ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজ্যের মর্যাদা ও চাকরিতে স্থানীয়দের কোটার দাবিতে চীনের সীমান্তঘেঁষা লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ৭০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলছিল, কিন্তু আজ তা সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপরই শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছে।
এই বিক্ষোভ ও সহিংসতা কেন হলো এবং এর পেছনে কারা রয়েছে তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো—
কেন হচ্ছে এই বিক্ষোভ?
জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে একটি দল ১০ সেপ্টেম্বর থেকে অনশন করছিল। তাদের মূল দাবি হলো, লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা।
সোনম ওয়াংচুক আজ বুধবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই তাদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। গত পাঁচ বছর ধরে তারা বেকারত্বের শিকার, নানা অজুহাতে বারবার তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে এবং লাদাখের দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। আমি বলব, এটি সামাজিক অস্থিরতার একটি ক্ষেত্র। অনেকে মনে করেন, এরা শুধু আমাদের সমর্থক, কিন্তু বাস্তবে পুরো লাদাখ আমাদের এবং এই দাবির সঙ্গে আছে। এটি ছিল একটি জেন-জি বিপ্লব।’
তিনি তরুণদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘সহিংসতা আমাদের পাঁচ বছরের প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দেবে। এটা আমাদের পথ নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে চাই।’
কেন্দ্র সরকার ও লাদাখের প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি) এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) সদস্যরা। তাদের পরবর্তী বৈঠক ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের উপজাতি এলাকার প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করে। এই বিশেষ বিধানটি স্বায়ত্তশাসিত জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলোকে আইন প্রণয়ন, জমি ও বন ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় শাসনব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এর উদ্দেশ্য হলো উপজাতিদের অধিকার, ঐতিহ্য ও স্বশাসনকে রক্ষা করা। উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, লাদাখের জনসংখ্যার প্রায় ৯৭ শতাংশই তফসিলি উপজাতি ভুক্ত।
কারা এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে?
রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে লাদাখের লেহতে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)। এটি বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট।
দা হিন্দুর গত ১০ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোনম ওয়াংচুক দীর্ঘদিন ধরে লাদাখের অধিকার ও উন্নয়নের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি এই জোটের একজন সদস্য। ওয়াংচুক অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মিলে একটি অনশনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যাতে কেন্দ্রের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনার মাধ্যমে লাদাখের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ করা যায়।
দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার অনশন চলাকালীন একজন বয়স্ক নারী ও একজন পুরুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে এলএবি’র যুব শাখা বুধবার লেহতে বনধের (হরতাল) ডাক দেয়। এরপরই এলএবি-এর তত্ত্বাবধানে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে বিশাল জনসমাগম হয়। এরপরই সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আন্দোলনে কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সও (কেডিএ) অংশ নিয়েছে, যারা এলএবি-এর দাবিগুলোকে সমর্থন করে। কেডিএ আগামীকাল ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলজুড়ে সংহতি কার্যক্রম ও বনধের ডাক দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই দুটি সংগঠন গত চার বছর ধরে একসঙ্গে আন্দোলন করছে এবং সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনাতেও বসেছে। কিন্তু এরপরও কোনো সমাধান আসেনি।
কেন বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপ করছে?
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য লেহর সহিংসতার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। তিনি এক্সে একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘লাদাখে দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এই ব্যক্তি হলেন লেহ ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর। সে জনতাকে উসকে দিয়ে বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রাহুল গান্ধী কি এই ধরনের অস্থিতিশীলতার কথাই কল্পনা করেছিলেন?’
অন্যদিকে, কংগ্রেসের এক সমর্থক লিখেছেন, ‘সোনম ওয়াংচুকের অনশনের কয়েক দিন পর আজ জেন-জি যুবকেরা পূর্ণ শক্তিতে রাস্তায় নেমেছে এবং বিজেপিকে বাস্তব পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে।’
এর আগে কংগ্রেস সাংসদ ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ভারতের তরুণ এবং জেন-জিদের প্রতি গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নেপালে জেন-জিদের সহিংস বিক্ষোভের কারণে সরকারের পতনের পরেই এই মন্তব্য করেন রাহুল। বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করে অভিযোগ করেছেন, তিনি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
জেন-জিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
অনেকেই লাদাখের এই বিক্ষোভকে জেন-জিদের আন্দোলন বলে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক ব্যক্তি লেহের একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘জেন-জিরা লাদাখের রাস্তায় নেমেছে।’ স্থানীয় আরেকজন উদ্যোক্তা অভিযোগ করেছেন, ‘লাদাখের জেন-জি বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন দিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে।’
কিছু ব্যক্তি নেপালের সাম্প্রতিক উত্থানের সঙ্গেও লাদাখের এই বিক্ষোভের তুলনা করেছেন, যেখানে জেন-জিরা অলি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছিল। দা প্রোটাগনিস্ট নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘এটা নেপাল নয়। এটা লাদাখ।’
এদিকে, সোনম ওয়াংচুক আজকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘লেহতে খুবই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা আজ ব্যর্থ হলো। আমি তরুণদের এই নির্বোধ কাজ বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি কেবল আমাদের উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
আজ লাদাখে কী ঘটেছিল?
লেহতে আজ বুধবার পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। ১৫ দিনের অনশন শেষ করে ওয়াংচুক মঙ্গলবার তাঁর সমর্থকদের সহিংসতা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য ছিল, কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে আলোচনার তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছিলেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জনসমাগম হয়। সেখান থেকে শত শত বিক্ষোভকারী শহরজুড়ে মিছিল করে। তারা লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির সমর্থনে স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভকারীরা যখন বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে পাথর নিক্ষেপ করা শুরু করে, তখন উত্তেজনা বেড়ে যায়। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বিজেপির কার্যালয় ছাড়াও বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয়।
পরে অতিরিক্ত বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়, তবে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সহিংসতার পর কর্তৃপক্ষ ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ নিষিদ্ধ করে কারফিউ জারি করেছে।
এই সহিংসতার কারণে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক লাদাখ উৎসবও মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। কর্মকর্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘অনিবার্য কারণে’ উৎসব বাতিল করা হয়েছে। তারা স্থানীয় শিল্পী, সাংস্কৃতিক দল ও পর্যটকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
হঠাৎ করে ফুঁসে ওঠা এই সহিংস বিক্ষোভে ভারত কতটা উদ্বিগ্ন?
কৌশলগতভাবে লাদাখ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে এর আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, যা এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাফার জোন এবং প্রতিরক্ষার জন্য একটি সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই দিল্লির জন্য লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের।
কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য এই অঞ্চলের তাৎপর্য অনেক। কৌশলগত দিক থেকে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলটিকে সব সময় ভারতের নজরে রাখতে হয়।
চীনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর লাদাখের অবস্থান। এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। এখানে অসংখ্যবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যেমন গালওয়ান উপত্যকায়।
লাদাখের দুর্গম ভূখণ্ড এবং উঁচু স্থান ভারতের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। সর্বোপরি, সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিসেবে আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য লাদাখের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রাজ্যের মর্যাদা ও চাকরিতে স্থানীয়দের কোটার দাবিতে চীনের সীমান্তঘেঁষা লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ৭০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলছিল, কিন্তু আজ তা সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপরই শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছে।
এই বিক্ষোভ ও সহিংসতা কেন হলো এবং এর পেছনে কারা রয়েছে তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো—
কেন হচ্ছে এই বিক্ষোভ?
জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে একটি দল ১০ সেপ্টেম্বর থেকে অনশন করছিল। তাদের মূল দাবি হলো, লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা।
সোনম ওয়াংচুক আজ বুধবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই তাদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। গত পাঁচ বছর ধরে তারা বেকারত্বের শিকার, নানা অজুহাতে বারবার তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে এবং লাদাখের দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। আমি বলব, এটি সামাজিক অস্থিরতার একটি ক্ষেত্র। অনেকে মনে করেন, এরা শুধু আমাদের সমর্থক, কিন্তু বাস্তবে পুরো লাদাখ আমাদের এবং এই দাবির সঙ্গে আছে। এটি ছিল একটি জেন-জি বিপ্লব।’
তিনি তরুণদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘সহিংসতা আমাদের পাঁচ বছরের প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দেবে। এটা আমাদের পথ নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে চাই।’
কেন্দ্র সরকার ও লাদাখের প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি) এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) সদস্যরা। তাদের পরবর্তী বৈঠক ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের উপজাতি এলাকার প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করে। এই বিশেষ বিধানটি স্বায়ত্তশাসিত জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলোকে আইন প্রণয়ন, জমি ও বন ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় শাসনব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এর উদ্দেশ্য হলো উপজাতিদের অধিকার, ঐতিহ্য ও স্বশাসনকে রক্ষা করা। উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, লাদাখের জনসংখ্যার প্রায় ৯৭ শতাংশই তফসিলি উপজাতি ভুক্ত।
কারা এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে?
রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে লাদাখের লেহতে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)। এটি বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট।
দা হিন্দুর গত ১০ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোনম ওয়াংচুক দীর্ঘদিন ধরে লাদাখের অধিকার ও উন্নয়নের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি এই জোটের একজন সদস্য। ওয়াংচুক অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মিলে একটি অনশনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যাতে কেন্দ্রের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনার মাধ্যমে লাদাখের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ করা যায়।
দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার অনশন চলাকালীন একজন বয়স্ক নারী ও একজন পুরুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে এলএবি’র যুব শাখা বুধবার লেহতে বনধের (হরতাল) ডাক দেয়। এরপরই এলএবি-এর তত্ত্বাবধানে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে বিশাল জনসমাগম হয়। এরপরই সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আন্দোলনে কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সও (কেডিএ) অংশ নিয়েছে, যারা এলএবি-এর দাবিগুলোকে সমর্থন করে। কেডিএ আগামীকাল ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলজুড়ে সংহতি কার্যক্রম ও বনধের ডাক দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই দুটি সংগঠন গত চার বছর ধরে একসঙ্গে আন্দোলন করছে এবং সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনাতেও বসেছে। কিন্তু এরপরও কোনো সমাধান আসেনি।
কেন বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপ করছে?
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য লেহর সহিংসতার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। তিনি এক্সে একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘লাদাখে দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এই ব্যক্তি হলেন লেহ ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর। সে জনতাকে উসকে দিয়ে বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রাহুল গান্ধী কি এই ধরনের অস্থিতিশীলতার কথাই কল্পনা করেছিলেন?’
অন্যদিকে, কংগ্রেসের এক সমর্থক লিখেছেন, ‘সোনম ওয়াংচুকের অনশনের কয়েক দিন পর আজ জেন-জি যুবকেরা পূর্ণ শক্তিতে রাস্তায় নেমেছে এবং বিজেপিকে বাস্তব পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে।’
এর আগে কংগ্রেস সাংসদ ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ভারতের তরুণ এবং জেন-জিদের প্রতি গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নেপালে জেন-জিদের সহিংস বিক্ষোভের কারণে সরকারের পতনের পরেই এই মন্তব্য করেন রাহুল। বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করে অভিযোগ করেছেন, তিনি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
জেন-জিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
অনেকেই লাদাখের এই বিক্ষোভকে জেন-জিদের আন্দোলন বলে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক ব্যক্তি লেহের একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘জেন-জিরা লাদাখের রাস্তায় নেমেছে।’ স্থানীয় আরেকজন উদ্যোক্তা অভিযোগ করেছেন, ‘লাদাখের জেন-জি বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন দিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে।’
কিছু ব্যক্তি নেপালের সাম্প্রতিক উত্থানের সঙ্গেও লাদাখের এই বিক্ষোভের তুলনা করেছেন, যেখানে জেন-জিরা অলি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছিল। দা প্রোটাগনিস্ট নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘এটা নেপাল নয়। এটা লাদাখ।’
এদিকে, সোনম ওয়াংচুক আজকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘লেহতে খুবই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা আজ ব্যর্থ হলো। আমি তরুণদের এই নির্বোধ কাজ বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি কেবল আমাদের উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
আজ লাদাখে কী ঘটেছিল?
লেহতে আজ বুধবার পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। ১৫ দিনের অনশন শেষ করে ওয়াংচুক মঙ্গলবার তাঁর সমর্থকদের সহিংসতা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য ছিল, কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে আলোচনার তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছিলেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জনসমাগম হয়। সেখান থেকে শত শত বিক্ষোভকারী শহরজুড়ে মিছিল করে। তারা লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির সমর্থনে স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভকারীরা যখন বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে পাথর নিক্ষেপ করা শুরু করে, তখন উত্তেজনা বেড়ে যায়। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বিজেপির কার্যালয় ছাড়াও বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয়।
পরে অতিরিক্ত বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়, তবে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সহিংসতার পর কর্তৃপক্ষ ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ নিষিদ্ধ করে কারফিউ জারি করেছে।
এই সহিংসতার কারণে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক লাদাখ উৎসবও মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। কর্মকর্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘অনিবার্য কারণে’ উৎসব বাতিল করা হয়েছে। তারা স্থানীয় শিল্পী, সাংস্কৃতিক দল ও পর্যটকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
হঠাৎ করে ফুঁসে ওঠা এই সহিংস বিক্ষোভে ভারত কতটা উদ্বিগ্ন?
কৌশলগতভাবে লাদাখ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে এর আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, যা এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাফার জোন এবং প্রতিরক্ষার জন্য একটি সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই দিল্লির জন্য লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের।
কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য এই অঞ্চলের তাৎপর্য অনেক। কৌশলগত দিক থেকে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলটিকে সব সময় ভারতের নজরে রাখতে হয়।
চীনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর লাদাখের অবস্থান। এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। এখানে অসংখ্যবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যেমন গালওয়ান উপত্যকায়।
লাদাখের দুর্গম ভূখণ্ড এবং উঁচু স্থান ভারতের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। সর্বোপরি, সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিসেবে আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য লাদাখের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাজ্যের মর্যাদা ও চাকরিতে স্থানীয়দের কোটার দাবিতে চীনের সীমান্তঘেঁষা লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ৭০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলছিল, কিন্তু আজ তা সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপরই শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছে।
এই বিক্ষোভ ও সহিংসতা কেন হলো এবং এর পেছনে কারা রয়েছে তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো—
কেন হচ্ছে এই বিক্ষোভ?
জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে একটি দল ১০ সেপ্টেম্বর থেকে অনশন করছিল। তাদের মূল দাবি হলো, লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা।
সোনম ওয়াংচুক আজ বুধবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই তাদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। গত পাঁচ বছর ধরে তারা বেকারত্বের শিকার, নানা অজুহাতে বারবার তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে এবং লাদাখের দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। আমি বলব, এটি সামাজিক অস্থিরতার একটি ক্ষেত্র। অনেকে মনে করেন, এরা শুধু আমাদের সমর্থক, কিন্তু বাস্তবে পুরো লাদাখ আমাদের এবং এই দাবির সঙ্গে আছে। এটি ছিল একটি জেন-জি বিপ্লব।’
তিনি তরুণদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘সহিংসতা আমাদের পাঁচ বছরের প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দেবে। এটা আমাদের পথ নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে চাই।’
কেন্দ্র সরকার ও লাদাখের প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি) এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) সদস্যরা। তাদের পরবর্তী বৈঠক ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের উপজাতি এলাকার প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করে। এই বিশেষ বিধানটি স্বায়ত্তশাসিত জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলোকে আইন প্রণয়ন, জমি ও বন ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় শাসনব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এর উদ্দেশ্য হলো উপজাতিদের অধিকার, ঐতিহ্য ও স্বশাসনকে রক্ষা করা। উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, লাদাখের জনসংখ্যার প্রায় ৯৭ শতাংশই তফসিলি উপজাতি ভুক্ত।
কারা এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে?
রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে লাদাখের লেহতে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)। এটি বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট।
দা হিন্দুর গত ১০ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোনম ওয়াংচুক দীর্ঘদিন ধরে লাদাখের অধিকার ও উন্নয়নের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি এই জোটের একজন সদস্য। ওয়াংচুক অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মিলে একটি অনশনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যাতে কেন্দ্রের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনার মাধ্যমে লাদাখের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ করা যায়।
দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার অনশন চলাকালীন একজন বয়স্ক নারী ও একজন পুরুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে এলএবি’র যুব শাখা বুধবার লেহতে বনধের (হরতাল) ডাক দেয়। এরপরই এলএবি-এর তত্ত্বাবধানে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে বিশাল জনসমাগম হয়। এরপরই সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আন্দোলনে কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সও (কেডিএ) অংশ নিয়েছে, যারা এলএবি-এর দাবিগুলোকে সমর্থন করে। কেডিএ আগামীকাল ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলজুড়ে সংহতি কার্যক্রম ও বনধের ডাক দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই দুটি সংগঠন গত চার বছর ধরে একসঙ্গে আন্দোলন করছে এবং সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনাতেও বসেছে। কিন্তু এরপরও কোনো সমাধান আসেনি।
কেন বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপ করছে?
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য লেহর সহিংসতার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। তিনি এক্সে একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘লাদাখে দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এই ব্যক্তি হলেন লেহ ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর। সে জনতাকে উসকে দিয়ে বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রাহুল গান্ধী কি এই ধরনের অস্থিতিশীলতার কথাই কল্পনা করেছিলেন?’
অন্যদিকে, কংগ্রেসের এক সমর্থক লিখেছেন, ‘সোনম ওয়াংচুকের অনশনের কয়েক দিন পর আজ জেন-জি যুবকেরা পূর্ণ শক্তিতে রাস্তায় নেমেছে এবং বিজেপিকে বাস্তব পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে।’
এর আগে কংগ্রেস সাংসদ ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ভারতের তরুণ এবং জেন-জিদের প্রতি গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নেপালে জেন-জিদের সহিংস বিক্ষোভের কারণে সরকারের পতনের পরেই এই মন্তব্য করেন রাহুল। বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করে অভিযোগ করেছেন, তিনি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
জেন-জিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
অনেকেই লাদাখের এই বিক্ষোভকে জেন-জিদের আন্দোলন বলে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক ব্যক্তি লেহের একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘জেন-জিরা লাদাখের রাস্তায় নেমেছে।’ স্থানীয় আরেকজন উদ্যোক্তা অভিযোগ করেছেন, ‘লাদাখের জেন-জি বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন দিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে।’
কিছু ব্যক্তি নেপালের সাম্প্রতিক উত্থানের সঙ্গেও লাদাখের এই বিক্ষোভের তুলনা করেছেন, যেখানে জেন-জিরা অলি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছিল। দা প্রোটাগনিস্ট নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘এটা নেপাল নয়। এটা লাদাখ।’
এদিকে, সোনম ওয়াংচুক আজকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘লেহতে খুবই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা আজ ব্যর্থ হলো। আমি তরুণদের এই নির্বোধ কাজ বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি কেবল আমাদের উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
আজ লাদাখে কী ঘটেছিল?
লেহতে আজ বুধবার পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। ১৫ দিনের অনশন শেষ করে ওয়াংচুক মঙ্গলবার তাঁর সমর্থকদের সহিংসতা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য ছিল, কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে আলোচনার তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছিলেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জনসমাগম হয়। সেখান থেকে শত শত বিক্ষোভকারী শহরজুড়ে মিছিল করে। তারা লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির সমর্থনে স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভকারীরা যখন বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে পাথর নিক্ষেপ করা শুরু করে, তখন উত্তেজনা বেড়ে যায়। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বিজেপির কার্যালয় ছাড়াও বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয়।
পরে অতিরিক্ত বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়, তবে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সহিংসতার পর কর্তৃপক্ষ ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ নিষিদ্ধ করে কারফিউ জারি করেছে।
এই সহিংসতার কারণে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক লাদাখ উৎসবও মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। কর্মকর্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘অনিবার্য কারণে’ উৎসব বাতিল করা হয়েছে। তারা স্থানীয় শিল্পী, সাংস্কৃতিক দল ও পর্যটকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
হঠাৎ করে ফুঁসে ওঠা এই সহিংস বিক্ষোভে ভারত কতটা উদ্বিগ্ন?
কৌশলগতভাবে লাদাখ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে এর আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, যা এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাফার জোন এবং প্রতিরক্ষার জন্য একটি সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই দিল্লির জন্য লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের।
কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য এই অঞ্চলের তাৎপর্য অনেক। কৌশলগত দিক থেকে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলটিকে সব সময় ভারতের নজরে রাখতে হয়।
চীনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর লাদাখের অবস্থান। এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। এখানে অসংখ্যবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যেমন গালওয়ান উপত্যকায়।
লাদাখের দুর্গম ভূখণ্ড এবং উঁচু স্থান ভারতের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। সর্বোপরি, সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিসেবে আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য লাদাখের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

রাজ্যের মর্যাদা ও চাকরিতে স্থানীয়দের কোটার দাবিতে চীনের সীমান্তঘেঁষা লাদাখের লেহ শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত ও ৭০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। যদিও সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চলছিল, কিন্তু আজ তা সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপরই শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেছে।
এই বিক্ষোভ ও সহিংসতা কেন হলো এবং এর পেছনে কারা রয়েছে তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো—
কেন হচ্ছে এই বিক্ষোভ?
জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুকের নেতৃত্বে একটি দল ১০ সেপ্টেম্বর থেকে অনশন করছিল। তাদের মূল দাবি হলো, লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা।
সোনম ওয়াংচুক আজ বুধবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই তাদের রাস্তায় নামিয়ে এনেছে। গত পাঁচ বছর ধরে তারা বেকারত্বের শিকার, নানা অজুহাতে বারবার তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে এবং লাদাখের দাবিগুলো পূরণ করা হয়নি। আমি বলব, এটি সামাজিক অস্থিরতার একটি ক্ষেত্র। অনেকে মনে করেন, এরা শুধু আমাদের সমর্থক, কিন্তু বাস্তবে পুরো লাদাখ আমাদের এবং এই দাবির সঙ্গে আছে। এটি ছিল একটি জেন-জি বিপ্লব।’
তিনি তরুণদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘সহিংসতা আমাদের পাঁচ বছরের প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দেবে। এটা আমাদের পথ নয়। আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে চাই।’
কেন্দ্র সরকার ও লাদাখের প্রতিনিধি দলের মধ্যে রয়েছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি) এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (কেডিএ) সদস্যরা। তাদের পরবর্তী বৈঠক ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ভারতের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের উপজাতি এলাকার প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করে। এই বিশেষ বিধানটি স্বায়ত্তশাসিত জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলোকে আইন প্রণয়ন, জমি ও বন ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় শাসনব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে। এর উদ্দেশ্য হলো উপজাতিদের অধিকার, ঐতিহ্য ও স্বশাসনকে রক্ষা করা। উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, লাদাখের জনসংখ্যার প্রায় ৯৭ শতাংশই তফসিলি উপজাতি ভুক্ত।
কারা এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে?
রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে লাদাখের লেহতে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)। এটি বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত একটি জোট।
দা হিন্দুর গত ১০ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোনম ওয়াংচুক দীর্ঘদিন ধরে লাদাখের অধিকার ও উন্নয়নের পক্ষে কাজ করছেন। তিনি এই জোটের একজন সদস্য। ওয়াংচুক অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে মিলে একটি অনশনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, যাতে কেন্দ্রের সঙ্গে ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনার মাধ্যমে লাদাখের দীর্ঘদিনের দাবিগুলো পূরণ করা যায়।
দা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার অনশন চলাকালীন একজন বয়স্ক নারী ও একজন পুরুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে এলএবি’র যুব শাখা বুধবার লেহতে বনধের (হরতাল) ডাক দেয়। এরপরই এলএবি-এর তত্ত্বাবধানে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে বিশাল জনসমাগম হয়। এরপরই সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আন্দোলনে কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সও (কেডিএ) অংশ নিয়েছে, যারা এলএবি-এর দাবিগুলোকে সমর্থন করে। কেডিএ আগামীকাল ২৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলজুড়ে সংহতি কার্যক্রম ও বনধের ডাক দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এই দুটি সংগঠন গত চার বছর ধরে একসঙ্গে আন্দোলন করছে এবং সরকারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনাতেও বসেছে। কিন্তু এরপরও কোনো সমাধান আসেনি।
কেন বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে দোষারোপ করছে?
বিজেপি নেতা অমিত মালব্য লেহর সহিংসতার ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। তিনি এক্সে একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, ‘লাদাখে দাঙ্গা সৃষ্টিকারী এই ব্যক্তি হলেন লেহ ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর। সে জনতাকে উসকে দিয়ে বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘রাহুল গান্ধী কি এই ধরনের অস্থিতিশীলতার কথাই কল্পনা করেছিলেন?’
অন্যদিকে, কংগ্রেসের এক সমর্থক লিখেছেন, ‘সোনম ওয়াংচুকের অনশনের কয়েক দিন পর আজ জেন-জি যুবকেরা পূর্ণ শক্তিতে রাস্তায় নেমেছে এবং বিজেপিকে বাস্তব পরিস্থিতি দেখিয়ে দিয়েছে।’
এর আগে কংগ্রেস সাংসদ ও লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী ভারতের তরুণ এবং জেন-জিদের প্রতি গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানিয়েছিলেন। নেপালে জেন-জিদের সহিংস বিক্ষোভের কারণে সরকারের পতনের পরেই এই মন্তব্য করেন রাহুল। বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের সমালোচনা করে অভিযোগ করেছেন, তিনি দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
জেন-জিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
অনেকেই লাদাখের এই বিক্ষোভকে জেন-জিদের আন্দোলন বলে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক ব্যক্তি লেহের একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘জেন-জিরা লাদাখের রাস্তায় নেমেছে।’ স্থানীয় আরেকজন উদ্যোক্তা অভিযোগ করেছেন, ‘লাদাখের জেন-জি বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয়ে আগুন দিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছে।’
কিছু ব্যক্তি নেপালের সাম্প্রতিক উত্থানের সঙ্গেও লাদাখের এই বিক্ষোভের তুলনা করেছেন, যেখানে জেন-জিরা অলি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছিল। দা প্রোটাগনিস্ট নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লিখেছে, ‘এটা নেপাল নয়। এটা লাদাখ।’
এদিকে, সোনম ওয়াংচুক আজকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘লেহতে খুবই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বার্তা আজ ব্যর্থ হলো। আমি তরুণদের এই নির্বোধ কাজ বন্ধ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। এটি কেবল আমাদের উদ্দেশ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
আজ লাদাখে কী ঘটেছিল?
লেহতে আজ বুধবার পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়। ১৫ দিনের অনশন শেষ করে ওয়াংচুক মঙ্গলবার তাঁর সমর্থকদের সহিংসতা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য ছিল, কিন্তু বিক্ষোভকারীরা অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে আলোচনার তারিখ এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছিলেন।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার এনডিএস মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে বিশাল জনসমাগম হয়। সেখান থেকে শত শত বিক্ষোভকারী শহরজুড়ে মিছিল করে। তারা লাদাখকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা ও ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির সমর্থনে স্লোগান দেয়।
বিক্ষোভকারীরা যখন বিজেপির কার্যালয় ও হিল কাউন্সিলে পাথর নিক্ষেপ করা শুরু করে, তখন উত্তেজনা বেড়ে যায়। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বিজেপির কার্যালয় ছাড়াও বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীরা কার্যালয়ের আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয়।
পরে অতিরিক্ত বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়, তবে শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সহিংসতার পর কর্তৃপক্ষ ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ নিষিদ্ধ করে কারফিউ জারি করেছে।
এই সহিংসতার কারণে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক লাদাখ উৎসবও মাঝপথে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন। কর্মকর্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘অনিবার্য কারণে’ উৎসব বাতিল করা হয়েছে। তারা স্থানীয় শিল্পী, সাংস্কৃতিক দল ও পর্যটকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
হঠাৎ করে ফুঁসে ওঠা এই সহিংস বিক্ষোভে ভারত কতটা উদ্বিগ্ন?
কৌশলগতভাবে লাদাখ ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে এর আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, যা এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাফার জোন এবং প্রতিরক্ষার জন্য একটি সংবেদনশীল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলেছে। তাই দিল্লির জন্য লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগের।
কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত, জাতীয় নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য এই অঞ্চলের তাৎপর্য অনেক। কৌশলগত দিক থেকে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলটিকে সব সময় ভারতের নজরে রাখতে হয়।
চীনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর লাদাখের অবস্থান। এটি একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকা। এখানে অসংখ্যবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যেমন গালওয়ান উপত্যকায়।
লাদাখের দুর্গম ভূখণ্ড এবং উঁচু স্থান ভারতের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের মতো সামরিক সংঘাত এই অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। সর্বোপরি, সীমান্তবর্তী অঞ্চল হিসেবে আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের জন্য লাদাখের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
৩৭ মিনিট আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
১ ঘণ্টা আগে
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগো এক দিনে ৫৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করার মধ্য দিয়ে এক নতুন ও উদ্বেগজনক রেকর্ড তৈরি করেছে। ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এই বিপর্যয় টানা তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
গাজার মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর বাহিনী পপুলার ফোর্সেস এবং ইসরায়েলি গণমাধ্যম। আবু শাবাব ইসরায়েলি সমর্থনে গাজায় নিজেকে হামাসের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ইসরায়েলের কোলাবরেটর...
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসাবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত-দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনী প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭ তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে, একটি মাত্র অফিসের অধীনে সশস্ত্রবাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিনবাহিনী সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফ-এর হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭ তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএ-এর ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (১) এখন জানাচ্ছে যে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনী প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন […], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফ-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফ-এরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭ তম সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসি-এর মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনঃ নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।
ফলস্বরূপ, ২৭ তম সংশোধনীর অধীনে এই পুনর্গঠনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে, পিএএ-এর সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে সিওএএসসহ-সিডিএফ-কে আরও পাঁচ বছরের জন্য পুনঃ নিয়োগ বা তাঁর মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে। এর ফলে তিনি ২০৩৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্তও পদে থাকতে পারেন।
এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা ব্যাপক জল্পনা বাড়িয়েছিল। বিশেষ করে, যখন ২৭ নভেম্বর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা অবসর নেওয়ার পর সিজেসিএসসি পদটি বিলুপ্ত হয়। ফিল্ড মার্শাল মুনির-এর আসল তিন বছরের সেনাপ্রধানের মেয়াদ (গত বছরের সংশোধনীর আগে) ২৯ নভেম্বরে শেষ হয়, কিন্তু সেদিনও কোনো বিজ্ঞপ্তি না আসায় আরও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, সরকার হয়তো আসন্ন চার-তারকা পদের নিয়োগ নিয়ে দর-কষাকষির জন্য এই নিয়োগ আটকে রেখেছিল।
রাজনৈতিক মহল থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের নতুন কমান্ডার (সিএনএসসি), ভাইস চিফ অব দ্য আর্মি স্টাফ (ভিসিওএএস) এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য আইএসআই প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে দরদাম করতেই এই দেরি। সেনাবাহিনী আগেই স্পষ্ট করেছিল যে, কোনো ভিসিওএএস নিয়োগ করা হচ্ছে না। তবে সংশোধিত আইন অনুযায়ী, সিএনএসসি এবং যেকোনো ভিসিওএএস-এর নিয়োগ সিডিএফ-এর সুপারিশের সঙ্গে যুক্ত।
সরকারি কর্মকর্তারা বারবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো উত্তেজনার কথা অস্বীকার করেছেন, জানিয়েছেন যে প্রক্রিয়াগত প্রয়োজনীয়তা ও প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সূচি সময়রেখা নির্ধারণ করেছে। তবুও, ২৭ তম সংশোধনী যেভাবে তাড়াহুড়ো করে সংসদে পাশ করানো হয়েছিল, তার পরে এমন নীরবতাকে অনেকে অস্বাভাবিক বলে মনে করেছেন। এই সংশোধনী কেন্দ্রীয় সরকারকে সিডিএফ-এর কার্যাবলি নির্ধারণের ক্ষমতাও দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বহু-ডোমেন ইন্টিগ্রেশন, পুনর্গঠন এবং সার্ভিসগুলোর মধ্যে যৌথতা বাড়ানো।
এদিকে, আইনসচিব আজম নাজির তারার জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সিডিএফ-এর জন্য একটি নতুন অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত করছে এবং এর খসড়া একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সিডিএফ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কোনো মতপার্থক্যের ধারণা তিনি নাকচ করে দেন, জোর দিয়ে বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর দেশের বাইরে থাকার কারণেই এই বিলম্ব। কর্মকর্তারা বলছেন, এই অর্গানোগ্রামেই সিডিএফ, সার্ভিস চিফ ও নতুন প্রতিষ্ঠিত কৌশলগত কমান্ডের মধ্যে কমান্ডের প্রবাহ কেমন হবে, তা উল্লেখ করা থাকবে।
সিডিএফ-এর নিয়োগ অনুমোদনের পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট জারদারি বিমানবাহিনীর নেতৃত্বের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শও অনুমোদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ভবন জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমদ বাবর সিধুর জন্য ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ থেকে দুই বছরের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছেন।’
এই মেয়াদ বৃদ্ধিটি আগামী বছরের মার্চে তাঁর বর্তমান পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কার্যকর হবে, যা তাঁকে ২০২৮ সালের মার্চ পর্যন্ত পদে বহাল রাখবে।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসাবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত-দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনী প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭ তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে, একটি মাত্র অফিসের অধীনে সশস্ত্রবাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিনবাহিনী সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফ-এর হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭ তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএ-এর ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (১) এখন জানাচ্ছে যে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনী প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন […], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফ-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফ-এরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭ তম সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসি-এর মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনঃ নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।
ফলস্বরূপ, ২৭ তম সংশোধনীর অধীনে এই পুনর্গঠনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে, পিএএ-এর সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে সিওএএসসহ-সিডিএফ-কে আরও পাঁচ বছরের জন্য পুনঃ নিয়োগ বা তাঁর মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে। এর ফলে তিনি ২০৩৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্তও পদে থাকতে পারেন।
এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা ব্যাপক জল্পনা বাড়িয়েছিল। বিশেষ করে, যখন ২৭ নভেম্বর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা অবসর নেওয়ার পর সিজেসিএসসি পদটি বিলুপ্ত হয়। ফিল্ড মার্শাল মুনির-এর আসল তিন বছরের সেনাপ্রধানের মেয়াদ (গত বছরের সংশোধনীর আগে) ২৯ নভেম্বরে শেষ হয়, কিন্তু সেদিনও কোনো বিজ্ঞপ্তি না আসায় আরও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, সরকার হয়তো আসন্ন চার-তারকা পদের নিয়োগ নিয়ে দর-কষাকষির জন্য এই নিয়োগ আটকে রেখেছিল।
রাজনৈতিক মহল থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের নতুন কমান্ডার (সিএনএসসি), ভাইস চিফ অব দ্য আর্মি স্টাফ (ভিসিওএএস) এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য আইএসআই প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে দরদাম করতেই এই দেরি। সেনাবাহিনী আগেই স্পষ্ট করেছিল যে, কোনো ভিসিওএএস নিয়োগ করা হচ্ছে না। তবে সংশোধিত আইন অনুযায়ী, সিএনএসসি এবং যেকোনো ভিসিওএএস-এর নিয়োগ সিডিএফ-এর সুপারিশের সঙ্গে যুক্ত।
সরকারি কর্মকর্তারা বারবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো উত্তেজনার কথা অস্বীকার করেছেন, জানিয়েছেন যে প্রক্রিয়াগত প্রয়োজনীয়তা ও প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সূচি সময়রেখা নির্ধারণ করেছে। তবুও, ২৭ তম সংশোধনী যেভাবে তাড়াহুড়ো করে সংসদে পাশ করানো হয়েছিল, তার পরে এমন নীরবতাকে অনেকে অস্বাভাবিক বলে মনে করেছেন। এই সংশোধনী কেন্দ্রীয় সরকারকে সিডিএফ-এর কার্যাবলি নির্ধারণের ক্ষমতাও দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বহু-ডোমেন ইন্টিগ্রেশন, পুনর্গঠন এবং সার্ভিসগুলোর মধ্যে যৌথতা বাড়ানো।
এদিকে, আইনসচিব আজম নাজির তারার জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সিডিএফ-এর জন্য একটি নতুন অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত করছে এবং এর খসড়া একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সিডিএফ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কোনো মতপার্থক্যের ধারণা তিনি নাকচ করে দেন, জোর দিয়ে বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর দেশের বাইরে থাকার কারণেই এই বিলম্ব। কর্মকর্তারা বলছেন, এই অর্গানোগ্রামেই সিডিএফ, সার্ভিস চিফ ও নতুন প্রতিষ্ঠিত কৌশলগত কমান্ডের মধ্যে কমান্ডের প্রবাহ কেমন হবে, তা উল্লেখ করা থাকবে।
সিডিএফ-এর নিয়োগ অনুমোদনের পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট জারদারি বিমানবাহিনীর নেতৃত্বের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শও অনুমোদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ভবন জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমদ বাবর সিধুর জন্য ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ থেকে দুই বছরের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছেন।’
এই মেয়াদ বৃদ্ধিটি আগামী বছরের মার্চে তাঁর বর্তমান পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কার্যকর হবে, যা তাঁকে ২০২৮ সালের মার্চ পর্যন্ত পদে বহাল রাখবে।

জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
১ ঘণ্টা আগে
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগো এক দিনে ৫৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করার মধ্য দিয়ে এক নতুন ও উদ্বেগজনক রেকর্ড তৈরি করেছে। ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এই বিপর্যয় টানা তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
গাজার মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর বাহিনী পপুলার ফোর্সেস এবং ইসরায়েলি গণমাধ্যম। আবু শাবাব ইসরায়েলি সমর্থনে গাজায় নিজেকে হামাসের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ইসরায়েলের কোলাবরেটর...
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লিতে অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পর পুতিন ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেতে এই মন্তব্য মন্তব্য করেন। এই সফরের সময় উভয় দেশ পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের কারণে যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতকে রাশিয়াকে এড়িয়ে চলতে চাপ দিচ্ছে, ঠিক তখন চার বছরে পুতিনের এই প্রথম ভারত সফরের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং যুদ্ধবিমানের বিক্রি বাড়ানো, এবং জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বাইরেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক প্রসারিত করা।
নয়াদিল্লি এবং মস্কোর মধ্যে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং বহু দশক ধরে রাশিয়া ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহের উৎস। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারত সমুদ্রপথে আসা রাশিয়ার তেলের শীর্ষ ক্রেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন বলছে যে ভারতের সস্তায় রুশ তেল কেনা মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নে সাহায্য করছে, তখন ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্ক এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়ার ফলে এই মাসে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হতে চলেছে।
পুতিন ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এখনো তার নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে। সেটিও তো জ্বালানি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের আমাদের জ্বালানি কেনার অধিকার থাকে, তবে ভারতের কেন একই সুযোগ থাকবে না? এই প্রশ্নটির পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা প্রয়োজন, এবং আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
ভারত বলেছে যে ট্রাম্পের শুল্ক অন্যায্য এবং অযৌক্তিক এবং মস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যের দিকে ইঙ্গিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে শুরু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পর্যন্ত কোটি কোটি ডলারের রাশিয়ান জ্বালানি ও পণ্য আমদানি অব্যাহত রেখেছে।
পশ্চিমাদের চাপের কারণে ভারতীয় তেলের ক্রয় কমেছে কি না জানতে চাইলে পুতিন বলেন, ‘এই বছরের প্রথম ৯ মাসে সামগ্রিক বাণিজ্যের পরিমাণে কিছুটা হ্রাস দেখা গেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘এটা কেবল একটি সামান্য সমন্বয়। সামগ্রিকভাবে, আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় আগের মতোই আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং অপরিশোধিত তেল... রাশিয়ার তেলের বাণিজ্য ভারতে মসৃণভাবে চলছে।’
ভারত ও রাশিয়ার ট্রাম্প এবং তাঁর শুল্কের সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করা উচিত জানতে চাইলে পুতিন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন কিছু উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা বিশ্বাস করেন যে এই ধরনের শুল্কনীতি বাস্তবায়ন চূড়ান্তভাবে মার্কিন অর্থনীতির জন্য উপকারী। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি যে শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সকল নিয়ম লঙ্ঘন সংশোধন করা হবে।’
এর কয়েক ঘণ্টা আগে নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে বিমানবন্দরে পুতিনকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরের রানওয়েতে লালগালিচার ওপর তাঁরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেন এবং তারপর প্রধানমন্ত্রী মোদি আয়োজিত একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজের জন্য একই গাড়িতে চলে যান।
পুতিনের এই সফরে রাশিয়ার ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী এবং একটি বড় রাশিয়ান ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লিতে উপস্থিত ছিল। শুক্রবার দুই নেতা শীর্ষ বৈঠক করবেন, যেখানে একাধিক চুক্তি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নয়াদিল্লিতে অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পর পুতিন ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডেতে এই মন্তব্য মন্তব্য করেন। এই সফরের সময় উভয় দেশ পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে পণ্যের বৈচিত্র্য বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসনের কারণে যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতকে রাশিয়াকে এড়িয়ে চলতে চাপ দিচ্ছে, ঠিক তখন চার বছরে পুতিনের এই প্রথম ভারত সফরের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার তেল, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং যুদ্ধবিমানের বিক্রি বাড়ানো, এবং জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের বাইরেও ব্যবসায়িক সম্পর্ক প্রসারিত করা।
নয়াদিল্লি এবং মস্কোর মধ্যে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং বহু দশক ধরে রাশিয়া ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহের উৎস। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কো ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারত সমুদ্রপথে আসা রাশিয়ার তেলের শীর্ষ ক্রেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যখন বলছে যে ভারতের সস্তায় রুশ তেল কেনা মস্কোর ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়নে সাহায্য করছে, তখন ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক শুল্ক এবং রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোর হওয়ার ফলে এই মাসে ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানি তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হতে চলেছে।
পুতিন ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এখনো তার নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর জন্য আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে। সেটিও তো জ্বালানি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের আমাদের জ্বালানি কেনার অধিকার থাকে, তবে ভারতের কেন একই সুযোগ থাকবে না? এই প্রশ্নটির পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা প্রয়োজন, এবং আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
ভারত বলেছে যে ট্রাম্পের শুল্ক অন্যায্য এবং অযৌক্তিক এবং মস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যের দিকে ইঙ্গিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে শুরু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পর্যন্ত কোটি কোটি ডলারের রাশিয়ান জ্বালানি ও পণ্য আমদানি অব্যাহত রেখেছে।
পশ্চিমাদের চাপের কারণে ভারতীয় তেলের ক্রয় কমেছে কি না জানতে চাইলে পুতিন বলেন, ‘এই বছরের প্রথম ৯ মাসে সামগ্রিক বাণিজ্যের পরিমাণে কিছুটা হ্রাস দেখা গেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘এটা কেবল একটি সামান্য সমন্বয়। সামগ্রিকভাবে, আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় আগের মতোই আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং অপরিশোধিত তেল... রাশিয়ার তেলের বাণিজ্য ভারতে মসৃণভাবে চলছে।’
ভারত ও রাশিয়ার ট্রাম্প এবং তাঁর শুল্কের সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করা উচিত জানতে চাইলে পুতিন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন কিছু উপদেষ্টা আছেন, যাঁরা বিশ্বাস করেন যে এই ধরনের শুল্কনীতি বাস্তবায়ন চূড়ান্তভাবে মার্কিন অর্থনীতির জন্য উপকারী। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি যে শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সকল নিয়ম লঙ্ঘন সংশোধন করা হবে।’
এর কয়েক ঘণ্টা আগে নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে বিমানবন্দরে পুতিনকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরের রানওয়েতে লালগালিচার ওপর তাঁরা একে অপরকে আলিঙ্গন করেন এবং তারপর প্রধানমন্ত্রী মোদি আয়োজিত একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজের জন্য একই গাড়িতে চলে যান।
পুতিনের এই সফরে রাশিয়ার ঊর্ধ্বতন মন্ত্রী এবং একটি বড় রাশিয়ান ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লিতে উপস্থিত ছিল। শুক্রবার দুই নেতা শীর্ষ বৈঠক করবেন, যেখানে একাধিক চুক্তি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
৩৭ মিনিট আগে
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগো এক দিনে ৫৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করার মধ্য দিয়ে এক নতুন ও উদ্বেগজনক রেকর্ড তৈরি করেছে। ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এই বিপর্যয় টানা তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
গাজার মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর বাহিনী পপুলার ফোর্সেস এবং ইসরায়েলি গণমাধ্যম। আবু শাবাব ইসরায়েলি সমর্থনে গাজায় নিজেকে হামাসের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ইসরায়েলের কোলাবরেটর...
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগো এক দিনে ৫৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করার মধ্য দিয়ে এক নতুন ও উদ্বেগজনক রেকর্ড তৈরি করেছে। ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এই বিপর্যয় টানা তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে।
সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পিটার এলবার্স কর্মীদের উদ্দেশ করে বলেছেন, এই মুহূর্তে স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা এবং সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখা ‘সহজ লক্ষ্য’ হবে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইন্ডিগো তাদের সময়সূচি সমন্বয় করেছে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরার অংশ হিসেবে পূর্বপরিকল্পিত পরিষেবা বাতিল করছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট বাতিলের সংখ্যা ছিল নিম্নরূপ—মুম্বাইয়ে কমপক্ষে ১১৮টি, বেঙ্গালুরুতে ১০০টি, হায়দরাবাদে ৭৫, কলকাতায় ৩৫, চেন্নাইয়ে ২৬ এবং গোয়ায় ১১টি। অন্যান্য বিমানবন্দর থেকেও ফ্লাইট বাতিলের খবর পাওয়া গেছে।
ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, তারা সংশোধিত ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস (এফডিটিএল) নিয়মের অধীনে ক্রুদের প্রয়োজনীয়তা ভুলভাবে মূল্যায়ন করেছিল। এই পরিকল্পনার ত্রুটির ফলেই শীতকালীন আবহাওয়া এবং অতিরিক্ত ভিড়ের সময় পর্যাপ্ত ক্রুর অভাব দেখা দিয়েছে।
আদালতের নির্দেশে গত ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এফডিটিএল নিয়মের দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নে রূপান্তরকালীন অসুবিধার কারণেই এই বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে বলে ইন্ডিগো ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশনকে (ডিজিসিএ) জানিয়েছে। তারা উল্লেখ করেছে যে দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পাইলটের প্রকৃত সংখ্যা তাদের পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
বিমান সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এফডিটএলের নতুন নিয়মের ফলে কর্মীর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, বিশেষ করে রাতের বেলা অপারেশনের ক্ষেত্রে, যেখানে স্লট কম এবং ডিউটি সময়ের বিধিনিষেধ কঠোর। এই নতুন নিয়মগুলো পাইলটদের নিরাপত্তা ও ক্লান্তি ব্যবস্থাপনার উন্নতির জন্য তৈরি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইন্ডিগো অস্থায়ীভাবে দুটি নিয়ম প্রত্যাহার করেছে—
১. রাত ডিউটির সংজ্ঞা মধ্যরাত থেকে ভোর ৬টা করার নিয়মটি সাময়িকভাবে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং
২. রাতে অবতরণের সংখ্যা দুটিতে সীমাবদ্ধ করার নিয়মটিও সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
সংস্থাটি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।

ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগো এক দিনে ৫৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করার মধ্য দিয়ে এক নতুন ও উদ্বেগজনক রেকর্ড তৈরি করেছে। ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এই বিপর্যয় টানা তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে।
সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পিটার এলবার্স কর্মীদের উদ্দেশ করে বলেছেন, এই মুহূর্তে স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা এবং সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখা ‘সহজ লক্ষ্য’ হবে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইন্ডিগো তাদের সময়সূচি সমন্বয় করেছে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরার অংশ হিসেবে পূর্বপরিকল্পিত পরিষেবা বাতিল করছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট বাতিলের সংখ্যা ছিল নিম্নরূপ—মুম্বাইয়ে কমপক্ষে ১১৮টি, বেঙ্গালুরুতে ১০০টি, হায়দরাবাদে ৭৫, কলকাতায় ৩৫, চেন্নাইয়ে ২৬ এবং গোয়ায় ১১টি। অন্যান্য বিমানবন্দর থেকেও ফ্লাইট বাতিলের খবর পাওয়া গেছে।
ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, তারা সংশোধিত ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস (এফডিটিএল) নিয়মের অধীনে ক্রুদের প্রয়োজনীয়তা ভুলভাবে মূল্যায়ন করেছিল। এই পরিকল্পনার ত্রুটির ফলেই শীতকালীন আবহাওয়া এবং অতিরিক্ত ভিড়ের সময় পর্যাপ্ত ক্রুর অভাব দেখা দিয়েছে।
আদালতের নির্দেশে গত ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এফডিটিএল নিয়মের দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নে রূপান্তরকালীন অসুবিধার কারণেই এই বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে বলে ইন্ডিগো ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশনকে (ডিজিসিএ) জানিয়েছে। তারা উল্লেখ করেছে যে দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পাইলটের প্রকৃত সংখ্যা তাদের পূর্বাভাসের চেয়ে অনেক বেশি ছিল।
বিমান সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এফডিটএলের নতুন নিয়মের ফলে কর্মীর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, বিশেষ করে রাতের বেলা অপারেশনের ক্ষেত্রে, যেখানে স্লট কম এবং ডিউটি সময়ের বিধিনিষেধ কঠোর। এই নতুন নিয়মগুলো পাইলটদের নিরাপত্তা ও ক্লান্তি ব্যবস্থাপনার উন্নতির জন্য তৈরি করা হয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইন্ডিগো অস্থায়ীভাবে দুটি নিয়ম প্রত্যাহার করেছে—
১. রাত ডিউটির সংজ্ঞা মধ্যরাত থেকে ভোর ৬টা করার নিয়মটি সাময়িকভাবে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং
২. রাতে অবতরণের সংখ্যা দুটিতে সীমাবদ্ধ করার নিয়মটিও সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
সংস্থাটি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।

জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
৩৭ মিনিট আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
১ ঘণ্টা আগে
গাজার মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর বাহিনী পপুলার ফোর্সেস এবং ইসরায়েলি গণমাধ্যম। আবু শাবাব ইসরায়েলি সমর্থনে গাজায় নিজেকে হামাসের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ইসরায়েলের কোলাবরেটর...
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গাজার মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর বাহিনী পপুলার ফোর্সেস এবং ইসরায়েলি গণমাধ্যম। আবু শাবাব ইসরায়েলি সমর্থনে গাজায় নিজেকে হামাসের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ইসরায়েলের কোলাবরেটর বা সহযোগী হিসেবে ব্যাপকভাবে উপহাসের পাত্র ছিলেন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজার বেদুইন তারাবিন উপজাতির এই নেতার বয়স ৩০-এর কোঠায়। গত বছর একটি মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান হিসেবে উত্থান না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে তিনি কার্যত অচেনা ছিলেন।
আবু শাবাবের গোষ্ঠী প্রাথমিকভাবে ‘অ্যান্টি-টেরর সার্ভিস’ নামে পরিচিত হলেও এই বছরের মে মাস নাগাদ এটি ‘পপুলার ফোর্সেস’ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটি ছিল অন্তত ১০০ জন যোদ্ধার একটি সুসজ্জিত দল, যা গাজার ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কাজ করত।
গোষ্ঠীটি একটি অপরাধী চক্র এবং ইসরায়েলি প্রক্সি ফোর্সের মাঝামাঝি অবস্থানে কাজ করত, তবে নিজেদেরকে হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিবেদিত একটি জাতীয়তাবাদী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হিসেবে তুলে ধরত।
এই প্রচারের একটি উদ্দেশ্য ইসরায়েলের জন্য ছিল, কিন্তু এই গোষ্ঠীর চূড়ান্ত লক্ষ্য কী ছিল তা কখনোই স্পষ্ট ছিল না। বিশেষ করে যখন এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে পপুলার ফোর্সেসের কোনো ধরনের ব্যাপক জনসমর্থন নেই। এর কারণ হলো, অনেক ফিলিস্তিনিদের চোখে আবু শাবাব ছিলেন অপরাধী। গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে তিনি জেল থেকে পালান। তিনি মাদক-সম্পর্কিত অভিযোগে বেশ কয়েক বছর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কারাবন্দী ছিলেন।
পরে, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার সময় ইসরায়েলের সঙ্গে তাঁর জোট অধিকাংশ ফিলিস্তিনির চোখে তাঁকে অপরাধী করে তোলে। এমনকি তাঁর নিজের গোত্রও এক বিবৃতিতে বলেছিল যে তাঁর মৃত্যু ‘একটি অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি হিসেবে কাজ করে, যা গোত্রের ইতিহাসকে প্রতিনিধিত্ব করে না।’
আবু শাবাবের গোষ্ঠীর প্রাথমিক নামকরণ ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ ভাষা ব্যবহার করে করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি ছিল হাস্যকর। কারণ, তাঁর গোষ্ঠীর সঙ্গে আইএসআইএলের সংযোগের রিপোর্ট ছিল। যদিও সেই সংযোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো অভিন্ন মতাদর্শের চেয়ে মিসরীয় সিনাই উপদ্বীপ থেকে গাজায় চোরাচালানে সহযোগিতা-সম্পর্কিত ছিল।
আবু শাবাবের পটভূমি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর উপস্থিতির মধ্যেও সব সময় একটি বৈসাদৃশ্য ছিল। তিনি ইংরেজি ভাষায় পোস্ট করতেন, এমনকি ওয়ালস্ট্রিট জার্নালে লিখিত নিবন্ধও শেয়ার করেছিলেন তিনি।
সেই নিবন্ধে আবু শাবাব দাবি করেছিলেন, তাঁর পপুলার ফোর্সেস গাজার দক্ষিণে পূর্ব রাফার বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং তারা ‘একটি নতুন ভবিষ্যৎ গড়তে প্রস্তুত।’ নিবন্ধটিতে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো সেই ফিলিস্তিনিদের আলাদা করা, যাদের হামাসের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, যুদ্ধের আগুন থেকে।’
আবু শাবাব যখন ইসরায়েলের সঙ্গে পপুলার ফোর্সেসের সংযোগ ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জুনে স্বীকার করেন যে তাঁর সরকার হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করছে। গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে এটি স্পষ্ট, এ ধরনের একটি গোষ্ঠী আবু শাবাবের বাহিনী।
আবু শাবাব সিএনএনকে বলেছিলেন, তিনি ‘এই সম্প্রদায়ের নাগরিকদের একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেন, যাঁরা মানবিক সহায়তা লুটপাট ও দুর্নীতি থেকে রক্ষা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী হয়েছেন’, এবং তাঁর গোষ্ঠী তাঁদের বাহিনীর সাহায্য বিতরণের ছবিও শেয়ার করে।
কিন্তু এর পর থেকে আবু শাবাব এবং পপুলার ফোর্সেসের বিরুদ্ধে সাহায্যের কনভয় থেকে লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়। গাজার নিরাপত্তা সূত্র আল জাজিরা আরবিকে নিশ্চিত করেছে যে ইসরায়েল-সমর্থিত গোষ্ঠীটি লুটপাটে অংশ নিয়েছিল।
ইসরায়েলি বিধিনিষেধ এবং ফিলিস্তিনি অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে যখন গাজা দুর্ভিক্ষের শিকার হচ্ছিল, সেই সময়ে এই অভিযোগগুলো আবু শাবাবকে কেবলই একজন ইসরায়েলি প্রক্সি হিসেবে দেখার ধারণাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল।
তাই হয়তো এটা অবাক হওয়ার মতো নয় যে গাজার খুব কম ফিলিস্তিনি এমনকি যারা হামাসের বিরোধী, আবু শাবাবের মৃত্যুতে অশ্রু ঝরিয়েছেন।
তাঁর হত্যার পরিস্থিতি এখনো অস্পষ্ট—আবু শাবাবের উৎস এবং যুদ্ধের সময় তার ভূমিকা যেমন ছিল।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেহেতু এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে হামাসের একটি প্রকৃত বিকল্প হওয়ার মতো সমর্থন বা ক্ষমতা তার ছিল না, তাই তাঁর ভাগ্য ক্রমেই নিশ্চিত বলে মনে হচ্ছিল।

গাজার মিলিশিয়া নেতা ইয়াসির আবু শাবাব নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তাঁর বাহিনী পপুলার ফোর্সেস এবং ইসরায়েলি গণমাধ্যম। আবু শাবাব ইসরায়েলি সমর্থনে গাজায় নিজেকে হামাসের বিকল্প হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের কাছে তিনি ইসরায়েলের কোলাবরেটর বা সহযোগী হিসেবে ব্যাপকভাবে উপহাসের পাত্র ছিলেন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজার বেদুইন তারাবিন উপজাতির এই নেতার বয়স ৩০-এর কোঠায়। গত বছর একটি মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান হিসেবে উত্থান না হওয়া পর্যন্ত ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে তিনি কার্যত অচেনা ছিলেন।
আবু শাবাবের গোষ্ঠী প্রাথমিকভাবে ‘অ্যান্টি-টেরর সার্ভিস’ নামে পরিচিত হলেও এই বছরের মে মাস নাগাদ এটি ‘পপুলার ফোর্সেস’ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটি ছিল অন্তত ১০০ জন যোদ্ধার একটি সুসজ্জিত দল, যা গাজার ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কাজ করত।
গোষ্ঠীটি একটি অপরাধী চক্র এবং ইসরায়েলি প্রক্সি ফোর্সের মাঝামাঝি অবস্থানে কাজ করত, তবে নিজেদেরকে হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিবেদিত একটি জাতীয়তাবাদী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হিসেবে তুলে ধরত।
এই প্রচারের একটি উদ্দেশ্য ইসরায়েলের জন্য ছিল, কিন্তু এই গোষ্ঠীর চূড়ান্ত লক্ষ্য কী ছিল তা কখনোই স্পষ্ট ছিল না। বিশেষ করে যখন এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে পপুলার ফোর্সেসের কোনো ধরনের ব্যাপক জনসমর্থন নেই। এর কারণ হলো, অনেক ফিলিস্তিনিদের চোখে আবু শাবাব ছিলেন অপরাধী। গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে তিনি জেল থেকে পালান। তিনি মাদক-সম্পর্কিত অভিযোগে বেশ কয়েক বছর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কারাবন্দী ছিলেন।
পরে, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার সময় ইসরায়েলের সঙ্গে তাঁর জোট অধিকাংশ ফিলিস্তিনির চোখে তাঁকে অপরাধী করে তোলে। এমনকি তাঁর নিজের গোত্রও এক বিবৃতিতে বলেছিল যে তাঁর মৃত্যু ‘একটি অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি হিসেবে কাজ করে, যা গোত্রের ইতিহাসকে প্রতিনিধিত্ব করে না।’
আবু শাবাবের গোষ্ঠীর প্রাথমিক নামকরণ ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ ভাষা ব্যবহার করে করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি ছিল হাস্যকর। কারণ, তাঁর গোষ্ঠীর সঙ্গে আইএসআইএলের সংযোগের রিপোর্ট ছিল। যদিও সেই সংযোগ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো অভিন্ন মতাদর্শের চেয়ে মিসরীয় সিনাই উপদ্বীপ থেকে গাজায় চোরাচালানে সহযোগিতা-সম্পর্কিত ছিল।
আবু শাবাবের পটভূমি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর উপস্থিতির মধ্যেও সব সময় একটি বৈসাদৃশ্য ছিল। তিনি ইংরেজি ভাষায় পোস্ট করতেন, এমনকি ওয়ালস্ট্রিট জার্নালে লিখিত নিবন্ধও শেয়ার করেছিলেন তিনি।
সেই নিবন্ধে আবু শাবাব দাবি করেছিলেন, তাঁর পপুলার ফোর্সেস গাজার দক্ষিণে পূর্ব রাফার বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং তারা ‘একটি নতুন ভবিষ্যৎ গড়তে প্রস্তুত।’ নিবন্ধটিতে বলা হয়েছিল, ‘আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো সেই ফিলিস্তিনিদের আলাদা করা, যাদের হামাসের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, যুদ্ধের আগুন থেকে।’
আবু শাবাব যখন ইসরায়েলের সঙ্গে পপুলার ফোর্সেসের সংযোগ ঢেকে রাখার চেষ্টা করছিলেন, তখন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জুনে স্বীকার করেন যে তাঁর সরকার হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করছে। গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে এটি স্পষ্ট, এ ধরনের একটি গোষ্ঠী আবু শাবাবের বাহিনী।
আবু শাবাব সিএনএনকে বলেছিলেন, তিনি ‘এই সম্প্রদায়ের নাগরিকদের একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেন, যাঁরা মানবিক সহায়তা লুটপাট ও দুর্নীতি থেকে রক্ষা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী হয়েছেন’, এবং তাঁর গোষ্ঠী তাঁদের বাহিনীর সাহায্য বিতরণের ছবিও শেয়ার করে।
কিন্তু এর পর থেকে আবু শাবাব এবং পপুলার ফোর্সেসের বিরুদ্ধে সাহায্যের কনভয় থেকে লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়। গাজার নিরাপত্তা সূত্র আল জাজিরা আরবিকে নিশ্চিত করেছে যে ইসরায়েল-সমর্থিত গোষ্ঠীটি লুটপাটে অংশ নিয়েছিল।
ইসরায়েলি বিধিনিষেধ এবং ফিলিস্তিনি অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে যখন গাজা দুর্ভিক্ষের শিকার হচ্ছিল, সেই সময়ে এই অভিযোগগুলো আবু শাবাবকে কেবলই একজন ইসরায়েলি প্রক্সি হিসেবে দেখার ধারণাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল।
তাই হয়তো এটা অবাক হওয়ার মতো নয় যে গাজার খুব কম ফিলিস্তিনি এমনকি যারা হামাসের বিরোধী, আবু শাবাবের মৃত্যুতে অশ্রু ঝরিয়েছেন।
তাঁর হত্যার পরিস্থিতি এখনো অস্পষ্ট—আবু শাবাবের উৎস এবং যুদ্ধের সময় তার ভূমিকা যেমন ছিল।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত যেহেতু এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে হামাসের একটি প্রকৃত বিকল্প হওয়ার মতো সমর্থন বা ক্ষমতা তার ছিল না, তাই তাঁর ভাগ্য ক্রমেই নিশ্চিত বলে মনে হচ্ছিল।

জলবায়ু ও অধিকার কর্মী সোনম ওয়াংচুক শান্তিপূর্ণভাবে এই প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তিনি আজকের ঘটনাকে ‘তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছেন এবং এটিকে ‘জেন-জি বিপ্লব’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে আজকের সহিংসতার ঘটনায় তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এদিকে, বিজেপি এই সহিংসতার জন্য কংগ্রেসকে
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
৩৭ মিনিট আগে
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমানবন্দরে তাঁকে আলিঙ্গন করে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর পরই, পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন তা পারবে না।
১ ঘণ্টা আগে
ভারতের ২০ বছরের পুরোনো বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগো এক দিনে ৫৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করার মধ্য দিয়ে এক নতুন ও উদ্বেগজনক রেকর্ড তৈরি করেছে। ক্রু-সংক্রান্ত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত জটিলতাসহ একাধিক পরিচালনাগত ব্যাঘাতের কারণে এই বিপর্যয় টানা তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে