Ajker Patrika

মার্কিন-ইসরায়েলি হামলা ঠেকাতে প্রস্তুত ইরান, যেভাবে সাজাচ্ছে প্রতিরক্ষা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইরানের এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: এএফপি
ইরানের এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চললেও, তেহরানের আশঙ্কা যেকোনো সময় ইসরায়েলি বা যুক্তরাষ্ট্রের হামলা হতে পারে। এমনকি এই দুই দেশ যৌথভাবেই ইরানে হামলা করে বসতে পারে। আর এই বিষয়টি মাথায় রেখেই নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাচ্ছে ইরান। গত বছর ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার সরাসরি সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবার অবকাশ আছে।

সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলার মুখে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কিছু দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তেহরান সামরিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। ২০২৪ সালের অক্টোবর ও এপ্রিলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের উন্নত ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ও রাডার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বেশ ক্ষতি হয়। এই হামলার পর অনেকেই মনে করেছিলেন যে, ইরান গত কয়েক দশকের মধ্যে বিমান হামলার দিক থেকে সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় আছে।

ইসরায়েল লেবাননে হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতিদের মতো ইরানের মিত্র গোষ্ঠীগুলোর ওপর হামলা চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেছিলেন, প্রক্সিদের ওপর এই হামলা ইরানের দুর্বলতাকে আরও বাড়িয়েছে। তবে, সাম্প্রতিক পশ্চিমা গোয়েন্দা মূল্যায়ন এবং প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের পর্যালোচনা করা স্যাটেলাইট চিত্র ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে। তারা বলছেন, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষার অনেক উপাদান অক্ষত আছে বা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেগুলো মেরামত করা হয়েছে।

ইরান এস-৩০০ সিস্টেমসহ বেশ কয়েকটি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার নাতানজ ও ফোরদোর মতো গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনার কাছে সরিয়ে নিয়েছে। গত মাসে তেহরানে আর্মি ডে উদ্‌যাপনে একটি এস-৩০০ লঞ্চার ও একটি রাডার ট্রাক প্রকাশ্যে প্রদর্শন করা হয়, যা ইরানের সক্ষমতা প্রদর্শনের একটি প্রয়াস।

গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক মহড়ার সময় একটি এস-৩০০ ইউনিটকে ইরানের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি রাডার ব্যবহার করে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে দেখা গেছে। মার্কিন থিংক ট্যাংক কার্নেগি এনডাউমেন্টের নিকোল গ্রাজেউস্কি মনে করেন, এটি সম্ভবত এস-৩০০ সিস্টেমের মূল রাডার অকার্যকর হওয়ার কারণে করা হয়েছে।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরি দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও প্রস্তুতির ‘উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ এবং ‘কয়েকগুণ বিনিয়োগ বৃদ্ধির’ কথা উল্লেখ করে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ইরানের আকাশসীমার যেকোনো লঙ্ঘন আক্রমণকারীদের জন্য ‘উল্লেখযোগ্য ক্ষতি’ বয়ে আনবে। ইরান কেবল রাশিয়ার তৈরি সিস্টেমের ওপর নির্ভর করছে না, বরং দেশটি স্থানীয়ভাবে বাভার-৩৭৩ (দূরপাল্লা) এবং খোরদাদ-১৫ (মাঝারি পাল্লা)—এর মতো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও তৈরি করছে।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষণা সহযোগী ফ্যাবিয়ান হিনজ বলেছেন, রাশিয়ার কাছ থেকে উন্নত এস-৪০০ সিস্টেম সরবরাহে ধীর গতি ও অস্বীকৃতির কারণে এই দেশীয় অস্ত্রের উন্নয়ন শুরু হয়েছে। এটি ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সাফল্যের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর একটি চেষ্টা।

ওয়াশিংটনের সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ইরানের সঙ্গে পূর্বের পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করেছিলেন। এবারও তিনি, চলমান আলোচনা ভেঙে গেলে ইরানের ওপর হামলার হুমকি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ছয়টি বি-২ বোমারু বিমান ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া ঘাঁটিতে মোতায়েন করেছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো হামলার সম্ভাব্য সূচনা বিন্দু হতে পারে এই ঘাঁটি।

ইরানের একটি অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ড্রোন। ছবি: এক্স
ইরানের একটি অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ড্রোন। ছবি: এক্স

যদি যুক্তরাষ্ট্র হামলা করেই তাহলে বি-২ বোমারু বিমানগুলো সম্ভবত সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে ভারী ৩০ হাজার পাউন্ডের ‘জিবিইউ-৫৭ বাংকার ব্লাস্টার’ বোমা ফেলবে। ইসরায়েল একা হামলা চালালে তাদের বিকল্প সীমিত হবে। কারণ, দেশটির কাছে ভারী বোমারু বিমান বা এত বড় আকারের অস্ত্র সরবরাহ করার সক্ষমতা নেই। এ ক্ষেত্রে তারা সম্ভবত এফ-৩৫ স্টেলথ ফাইটার ব্যবহার করবে। এই বিমানটিতে করে ইসরায়েল ২ হাজার পাউন্ডের বিএলইউ-১০৯ নির্ভুল লক্ষ্যমাত্রার বোমা বহন করতে পারে অথবা এফ-১৫ বোমারু বিমান ৪ হাজার পাউন্ডের জিবিইউ-২৮ বোমা বহন করবে। এ ধরনের বোমার জন্য পারমাণবিক স্থাপনার ‘কঠিন আশ্রয়কেন্দ্র’ ভেদ করতে একই অবস্থানে একাধিকবার আঘাত করতে হবে। এর জন্য অনেক উড্ডয়ন এবং সম্ভবত মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরার জন্য ট্যাংকার ব্যবহার করতে হতে পারে। আর এসব ট্যাংকারই আবার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলার বিপরীতে অরক্ষিত হতে পারে।

ইসরায়েল এবং ইরান উভয়ই সম্ভাব্য এরিয়াল ফাইট বা আকাশ যুদ্ধের জন্য কয়েক দশক ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসরায়েলি গোয়েন্দা মূল্যায়ন অনুসারে, তেহরান মনে করে—গত বছরের আকাশ প্রতিরক্ষা ‘দুর্বল’ ছিল এবং তারা এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য লঞ্চার ও রাডার পুনরায় স্থাপন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে।

আকাশ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ ইউরি লিয়ামিন বলেছেন, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এখন আরও বেশি মোবাইল (অর্থাৎ, চলাচলে সক্ষম) এবং দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করে আশ্রয়কেন্দ্রে লুকিয়ে থাকতে পারে, যা তাদের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে তুলনামূলক সুরক্ষিত করে তোলে।

ইসরায়েল ইরানের ওপর ‘এরিয়াল বা আকাশপথে আধিপত্য’ প্রতিষ্ঠা করলেও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ক্ষেত্রে একটি দীর্ঘ এবং ব্যাপক বিমান যুদ্ধ শুরু করতে পারে। এতে ইসরায়েলি পাইলটদের ‘ক্লান্তি এবং বিপদ’ বাড়তে পারে। এমনকি ইরানের কম উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রও সফল হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ২০১৮ সালে সিরিয়া এস-২০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দিয়ে ইসরায়েলি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে দেখিয়েছিল। সেই বিমানে থাকা উভয় পাইলটই অবশ্য বেঁচে গিয়েছিলেন।

লিয়ামিন মনে করেন, একটি সফল হামলার ফলাফল আক্রমণকারী ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সমন্বয়ের ওপর নির্ভর করে। তিনি বলেছেন, ‘সেরা দলই জিতবে।’ এই পরিস্থিতি ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি জটিল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যেখানে যেকোনো ভুল পদক্ষেপ বড় ধরনের পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

তথ্যসূত্র: ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত