রায়হান রাশেদ

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো—
ধৈর্যের পুরস্কার পেয়েছিলেন ইউসুফ (আ.)
গতকাল তারাবিতে ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনির শুরুর অংশ পাঠ করা হয়েছিল। আজ শুরুতে বাকি অংশ তিলাওয়াত করা হবে। ইউসুফ (আ.)-এর কাছে স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা শুনে মিসরের বাদশাহ অভিভূত হলেন। খুশি হয়ে তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দিলেন। মুক্তির আগে ইউসুফ (আ.) নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইলেন। জুলেখা বাধ্য হয়ে অপরাধের কথা স্বীকার করলেন। তাঁর সাজানো নাটকের কথা বললেন।
ইউসুফ (আ.) মিসরের অর্থ বিভাগের দায়িত্ব চেয়ে নেন। তখন মিসর ও এর আশপাশে দুর্ভিক্ষ চলছিল। অভাবে পড়ে তাঁর ভাইয়েরা বিশেষ দান পেতে মিসরে আসেন। কয়েকবার সাক্ষাতে পরই ভাইয়েরা তাঁকে চিনতে পারেননি। তবে ইউসুফ চিনতে পেরেও পরিচয় গোপন রাখেন। তিনি তাঁদের শর্ত দেন, পরেরবার ত্রাণ পেতে হলে তাঁদের ছোট ভাই বেনইয়ামিনকে সঙ্গে আনতে হবে। বেনইয়ামিন হলেন ইউসুফ (আ.)–এর সহোদর ভাই।
পরে ভাইয়েরা বেনইয়ামিনকে সঙ্গে করে আবার মিসর আসেন। তখন ছোট ভাইকে কৌশলে নিজের কাছে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)। ভাইদের কাছে বাবা ইয়াকুবের জন্য নিজের পরনের জামা দিয়ে বলেন, ‘এটা আমার আব্বার চেহারার ওপর রেখ। এতে তিনি দৃষ্টি পাবেন। ইয়াকুব (আ.) জামার বদৌলতে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিলেন।’ পুত্রশোকে ইয়াকুব (আ.) অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.)–এর জামার ঘ্রাণেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। পরে সপরিবারে মিসরে চলে আসেন।
অনেকের ধারণা, ইউসুফ (আ.) জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেছেন। এটি সত্য নয়। ইউসুফ (আ.) কোনো দিন জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেননি; জুলেখার একপক্ষীয় প্রেম ছিল। ইউসুফ (আ.) প্রেমে মজেছেন এবং তাঁকে যৌন নিপীড়ন করেছেন—জুলেখা তাঁকে এই মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.) তা অস্বীকার করেন এবং একটি দুগ্ধপোষ্য শিশু ইউসুফ (আ.)-এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিল। সত্য বুঝতে পারার পরও জুলেখার সম্মান বাঁচাতে তাঁর স্বামী কিতফির হজরত ইউসুফ (আ.)-কে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করে ধৈর্য ধরে দীর্ঘ দিন কারাবন্দী থেকেছেন ইউসুফ (আ.), যার সুফলও তিনি পেয়েছেন। নবী হয়েছেন। হয়েছেন মিসরের ধন-ভান্ডারের রক্ষক।
ইউসুফ (আ.) কি জুলেখাকে বিয়ে করেছিলেন
স্বামীর মৃত্যুর পর জুলেখার সঙ্গে ইউসুফ (আ.)-এর বিয়ে হয়েছিল কি না—এ বিষয়ে কোরআন-হাদিস থেকে স্পষ্ট কিছুই জানা যায় না। তবে ঐতিহাসিক ও মুফাসসিরগণ বিচ্ছিন্ন সনদে উল্লেখ করেছেন যে, স্বামী কিতফিরের মৃত্যুর পর এবং তওবা করার পর ইউসুফ (আ.)-এর সঙ্গে জুলেখার বিয়ে হয়েছিল এবং তাঁদের ঘরে দুটি ছেলে সন্তানও হয়েছিল। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতিম: ৮ / ৩৯০; তাফসিরে তবারি: ১৬ / ১৫১; আদ-দুররুল মানসুর: ৪ / ৫৫৩; আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১ / ১৯৬-১৯৭)
ইসরাইলি বর্ণনা (তাওরাত, ইঞ্জিল ও অন্যান্য সহিফা) থেকেই এসব ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। যার সত্য-মিথ্যা—কোনোটাই প্রমাণ করা যায় না। তাই বিষয়টি ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস বিরোধী না হলে সত্য-মিথ্যা আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে দিয়ে এসব বর্ণনা বিশ্বাস করা যেতে পারে। (বুখারি, মিশকাত: ১৫৫)
সুরা রাদ-এ আল্লাহর সৃষ্টির কথা
সুরা রাদ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৪৩। এটি কোরআনের ১৩ নম্বর সুরা। এ সুরার শুরু থেকে ১৮ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ কর্তৃক আসমান-জমিন, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, পাহাড়-পর্বত ও নদী-নালা, লতাগুল্ম, বৈচিত্র্যময় স্বাদ ও রঙের ফলমূলের সৃষ্টি, প্রকাশ্য-গোপন ও স্ত্রীর গর্ভে যা আছে তার খবর আল্লাহ জানেন, বৃষ্টি বর্ষণ, মেঘমালা এবং আল্লাহর ডাকে বান্দার সাড়া দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে।
সুরা রাদ-এ বর্ণিত বিবেকবানদের ৯ গুণ
সুরা রাদের ২০ থেকে ২৪ নম্বর আয়াতে বিবেক সম্পন্নদের ৯টি গুণের উল্লেখ রয়েছে। মুত্তাকিরা—
১. আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেন
২. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না
৩. আল্লাহর নির্দেশিত সম্পর্ক বজায় রাখেন
৪. আল্লাহকে ভয় করেন
৫. জবাবদিহি খারাপ হওয়াকে ভয় করেন
৬. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ধৈর্য ধারণ করেন
৭. নামাজ প্রতিষ্ঠা করেন
৮. আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করেন
৯. ভালো দিয়ে মন্দ দূর করেন
সুরা ইবরাহিম (আ.)-এর বিষয়বস্তু
সুরা ইবরাহিম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫২। কোরআনুল কারিমের ১৪ তম সুরা এটি। মদিনায় হিজরতের কিছুদিন আগে এটি নাজিল হয়। এতে ইবরাহিম (আ.)-এর সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে এ সুরার নামকরণ করা হয়েছে সুরা ইবরাহিম। এ সুরাতে মৌলিকভাবে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের আলোচনা স্থান পেয়েছে।
আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় নেয়ামত বাড়ে
এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে—বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ, আলো, বাতাস, পানি, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, বৃক্ষ; প্রতিটি জিনিস সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের জন্য। আল্লাহ তাআলা মানুষকে এসব থেকে উপকার ভোগের সুযোগ দিয়েছেন। না চাইতেই দিয়েছেন মহামূল্যবান জীবন, সুস্থতা, উপলব্ধি, প্রখর মেধা ও তীক্ষ্ণ জ্ঞান-বুদ্ধি, নাক, কান, চোখ, মুখ, জিহ্বা, হাত-পাসহ অসংখ্য নেয়ামত। মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি কত করুণা করেছেন, তা বলে, লিখে কিংবা চিন্তা করে শেষ করা যাবে না! বান্দার ওপর আল্লাহর যে পরিমাণ রহমত আছে, তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এসব কিছুর বিনিময়ে আল্লাহ বান্দার কৃতজ্ঞতাবোধ দেখতে পছন্দ করেন। ধীর–স্থির ও প্রশান্ত চিত্তের সেজদা চান। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা চান।
বান্দা আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের প্রশংসা, শুকরিয়া ও গুণকীর্তন করলে, তিনি নেয়ামত আরও বাড়িয়ে দেন। খুশি হয়ে বান্দার ওপর রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতাদের সামনে প্রশংসা করেন। অকৃতার্থ হৃদয়ের প্রতি আল্লাহ শুভদৃষ্টি দেন না। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
পৃথিবীর সব নবী-রাসুল জীবনভর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছেন। মহানবী (সা.) আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় বেশি বেশি নামাজ পড়তেন। ফলে তাঁর পদযুগল ফুলে যেত। অথচ তাঁর আগে-পরের গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিয়েছিলেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ওই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, যে কিছু খেলে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং কিছু পান করলেও আল্লাহর প্রশংসা করে।’ (মুসলিম: ২৭৩৪)
মানুষের কল্যাণে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রার্থনা
সুরা ইবরাহিমের শেষাংশে আল্লাহর কাছে ইবরাহিম (আ.)-এর বিশেষ দোয়ার উল্লেখ রয়েছে। সে দোয়ায় তিনি দেশ, নিজের সন্তান–সন্ততি, পরবর্তী বংশধরদের জন্য সুকল্যাণ, তাদের মধ্যে বিশ্বাসী মুসলমান ও নামাজি সন্তান কামনা করেছেন। ক্ষমা চেয়েছেন নিজের জন্য, পিতার জন্য ও সব মুমিন-মুসলমানের জন্য।
এ ছাড়া স্তম্ভহীন আকাশে আল্লাহর নিদর্শন, কোরআনের মাহাত্ম্য, আল্লাহর জিকিরে অন্তরে প্রশান্তি লাভ, নবী-রাসুলদের সঙ্গে কাফেরদের আচরণ ও পরিণতি, হক-বাতিলের পরিচয় ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো—
ধৈর্যের পুরস্কার পেয়েছিলেন ইউসুফ (আ.)
গতকাল তারাবিতে ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনির শুরুর অংশ পাঠ করা হয়েছিল। আজ শুরুতে বাকি অংশ তিলাওয়াত করা হবে। ইউসুফ (আ.)-এর কাছে স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা শুনে মিসরের বাদশাহ অভিভূত হলেন। খুশি হয়ে তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দিলেন। মুক্তির আগে ইউসুফ (আ.) নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইলেন। জুলেখা বাধ্য হয়ে অপরাধের কথা স্বীকার করলেন। তাঁর সাজানো নাটকের কথা বললেন।
ইউসুফ (আ.) মিসরের অর্থ বিভাগের দায়িত্ব চেয়ে নেন। তখন মিসর ও এর আশপাশে দুর্ভিক্ষ চলছিল। অভাবে পড়ে তাঁর ভাইয়েরা বিশেষ দান পেতে মিসরে আসেন। কয়েকবার সাক্ষাতে পরই ভাইয়েরা তাঁকে চিনতে পারেননি। তবে ইউসুফ চিনতে পেরেও পরিচয় গোপন রাখেন। তিনি তাঁদের শর্ত দেন, পরেরবার ত্রাণ পেতে হলে তাঁদের ছোট ভাই বেনইয়ামিনকে সঙ্গে আনতে হবে। বেনইয়ামিন হলেন ইউসুফ (আ.)–এর সহোদর ভাই।
পরে ভাইয়েরা বেনইয়ামিনকে সঙ্গে করে আবার মিসর আসেন। তখন ছোট ভাইকে কৌশলে নিজের কাছে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)। ভাইদের কাছে বাবা ইয়াকুবের জন্য নিজের পরনের জামা দিয়ে বলেন, ‘এটা আমার আব্বার চেহারার ওপর রেখ। এতে তিনি দৃষ্টি পাবেন। ইয়াকুব (আ.) জামার বদৌলতে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিলেন।’ পুত্রশোকে ইয়াকুব (আ.) অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.)–এর জামার ঘ্রাণেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। পরে সপরিবারে মিসরে চলে আসেন।
অনেকের ধারণা, ইউসুফ (আ.) জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেছেন। এটি সত্য নয়। ইউসুফ (আ.) কোনো দিন জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেননি; জুলেখার একপক্ষীয় প্রেম ছিল। ইউসুফ (আ.) প্রেমে মজেছেন এবং তাঁকে যৌন নিপীড়ন করেছেন—জুলেখা তাঁকে এই মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.) তা অস্বীকার করেন এবং একটি দুগ্ধপোষ্য শিশু ইউসুফ (আ.)-এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিল। সত্য বুঝতে পারার পরও জুলেখার সম্মান বাঁচাতে তাঁর স্বামী কিতফির হজরত ইউসুফ (আ.)-কে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করে ধৈর্য ধরে দীর্ঘ দিন কারাবন্দী থেকেছেন ইউসুফ (আ.), যার সুফলও তিনি পেয়েছেন। নবী হয়েছেন। হয়েছেন মিসরের ধন-ভান্ডারের রক্ষক।
ইউসুফ (আ.) কি জুলেখাকে বিয়ে করেছিলেন
স্বামীর মৃত্যুর পর জুলেখার সঙ্গে ইউসুফ (আ.)-এর বিয়ে হয়েছিল কি না—এ বিষয়ে কোরআন-হাদিস থেকে স্পষ্ট কিছুই জানা যায় না। তবে ঐতিহাসিক ও মুফাসসিরগণ বিচ্ছিন্ন সনদে উল্লেখ করেছেন যে, স্বামী কিতফিরের মৃত্যুর পর এবং তওবা করার পর ইউসুফ (আ.)-এর সঙ্গে জুলেখার বিয়ে হয়েছিল এবং তাঁদের ঘরে দুটি ছেলে সন্তানও হয়েছিল। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতিম: ৮ / ৩৯০; তাফসিরে তবারি: ১৬ / ১৫১; আদ-দুররুল মানসুর: ৪ / ৫৫৩; আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১ / ১৯৬-১৯৭)
ইসরাইলি বর্ণনা (তাওরাত, ইঞ্জিল ও অন্যান্য সহিফা) থেকেই এসব ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। যার সত্য-মিথ্যা—কোনোটাই প্রমাণ করা যায় না। তাই বিষয়টি ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস বিরোধী না হলে সত্য-মিথ্যা আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে দিয়ে এসব বর্ণনা বিশ্বাস করা যেতে পারে। (বুখারি, মিশকাত: ১৫৫)
সুরা রাদ-এ আল্লাহর সৃষ্টির কথা
সুরা রাদ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৪৩। এটি কোরআনের ১৩ নম্বর সুরা। এ সুরার শুরু থেকে ১৮ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ কর্তৃক আসমান-জমিন, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, পাহাড়-পর্বত ও নদী-নালা, লতাগুল্ম, বৈচিত্র্যময় স্বাদ ও রঙের ফলমূলের সৃষ্টি, প্রকাশ্য-গোপন ও স্ত্রীর গর্ভে যা আছে তার খবর আল্লাহ জানেন, বৃষ্টি বর্ষণ, মেঘমালা এবং আল্লাহর ডাকে বান্দার সাড়া দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে।
সুরা রাদ-এ বর্ণিত বিবেকবানদের ৯ গুণ
সুরা রাদের ২০ থেকে ২৪ নম্বর আয়াতে বিবেক সম্পন্নদের ৯টি গুণের উল্লেখ রয়েছে। মুত্তাকিরা—
১. আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেন
২. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না
৩. আল্লাহর নির্দেশিত সম্পর্ক বজায় রাখেন
৪. আল্লাহকে ভয় করেন
৫. জবাবদিহি খারাপ হওয়াকে ভয় করেন
৬. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ধৈর্য ধারণ করেন
৭. নামাজ প্রতিষ্ঠা করেন
৮. আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করেন
৯. ভালো দিয়ে মন্দ দূর করেন
সুরা ইবরাহিম (আ.)-এর বিষয়বস্তু
সুরা ইবরাহিম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫২। কোরআনুল কারিমের ১৪ তম সুরা এটি। মদিনায় হিজরতের কিছুদিন আগে এটি নাজিল হয়। এতে ইবরাহিম (আ.)-এর সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে এ সুরার নামকরণ করা হয়েছে সুরা ইবরাহিম। এ সুরাতে মৌলিকভাবে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের আলোচনা স্থান পেয়েছে।
আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় নেয়ামত বাড়ে
এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে—বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ, আলো, বাতাস, পানি, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, বৃক্ষ; প্রতিটি জিনিস সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের জন্য। আল্লাহ তাআলা মানুষকে এসব থেকে উপকার ভোগের সুযোগ দিয়েছেন। না চাইতেই দিয়েছেন মহামূল্যবান জীবন, সুস্থতা, উপলব্ধি, প্রখর মেধা ও তীক্ষ্ণ জ্ঞান-বুদ্ধি, নাক, কান, চোখ, মুখ, জিহ্বা, হাত-পাসহ অসংখ্য নেয়ামত। মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি কত করুণা করেছেন, তা বলে, লিখে কিংবা চিন্তা করে শেষ করা যাবে না! বান্দার ওপর আল্লাহর যে পরিমাণ রহমত আছে, তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এসব কিছুর বিনিময়ে আল্লাহ বান্দার কৃতজ্ঞতাবোধ দেখতে পছন্দ করেন। ধীর–স্থির ও প্রশান্ত চিত্তের সেজদা চান। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা চান।
বান্দা আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের প্রশংসা, শুকরিয়া ও গুণকীর্তন করলে, তিনি নেয়ামত আরও বাড়িয়ে দেন। খুশি হয়ে বান্দার ওপর রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতাদের সামনে প্রশংসা করেন। অকৃতার্থ হৃদয়ের প্রতি আল্লাহ শুভদৃষ্টি দেন না। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
পৃথিবীর সব নবী-রাসুল জীবনভর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছেন। মহানবী (সা.) আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় বেশি বেশি নামাজ পড়তেন। ফলে তাঁর পদযুগল ফুলে যেত। অথচ তাঁর আগে-পরের গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিয়েছিলেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ওই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, যে কিছু খেলে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং কিছু পান করলেও আল্লাহর প্রশংসা করে।’ (মুসলিম: ২৭৩৪)
মানুষের কল্যাণে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রার্থনা
সুরা ইবরাহিমের শেষাংশে আল্লাহর কাছে ইবরাহিম (আ.)-এর বিশেষ দোয়ার উল্লেখ রয়েছে। সে দোয়ায় তিনি দেশ, নিজের সন্তান–সন্ততি, পরবর্তী বংশধরদের জন্য সুকল্যাণ, তাদের মধ্যে বিশ্বাসী মুসলমান ও নামাজি সন্তান কামনা করেছেন। ক্ষমা চেয়েছেন নিজের জন্য, পিতার জন্য ও সব মুমিন-মুসলমানের জন্য।
এ ছাড়া স্তম্ভহীন আকাশে আল্লাহর নিদর্শন, কোরআনের মাহাত্ম্য, আল্লাহর জিকিরে অন্তরে প্রশান্তি লাভ, নবী-রাসুলদের সঙ্গে কাফেরদের আচরণ ও পরিণতি, হক-বাতিলের পরিচয় ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
রায়হান রাশেদ

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো—
ধৈর্যের পুরস্কার পেয়েছিলেন ইউসুফ (আ.)
গতকাল তারাবিতে ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনির শুরুর অংশ পাঠ করা হয়েছিল। আজ শুরুতে বাকি অংশ তিলাওয়াত করা হবে। ইউসুফ (আ.)-এর কাছে স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা শুনে মিসরের বাদশাহ অভিভূত হলেন। খুশি হয়ে তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দিলেন। মুক্তির আগে ইউসুফ (আ.) নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইলেন। জুলেখা বাধ্য হয়ে অপরাধের কথা স্বীকার করলেন। তাঁর সাজানো নাটকের কথা বললেন।
ইউসুফ (আ.) মিসরের অর্থ বিভাগের দায়িত্ব চেয়ে নেন। তখন মিসর ও এর আশপাশে দুর্ভিক্ষ চলছিল। অভাবে পড়ে তাঁর ভাইয়েরা বিশেষ দান পেতে মিসরে আসেন। কয়েকবার সাক্ষাতে পরই ভাইয়েরা তাঁকে চিনতে পারেননি। তবে ইউসুফ চিনতে পেরেও পরিচয় গোপন রাখেন। তিনি তাঁদের শর্ত দেন, পরেরবার ত্রাণ পেতে হলে তাঁদের ছোট ভাই বেনইয়ামিনকে সঙ্গে আনতে হবে। বেনইয়ামিন হলেন ইউসুফ (আ.)–এর সহোদর ভাই।
পরে ভাইয়েরা বেনইয়ামিনকে সঙ্গে করে আবার মিসর আসেন। তখন ছোট ভাইকে কৌশলে নিজের কাছে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)। ভাইদের কাছে বাবা ইয়াকুবের জন্য নিজের পরনের জামা দিয়ে বলেন, ‘এটা আমার আব্বার চেহারার ওপর রেখ। এতে তিনি দৃষ্টি পাবেন। ইয়াকুব (আ.) জামার বদৌলতে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিলেন।’ পুত্রশোকে ইয়াকুব (আ.) অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.)–এর জামার ঘ্রাণেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। পরে সপরিবারে মিসরে চলে আসেন।
অনেকের ধারণা, ইউসুফ (আ.) জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেছেন। এটি সত্য নয়। ইউসুফ (আ.) কোনো দিন জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেননি; জুলেখার একপক্ষীয় প্রেম ছিল। ইউসুফ (আ.) প্রেমে মজেছেন এবং তাঁকে যৌন নিপীড়ন করেছেন—জুলেখা তাঁকে এই মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.) তা অস্বীকার করেন এবং একটি দুগ্ধপোষ্য শিশু ইউসুফ (আ.)-এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিল। সত্য বুঝতে পারার পরও জুলেখার সম্মান বাঁচাতে তাঁর স্বামী কিতফির হজরত ইউসুফ (আ.)-কে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করে ধৈর্য ধরে দীর্ঘ দিন কারাবন্দী থেকেছেন ইউসুফ (আ.), যার সুফলও তিনি পেয়েছেন। নবী হয়েছেন। হয়েছেন মিসরের ধন-ভান্ডারের রক্ষক।
ইউসুফ (আ.) কি জুলেখাকে বিয়ে করেছিলেন
স্বামীর মৃত্যুর পর জুলেখার সঙ্গে ইউসুফ (আ.)-এর বিয়ে হয়েছিল কি না—এ বিষয়ে কোরআন-হাদিস থেকে স্পষ্ট কিছুই জানা যায় না। তবে ঐতিহাসিক ও মুফাসসিরগণ বিচ্ছিন্ন সনদে উল্লেখ করেছেন যে, স্বামী কিতফিরের মৃত্যুর পর এবং তওবা করার পর ইউসুফ (আ.)-এর সঙ্গে জুলেখার বিয়ে হয়েছিল এবং তাঁদের ঘরে দুটি ছেলে সন্তানও হয়েছিল। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতিম: ৮ / ৩৯০; তাফসিরে তবারি: ১৬ / ১৫১; আদ-দুররুল মানসুর: ৪ / ৫৫৩; আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১ / ১৯৬-১৯৭)
ইসরাইলি বর্ণনা (তাওরাত, ইঞ্জিল ও অন্যান্য সহিফা) থেকেই এসব ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। যার সত্য-মিথ্যা—কোনোটাই প্রমাণ করা যায় না। তাই বিষয়টি ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস বিরোধী না হলে সত্য-মিথ্যা আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে দিয়ে এসব বর্ণনা বিশ্বাস করা যেতে পারে। (বুখারি, মিশকাত: ১৫৫)
সুরা রাদ-এ আল্লাহর সৃষ্টির কথা
সুরা রাদ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৪৩। এটি কোরআনের ১৩ নম্বর সুরা। এ সুরার শুরু থেকে ১৮ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ কর্তৃক আসমান-জমিন, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, পাহাড়-পর্বত ও নদী-নালা, লতাগুল্ম, বৈচিত্র্যময় স্বাদ ও রঙের ফলমূলের সৃষ্টি, প্রকাশ্য-গোপন ও স্ত্রীর গর্ভে যা আছে তার খবর আল্লাহ জানেন, বৃষ্টি বর্ষণ, মেঘমালা এবং আল্লাহর ডাকে বান্দার সাড়া দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে।
সুরা রাদ-এ বর্ণিত বিবেকবানদের ৯ গুণ
সুরা রাদের ২০ থেকে ২৪ নম্বর আয়াতে বিবেক সম্পন্নদের ৯টি গুণের উল্লেখ রয়েছে। মুত্তাকিরা—
১. আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেন
২. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না
৩. আল্লাহর নির্দেশিত সম্পর্ক বজায় রাখেন
৪. আল্লাহকে ভয় করেন
৫. জবাবদিহি খারাপ হওয়াকে ভয় করেন
৬. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ধৈর্য ধারণ করেন
৭. নামাজ প্রতিষ্ঠা করেন
৮. আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করেন
৯. ভালো দিয়ে মন্দ দূর করেন
সুরা ইবরাহিম (আ.)-এর বিষয়বস্তু
সুরা ইবরাহিম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫২। কোরআনুল কারিমের ১৪ তম সুরা এটি। মদিনায় হিজরতের কিছুদিন আগে এটি নাজিল হয়। এতে ইবরাহিম (আ.)-এর সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে এ সুরার নামকরণ করা হয়েছে সুরা ইবরাহিম। এ সুরাতে মৌলিকভাবে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের আলোচনা স্থান পেয়েছে।
আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় নেয়ামত বাড়ে
এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে—বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ, আলো, বাতাস, পানি, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, বৃক্ষ; প্রতিটি জিনিস সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের জন্য। আল্লাহ তাআলা মানুষকে এসব থেকে উপকার ভোগের সুযোগ দিয়েছেন। না চাইতেই দিয়েছেন মহামূল্যবান জীবন, সুস্থতা, উপলব্ধি, প্রখর মেধা ও তীক্ষ্ণ জ্ঞান-বুদ্ধি, নাক, কান, চোখ, মুখ, জিহ্বা, হাত-পাসহ অসংখ্য নেয়ামত। মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি কত করুণা করেছেন, তা বলে, লিখে কিংবা চিন্তা করে শেষ করা যাবে না! বান্দার ওপর আল্লাহর যে পরিমাণ রহমত আছে, তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এসব কিছুর বিনিময়ে আল্লাহ বান্দার কৃতজ্ঞতাবোধ দেখতে পছন্দ করেন। ধীর–স্থির ও প্রশান্ত চিত্তের সেজদা চান। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা চান।
বান্দা আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের প্রশংসা, শুকরিয়া ও গুণকীর্তন করলে, তিনি নেয়ামত আরও বাড়িয়ে দেন। খুশি হয়ে বান্দার ওপর রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতাদের সামনে প্রশংসা করেন। অকৃতার্থ হৃদয়ের প্রতি আল্লাহ শুভদৃষ্টি দেন না। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
পৃথিবীর সব নবী-রাসুল জীবনভর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছেন। মহানবী (সা.) আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় বেশি বেশি নামাজ পড়তেন। ফলে তাঁর পদযুগল ফুলে যেত। অথচ তাঁর আগে-পরের গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিয়েছিলেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ওই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, যে কিছু খেলে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং কিছু পান করলেও আল্লাহর প্রশংসা করে।’ (মুসলিম: ২৭৩৪)
মানুষের কল্যাণে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রার্থনা
সুরা ইবরাহিমের শেষাংশে আল্লাহর কাছে ইবরাহিম (আ.)-এর বিশেষ দোয়ার উল্লেখ রয়েছে। সে দোয়ায় তিনি দেশ, নিজের সন্তান–সন্ততি, পরবর্তী বংশধরদের জন্য সুকল্যাণ, তাদের মধ্যে বিশ্বাসী মুসলমান ও নামাজি সন্তান কামনা করেছেন। ক্ষমা চেয়েছেন নিজের জন্য, পিতার জন্য ও সব মুমিন-মুসলমানের জন্য।
এ ছাড়া স্তম্ভহীন আকাশে আল্লাহর নিদর্শন, কোরআনের মাহাত্ম্য, আল্লাহর জিকিরে অন্তরে প্রশান্তি লাভ, নবী-রাসুলদের সঙ্গে কাফেরদের আচরণ ও পরিণতি, হক-বাতিলের পরিচয় ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো—
ধৈর্যের পুরস্কার পেয়েছিলেন ইউসুফ (আ.)
গতকাল তারাবিতে ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনির শুরুর অংশ পাঠ করা হয়েছিল। আজ শুরুতে বাকি অংশ তিলাওয়াত করা হবে। ইউসুফ (আ.)-এর কাছে স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা শুনে মিসরের বাদশাহ অভিভূত হলেন। খুশি হয়ে তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দিলেন। মুক্তির আগে ইউসুফ (আ.) নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইলেন। জুলেখা বাধ্য হয়ে অপরাধের কথা স্বীকার করলেন। তাঁর সাজানো নাটকের কথা বললেন।
ইউসুফ (আ.) মিসরের অর্থ বিভাগের দায়িত্ব চেয়ে নেন। তখন মিসর ও এর আশপাশে দুর্ভিক্ষ চলছিল। অভাবে পড়ে তাঁর ভাইয়েরা বিশেষ দান পেতে মিসরে আসেন। কয়েকবার সাক্ষাতে পরই ভাইয়েরা তাঁকে চিনতে পারেননি। তবে ইউসুফ চিনতে পেরেও পরিচয় গোপন রাখেন। তিনি তাঁদের শর্ত দেন, পরেরবার ত্রাণ পেতে হলে তাঁদের ছোট ভাই বেনইয়ামিনকে সঙ্গে আনতে হবে। বেনইয়ামিন হলেন ইউসুফ (আ.)–এর সহোদর ভাই।
পরে ভাইয়েরা বেনইয়ামিনকে সঙ্গে করে আবার মিসর আসেন। তখন ছোট ভাইকে কৌশলে নিজের কাছে রেখে দেন ইউসুফ (আ.)। ভাইদের কাছে বাবা ইয়াকুবের জন্য নিজের পরনের জামা দিয়ে বলেন, ‘এটা আমার আব্বার চেহারার ওপর রেখ। এতে তিনি দৃষ্টি পাবেন। ইয়াকুব (আ.) জামার বদৌলতে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিলেন।’ পুত্রশোকে ইয়াকুব (আ.) অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.)–এর জামার ঘ্রাণেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। পরে সপরিবারে মিসরে চলে আসেন।
অনেকের ধারণা, ইউসুফ (আ.) জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেছেন। এটি সত্য নয়। ইউসুফ (আ.) কোনো দিন জুলেখার সঙ্গে প্রেম করেননি; জুলেখার একপক্ষীয় প্রেম ছিল। ইউসুফ (আ.) প্রেমে মজেছেন এবং তাঁকে যৌন নিপীড়ন করেছেন—জুলেখা তাঁকে এই মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলেন। ইউসুফ (আ.) তা অস্বীকার করেন এবং একটি দুগ্ধপোষ্য শিশু ইউসুফ (আ.)-এর পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিল। সত্য বুঝতে পারার পরও জুলেখার সম্মান বাঁচাতে তাঁর স্বামী কিতফির হজরত ইউসুফ (আ.)-কে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। আল্লাহর ওপর ভরসা করে ধৈর্য ধরে দীর্ঘ দিন কারাবন্দী থেকেছেন ইউসুফ (আ.), যার সুফলও তিনি পেয়েছেন। নবী হয়েছেন। হয়েছেন মিসরের ধন-ভান্ডারের রক্ষক।
ইউসুফ (আ.) কি জুলেখাকে বিয়ে করেছিলেন
স্বামীর মৃত্যুর পর জুলেখার সঙ্গে ইউসুফ (আ.)-এর বিয়ে হয়েছিল কি না—এ বিষয়ে কোরআন-হাদিস থেকে স্পষ্ট কিছুই জানা যায় না। তবে ঐতিহাসিক ও মুফাসসিরগণ বিচ্ছিন্ন সনদে উল্লেখ করেছেন যে, স্বামী কিতফিরের মৃত্যুর পর এবং তওবা করার পর ইউসুফ (আ.)-এর সঙ্গে জুলেখার বিয়ে হয়েছিল এবং তাঁদের ঘরে দুটি ছেলে সন্তানও হয়েছিল। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতিম: ৮ / ৩৯০; তাফসিরে তবারি: ১৬ / ১৫১; আদ-দুররুল মানসুর: ৪ / ৫৫৩; আল-বিদায়া ওয়ান-নিহায়া ১ / ১৯৬-১৯৭)
ইসরাইলি বর্ণনা (তাওরাত, ইঞ্জিল ও অন্যান্য সহিফা) থেকেই এসব ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। যার সত্য-মিথ্যা—কোনোটাই প্রমাণ করা যায় না। তাই বিষয়টি ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস বিরোধী না হলে সত্য-মিথ্যা আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে দিয়ে এসব বর্ণনা বিশ্বাস করা যেতে পারে। (বুখারি, মিশকাত: ১৫৫)
সুরা রাদ-এ আল্লাহর সৃষ্টির কথা
সুরা রাদ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৪৩। এটি কোরআনের ১৩ নম্বর সুরা। এ সুরার শুরু থেকে ১৮ নম্বর আয়াত পর্যন্ত আল্লাহ কর্তৃক আসমান-জমিন, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, পাহাড়-পর্বত ও নদী-নালা, লতাগুল্ম, বৈচিত্র্যময় স্বাদ ও রঙের ফলমূলের সৃষ্টি, প্রকাশ্য-গোপন ও স্ত্রীর গর্ভে যা আছে তার খবর আল্লাহ জানেন, বৃষ্টি বর্ষণ, মেঘমালা এবং আল্লাহর ডাকে বান্দার সাড়া দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছে।
সুরা রাদ-এ বর্ণিত বিবেকবানদের ৯ গুণ
সুরা রাদের ২০ থেকে ২৪ নম্বর আয়াতে বিবেক সম্পন্নদের ৯টি গুণের উল্লেখ রয়েছে। মুত্তাকিরা—
১. আল্লাহর সঙ্গে করা অঙ্গীকার পূর্ণ করেন
২. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না
৩. আল্লাহর নির্দেশিত সম্পর্ক বজায় রাখেন
৪. আল্লাহকে ভয় করেন
৫. জবাবদিহি খারাপ হওয়াকে ভয় করেন
৬. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ধৈর্য ধারণ করেন
৭. নামাজ প্রতিষ্ঠা করেন
৮. আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করেন
৯. ভালো দিয়ে মন্দ দূর করেন
সুরা ইবরাহিম (আ.)-এর বিষয়বস্তু
সুরা ইবরাহিম মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ৫২। কোরআনুল কারিমের ১৪ তম সুরা এটি। মদিনায় হিজরতের কিছুদিন আগে এটি নাজিল হয়। এতে ইবরাহিম (আ.)-এর সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে এ সুরার নামকরণ করা হয়েছে সুরা ইবরাহিম। এ সুরাতে মৌলিকভাবে তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের আলোচনা স্থান পেয়েছে।
আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় নেয়ামত বাড়ে
এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে—বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ, আলো, বাতাস, পানি, চাঁদ-সূর্য, রাত-দিন, বৃক্ষ; প্রতিটি জিনিস সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের জন্য। আল্লাহ তাআলা মানুষকে এসব থেকে উপকার ভোগের সুযোগ দিয়েছেন। না চাইতেই দিয়েছেন মহামূল্যবান জীবন, সুস্থতা, উপলব্ধি, প্রখর মেধা ও তীক্ষ্ণ জ্ঞান-বুদ্ধি, নাক, কান, চোখ, মুখ, জিহ্বা, হাত-পাসহ অসংখ্য নেয়ামত। মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি কত করুণা করেছেন, তা বলে, লিখে কিংবা চিন্তা করে শেষ করা যাবে না! বান্দার ওপর আল্লাহর যে পরিমাণ রহমত আছে, তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এসব কিছুর বিনিময়ে আল্লাহ বান্দার কৃতজ্ঞতাবোধ দেখতে পছন্দ করেন। ধীর–স্থির ও প্রশান্ত চিত্তের সেজদা চান। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা চান।
বান্দা আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের প্রশংসা, শুকরিয়া ও গুণকীর্তন করলে, তিনি নেয়ামত আরও বাড়িয়ে দেন। খুশি হয়ে বান্দার ওপর রহমত বর্ষণ করেন। ফেরেশতাদের সামনে প্রশংসা করেন। অকৃতার্থ হৃদয়ের প্রতি আল্লাহ শুভদৃষ্টি দেন না। আল্লাহ বলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৭)
পৃথিবীর সব নবী-রাসুল জীবনভর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছেন। মহানবী (সা.) আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় বেশি বেশি নামাজ পড়তেন। ফলে তাঁর পদযুগল ফুলে যেত। অথচ তাঁর আগে-পরের গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিয়েছিলেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ওই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, যে কিছু খেলে আল্লাহর প্রশংসা করে এবং কিছু পান করলেও আল্লাহর প্রশংসা করে।’ (মুসলিম: ২৭৩৪)
মানুষের কল্যাণে ইবরাহিম (আ.)-এর প্রার্থনা
সুরা ইবরাহিমের শেষাংশে আল্লাহর কাছে ইবরাহিম (আ.)-এর বিশেষ দোয়ার উল্লেখ রয়েছে। সে দোয়ায় তিনি দেশ, নিজের সন্তান–সন্ততি, পরবর্তী বংশধরদের জন্য সুকল্যাণ, তাদের মধ্যে বিশ্বাসী মুসলমান ও নামাজি সন্তান কামনা করেছেন। ক্ষমা চেয়েছেন নিজের জন্য, পিতার জন্য ও সব মুমিন-মুসলমানের জন্য।
এ ছাড়া স্তম্ভহীন আকাশে আল্লাহর নিদর্শন, কোরআনের মাহাত্ম্য, আল্লাহর জিকিরে অন্তরে প্রশান্তি লাভ, নবী-রাসুলদের সঙ্গে কাফেরদের আচরণ ও পরিণতি, হক-বাতিলের পরিচয় ইত্যাদি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে অজু করতে অলসতা করেন অথবা তাড়াহুড়ো করে অজুর অঙ্গগুলো ঠিকমতো না ভিজিয়েই ইবাদতে লিপ্ত হন। অথচ অজুর কোনো অংশ শুকনো থাকলে নামাজ ও ইবাদত কবুল হয় না। শীতের এ প্রতিকূল সময়ে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন...
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।
কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।
শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।
তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
ইসলামের বিধান হলো, নামাজে মাথা ঢাকা পুরুষের জন্য ফরজ নয়, বরং এটি নামাজের আদব ও সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাধারণত মাথা ঢেকেই নামাজ আদায় করতেন। আবু দাউদ শরিফে এসেছে, নবীজি (সা.) পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় নামাজ আদায় করতেন। ফিকহের দৃষ্টিতে কানটুপি, উলের টুপি বা সাধারণ টুপি—সবই মাথা ঢাকার পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে কানটুপি পরে নামাজ আদায় করা সম্পূর্ণ জায়েজ।
কানটুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করার সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—সেটি হলো সিজদা। সিজদার সময় কপাল সরাসরি মাটিতে বা জায়নামাজে লাগানো আবশ্যক। যদি টুপিটি এমনভাবে পরা হয়, যা কপালকে ঢেকে রাখে এবং মাটিতে কপাল ঠেকতে বাধা দেয়, তবে সিজদা অপূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই সিজদার সময় কপাল উন্মুক্ত রাখা উত্তম। তবে কপাল সামান্য আবৃত থাকলেও নামাজ হয়ে যাবে।
শীত থেকে বাঁচতে নাক-মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা অনুচিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুখ ঢেকে নামাজ আদায় করা মাকরুহ। তাই কান ও গলা আবৃত থাকলেও নাক-মুখ খোলা রাখা উচিত।
তাই শৈত্যপ্রবাহের সময় নিশ্চিন্তে কানটুপি পরা যাবে যদি টুপিটি পবিত্র (পাক-সাফ) হয়, এটি অহংকার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কেবল শীত নিবারণের জন্য হয় এবং সিজদার সময় কপাল মাটিতে স্থাপনে কোনো বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করে।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছ
০১ এপ্রিল ২০২৩
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে অজু করতে অলসতা করেন অথবা তাড়াহুড়ো করে অজুর অঙ্গগুলো ঠিকমতো না ভিজিয়েই ইবাদতে লিপ্ত হন। অথচ অজুর কোনো অংশ শুকনো থাকলে নামাজ ও ইবাদত কবুল হয় না। শীতের এ প্রতিকূল সময়ে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন...
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৭ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৮ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৯ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০১ মিনিট | ০৩: ৪৩ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৪ মিনিট | ০৫: ১৯ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২১ মিনিট | ০৬: ৪০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪১ মিনিট | ০৫: ১৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৭ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৮ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৯ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০১ মিনিট | ০৩: ৪৩ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৪ মিনিট | ০৫: ১৯ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২১ মিনিট | ০৬: ৪০ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪১ মিনিট | ০৫: ১৮ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছ
০১ এপ্রিল ২০২৩
শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে
শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে অজু করতে অলসতা করেন অথবা তাড়াহুড়ো করে অজুর অঙ্গগুলো ঠিকমতো না ভিজিয়েই ইবাদতে লিপ্ত হন। অথচ অজুর কোনো অংশ শুকনো থাকলে নামাজ ও ইবাদত কবুল হয় না। শীতের এ প্রতিকূল সময়ে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন...
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৬ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৭ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৮ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০০ মিনিট | ০৩: ৪৩ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৪ মিনিট | ০৫: ১৯ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২১ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৫: ১৭ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১২ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৬ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১৭ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৮ মিনিট | ০৬: ৩৮ মিনিট |
| জোহর | ১২: ০০ মিনিট | ০৩: ৪৩ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৪৪ মিনিট | ০৫: ১৯ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ২১ মিনিট | ০৬: ৩৯ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৪০ মিনিট | ০৫: ১৭ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছ
০১ এপ্রিল ২০২৩
শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১২ ঘণ্টা আগে
শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে অজু করতে অলসতা করেন অথবা তাড়াহুড়ো করে অজুর অঙ্গগুলো ঠিকমতো না ভিজিয়েই ইবাদতে লিপ্ত হন। অথচ অজুর কোনো অংশ শুকনো থাকলে নামাজ ও ইবাদত কবুল হয় না। শীতের এ প্রতিকূল সময়ে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন...
১ দিন আগেইসলাম ডেস্ক

শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে অজু করতে অলসতা করেন অথবা তাড়াহুড়ো করে অজুর অঙ্গগুলো ঠিকমতো না ভিজিয়েই ইবাদতে লিপ্ত হন। অথচ অজুর কোনো অংশ শুকনো থাকলে নামাজ ও ইবাদত কবুল হয় না। শীতের এ প্রতিকূল সময়ে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি:
শীতের কাপড়ের কারণে অনেকে হাতা ঠিকমতো না গুটিয়েই হাত ধুয়ে নেন, ফলে কনুই শুকনো থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মনে রাখতে হবে, কনুই বা পায়ের টাখনুর কোনো অংশ সামান্য শুকনো থাকলেও অজু হবে না। (সহিহ্ মুসলিম: ২৪৬)
তাড়াহুড়ো করে অজু করতে গিয়ে অনেকে পায়ের গোড়ালি ঠিকমতো ভেজান না। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আগুনের কঠিন শাস্তি সেই গোড়ালিগুলোর জন্য (যা অজুর সময় শুকনো থাকে)! তোমরা খুব ভালোভাবে অজু করো।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২৪১)
ঠান্ডার ভয়ে অনেকে প্রস্রাব-পায়খানার বেগ চেপে রেখে আগের অজু দিয়ে নামাজ পড়ার চেষ্টা করেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি ইসলামের দৃষ্টিতেও অপছন্দের। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘খাবারের উপস্থিতিতে এবং মল-মূত্রের বেগ চেপে রাখা অবস্থায় কোনো নামাজ নেই।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৫৬০)। অন্য এক হাদিসে এসেছে, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোনো মুমিনের জন্য মল-মূত্রের বেগ নিয়ে নামাজ পড়া বৈধ নয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৯১)
শীতের কষ্টকে উপেক্ষা করে যথাযথভাবে অজু সম্পন্ন করা মুমিনের ইমানি দৃঢ়তার পরিচয়। তাই আমাদের উচিত, তাড়াহুড়ো না করে অজুর প্রতিটি অঙ্গ ভালোভাবে ধৌত করা এবং পূর্ণ পবিত্রতা অর্জনের পর আল্লাহর দরবারে দণ্ডায়মান হওয়া।

শীতকালে ঠান্ডার কারণে অনেকে অজু করতে অলসতা করেন অথবা তাড়াহুড়ো করে অজুর অঙ্গগুলো ঠিকমতো না ভিজিয়েই ইবাদতে লিপ্ত হন। অথচ অজুর কোনো অংশ শুকনো থাকলে নামাজ ও ইবাদত কবুল হয় না। শীতের এ প্রতিকূল সময়ে ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিচের বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি:
শীতের কাপড়ের কারণে অনেকে হাতা ঠিকমতো না গুটিয়েই হাত ধুয়ে নেন, ফলে কনুই শুকনো থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মনে রাখতে হবে, কনুই বা পায়ের টাখনুর কোনো অংশ সামান্য শুকনো থাকলেও অজু হবে না। (সহিহ্ মুসলিম: ২৪৬)
তাড়াহুড়ো করে অজু করতে গিয়ে অনেকে পায়ের গোড়ালি ঠিকমতো ভেজান না। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আগুনের কঠিন শাস্তি সেই গোড়ালিগুলোর জন্য (যা অজুর সময় শুকনো থাকে)! তোমরা খুব ভালোভাবে অজু করো।’ (সহিহ্ মুসলিম: ২৪১)
ঠান্ডার ভয়ে অনেকে প্রস্রাব-পায়খানার বেগ চেপে রেখে আগের অজু দিয়ে নামাজ পড়ার চেষ্টা করেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি ইসলামের দৃষ্টিতেও অপছন্দের। হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘খাবারের উপস্থিতিতে এবং মল-মূত্রের বেগ চেপে রাখা অবস্থায় কোনো নামাজ নেই।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৫৬০)। অন্য এক হাদিসে এসেছে, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোনো মুমিনের জন্য মল-মূত্রের বেগ নিয়ে নামাজ পড়া বৈধ নয়। (সুনানে আবু দাউদ: ৯১)
শীতের কষ্টকে উপেক্ষা করে যথাযথভাবে অজু সম্পন্ন করা মুমিনের ইমানি দৃঢ়তার পরিচয়। তাই আমাদের উচিত, তাড়াহুড়ো না করে অজুর প্রতিটি অঙ্গ ভালোভাবে ধৌত করা এবং পূর্ণ পবিত্রতা অর্জনের পর আল্লাহর দরবারে দণ্ডায়মান হওয়া।

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ১৩তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা ইউসুফের ৫৩ নম্বর আয়াত থেকে সুরা ইবরাহিম পুরোটা পড়া হবে। এই অংশে ইউসুফ (আ.)–এর জীবনের রোমাঞ্চকর কাহিনির শেষাংশ, আল্লাহ সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, জীবন-মরণ তাঁর হাতে, মুত্তাকিদের বৈশিষ্ট্য, কিয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি ইত্যাদি বিষয়ের বিবরণ রয়েছ
০১ এপ্রিল ২০২৩
শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপে অনেকেই কানটুপি, উলের টুপি কিংবা হুডি পরে থাকেন। এসব পরিধান করা অবস্থায় অনেক সময় নামাজের সময় হয়ে যায়। তাই নানা সময়ে মনে প্রশ্ন জাগে, শীতের টুপি বা হুডি পরে নামাজ আদায় করলে কি তা শুদ্ধ হবে?
৬ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১২ ঘণ্টা আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
১ দিন আগে