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এই অঞ্চল ছিল ১১ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর সাব-সেক্টর। এর পশ্চিমে গা ঘেঁষে মহিষখোলা নদী, উত্তরে ২০০ গজের মধ্যে ভারত সীমান্তে মেঘালয় পর্বতমালা, পূর্বে সংখ্যাহীন খালবিল এবং বিশাল টাঙ্গুয়ার হাওর। এর সঙ্গে রাগে-অনুরাগে জড়িয়ে আছে আরেকটি স্নিগ্ধ নদী—জাদুকাটা। শ্রীচৈতন্যের জ্যেষ্ঠ পার্ষদ অদ্বৈতাচার্য এই নদীপারের সন্তান ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক ভয়াল সংঘর্ষ হয়। এতে অনেক যোদ্ধা মারা যান। মহিষখোলা নদীর পাড়ঘেঁষা সেই বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায় তখনই, শহীদ যোদ্ধাদের গণকবর রচিত হয় তারই এদিক-সেদিক। তারপর ৪২ বছর লতা-গুল্ম-বৃক্ষের চাদরে ঢাকা ছিল এই ইতিহাস। বলছিলেন আমাদের সঙ্গী স্থপতি রাজন দাস। তিনি এখানে তৈরি করেছেন মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মারক। এখানে শায়িত আছেন একাত্তরের শহীদ হওয়া বীর প্রাণেরা।
পূর্ব-পশ্চিম অক্ষ বরাবর সমান্তরাল দুটি সুউচ্চ দেয়াল ৯ ফুট বেদির ওপর এসে দাঁড়ায়, তার ওপর ছায়া হয়ে ছাদ এসে বসে। সিঁড়ি ভেঙে পূর্ব দিকের প্রবেশবিন্দুতে চোখ রাখলে পশ্চিমের নদী আর তার গায়ে এসে পড়া আকাশ দেখা যায়। পূর্ব-পশ্চিম উন্মুক্ত হওয়ায় দুই দেয়ালের ঘর রচিত হয়ে যায়। উত্তর-দক্ষিণের ২৭ ফুট উঁচু দেয়ালে ব্যাকরণ ভেঙে অনেক ছোট-বড় জানালা আড়াল খুলে আলোর উৎস হয়ে ওঠে। ঠিক চোখ মেলে তাকানোর মতো। ‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’ তারা তো বদ্ধ ঘরে থাকে না, যে ঘরে দোর-জানালায় অর্গল টানা, যে ঘরে আলোর ঝলক নেই, দোলা নেই, সে ঘরে স্বাধীনতা প্রবেশ করে না! তাই ‘সব কয়টা জানালা’ই খুলে রাখা হয়েছে। জানালা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যাংশ, যার ব্যবহারিক ও মনস্তাত্ত্বিক মূল্য অতুলনীয়। এটি আমাদের দর্শনেন্দ্রিয়ের মতো।
চোখ দিয়ে যেমন আমাদের দেহ-ঘরে আলো প্রবেশ করে, আমাদের প্রথম অভিজ্ঞতা চোখ দিয়ে হয়, তেমনই দেয়ালকে মুক্তি দেয় জানালা। তবেই দেয়ালের চোখ ফুটে আলো-বাতাস প্রবেশ করে গৃহে প্রাণের সঞ্চার হয়। এ জন্যই ‘খোলা জানালা’ আর ‘স্বাধীনতার চেতনা’ সমার্থক হয়ে উঠেছে। বেদির তিন দিক ঘিরে রয়েছে পানির আধার, যা পশ্চিমে নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। প্রতি বর্ষাতেই মেঘালয়ের পাহাড়ি ঢল নামলে নদী উপচে বেদির তলায় কিছুক্ষণের জন্য হাঁটুপানি জমে। এটা হাওরাঞ্চলের চেনা দৃশ্য। এভাবে হাঁটুপানিতে দাঁড়িয়ে ‘সব কটা জানালা’ খুলে আমাদের ডাকছে ওরা, ‘যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ’।
যাবেন কীভাবে
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ সরাসরি এনা, হানিফ, শ্যামলী, ইউনিকসহ অনেক কোম্পানির বাস এই পথে চলাচল করে। তবে অবশ্যই অগ্রিম টিকিট কেটে রাখুন। তাহলে ঝামেলায় পড়তে হবে না। সুনামগঞ্জ শহরে এসে এম এ খান সেতুর কাছে পাবেন মোটরবাইক অথবা গাড়ি। সেগুলোতে যেতে হবে তাহিরপুর বাজার। সেখান থেকে নৌকায় করে যেতে হবে মধ্যনগর গ্রামে। মধ্যনগর থেকে মহিষখোলা গ্রাম ১০ মিনিটের রাস্তা। দল বেঁধে ঘুরতে গেলেই বেশি আনন্দ করতে পারবেন।

চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে বাঘ দেখা যায় অনায়াসেই। তবে জঙ্গলে বাঘকে তার নিজের পরিবেশে দেখার যে আনন্দ কিংবা রোমাঞ্চ, তার কোনো তুলনা নেই। বাঘ দিবসে পৃথিবীর এমন কিছু জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব, যেখানে ভাগ্য ভালো থাকলে বুনো পরিবেশে রাজকীয় এই প্রাণীটির দেখা পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো,
২৯ জুলাই ২০২৩
ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
৫ ঘণ্টা আগে
বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
৬ ঘণ্টা আগে
আত্মবিশ্বাস একেবারে হিমালয়ের চূড়ায়। পৈতৃক সম্পত্তি পাওয়ার যোগ আছে। বাতের ব্যথায় কষ্ট পেতে পারেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় নিজেকে স্পাইডারম্যান ভাববেন না। বেশি লাফঝাঁপ করলে কপালে হাড়ের ডাক্তার আছে। সকাল-সন্ধ্যা রিজিক বৃদ্ধির দোয়া করতে থাকুন।
৬ ঘণ্টা আগেনাকিব বাপ্পি

ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
ইংরেজিতে এর নাম প্লাম্বিয়াস ওয়াটার রেডস্টার্ট; আর দাঁতভাঙা বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিকিউরাস ফুলিগিনোসাস।
ডিসেম্বরের শুরুর দিকের ঘটনা। মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ডে এই পাখির আগমন ঘটেছে—খবরটি পেয়েই মন অস্থির হয়ে উঠল। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন আলোকচিত্রী এর ছবি পোস্ট করে যেন সেই অস্থিরতার আগুনে ঘি ঢেলে দিলেন। ভাবছি কী করা যায়! ঠিক তখন কাকতালীয়ভাবে সিলেট থেকে অতি প্রিয় এক আলোকচিত্রীর কল পেলাম। আমি কল রিসিভ করতেই তিনি বললেন, ‘চলে আসো।’ তারপর জানালেন কারা কারা থাকবেন, কখন উপস্থিত হবেন ইত্যাদি তথ্য।
পরদিন রাতের বাসে কয়েকজন মিলে রওনা দিলাম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।
ভোরে পৌঁছে দেখি, ফটোগ্রাফার শামীম ভাই আর তাঁর সঙ্গী-সাথিরা ছবি তোলা শুরু করে দিয়েছেন। ফলে ‘মহাশয়কে’ খুঁজে পেতে বিশেষ বেগ পেতে হলো না। দীর্ঘ সময় নিয়ে মন-প্রাণ ভরে ছবি তুললাম। মাঝেমধ্যে ক্যামেরার শাটার চাপা থামিয়ে চর্মচক্ষু দিয়েও তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভুলিনি।
আকারে অত্যন্ত ছোট এই পাখির পুরুষ প্রজাতির গড় ওজন প্রায় ২২ গ্রাম আর স্ত্রী পাখির ১৮ গ্রাম। এত হালকা শরীরে কী পাহাড়সম সৌন্দর্যই না বয়ে বেড়ায় এরা!
শীতকালে পাহাড়ি নদীর ধারে এই ঝরনাপাখি অস্থায়ী নীড় বানায়। শীত বিদায় নিতেই চলে যায় গ্রীষ্মের গন্তব্যে। সেখানে পৌঁছেই সংসার গড়ায় মনোযোগী হয়। মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এদের প্রজননকাল। স্ত্রী নীল পানগির্দি সাধারণত তিন অথবা চারটি হালকা গোলাপি-ধূসর কিংবা হালকা হলদে রঙের ডিম পাড়ে। ডিমে তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সে একাই দায়িত্ব পালন করে। তবে ছানা লালন-পালনের দায়িত্ব পুরুষটির কাঁধেও সমানভাবে বর্তায়।
বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, ভুটান, চীন, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এদের দেখা মেলে।
সবশেষে সেখান থেকে বিদায় নিয়ে সাগরনালে নীলপরীর সন্ধানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, যা প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির ভিন্ন এক গল্প। সেটি অন্য সময়ের জন্য তোলা থাক।
ক্যামেরা ব্যাগে নেওয়ার আগমুহূর্তে পাখিটি পানি আর মাটির সীমানাস্থলে এমনভাবে এসে বসল, দৃশ্যটা যেন এক ইলিউশন। মনে হলো, একটি পাখি হুট করে দুটো পাখি হয়ে গেছে। মনে মনে ‘ঝরনার জলে কার ছায়া গো’ বলতে বলতে সেদিনের মতো ক্লিক করলাম ঝরনাপাখির শেষ ছবিটি।
ছবি ও লেখা: নাকিব বাপ্পি

ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
ইংরেজিতে এর নাম প্লাম্বিয়াস ওয়াটার রেডস্টার্ট; আর দাঁতভাঙা বৈজ্ঞানিক নাম ফিনিকিউরাস ফুলিগিনোসাস।
ডিসেম্বরের শুরুর দিকের ঘটনা। মৌলভীবাজারের মাধবকুণ্ডে এই পাখির আগমন ঘটেছে—খবরটি পেয়েই মন অস্থির হয়ে উঠল। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ কয়েকজন আলোকচিত্রী এর ছবি পোস্ট করে যেন সেই অস্থিরতার আগুনে ঘি ঢেলে দিলেন। ভাবছি কী করা যায়! ঠিক তখন কাকতালীয়ভাবে সিলেট থেকে অতি প্রিয় এক আলোকচিত্রীর কল পেলাম। আমি কল রিসিভ করতেই তিনি বললেন, ‘চলে আসো।’ তারপর জানালেন কারা কারা থাকবেন, কখন উপস্থিত হবেন ইত্যাদি তথ্য।
পরদিন রাতের বাসে কয়েকজন মিলে রওনা দিলাম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে।
ভোরে পৌঁছে দেখি, ফটোগ্রাফার শামীম ভাই আর তাঁর সঙ্গী-সাথিরা ছবি তোলা শুরু করে দিয়েছেন। ফলে ‘মহাশয়কে’ খুঁজে পেতে বিশেষ বেগ পেতে হলো না। দীর্ঘ সময় নিয়ে মন-প্রাণ ভরে ছবি তুললাম। মাঝেমধ্যে ক্যামেরার শাটার চাপা থামিয়ে চর্মচক্ষু দিয়েও তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভুলিনি।
আকারে অত্যন্ত ছোট এই পাখির পুরুষ প্রজাতির গড় ওজন প্রায় ২২ গ্রাম আর স্ত্রী পাখির ১৮ গ্রাম। এত হালকা শরীরে কী পাহাড়সম সৌন্দর্যই না বয়ে বেড়ায় এরা!
শীতকালে পাহাড়ি নদীর ধারে এই ঝরনাপাখি অস্থায়ী নীড় বানায়। শীত বিদায় নিতেই চলে যায় গ্রীষ্মের গন্তব্যে। সেখানে পৌঁছেই সংসার গড়ায় মনোযোগী হয়। মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত এদের প্রজননকাল। স্ত্রী নীল পানগির্দি সাধারণত তিন অথবা চারটি হালকা গোলাপি-ধূসর কিংবা হালকা হলদে রঙের ডিম পাড়ে। ডিমে তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সে একাই দায়িত্ব পালন করে। তবে ছানা লালন-পালনের দায়িত্ব পুরুষটির কাঁধেও সমানভাবে বর্তায়।
বাংলাদেশ ছাড়াও আফগানিস্তান, ভুটান, চীন, ভারত, লাওস, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এদের দেখা মেলে।
সবশেষে সেখান থেকে বিদায় নিয়ে সাগরনালে নীলপরীর সন্ধানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো, যা প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির ভিন্ন এক গল্প। সেটি অন্য সময়ের জন্য তোলা থাক।
ক্যামেরা ব্যাগে নেওয়ার আগমুহূর্তে পাখিটি পানি আর মাটির সীমানাস্থলে এমনভাবে এসে বসল, দৃশ্যটা যেন এক ইলিউশন। মনে হলো, একটি পাখি হুট করে দুটো পাখি হয়ে গেছে। মনে মনে ‘ঝরনার জলে কার ছায়া গো’ বলতে বলতে সেদিনের মতো ক্লিক করলাম ঝরনাপাখির শেষ ছবিটি।
ছবি ও লেখা: নাকিব বাপ্পি

চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে বাঘ দেখা যায় অনায়াসেই। তবে জঙ্গলে বাঘকে তার নিজের পরিবেশে দেখার যে আনন্দ কিংবা রোমাঞ্চ, তার কোনো তুলনা নেই। বাঘ দিবসে পৃথিবীর এমন কিছু জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব, যেখানে ভাগ্য ভালো থাকলে বুনো পরিবেশে রাজকীয় এই প্রাণীটির দেখা পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো,
২৯ জুলাই ২০২৩
জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
৪ ঘণ্টা আগে
বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
৬ ঘণ্টা আগে
আত্মবিশ্বাস একেবারে হিমালয়ের চূড়ায়। পৈতৃক সম্পত্তি পাওয়ার যোগ আছে। বাতের ব্যথায় কষ্ট পেতে পারেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় নিজেকে স্পাইডারম্যান ভাববেন না। বেশি লাফঝাঁপ করলে কপালে হাড়ের ডাক্তার আছে। সকাল-সন্ধ্যা রিজিক বৃদ্ধির দোয়া করতে থাকুন।
৬ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘স্কিফট’ তাদের প্রতিবেদনে সরকারি মালিকানাধীন এক্সিম ব্যাংকের একটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, বৈশ্বিক ভ্রমণ দ্রুতগতিতে পুনরুদ্ধার করা সত্ত্বেও ভারত পর্যটনের সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে।
২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন আন্তর্জাতিক পর্যটক ভ্রমণ করেছে। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। মহামারি-পরবর্তী ভ্রমণ প্রবণতার হার বাড়া, উন্নত বিমান সংযোগ এবং শিথিল ভিসা নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে।
‘স্কিফট’ জানিয়েছে, ভারত এই প্রবৃদ্ধির সামান্য অংশ ধরে রাখতে পেরেছে মাত্র।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ট্যাক্স টিএমআই জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চে ২৬ দশমিক ১৫ লাখ পর্যটকের তুলনায় এপ্রিল থেকে জুনে ভারতে বিদেশি পর্যটকের আগমন (এফটিএ) কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৪৮ লাখে। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে কিছুটা বেড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর সংসদে একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেন, এ বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে মোট বিদেশি পর্যটক আগমন দাঁড়িয়েছে ৬১ দশমিক ৮৩ লাখ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রান্তিক ভিত্তিতে ভারতে বিদেশি পর্যটকের আগমনের তথ্য পেশ করেন। সেই সংখ্যাগুলো হলো জানুয়ারি-মার্চ বা প্রথম প্রান্তিক: ২৬ দশমিক ১৫ লাখ, এপ্রিল-জুন বা দ্বিতীয় প্রান্তিক: ১৬ দশমিক ৪৮ লাখ এবং জুলাই-সেপ্টেম্বর বা তৃতীয় প্রান্তিক: ১৯ দশমিক ২০ লাখ।
শেখাওয়াত সংসদে তাঁর লিখিত জবাবে আরও জানান, বিদেশি পর্যটকের আগমন কমে যাওয়ার মূল কারণ বাংলাদেশ থেকে আসার সংখ্যা নিম্নমুখী হওয়া। এ ছাড়া তিনি আরও কিছু কারণের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণের ধরনে মৌসুমি তারতম্য, চলমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন দেশ-নির্দিষ্ট গতিশীলতা।
শেখাওয়াত বলেন, পর্যটনমন্ত্রী ভারতকে একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও আকর্ষণীয় বৈশ্বিক পর্যটন গন্তব্য হিসেবে প্রচারের জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতের পর্যটনশিল্পের জন্য আরও একটি কঠিন বছর পার হতে চলেছে।
সূত্র: স্কিফট, ট্যাক্স টিএমআই, মিন্ট

বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
ভ্রমণবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘স্কিফট’ তাদের প্রতিবেদনে সরকারি মালিকানাধীন এক্সিম ব্যাংকের একটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, বৈশ্বিক ভ্রমণ দ্রুতগতিতে পুনরুদ্ধার করা সত্ত্বেও ভারত পর্যটনের সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে।
২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন আন্তর্জাতিক পর্যটক ভ্রমণ করেছে। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। মহামারি-পরবর্তী ভ্রমণ প্রবণতার হার বাড়া, উন্নত বিমান সংযোগ এবং শিথিল ভিসা নীতির কারণে বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে।
‘স্কিফট’ জানিয়েছে, ভারত এই প্রবৃদ্ধির সামান্য অংশ ধরে রাখতে পেরেছে মাত্র।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ট্যাক্স টিএমআই জানিয়েছে, জানুয়ারি থেকে মার্চে ২৬ দশমিক ১৫ লাখ পর্যটকের তুলনায় এপ্রিল থেকে জুনে ভারতে বিদেশি পর্যটকের আগমন (এফটিএ) কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৪৮ লাখে। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে কিছুটা বেড়েছে। ১৫ ডিসেম্বর সংসদে একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে ভারতের কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত বলেন, এ বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে মোট বিদেশি পর্যটক আগমন দাঁড়িয়েছে ৬১ দশমিক ৮৩ লাখ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রান্তিক ভিত্তিতে ভারতে বিদেশি পর্যটকের আগমনের তথ্য পেশ করেন। সেই সংখ্যাগুলো হলো জানুয়ারি-মার্চ বা প্রথম প্রান্তিক: ২৬ দশমিক ১৫ লাখ, এপ্রিল-জুন বা দ্বিতীয় প্রান্তিক: ১৬ দশমিক ৪৮ লাখ এবং জুলাই-সেপ্টেম্বর বা তৃতীয় প্রান্তিক: ১৯ দশমিক ২০ লাখ।
শেখাওয়াত সংসদে তাঁর লিখিত জবাবে আরও জানান, বিদেশি পর্যটকের আগমন কমে যাওয়ার মূল কারণ বাংলাদেশ থেকে আসার সংখ্যা নিম্নমুখী হওয়া। এ ছাড়া তিনি আরও কিছু কারণের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণের ধরনে মৌসুমি তারতম্য, চলমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিভিন্ন দেশ-নির্দিষ্ট গতিশীলতা।
শেখাওয়াত বলেন, পর্যটনমন্ত্রী ভারতকে একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও আকর্ষণীয় বৈশ্বিক পর্যটন গন্তব্য হিসেবে প্রচারের জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে।
এদিকে ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতের পর্যটনশিল্পের জন্য আরও একটি কঠিন বছর পার হতে চলেছে।
সূত্র: স্কিফট, ট্যাক্স টিএমআই, মিন্ট

চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে বাঘ দেখা যায় অনায়াসেই। তবে জঙ্গলে বাঘকে তার নিজের পরিবেশে দেখার যে আনন্দ কিংবা রোমাঞ্চ, তার কোনো তুলনা নেই। বাঘ দিবসে পৃথিবীর এমন কিছু জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব, যেখানে ভাগ্য ভালো থাকলে বুনো পরিবেশে রাজকীয় এই প্রাণীটির দেখা পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো,
২৯ জুলাই ২০২৩
জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
৪ ঘণ্টা আগে
ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
৫ ঘণ্টা আগে
আত্মবিশ্বাস একেবারে হিমালয়ের চূড়ায়। পৈতৃক সম্পত্তি পাওয়ার যোগ আছে। বাতের ব্যথায় কষ্ট পেতে পারেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় নিজেকে স্পাইডারম্যান ভাববেন না। বেশি লাফঝাঁপ করলে কপালে হাড়ের ডাক্তার আছে। সকাল-সন্ধ্যা রিজিক বৃদ্ধির দোয়া করতে থাকুন।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আত্মবিশ্বাস একেবারে হিমালয়ের চূড়ায়। পৈতৃক সম্পত্তি পাওয়ার যোগ আছে। বাতের ব্যথায় কষ্ট পেতে পারেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় নিজেকে স্পাইডারম্যান ভাববেন না। বেশি লাফঝাঁপ করলে কপালে হাড়ের ডাক্তার আছে। সকাল-সন্ধ্যা রিজিক বৃদ্ধির দোয়া করতে থাকুন।
বৃষ
শরীর চনমনে থাকবে। জীবনসঙ্গীর দেখা পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। যারা সিঙ্গেল, তারা আজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বেশি সময় নষ্ট করবেন। রাজনীতিবিদদের জন্য দিনটি ভালো, মানে আজ বেশি মিথ্যা বললেও কেউ ধরবে না! তবে অ্যাকাউন্ট্যান্টরা সাবধান! হিসাবে ভুল করলে বস আপনাকে ‘ডেবিট’ করে দেবে।
মিথুন
বুদ্ধির জোরে শত্রুকে কুপোকাত করবেন। তবে খরচ হবে পাগলের মতো। পকেট থেকে টাকা আজ যেন ডানার সাহায্যে উড়ে যেতে চাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের জন্য কর্মচারীদের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার চান্স আছে। চা খাওয়ার সময় চিনির বদলে কর্মচারীর ওপর ঝাল মেটাবেন না।
কর্কট
চাঁদ আর মঙ্গলের মিলন আপনার রাশিতেই হচ্ছে! আপনি আজ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। পছন্দের জায়গায় ট্রান্সফার বা ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। মিথ্যা বদনাম থেকে সাবধান। কেউ যদি বলে ‘ভাই, তোর ফোনটা একটু দিবি?’ —দেবেন না! ওটা আপনার চরিত্রহননের প্রথম ধাপ হতে পারে।
সিংহ
আত্মীয়রা আজ আপনার পেছনে কাঠি করার চেষ্টা করবে। সন্তানের উন্নতিতে আপনার বুক আজ কয়েক ইঞ্চি উন্নত হবে। কর্মক্ষেত্রে একদম শেষ মুহূর্তে কাজ আটকে যেতে পারে। মানে গোলপোস্ট পর্যন্ত গিয়ে বল বাইরে মেরে আসার মতো অবস্থা। শান্ত থাকুন, স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে সকালে ঝগড়া করে দিনটি মাটি করবেন না।
কন্যা
পড়াশোনায় সাফল্য আসবে। প্রেমের ক্ষেত্রে দিনটি দারুণ রোমান্টিক। স্ত্রীর কোনো কাজে থমকে যেতে পারেন (হয়তো ভালো রান্না, নয়তো বড় শপিং লিস্ট)।
পেশি বা স্নায়ুর সমস্যায় ভুগতে পারেন। জিমের ট্রেইনারের কথা শুনে বেশি ভারী ওজন তুলতে যাবেন না, কোমর সোজা করতে কালঘাম ছুটে যাবে।
তুলা
বিনিয়োগের জন্য দিনটি দারুণ। দীর্ঘদিনের কোনো ঝুলে থাকা কাজ আজ শেষ হবে। অন্যদের সঙ্গে খুশি ভাগ করুন, কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড ভাগ করবেন না। আজ কেউ আপনাকে উল্টোপাল্টা বুঝিয়ে টাকা ধার নিতে পারে। মনে রাখবেন, ধার দেওয়া টাকা আর হারানো দাঁত—একই জিনিস!
বৃশ্চিক
উপার্জনের পথ মসৃণ হবে। মানে আজ দু-টাকা বেশি আসার সম্ভাবনা। প্রেমে বিবাদ এমনকি বিচ্ছেদ পর্যন্ত হতে পারে! আপনার খিটখিটে মেজাজ আজ বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই সঙ্গীকে ‘তুমি মোটা হয়ে গেছ’ বা ‘তোমার হাতের রান্না ভালো না’—এই জাতীয় আত্মঘাতী মন্তব্য আজ করবেন না।
ধনু
দিনটি প্রচণ্ড ব্যস্ততায় কাটবে। কাজ শেষ করতে করতে নাভিশ্বাস উঠবে। মানসিক চাপ বাড়তে পারে। অফিসের বসের চেহারা দেখলে যদি মনে হয় কামড়ে দিই, তবে একটা চকলেট খেয়ে নিন। গুরুজনদের সঙ্গে মনোমালিন্য এড়িয়ে চলুন।
মকর
ইতিবাচক শক্তি আপনার সঙ্গে আছে। গুরুত্বপূর্ণ কোনো মানুষের সঙ্গে দেখা হতে পারে, যিনি আপনার জীবন বদলে দিতে পারেন। সবকিছু দ্রুত করার চক্করে জুতা উল্টো পায়ে পরে ফেলবেন না। পকেটমার থেকে সাবধান থাকুন, আজ আপনার পকেটে অনেকের নজর আছে।
কুম্ভ
শত বাধা সত্ত্বেও আজ সফল হবেনই। বাড়িতে আজ অতিথি সমাগম হতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলার সম্ভাবনা আছে। বাড়ির বড়দের সঙ্গে তর্কে যাবেন না। কারণ, শেষ পর্যন্ত তাদের কথাই ঠিক হয় (নয়তো তাদের হাতে লাঠি থাকে)।
মীন
সঞ্চয় নিয়ে চিন্তা বাড়বে। খরচ নিয়ন্ত্রণ না করলে মাসের শেষে শুধু মুড়ি খেয়ে থাকতে হবে। সঞ্চয় খোয়ানোর ভয় আছে। আজ অনলাইনে ‘ডিসকাউন্ট’ দেখে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। মনে রাখবেন, যেটা আপনার দরকার নেই, সেটা এক টাকায় পেলেও আসলে ওটা লোকসান।

মেষ
আত্মবিশ্বাস একেবারে হিমালয়ের চূড়ায়। পৈতৃক সম্পত্তি পাওয়ার যোগ আছে। বাতের ব্যথায় কষ্ট পেতে পারেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় নিজেকে স্পাইডারম্যান ভাববেন না। বেশি লাফঝাঁপ করলে কপালে হাড়ের ডাক্তার আছে। সকাল-সন্ধ্যা রিজিক বৃদ্ধির দোয়া করতে থাকুন।
বৃষ
শরীর চনমনে থাকবে। জীবনসঙ্গীর দেখা পাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। যারা সিঙ্গেল, তারা আজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বেশি সময় নষ্ট করবেন। রাজনীতিবিদদের জন্য দিনটি ভালো, মানে আজ বেশি মিথ্যা বললেও কেউ ধরবে না! তবে অ্যাকাউন্ট্যান্টরা সাবধান! হিসাবে ভুল করলে বস আপনাকে ‘ডেবিট’ করে দেবে।
মিথুন
বুদ্ধির জোরে শত্রুকে কুপোকাত করবেন। তবে খরচ হবে পাগলের মতো। পকেট থেকে টাকা আজ যেন ডানার সাহায্যে উড়ে যেতে চাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের জন্য কর্মচারীদের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার চান্স আছে। চা খাওয়ার সময় চিনির বদলে কর্মচারীর ওপর ঝাল মেটাবেন না।
কর্কট
চাঁদ আর মঙ্গলের মিলন আপনার রাশিতেই হচ্ছে! আপনি আজ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। পছন্দের জায়গায় ট্রান্সফার বা ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে। মিথ্যা বদনাম থেকে সাবধান। কেউ যদি বলে ‘ভাই, তোর ফোনটা একটু দিবি?’ —দেবেন না! ওটা আপনার চরিত্রহননের প্রথম ধাপ হতে পারে।
সিংহ
আত্মীয়রা আজ আপনার পেছনে কাঠি করার চেষ্টা করবে। সন্তানের উন্নতিতে আপনার বুক আজ কয়েক ইঞ্চি উন্নত হবে। কর্মক্ষেত্রে একদম শেষ মুহূর্তে কাজ আটকে যেতে পারে। মানে গোলপোস্ট পর্যন্ত গিয়ে বল বাইরে মেরে আসার মতো অবস্থা। শান্ত থাকুন, স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে সকালে ঝগড়া করে দিনটি মাটি করবেন না।
কন্যা
পড়াশোনায় সাফল্য আসবে। প্রেমের ক্ষেত্রে দিনটি দারুণ রোমান্টিক। স্ত্রীর কোনো কাজে থমকে যেতে পারেন (হয়তো ভালো রান্না, নয়তো বড় শপিং লিস্ট)।
পেশি বা স্নায়ুর সমস্যায় ভুগতে পারেন। জিমের ট্রেইনারের কথা শুনে বেশি ভারী ওজন তুলতে যাবেন না, কোমর সোজা করতে কালঘাম ছুটে যাবে।
তুলা
বিনিয়োগের জন্য দিনটি দারুণ। দীর্ঘদিনের কোনো ঝুলে থাকা কাজ আজ শেষ হবে। অন্যদের সঙ্গে খুশি ভাগ করুন, কিন্তু ক্রেডিট কার্ডের পাসওয়ার্ড ভাগ করবেন না। আজ কেউ আপনাকে উল্টোপাল্টা বুঝিয়ে টাকা ধার নিতে পারে। মনে রাখবেন, ধার দেওয়া টাকা আর হারানো দাঁত—একই জিনিস!
বৃশ্চিক
উপার্জনের পথ মসৃণ হবে। মানে আজ দু-টাকা বেশি আসার সম্ভাবনা। প্রেমে বিবাদ এমনকি বিচ্ছেদ পর্যন্ত হতে পারে! আপনার খিটখিটে মেজাজ আজ বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই সঙ্গীকে ‘তুমি মোটা হয়ে গেছ’ বা ‘তোমার হাতের রান্না ভালো না’—এই জাতীয় আত্মঘাতী মন্তব্য আজ করবেন না।
ধনু
দিনটি প্রচণ্ড ব্যস্ততায় কাটবে। কাজ শেষ করতে করতে নাভিশ্বাস উঠবে। মানসিক চাপ বাড়তে পারে। অফিসের বসের চেহারা দেখলে যদি মনে হয় কামড়ে দিই, তবে একটা চকলেট খেয়ে নিন। গুরুজনদের সঙ্গে মনোমালিন্য এড়িয়ে চলুন।
মকর
ইতিবাচক শক্তি আপনার সঙ্গে আছে। গুরুত্বপূর্ণ কোনো মানুষের সঙ্গে দেখা হতে পারে, যিনি আপনার জীবন বদলে দিতে পারেন। সবকিছু দ্রুত করার চক্করে জুতা উল্টো পায়ে পরে ফেলবেন না। পকেটমার থেকে সাবধান থাকুন, আজ আপনার পকেটে অনেকের নজর আছে।
কুম্ভ
শত বাধা সত্ত্বেও আজ সফল হবেনই। বাড়িতে আজ অতিথি সমাগম হতে পারে। সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলার সম্ভাবনা আছে। বাড়ির বড়দের সঙ্গে তর্কে যাবেন না। কারণ, শেষ পর্যন্ত তাদের কথাই ঠিক হয় (নয়তো তাদের হাতে লাঠি থাকে)।
মীন
সঞ্চয় নিয়ে চিন্তা বাড়বে। খরচ নিয়ন্ত্রণ না করলে মাসের শেষে শুধু মুড়ি খেয়ে থাকতে হবে। সঞ্চয় খোয়ানোর ভয় আছে। আজ অনলাইনে ‘ডিসকাউন্ট’ দেখে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। মনে রাখবেন, যেটা আপনার দরকার নেই, সেটা এক টাকায় পেলেও আসলে ওটা লোকসান।

চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কে বাঘ দেখা যায় অনায়াসেই। তবে জঙ্গলে বাঘকে তার নিজের পরিবেশে দেখার যে আনন্দ কিংবা রোমাঞ্চ, তার কোনো তুলনা নেই। বাঘ দিবসে পৃথিবীর এমন কিছু জঙ্গলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব, যেখানে ভাগ্য ভালো থাকলে বুনো পরিবেশে রাজকীয় এই প্রাণীটির দেখা পেয়ে যেতে পারেন। অবশ্য এখানে বলে রাখা ভালো,
২৯ জুলাই ২০২৩
জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা পেরিয়ে এগিয়ে চলেছি আমরা। স্নিগ্ধ সকাল। মহাসড়কে সূর্যের আভা পড়েছে তির্যকভাবে। আমরা যাচ্ছি সুনামগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে ভারত সীমান্ত গোয়া ধর্মপাশা উপজেলায় মহিষখোলা গ্রামে। সেখানে ঘুমিয়ে আছেন একাত্তরের বীর শহীদেরা।
৪ ঘণ্টা আগে
ঝরনাপাখি। নামে যার সঙ্গে ঝরনা জড়িয়ে, তার সঙ্গে ঝরনার সম্পর্ক যে নিবিড় হবে, সেটা না বললেও চলে। এই অপার্থিব সুন্দর পাখির বাহারি বাংলা নামের তালিকাও বেশ সমৃদ্ধ—নীলাম্বর জলখঞ্জরী, নীল পানগির্দি, ঝরনাপাখি, নীল কপালিগির্দি, নীলচে লালগির্দি ইত্যাদি।
৫ ঘণ্টা আগে
বছরের শেষের দিকে এসে পর্যটন খাতে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে দেখা গেছে, ভারতের পর্যটন প্রসার বাজেট সীমাবদ্ধতার মধ্যে পড়েছে। দেশটির এই অবস্থায় লাভবান হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রতিযোগীরা।
৬ ঘণ্টা আগে