
ইউক্রেনের দিনিপ্রোতে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এক রুশ বিমান হামলা হয়। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এই হামলাকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে আখ্যা দেন। এ হামলার পর ঘটনাস্থলে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় ধরে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। এই হামলার এতটাই শক্তিশালী এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল যে, এর পরপরই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছিলেন—এর বৈশিষ্ট্যগুলো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) মতো।
তবে পশ্চিমা কর্মকর্তারা দ্রুতই এই দাবি অস্বীকার করেন। তারা বলেন, রাশিয়া যদি সত্যিই এমন কোনো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করত, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক সতর্কতা জানিয়েই করা হতো। কিন্তু হামলার কয়েক ঘণ্টা পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে জানান, রাশিয়া ‘নতুন মাঝারি পাল্লার’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে ‘ওরেশনিক’ নামে। রুশ ভাষায় এর অর্থ ‘হ্যাজেল গাছ’।
পুতিন বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবেগ ছিল মাক ১০ বা প্রতি সেকেন্ডে আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার (শব্দের গতির দশগুণ)। তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে এই অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার কোনো উপায় নেই।’ তিনি উল্লেখ করেন, দিনিপ্রোর একটি বড় সামরিক-শিল্প স্থাপনায় এই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। তিনি এ হামলাকে পরীক্ষা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘এটি সফল হয়েছে।’
এর পরদিন, রাশিয়ার শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিন জানান, ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে এই ক্ষেপণাস্ত্রের আরও পরীক্ষা চালানো হবে। তবে পুতিনের দেওয়া বিবরণের পরও এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আসলে কী, তা কতটা বিপজ্জনক—তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট মতৈক্য নেই।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দারা দাবি করেন, এটি সিডার নামে পরিচিত এক নতুন ধরনের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। তারা জানান, এটি মাক ১১ গতিতে চলছিল এবং রাশিয়ার আস্ত্রাখান অঞ্চল থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা দিনিপ্রোতে পৌঁছাতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লেগেছিল। তারা আরও জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে ছয়টি ওয়ারহেড ছিল আসে এবং প্রতিটি ওয়ারহেডে ছিল অতিরিক্ত ছয়টি করে বিভিন্ন ধরনের গোলা-বারুদ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন ফুটেজ পরীক্ষা করে।
কেন এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতি গুরুত্বপূর্ণ
পুতিনের দাবি যদি সঠিক হয়, তবে ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি হাইপারসনিক (শব্দের গতির চেয়ে বেশি) শ্রেণির। সাধারণত, খুব কম ক্ষেপণাস্ত্রই এই স্তরে পৌঁছাতে পারে। একটি ক্ষেপণাস্ত্র যত দ্রুত চলবে, সেটি তত দ্রুত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে। ক্ষেপণাস্ত্র যত দ্রুত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে, প্রতিপক্ষ সেনাবাহিনী প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য তত কম সময় পাবে। এ কারণেই, ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে গতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণত একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর জন্য প্রাথমিকভাবে বায়ুমণ্ডলের মধ্যে একটি বাঁকানো পথ অনুসরণ করে উপরে ওঠে এবং তারপরে একই ধরনের পথ ধরে নিচে নামে। কিন্তু এটি যখন নিচে নেমে আসে, তখন এটি গতি বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে এই গতিশক্তি বা কাইনেটিক এনার্জি বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত গতিশক্তি ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আরও বেশি বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়।
সাধারণত, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার ঠিক আগে—কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে। এ কারণে, বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা যেমন, ইউক্রেনে থাকা মার্কিন নির্মিত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে এটিকে আটকানো বিশেষভাবে কঠিন হয়ে যায়।
এই কারণেই পুতিন সম্ভবত এই নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি প্রকাশ্যে জানানো সময় এর গতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। রাশিয়া থেকে নিক্ষিপ্ত প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন আটকে দিয়েছে। কিন্তু ব্যালিস্টিক মিসাইলের এই দ্রুত গতি সেই সফলতা কমিয়ে আনবে।
নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিকের পাল্লা কত
রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক প্রোক্রেমলিন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়াকে বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার, তবে এই পাল্লার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, ‘সম্ভাবনা আছে, আমরা একটি নতুন প্রজন্মের মাঝারি পাল্লার রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের (যার পরিসর আড়াই থেকে ৩ হাজার কিলোমিটার) বিষয়টি কথা বলছি। তবে আমাদের আলোচিত ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত ৫ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে।’
এর অর্থ হলো, এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়া ইউরোপের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার বাইরে থাকবে। ক্রামনিক বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি পৃথকযোগ্য ওয়ারহেড দ্বারা সজ্জিত এবং এর নিজস্ব গাইডেন্স ইউনিট আছে।’ অর্থাৎ, প্রয়োজন অনুসারে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যবস্তু এবং গতিপথ পরিবর্তন করতে সক্ষম।
ক্রামনিক ইঙ্গিত দেন, এটি ইয়ার্স-এম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একটি ছোট সংস্করণ হতে পারে। গত বছরই রাশিয়া এই ইয়ার্স-এম আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন সংস্করণ উৎপাদন শুরু করে। এটিকে যেকোনো জায়গা থেকে নিক্ষেপ করা যায় এবং এটিতে অনেকগুলো পৃথক ওয়ারহেড অন্তর্ভুক্ত।
আরেক সমর বিশেষজ্ঞ দিমিত্রি করনেভ ইজভেস্তিয়াকে বলেন, ওরেশনিক সম্ভবত স্বল্প পাল্লার ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রের নকশার ওপর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রটি রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। তিনি জানান, ওরেশনিকে সম্ভবত রাশিয়া তাদের সর্বশেষ প্রজন্মের ইঞ্জিন যোগ করেছে। করনেভ বলেন, গত বসন্তে রাশিয়া কাপুস্তিন ইয়ার পরীক্ষাকেন্দ্রে একটি বড় ইঞ্জিনযুক্ত ইস্কান্দার ব্যবহার পরীক্ষা করেছে। সম্ভবত এটি ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রই ছিল।
কতটা বিধ্বংসী এই ওরেশনিক
সামরিক বিশ্লেষক ভ্লাদিস্লাভ শুরিগিন ইজভেস্তিয়াকে জানিয়েছেন, ওরেশনিক বিদ্যমান আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো অতিক্রম করতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, এটি পারমাণবিক ওয়ারহেড ব্যবহার না করেও গভীরতর স্তরে থাকা সুরক্ষিত বাঙ্কার ধ্বংস করতে পারে।
আরেক রুশ বিশ্লেষক ইগর কোরোতচেঙ্কো রুশ সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে স্বাধীনভাবে পরিচালনা করা যায় এমন একাধিক ওয়ারহেড আছে। তিনি আরও বলেছেন, ‘এই ওয়ারহেডগুলো লক্ষ্যবস্তুতে কার্যত একই সময়ে পৌঁছে যাওয়ায় এটি অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে ওঠে।’
সামরিক ঝুঁকি বিশ্লেষক ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান সিবিলাইনের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন ক্রাম্প বিবিসিকে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুতরভাবে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এই সংঘাতে ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী হুমকিগুলোর একটি। দ্রুত এবং আরও উন্নততর সিস্টেমগুলো সেই হুমকিকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলবে।’
বিবিসি থেকে সংক্ষেপিত
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

ইউক্রেনের দিনিপ্রোতে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এক রুশ বিমান হামলা হয়। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এই হামলাকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে আখ্যা দেন। এ হামলার পর ঘটনাস্থলে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় ধরে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। এই হামলার এতটাই শক্তিশালী এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল যে, এর পরপরই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছিলেন—এর বৈশিষ্ট্যগুলো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) মতো।
তবে পশ্চিমা কর্মকর্তারা দ্রুতই এই দাবি অস্বীকার করেন। তারা বলেন, রাশিয়া যদি সত্যিই এমন কোনো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করত, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক সতর্কতা জানিয়েই করা হতো। কিন্তু হামলার কয়েক ঘণ্টা পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে জানান, রাশিয়া ‘নতুন মাঝারি পাল্লার’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে ‘ওরেশনিক’ নামে। রুশ ভাষায় এর অর্থ ‘হ্যাজেল গাছ’।
পুতিন বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবেগ ছিল মাক ১০ বা প্রতি সেকেন্ডে আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার (শব্দের গতির দশগুণ)। তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে এই অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার কোনো উপায় নেই।’ তিনি উল্লেখ করেন, দিনিপ্রোর একটি বড় সামরিক-শিল্প স্থাপনায় এই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। তিনি এ হামলাকে পরীক্ষা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘এটি সফল হয়েছে।’
এর পরদিন, রাশিয়ার শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিন জানান, ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে এই ক্ষেপণাস্ত্রের আরও পরীক্ষা চালানো হবে। তবে পুতিনের দেওয়া বিবরণের পরও এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আসলে কী, তা কতটা বিপজ্জনক—তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট মতৈক্য নেই।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দারা দাবি করেন, এটি সিডার নামে পরিচিত এক নতুন ধরনের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। তারা জানান, এটি মাক ১১ গতিতে চলছিল এবং রাশিয়ার আস্ত্রাখান অঞ্চল থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা দিনিপ্রোতে পৌঁছাতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লেগেছিল। তারা আরও জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে ছয়টি ওয়ারহেড ছিল আসে এবং প্রতিটি ওয়ারহেডে ছিল অতিরিক্ত ছয়টি করে বিভিন্ন ধরনের গোলা-বারুদ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন ফুটেজ পরীক্ষা করে।
কেন এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতি গুরুত্বপূর্ণ
পুতিনের দাবি যদি সঠিক হয়, তবে ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি হাইপারসনিক (শব্দের গতির চেয়ে বেশি) শ্রেণির। সাধারণত, খুব কম ক্ষেপণাস্ত্রই এই স্তরে পৌঁছাতে পারে। একটি ক্ষেপণাস্ত্র যত দ্রুত চলবে, সেটি তত দ্রুত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে। ক্ষেপণাস্ত্র যত দ্রুত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে, প্রতিপক্ষ সেনাবাহিনী প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য তত কম সময় পাবে। এ কারণেই, ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে গতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণত একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর জন্য প্রাথমিকভাবে বায়ুমণ্ডলের মধ্যে একটি বাঁকানো পথ অনুসরণ করে উপরে ওঠে এবং তারপরে একই ধরনের পথ ধরে নিচে নামে। কিন্তু এটি যখন নিচে নেমে আসে, তখন এটি গতি বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে এই গতিশক্তি বা কাইনেটিক এনার্জি বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত গতিশক্তি ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আরও বেশি বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়।
সাধারণত, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার ঠিক আগে—কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে। এ কারণে, বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা যেমন, ইউক্রেনে থাকা মার্কিন নির্মিত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে এটিকে আটকানো বিশেষভাবে কঠিন হয়ে যায়।
এই কারণেই পুতিন সম্ভবত এই নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি প্রকাশ্যে জানানো সময় এর গতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। রাশিয়া থেকে নিক্ষিপ্ত প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন আটকে দিয়েছে। কিন্তু ব্যালিস্টিক মিসাইলের এই দ্রুত গতি সেই সফলতা কমিয়ে আনবে।
নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিকের পাল্লা কত
রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক প্রোক্রেমলিন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়াকে বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার, তবে এই পাল্লার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, ‘সম্ভাবনা আছে, আমরা একটি নতুন প্রজন্মের মাঝারি পাল্লার রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের (যার পরিসর আড়াই থেকে ৩ হাজার কিলোমিটার) বিষয়টি কথা বলছি। তবে আমাদের আলোচিত ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত ৫ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে।’
এর অর্থ হলো, এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়া ইউরোপের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার বাইরে থাকবে। ক্রামনিক বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি পৃথকযোগ্য ওয়ারহেড দ্বারা সজ্জিত এবং এর নিজস্ব গাইডেন্স ইউনিট আছে।’ অর্থাৎ, প্রয়োজন অনুসারে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যবস্তু এবং গতিপথ পরিবর্তন করতে সক্ষম।
ক্রামনিক ইঙ্গিত দেন, এটি ইয়ার্স-এম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একটি ছোট সংস্করণ হতে পারে। গত বছরই রাশিয়া এই ইয়ার্স-এম আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন সংস্করণ উৎপাদন শুরু করে। এটিকে যেকোনো জায়গা থেকে নিক্ষেপ করা যায় এবং এটিতে অনেকগুলো পৃথক ওয়ারহেড অন্তর্ভুক্ত।
আরেক সমর বিশেষজ্ঞ দিমিত্রি করনেভ ইজভেস্তিয়াকে বলেন, ওরেশনিক সম্ভবত স্বল্প পাল্লার ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রের নকশার ওপর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রটি রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। তিনি জানান, ওরেশনিকে সম্ভবত রাশিয়া তাদের সর্বশেষ প্রজন্মের ইঞ্জিন যোগ করেছে। করনেভ বলেন, গত বসন্তে রাশিয়া কাপুস্তিন ইয়ার পরীক্ষাকেন্দ্রে একটি বড় ইঞ্জিনযুক্ত ইস্কান্দার ব্যবহার পরীক্ষা করেছে। সম্ভবত এটি ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রই ছিল।
কতটা বিধ্বংসী এই ওরেশনিক
সামরিক বিশ্লেষক ভ্লাদিস্লাভ শুরিগিন ইজভেস্তিয়াকে জানিয়েছেন, ওরেশনিক বিদ্যমান আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো অতিক্রম করতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, এটি পারমাণবিক ওয়ারহেড ব্যবহার না করেও গভীরতর স্তরে থাকা সুরক্ষিত বাঙ্কার ধ্বংস করতে পারে।
আরেক রুশ বিশ্লেষক ইগর কোরোতচেঙ্কো রুশ সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে স্বাধীনভাবে পরিচালনা করা যায় এমন একাধিক ওয়ারহেড আছে। তিনি আরও বলেছেন, ‘এই ওয়ারহেডগুলো লক্ষ্যবস্তুতে কার্যত একই সময়ে পৌঁছে যাওয়ায় এটি অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে ওঠে।’
সামরিক ঝুঁকি বিশ্লেষক ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান সিবিলাইনের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন ক্রাম্প বিবিসিকে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুতরভাবে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এই সংঘাতে ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী হুমকিগুলোর একটি। দ্রুত এবং আরও উন্নততর সিস্টেমগুলো সেই হুমকিকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলবে।’
বিবিসি থেকে সংক্ষেপিত
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

ইউক্রেনের দিনিপ্রোতে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এক রুশ বিমান হামলা হয়। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এই হামলাকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে আখ্যা দেন। এ হামলার পর ঘটনাস্থলে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় ধরে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। এই হামলার এতটাই শক্তিশালী এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল যে, এর পরপরই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছিলেন—এর বৈশিষ্ট্যগুলো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) মতো।
তবে পশ্চিমা কর্মকর্তারা দ্রুতই এই দাবি অস্বীকার করেন। তারা বলেন, রাশিয়া যদি সত্যিই এমন কোনো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করত, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক সতর্কতা জানিয়েই করা হতো। কিন্তু হামলার কয়েক ঘণ্টা পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে জানান, রাশিয়া ‘নতুন মাঝারি পাল্লার’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে ‘ওরেশনিক’ নামে। রুশ ভাষায় এর অর্থ ‘হ্যাজেল গাছ’।
পুতিন বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবেগ ছিল মাক ১০ বা প্রতি সেকেন্ডে আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার (শব্দের গতির দশগুণ)। তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে এই অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার কোনো উপায় নেই।’ তিনি উল্লেখ করেন, দিনিপ্রোর একটি বড় সামরিক-শিল্প স্থাপনায় এই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। তিনি এ হামলাকে পরীক্ষা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘এটি সফল হয়েছে।’
এর পরদিন, রাশিয়ার শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিন জানান, ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে এই ক্ষেপণাস্ত্রের আরও পরীক্ষা চালানো হবে। তবে পুতিনের দেওয়া বিবরণের পরও এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আসলে কী, তা কতটা বিপজ্জনক—তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট মতৈক্য নেই।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দারা দাবি করেন, এটি সিডার নামে পরিচিত এক নতুন ধরনের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। তারা জানান, এটি মাক ১১ গতিতে চলছিল এবং রাশিয়ার আস্ত্রাখান অঞ্চল থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা দিনিপ্রোতে পৌঁছাতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লেগেছিল। তারা আরও জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে ছয়টি ওয়ারহেড ছিল আসে এবং প্রতিটি ওয়ারহেডে ছিল অতিরিক্ত ছয়টি করে বিভিন্ন ধরনের গোলা-বারুদ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন ফুটেজ পরীক্ষা করে।
কেন এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতি গুরুত্বপূর্ণ
পুতিনের দাবি যদি সঠিক হয়, তবে ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি হাইপারসনিক (শব্দের গতির চেয়ে বেশি) শ্রেণির। সাধারণত, খুব কম ক্ষেপণাস্ত্রই এই স্তরে পৌঁছাতে পারে। একটি ক্ষেপণাস্ত্র যত দ্রুত চলবে, সেটি তত দ্রুত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে। ক্ষেপণাস্ত্র যত দ্রুত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে, প্রতিপক্ষ সেনাবাহিনী প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য তত কম সময় পাবে। এ কারণেই, ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে গতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণত একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর জন্য প্রাথমিকভাবে বায়ুমণ্ডলের মধ্যে একটি বাঁকানো পথ অনুসরণ করে উপরে ওঠে এবং তারপরে একই ধরনের পথ ধরে নিচে নামে। কিন্তু এটি যখন নিচে নেমে আসে, তখন এটি গতি বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে এই গতিশক্তি বা কাইনেটিক এনার্জি বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত গতিশক্তি ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আরও বেশি বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়।
সাধারণত, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার ঠিক আগে—কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে। এ কারণে, বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা যেমন, ইউক্রেনে থাকা মার্কিন নির্মিত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে এটিকে আটকানো বিশেষভাবে কঠিন হয়ে যায়।
এই কারণেই পুতিন সম্ভবত এই নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি প্রকাশ্যে জানানো সময় এর গতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। রাশিয়া থেকে নিক্ষিপ্ত প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন আটকে দিয়েছে। কিন্তু ব্যালিস্টিক মিসাইলের এই দ্রুত গতি সেই সফলতা কমিয়ে আনবে।
নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিকের পাল্লা কত
রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক প্রোক্রেমলিন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়াকে বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার, তবে এই পাল্লার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, ‘সম্ভাবনা আছে, আমরা একটি নতুন প্রজন্মের মাঝারি পাল্লার রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের (যার পরিসর আড়াই থেকে ৩ হাজার কিলোমিটার) বিষয়টি কথা বলছি। তবে আমাদের আলোচিত ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত ৫ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে।’
এর অর্থ হলো, এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়া ইউরোপের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার বাইরে থাকবে। ক্রামনিক বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি পৃথকযোগ্য ওয়ারহেড দ্বারা সজ্জিত এবং এর নিজস্ব গাইডেন্স ইউনিট আছে।’ অর্থাৎ, প্রয়োজন অনুসারে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যবস্তু এবং গতিপথ পরিবর্তন করতে সক্ষম।
ক্রামনিক ইঙ্গিত দেন, এটি ইয়ার্স-এম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একটি ছোট সংস্করণ হতে পারে। গত বছরই রাশিয়া এই ইয়ার্স-এম আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন সংস্করণ উৎপাদন শুরু করে। এটিকে যেকোনো জায়গা থেকে নিক্ষেপ করা যায় এবং এটিতে অনেকগুলো পৃথক ওয়ারহেড অন্তর্ভুক্ত।
আরেক সমর বিশেষজ্ঞ দিমিত্রি করনেভ ইজভেস্তিয়াকে বলেন, ওরেশনিক সম্ভবত স্বল্প পাল্লার ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রের নকশার ওপর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রটি রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। তিনি জানান, ওরেশনিকে সম্ভবত রাশিয়া তাদের সর্বশেষ প্রজন্মের ইঞ্জিন যোগ করেছে। করনেভ বলেন, গত বসন্তে রাশিয়া কাপুস্তিন ইয়ার পরীক্ষাকেন্দ্রে একটি বড় ইঞ্জিনযুক্ত ইস্কান্দার ব্যবহার পরীক্ষা করেছে। সম্ভবত এটি ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রই ছিল।
কতটা বিধ্বংসী এই ওরেশনিক
সামরিক বিশ্লেষক ভ্লাদিস্লাভ শুরিগিন ইজভেস্তিয়াকে জানিয়েছেন, ওরেশনিক বিদ্যমান আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো অতিক্রম করতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, এটি পারমাণবিক ওয়ারহেড ব্যবহার না করেও গভীরতর স্তরে থাকা সুরক্ষিত বাঙ্কার ধ্বংস করতে পারে।
আরেক রুশ বিশ্লেষক ইগর কোরোতচেঙ্কো রুশ সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে স্বাধীনভাবে পরিচালনা করা যায় এমন একাধিক ওয়ারহেড আছে। তিনি আরও বলেছেন, ‘এই ওয়ারহেডগুলো লক্ষ্যবস্তুতে কার্যত একই সময়ে পৌঁছে যাওয়ায় এটি অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে ওঠে।’
সামরিক ঝুঁকি বিশ্লেষক ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান সিবিলাইনের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন ক্রাম্প বিবিসিকে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুতরভাবে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এই সংঘাতে ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী হুমকিগুলোর একটি। দ্রুত এবং আরও উন্নততর সিস্টেমগুলো সেই হুমকিকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলবে।’
বিবিসি থেকে সংক্ষেপিত
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

ইউক্রেনের দিনিপ্রোতে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এক রুশ বিমান হামলা হয়। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা এই হামলাকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে আখ্যা দেন। এ হামলার পর ঘটনাস্থলে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় ধরে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে। এই হামলার এতটাই শক্তিশালী এক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল যে, এর পরপরই ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছিলেন—এর বৈশিষ্ট্যগুলো আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) মতো।
তবে পশ্চিমা কর্মকর্তারা দ্রুতই এই দাবি অস্বীকার করেন। তারা বলেন, রাশিয়া যদি সত্যিই এমন কোনো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করত, তবে তা যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক সতর্কতা জানিয়েই করা হতো। কিন্তু হামলার কয়েক ঘণ্টা পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে জানান, রাশিয়া ‘নতুন মাঝারি পাল্লার’ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে ‘ওরেশনিক’ নামে। রুশ ভাষায় এর অর্থ ‘হ্যাজেল গাছ’।
পুতিন বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতিবেগ ছিল মাক ১০ বা প্রতি সেকেন্ডে আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার (শব্দের গতির দশগুণ)। তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে এই অস্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার কোনো উপায় নেই।’ তিনি উল্লেখ করেন, দিনিপ্রোর একটি বড় সামরিক-শিল্প স্থাপনায় এই ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। তিনি এ হামলাকে পরীক্ষা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘এটি সফল হয়েছে।’
এর পরদিন, রাশিয়ার শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় পুতিন জানান, ইউক্রেনের রণক্ষেত্রে এই ক্ষেপণাস্ত্রের আরও পরীক্ষা চালানো হবে। তবে পুতিনের দেওয়া বিবরণের পরও এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আসলে কী, তা কতটা বিপজ্জনক—তা নিয়ে এখনো স্পষ্ট মতৈক্য নেই।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দারা দাবি করেন, এটি সিডার নামে পরিচিত এক নতুন ধরনের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। তারা জানান, এটি মাক ১১ গতিতে চলছিল এবং রাশিয়ার আস্ত্রাখান অঞ্চল থেকে প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা দিনিপ্রোতে পৌঁছাতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লেগেছিল। তারা আরও জানান, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে ছয়টি ওয়ারহেড ছিল আসে এবং প্রতিটি ওয়ারহেডে ছিল অতিরিক্ত ছয়টি করে বিভিন্ন ধরনের গোলা-বারুদ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিভিন্ন ফুটেজ পরীক্ষা করে।
কেন এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতি গুরুত্বপূর্ণ
পুতিনের দাবি যদি সঠিক হয়, তবে ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি হাইপারসনিক (শব্দের গতির চেয়ে বেশি) শ্রেণির। সাধারণত, খুব কম ক্ষেপণাস্ত্রই এই স্তরে পৌঁছাতে পারে। একটি ক্ষেপণাস্ত্র যত দ্রুত চলবে, সেটি তত দ্রুত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে। ক্ষেপণাস্ত্র যত দ্রুত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবে, প্রতিপক্ষ সেনাবাহিনী প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য তত কম সময় পাবে। এ কারণেই, ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে গতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণত একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর জন্য প্রাথমিকভাবে বায়ুমণ্ডলের মধ্যে একটি বাঁকানো পথ অনুসরণ করে উপরে ওঠে এবং তারপরে একই ধরনের পথ ধরে নিচে নামে। কিন্তু এটি যখন নিচে নেমে আসে, তখন এটি গতি বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে এই গতিশক্তি বা কাইনেটিক এনার্জি বেড়ে যায়। এই অতিরিক্ত গতিশক্তি ক্ষেপণাস্ত্রটিকে আরও বেশি বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়।
সাধারণত, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার ঠিক আগে—কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে। এ কারণে, বিভিন্ন প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা যেমন, ইউক্রেনে থাকা মার্কিন নির্মিত প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে এটিকে আটকানো বিশেষভাবে কঠিন হয়ে যায়।
এই কারণেই পুতিন সম্ভবত এই নতুন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি প্রকাশ্যে জানানো সময় এর গতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। রাশিয়া থেকে নিক্ষিপ্ত প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেন আটকে দিয়েছে। কিন্তু ব্যালিস্টিক মিসাইলের এই দ্রুত গতি সেই সফলতা কমিয়ে আনবে।
নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ওরেশনিকের পাল্লা কত
রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক প্রোক্রেমলিন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়াকে বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার, তবে এই পাল্লার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, ‘সম্ভাবনা আছে, আমরা একটি নতুন প্রজন্মের মাঝারি পাল্লার রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের (যার পরিসর আড়াই থেকে ৩ হাজার কিলোমিটার) বিষয়টি কথা বলছি। তবে আমাদের আলোচিত ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত ৫ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে।’
এর অর্থ হলো, এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়া ইউরোপের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লার বাইরে থাকবে। ক্রামনিক বলেন, ‘এটি অবশ্যই একটি পৃথকযোগ্য ওয়ারহেড দ্বারা সজ্জিত এবং এর নিজস্ব গাইডেন্স ইউনিট আছে।’ অর্থাৎ, প্রয়োজন অনুসারে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তার লক্ষ্যবস্তু এবং গতিপথ পরিবর্তন করতে সক্ষম।
ক্রামনিক ইঙ্গিত দেন, এটি ইয়ার্স-এম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার একটি ছোট সংস্করণ হতে পারে। গত বছরই রাশিয়া এই ইয়ার্স-এম আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নতুন সংস্করণ উৎপাদন শুরু করে। এটিকে যেকোনো জায়গা থেকে নিক্ষেপ করা যায় এবং এটিতে অনেকগুলো পৃথক ওয়ারহেড অন্তর্ভুক্ত।
আরেক সমর বিশেষজ্ঞ দিমিত্রি করনেভ ইজভেস্তিয়াকে বলেন, ওরেশনিক সম্ভবত স্বল্প পাল্লার ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রের নকশার ওপর ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্রটি রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করছে। তিনি জানান, ওরেশনিকে সম্ভবত রাশিয়া তাদের সর্বশেষ প্রজন্মের ইঞ্জিন যোগ করেছে। করনেভ বলেন, গত বসন্তে রাশিয়া কাপুস্তিন ইয়ার পরীক্ষাকেন্দ্রে একটি বড় ইঞ্জিনযুক্ত ইস্কান্দার ব্যবহার পরীক্ষা করেছে। সম্ভবত এটি ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রই ছিল।
কতটা বিধ্বংসী এই ওরেশনিক
সামরিক বিশ্লেষক ভ্লাদিস্লাভ শুরিগিন ইজভেস্তিয়াকে জানিয়েছেন, ওরেশনিক বিদ্যমান আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো অতিক্রম করতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, এটি পারমাণবিক ওয়ারহেড ব্যবহার না করেও গভীরতর স্তরে থাকা সুরক্ষিত বাঙ্কার ধ্বংস করতে পারে।
আরেক রুশ বিশ্লেষক ইগর কোরোতচেঙ্কো রুশ সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে স্বাধীনভাবে পরিচালনা করা যায় এমন একাধিক ওয়ারহেড আছে। তিনি আরও বলেছেন, ‘এই ওয়ারহেডগুলো লক্ষ্যবস্তুতে কার্যত একই সময়ে পৌঁছে যাওয়ায় এটি অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে ওঠে।’
সামরিক ঝুঁকি বিশ্লেষক ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান সিবিলাইনের সিইও এবং প্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন ক্রাম্প বিবিসিকে বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে গুরুতরভাবে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো এই সংঘাতে ইউক্রেনের জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী হুমকিগুলোর একটি। দ্রুত এবং আরও উন্নততর সিস্টেমগুলো সেই হুমকিকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলবে।’
বিবিসি থেকে সংক্ষেপিত
অনুবাদ: আব্দুর রহমান

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাঁদের একজনের নাম সাজিদ আকরাম এবং অন্যজন নাভিদ আকরাম। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।
বন্দুকধারীদের গাড়িতে জঙ্গি সংস্থা আইএস-এর দুটি পতাকা পাওয়া গেছে। ২৪ বছর বয়সী অভিযুক্ত নাভিদের বাবা সাজিদ তথা অপর অভিযুক্তের কাছে ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তাঁর কাছে ছয়টি নিবন্ধিত অস্ত্র ছিল। এসব অস্ত্র দিয়েই হামলাকারীরা প্রায় ১০–২০ মিনিট ধরে উৎসবে উপস্থিত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে এবং নিহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছর পর্যন্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে দুজন পুলিশও ছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় হামলাকারী নাভিদ গুরুতর আহত হলেও তাঁর বাবা সাজিদ পুলিশের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ‘গতকাল আমরা যা দেখেছি, তা ছিল ধর্মবিরোধী খাঁটি শয়তানদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্দুক নিয়ম কঠোর করবে এবং জাতীয় অস্ত্র নিবন্ধন চালু করবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্ডাই বিচে প্রায় ১ হাজার মানুষ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। তবে আহমেদ আল-আহমেদ নামে এক বীর নাগরিক খালি হাতে এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচান। এ সময় আল-আহমেদ নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্ব নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে গুরুতর বন্দুক হামলার ঘটনা।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দেড় লাখ ইহুদি বসবাস করেন। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন সিডনির পূর্বাঞ্চলে।

দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ অভিযুক্তদের নাম প্রকাশ না করলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তাঁদের একজনের নাম সাজিদ আকরাম এবং অন্যজন নাভিদ আকরাম। সম্পর্কে তাঁরা পিতা-পুত্র।
বন্দুকধারীদের গাড়িতে জঙ্গি সংস্থা আইএস-এর দুটি পতাকা পাওয়া গেছে। ২৪ বছর বয়সী অভিযুক্ত নাভিদের বাবা সাজিদ তথা অপর অভিযুক্তের কাছে ২০১৫ সাল থেকে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তাঁর কাছে ছয়টি নিবন্ধিত অস্ত্র ছিল। এসব অস্ত্র দিয়েই হামলাকারীরা প্রায় ১০–২০ মিনিট ধরে উৎসবে উপস্থিত মানুষদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে নিহত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুও রয়েছে এবং নিহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছর পর্যন্ত।
রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার পর হাসপাতালে নেওয়া ৪০ জনের মধ্যে দুজন পুলিশও ছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সময় হামলাকারী নাভিদ গুরুতর আহত হলেও তাঁর বাবা সাজিদ পুলিশের পাল্টা গুলিতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবেনিজ বলেছেন, ‘গতকাল আমরা যা দেখেছি, তা ছিল ধর্মবিরোধী খাঁটি শয়তানদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’ তিনি ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সরকার বন্দুক নিয়ম কঠোর করবে এবং জাতীয় অস্ত্র নিবন্ধন চালু করবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন্ডাই বিচে প্রায় ১ হাজার মানুষ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে দিগ্বিদিক পালিয়ে যান। তবে আহমেদ আল-আহমেদ নামে এক বীর নাগরিক খালি হাতে এক হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে বহু মানুষের জীবন বাঁচান। এ সময় আল-আহমেদ নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিশ্ব নেতারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। এটি অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে গুরুতর বন্দুক হামলার ঘটনা।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দেড় লাখ ইহুদি বসবাস করেন। তাঁদের এক-তৃতীয়াংশই বাস করেন সিডনির পূর্বাঞ্চলে।

রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক প্রোক্রেমলিন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়াকে বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার, তবে এই পাল্লার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
২৮ নভেম্বর ২০২৪
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি হংকং ও চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিদেশি সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে তাঁর সাজা ঘোষণা হতে পারে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার সময় বিচারক অ্যাস্থার তোহ বলেন, চীনের পিপলস রিপাবলিকের প্রতি জিমি লাইয়ের ঘৃণা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, লাই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে হংকংয়ের অজুহাতে চীনের সরকার উৎখাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আদালত আরও রায় দেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক ‘অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকার মাধ্যমে লাই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক লেখা প্রকাশ করেছিলেন, যা ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইনের লঙ্ঘন।
বেইজিং শাসিত হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন—লাইয়ের কর্মকাণ্ড দেশ ও হংকংবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে ‘নিষ্ঠুর বিচারিক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বলছে, বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি কার্যত ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর বেইজিং কোনো আইনসভা পরামর্শ ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করেছিল, যা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ের সময় জিমি লাই শান্ত ছিলেন এবং আদালত ছাড়ার সময় পরিবারকে বিদায় জানান। তাঁর স্ত্রী টেরেসা, এক ছেলে ও ক্যাথলিক কার্ডিনাল জোসেফ জেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। লাইয়ের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপিল করা হবে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
এদিকে লাইয়ের ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই যুক্তরাজ্য সরকারকে তাঁর বাবার মুক্তির জন্য আরও সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে লাইয়ের মুক্তি দাবি করে এলেও চীন ও হংকং সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এক সময়ের সফল ব্যবসায়ী জিমি লাই ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়েনআনমেন গণহত্যার পর গণতন্ত্র আন্দোলনে সক্রিয় হন। অনেক হংকংবাসীর চোখে তিনি এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতীক। তবে এই রায় হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, তিনি হংকং ও চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে বিদেশি সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে তাঁর সাজা ঘোষণা হতে পারে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণার সময় বিচারক অ্যাস্থার তোহ বলেন, চীনের পিপলস রিপাবলিকের প্রতি জিমি লাইয়ের ঘৃণা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, লাই যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে হংকংয়ের অজুহাতে চীনের সরকার উৎখাতে সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আদালত আরও রায় দেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক ‘অ্যাপল ডেইলি’ পত্রিকার মাধ্যমে লাই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক লেখা প্রকাশ করেছিলেন, যা ঔপনিবেশিক আমলের একটি আইনের লঙ্ঘন।
বেইজিং শাসিত হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন—লাইয়ের কর্মকাণ্ড দেশ ও হংকংবাসীর স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই রায়কে ‘নিষ্ঠুর বিচারিক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে বলছে, বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনটি কার্যত ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর বেইজিং কোনো আইনসভা পরামর্শ ছাড়াই এই আইন প্রণয়ন করেছিল, যা কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা দিয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রায়ের সময় জিমি লাই শান্ত ছিলেন এবং আদালত ছাড়ার সময় পরিবারকে বিদায় জানান। তাঁর স্ত্রী টেরেসা, এক ছেলে ও ক্যাথলিক কার্ডিনাল জোসেফ জেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। লাইয়ের আইনজীবী জানান, দীর্ঘ রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপিল করা হবে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
এদিকে লাইয়ের ছেলে সেবাস্তিয়ান লাই যুক্তরাজ্য সরকারকে তাঁর বাবার মুক্তির জন্য আরও সক্রিয় হতে আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্য এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিপীড়ন’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে লাইয়ের মুক্তি দাবি করে এলেও চীন ও হংকং সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এক সময়ের সফল ব্যবসায়ী জিমি লাই ১৯৮৯ সালের চীনের তিয়েনআনমেন গণহত্যার পর গণতন্ত্র আন্দোলনে সক্রিয় হন। অনেক হংকংবাসীর চোখে তিনি এখনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের প্রতীক। তবে এই রায় হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক প্রোক্রেমলিন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়াকে বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার, তবে এই পাল্লার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
২৮ নভেম্বর ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক।
এনআইএর ১ হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং মামলার পক্ষে থাকা প্রমাণের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এলইটি-টিআরএফ সরাসরি জড়িত ছিল। হামলার মূল হ্যান্ডলার হিসেবে এলইটির শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান ও হামজা আফগানির। চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীনগরের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।
এলইটি ও টিআরএফের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর (বিএনএস) অস্ত্র আইন (১৯৫৯) ও বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (১৯৬৭) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার’ ধারাও যুক্ত করেছে।
এ ছাড়া আরও দুজন এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত হয়েছেন। পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদকে গত ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জিজ্ঞাসাবাদে পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কে এই সাজিদ জাট
সাজিদ জাট একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত। তাঁর পরিচিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, ল্যাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব ও শানি। ২০২২ সালের অক্টোবরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় তাঁকে ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট (Individual Terrorist) বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও একা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। তাঁরা লোন উলফ নামেও পরিচিত। কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় সহজে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ধারণা, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি শুধু টিআরএফের অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী নিয়োগ, অর্থায়ন ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সাজিদ জাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা (যেখানে তিনি ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাস হামলা।
এ ছাড়া হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের লজিস্টিক ও অপারেশনাল সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সবচেয়ে ভয়ংকর মুখ হলেন এই সাজিদ জাট।

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগাম হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাঁদের বেশির ভাগ ছিলেন পর্যটক।
এনআইএর ১ হাজার ৫৯৭ পৃষ্ঠার চার্জশিটে হামলার পেছনে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র, অভিযুক্তদের ভূমিকা এবং মামলার পক্ষে থাকা প্রমাণের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পেহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এলইটি-টিআরএফ সরাসরি জড়িত ছিল। হামলার মূল হ্যান্ডলার হিসেবে এলইটির শীর্ষ কমান্ডার সাজিদ জাটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
চার্জশিটে তিনজনের নাম রয়েছে, যাঁদের পাকিস্তানের সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান ও হামজা আফগানির। চলতি বছরের জুলাইয়ে শ্রীনগরের কাছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাঁরা নিহত হন।
এলইটি ও টিআরএফের পাশাপাশি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর (বিএনএস) অস্ত্র আইন (১৯৫৯) ও বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (১৯৬৭) বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এনআইএ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার’ ধারাও যুক্ত করেছে।
এ ছাড়া আরও দুজন এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত হয়েছেন। পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদকে গত ২২ জুন এনআইএ গ্রেপ্তার করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা তিন সন্ত্রাসীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন।
পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জিজ্ঞাসাবাদে পেহেলগাম হামলায় জড়িত তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে, তাঁরা পাকিস্তানের নাগরিক এবং লস্কর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কে এই সাজিদ জাট
সাজিদ জাট একাধিক ছদ্মনামে পরিচিত। তাঁর পরিচিত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে সাইফুল্লাহ, নুমি, নুমান, ল্যাংড়া, আলি সাজিদ, উসমান হাবিব ও শানি। ২০২২ সালের অক্টোবরে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) আওতায় তাঁকে ‘ব্যক্তিগত সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিভিজুয়াল টেররিস্ট (Individual Terrorist) বলতে এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়, যিনি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থেকেও একা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেন। তাঁরা লোন উলফ নামেও পরিচিত। কোনো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না থাকায় সহজে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না।
ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর ধারণা, সাজিদ জাট পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে অবস্থিত লস্করের সদর দপ্তর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি শুধু টিআরএফের অপারেশনাল প্রধানই নয়, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী নিয়োগ, অর্থায়ন ও অনুপ্রবেশের দায়িত্বেও রয়েছেন।
সাজিদ জাটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৩ সালের ধাংরি গণহত্যা (যেখানে তিনি ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী), ২০২৪ সালের মে মাসে পুঞ্চে বিমানবাহিনীর কনভয়ে হামলা এবং ২০২৪ সালের জুনে রিয়াসি বাস হামলা।
এ ছাড়া হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের লজিস্টিক ও অপারেশনাল সহায়তা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর মতে, কাশ্মীরে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সবচেয়ে ভয়ংকর মুখ হলেন এই সাজিদ জাট।

রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক প্রোক্রেমলিন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়াকে বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার, তবে এই পাল্লার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
২৮ নভেম্বর ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে
১০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের নন্দা দেবী পর্বতের কাছে হারিয়ে যাওয়া ওই পারমাণবিক শক্তিচালিত যন্ত্রটি গঙ্গা নদীর জন্য নানান ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৫ সালে, চীনের সদ্য গড়ে ওঠা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) যৌথভাবে এক গোপন অভিযানে নামে। লক্ষ্য ছিল—ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর চূড়ায় একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত নজরদারিযন্ত্র বসানো।
ওই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (আরটিজি)। এটি কয়েক কেজি প্লুটোনিয়াম দিয়ে চালিত হতো। এর মাধ্যমে স্থাপিত সেন্সরগুলো দিয়ে সীমান্তের ওপারে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে অভিযানে অংশ নেওয়া দল যন্ত্রটি পাহাড়ে রেখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের মৌসুমে ফিরে গেলে দেখা যায়—আরটিজি ও এর প্লুটোনিয়াম-কোর আর সেখানে নেই। ধারণা করা হয়, তুষারধসের কারণে সেটি ভেসে গেছে অথবা গভীর হিমবাহের নিচে চাপা পড়েছে।
আরটিজি কী
আরটিজি বা রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র, যা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওই পদার্থ ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার সময় তাপ তৈরি হয় আর সেই তাপ বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনো চলমান যন্ত্রাংশ থাকে না। তাই আরটিজি দীর্ঘদিন কাজ করতে পারে। সাধারণত মহাকাশ অভিযান বা এমন দুর্গম এলাকায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
আরটিজি কোনো পারমাণবিক বোমা নয় এবং এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। তবে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
হারানো যন্ত্রটি এখন কোথায়
পরবর্তী কয়েক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ওই যন্ত্রের সন্ধানে অভিযান চালালেও সফল হয়নি। দুই দেশের কেউই নিশ্চিত করে বলেনি, যন্ত্রটির পরিণতি কী হয়েছে।
কিছু কর্মকর্তা ও লেখকের মতে, ভারতীয় কোনো দল নীরবে যন্ত্রটি উদ্ধার করে থাকতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, এটি এখনো নন্দা দেবী এলাকার অস্থির বরফ ও পাথরের স্তরের নিচে আটকে আছে।
১৯৭৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের এক জরিপে স্থানীয় নদীগুলোতে কোনো প্লুটোনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জরিপটি যন্ত্রটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করতে পারেনি। ফলে বিষয়টি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গঙ্গায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঝুঁকি
নন্দা দেবীর হিমবাহ থেকে উৎপন্ন রিষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদী মিলিত হয়ে অলকানন্দায় প্রবাহিত হয়। পরে অলকানন্দা ও ভাগীরথী একত্রে গঙ্গা নদীর জন্ম দেয়। এই নদীই নিচের দিকে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটরটি অক্ষত অবস্থায় বরফের গভীরে চাপা পড়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গলে বরফের পানির সঙ্গে মিশে নদীতে প্রবেশ করতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সম্ভাবনা কম, কিন্তু প্রভাব ভয়াবহ। উত্তরাখন্ডে প্রতিবছর বন্যা, তুষারধসের ঘটনা ঘটলে এই আশঙ্কা নতুন করে সামনে আসে।
নতুন করে উদ্বেগ কেন
হিমালয়ে হিমবাহ গলার গতি বেড়ে যাওয়া, ২০২১ সালের চামোলি বন্যার মতো দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এবং পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় পুরোনো সামরিক ও পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাড়তি নজরদারির প্রেক্ষাপটে নন্দা দেবীর এই হারানো যন্ত্রটি আবার আলোচনায় এসেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা—তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ সরে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে আরটিজির অবশিষ্টাংশ উন্মুক্ত বা নড়াচড়া করতে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও নিউইয়র্ক টাইমস

প্রায় ৬০ বছর আগের ঘটনা, তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। চীনকে টেক্কা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা মিলে নামে এক গোপন অভিযানে। কিন্তু অভিযানে নেমে বৈরী আবহাওয়ার কারণে হারিয়ে যায় নজরদারির কাজে ব্যবহৃত পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি যন্ত্র, যেটি আজও হিমালয় পর্বতের বরফের নিচে চাপা পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারতের নন্দা দেবী পর্বতের কাছে হারিয়ে যাওয়া ওই পারমাণবিক শক্তিচালিত যন্ত্রটি গঙ্গা নদীর জন্য নানান ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৬৫ সালে, চীনের সদ্য গড়ে ওঠা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ও ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) যৌথভাবে এক গোপন অভিযানে নামে। লক্ষ্য ছিল—ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বত নন্দা দেবীর চূড়ায় একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত নজরদারিযন্ত্র বসানো।
ওই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছিল একটি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর (আরটিজি)। এটি কয়েক কেজি প্লুটোনিয়াম দিয়ে চালিত হতো। এর মাধ্যমে স্থাপিত সেন্সরগুলো দিয়ে সীমান্তের ওপারে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক পরীক্ষার তথ্য সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াবহ তুষারঝড়ের কবলে পড়ে অভিযানে অংশ নেওয়া দল যন্ত্রটি পাহাড়ে রেখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরের মৌসুমে ফিরে গেলে দেখা যায়—আরটিজি ও এর প্লুটোনিয়াম-কোর আর সেখানে নেই। ধারণা করা হয়, তুষারধসের কারণে সেটি ভেসে গেছে অথবা গভীর হিমবাহের নিচে চাপা পড়েছে।
আরটিজি কী
আরটিজি বা রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র, যা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপ ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। ওই পদার্থ ধীরে ধীরে ক্ষয় হওয়ার সময় তাপ তৈরি হয় আর সেই তাপ বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।
এই প্রক্রিয়ায় কোনো চলমান যন্ত্রাংশ থাকে না। তাই আরটিজি দীর্ঘদিন কাজ করতে পারে। সাধারণত মহাকাশ অভিযান বা এমন দুর্গম এলাকায় এগুলো ব্যবহার করা হয়।
আরটিজি কোনো পারমাণবিক বোমা নয় এবং এটি বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না। তবে যন্ত্রটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা তেজস্ক্রিয় পদার্থের বিকিরণজনিত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
হারানো যন্ত্রটি এখন কোথায়
পরবর্তী কয়েক দশকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ওই যন্ত্রের সন্ধানে অভিযান চালালেও সফল হয়নি। দুই দেশের কেউই নিশ্চিত করে বলেনি, যন্ত্রটির পরিণতি কী হয়েছে।
কিছু কর্মকর্তা ও লেখকের মতে, ভারতীয় কোনো দল নীরবে যন্ত্রটি উদ্ধার করে থাকতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, এটি এখনো নন্দা দেবী এলাকার অস্থির বরফ ও পাথরের স্তরের নিচে আটকে আছে।
১৯৭৮ সালে ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের এক জরিপে স্থানীয় নদীগুলোতে কোনো প্লুটোনিয়াম দূষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে জরিপটি যন্ত্রটির অবস্থানও নির্দিষ্ট করতে পারেনি। ফলে বিষয়টি আজও অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
গঙ্গায় তেজস্ক্রিয় বিকিরণের ঝুঁকি
নন্দা দেবীর হিমবাহ থেকে উৎপন্ন রিষিগঙ্গা ও ধৌলিগঙ্গা নদী মিলিত হয়ে অলকানন্দায় প্রবাহিত হয়। পরে অলকানন্দা ও ভাগীরথী একত্রে গঙ্গা নদীর জন্ম দেয়। এই নদীই নিচের দিকে কয়েক শ কোটি মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটরটি অক্ষত অবস্থায় বরফের গভীরে চাপা পড়ে থাকে, তাহলে তাৎক্ষণিক ঝুঁকি তুলনামূলক কম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এর আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ গলে বরফের পানির সঙ্গে মিশে নদীতে প্রবেশ করতে পারে।
এই সম্ভাবনাকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন—সম্ভাবনা কম, কিন্তু প্রভাব ভয়াবহ। উত্তরাখন্ডে প্রতিবছর বন্যা, তুষারধসের ঘটনা ঘটলে এই আশঙ্কা নতুন করে সামনে আসে।
নতুন করে উদ্বেগ কেন
হিমালয়ে হিমবাহ গলার গতি বেড়ে যাওয়া, ২০২১ সালের চামোলি বন্যার মতো দুর্যোগের পুনরাবৃত্তি এবং পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল এলাকায় পুরোনো সামরিক ও পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে বাড়তি নজরদারির প্রেক্ষাপটে নন্দা দেবীর এই হারানো যন্ত্রটি আবার আলোচনায় এসেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা—তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও হিমবাহ সরে যাওয়ার ফলে ভবিষ্যতে আরটিজির অবশিষ্টাংশ উন্মুক্ত বা নড়াচড়া করতে পারে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে ও নিউইয়র্ক টাইমস

রুশ সামরিক বিশেষজ্ঞ ইলিয়া ক্রামনিক প্রোক্রেমলিন দেশটির সংবাদমাধ্যম ইজভেস্তিয়াকে বলেছেন, নতুন ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার, তবে এই পাল্লার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
২৮ নভেম্বর ২০২৪
দেশের সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলার একদিন পর সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কড়া বন্দুক আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শনিবার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি হানুক্কাহ অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন।
৭ ঘণ্টা আগে
হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের শীর্ষ মুখ ও প্রভাবশালী মিডিয়া উদ্যোক্তা জিমি লাইকে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (এনএসএল) আওতায় বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির আদালত। ৭৮ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নাগরিক ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
৮ ঘণ্টা আগে
জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রায় আট মাস পর চার্জশিট দিয়েছে ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। চার্জশিটে পাঁচ সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবাসহ (এলইটি) দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামের দুই সশস্ত্র সংগঠনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে
৯ ঘণ্টা আগে