
হামাস এমন চাতুর্য দেখিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাও টের পায়নি। ইসরায়েলের একের পর এক অভিযানের পরও গত দুই বছর হামাস প্রকাশ্যে গাজায় পাল্টা সামরিক তৎপরতা দেখায়নি। দীর্ঘ সংঘাতে ক্লান্ত, তারা আর যুদ্ধ চায় না—ইসরায়েলকে এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
কিন্তু গত শনিবার সকালে হামাস পাঁচ হাজার রকেট নিক্ষেপের সঙ্গে বুলডোজার, গ্লাইডার এবং মোটরবাইক নিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে। এটি নিঃসন্দেহে ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় আঘাত। ৫০ বছর আগে সিরিয়া ও মিসর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে পুরো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছিল। সেই স্মৃতিই যেন ফিরিয়ে আনল হামাস।
হামাসের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইসরায়েলকে বিশ্বাস করানো হয়েছিল যে হামাস যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত। তারা নতুন করে আর যুদ্ধ চায় না। তারা চায় গাজার অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মীদের জন্য টাকা। এই ফাঁকেই গোপনের যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ চলছিল। এমনকি উন্মুক্ত স্থানেই বড় বহর নিয়ে চলেছে প্রশিক্ষণ। হামাসের যোদ্ধারাও জানতেন না সামনে কী হতে চলেছে।
সূত্রটি হামলার বিবরণ এবং প্রস্তুতির বিশদ তথ্য রয়টার্সকে দিয়েছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংস্থার তিনটি সূত্রও এ বিষয়ে তথ্য দিয়েছে সংবাদ সংস্থাটিকে।
হামাসের ঘনিষ্ঠ সূত্রটি বলেছে, হামাস কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলকে বিভ্রান্ত করার জন্য একটি অভূতপূর্ব গোয়েন্দা কৌশল ব্যবহার করেছে। হামাস ইসরায়েলকে ধারণা দিয়েছিল, তারা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত নয়। কিন্তু তারা ব্যাপক অভিযানের প্রস্তুতি ঠিকই নিয়েছে। এমনকি এই দুই বছর ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সামরিক নিপীড়ন ঠিকই চলেছে। এরপরও হামাসের পক্ষ থেকে কাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া আসেনি।
ইসরায়েল স্বীকার করেছে যে ইহুদিদের পবিত্র দিন সাবাথ ও ধর্মীয় ছুটির মধ্যে এমন হামলা সত্যিই তাদের অবাক করেছে। হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের শহরগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্তত ৭০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করেছে। বহু ইসরায়েলি ও বিদেশিকে জিম্মি করেছে। এরপর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক বোমা বর্ষণ শুরু করেছে। এ পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র মেজর নির দিনার বলেছেন, ‘এটি আমাদের ৯/১১। তারা আমাদের গুঁড়িয়ে দিয়েছে। জল, স্থল ও আকাশপথে আক্রমণ চালিয়ে তারা আমাদের হতবাক করেছে।’
লেবাননে হামাসের প্রতিনিধি ওসামা হামদান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এই হামলায় ফিলিস্তিনিরা দেখিয়ে দিয়েছে লক্ষ্য অর্জনে তারা কিছুতেই পিছপা হবে না। ইসরায়েলের যত বড়ই সামরিক শক্তি ও সক্ষমতা থাকুক না কেন।’
গোপন প্রশিক্ষণ
হামলার কিছুদিন আগে হামাস গাজায় একটি অবৈধ ইসরায়েলি বসতির অনুকরণে একটি এলাকা তৈরি করেছিল। এরপর সেটি ধ্বংসের মহড়া দেওয়া হয়। সেটিরও ভিডিও তৈরি করে তারা। ইসরায়েল তাদের কার্যক্রম দেখেছে ঠিকই কিন্তু গুরুত্ব দেয়নি। তারা ভেবেছিল, হামাস কোনো সংঘর্ষে জড়াতে আগ্রহী নয়।
একই সময়ে হামাস ইসরায়েলকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে তারা গাজার বেকার মানুষদের কর্মসংস্থান চায়। সীমান্তের ওপারে কীভাবে কাজ জোটাবে সে নিয়েই ব্যস্ত হামাস।
হামাসের সঙ্গে ২০২১ সালের যুদ্ধের পর থেকে হাজার হাজার গাজাবাসীকে ইসরায়েলে ও পশ্চিম তীরে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে তেল আবিব। যেখানে নির্মাণ, কৃষি বা সেবা খাতের চাকরিগুলোতে গাজার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরেক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম তারা উপার্জনের টাকায় গাজায় শান্তিপূর্ণভাবে বাস করবে। কিন্তু আমরা ভুল ছিলাম।’
ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিভাগের সূত্র স্বীকার করেছে, ‘ইসরায়েলের গোয়েন্দা বিভাগ হামাসের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। আমাদের তারা বুঝিয়েছিল, তারা শুধু টাকা চায়। কিন্তু সর্বদা তারা সেই টাকা ব্যবহার করে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে।’
গত দুই বছরে হামাস নিষ্ক্রিয় থাকলেও গাজাভিত্তিক আরেকটি ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের উত্থান ঘটে। তারা বেশ কয়েকটি আক্রমণ ও সিরিজ রকেট হামলাও চালায়।
হামলার কোনো আগাম তথ্য ছিল না
হামাসের এই দীর্ঘ সংযম অনেকের সন্দেহের জন্ম দিয়েছে, সেই সঙ্গে অনস্থা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। খোদ প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগাইনাইজেশনের (পিএলও) নেতারাও হামাসের সমালোচনা করেছে। যুদ্ধ ছেড়ে হামাস অর্থনৈতিক বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে—এমনটিও বলা হয়েছে।
পশ্চিম তীরে অবস্থানরত ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং তাঁর ফাতাহ গোষ্ঠীও হামাসের শান্ত আচরণের নিন্দা করেছিল। ২০২২ সালের জুনে ফাতাহ এক বিবৃতিতে হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, এরা গাজাবাসীকে দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়ে নিজেরা আয়েশি জীবন যাপন করছে। তারা আরব দেশের রাজধানীগুলোতে গিয়ে বিলাসবহুল জীবন বেছে নিয়েছে।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিভাগের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল আগে ভাবত, হামাস নেতা ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ার ইহুদিদের শায়েস্তা করার পরিবর্তে গাজা পরিচালনায় ব্যস্ত। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবীকরণের প্রক্রিয়ার মধ্যে ইসরায়েল হামাস থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়েছিল।
হামাসের সূত্রটি জানায়, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর অনুপ্রবেশ ও তাদের কার্যকলাপ নিরীক্ষণের সক্ষমতা নিয়ে দম্ভ করেছে। এই আত্মবিশ্বাসই ইসরায়েলের কাল হয়েছে। শুরু থেকেই হামাস পরিকল্পনার তথ্য ফাঁস এড়াতে সতর্ক ছিল। অনেক হামাস নেতাও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন না। হামলায় অংশ নেওয়া ১ হাজার যোদ্ধাও টের পায়নি কেন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল।
হামলার দিন শনিবার হামাস মুক্তিসেনাদের চার ভাগে বিভক্ত করা হয়। সেদিনই তাঁদের মিশনের কথা বিস্তারিত জানানো হয়। প্রথম পদক্ষেপটি ছিল গাজা থেকে ছোড়া তিন হাজার রকেটের সঙ্গে গ্লাইডার বা মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার দিয়ে হামাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলের মাটিতে অবতরণ। হ্যাং গ্লাইডারের যোদ্ধারা মাটিতে নামার পর বেশ কয়েকটি এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেন। যোদ্ধারা বোমা বর্ষণ করে সব বাধা গুঁড়িয়ে দেন এবং মোটরবাইকে করে সীমানা অতিক্রম করেন। বুলডোজার দিয়ে প্রবেশপথগুলো আরও প্রসারিত করেন।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা ব্যর্থতা
হামাসের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, হামাসের একটি কমান্ডো ইউনিট ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দক্ষিণ গাজা সদর দপ্তরে আক্রমণ করে এবং এর যোগাযোগব্যবস্থা বিকল করে দেয়। এরপর জিম্মিদের গাজায় স্থানান্তর করা হয়। এসবের বেশির ভাগই আক্রমণের প্রথম দিকে করা হয়েছিল।
জিম্মিদের ধরার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, যোদ্ধারা গাজার কাছে নাচ-গানের পার্টি থেকে ইসরায়েলিদের জিম্মি করেন। এ সময় কয়েক ডজন লোককে মাঠের মধ্য দিয়ে এবং রাস্তার ওপর দিয়ে দৌড়াতে দেখা যায়।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিভাগের সূত্রটি প্রশ্ন রেখে বলে, ‘কীভাবে এই পার্টি (গাজার) কাছেই আয়োজন করা হলো? যেখানে দক্ষিণ ইসরায়েলে সম্পূর্ণ সামরিক শক্তি নিয়োজিত ছিল না। ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষার জন্য অধিকাংশই পশ্চিম তীরে মোতায়েন করা হয়েছিল। হামাস এর সুযোগ নিয়েছে।’
সাবেক মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ও বর্তমানে ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসিতে কর্মরত ডেনিস রস বলেন, ‘ইসরায়েল পশ্চিম তীরে সহিংসতায় বিভ্রান্ত হয়েছে, ফলে দক্ষিণে নগণ্য সংখ্যক সামরিক বাহিনী মোতায়েন ছিল। হামাস সম্ভবত প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফলতা পেয়েছে। এখন তাদের বিনাশ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ইয়াকভ আমিদ্রর গতকাল রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এই হামলা দক্ষিণে গোয়েন্দা তৎপরতা এবং সামরিক বিভাগের এক বড় ব্যর্থতা।’
আমিদ্রর ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং এখন জেরুজালেম ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড সিকিউরিটির সিনিয়র ফেলো হিসেবে নিয়োজিত।
তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েলের কিছু মিত্র বলছে, হামাসকে এর চড়া মূল্য দিতে হবে। আমরা একটি ভুল করেছি, কিন্তু আর নয়। আমরা হামাসকে ধীরে ধীরে অবশ্যই ধ্বংস করব।’

হামাস এমন চাতুর্য দেখিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাও টের পায়নি। ইসরায়েলের একের পর এক অভিযানের পরও গত দুই বছর হামাস প্রকাশ্যে গাজায় পাল্টা সামরিক তৎপরতা দেখায়নি। দীর্ঘ সংঘাতে ক্লান্ত, তারা আর যুদ্ধ চায় না—ইসরায়েলকে এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
কিন্তু গত শনিবার সকালে হামাস পাঁচ হাজার রকেট নিক্ষেপের সঙ্গে বুলডোজার, গ্লাইডার এবং মোটরবাইক নিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে পড়ে। এটি নিঃসন্দেহে ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় আঘাত। ৫০ বছর আগে সিরিয়া ও মিসর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালিয়ে পুরো প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছিল। সেই স্মৃতিই যেন ফিরিয়ে আনল হামাস।
হামাসের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইসরায়েলকে বিশ্বাস করানো হয়েছিল যে হামাস যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত। তারা নতুন করে আর যুদ্ধ চায় না। তারা চায় গাজার অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মীদের জন্য টাকা। এই ফাঁকেই গোপনের যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ চলছিল। এমনকি উন্মুক্ত স্থানেই বড় বহর নিয়ে চলেছে প্রশিক্ষণ। হামাসের যোদ্ধারাও জানতেন না সামনে কী হতে চলেছে।
সূত্রটি হামলার বিবরণ এবং প্রস্তুতির বিশদ তথ্য রয়টার্সকে দিয়েছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা সংস্থার তিনটি সূত্রও এ বিষয়ে তথ্য দিয়েছে সংবাদ সংস্থাটিকে।
হামাসের ঘনিষ্ঠ সূত্রটি বলেছে, হামাস কয়েক মাস ধরে ইসরায়েলকে বিভ্রান্ত করার জন্য একটি অভূতপূর্ব গোয়েন্দা কৌশল ব্যবহার করেছে। হামাস ইসরায়েলকে ধারণা দিয়েছিল, তারা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত নয়। কিন্তু তারা ব্যাপক অভিযানের প্রস্তুতি ঠিকই নিয়েছে। এমনকি এই দুই বছর ইসরায়েলের পক্ষ থেকে সামরিক নিপীড়ন ঠিকই চলেছে। এরপরও হামাসের পক্ষ থেকে কাঙ্ক্ষিত প্রতিক্রিয়া আসেনি।
ইসরায়েল স্বীকার করেছে যে ইহুদিদের পবিত্র দিন সাবাথ ও ধর্মীয় ছুটির মধ্যে এমন হামলা সত্যিই তাদের অবাক করেছে। হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের শহরগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্তত ৭০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করেছে। বহু ইসরায়েলি ও বিদেশিকে জিম্মি করেছে। এরপর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক বোমা বর্ষণ শুরু করেছে। এ পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র মেজর নির দিনার বলেছেন, ‘এটি আমাদের ৯/১১। তারা আমাদের গুঁড়িয়ে দিয়েছে। জল, স্থল ও আকাশপথে আক্রমণ চালিয়ে তারা আমাদের হতবাক করেছে।’
লেবাননে হামাসের প্রতিনিধি ওসামা হামদান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘এই হামলায় ফিলিস্তিনিরা দেখিয়ে দিয়েছে লক্ষ্য অর্জনে তারা কিছুতেই পিছপা হবে না। ইসরায়েলের যত বড়ই সামরিক শক্তি ও সক্ষমতা থাকুক না কেন।’
গোপন প্রশিক্ষণ
হামলার কিছুদিন আগে হামাস গাজায় একটি অবৈধ ইসরায়েলি বসতির অনুকরণে একটি এলাকা তৈরি করেছিল। এরপর সেটি ধ্বংসের মহড়া দেওয়া হয়। সেটিরও ভিডিও তৈরি করে তারা। ইসরায়েল তাদের কার্যক্রম দেখেছে ঠিকই কিন্তু গুরুত্ব দেয়নি। তারা ভেবেছিল, হামাস কোনো সংঘর্ষে জড়াতে আগ্রহী নয়।
একই সময়ে হামাস ইসরায়েলকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে তারা গাজার বেকার মানুষদের কর্মসংস্থান চায়। সীমান্তের ওপারে কীভাবে কাজ জোটাবে সে নিয়েই ব্যস্ত হামাস।
হামাসের সঙ্গে ২০২১ সালের যুদ্ধের পর থেকে হাজার হাজার গাজাবাসীকে ইসরায়েলে ও পশ্চিম তীরে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে তেল আবিব। যেখানে নির্মাণ, কৃষি বা সেবা খাতের চাকরিগুলোতে গাজার চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া হয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরেক মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম তারা উপার্জনের টাকায় গাজায় শান্তিপূর্ণভাবে বাস করবে। কিন্তু আমরা ভুল ছিলাম।’
ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিভাগের সূত্র স্বীকার করেছে, ‘ইসরায়েলের গোয়েন্দা বিভাগ হামাসের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে। আমাদের তারা বুঝিয়েছিল, তারা শুধু টাকা চায়। কিন্তু সর্বদা তারা সেই টাকা ব্যবহার করে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে।’
গত দুই বছরে হামাস নিষ্ক্রিয় থাকলেও গাজাভিত্তিক আরেকটি ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদের উত্থান ঘটে। তারা বেশ কয়েকটি আক্রমণ ও সিরিজ রকেট হামলাও চালায়।
হামলার কোনো আগাম তথ্য ছিল না
হামাসের এই দীর্ঘ সংযম অনেকের সন্দেহের জন্ম দিয়েছে, সেই সঙ্গে অনস্থা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। খোদ প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগাইনাইজেশনের (পিএলও) নেতারাও হামাসের সমালোচনা করেছে। যুদ্ধ ছেড়ে হামাস অর্থনৈতিক বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে—এমনটিও বলা হয়েছে।
পশ্চিম তীরে অবস্থানরত ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং তাঁর ফাতাহ গোষ্ঠীও হামাসের শান্ত আচরণের নিন্দা করেছিল। ২০২২ সালের জুনে ফাতাহ এক বিবৃতিতে হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে, এরা গাজাবাসীকে দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে দিয়ে নিজেরা আয়েশি জীবন যাপন করছে। তারা আরব দেশের রাজধানীগুলোতে গিয়ে বিলাসবহুল জীবন বেছে নিয়েছে।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিভাগের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল আগে ভাবত, হামাস নেতা ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ার ইহুদিদের শায়েস্তা করার পরিবর্তে গাজা পরিচালনায় ব্যস্ত। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবীকরণের প্রক্রিয়ার মধ্যে ইসরায়েল হামাস থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়েছিল।
হামাসের সূত্রটি জানায়, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর অনুপ্রবেশ ও তাদের কার্যকলাপ নিরীক্ষণের সক্ষমতা নিয়ে দম্ভ করেছে। এই আত্মবিশ্বাসই ইসরায়েলের কাল হয়েছে। শুরু থেকেই হামাস পরিকল্পনার তথ্য ফাঁস এড়াতে সতর্ক ছিল। অনেক হামাস নেতাও পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন না। হামলায় অংশ নেওয়া ১ হাজার যোদ্ধাও টের পায়নি কেন তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল।
হামলার দিন শনিবার হামাস মুক্তিসেনাদের চার ভাগে বিভক্ত করা হয়। সেদিনই তাঁদের মিশনের কথা বিস্তারিত জানানো হয়। প্রথম পদক্ষেপটি ছিল গাজা থেকে ছোড়া তিন হাজার রকেটের সঙ্গে গ্লাইডার বা মোটরচালিত প্যারাগ্লাইডার দিয়ে হামাস যোদ্ধাদের ইসরায়েলের মাটিতে অবতরণ। হ্যাং গ্লাইডারের যোদ্ধারা মাটিতে নামার পর বেশ কয়েকটি এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেলেন। যোদ্ধারা বোমা বর্ষণ করে সব বাধা গুঁড়িয়ে দেন এবং মোটরবাইকে করে সীমানা অতিক্রম করেন। বুলডোজার দিয়ে প্রবেশপথগুলো আরও প্রসারিত করেন।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা ব্যর্থতা
হামাসের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, হামাসের একটি কমান্ডো ইউনিট ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দক্ষিণ গাজা সদর দপ্তরে আক্রমণ করে এবং এর যোগাযোগব্যবস্থা বিকল করে দেয়। এরপর জিম্মিদের গাজায় স্থানান্তর করা হয়। এসবের বেশির ভাগই আক্রমণের প্রথম দিকে করা হয়েছিল।
জিম্মিদের ধরার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, যোদ্ধারা গাজার কাছে নাচ-গানের পার্টি থেকে ইসরায়েলিদের জিম্মি করেন। এ সময় কয়েক ডজন লোককে মাঠের মধ্য দিয়ে এবং রাস্তার ওপর দিয়ে দৌড়াতে দেখা যায়।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা বিভাগের সূত্রটি প্রশ্ন রেখে বলে, ‘কীভাবে এই পার্টি (গাজার) কাছেই আয়োজন করা হলো? যেখানে দক্ষিণ ইসরায়েলে সম্পূর্ণ সামরিক শক্তি নিয়োজিত ছিল না। ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সুরক্ষার জন্য অধিকাংশই পশ্চিম তীরে মোতায়েন করা হয়েছিল। হামাস এর সুযোগ নিয়েছে।’
সাবেক মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ও বর্তমানে ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসিতে কর্মরত ডেনিস রস বলেন, ‘ইসরায়েল পশ্চিম তীরে সহিংসতায় বিভ্রান্ত হয়েছে, ফলে দক্ষিণে নগণ্য সংখ্যক সামরিক বাহিনী মোতায়েন ছিল। হামাস সম্ভবত প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফলতা পেয়েছে। এখন তাদের বিনাশ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইসরায়েলের সঙ্গে লড়াই করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল ইয়াকভ আমিদ্রর গতকাল রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এই হামলা দক্ষিণে গোয়েন্দা তৎপরতা এবং সামরিক বিভাগের এক বড় ব্যর্থতা।’
আমিদ্রর ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং এখন জেরুজালেম ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড সিকিউরিটির সিনিয়র ফেলো হিসেবে নিয়োজিত।
তিনি আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েলের কিছু মিত্র বলছে, হামাসকে এর চড়া মূল্য দিতে হবে। আমরা একটি ভুল করেছি, কিন্তু আর নয়। আমরা হামাসকে ধীরে ধীরে অবশ্যই ধ্বংস করব।’

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৩৪ মিনিট আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
২ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাঁদের একজনের নাম সাজিদ আকরাম এবং অন্যজন নাভিদ আকরাম। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।
বন্দুকধারীদের গাড়িতে জঙ্গি সংস্থা আইএস-এর দুটি পতাকা পাওয়া গেছে। ২৪ বছর বয়সী অভিযুক্ত নাভিদের বাবা সাজিদ তথা অপর অভিযুক্তের কাছে ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তাঁর কাছে ছয়টি নিবন্ধিত অস্ত্র ছিল। এসব অস্ত্র দিয়েই হামলাকারীরা প্রায় ১০–২০ মিনিট ধরে উৎসবে উপস্থিত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে এবং নিহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছর পর্যন্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে দুজন পুলিশও ছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় হামলাকারী নাভিদ গুরুতর আহত হলেও তাঁর বাবা সাজিদ পুলিশের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ‘গতকাল আমরা যা দেখেছি, তা ছিল ধর্মবিরোধী খাঁটি শয়তানদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্দুক নিয়ম কঠোর করবে এবং জাতীয় অস্ত্র নিবন্ধন চালু করবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্ডাই বিচে প্রায় ১ হাজার মানুষ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। তবে আহমেদ আল-আহমেদ নামে এক বীর নাগরিক খালি হাতে এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচান। এ সময় আল-আহমেদ নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্ব নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে গুরুতর বন্দুক হামলার ঘটনা।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দেড় লাখ ইহুদি বসবাস করেন। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন সিডনির পূর্বাঞ্চলে।

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাঁদের একজনের নাম সাজিদ আকরাম এবং অন্যজন নাভিদ আকরাম। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।
বন্দুকধারীদের গাড়িতে জঙ্গি সংস্থা আইএস-এর দুটি পতাকা পাওয়া গেছে। ২৪ বছর বয়সী অভিযুক্ত নাভিদের বাবা সাজিদ তথা অপর অভিযুক্তের কাছে ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তাঁর কাছে ছয়টি নিবন্ধিত অস্ত্র ছিল। এসব অস্ত্র দিয়েই হামলাকারীরা প্রায় ১০–২০ মিনিট ধরে উৎসবে উপস্থিত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে এবং নিহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছর পর্যন্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে দুজন পুলিশও ছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় হামলাকারী নাভিদ গুরুতর আহত হলেও তাঁর বাবা সাজিদ পুলিশের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ‘গতকাল আমরা যা দেখেছি, তা ছিল ধর্মবিরোধী খাঁটি শয়তানদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্দুক নিয়ম কঠোর করবে এবং জাতীয় অস্ত্র নিবন্ধন চালু করবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্ডাই বিচে প্রায় ১ হাজার মানুষ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। তবে আহমেদ আল-আহমেদ নামে এক বীর নাগরিক খালি হাতে এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচান। এ সময় আল-আহমেদ নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্ব নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে গুরুতর বন্দুক হামলার ঘটনা।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দেড় লাখ ইহুদি বসবাস করেন। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন সিডনির পূর্বাঞ্চলে।

হামাস এমন চাতুর্য দেখিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাও টের পায়নি। ইসরায়েলের একের পর এক অভিযানের পরও গত দুই বছর হামাস প্রকাশ্যে গাজায় পাল্টা সামরিক তৎপরতা দেখায়নি। দীর্ঘ সংঘাতে ক্লান্ত, তারা আর যুদ্ধ চায় না—ইসরায়েলকে এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
০৯ অক্টোবর ২০২৩
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
২ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি হংকং ও চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিদেশি সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে তাঁর সাজা ঘোষণা হতে পারে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার সময় বিচারক অ্যাস্থার তোহ বলেন, চীনের পিপলস রিপাবলিকের প্রতি জিমি লাইয়ের ঘৃণা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, লাই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে হংকংয়ের অজুহাতে চীনের সরকার উৎখাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আদালত আরও রায় দেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক ‘অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকার মাধ্যমে লাই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক লেখা প্রকাশ করেছিলেন, যা ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইনের লঙ্ঘন।
বেইজিং শাসিত হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন—লাইয়ের কর্মকাণ্ড দেশ ও হংকংবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে ‘নিষ্ঠুর বিচারিক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বলছে, বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি কার্যত ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর বেইজিং কোনো আইনসভা পরামর্শ ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করেছিল, যা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ের সময় জিমি লাই শান্ত ছিলেন এবং আদালত ছাড়ার সময় পরিবারকে বিদায় জানান। তাঁর স্ত্রী টেরেসা, এক ছেলে ও ক্যাথলিক কার্ডিনাল জোসেফ জেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। লাইয়ের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপিল করা হবে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
এদিকে লাইয়ের ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই যুক্তরাজ্য সরকারকে তাঁর বাবার মুক্তির জন্য আরও সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে লাইয়ের মুক্তি দাবি করে এলেও চীন ও হংকং সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এক সময়ের সফল ব্যবসায়ী জিমি লাই ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়েনআনমেন গণহত্যার পর গণতন্ত্র আন্দোলনে সক্রিয় হন। অনেক হংকংবাসীর চোখে তিনি এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতীক। তবে এই রায় হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি হংকং ও চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিদেশি সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে তাঁর সাজা ঘোষণা হতে পারে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার সময় বিচারক অ্যাস্থার তোহ বলেন, চীনের পিপলস রিপাবলিকের প্রতি জিমি লাইয়ের ঘৃণা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, লাই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে হংকংয়ের অজুহাতে চীনের সরকার উৎখাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আদালত আরও রায় দেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক ‘অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকার মাধ্যমে লাই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক লেখা প্রকাশ করেছিলেন, যা ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইনের লঙ্ঘন।
বেইজিং শাসিত হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন—লাইয়ের কর্মকাণ্ড দেশ ও হংকংবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে ‘নিষ্ঠুর বিচারিক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বলছে, বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি কার্যত ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর বেইজিং কোনো আইনসভা পরামর্শ ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করেছিল, যা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ের সময় জিমি লাই শান্ত ছিলেন এবং আদালত ছাড়ার সময় পরিবারকে বিদায় জানান। তাঁর স্ত্রী টেরেসা, এক ছেলে ও ক্যাথলিক কার্ডিনাল জোসেফ জেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। লাইয়ের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপিল করা হবে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
এদিকে লাইয়ের ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই যুক্তরাজ্য সরকারকে তাঁর বাবার মুক্তির জন্য আরও সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে লাইয়ের মুক্তি দাবি করে এলেও চীন ও হংকং সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এক সময়ের সফল ব্যবসায়ী জিমি লাই ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়েনআনমেন গণহত্যার পর গণতন্ত্র আন্দোলনে সক্রিয় হন। অনেক হংকংবাসীর চোখে তিনি এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতীক। তবে এই রায় হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

হামাস এমন চাতুর্য দেখিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাও টের পায়নি। ইসরায়েলের একের পর এক অভিযানের পরও গত দুই বছর হামাস প্রকাশ্যে গাজায় পাল্টা সামরিক তৎপরতা দেখায়নি। দীর্ঘ সংঘাতে ক্লান্ত, তারা আর যুদ্ধ চায় না—ইসরায়েলকে এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
০৯ অক্টোবর ২০২৩
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৩৪ মিনিট আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
২ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক।
এনআইএর ১ হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং মামলার পক্ষে থাকা প্রমাণের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এলইটি-টিআরএফ সরাসরি জড়িত ছিল। হামলার মূল হ্যান্ডলার হিসেবে এলইটির শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান ও হামজা আফগানির। চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীনগরের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।
এলইটি ও টিআরএফের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর (বিএনএস) অস্ত্র আইন (১৯৫৯) ও বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (১৯৬৭) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার’ ধারাও যুক্ত করেছে।
এ ছাড়া আরও দুজন এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত হয়েছেন। পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদকে গত ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জিজ্ঞাসাবাদে পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কে এই সাজিদ জাট
সাজিদ জাট একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত। তাঁর পরিচিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, ল্যাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব ও শানি। ২০২২ সালের অক্টোবরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় তাঁকে ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট (Individual Terrorist) বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও একা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। তাঁরা লোন উলফ নামেও পরিচিত। কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় সহজে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ধারণা, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি শুধু টিআরএফের অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী নিয়োগ, অর্থায়ন ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সাজিদ জাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা (যেখানে তিনি ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাস হামলা।
এ ছাড়া হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের লজিস্টিক ও অপারেশনাল সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সবচেয়ে ভয়ংকর মুখ হলেন এই সাজিদ জাট।

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক।
এনআইএর ১ হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং মামলার পক্ষে থাকা প্রমাণের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এলইটি-টিআরএফ সরাসরি জড়িত ছিল। হামলার মূল হ্যান্ডলার হিসেবে এলইটির শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান ও হামজা আফগানির। চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীনগরের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।
এলইটি ও টিআরএফের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর (বিএনএস) অস্ত্র আইন (১৯৫৯) ও বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (১৯৬৭) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার’ ধারাও যুক্ত করেছে।
এ ছাড়া আরও দুজন এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত হয়েছেন। পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদকে গত ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জিজ্ঞাসাবাদে পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কে এই সাজিদ জাট
সাজিদ জাট একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত। তাঁর পরিচিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, ল্যাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব ও শানি। ২০২২ সালের অক্টোবরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় তাঁকে ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট (Individual Terrorist) বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও একা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। তাঁরা লোন উলফ নামেও পরিচিত। কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় সহজে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ধারণা, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি শুধু টিআরএফের অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী নিয়োগ, অর্থায়ন ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সাজিদ জাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা (যেখানে তিনি ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাস হামলা।
এ ছাড়া হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের লজিস্টিক ও অপারেশনাল সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সবচেয়ে ভয়ংকর মুখ হলেন এই সাজিদ জাট।

হামাস এমন চাতুর্য দেখিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাও টের পায়নি। ইসরায়েলের একের পর এক অভিযানের পরও গত দুই বছর হামাস প্রকাশ্যে গাজায় পাল্টা সামরিক তৎপরতা দেখায়নি। দীর্ঘ সংঘাতে ক্লান্ত, তারা আর যুদ্ধ চায় না—ইসরায়েলকে এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
০৯ অক্টোবর ২০২৩
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৩৪ মিনিট আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
৩ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের নন্দা দেবী পর্বতের কাছে হারিয়ে যাওয়া ওই পারমাণবিক শক্তিচালিত যন্ত্রটি গঙ্গা নদীর জন্য নানান ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৫ সালে, চীনের সদ্য গড়ে ওঠা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) যৌথভাবে এক গোপন অভিযানে নামে। লক্ষ্য ছিল—ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর চূড়ায় একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত নজরদারিযন্ত্র বসানো।
ওই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (আরটিজি)। এটি কয়েক কেজি প্লুটোনিয়াম দিয়ে চালিত হতো। এর মাধ্যমে স্থাপিত সেন্সরগুলো দিয়ে সীমান্তের ওপারে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে অভিযানে অংশ নেওয়া দল যন্ত্রটি পাহাড়ে রেখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের মৌসুমে ফিরে গেলে দেখা যায়—আরটিজি ও এর প্লুটোনিয়াম-কোর আর সেখানে নেই। ধারণা করা হয়, তুষারধসের কারণে সেটি ভেসে গেছে অথবা গভীর হিমবাহের নিচে চাপা পড়েছে।
আরটিজি কী
আরটিজি বা রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র, যা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওই পদার্থ ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার সময় তাপ তৈরি হয় আর সেই তাপ বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনো চলমান যন্ত্রাংশ থাকে না। তাই আরটিজি দীর্ঘদিন কাজ করতে পারে। সাধারণত মহাকাশ অভিযান বা এমন দুর্গম এলাকায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
আরটিজি কোনো পারমাণবিক বোমা নয় এবং এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। তবে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
হারানো যন্ত্রটি এখন কোথায়
পরবর্তী কয়েক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ওই যন্ত্রের সন্ধানে অভিযান চালালেও সফল হয়নি। দুই দেশের কেউই নিশ্চিত করে বলেনি, যন্ত্রটির পরিণতি কী হয়েছে।
কিছু কর্মকর্তা ও লেখকের মতে, ভারতীয় কোনো দল নীরবে যন্ত্রটি উদ্ধার করে থাকতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, এটি এখনো নন্দা দেবী এলাকার অস্থির বরফ ও পাথরের স্তরের নিচে আটকে আছে।
১৯৭৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের এক জরিপে স্থানীয় নদীগুলোতে কোনো প্লুটোনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জরিপটি যন্ত্রটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করতে পারেনি। ফলে বিষয়টি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গঙ্গায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঝুঁকি
নন্দা দেবীর হিমবাহ থেকে উৎপন্ন রিষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদী মিলিত হয়ে অলকানন্দায় প্রবাহিত হয়। পরে অলকানন্দা ও ভাগীরথী একত্রে গঙ্গা নদীর জন্ম দেয়। এই নদীই নিচের দিকে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটরটি অক্ষত অবস্থায় বরফের গভীরে চাপা পড়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গলে বরফের পানির সঙ্গে মিশে নদীতে প্রবেশ করতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সম্ভাবনা কম, কিন্তু প্রভাব ভয়াবহ। উত্তরাখন্ডে প্রতিবছর বন্যা, তুষারধসের ঘটনা ঘটলে এই আশঙ্কা নতুন করে সামনে আসে।
নতুন করে উদ্বেগ কেন
হিমালয়ে হিমবাহ গলার গতি বেড়ে যাওয়া, ২০২১ সালের চামোলি বন্যার মতো দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এবং পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় পুরোনো সামরিক ও পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাড়তি নজরদারির প্রেক্ষাপটে নন্দা দেবীর এই হারানো যন্ত্রটি আবার আলোচনায় এসেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা—তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ সরে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে আরটিজির অবশিষ্টাংশ উন্মুক্ত বা নড়াচড়া করতে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও নিউইয়র্ক টাইমস

প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের নন্দা দেবী পর্বতের কাছে হারিয়ে যাওয়া ওই পারমাণবিক শক্তিচালিত যন্ত্রটি গঙ্গা নদীর জন্য নানান ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৫ সালে, চীনের সদ্য গড়ে ওঠা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) যৌথভাবে এক গোপন অভিযানে নামে। লক্ষ্য ছিল—ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর চূড়ায় একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত নজরদারিযন্ত্র বসানো।
ওই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (আরটিজি)। এটি কয়েক কেজি প্লুটোনিয়াম দিয়ে চালিত হতো। এর মাধ্যমে স্থাপিত সেন্সরগুলো দিয়ে সীমান্তের ওপারে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে অভিযানে অংশ নেওয়া দল যন্ত্রটি পাহাড়ে রেখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের মৌসুমে ফিরে গেলে দেখা যায়—আরটিজি ও এর প্লুটোনিয়াম-কোর আর সেখানে নেই। ধারণা করা হয়, তুষারধসের কারণে সেটি ভেসে গেছে অথবা গভীর হিমবাহের নিচে চাপা পড়েছে।
আরটিজি কী
আরটিজি বা রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র, যা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওই পদার্থ ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার সময় তাপ তৈরি হয় আর সেই তাপ বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনো চলমান যন্ত্রাংশ থাকে না। তাই আরটিজি দীর্ঘদিন কাজ করতে পারে। সাধারণত মহাকাশ অভিযান বা এমন দুর্গম এলাকায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
আরটিজি কোনো পারমাণবিক বোমা নয় এবং এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। তবে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
হারানো যন্ত্রটি এখন কোথায়
পরবর্তী কয়েক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ওই যন্ত্রের সন্ধানে অভিযান চালালেও সফল হয়নি। দুই দেশের কেউই নিশ্চিত করে বলেনি, যন্ত্রটির পরিণতি কী হয়েছে।
কিছু কর্মকর্তা ও লেখকের মতে, ভারতীয় কোনো দল নীরবে যন্ত্রটি উদ্ধার করে থাকতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, এটি এখনো নন্দা দেবী এলাকার অস্থির বরফ ও পাথরের স্তরের নিচে আটকে আছে।
১৯৭৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের এক জরিপে স্থানীয় নদীগুলোতে কোনো প্লুটোনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জরিপটি যন্ত্রটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করতে পারেনি। ফলে বিষয়টি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গঙ্গায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঝুঁকি
নন্দা দেবীর হিমবাহ থেকে উৎপন্ন রিষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদী মিলিত হয়ে অলকানন্দায় প্রবাহিত হয়। পরে অলকানন্দা ও ভাগীরথী একত্রে গঙ্গা নদীর জন্ম দেয়। এই নদীই নিচের দিকে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটরটি অক্ষত অবস্থায় বরফের গভীরে চাপা পড়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গলে বরফের পানির সঙ্গে মিশে নদীতে প্রবেশ করতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সম্ভাবনা কম, কিন্তু প্রভাব ভয়াবহ। উত্তরাখন্ডে প্রতিবছর বন্যা, তুষারধসের ঘটনা ঘটলে এই আশঙ্কা নতুন করে সামনে আসে।
নতুন করে উদ্বেগ কেন
হিমালয়ে হিমবাহ গলার গতি বেড়ে যাওয়া, ২০২১ সালের চামোলি বন্যার মতো দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এবং পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় পুরোনো সামরিক ও পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাড়তি নজরদারির প্রেক্ষাপটে নন্দা দেবীর এই হারানো যন্ত্রটি আবার আলোচনায় এসেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা—তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ সরে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে আরটিজির অবশিষ্টাংশ উন্মুক্ত বা নড়াচড়া করতে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও নিউইয়র্ক টাইমস

হামাস এমন চাতুর্য দেখিয়েছে যে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থাও টের পায়নি। ইসরায়েলের একের পর এক অভিযানের পরও গত দুই বছর হামাস প্রকাশ্যে গাজায় পাল্টা সামরিক তৎপরতা দেখায়নি। দীর্ঘ সংঘাতে ক্লান্ত, তারা আর যুদ্ধ চায় না—ইসরায়েলকে এমন ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
০৯ অক্টোবর ২০২৩
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৩৪ মিনিট আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
২ ঘণ্টা আগে