Ajker Patrika

মাত্র দেড় কোটিতে ১৪টি বাংলাদেশের সমান এলাকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেচে দেয় ফ্রান্স

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ১২
১৮৭৫ সালে মার্কিন ক্যাপিটলে ওয়াশিংটনে ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফ্রাঁসোয়া মার্কিস দে বার্বে মার্বিস লুইজিয়ানা টেরিটরি মানচিত্র দেখাচ্ছেন। পাশে রবার্ট লিভিংস্টোন এবং জেমস মনরো। চিত্রকর: কনস্তান্তিনো ব্রুমিদি
১৮৭৫ সালে মার্কিন ক্যাপিটলে ওয়াশিংটনে ফরাসি রাষ্ট্রদূত ফ্রাঁসোয়া মার্কিস দে বার্বে মার্বিস লুইজিয়ানা টেরিটরি মানচিত্র দেখাচ্ছেন। পাশে রবার্ট লিভিংস্টোন এবং জেমস মনরো। চিত্রকর: কনস্তান্তিনো ব্রুমিদি

গ্রিনল্যান্ড, কানাডা, মেক্সিকো উপসাগর, পানামা খাল—দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসেই সব কিনে ফেলতে চাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু চাইলেই কি কিনে ফেলা যায় অন্য কোনো দেশের ভূখণ্ড বা জলসীমা? এখন হয়তো যায় না। তবে আজ থেকে দুই শ বছর আগে এমন কেনাবেচার অনেক দৃষ্টান্ত আছে।

লুইজিয়ানা অঞ্চল এরই একটি উদাহরণ। ১৮০৩ সালের আজকের এই দিনে (১১ এপ্রিল) তৎকালীন মার্কিন সরকারের কাছে ৮ লাখ ২৮ হাজার বর্গমাইল বা ২১ লাখ বর্গকিলোমিটারের বিশাল এই ভূখণ্ড মাত্র দেড় কোটি ডলারে বিক্রির প্রস্তাব দেন ফ্রান্সের সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। সে হিসাবে এই ভূখণ্ড বাংলাদেশের আয়তনের প্রায় ১৪ গুন!

নেপোলিয়নের ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের আয়তন দ্বিগুণ হয়ে যায়। শুধু ভূখণ্ডের সম্প্রসারণই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি–বাণিজ্য সম্প্রসারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এটি।

১৭৫৬ থেকে ১৭৬৩ সাল পর্যন্ত ফ্রান্স, ব্রিটেন ও অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তির মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ চলছিল। যে যুদ্ধের শেষে ১৭৬২ ফন্টেইনব্লিউ চুক্তির আওতায় আলোচিত লুইজিয়ানা অঞ্চল স্পেনের হাতে তুলে দেয় ফ্রান্স। পরে উনিশ শতকের একেবারে শুরুর দিকে স্যান ইলডেফেনসো নামে এক চুক্তির মাধ্যমে আবার স্পেনের কাছ থেকে লুইজিয়ানার মালিকানা ফিরিয়ে আনেন নেপোলিয়ন।

নেপোলিয়ন বোনাপার্ট তখন উত্তর আমেরিকায় একটি ফরাসি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু হাইতির দাস বিদ্রোহে ফরাসি বাহিনীর বিপর্যয়, ব্রিটেনের সঙ্গে যুদ্ধ এবং যুদ্ধের ব্যয় সংকুলান করতে গিয়ে সৃষ্ট তীব্র অর্থনৈতিক চাপে সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। এমন পরিস্থিতিতে নেপোলিয়নের কাছে লুইজিয়ানাকে ধরে রাখার চেয়ে বিক্রি করাই বাস্তববাদী সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়।

এদিকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন মিসিসিপি নদী দিয়ে অবাধে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতে নিউ অরলিন্স এবং এর আশপাশের এলাকা কিনতে চাচ্ছিলেন। সেই লক্ষ্যেই তিনি বিশেষ দূত জেমস মনরো এবং আইনজীবী রবার্ট লিভিংস্টোনকে প্যারিসে পাঠান। কিন্তু আলোচনার টেবিলে তাঁরা এক অভাবনীয় প্রস্তাব পান—শুধু অরলিন্স নয়, পুরো লুইজিয়ানাই বিক্রি করতে চান নেপোলিয়ন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল দ্বিধা না করে তাৎক্ষণিক চুক্তিতে রাজি হয়ে যায়। মাত্র ১৫ মিলিয়ন (দেড় কোটি) ডলারে এমন একটি বিশাল ভূখণ্ড কেনার সুযোগ তারা হাতছাড়া করতে চায়নি।

চুক্তি অনুযায়ী, ১১ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার নগদ পরিশোধ করে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি ৩ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলারের ঋণ পরে শোধ করে ওয়াশিংটন। দেড় কোটি ডলারের হিসাবে প্রতি একর জমির দাম পড়ে মাত্র তিন সেন্ট, যা আজকের মূল্যে মাত্র ৬৭ সেন্ট! এই চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হয় ১৮০৩ সালের ৩০ এপ্রিল। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে কৌশলী এবং লাভজনক ক্রয়।

লুইজিয়ানা টেরিটোরির মানচিত্র। ছবি: দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল
লুইজিয়ানা টেরিটোরির মানচিত্র। ছবি: দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল

যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান লুইজিয়ানা, মিজৌরি, আইওয়া, কানসাস, নেব্রাস্কা, আরকানসাস, ওকলাহোমা, উত্তর ও দক্ষিণ ডাকোটা, মিনেসোটা (আংশিক), নিউ মেক্সিকো, মনটানা, ওয়াইওমিং, কলোরাডো অঙ্গরাজ্যগুলো তৎকালীন লুইজিয়ানা অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। এই অঞ্চল মিসিসিপি নদী থেকে শুরু করে রকি পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত।

এই ক্রয় শুধুই ভৌগোলিক সম্প্রসারণ নয়, বরং ছিল একটি কৌশলগত বিজয়। মিসিসিপি নদীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ, নিউ অরলিন্স বন্দর ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং পশ্চিমাঞ্চলে অবাধ সম্প্রসারণের সুযোগ এনে দেয় যুক্তরাষ্ট্রকে। এর ফলেই শুরু হয় লুইস ও ক্লার্ক অভিযান—যা নতুন ভূখণ্ড সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি ভবিষ্যতের বসতি স্থাপনে ভূমিকা রাখে।

তবে এই সিদ্ধান্তের কিছু বিতর্কিত দিকও ছিল। সংবিধানে এই ধরনের জমি কেনার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টকে দেওয়া হয়নি বা এ-সম্পর্কিত বিধান স্পষ্ট নয়। এ ছাড়া আদিবাসীদের জমির অধিকার ও সংরক্ষণের প্রশ্নও নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে। তবু যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যতের জন্য এই সিদ্ধান্ত ছিল যুগান্তকারী। প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসন একজন কঠোরভাবে সংবিধান অনুসরণকারী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এই ক্রয়কে তিনি মেনে নেন।

ফ্রান্সের জন্য এভাবে জলের দামে বিশাল ভূখণ্ড বিক্রির সিদ্ধান্তটি ছিল প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে নেওয়া একটি পদক্ষেপ। ইউরোপীয় যুদ্ধের ব্যয় মেটাতে অর্থের দরকার ছিল, আর আমেরিকায় সাম্রাজ্য গড়ার পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় নেপোলিয়নের কাছে এ ভূখণ্ড আর বিশেষ তাৎপর্য রাখেনি। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে শুধু একটি ভূখণ্ডই নয়, ভবিষ্যতের সম্ভাবনা কিনে নেয়।

অনেকের মতে, লুইজিয়ানা ক্রয় একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত—যেখানে কূটনীতি, দূরদর্শিতা ও সাহসিকতার এক অপূর্ব মিলন দেখা যায়। এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের মানচিত্র বদলে দেয়নি, বরং আমেরিকানদের পরিচয়ের ভিত্তিও মজবুত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ১৩ জনের মৃত্যু, আহত শতাধিক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৯
মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ছবি: বিবিসি
মেক্সিকোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ছবি: বিবিসি

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১৩ জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির নৌবাহিনীর বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াহাকা রাজ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, মেক্সিকো উপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী রুটে চলাচল করে ওই ট্রেন। ট্রেনটিতে ২৪১ জন যাত্রী ও ৯ জন ক্রু ছিলেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৬ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, নিজান্দা শহরের কাছে একটি বাঁক ঘোরার সময় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়।

ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেল।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি আরও জানান, নেভির সেক্রেটারিসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা লাইনচ্যুত ট্রেন থেকে যাত্রীদের নামতে সহায়তা করছেন। ট্রেনটি রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে আংশিকভাবে একটি খাদের পাশে কাত হয়ে যায়।

নৌবাহিনী জানিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরের বন্দর সালিনা ক্রুজকে উপসাগরীয় উপকূলের কোয়াটজাকোয়ালকোসের সঙ্গে যুক্ত করা ‘ইন্টারওশেনিক’ (Interoceanic) ট্রেনটিতে দুটি লোকোমোটিভ ও চারটি যাত্রীবাহী বগি ছিল। মেক্সিকোর নৌবাহিনী দেশটির রেলওয়ে নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে।

ওয়াহাকা রাজ্যের গভর্নর সলোমোন জারা ক্রুজ এক বিবৃতিতে দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় রাজ্য সরকার ফেডারেল সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

আঞ্চলিক অর্থনীতি চাঙা করতে সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদরের উদ্যোগে দুই বছর আগে ইন্টারওশেনিক রেলসংযোগটি উদ্বোধন করা হয়েছিল।

আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী দূরত্ব কমিয়ে আনতে তেহুয়ান্তেপেক ইস্থমাস এলাকাজুড়ে রেল যোগাযোগ আধুনিকায়নের লক্ষ্যে অঞ্চলটিকে একটি কৌশলগত বাণিজ্য করিডোরে রূপ দিতে চেয়েছে মেক্সিকো সরকার। এর অংশ হিসেবে বন্দর, রেলপথ ও শিল্প অবকাঠামো সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এই রেল পরিষেবাটি দক্ষিণ মেক্সিকোতে যাত্রী ও পণ্যবাহী রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি বড় অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইন্দোনেশিয়ায় নার্সিং হোমে আগুনে ১৬ জনের মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লেগে ১৬ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার এএফপির প্রতিবেদনে স্থানীয় এক কর্মকর্তার বরাতে জানানো হয়, উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী মানাদোর একটি নার্সিং হোমে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

শহরটির ফায়ার অ্যান্ড রেস্কিউ এজেন্সির প্রধান জিমি রোটিনসুলু জানান, নার্সিং হোমটিতে স্থানীয় সময় রোববার রাত ৮টা ৩১ মিনিটে আগুন লাগার খবর পান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৩ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।

জিমি জানান, ভুক্তভোগীদের অনেক দেহ তাঁদের ঘরের ভেতরেই পাওয়া গেছে। তিনি আরও যোগ করেন, সন্ধ্যায় যখন আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন বয়স্ক বাসিন্দাদের অনেকেই সম্ভবত তাদের নিজ নিজ ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।

কর্তৃপক্ষ ১২ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে এবং তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় সম্প্রচার মাধ্যম মেট্রো টিভি-তে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, আগুন নার্সিং হোমটিকে পুরোপুরি গ্রাস করে নিয়েছে এবং স্থানীয়রা এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করছেন।

১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই দ্বীপরাষ্ট্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খুব একটা বিরল নয়। চলতি মাসেই ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় একটি সাততলা অফিস ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২২ জন নিহত হন। ২০২৩ সালে দেশটির পূর্বাঞ্চলে একটি নিকেল প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাঁজা চাষে লাইসেন্স ফি কমাল পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে। ছবি: এএফপি
গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে। ছবি: এএফপি

গাঁজা চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের লাইসেন্স ফি কমানোর অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের সরকার। দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় গাঁজা চাষের এই ফি কমাচ্ছে ক্যানাবিস রেগুলেটরি অথরিটি (সিআরএ)।

এছাড়া, শিল্পজাত হেম্প ও হেম্প বীজের তেলের ওপর থেকে আবগারি শুল্ক তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফুল-স্পেকট্রাম ক্যানাবিডিওল (CBD) ও টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (THC)-এর ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সরকারি নথি বরাতে দ্য ডন জানিয়েছে, সিআরএ গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করেছে এবং গাঁজা প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্স ফি ১৫ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ১০ লাখ রুপি নির্ধারণ করেছে।

এছাড়া হেম্প প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্স ফি ৭ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ফুল-স্পেকট্রাম ক্যানাবিডিওল ও টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনলের ওপর আবগারি শুল্ক প্রতি কেজিতে ৩ হাজার রুপি থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার রুপি করা হয়েছে।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, ২২ ডিসেম্বর আবগারি, কর ও মাদকদ্রব্য বিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে আরও বলা হয়, ওই বৈঠকটি ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-কমিটির বৈঠকের ধারাবাহিকতা ছিল, যেখানে এসব পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছিল।

নথি অনুযায়ী, সিআরএ-এর বৈঠকে খাইবার পাখতুনখোয়ার জন্য প্রস্তাবিত হেম্প মডেল কমিটির সামনে উপস্থাপন করা হয়। এ সময় আবগারি, কর ও মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব জোর দিয়ে বলেন, ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করা এবং বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিতে প্রস্তাবিত মডেলটি আরও সরল করা প্রয়োজন।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, খাইবার পাখতুনখোয়ায় স্বনামধন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে হেম্প চাষের লাইসেন্স দেওয়া হবে এবং এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান কৃষকদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে।

হেম্প চাষ ও প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্সের আবেদন ফরম, টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি) নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ ফরম, পর্যায়ক্রমিক পরিদর্শন ফরমসহ অন্যান্য বাধ্যতামূলক রেজিস্টার অনুমোদন করেছে সিআরএ।

শিল্প ও কৃষকদের যৌথ উদ্যোগে বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট (বিওআই) এবং শিল্প বিভাগ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কৃষকদের নিবন্ধন ব্যক্তিগত বা সমবায় কোম্পানি হিসেবে উভয় ক্ষেত্রেই ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে।

হেম্প বীজ আমদানি ও এর শংসাপত্রের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সপ্রাপ্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত গাঁজা চাষ ও প্রক্রিয়াকরণ আপাতত স্থগিত রাখা হবে এবং ওষুধ শিল্পের প্রয়োজনীয় গাঁজা নিয়ন্ত্রণ ও এর পণ্য ব্যবস্থাপনা পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটির (ডিআরএপি) চাহিদা ও মানদণ্ডের আলোকে বিবেচনা করা হবে।

নথিতে আরও বলা হয়, ক্যানাবিস মডেল প্রণয়ন এবং ক্যানাবিস সংক্রান্ত বিধিবিধান পুনর্বিবেচনার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে একটি উপকমিটি গঠন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উত্তেজনা: শিখ ও হিন্দু বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হাতাহাতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিক্ষোভকারী শিখদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ওসমান হাদির ছবিও দেখা যায়। ছবি: এক্স
বিক্ষোভকারী শিখদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ওসমান হাদির ছবিও দেখা যায়। ছবি: এক্স

লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে গত শনিবার একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বেশ উত্তেজনা তৈরি হয়। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত এই সমাবেশে স্বাধীন খালিস্তানপন্থী শিখ অধিকার কর্মী এবং একদল হিন্দু বিক্ষোভকারী মুখোমুখি হলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্রিটিশ পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজকদের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি দৈনিক ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আয়োজিত সমাবেশে খালিস্তান রেফারেন্ডাম অভিযানের সমন্বয়ক পরমজিৎ সিং পাম্মা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে হরদীপ সিং নিজ্জার এবং শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি দেখা গেছে। সমাবেশের একপর্যায়ে ভারতীয় এক হিন্দু বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পাম্মার কথা-কাটাকাটি এবং পরে হাতাহাতি শুরু হয়। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সেখানে দায়িত্বরত মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেন এবং দুই পক্ষকে আলাদা করে দেন।

বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রবেশপথের কাছে একটি কর্ডন তৈরি করে তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যান। এ সময় তাঁরা ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দেন। বিশেষ করে হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যা এবং অন্যান্য শিখ নেতাদের খুনের পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, ভারত সরকার পরমজিৎ সিং পাম্মাকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড টেররিস্ট’ বা অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করলেও পাম্মা ও তাঁর সমর্থকেরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

গত বছরের জুনে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার খুন হওয়ার পর থেকে ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরম আকার ধারণ করেছে। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

লন্ডনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সেই বৈশ্বিক উত্তেজনার ছায়া দেখা গেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, কোনো বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।

খালিস্তান আন্দোলনের শিকড় ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগ এবং পাঞ্জাব বিভাজনের সময় পর্যন্ত বিস্তৃত। স্বাধীন শিখ রাষ্ট্রের দাবিতে এই আন্দোলন দশকের পর দশক ধরে চলে আসছে। এই আন্দোলন বর্তমানে বৈশ্বিক রাজনীতিতে ভারত-কানাডা এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সংবেদনশীল ইস্যু হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত