সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপণযোগ্য পারমাণবিক অস্ত্রবাহী প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল ভারত

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ০২
Thumbnail image
সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপণযোগ্য পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। ছবি এআই দিয়ে তৈরি

সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপণযোগ্য পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। দেশটির নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভারত ৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার পরমাণু অস্ত্র বহনকারী ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে এই পরীক্ষা সম্প্রতি ভারতীয় নৌবাহিনীতে যুক্ত করা পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন আইএনএস আরিঘাত থেকে চালানো হয়েছে। নৌবাহিনী দিবসের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অ্যাডমিরাল দিনেশ কে ত্রিপাঠী বলেন, ‘ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ সম্পর্কিত আরও তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি আমরা।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, কে-৪ ক্ষেপণাস্ত্রটি গত ২৭ নভেম্বর ভারতের ওডিশা রাজ্যের বিশাখাপত্তম উপকূলের কাছে আইএনএস আরিঘাত থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। আইএনএস আরিঘাত সাবমেরিনটি চলতি বছরের ২৯ আগস্ট ভারতীয় নৌবাহিনীতে কমিশন করা হয়।

এই পরীক্ষা ছিল সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপণযোগ্য ব্যালিস্টিক মিসাইলের প্রথম সফল পরীক্ষা। এ পরীক্ষার মাধ্যমে ভারত স্থল, আকাশ ও সমুদ্রের নিচ থেকে পরমাণু অস্ত্র নিক্ষেপের সক্ষমতা অর্জন করল। বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশেরই এই সক্ষমতা আছে। বিগত কয়েক বছরে ভারত তার সামরিক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে এবং বিভিন্ন পাল্লার একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে।

অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী আরও জানান, দুটি পরমাণু শক্তিচালিত অ্যাটাক সাবমেরিন নির্মাণের জন্য সরকারের অনুমোদন দেশীয় প্রযুক্তিতে ভারতের সক্ষমতার প্রতি আস্থার প্রতিফলন। অন্যান্য ফাস্ট অ্যাটাক সাবমেরিন মূলত শত্রুপক্ষের জাহাজ এবং সাবমেরিনগুলোকে টার্গেট করতে ব্যবহৃত হয় এবং ভূমি ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুতে ক্রুজ মিসাইল নিক্ষেপ করতে পারে। তবে এগুলো পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিনের মতো নয়।

অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী জানান, বর্তমানে ভারত নিজস্ব প্রযুক্তিতে ৬২টি জাহাজ ও একটি সাবমেরিন নির্মাণ করছে। এই বিষয়টি ভারতের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রচেষ্টারই অংশ। আগামী এক বছরের মধ্যে একাধিক প্ল্যাটফর্ম নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে এবং অন্তত একটি জাহাজ শিগগিরই কমিশন করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা উন্নত প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করেছি।’

অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী আরও বলেন, ‘রাফালে-এম যুদ্ধবিমান (নৌবাহিনী সংস্করণ) এবং স্করপিয়ন সাবমেরিন ক্রয়ের প্রক্রিয়া আগামী মাসে চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ফ্রান্স থেকে রাফালে-এম যুদ্ধবিমান ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছিল, যা মূলত দেশীয়ভাবে নির্মিত বিমানবাহী রণতরি আইএনএস বিক্রান্তে মোতায়েনের জন্য।’

ভারত মহাসাগর অঞ্চলে বহিরাগত শক্তির কার্যকলাপ সম্পর্কেও সতর্ক নজর রাখছে ভারতীয় নৌবাহিনী—বলে জানান অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী। চীনা নৌবাহিনীর উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাদের যুদ্ধজাহাজ হোক বা গবেষণা জাহাজ, আমরা জানি কে কোথায় কী করছে।’ তিনি পাকিস্তান নৌবাহিনীর ‘অপ্রত্যাশিত আকার বৃদ্ধি’ সম্পর্কেও মন্তব্য করেন। পাকিস্তান নৌবাহিনী তাদের বহরের আকার ৫০টি জাহাজে স্থির করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। তিনি বলেন, ‘তারা জনকল্যাণের চেয়ে অস্ত্রকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত