Ajker Patrika

কোন যুগে মানুষ কত সময় কাজ করতেন, জানালেন গবেষকেরা

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ৪০
একটা সময় মানুষ বছরে ১৮৫ দিন কাজ করতেন। সে কাজ হতো দিনে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। আর এখন এখন দিনে কর্মঘণ্টা বেঁধে দেওয়া হয়েছে সাধারণত ৮ ঘণ্টা। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি
একটা সময় মানুষ বছরে ১৮৫ দিন কাজ করতেন। সে কাজ হতো দিনে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। আর এখন এখন দিনে কর্মঘণ্টা বেঁধে দেওয়া হয়েছে সাধারণত ৮ ঘণ্টা। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

বছরে কাজ করতে হবে মোট ১৮৫ দিন! বিষয়টি ধারণা করতে পারেন এই একুশ শতকে এসে? কিন্তু বাস্তবে একটা সময় মানুষ বছরে ১৮৫ দিনই কাজ করতেন। সে কাজ হতো দিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা। আর এখন?

পুরো পৃথিবীতে এখন দিনে কর্মঘণ্টা বেঁধে দেওয়া হয়েছে সাধারণত আট ঘণ্টা। কোনো কোনো অফিসে বা কারখানায় তা আরও বেশি। রয়েছে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা বা ওভারটাইমের ব্যবস্থা। এ কাজের পর দুই বা এক দিন সাপ্তাহিক ছুটি। এর বাইরে আরও কিছু সরকারি ছুটি থাকে। আমাদের দেশে বছরে সাধারণত ১৫টি সাধারণ ছুটি এবং ১৪টি নির্বাহী আদেশের ছুটি মিলিয়ে ২৯ দিনের ছুটি থাকে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ছুটির সংখ্যা বেশি, বছরে ৭৬ দিন।

ভাবছেন, আগে কী সুন্দর দিন কাটাইত মানুষ—তাই তো? আসলেও তাই। সম্প্রতি একটি গবেষণা হয়েছে, কোন সময় মানুষ কত ঘণ্টা কাজ করতেন, সেটা নিয়ে। গবেষকেরা বেশ চিত্তাকর্ষক তথ্য তুলে এনেছেন সে গবেষণার মাধ্যমে।

পাথর যুগের ইউরোপীয় শিকারি-সংগ্রাহক

শিকারি-সংগ্রাহকদের বিভিন্ন তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নৃতাত্ত্বিক ও প্রত্নতত্ত্ববিদেরা সে সময়ে মানুষের কর্মঘণ্টার একটা অনুমান দাঁড় করিয়েছেন। অর্থনীতিবিদ মার্শাল সালিন্স তাঁর ‘দ্য অরিজিনাল অ্যাফ্লুয়েন্ট সোসাইটি’ বইয়ে লিখেছিলেন, শিকারি-সংগ্রাহক সমাজ সাধারণত আধুনিক শিল্পকারখানার শ্রমিকদের তুলনায় কম সময় কাজ করত। দিনে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা জীবিকা নির্বাহের কাজে ব্যয় হতো। খাবার সহজলভ্য থাকলে তারা আরও কম কাজ করত। যেমন ফলের প্রাচুর্য বা বড় কোনো প্রাণী শিকারের পর তাদের হয়তো আরও কম কাজ করতে হতো। উদ্বৃত্ত কর্মঘণ্টা তারা ব্যয় করত ধর্মীয় আচার, মরদেহ সৎকার/দাফন, গুহাচিত্র আঁকার মতো বিভিন্ন কাজে।

প্রাচীন মিসরের শ্রমিক ও রোমের কারিগর

ডিয়ের এল-মেদিনা গ্রামে বসবাসরত কারিগরদের কাজের রেকর্ডে দেখা যায়, রাজপরিবারের সমাধিতে কাজ করা কারিগরেরা প্রতি ১০ দিনের ৮ দিন কাজ করতেন। অন্য দুই দিন তাঁরা বিশ্রাম নিতেন। বাস্তবে ৫০ দিনের মধ্যে মাত্র ১৮ দিন তাঁরা কাজ করতেন। বাকি সময়টা ব্যয় হতো ধর্মীয় উৎসব ও পরিবারের বিভিন্ন কাজে। এ ছাড়া কিছু সময় তাঁরা ব্যয় করতেন হস্তশিল্প তৈরিতে। এদিকে প্রাচীন রোমানরা প্রচুর অবসর সময় পেতেন। সে সময় তাঁরা কাটাতেন গোসলখানায় কিংবা সার্কাস ম্যাক্সিমাসে ঘোড়দৌড় দেখে। গ্ল্যাডিয়েটরের যুদ্ধ কিংবা থিয়েটারে অভিনয় দেখেও অবসর সময় কাটত রোমানদের। এসব ছিল তাঁদের বিনোদনের অংশ।

অ্যাজটেক সাম্রাজ্যের কারিগর

চৌদ্দ শতকের অ্যাজটেক সাম্রাজ্যের কারিগরেরা দিনে ৯ ঘণ্টা কাজ করতেন। সপ্তাহে চার দিন। পঞ্চম দিন ছিল বাজার করার জন্য নির্দিষ্ট। বছরে ১৮টি উৎসবের দিনসহ মোট ৯১ দিন কাজ থেকে বিরত থাকতেন অ্যাজটেকের কারিগরেরা। এ ৯১ দিনের মধ্যে ধর্মীয় উৎসব এবং মাসের শুরুতে বিশেষ উৎসব উদ্‌যাপিত হতো।

সতেরো থেকে বিশ শতকের ইউরোপের শ্রমিক

সতেরো শতকের মাঝামাঝি ফ্রান্সে নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠতে শুরু করে। এ কারখানাগুলোতে শ্রমিকেরা যন্ত্রপাতির মাধ্যমে কাজ করতেন এবং তাঁদের জীবনযাত্রা সাধারণত কারিগরদের চেয়ে তুলনামূলক কঠিন ছিল। সে সময় ফ্রান্সের শ্রমিকদের কাজের সময় ছিল ১২ ঘণ্টা। এর মধ্যে দুই ঘণ্টা খাওয়া ও বিশ্রামের জন্য বরাদ্দ। এ ছাড়া তাঁদের জন্য বছরে ৫২টি রোববার, বিশ্রামের জন্য ৯০ দিন ও ৩৮টি ধর্মীয় ছুটির দিন বরাদ্দ ছিল। সব মিলিয়ে তাঁরা ১৮৫ দিন কাজ করতেন।

ইতিহাসবিদ হ্যান্স-জোয়াকিম বোথের গবেষণায় দেখা যায়, লন্ডনের শ্রমিকেরা ১১ ঘণ্টা করে সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজ করতেন। সোমবার সেখানে ‘সেন্ট মানডে’ নামে পরিচিত ছিল। এ দিন অনেক শ্রমিক ছুটি কাটাতেন। সব মিলিয়ে তাঁদের মোট ৫৩টি ধর্মীয় ছুটি ছিল। শিল্পবিপ্লবের সময় শ্রমিকেরা ছিলেন সবচেয়ে পরিশ্রমী। উনিশ শতকের ইংল্যান্ডের কারখানাগুলোতে শ্রমিকেরা সপ্তাহে ছয় দিন ১৬ ঘণ্টা করে কাজ করতেন। কেবল রোববার, বড়দিন ও গুড ফ্রাইডে ছিল ছুটি। ১৯৪০ সালে সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজের আইন পাস হয়। তখন বছরে ৮টি জাতীয় ছুটি, ১০ দিনের বেতনসহ ছুটি জনপ্রিয়তা পায়।

একুশ শতকের নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্র

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নেদারল্যান্ডসের প্রাপ্তবয়স্কদের সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা বিশ্বে সবচেয়ে কম—মাত্র ২৯ ঘণ্টা। অর্থাৎ দেশটিতে একজন মানুষ গড়ে দৈনিক ৫ দশমিক ৮ ঘণ্টা কাজ করেন। নেদারল্যান্ডসের সরকার অনুমোদিত ছুটি বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন, মাত্র সাত দিন। সরকার অনুমোদিত বার্ষিক বেতনসহ ছুটি ২০ দিন।

নেদারল্যান্ডসে মানুষের দৈনিক গড় কর্মঘণ্টা ও সরকারি ছুটি দুটিই কম। দেশটিতে একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে কাজ করেন ৫ দশমিক ৮ ঘণ্টা। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি
নেদারল্যান্ডসে মানুষের দৈনিক গড় কর্মঘণ্টা ও সরকারি ছুটি দুটিই কম। দেশটিতে একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে কাজ করেন ৫ দশমিক ৮ ঘণ্টা। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

অন্যদিকে ‘ইউএস ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিকস’-এর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণ কর্মসপ্তাহ ৩৪ দশমিক ৫ ঘণ্টা। এটি বেশির ভাগ ইউরোপীয় দেশের গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। তবে অনেক মার্কিন কর্মী আরও বেশি সময় কাজ করেন। ইউরোপীয় কর্মীরা যেখানে নিশ্চিত প্রচুর বেতনসহ ছুটি কাটান, সেখানে মার্কিন কর্মীরা বছরে গড়ে ১২ দিন ছুটি পান। এর সঙ্গে যোগ হয় মাত্র ১০টি সরকারি ছুটির দিন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, মার্কিন আইনে কোনো ধরনের বেতনসহ ছুটি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই।

করোনা মহামারির সময় হোম অফিস

করোনাভাইরাসের অতিমারির কালে বাড়ি থেকে কাজ করলেও কর্মীরা আগের চেয়ে বেশি সময় কম্পিউটারে লগ ইন থাকতেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কর্মীরা আগে গড়ে ৯ ঘণ্টা কাজ করলেও করোনাকালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ ঘণ্টায়। বাসা থেকে কাজ করার সময় কর্মীরা গড়ে অতিরিক্ত ২ ঘণ্টা বেশি কাজ করতেন। আর সে জন্যই কর্মঘণ্টা ৯ ঘণ্টা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ১১ ঘণ্টায়।

সূত্র: লাভ মানি, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এমন শর্তের বিয়ে কেউ দেখেনি আগে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সৌদি আল নাদাক ও তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী জামাল আল নাদাক। ২০২০ সালে তাঁরা বিয়ে করেন এমন কিছু শর্তে, যা সম্ভবত পৃথিবীতে আর ঘটেনি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
সৌদি আল নাদাক ও তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী জামাল আল নাদাক। ২০২০ সালে তাঁরা বিয়ে করেন এমন কিছু শর্তে, যা সম্ভবত পৃথিবীতে আর ঘটেনি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

দুবাইয়ের বিলাসী জীবন অনেকের কাছে স্বপ্নের মতো। ঠিক সেই স্বপ্নের জীবনেই ছিলেন ২৬ বছর বয়সী ব্রিটিশ নারী সৌদি আল নাদাক। ২০২০ সালে ব্যবসায়ী জামাল আল নাদাককে বিয়ে করার পর থেকে তাঁর আড়ম্বরপূর্ণ জীবনধারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। কিন্তু সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে তাঁর বিবাহের শর্তাবলি। চমকপ্রদ সেসব শর্ত আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বিয়ের আগে থেকে ছিল ‘নিয়মের তালিকা’

সৌদি জানান, তাঁদের বিয়েতে দুজনের জন্যই কিছু কঠোর নিয়ম বেঁধে দেওয়া ছিল। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, কোনো পক্ষই বিপরীত লিঙ্গের বন্ধু রাখতে পারবেন না। যাতে সন্দেহ বা বিবাদ তৈরি না হয়। এ ছাড়া সৌদিকে বাধ্যতামূলকভাবে স্বামীর সঙ্গে সব ধরনের ডিভাইসের পাসওয়ার্ড শেয়ার করতে হয় এবং তিনি স্বামীর সঙ্গে না থাকলে ২৪ ঘণ্টা লোকেশন ট্র্যাকিং চালু রাখতে হয়।

শর্ত ছিল, বিয়ের পর সৌদি আল নাদাক এবং তাঁর স্বামী জামাল আল নাদাক কেউ বিপরীত লিঙ্গের বন্ধু রাখতে পারবেন না। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
শর্ত ছিল, বিয়ের পর সৌদি আল নাদাক এবং তাঁর স্বামী জামাল আল নাদাক কেউ বিপরীত লিঙ্গের বন্ধু রাখতে পারবেন না। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সৌদি বলেন, ‘আমাদের মাঝে কোনো গোপনীয়তা নেই। সব সময় লোকেশন অন থাকলে আমরা দুজনই জানি অন্যজন কোথায়, কী করছে।’

বাড়িতে রান্নাঘরে প্রবেশ নিষেধ

বিলাসী জীবনযাপনের আরেকটি অংশ হলো সৌদির কঠোর রুটিন। তিনি ঘরে রান্না করতে পারবেন না, এটিই স্বামীর শর্ত। তাঁর খাবারের ব্যবস্থা হয় রেস্টুরেন্টে বা ব্যক্তিগত শেফের মাধ্যমে। বাইরে যাওয়া থেকে শুরু করে ঘরে থাকা সব সময় তাঁকে নিখুঁতভাবে সেজে থাকতে হয়। প্রতিদিন মেকআপ এবং হেয়ারস্টাইল করতে পেশাদারদের সহায়তা নিতে হয়। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁকে সতর্ক থাকতে হয়, যেন স্বামী বা তাঁর পরিবারের প্রতি কোনো অসম্মানের ইঙ্গিত না থাকে।

সৌদি আল নাদাক। স্বামীর শর্ত ছিল, তিনি ঘরে রান্না করতে পারবেন না। তাঁর খাবারের ব্যবস্থা হয় রেস্টুরেন্টে বা ব্যক্তিগত শেফের মাধ্যমে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
সৌদি আল নাদাক। স্বামীর শর্ত ছিল, তিনি ঘরে রান্না করতে পারবেন না। তাঁর খাবারের ব্যবস্থা হয় রেস্টুরেন্টে বা ব্যক্তিগত শেফের মাধ্যমে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বিলাসের বিনিময়ে

এই শর্তগুলোর বিনিময়ে সৌদি পেয়েছেন অঢেল সম্পদ ও বিলাসিতা। তাঁর সংগ্রহে আছে দামি হীরার গয়না, ডিজাইনার ব্যাগ, বিরল শিল্পকর্ম। স্বামী জামাল শুধু তাঁর স্বচ্ছন্দের জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলারের একটি ব্যক্তিগত দ্বীপ কিনে দেন, যাতে সৌদি সমুদ্রে সাঁতার কাটতে বা বিকিনি পরতে গিয়ে কোনো তাঁকে দেখে ফেলার শঙ্কায় না থাকেন।

গর্ভধারণের আগে আর্থিক চুক্তি

বিয়ের পর সন্তান ধারণের জন্য সৌদি আল নাদাকের শর্ত ছিল, প্রতি সন্তান জন্মের জন্য তাঁকে দিতে হবে ৩ লাখ ডলার এবং যমজ হলে ৬ লাখ ডলার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বিয়ের পর সন্তান ধারণের জন্য সৌদি আল নাদাকের শর্ত ছিল, প্রতি সন্তান জন্মের জন্য তাঁকে দিতে হবে ৩ লাখ ডলার এবং যমজ হলে ৬ লাখ ডলার। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সৌদি আরও জানান, সন্তান নেওয়ার আগে স্বামীর সঙ্গে একটি বিস্তারিত আর্থিক চুক্তি হয়। তাঁর দাবি ছিল, প্রতি সন্তান জন্মের জন্য ৩ লাখ ডলার এবং যমজ হলে ৬ লাখ ডলার দিতে হবে। শুধু টাকা নয়, এই তালিকায় আরও আছে—

  • মানসিক স্বাস্থ্য থেরাপির সব খরচ স্বামী বহন করবেন।
  • ব্যক্তিগত ট্রেইনার রাখতে হবে।
  • ম্যাসাজের ব্যয় দিতে হবে।
  • জরুরি খরচের জন্য ক্রেডিট কার্ড দিতে হবে।
  • একটি হীরার আংটি দিতে হবে।
  • শিশুর লিঙ্গ অনুযায়ী রং বাছাই করা একটি বারকিন ব্যাগ দিতে হবে।
  • দিতে হবে নতুন গাড়ি।
  • একটি সম্পত্তিতে বিনিয়োগের অর্থ দিতে হবে।

সৌদি বলেন, ‘সন্তান জন্মের পর আমার শরীরের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। তাই এই কষ্টের বিনিময়ে ক্ষতিপূরণ পাওয়াটা ন্যায্য।’ প্রসবের পর পুরো সময় রাতের নার্স, ন্যানি এবং বিউটি টিম রাখাও স্বামীর দায়িত্ব ছিল।

সমালোচনা ও বিতর্ক

সৌদির এই স্বীকারোক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে তাঁর বিলাসী শর্ত এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা না করাকে স্বার্থপরতা ও নির্ভরশীলতার উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। সমালোচকদের দাবি, এমন সম্পর্ক নারী স্বাধীনতা ও পারস্পরিক সমতার ধারণার সঙ্গে বেমানান এবং এটি তরুণদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দিতে পারে।

তবে আরেকটি পক্ষ সৌদির সিদ্ধান্তকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হিসেবে দেখছে। তাদের মতে, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক যদি পরস্পরের সম্মতিতে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সম্পর্ক গড়ে তোলে, তবে তা নৈতিকতার মানদণ্ডে বিচার করা উচিত নয়। কেউ বিলাসিতাকে অগ্রাধিকার দিলে এবং অন্যজন তা গ্রহণ করলে সেটি তাঁদের ব্যক্তিগত সমঝোতার বিষয়।

এক স্ত্রী নীতি দাবি

দুবাইয়ের আইনে একজন পুরুষ চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখতে পারেন। কিন্তু সৌদি দাবি করেন, তিনি স্বামীর একমাত্র স্ত্রী। যদিও তিনি খোলাখুলিভাবে বলেন, ‘যদি কখনো আর কেউ আসে, তবে আমার জন্য আলাদা একটি প্রাসাদ লাগবে। আমি কারও সঙ্গে ঘর শেয়ার করব না।’

সূত্র: ডেইলি মেইল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যেসব খাবার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশ এবং শেখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ঠান্ডা পানির মাছ। ছবি: ফ্রিপিক
মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশ এবং শেখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ঠান্ডা পানির মাছ। ছবি: ফ্রিপিক

আমরা প্রায় সবাই জানি, গাজর চোখের জন্য ভালো এবং দুধ হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী। তবে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কী খাবেন, তা নিয়ে অনেকের ধারণা নেই। বাস্তবতা হলো, মস্তিষ্কের সঠিক কার্যকারিতা এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে খাবারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিউরোসায়েন্টিস্ট লিসা মোসকোনি বলেন, ‘খাবার আমাদের মস্তিষ্ক কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। কারণ, আমাদের মস্তিষ্ক পুষ্টির ওপর নির্ভরশীল। তাই শরীরের অন্য অঙ্গের মতো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কী খেতে হবে, সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।’

শিশুদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য আরও বেশি গুরুত্ব বহন করে। কারণ, তাদের মস্তিষ্ক দ্রুত নতুন নিউরন তৈরি এবং বিকাশ লাভ করে। প্রথম কয়েক বছরে শিশুদের মস্তিষ্ক এত দ্রুত পরিবর্তন হয় যে এক শিশুর মস্তিষ্কে নিউরনের সংখ্যা মিল্কিওয়েতে থাকা তারার থেকে বেশি হতে পারে। এ জন্য শিশুদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের জন্য মোট ৪৫টি পুষ্টি উপাদান চিহ্নিত করেছেন; যেগুলোর মধ্যে প্রোটিন, জিংক, আয়রন, কোলিন, ফলেট, আয়োডিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি১২ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড উল্লেখযোগ্য। এসব উপাদান শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশে এবং বড়দের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

বেরি

ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, রাসবেরি, স্ট্রবেরি ইত্যাদি বেরি মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই ফলগুলোতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় এগুলো মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে এবং নিউরোট্রান্সমিটার (স্নায়ু সংকেত) তৈরিতে সাহায্য করে। আপনি বেরি দই বা চকলেটে ডুবিয়ে খেতে পারেন অথবা এগুলো দিয়ে সুস্বাদু ডেজার্ট তৈরি করতে পারেন।

আলুতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড মস্তিষ্কে নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে, যা আমাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রাতে ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে। ছবি: ফ্রিপিক
আলুতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড মস্তিষ্কে নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে, যা আমাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রাতে ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে। ছবি: ফ্রিপিক

আলু

আলুতে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড মস্তিষ্কে নিউরোট্রান্সমিটার তৈরিতে সাহায্য করে, যা আমাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রাতে ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে। আলু একটি সহজ এবং পুষ্টিকর খাবার, যা শিশুদের খাবারে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

মিষ্টিআলু

মিষ্টিআলুতে থাকা প্রচুর ভিটামিন এই স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ এবং কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয়। মিষ্টিআলু সরাসরি খেতে ভালো না লাগলে বেকড, ফ্রাই বা স্যুপে দিয়ে খেতে পারেন। এটি স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

মাছ

মস্তিষ্কের প্রায় ৫০ শতাংশ চর্বি দিয়ে তৈরি। এই চর্বির মধ্যে ডোকোসাহেক্সেনিক অ্যাসিড বা ডিএইচএ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এটি মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশ এবং শেখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ঠান্ডা পানির মাছ; যেমন স্যামন, মাকেরেল, সারডিন ইত্যাদি মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী।

ডার্ক চকলেট

ডার্ক চকলেটে ট্রিপটোফ্যান নামক একটি উপাদান থাকে। এটি আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামের একটি রাসায়নিক তৈরিতে সাহায্য করে। সেরোটোনিন আমাদের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। তবে অতিরিক্ত চিনি ও ক্যালরি যুক্ত চকলেট থেকে দূরে থাকা উচিত। কারণ, তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

ডিম

ডিমে কোলিন নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে। এটি মস্তিষ্কের সঠিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। কোলিন মস্তিষ্কের কোষগুলোকে স্বাস্থ্যবান করে তোলে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। ফলে চিন্তা করার ক্ষমতা ও শেখার শক্তি বাড়ে এবং মনোযোগ বজায় রাখতে সহায়তা হয়। ডিম শিশুদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পুষ্টিকর খাবার।

মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে শুধু খাবার নয়, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানোও জরুরি। শিশুদের জন্য খাবার গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে তাদের কাছে পুষ্টিকর খাবারগুলো বিভিন্নভাবে তৈরি করে দিতে হবে। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যদেরও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহী করতে হবে। মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশ এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ওপরের পুষ্টিকর খাবারগুলো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে তা আপনার এবং আপনার পরিবারের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে।

সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক পর্যটনে শীর্ষে ব্যাংকক, আকর্ষণীয় শহর প্যারিস

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ২৬
ইউরো মনিটর ইন্টারন্যাশনালের করা তালিকায় ২০২৫ সালের আকর্ষণীয় শহর নির্বাচিত হয়েছে প্যারিস। ছবি: উইকিপিডিয়া
ইউরো মনিটর ইন্টারন্যাশনালের করা তালিকায় ২০২৫ সালের আকর্ষণীয় শহর নির্বাচিত হয়েছে প্যারিস। ছবি: উইকিপিডিয়া

বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরের তালিকার শীর্ষে আবারও প্যারিস। ২০২৫ সালে শুধু এই শহরে ১ কোটি ৮০ লাখের বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছে। পরপর পঞ্চমবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় শহরের তালিকায় প্রথম স্থান অক্ষুণ্ন রেখেছে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস। ডেটা অ্যানালিটিক প্রতিষ্ঠান ইউরো মনিটর ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত ‘টপ ১০০ সিটি ডেস্টিনেশনস ইনডেক্স ২০২৫’-এ ফ্রান্সের রাজধানী সেরা হয়েছে।

২০২৫ সাল প্যারিসের জন্য ছিল বেশ ব্যস্ত বছর। এ বছর নটর ডেম ক্যাথেড্রাল পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্যারিসের ফুটবল ক্লাব পিএসজি প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের জয় করে এ বছরেই। সেই ট্রফি দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফুটবলভক্তদের ভিড় হয় প্যারিসে। সব মিলিয়ে পর্যটকদের আগমন ছিল ব্যাপক। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পর্যটন নীতি, অবকাঠামো এবং প্রস্তুতির দিক থেকে এগিয়ে থাকায় শহরটি এই চাপ সামলাতে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল।

ইউরো মনিটরের এই সূচকে পৃথিবীর বিভিন্ন শহরের সামগ্রিক আকর্ষণীয় দিকগুলো মূল্যায়ন করা হয়। এর মানদণ্ডের মধ্যে রয়েছে পর্যটন ও অর্থনৈতিক কার্যকারিতা, টেকসই ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, অবকাঠামো ও পর্যটন নীতি।

এ বছরও তালিকায় ইউরোপ আধিপত্য বজায় রেখেছে। তালিকার শীর্ষ ১০টি শহরের মধ্যে ছয়টিই ইউরোপের। প্যারিসের পর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মাদ্রিদ। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে রোম ও মিলান। সপ্তমে আমস্টারডাম আর অষ্টমে উঠে এসেছে বার্সেলোনার নাম।

অন্যদিকে, লন্ডন গত বছর টপ টেন থেকে ছিটকে ১৩তম হয়েছিল। এবার আরও নিচে নেমে জায়গা হয়েছে ১৮ নম্বরে। এর ওপরে ১৭ নম্বরে আছে হংকং এবং নিচে ১৯ নম্বরে কিয়োটো। পর্যটন অবকাঠামোর দিক থেকে লন্ডন বিশ্বে চতুর্থ হলেও নীতি, নিরাপত্তা ও টেকসই ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমনের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ব্যাংকক। ছবি: ফ্রিপিক
আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমনের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ব্যাংকক। ছবি: ফ্রিপিক

আন্তর্জাতিক পর্যটনে শীর্ষে ব্যাংকক

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশের রাজধানীগুলো ভালো অবস্থানে রয়েছে তালিকায়। টোকিও রয়েছে তৃতীয় স্থানে, সিঙ্গাপুর নবম আর সিউল দশম। টোকিওর বিমানবন্দর সম্প্রসারণে বড় বিনিয়োগের কারণে পর্যটন অবকাঠামো র‍্যাঙ্কিংয়েও শহরটি তৃতীয় স্থানে রয়েছে। নারিতা এয়ারপোর্টে নতুন রানওয়ে এবং দ্বিতীয় রানওয়ের সম্প্রসারণ—সব মিলিয়ে ২০৩৯ সালের মধ্যে যাত্রী ধারণক্ষমতা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা চলছে জাপানে।

আমেরিকা মহাদেশ থেকে শীর্ষ ১০-এর একমাত্র শহর নিউইয়র্ক। এর অবস্থান তালিকার ৬ নম্বরে। লস অ্যাঞ্জেলেস পাঁচ ধাপ এগিয়ে এখন ১৩তম অবস্থানে। পর্যটন পারফরম্যান্সের দিক থেকে বিশ্বে সবার ওপরে আছে অরল্যান্ডো। দেশীয় পর্যটনের বড় চাপ, ইউনিভার্সাল অরল্যান্ডোর নতুন ‘এপিক ইউনিভার্স’ থিম পার্ক, সি ওয়ার্ল্ড ও ডিজনি ওয়ার্ল্ডের বড় উন্নয়ন মিলিয়ে অরল্যান্ডো ছিল চলতি বছরের অন্যতম আকর্ষণ।

আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমনের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে ব্যাংকক। ইউরো মনিটরের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর শহরটিতে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩ কোটি ৩ লাখ। দ্বিতীয় স্থানে হংকং। এর পর্যটক সংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি ৩২ লাখ। ২ কোটি ২৭ লাখ পর্যটক নিয়ে তৃতীয় লন্ডন এবং প্রায় ২ কোটি ৪ লাখ পর্যটক নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে আছে জুয়ার নগরী ম্যাকাউ।

২০২৫ সালে পর্যটন প্রবণতায় বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরগুলো এখন শুধু দর্শনার্থীর সংখ্যা নয়, এর সঙ্গে তাদের থাকার মেয়াদ, ব্যয় এবং স্থানীয় পরিবেশ ও সংস্কৃতির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে।

নিরাপত্তা চাহিদা, বাড়তি ভ্রমণ, অতিরিক্ত ভিড় এবং মূল্যস্ফীতির কারণে অনেক দেশ নতুন প্রবেশ ফি, ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন ব্যবস্থা এবং আরও কড়াকড়ি নীতি বাস্তবায়ন করছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ২০২৫ সালে ভিসা ও ভ্রমণ ফি বাড়িয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও আগামী বছর নতুন ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে। জাপান ২০২৮ সালের মধ্যে নতুন ভিসা ফি ও ই-অথরাইজেশন ব্যবস্থা চালুর কথা বিবেচনা করছে।

ইউরো মনিটর ইন্টারন্যাশনালের ২০২৫ সালের শীর্ষ ১০ সিটি ডেস্টিনেশন

১. প্যারিস

২. মাদ্রিদ

৩. টোকিও

৪. রোম

৫. মিলান

৬. নিউইয়র্ক

৭. আমস্টারডাম

৮. বার্সেলোনা

৯. সিঙ্গাপুর

১০. সিউল

২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যার ভিত্তিতে শীর্ষ ১০ শহর

১. ব্যাংকক (৩ কোটি ৩ লাখ)

২. হংকং (২ কোটি ৩২ লাখ)

৩. লন্ডন (২ কোটি ২৭ লাখ)

৪. ম্যাকাউ (২ কোটি ৪ লাখ)

৫. ইস্তাম্বুল (১ কোটি ৯৭ লাখ)

৬. দুবাই (১ কোটি ৯৫ লাখ)

৭. মক্কা (১ কোটি ৮৭ লাখ)

৮. আনাতোলিয়া (১ কোটি ৮৬ লাখ)

৯. প্যারিস (১ কোটি ৮৩ লাখ)

১০. কুয়ালালামপুর (১ কোটি ৭৩ লাখ)

সূত্র: সিএনএন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে শুষ্ক চুলের যত্নে সেরা স্যালন ট্রিটমেন্ট

ফারিয়া রহমান খান
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৫
নিয়মিত তেল, হেয়ার প্যাক ও মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্যালন ট্রিটমেন্ট চুল করে মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
নিয়মিত তেল, হেয়ার প্যাক ও মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্যালন ট্রিটমেন্ট চুল করে মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

রুক্ষ ও শুষ্ক চুল আমাদের সৌন্দর্য ম্লান করে দেয়। এই রুক্ষ-শুষ্ক ভাব দূর করে চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে দরকার যত্নের। নিয়মিত তেল, হেয়ার প্যাক ও মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্যালন ট্রিটমেন্ট চুল করে মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে আপনার চুলের ধরন ও সমস্যা অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট বেছে নিতে হবে।

চুল রুক্ষ হওয়ার কারণ

অতিরিক্ত শ্যাম্পু, হেয়ার ড্রায়ার, কার্লিং আয়রন বা ফ্ল্যাট আয়রনের অতিরিক্ত ব্যবহার, পার্ম বা হেয়ার ডাইয়ের মতো রাসায়নিকের ব্যবহার এবং খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ক্যারোটিন ও বায়োটিনের মতো পুষ্টি উপাদানের অভাব, চুলের রুক্ষতা ও শুষ্কতার প্রধান কারণ।

চুল মসৃণ ও প্রাণবন্ত রাখতে জেনে নিন কয়েকটি স্যালন ট্রিটমেন্ট।

রুক্ষ ও শুষ্ক চুল আমাদের সৌন্দর্য ম্লান করে দেয়। এই রুক্ষ-শুষ্ক ভাব দূর করে চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে দরকার যত্নের। ছবি: পেক্সেলস
রুক্ষ ও শুষ্ক চুল আমাদের সৌন্দর্য ম্লান করে দেয়। এই রুক্ষ-শুষ্ক ভাব দূর করে চুলের স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে দরকার যত্নের। ছবি: পেক্সেলস

সিস্টেইন ট্রিটমেন্ট

এই ট্রিটমেন্টে কেরাটিন প্রোটিনে উপস্থিত প্রাকৃতিক অ্যামিনো অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। প্রথমে চুল ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এরপর চুলের গোড়া এড়িয়ে সিস্টেইন কমপ্লেক্স প্রয়োগ করে ৪৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে শেষে ব্লো ড্রাই ও ফ্ল্যাট আয়রন করা হয়। এটি চুলের গভীরে প্রবেশ করে চুল মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে এবং চুলের রুক্ষ ভাব দূর করে। এই ট্রিটমেন্টে চুল অতিরিক্ত স্ট্রেট করা হয় না। ফলে চুলে একটা প্রাকৃতিক ভাব থাকে।

কেরাটিন ট্রিটমেন্ট

এটি রুক্ষ চুলের জন্য একটি সেমি-পারমানেন্ট সমাধান। কেরাটিন, কন্ডিশনার ও রাসায়নিকের মিশ্রণ ব্যবহার করে রুক্ষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুল মসৃণ ও প্রাণবন্ত করে তোলা হয়। এই ট্রিটমেন্ট ৩ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং চুলের জট ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।

হট-অয়েল ট্রিটমেন্ট

চুলে তাৎক্ষণিক উজ্জ্বলতা দিতে এবং মসৃণ করতে হট-অয়েল ট্রিটমেন্ট খুবই কার্যকর। সাধারণত জলপাই বা নারকেলের তেল হালকা গরম করে ১০ থেকে ২০ মিনিটের জন্য মাথায় ম্যাসাজ করা হয়। তারপর শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়। এটি চুলের গভীরে আর্দ্রতা প্রবেশ করিয়ে চুল প্রাণবন্ত করে। এ ট্রিটমেন্ট রুক্ষ চুলের জন্য খুবই উপকারী।

ময়শ্চার ট্রিটমেন্ট

এই হাইড্রেশন থেরাপি চুলের গভীরে ঢুকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও প্রোটিন সরবরাহ করে। এটি চুল শক্তিশালী করে চুলের আগা ফাটা ও ভেঙে যাওয়া রোধে সহায়ক। ময়শ্চার ট্রিটমেন্টে চুলের বাইরের অংশে একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি হয়, যা চুলকে হিটিং টুলসের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

ডিটক্স ট্রিটমেন্ট

চুল ও মাথার ত্বকে জমে থাকা রাসায়নিক এবং বিভিন্ন পণ্যের অবশিষ্টাংশ দূর করতে দরকার ডিটক্স ট্রিটমেন্ট। এটি মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে এবং চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে। এর ফলে চুল নরম ও মসৃণ হয়। ডিটক্স ট্রিটমেন্ট চুলের বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হেয়ার স্পা

চুলের পুষ্টি সরবরাহ এবং নমনীয়তা বাড়ানোর ক্ল্যাসিক উপায় হলো হেয়ার স্পা করা। এতে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার প্যাক ও ক্রিম ব্যবহার করা হয়। একটি ভালো হেয়ার স্পা ট্রিটমেন্ট আপনার চুল মসৃণ করে জটমুক্ত রাখবে। এ ছাড়া কোনো ক্ষতি ছাড়াই চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও সোজা রাখবে। এটি ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত চুল ঠিক রাখে।

টোনিং ট্রিটমেন্ট

যাঁরা চুল রং করেছেন, এই ট্রিটমেন্ট তাঁদের জন্য। এই ট্রিটমেন্টে চুলের রঙের ত্রুটি সংশোধন করে রঙের স্থায়িত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে তোলা হয়। এটি চুল বিবর্ণ হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এবং উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বজায় রাখে।

হেয়ার গ্লসিং ট্রিটমেন্ট

চুল মসৃণ করে আয়নার মতো উজ্জ্বলতা আনতে হেয়ার গ্লসিং ট্রিটমেন্ট সেরা। এটি চুল কালার করার পরে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য করা হয়। এটি চুলের টেক্সচার উন্নত এবং চুলের রুক্ষতা দূর করে।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত