ইমরান খান

২০ বছর পর আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরেছে তালেবান। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশের শাসনভার ছিল তাদের হাতে। তখন ইসলামি আইনের নামে পশতুন গোষ্ঠীর কিছু নিয়ম সংযুক্ত করে নারীদের জীবন পুরোপুরি ঘরবন্দী করে ফেলে তারা। নারীদের শিক্ষা, রাজনীতি, চাকরি, খেলাধুলা, পর্দা ও পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। তবে এবার ক্ষমতায় ফেরার আগে-পরে তালেবানের দেওয়া কিছু আশ্বাস নাগরিকদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছিল। মনে হচ্ছিল, হয়তো নতুন এক তালেবান দেখবে বিশ্ব। যে তালেবান হবে আগের চেয়ে পরিণত ও বিবেচনাসম্পন্ন। তবে ১৫ আগস্ট ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো এই প্রশ্ন তুলতেই পারে—নতুন আশ্বাসের মোড়কে কি পুরোনো তালেবানই ফিরে এল?
পুরোনো অভিজ্ঞতা নেতিবাচক হওয়ায় তালেবান শাসনে এবার নারীর অধিকার কেমন হবে, তা নিয়ে শুরু থেকেই বিশ্বব্যাপী শঙ্কা ছিল। ১৪ জুলাই জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেন, ‘মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কারণে আফগান নারীদের অবর্ণনীয় ক্ষতি হবে।’ নিউইয়র্ক টাইমসে ১৯ আগস্ট প্রকাশিত এক নিবন্ধে নোবেলজয়ী নারী আন্দোলনকর্মী মালালা ইউসুফজাই বলেন, ‘তারা নারীদের বিশেষ মর্যাদা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু এগুলো সব মিথ্যা এবং ভাঁওতাবাজি।’
এরই মাঝে তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন গণমাধ্যমকে বললেন, ‘অবশ্যই আমরা নারীদের শিক্ষা, কাজ এবং বাক্স্বাধীনতার অধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
একপক্ষের শঙ্কা, আর অন্য পক্ষের আশ্বাসের দোলাচলে আফগান নারীরা আসলে কী পাচ্ছেন, কেমন আছেন, তা বুঝতে আমরা বরং তালেবান সরকারের নেওয়া কিছু পদক্ষেপের দিকে নজর দিই।
শিক্ষা
১৯৯৬ থেকে ২০০১ শাসনামলে ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের পড়াশোনার অনুমতি ছিল না। এবার তালেবানের পক্ষ থেকে আফগান নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। তবে ক্ষমতায় এসে নারী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাইনবোর্ড বদলে লাগানো হয় ‘প্রার্থনা, নির্দেশনা, ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ’ শীর্ষক সাইনবোর্ড।
শুরুতে শুধু ছাত্র ও পুরুষ শিক্ষকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নারী শিক্ষক ও ছাত্রীদের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান সরকারের এই ঘোষণার পর আফগানিস্তান হলো পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যার মোট জনসংখ্যার অর্ধেক মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের এমন অবস্থানেও তাদের ভাবনায় কোনো বদল আসেনি। ২৭ সেপ্টেম্বর এক টুইট বার্তায় কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য মোহাম্মদ আশরাফ ঘাইরাত ঘোষণা দেন, ‘যত দিন প্রকৃত ইসলামি পরিবেশ সবার জন্য তৈরি করা সম্ভব না হয়, তত দিন মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বা কাজ করতে দেওয়া হবে না।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে আফগানিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল্লাহ মুনির বলেন, ‘আজ কোনো পিএইচডি, মাস্টার্স ডিগ্রির মূল্য নেই। আপনারা দেখুন যে মোল্লা ও তালেবান যারা এখন ক্ষমতায় আছে, তাঁদের কারোরই কোনো পিএইচডি, মাস্টার্স অথবা উচ্চবিদ্যালয়ের ডিগ্রি পর্যন্ত নেই। কিন্তু তবু তাঁরা সবার চেয়ে বড় পদে রয়েছেন।’
এতে গত দুই দশকে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় আসা দেশটির হাজার হাজার নারী বিপদে পড়ে যায়। অবশেষে ২৯ আগস্ট তালেবানের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী আব্দুল বাকি হাক্কানি বলেন, আফগানিস্তানের জনগণ ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারবে। তবে ছেলেমেয়ে একসঙ্গে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতেও ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে পড়তে পারবে না বলে জানায় তালেবান। এর পর থেকে আলাদা আলাদা শ্রেণিকক্ষে ছেলেমেয়েদের ক্লাস শুরু হয়।
এরপরও যে শঙ্কা কাটেনি, তার প্রমাণ বিবিসি ঘোষিত বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকা। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রকাশিত বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন আফগানিস্তানের ৪৬ জন নারী। নতুন আবিষ্কার এবং বিশ্বকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় তাঁদের নাম এসেছে। তবে তালেবানশাসিত আফগানিস্তানে ওই নারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তালিকায় বেশ কয়েকজনের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে; দেওয়া হয়নি তাঁদের ছবিও।
রাজনীতি
তালেবানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নারী অধিকারের বিষয়টি একদম তোয়াক্কা না করার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে আফগান সরকার কাঠামো নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তর থেকে আসা প্রথম ঘোষণায় ১৭ আগস্ট তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য এনামুল্লাহ সামানগনি বলেন, ‘নারীরা পিছিয়ে থাকুক—এটি ইসলামিক আমিরাতের চাওয়া নয়। শরিয়া আইন মেনেই নারীদের আফগান সরকারের অংশ করা হবে।’
এই বক্তব্যে নারীরা কিছুটা আশা পেলেও ৭ সেপ্টেম্বর তালেবান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করে, তাতে কোনো নারীকে রাখা হয়নি। এ প্রসঙ্গে আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টিওএলওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালেবানের মুখপাত্র সৈয়দ জেকরুল্লাহ হাশিমি বলেন, ‘নারীরা মন্ত্রী হতে পারে না। এটি এমন বিষয়, যেটি আপনি তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন, কিন্তু তারা সেটি নিতে পারবে না। তাদের কাজ হলো জন্ম দেওয়া।’ নারীদের সমাজের অর্ধাংশ ভাবতেও নারাজ তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘গত ২০ বছরে নারীদের নিয়ে আফগানিস্তানে যা হয়েছে, তা কি পতিতাবৃত্তি ছাড়া কিছু?’
সরকার গঠন ও জেকরুল্লাহ হাশিমির এই বক্তব্য তালেবান শাসনামলে নারীদের রাজনীতির ভবিষ্যৎ খুব সহজেই অনুমেয়।
কর্মসংস্থান
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু নারীর কর্মসংস্থান হয়েছিল। তাঁদের আপাতত কর্মস্থলে যেতে নিষেধ করেছেন উপাচার্য।
আগের মেয়াদে আফগানিস্তানের সব বিউটি পার্লার বন্ধ করে দিয়েছিল তালেবান। ২০০১ সালের পর তালেবান সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে জাতিসংঘের একটি সংস্থা ও আফগান সরকারের অর্থায়নে ছয় মাসের একটি বিউটি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক নারী উপার্জনের উৎস হিসেবে বেছে নেন বিউটি স্যালন পেশাকে, যা পরে অনেক লাভজনক একটি পেশায় পরিণত হয়। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলের পরও তালেবান নেতারা বিউটি পার্লার বন্ধ করে দিয়েছে। সকল দেয়াল থেকে নারীদের ছবি মুছে দিয়েছে তালেবান, যা নারীদের বিজ্ঞাপন করার পথও বন্ধ করে দেয়। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েন অনেক নারী।
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সময় রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরে প্রায় ৮০ নারী কর্মী নিয়োজিত ছিলেন। এদের মধ্য থেকে ১২ সেপ্টেম্বর কর্মস্থলে ফিরেছেন মাত্র ১২ আফগান নারী। এর কারণ নারী প্রশ্নে তালেবান দৃষ্টিভঙ্গি, যা গোষ্ঠীটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমির কথায় স্পষ্ট—‘আফগান নারীদের পুরুষের সঙ্গে কাজ করা উচিত নয়।’
খেলাধুলা
নব্বইয়ের দশকে তালেবানের শাসনামলে আফগানিস্তানে নারীদের সব ধরনের খেলাধুলা বন্ধ ছিল। ফের দেশটির দখল নিয়ে নারীদের খেলাধুলার ব্যাপারে একই মনোভাব প্রকাশ করেছে তালেবান। ফলে নারী ফুটবলারেরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ১৪ সেপ্টেম্বর ৮১ জন নারী ফুটবলার তোরখাম সীমান্তের উত্তর-পশ্চিমাংশ দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছেন। এদের মধ্যে অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৮ দলের খেলোয়াড়েরা ছিলেন।
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও সব স্বীকৃত দেশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) নতুন চেয়ারম্যান মিরওয়াইস আশরাফ ক্রিকেট বোর্ডের স্টাফদের সঙ্গে পরিচিতিমূলক এক সভায় ঘোষণা দেন, ‘নারী ক্রিকেট আইসিসির প্রধান আবশ্যিকতাগুলোর একটি। এটি নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের মেয়েরা স্বাভাবিক নিয়মেই ক্রিকেট খেলবে। আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা ও তাদের প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা দিতে চাই।’
এই খেলা এখনো শুরুর আলো দেখতে পারেনি। অন্যান্য খেলার চিত্র কী হবে, তা এখনই বলা যাবে না।
চলাফেরা
আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে তালেবান শাসনামলে আফগান নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক ছিল। তবে এবার তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন আফগানিস্তানে নারীদের বোরকা প্রসঙ্গে বলেন, ‘নারীরা মাথায় হিজাব পরেছেন কি-না সেটা পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে পুরো শরীর ঢাকা বোরকা পরতেই হবে, এমন নয়।’
এর মধ্যে ২৬ ডিসেম্বর দেশটির পুণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, আফগান নারীরা পুরুষ আত্মীয় ছাড়া ৭২ কিলোমিটারের বেশি দূরে ভ্রমণ করতে পারবেন না। যানবাহনে চলাচল করতেও ইসলামিক হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যানবাহন মালিকদেরও শুধু হিজাব পরা নারীদের পরিবহনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
নাটক-সিনেমায় নারীদের অভিনয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। টেলিভিশন সাংবাদিকদের খবর উপস্থাপনার সময় হিজাব পরতে বলা হয়েছে। নারীদের জন্য টিভি চ্যানেল চালু করা নারী সাংবাদিক জেহরা নবীর টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ‘কর্মীদের নিয়ে কাজ করার নিরাপদ জায়গা পাচ্ছি না।’ আগস্টে চাকরি হারানো সাংবাদিক সোনিয়া আহমাদিয়ার বলেন, ‘গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করা হচ্ছে।’
২৪ আগস্ট তালেবানের মুখপাত্র যাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, নারীদের আপাতত ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। নারীদের কর্মস্থলে যোগদানে স্থায়ীভাবে বাধা দেওয়া হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁরা যাতে কাজে ফিরতে পারেন, কর্তৃপক্ষ সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
নারীদের কোন চোখে দেখে তালেবান
১৫ আগস্ট ভারতের নিউজ এইটটিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আফগান নারী খাতিরা বলেন, ‘তালেবানের চোখে নারীরা মানুষ নয়। তাদের কাছে নারী মানেই এক টুকরো মাংস।’ তারা নারী শরীরকে কুকুরের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর এ বক্তব্য নিয়ে অবশ্য বিতর্কও কম হয়নি। এর মধ্যেই বিবিসির সাংবাদিক জিয়া শাহরিয়ারের টুইটারে শেয়ার করা এক ভিডিওতে একজন তালেবান কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা কি কেউ কাটা তরমুজ কেনেন? নাকি পুরো তরমুজ কেনেন? অবশ্যই পুরোটা কেনেন। হিজাব না পরা মেয়েরা হলো কাটা তরমুজ।’
এসব বক্তব্যের মধ্যেই নারী অধিকারের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের চাপের মুখে পড়ে তালেবান। চাপে রাখার কৌশল হিসেবে বিশ্বের শক্তিশালী বেশ কয়েকটি দেশ আফগানিস্তানের বেশ কিছু তহবিল স্থগিত করে।
এর মাঝেই তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ ডিক্রি প্রকাশের সময় বলেন, ‘নারী কোনো সম্পত্তি নয়; বরং মুক্ত ও অভিজাত মানুষ। শান্তি বা অন্য কোনো কিছুর জন্য তাকে কেউ কারও কাছে হস্তান্তর করতে পারে না।’ ডিক্রিতে বিয়ে ও সম্পত্তিতে নারীর অধিকার নিয়ে সুস্পষ্টভাবে বক্তব্য দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, জোরপূর্বক কোনো নারীর বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। আর প্রয়াত স্বামীর সম্পত্তিতে নারীর অধিকার রয়েছে। এই ভাষ্য প্রচারের জন্য তথ্য ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতকে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এই ডিক্রি বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে।
নারীর বাক স্বাধীনতা
নারী অধিকারের নানা প্রসঙ্গে আফগানিস্তানের হেরাতে কিছুসংখ্যক নারী নিজেদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। তালেবান নেতৃত্বের কাছে তাঁরা দাবি করেন—শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং কাজের অধিকার যেন খর্ব না হয়। এগুলো যেকোনো মানুষের মৌলিক অধিকার। বিক্ষোভকারীরা আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাইরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। তাঁরা তালেবানের সঙ্গে লড়াই করে নিহত আফগান সৈন্যদের সম্মান জানায়। কেউ কেউ মাইক্রোফোন নিয়ে জড়ো হয় এবং কাজ চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানায়।
এ মিছিল পণ্ড করতে ফাঁকা গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে তালেবান। তালেবানরা নারীদের অধিকারে ‘কোনো সমস্যা করবে না’ ঘোষণার একদিন পর এ ঘটনা ঘটল।
শুধু আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করে ক্ষান্ত হয়নি তালেবান। ৮ সেপ্টেম্বর কাবুলের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত কারত-এ-চর এলাকায় নারীদের তালেবানবিরোধী আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া আফগান সংবাদমাধ্যম তাকির দুই সাংবাদিক দারায়াবি ও নাকদিকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে তালেবান সদস্যরা। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিবেদক মার্কাস ইয়াম ও আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম ইটিলাট্রোজের প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যায় অন্তর্বাস পরা দুই সাংবাদিকের গায়ে আঘাতের চিহ্ন। ইটিলাট্রোজের প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যম ইউরো নিউজের স্থানীয় প্রধান, টিওএলও নিউজের ক্যামেরা পারসন ওয়াহিদ আহমাদি এবং আরিয়ানা নিউজের ক্যামেরাপারসন সামিমকেও গ্রেপ্তার করে তালেবান।
অর্থনৈতিক সংকট ও আইএসের হামলার পাশাপাশি তালেবানের সামনে বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিল নারী ইস্যু। এ ক্ষেত্রে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই নানা সুমধুর বাণী শোনাতে থাকে। সরকারেও নারীর অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেয় গোষ্ঠীটি। তবে তালেবান সরকার গঠনের পর একের পর এক বিধিনিষেধ জারি করা হয় নারীদের ওপর। তবে ২০ বছর আগের তালেবানের চেয়ে এখনকার তালেবান নারী অধিকারের বিষয়টি কিছুটা হলেও নমনীয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকেরা। মেয়েদের শিক্ষা, খেলাধুলা নিষিদ্ধসহ বোরকা পরার বাধ্যবাধকতা ছিল। এবার সেসব দিক থেকে তালেবান খানিকটা সরে এসেছে বলাই যায়।

২০ বছর পর আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ফিরেছে তালেবান। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশের শাসনভার ছিল তাদের হাতে। তখন ইসলামি আইনের নামে পশতুন গোষ্ঠীর কিছু নিয়ম সংযুক্ত করে নারীদের জীবন পুরোপুরি ঘরবন্দী করে ফেলে তারা। নারীদের শিক্ষা, রাজনীতি, চাকরি, খেলাধুলা, পর্দা ও পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। তবে এবার ক্ষমতায় ফেরার আগে-পরে তালেবানের দেওয়া কিছু আশ্বাস নাগরিকদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছিল। মনে হচ্ছিল, হয়তো নতুন এক তালেবান দেখবে বিশ্ব। যে তালেবান হবে আগের চেয়ে পরিণত ও বিবেচনাসম্পন্ন। তবে ১৫ আগস্ট ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো এই প্রশ্ন তুলতেই পারে—নতুন আশ্বাসের মোড়কে কি পুরোনো তালেবানই ফিরে এল?
পুরোনো অভিজ্ঞতা নেতিবাচক হওয়ায় তালেবান শাসনে এবার নারীর অধিকার কেমন হবে, তা নিয়ে শুরু থেকেই বিশ্বব্যাপী শঙ্কা ছিল। ১৪ জুলাই জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বলেন, ‘মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কারণে আফগান নারীদের অবর্ণনীয় ক্ষতি হবে।’ নিউইয়র্ক টাইমসে ১৯ আগস্ট প্রকাশিত এক নিবন্ধে নোবেলজয়ী নারী আন্দোলনকর্মী মালালা ইউসুফজাই বলেন, ‘তারা নারীদের বিশেষ মর্যাদা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু এগুলো সব মিথ্যা এবং ভাঁওতাবাজি।’
এরই মাঝে তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন গণমাধ্যমকে বললেন, ‘অবশ্যই আমরা নারীদের শিক্ষা, কাজ এবং বাক্স্বাধীনতার অধিকার ফিরিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
একপক্ষের শঙ্কা, আর অন্য পক্ষের আশ্বাসের দোলাচলে আফগান নারীরা আসলে কী পাচ্ছেন, কেমন আছেন, তা বুঝতে আমরা বরং তালেবান সরকারের নেওয়া কিছু পদক্ষেপের দিকে নজর দিই।
শিক্ষা
১৯৯৬ থেকে ২০০১ শাসনামলে ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের পড়াশোনার অনুমতি ছিল না। এবার তালেবানের পক্ষ থেকে আফগান নারীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। তবে ক্ষমতায় এসে নারী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাইনবোর্ড বদলে লাগানো হয় ‘প্রার্থনা, নির্দেশনা, ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ’ শীর্ষক সাইনবোর্ড।
শুরুতে শুধু ছাত্র ও পুরুষ শিক্ষকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নারী শিক্ষক ও ছাত্রীদের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান সরকারের এই ঘোষণার পর আফগানিস্তান হলো পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যার মোট জনসংখ্যার অর্ধেক মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
কিন্তু পশ্চিমা বিশ্বের এমন অবস্থানেও তাদের ভাবনায় কোনো বদল আসেনি। ২৭ সেপ্টেম্বর এক টুইট বার্তায় কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য মোহাম্মদ আশরাফ ঘাইরাত ঘোষণা দেন, ‘যত দিন প্রকৃত ইসলামি পরিবেশ সবার জন্য তৈরি করা সম্ভব না হয়, তত দিন মেয়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বা কাজ করতে দেওয়া হবে না।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে আফগানিস্তানের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল্লাহ মুনির বলেন, ‘আজ কোনো পিএইচডি, মাস্টার্স ডিগ্রির মূল্য নেই। আপনারা দেখুন যে মোল্লা ও তালেবান যারা এখন ক্ষমতায় আছে, তাঁদের কারোরই কোনো পিএইচডি, মাস্টার্স অথবা উচ্চবিদ্যালয়ের ডিগ্রি পর্যন্ত নেই। কিন্তু তবু তাঁরা সবার চেয়ে বড় পদে রয়েছেন।’
এতে গত দুই দশকে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় আসা দেশটির হাজার হাজার নারী বিপদে পড়ে যায়। অবশেষে ২৯ আগস্ট তালেবানের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী আব্দুল বাকি হাক্কানি বলেন, আফগানিস্তানের জনগণ ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারবে। তবে ছেলেমেয়ে একসঙ্গে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে না। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতেও ছেলেমেয়েরা একসঙ্গে পড়তে পারবে না বলে জানায় তালেবান। এর পর থেকে আলাদা আলাদা শ্রেণিকক্ষে ছেলেমেয়েদের ক্লাস শুরু হয়।
এরপরও যে শঙ্কা কাটেনি, তার প্রমাণ বিবিসি ঘোষিত বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকা। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রকাশিত বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন আফগানিস্তানের ৪৬ জন নারী। নতুন আবিষ্কার এবং বিশ্বকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় তাঁদের নাম এসেছে। তবে তালেবানশাসিত আফগানিস্তানে ওই নারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তালিকায় বেশ কয়েকজনের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে; দেওয়া হয়নি তাঁদের ছবিও।
রাজনীতি
তালেবানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নারী অধিকারের বিষয়টি একদম তোয়াক্কা না করার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে আফগান সরকার কাঠামো নিয়ে কেন্দ্রীয় স্তর থেকে আসা প্রথম ঘোষণায় ১৭ আগস্ট তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য এনামুল্লাহ সামানগনি বলেন, ‘নারীরা পিছিয়ে থাকুক—এটি ইসলামিক আমিরাতের চাওয়া নয়। শরিয়া আইন মেনেই নারীদের আফগান সরকারের অংশ করা হবে।’
এই বক্তব্যে নারীরা কিছুটা আশা পেলেও ৭ সেপ্টেম্বর তালেবান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করে, তাতে কোনো নারীকে রাখা হয়নি। এ প্রসঙ্গে আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টিওএলওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালেবানের মুখপাত্র সৈয়দ জেকরুল্লাহ হাশিমি বলেন, ‘নারীরা মন্ত্রী হতে পারে না। এটি এমন বিষয়, যেটি আপনি তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন, কিন্তু তারা সেটি নিতে পারবে না। তাদের কাজ হলো জন্ম দেওয়া।’ নারীদের সমাজের অর্ধাংশ ভাবতেও নারাজ তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘গত ২০ বছরে নারীদের নিয়ে আফগানিস্তানে যা হয়েছে, তা কি পতিতাবৃত্তি ছাড়া কিছু?’
সরকার গঠন ও জেকরুল্লাহ হাশিমির এই বক্তব্য তালেবান শাসনামলে নারীদের রাজনীতির ভবিষ্যৎ খুব সহজেই অনুমেয়।
কর্মসংস্থান
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু নারীর কর্মসংস্থান হয়েছিল। তাঁদের আপাতত কর্মস্থলে যেতে নিষেধ করেছেন উপাচার্য।
আগের মেয়াদে আফগানিস্তানের সব বিউটি পার্লার বন্ধ করে দিয়েছিল তালেবান। ২০০১ সালের পর তালেবান সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে জাতিসংঘের একটি সংস্থা ও আফগান সরকারের অর্থায়নে ছয় মাসের একটি বিউটি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক নারী উপার্জনের উৎস হিসেবে বেছে নেন বিউটি স্যালন পেশাকে, যা পরে অনেক লাভজনক একটি পেশায় পরিণত হয়। ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট ক্ষমতা দখলের পরও তালেবান নেতারা বিউটি পার্লার বন্ধ করে দিয়েছে। সকল দেয়াল থেকে নারীদের ছবি মুছে দিয়েছে তালেবান, যা নারীদের বিজ্ঞাপন করার পথও বন্ধ করে দেয়। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েন অনেক নারী।
তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সময় রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরে প্রায় ৮০ নারী কর্মী নিয়োজিত ছিলেন। এদের মধ্য থেকে ১২ সেপ্টেম্বর কর্মস্থলে ফিরেছেন মাত্র ১২ আফগান নারী। এর কারণ নারী প্রশ্নে তালেবান দৃষ্টিভঙ্গি, যা গোষ্ঠীটির জ্যেষ্ঠ সদস্য ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমির কথায় স্পষ্ট—‘আফগান নারীদের পুরুষের সঙ্গে কাজ করা উচিত নয়।’
খেলাধুলা
নব্বইয়ের দশকে তালেবানের শাসনামলে আফগানিস্তানে নারীদের সব ধরনের খেলাধুলা বন্ধ ছিল। ফের দেশটির দখল নিয়ে নারীদের খেলাধুলার ব্যাপারে একই মনোভাব প্রকাশ করেছে তালেবান। ফলে নারী ফুটবলারেরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ১৪ সেপ্টেম্বর ৮১ জন নারী ফুটবলার তোরখাম সীমান্তের উত্তর-পশ্চিমাংশ দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছেন। এদের মধ্যে অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৮ দলের খেলোয়াড়েরা ছিলেন।
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসিও সব স্বীকৃত দেশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বলেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (এসিবি) নতুন চেয়ারম্যান মিরওয়াইস আশরাফ ক্রিকেট বোর্ডের স্টাফদের সঙ্গে পরিচিতিমূলক এক সভায় ঘোষণা দেন, ‘নারী ক্রিকেট আইসিসির প্রধান আবশ্যিকতাগুলোর একটি। এটি নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমাদের মেয়েরা স্বাভাবিক নিয়মেই ক্রিকেট খেলবে। আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা ও তাদের প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা দিতে চাই।’
এই খেলা এখনো শুরুর আলো দেখতে পারেনি। অন্যান্য খেলার চিত্র কী হবে, তা এখনই বলা যাবে না।
চলাফেরা
আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে তালেবান শাসনামলে আফগান নারীদের বোরকা পরা বাধ্যতামূলক ছিল। তবে এবার তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন আফগানিস্তানে নারীদের বোরকা প্রসঙ্গে বলেন, ‘নারীরা মাথায় হিজাব পরেছেন কি-না সেটা পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে পুরো শরীর ঢাকা বোরকা পরতেই হবে, এমন নয়।’
এর মধ্যে ২৬ ডিসেম্বর দেশটির পুণ্যের প্রচার ও পাপ প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, আফগান নারীরা পুরুষ আত্মীয় ছাড়া ৭২ কিলোমিটারের বেশি দূরে ভ্রমণ করতে পারবেন না। যানবাহনে চলাচল করতেও ইসলামিক হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যানবাহন মালিকদেরও শুধু হিজাব পরা নারীদের পরিবহনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
নাটক-সিনেমায় নারীদের অভিনয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। টেলিভিশন সাংবাদিকদের খবর উপস্থাপনার সময় হিজাব পরতে বলা হয়েছে। নারীদের জন্য টিভি চ্যানেল চালু করা নারী সাংবাদিক জেহরা নবীর টেলিভিশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, ‘কর্মীদের নিয়ে কাজ করার নিরাপদ জায়গা পাচ্ছি না।’ আগস্টে চাকরি হারানো সাংবাদিক সোনিয়া আহমাদিয়ার বলেন, ‘গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করা হচ্ছে।’
২৪ আগস্ট তালেবানের মুখপাত্র যাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, নারীদের আপাতত ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। নারীদের কর্মস্থলে যোগদানে স্থায়ীভাবে বাধা দেওয়া হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তাঁরা যাতে কাজে ফিরতে পারেন, কর্তৃপক্ষ সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
নারীদের কোন চোখে দেখে তালেবান
১৫ আগস্ট ভারতের নিউজ এইটটিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আফগান নারী খাতিরা বলেন, ‘তালেবানের চোখে নারীরা মানুষ নয়। তাদের কাছে নারী মানেই এক টুকরো মাংস।’ তারা নারী শরীরকে কুকুরের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর এ বক্তব্য নিয়ে অবশ্য বিতর্কও কম হয়নি। এর মধ্যেই বিবিসির সাংবাদিক জিয়া শাহরিয়ারের টুইটারে শেয়ার করা এক ভিডিওতে একজন তালেবান কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারা কি কেউ কাটা তরমুজ কেনেন? নাকি পুরো তরমুজ কেনেন? অবশ্যই পুরোটা কেনেন। হিজাব না পরা মেয়েরা হলো কাটা তরমুজ।’
এসব বক্তব্যের মধ্যেই নারী অধিকারের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের চাপের মুখে পড়ে তালেবান। চাপে রাখার কৌশল হিসেবে বিশ্বের শক্তিশালী বেশ কয়েকটি দেশ আফগানিস্তানের বেশ কিছু তহবিল স্থগিত করে।
এর মাঝেই তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ ডিক্রি প্রকাশের সময় বলেন, ‘নারী কোনো সম্পত্তি নয়; বরং মুক্ত ও অভিজাত মানুষ। শান্তি বা অন্য কোনো কিছুর জন্য তাকে কেউ কারও কাছে হস্তান্তর করতে পারে না।’ ডিক্রিতে বিয়ে ও সম্পত্তিতে নারীর অধিকার নিয়ে সুস্পষ্টভাবে বক্তব্য দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, জোরপূর্বক কোনো নারীর বিয়ে দেওয়া উচিত নয়। আর প্রয়াত স্বামীর সম্পত্তিতে নারীর অধিকার রয়েছে। এই ভাষ্য প্রচারের জন্য তথ্য ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতকে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এই ডিক্রি বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে।
নারীর বাক স্বাধীনতা
নারী অধিকারের নানা প্রসঙ্গে আফগানিস্তানের হেরাতে কিছুসংখ্যক নারী নিজেদের অধিকার সংরক্ষণের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। তালেবান নেতৃত্বের কাছে তাঁরা দাবি করেন—শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং কাজের অধিকার যেন খর্ব না হয়। এগুলো যেকোনো মানুষের মৌলিক অধিকার। বিক্ষোভকারীরা আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাইরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। তাঁরা তালেবানের সঙ্গে লড়াই করে নিহত আফগান সৈন্যদের সম্মান জানায়। কেউ কেউ মাইক্রোফোন নিয়ে জড়ো হয় এবং কাজ চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানায়।
এ মিছিল পণ্ড করতে ফাঁকা গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে তালেবান। তালেবানরা নারীদের অধিকারে ‘কোনো সমস্যা করবে না’ ঘোষণার একদিন পর এ ঘটনা ঘটল।
শুধু আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করে ক্ষান্ত হয়নি তালেবান। ৮ সেপ্টেম্বর কাবুলের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত কারত-এ-চর এলাকায় নারীদের তালেবানবিরোধী আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া আফগান সংবাদমাধ্যম তাকির দুই সাংবাদিক দারায়াবি ও নাকদিকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে তালেবান সদস্যরা। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রতিবেদক মার্কাস ইয়াম ও আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম ইটিলাট্রোজের প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যায় অন্তর্বাস পরা দুই সাংবাদিকের গায়ে আঘাতের চিহ্ন। ইটিলাট্রোজের প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যম ইউরো নিউজের স্থানীয় প্রধান, টিওএলও নিউজের ক্যামেরা পারসন ওয়াহিদ আহমাদি এবং আরিয়ানা নিউজের ক্যামেরাপারসন সামিমকেও গ্রেপ্তার করে তালেবান।
অর্থনৈতিক সংকট ও আইএসের হামলার পাশাপাশি তালেবানের সামনে বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিল নারী ইস্যু। এ ক্ষেত্রে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের আগে থেকেই নানা সুমধুর বাণী শোনাতে থাকে। সরকারেও নারীর অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেয় গোষ্ঠীটি। তবে তালেবান সরকার গঠনের পর একের পর এক বিধিনিষেধ জারি করা হয় নারীদের ওপর। তবে ২০ বছর আগের তালেবানের চেয়ে এখনকার তালেবান নারী অধিকারের বিষয়টি কিছুটা হলেও নমনীয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকেরা। মেয়েদের শিক্ষা, খেলাধুলা নিষিদ্ধসহ বোরকা পরার বাধ্যবাধকতা ছিল। এবার সেসব দিক থেকে তালেবান খানিকটা সরে এসেছে বলাই যায়।

হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত ২ মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক...
১ ঘণ্টা আগে
ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
১ ঘণ্টা আগে
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
১১ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত ২ মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক পথকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
গতকাল বুধবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সামরিক পথ এখনো খোলা আছে সত্যি, তবে হোয়াইট হাউসের লক্ষ্য অর্জনে আপাতত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।’
ভেনেজুয়েলা নিয়ে নিজের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনসমক্ষে কিছুটা অস্পষ্টতার রাখলেও, গোপনে তিনি নিকোলাস মাদুরোকে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন বলে রয়টার্স খবর প্রকাশ করেছে। গত সোমবার ট্রাম্প বলেন, মাদুরোর জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপগুলো মাদুরোর ওপর প্রবল চাপ তৈরি করেছে। আমাদের বিশ্বাস, জানুয়ারির শেষ নাগাদ ভেনেজুয়েলা এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, যদি না তারা আমেরিকার কাছে নতি স্বীকার করে বড় কোনো আপস করতে রাজি হয়।’
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছে। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর প্রশাসন দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা এবং মাদক বহনকারী হিসেবে অভিযুক্ত নৌকাগুলোর ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। অনেক দেশই এই আক্রমণকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।
এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রায়ই স্থলের মাদক অবকাঠামোতে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন এবং কারাকাস অভিমুখে সিআইএ-র গোপন তৎপরতার অনুমোদন দিয়েছেন। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত মার্কিন কোস্টগার্ড ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেল বোঝাই দুটি ট্যাংকার জব্দ করেছে।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তার এই মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন রয়টার্স খবর দিয়েছে যে, কোস্টগার্ড ‘বেলা-১’ নামে একটি খালি ও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত জাহাজ জব্দের জন্য অতিরিক্ত বাহিনীর অপেক্ষায় রয়েছে। গত রোববার তারা প্রথম এটি আটকের চেষ্টা করেছিল।
মঙ্গলবার জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল মনকাডা বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা কোনো হুমকি নয়। আসল হুমকি হলো মার্কিন সরকার।’
এদিকে, পেন্টাগন ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৫ হাজারেরও বেশি সৈন্যের এক বিশাল সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি বিমানবাহী রণতরী, ১১টি যুদ্ধজাহাজ এবং এক ডজনেরও বেশি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান। এই সম্পদের অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সহায়ক হলেও, যুদ্ধবিমানের মতো কিছু সরঞ্জাম এই কাজের জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা মাদুরোকে সম্পদহীন করার জন্য ‘সর্বোচ্চ সীমা’ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তা কার্যকর করবে। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় আসা-যাওয়া করা সমস্ত নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তেল ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তবে হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তার মুখে এখন ‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দের ব্যবহার ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি সংঘাত এড়াতে এই শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। কেনেডির তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট ম্যাকনামারা ২০০২ সালে বলেছিলেন, ‘আমরা একে কোয়ারেন্টিন বলেছিলাম কারণ ‘ব্লকেড’ বা অবরোধ একটি যুদ্ধের শব্দ।’
বুধবার জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই অবরোধের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের শক্তি প্রয়োগকে ‘অবৈধ সশস্ত্র আগ্রাসন’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত ২ মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক পথকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
গতকাল বুধবার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সামরিক পথ এখনো খোলা আছে সত্যি, তবে হোয়াইট হাউসের লক্ষ্য অর্জনে আপাতত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের দিকেই নজর দেওয়া হচ্ছে।’
ভেনেজুয়েলা নিয়ে নিজের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনসমক্ষে কিছুটা অস্পষ্টতার রাখলেও, গোপনে তিনি নিকোলাস মাদুরোকে দেশ ছেড়ে পালানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন বলে রয়টার্স খবর প্রকাশ করেছে। গত সোমবার ট্রাম্প বলেন, মাদুরোর জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপগুলো মাদুরোর ওপর প্রবল চাপ তৈরি করেছে। আমাদের বিশ্বাস, জানুয়ারির শেষ নাগাদ ভেনেজুয়েলা এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, যদি না তারা আমেরিকার কাছে নতি স্বীকার করে বড় কোনো আপস করতে রাজি হয়।’
ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছে। গত কয়েক মাস ধরে তাঁর প্রশাসন দক্ষিণ আমেরিকা থেকে আসা এবং মাদক বহনকারী হিসেবে অভিযুক্ত নৌকাগুলোর ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। অনেক দেশই এই আক্রমণকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।
এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রায়ই স্থলের মাদক অবকাঠামোতে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছেন এবং কারাকাস অভিমুখে সিআইএ-র গোপন তৎপরতার অনুমোদন দিয়েছেন। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত মার্কিন কোস্টগার্ড ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেল বোঝাই দুটি ট্যাংকার জব্দ করেছে।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তার এই মন্তব্য এমন সময়ে এল যখন রয়টার্স খবর দিয়েছে যে, কোস্টগার্ড ‘বেলা-১’ নামে একটি খালি ও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত জাহাজ জব্দের জন্য অতিরিক্ত বাহিনীর অপেক্ষায় রয়েছে। গত রোববার তারা প্রথম এটি আটকের চেষ্টা করেছিল।
মঙ্গলবার জাতিসংঘে ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েল মনকাডা বলেন, ‘ভেনেজুয়েলা কোনো হুমকি নয়। আসল হুমকি হলো মার্কিন সরকার।’
এদিকে, পেন্টাগন ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৫ হাজারেরও বেশি সৈন্যের এক বিশাল সামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি বিমানবাহী রণতরী, ১১টি যুদ্ধজাহাজ এবং এক ডজনেরও বেশি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান। এই সম্পদের অনেকগুলো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সহায়ক হলেও, যুদ্ধবিমানের মতো কিছু সরঞ্জাম এই কাজের জন্য খুব একটা উপযুক্ত নয়।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা মাদুরোকে সম্পদহীন করার জন্য ‘সর্বোচ্চ সীমা’ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং তা কার্যকর করবে। চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় আসা-যাওয়া করা সমস্ত নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তেল ট্যাংকারের ওপর ‘অবরোধ’ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তবে হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তার মুখে এখন ‘কোয়ারেন্টিন’ শব্দের ব্যবহার ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি সংঘাত এড়াতে এই শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। কেনেডির তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রবার্ট ম্যাকনামারা ২০০২ সালে বলেছিলেন, ‘আমরা একে কোয়ারেন্টিন বলেছিলাম কারণ ‘ব্লকেড’ বা অবরোধ একটি যুদ্ধের শব্দ।’
বুধবার জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই অবরোধের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের শক্তি প্রয়োগকে ‘অবৈধ সশস্ত্র আগ্রাসন’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

এবার ক্ষমতায় ফেরার আগে-পরে তালেবানের দেওয়া কিছু আশ্বাস নাগরিকদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছিল। মনে হচ্ছিল, হয়তো নতুন এক তালেবান দেখবে বিশ্ব। যে তালেবান হবে আগের চেয়ে পরিণত ও বিবেচনাসম্পন্ন। তবে ১৫ আগস্ট ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো এই প্রশ্ন তুলতেই পারে—নতুন আশ্বাসের মোড়কে কি পুরোনো তা
৩১ ডিসেম্বর ২০২১
ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
১ ঘণ্টা আগে
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
১১ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক ডিভাইডার টপকে বাসটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে একটি লরি ডিভাইডার পার হয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, লরিটি বাসের তেলের ট্যাংকে আঘাত করেছিল, যার ফলে জ্বালানি ছড়িয়ে পড়ে আগুন ধরে যায়। কয়েকজন যাত্রী কোনোমতে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হলেও এখন পর্যন্ত আটজন যাত্রী এবং ট্রাকচালকের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।’
সেই ভয়াবহ মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে আদিত্য নামের এক যাত্রী বলেন, ‘চারপাশে শুধু মানুষের আর্তনাদ। দুর্ঘটনার পর আমি পড়ে গিয়েছিলাম এবং দেখি চারদিকে আগুন। দরজা খোলা যাচ্ছিল না। আমরা জানালার কাচ ভেঙে পালানোর চেষ্টা করি...মানুষ একে অপরকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তা কঠিন হয়ে পড়ে।’
এই দুর্ঘটনার জেরে তুমকুর রোডে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গোকর্ণগামী এক নারী পর্যটক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি বাসে আগুন লেগেছে। প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে আমরা আটকে আছি, যা পরিষ্কার হতে আরও ঘণ্টা দু-এক সময় লাগতে পারে।’
এর আগে নভেম্বরেও তেলেঙ্গানাতেও একই ধরনের এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। হায়দরাবাদ-বিজাপুর মহাসড়কে পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন নিগমের সেই বাসটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রাকের ওপর থাকা পাথর বাসের ভেতরে পড়ে যাওয়ায় অনেক যাত্রী চাপা পড়ে মারা যান।

ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক ডিভাইডার টপকে বাসটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘বৃহস্পতিবার ভোরে একটি লরি ডিভাইডার পার হয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, লরিটি বাসের তেলের ট্যাংকে আঘাত করেছিল, যার ফলে জ্বালানি ছড়িয়ে পড়ে আগুন ধরে যায়। কয়েকজন যাত্রী কোনোমতে প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হলেও এখন পর্যন্ত আটজন যাত্রী এবং ট্রাকচালকের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।’
সেই ভয়াবহ মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে আদিত্য নামের এক যাত্রী বলেন, ‘চারপাশে শুধু মানুষের আর্তনাদ। দুর্ঘটনার পর আমি পড়ে গিয়েছিলাম এবং দেখি চারদিকে আগুন। দরজা খোলা যাচ্ছিল না। আমরা জানালার কাচ ভেঙে পালানোর চেষ্টা করি...মানুষ একে অপরকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তা কঠিন হয়ে পড়ে।’
এই দুর্ঘটনার জেরে তুমকুর রোডে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গোকর্ণগামী এক নারী পর্যটক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি বাসে আগুন লেগেছে। প্রায় ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে আমরা আটকে আছি, যা পরিষ্কার হতে আরও ঘণ্টা দু-এক সময় লাগতে পারে।’
এর আগে নভেম্বরেও তেলেঙ্গানাতেও একই ধরনের এক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। হায়দরাবাদ-বিজাপুর মহাসড়কে পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন নিগমের সেই বাসটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। ট্রাকের ওপর থাকা পাথর বাসের ভেতরে পড়ে যাওয়ায় অনেক যাত্রী চাপা পড়ে মারা যান।

এবার ক্ষমতায় ফেরার আগে-পরে তালেবানের দেওয়া কিছু আশ্বাস নাগরিকদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছিল। মনে হচ্ছিল, হয়তো নতুন এক তালেবান দেখবে বিশ্ব। যে তালেবান হবে আগের চেয়ে পরিণত ও বিবেচনাসম্পন্ন। তবে ১৫ আগস্ট ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো এই প্রশ্ন তুলতেই পারে—নতুন আশ্বাসের মোড়কে কি পুরোনো তা
৩১ ডিসেম্বর ২০২১
হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত ২ মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক...
১ ঘণ্টা আগে
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
১১ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।
প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’
ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।
বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
কম্বোডিয়ার প্রিয়া বিহার প্রদেশের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, গত সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থাই সামরিক বাহিনী একটি এক্সকাভেটর ব্যবহার করে ভগবান বিষ্ণুর মূর্তিটি গুঁড়িয়ে দেয়।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূর্তিটি ২০১৪ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ মিটার ভেতরে কম্বোডিয়ার আন সেস এলাকায় অবস্থিত ছিল।
প্রিয়া বিহারের মুখপাত্র লিম চানপানহা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘বৌদ্ধ ও হিন্দু অনুসারীদের কাছে পূজনীয় প্রাচীন মন্দির ও মূর্তি ধ্বংসের এই ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।’ তবে থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সীমান্ত বিরোধের জের ধরে এ ধরনের কাজ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, ‘ভূখণ্ড নিয়ে দাবি যাই থাকুক না কেন, এ ধরনের অসম্মানজনক কাজ বিশ্বজুড়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। এমন ঘটনা ঘটা উচিত নয়।’
ভারত আবারও উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং জানমাল ও ঐতিহ্যের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংলাপ ও কূটনীতির পথে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে বিরোধ দীর্ঘদিনের। ঔপনিবেশিক আমলের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই বিরোধের শুরু। গত জুলাইয়ে পাঁচ দিনের লড়াইয়ে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
বুধবার থেকে উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা আবারও যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।
বিষ্ণু মূর্তি ধ্বংসের এই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মহল আশা করছে, সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হবে। হিন্দু ও বৌদ্ধ দেবতারা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র এবং এটি আমাদের অভিন্ন সভ্যতা ও ঐতিহ্যের অংশ।

এবার ক্ষমতায় ফেরার আগে-পরে তালেবানের দেওয়া কিছু আশ্বাস নাগরিকদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছিল। মনে হচ্ছিল, হয়তো নতুন এক তালেবান দেখবে বিশ্ব। যে তালেবান হবে আগের চেয়ে পরিণত ও বিবেচনাসম্পন্ন। তবে ১৫ আগস্ট ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো এই প্রশ্ন তুলতেই পারে—নতুন আশ্বাসের মোড়কে কি পুরোনো তা
৩১ ডিসেম্বর ২০২১
হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত ২ মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক...
১ ঘণ্টা আগে
ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
১ ঘণ্টা আগে
গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্য সদস্যদের সঙ্গে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিষ্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।
গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিষ্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’
তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইসরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইসরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনো দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনো কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনো ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।
গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিষ্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সঙ্গে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’
৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাঁবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’
গাজার খ্রিষ্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কম হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।
গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যে প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।
অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা ধ্বংসলীলা আর লাশের মিছিলের মাঝেও বড়দিনের আনন্দ ফিরে পাওয়ার এক বিষাদময় চেষ্টা চালাচ্ছে সেখানকার ক্ষুদ্র খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি দিলেও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি আর বাস্তুচ্যুত মানুষের হাহাকার অনেক ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ম্লান করে দিয়েছে।
৭৬ বছর বয়সী আত্তাল্লাহ তরাজি সম্প্রতি বড়দিনের উপহার হিসেবে এক জোড়া মোজা আর স্কার্ফ পেয়েছেন। গাজার কনকনে শীত থেকে বাঁচতে এগুলোই এখন তাঁর বড় সম্বল। গির্জার অন্য সদস্যদের সঙ্গে তরাজি যখন গাইলেন—‘খ্রিষ্টের জন্ম হয়েছে, হালেলুইয়া’ (একটি হিব্রু শব্দ, যার অর্থ প্রভুর প্রশংসা), তখন কিছুক্ষণের জন্য হলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বিভীষিকা ঢাকা পড়েছিল বিশ্বাসের সুরে।
গাজার সেন্ট্রাল সিটি এলাকার ‘হলি ফ্যামিলি চার্চ’ কম্পাউন্ডে আশ্রয় নেওয়া তরাজি বলেন, ‘আমরা এই পবিত্র মুহূর্তে যুদ্ধ, বিপদ আর বোমাবর্ষণের কথা ভুলে যেতে চাই। খ্রিষ্টের জন্মের আনন্দ আমাদের সব তিক্ততাকে ছাপিয়ে যাক।’
তবে সবার জন্য উৎসবের অনুভূতি এক নয়। শাদি আবু দাউদের জন্য এবারের বড়দিনটি অত্যন্ত কষ্টের। গত জুলাই মাসে এই ক্যাথলিক চার্চ কম্পাউন্ডেই ইসরায়েলি হামলায় তাঁর মা নিহত হন ও ছেলে আহত হয়। ইসরায়েল একে ‘দুর্ঘটনা’ বলে দুঃখ প্রকাশ করলেও স্বজন হারানোর ক্ষত এখনো দগদগে। আবু দাউদ বলেন, জখম এখনো কাঁচা। এখানে কোনো উৎসব নেই, আমরা এখনো ‘না যুদ্ধ না শান্তি’র এক অদ্ভুত অবস্থার মধ্যে বাস করছি।
গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দার মধ্যে খ্রিষ্টানদের সংখ্যা এখন নগণ্য। যুদ্ধের কারণে অনেক পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ২৩ বছর বয়সী ওয়াফা ইমাদ এলসায়েঘ জানান, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়রা না থাকায় আগের মতো আমেজ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার নিয়ে সাজসজ্জা করছি ঠিকই, কিন্তু যাদের সঙ্গে সব আনন্দ ভাগ করে নিতাম, তারা আজ গাজায় নেই। এই পরিবেশ আগের মতো করে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।’
৩৫ বছর বয়সী মা এলিনোর আমাশ তাঁর সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে ঘরে বড়দিনের গাছ (ক্রিসমাস ট্রি) সাজিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানেরা কিছু চকলেট আর মিষ্টি পেয়ে বোমার ভয় ছাড়া শ্বাস নিতে পারছে। কিন্তু তাঁবুগুলোতে বসবাসকারী মানুষের কষ্ট দেখে চোখে জল আসে।’
গাজার খ্রিষ্টানরা মনে করেন, তাঁরা সংখ্যায় যত কম হোক না কেন, এটি এই ভূমির প্রতি ভালোবাসা এবং বিশ্বাসের এক অটল সাক্ষ্য। আত্তাল্লাহ তরাজি প্রার্থনা করেন যেন তাঁর জাতি শান্তি ও স্বাধীনতা পায়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই পরিস্থিতির চেয়েও বড়দিনের আনন্দ এবং তাঁদের বিশ্বাস অনেক বেশি শক্তিশালী।
গত অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর গাজায় হামলার তীব্রতা কমলেও মাঝেমধ্যে প্রাণঘাতী আঘাত আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এ পর্যন্ত প্রায় ৭১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অর্ধেকই নারী ও শিশু।
অতিবৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবুগুলো তলিয়ে গেছে, যা ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

এবার ক্ষমতায় ফেরার আগে-পরে তালেবানের দেওয়া কিছু আশ্বাস নাগরিকদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছিল। মনে হচ্ছিল, হয়তো নতুন এক তালেবান দেখবে বিশ্ব। যে তালেবান হবে আগের চেয়ে পরিণত ও বিবেচনাসম্পন্ন। তবে ১৫ আগস্ট ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো এই প্রশ্ন তুলতেই পারে—নতুন আশ্বাসের মোড়কে কি পুরোনো তা
৩১ ডিসেম্বর ২০২১
হোয়াইট হাউস মার্কিন সামরিক বাহিনীকে আগামী অন্তত ২ মাস ভেনেজুয়েলার তেলের ওপর ‘কোয়ারেন্টিন’ বা অবরোধ আরোপের দিকেই প্রায় পুরোপুরি মনোনিবেশ করার নির্দেশ দিয়েছে। রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন বর্তমানে কারাকাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সামরিক শক্তির চেয়ে অর্থনৈতিক...
১ ঘণ্টা আগে
ভারতের কর্ণাটকের চিত্রদুর্গ জেলায় এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৯ জন জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাকের ধাক্কায় একটি বেসরকারি স্লিপার বাসে আগুন ধরে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। বাসটি বেঙ্গালুরু থেকে শিমোগা যাচ্ছিল।
১ ঘণ্টা আগে
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভগবান বিষ্ণুর একটি মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ভারত। আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ঘটনাকে একটি ‘অসম্মানজনক কাজ’ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান
১১ ঘণ্টা আগে