Ajker Patrika

খনিজের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিরাপত্তা চান জেলেনস্কি, যুদ্ধ বন্ধেও রাজি

শিগগিরই পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
শিগগিরই পুতিন ও জেলেনস্কির সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ পাওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁর সেই আগ্রহের সূত্র ধরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে খনিজ সম্পদ দিতে রাজি। তবে বিনিময়ে ওয়াশিংটনকে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশনায় রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধেও রাজি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত শুক্রবার রয়টার্সকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সে সময় তিনি ইউক্রেনের একটি গোপন মানচিত্রের ওপর দৃষ্টিপাত করেন। মানচিত্রটিতে ইউক্রেনের বিরল মৃত্তিকা ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজের বিশাল মজুত চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, জেলেনস্কির এই প্রচেষ্টা মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যবসায়িক মনোভাবকে আকর্ষণ করার লক্ষ্যে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের দ্রুত সমাপ্তি চাচ্ছে। গত সপ্তাহের সোমবার ট্রাম্প বলেন, তিনি চান ইউক্রেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিরল মৃত্তিকা এবং অন্যান্য খনিজ সরবরাহ করুক। বিনিময়ে ওয়াশিংটন ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করবে।

এই প্রসঙ্গ টেনে জেলেনস্কি বলেন, ‘যদি আমরা চুক্তি নিয়ে কথা বলি, তাহলে চলুন একটি চুক্তি করি, আমরা এর পক্ষে।’ তবে এ সময় তিনি বলেন, তিনি যেকোনো সমঝোতার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিশ্চিত করতে হবে।

গত বছরের মাঝামাঝি ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ দেশটির গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ক্ষেত্রগুলোতে মিত্রদের বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করার ধারণা উপস্থাপন করেছিল। পাশাপাশি সে সময় জেলেনস্কি একটি ‘বিজয় পরিকল্পনা’ও মিত্রদের কাছে তুলে ধরেছিল। এর মাধ্যমে দেশটি নিজেদের যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় একটি সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল এবং মস্কোকে আলোচনার টেবিলে আনার চেষ্টা করেছিল।

সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি জানান, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদগুলোর ২০ শতাংশের কম বর্তমানে রাশিয়ার দখলে। বিরল মৃত্তিকা খনিজগুলো উচ্চ শক্তির চৌম্বক, বৈদ্যুতিক মোটর এবং দৈনন্দিন ব্যবহার্য ইলেকট্রনিকসের উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ। জেলেনস্কি বলেন, মস্কো এই খনিজগুলো তার মিত্র উত্তর কোরিয়া এবং ইরানকে দিতে পারে।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আমাদের পুতিনকে থামাতে হবে এবং যা আমাদের কাছে আছে, তা রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে মধ্য ইউক্রেনের দিনিপ্রো অঞ্চল খুবই সমৃদ্ধ। এই অঞ্চলকে রক্ষা করতে হবে।’

এদিকে, রাশিয়ার সেনারা কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং তারা ব্যাপক গোলাবারুদের সহায়তায় নিরলস আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। বিপরীতে কিয়েভের ছোট আকারের সেনাবাহিনী সৈন্যের অভাবে চাপে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে বিদেশ থেকে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে চিন্তিত।

রয়টার্সের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় জেলেনস্কি কিয়েভের প্রেসিডেন্ট অফিসে একটি টেবিলের ওপর একটি মানচিত্র মেলে ধরেন। যেখানে অনেকগুলো খনিজ মজুত দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে বিস্তৃত পূর্ব ইউক্রেনে বিরল মৃত্তিকা ধাতুর মজুত থাকার চিহ্নিত ছিল। তবে এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই রাশিয়ার অধীনে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তাঁর দেশে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে টাইটানিয়াম মজুত রয়েছে। এই টাইটানিয়াম বিমান ও মহাকাশ শিল্পে অপরিহার্য। এ ছাড়া পারমাণবিক শক্তি ও অস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত ইউরেনিয়ামেরও বিশাল মজুত আছে। রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চল ছাড়াও ইউক্রেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিপুল টাইটানিয়ামের মজুত আছে বলেও জানান জেলেনস্কি।

ইউক্রেন দ্রুত পররাষ্ট্রনীতি পুনর্নির্ধারণ করেছে। যাতে দেশটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সংগতি বজায় রাখতে পারে। তবে জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেন, কিয়েভ ‘তার সম্পদ অন্যকে দিয়ে দেবে’—এমন কোনো প্রস্তাবনা দেয়নি, বরং একটি পারস্পরিক সুবিধাজনক অংশীদারত্বের প্রস্তাব দিচ্ছে, যাতে এই সম্পদগুলোকে যৌথভাবে ব্যবহার করা যায়।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আমেরিকানরা সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে এবং তাই আমেরিকানদের সবচেয়ে বেশি উপার্জন করা উচিত এই খাত থেকে। তাদের এই অগ্রাধিকার থাকতে হবে এবং তা থাকবে। আমি এই বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতে চাই।’

তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদের বিস্তারিত জানে। কারণ, সোভিয়েত আমলে পরিচালিত ভূতাত্ত্বিক জরিপ থেকেই এই তথ্য জানা গেছে। কিন্তু ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ভেঙে ইউক্রেনের স্বাধীনতা লাভের পর জরিপের মূল দলিলগুলো মস্কোর কাছে চলে গেছে।

এ ছাড়া, জেলেনস্কি বলেন, কিয়েভ এবং হোয়াইট হাউস ইউক্রেনের বিশাল ভূগর্ভস্থ গ্যাস স্টোরেজ সাইটগুলো ব্যবহার করে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনা করছে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে, ট্রাম্প প্রশাসন এতে খুব আগ্রহী...আমরা প্রস্তুত এবং ইচ্ছুক ইউক্রেনের জন্য চুক্তি করতে। অবশ্যই, আমরা ইউরোপের জন্য একটি হাব হতে পারব।’

এদিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হওয়ার আগেই জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আগামী ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। পশ্চিমা দেশগুলোর কর্মকর্তারা এখানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করবেন। জেলেনস্কি জানান, তিনি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এই সম্মেলনে ট্রাম্পের বিশেষ দূত কিথ কেলোগও উপস্থিত থাকবেন।

ইউক্রেনের নেতা বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সরাসরি সাক্ষাৎ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তাঁর সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের গুরুত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অন্যথায় এটি ইউক্রেন ছাড়া ইউক্রেন সম্পর্কে একটি সংলাপ হয়ে যাবে।’

ট্রাম্প শুক্রবার জানান, তিনি আশা করছেন যে, পরবর্তী সপ্তাহে জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলবেন। জেলেনস্কি বলেন, তাঁর অগ্রাধিকার হবে ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিয়ে কথা বলা, যাতে ভবিষ্যতে রাশিয়া আরেকটি আক্রমণ করতে না পারে। তিনি জানান, এরই মধ্যে তাঁর দল কিথ কেলোগ এবং ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।

এদিকে, ট্রাম্পের শান্তির প্রস্তাবের মধ্যেই রুশ বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ইউক্রেনীয় পরিবহন কেন্দ্র পোকরোভস্কে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। বিপরীতে জেলেনস্কি প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছেন, তাঁর বাহিনী বৃহস্পতিবার নতুন আক্রমণ শুরু করেছে। এই আক্রমণে তারা রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে আরও আড়াই কিলোমিটার অগ্রসর হয়েছে। তবে রাশিয়া ওই দিন একটি ইউক্রেনীয় আক্রমণের খবর দিয়েছিল, কিন্তু দাবি করে যে, তা প্রতিহত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

মহাসচিব বিএনপিতে, জোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এলডিপির কর্নেল অলি

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত
মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।

প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’

ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।

বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

মহাসচিব বিএনপিতে, জোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এলডিপির কর্নেল অলি

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝেই বড়দিনের আনন্দ খুঁজছে ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে
গত ২১ ডিসেম্বর গাজা সিটিতে ক্রিসমাস উদযাপনের আগে হলি ফ্যামিলি ক্যাথলিক চার্চের বাইরে গাজার শিশু ও সন্ন্যাসিনীরা। ছবি: এপির সৌজন্যে

গাজা উপত্যকায় গত দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।

৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্যান্য সদস্যদের সাথে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিস্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।

গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিস্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’

তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইজরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইজরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনও কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনও ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।

গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিস্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সাথে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’

৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’

গাজার খ্রিস্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কমই হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।

গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যেই প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইজরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।

অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

মহাসচিব বিএনপিতে, জোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এলডিপির কর্নেল অলি

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মস্কোতে বিস্ফোরণ, দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত তিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪২
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি
মস্কোর ঘটনাস্থলে পুলিশ। ছবি: বিবিসি

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আরেকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রাশিয়ার তদন্ত সংস্থাগুলোর বরাতে জানা গেছে, দক্ষিণ মস্কোর ইয়েলেতস্কায়া স্ট্রিট এলাকায় এই বিস্ফোরণ ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোরে। ঘটনাস্থলটি সেই জায়গার কাছে, যেখানে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক রুশ জেনারেল গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন।

রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বিবৃতির বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা করার সময় বিস্ফোরণটি ঘটে। পুলিশ কর্মকর্তারা যখন ওই ব্যক্তির কাছে যান, তখনই একটি বিস্ফোরক ডিভাইস সক্রিয় হয়ে যায়। বিস্ফোরণের ফলে ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা প্রাণ হারান। এ সময় তাঁদের পাশে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও বিস্ফোরণে নিহত হন।

নিহত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বয়স ছিল ২৪ ও ২৫ বছর। আল জাজিরার মস্কো প্রতিনিধি ইউলিয়া শাপোভালোভার তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে একজনের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এটি তাদের পরিবারের জন্য এক ভয়াবহ ট্র্যাজেডি।’ বিস্ফোরণের প্রকৃত উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। কাছাকাছি বসবাসকারী আলেক্সান্ডার নামের এক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘একটা ভয়ংকর শব্দ হয়েছিল, কয়েক দিন আগের গাড়ি বিস্ফোরণের মতোই।’ আরেক বাসিন্দা রোজা জানান, বিস্ফোরণের সময় তাঁদের পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে এবং তিনি ঘুম থেকে জেগে ওঠেন।

বিস্ফোরণের পরপরই এলাকাটি ঘিরে ফেলে পুলিশ বাহিনী। রুশ টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘটনাস্থলে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করেছে।

এই বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই এলাকার কাছে, যেখানে গত সোমবার রুশ জেনারেল ফানিল সারভারভ গাড়ির নিচে পেতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইসের মাধ্যমে নিহত হন। সারভারভ রুশ জেনারেল স্টাফের অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের জন্য সেনাদের প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

রাশিয়া জেনারেল সারভারভ হত্যার পেছনে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে ইউক্রেন এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়া ও দখল করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনায় রুশ সামরিক কর্মকর্তা এবং এই যুদ্ধের সমর্থক বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

মহাসচিব বিএনপিতে, জোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এলডিপির কর্নেল অলি

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শানলিউরফা: নবীদের যে নগরে মিলেছে তিন ধর্মের মানুষ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন
তুরস্কের শানলিউরফা শহর। ছবি: সিএনএন

দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের শানলিউরফা শহরকে বলা হয় ‘নবীদের নগরী’। সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ মাইল উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি হাজার বছরের ইতিহাস, ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সংযোগস্থল। এখানে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও ইসলাম—এই তিন একেশ্বরবাদী ধর্মের কাহিনি এসে মিলেছে।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, শানলিউরফার পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত নীলাভ পানির ‘বালিক্লিগোল’ বা ‘মাছের হ্রদ’। মূলত এখানে আছে দুটি পুকুর। ধর্মীয় মতে, দুটি পুকুরের বড়টিতে নবী ইব্রাহিম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করেছিলেন মেসোপটেমিয়ার রাজা নমরুদ। আল্লাহ তৎক্ষণাৎ ওই আগুনকে পানি এবং জ্বলন্ত কাঠকে মাছে রূপান্তরিত করেছিলেন। এ ছাড়া ‘আইনজেলিহা’ নামের ছোট পুকুরটির নামকরণ করা হয়েছে নমরুদের কন্যা জেলিহার নামে। ইব্রাহিম নবীর প্রতি বিশ্বাসের কারণে এই পুকুরে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জেলিহা প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে বিশ্বাস।

দুটি পুকুরই কালো দাগওয়ালা কার্প মাছে ভরা। এগুলোকে পবিত্র মনে করা হয়। তাই এই মাছগুলোকে ধরা বা এগুলোর ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই কারণেই বালিক্লিগোল শুধু একটি পর্যটনস্থল নয়, বরং গভীর ধর্মীয় আবেগ ও ইতিহাসের প্রতীক। মাছের গায়ে থাকা কালো দাগগুলোকে আগুনের ছাইয়ের চিহ্ন হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন
বালিক্লিগোলে ভেসে বেড়ায় কালো দাগওয়ালা কার্প মাছ। ছবি: সিএনএন

ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে শানলিউরফা নানা নামে পরিচিত ছিল। আরামীয়রা একে ডাকত উরহাই, গ্রিক শাসনামলে নাম ছিল এডেসা, আরব বিজয়ের পর নাম হয় রোহা। অটোমানেরা ১৬০৭ সালে এই নগরীর নাম রাখে উরফা। পরে ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রতিরোধের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্ত হয় ‘শানলি’, অর্থাৎ ‘গৌরবময়’।

এই শহরটি ইব্রাহিম (আ.), আইয়ুব (আ.), নূহ (আ.) ও জেথ্রোর মতো নবীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয়। পুরোনো শহরের দেরগাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বালিক্লিগোল মুসলিম তীর্থযাত্রীদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এখানেই রয়েছে মেভলিদ-ই-হালিল গুহা। বিশ্বাস করা হয়, এখানেই জন্ম হয়েছিল ইব্রাহিম নবীর। নারীরা সন্তান কামনায় ও আরোগ্য লাভের আশায় এই গুহায় আসেন।

তবে শানলিউরফার ইতিহাস শুধু ধর্মগ্রন্থেই সীমাবদ্ধ নয়। শহরটি থেকে ১৪ মাইল দূরেই আছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। প্রায় ১১-১২ হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপনাটি মানবসভ্যতার ধারণাকেই বদলে দিয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৯৬০০ সালের এই নিওলিথিক স্থাপনাটি কৃষি ও মৃৎশিল্পের আগেই নির্মিত—যা প্রমাণ করে, ধর্মীয় আচার হয়তো সভ্যতার সূচনাতেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে পাওয়া টি-আকৃতির স্তম্ভ ও খোদাই করা পশুর ভাস্কর্য বিশ্বব্যাপী বিস্ময় সৃষ্টি করেছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা বা উপাসনালয় হিসেবে চিহ্নিত ‘গ্যোবেকলি তেপে’। ছবি: সিএনএন

শানলিউরফা প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে ১০ হাজারের বেশি নিদর্শন। এর মধ্যে ‘উরফা ম্যান’ নামের ১১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো মানব মূর্তিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পাশেই হালেপলিবাহচে মোজাইক জাদুঘর ও কিজিলকয়ুন নেক্রোপলিস শহরের রোমান যুগের ইতিহাস তুলে ধরে।

ইতিহাস ও ধর্মের পাশাপাশি শানলিউরফা খাবার ও আতিথেয়তার জন্যও বিখ্যাত। উরফা কাবাব, পাটলিজান কাবাব, চি কফতে ও শিল্লিক তাতলিসি এখানকার জনপ্রিয় খাবার। স্থানীয়দের সঙ্গে ধীরে চা পান, পুরোনো বাজারে হাঁটা আর ‘সিরা গেসেসি’ নামের সাংস্কৃতিক আড্ডায় অংশ নিলে বোঝা যায়—এই শহর শুধু দেখার নয়, অনুভব করারও।

শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন
শানলিউরফা নগরীতে ‘সিরা গেসেসি’ নামে রাতের আড্ডা। ছবি: সিএনএন

বলা যায়—শানলিউরফা যেন এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবসভ্যতার গল্প একসূত্রে গেঁথে পাশাপাশি হাঁটে অতীত ও বর্তমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণখেলাপির তালিকায় নাম: রিট খারিজ, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না মান্না

মহাসচিব বিএনপিতে, জোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এলডিপির কর্নেল অলি

লন্ডন থেকে রাত সোয়া ১২টায় দেশের পথে রওনা দেবেন তারেক রহমান, বিমানবন্দরে বাড়তি নিরাপত্তা

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো বিষ্ণু মূর্তি, নিন্দা জানাল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত