আজকের পত্রিকা ডেস্ক

এক বছর আগে গাজায় আগ্রাসনে নেমে বেশ চাপে ছিল ইসরায়েল। আটকে পড়া জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে দেশের মধ্যে বিক্ষোভ, ইরানের ভাড়াটে বাহিনীর চতুর্মুখী আক্রমণ, আর ওয়াশিংটনের চাপ ছিল যুদ্ধ থামাতে। তবে এবার ইরানে আক্রমণ শুরু করার পর তেমন কোনো অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নেই দেশটি।
ইসরায়েল নিজের খায়েশ মোতাবেক মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দেওয়ার অভিযানে নেমেছে। ট্রাম্প প্রশাসনকে অনেকটা বাধ্য করছে এই নতুন বাস্তবতার সঙ্গে তাল মেলাতে। ইসরায়েল চতুর্থ দিনে এসে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা আরও জোরদার করেছে। তবে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ বিশ্ববাজারে অস্থিরতা ও ভূরাজনৈতিক পুনর্বিন্যাস ঘটাতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে পারে।
দুঃসাহসিক গোয়েন্দা অভিযান ও তীব্র সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল কার্যত হামাস ও হিজবুল্লাহকে নিষ্ক্রিয় করেছে এবং একই সঙ্গে সিরিয়ায় আসাদ শাসনের পতন ঘটিয়েছে। এখন তারা সরাসরি তেহরানকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার আড়ালে ইসরায়েল চালিয়েছে এক নজিরবিহীন হামলা। এর লক্ষ্য কেবল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধূলিস্যাৎ করে দেওয়া নয়, বরং দেশটির ধর্মভিত্তিক শাসনব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলা।
এই সংঘাত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিশ্রুত কূটনৈতিক পথের কাঁটাও। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে ছিলেন। তবে সে পথে কোনো সাফল্য না আসায় এখন তিনি ইসরায়েলি হামলার প্রশংসা করেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘এখনই চুক্তিতে না এলে ইরানের কিছুই বাকি থাকবে না।’
মধ্যপ্রাচ্যে নাক না গলানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া ট্রাম্প এখন ইরানি পাল্টা আক্রমণ থেকে ইসরায়েলকে রক্ষায় যুদ্ধজাহাজ ও জঙ্গি বিমান পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। ইরান যদি আমেরিকান ঘাঁটি বা পারস্য উপসাগরের জ্বালানি রপ্তানিতে বাধা দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে।
তবে এখন পর্যন্ত ভয়ংকর রকমের বিস্তৃত যুদ্ধ শুরু হয়নি। ইরান ইসরায়েলের দিকে প্রচুর ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে, কিন্তু তেমন কোনো কার্যকর ফল আসেনি। ইসরায়েলি নেতারা এখন অবশ্যম্ভাবী বিজয়ের কথাও বলছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতাকে বদলে দিতে পারে।
শুক্রবার ইরানিদের উদ্দেশে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনাদের মুক্তির দিন এখন খুব কাছেই। সেই দিন এলে ইসরায়েলি ও ইরানিরা তাদের প্রাচীন বন্ধুত্ব পুনর্গঠন করবে। একসঙ্গে আমরা শান্তি, সমৃদ্ধি ও আশার ভবিষ্যৎ গড়ব।’
যুক্তরাষ্ট্র দেশীয় সংকট ও অন্য ভূরাজনৈতিক হুমকি নিয়ে ব্যতিব্যস্ততার মধ্যে ইসরায়েলের এই সাহসী আক্রমণ চালিয়েছে। সেটি অনেকটা মার্কিন স্বার্থের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ফলে ইসরায়েলকে না করতে পারছেন না ট্রাম্প। আগের নির্ধারিত মার্কিন কূটনৈতিক রীতিনীতিকে উপেক্ষা করে তিনি নিজস্ব বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করেছেন।
ক্ষমতায় আসার আগে গাজায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন ট্রাম্প। তবে ইউক্রেন ও ইরান সংকট মাথাচাড়া দেওয়ার পর তার মনোযোগে বিচ্যুতি ঘটেছে। গাজাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা বললেও তাতে আগ্রহ হারিয়েছেন। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েও থেমে গেছেন। ফলে নেতানিয়াহু সহজেই নিজের পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
ইসরায়েলের সামনে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ। ইরান যে বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করেছে এবং তার চারপাশে জোট তৈরি করেছে, তা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। তাই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করা এখন জরুরি।
গত কয়েক দিনে ইসরায়েল ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে, এতে তারা ইচ্ছামতো হামলা চালাতে পারছে। তবে এখনো পর্যন্ত তারা ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো—যেমন শক্তভাবে সুরক্ষিত ফোরদৌ কেন্দ্র বা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ইউরেনিয়াম মজুত ধ্বংস করতে পারেনি।
সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জোনাথন প্যানিকফ বলেন, ইসরায়েল ও ইরান—উভয়ের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই যুদ্ধে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বেঁচে থাকে কি না তার ওপর।
রোববার দুপুর পর্যন্ত ইসরায়েল ৫০ ঘণ্টায় ২৫০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন এখনো ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেনি—যা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বড় পরিবর্তন।
পূর্বের বাইডেন প্রশাসন হামলার মাত্রা কমাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ দিয়েছিল, যাতে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমে, গাজার যুদ্ধ থামে এবং হিজবুল্লাহর সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমিত হয়। ইরান ও ইসরায়েলের সরাসরি সংঘাতে বাইডেন প্রশাসন চাইত, ইসরায়েল যেন ইরানের পারমাণবিক বা জ্বালানি খাতে হামলা না করে।
এবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে বারবার বলেছিলেন, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে ধৈর্য ধরুন, যাতে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু নেতানিয়াহু যখন তাকে স্মরণ করিয়ে দেন, যে নির্ধারিত দুই মাসের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে, তখন ট্রাম্প সম্মতি দেন।
সাবেক ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত মাইকেল ওরেন বলেন, ‘এই যুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে ইতি টানার চেয়ে বড় ভুল আর কিছু হতে পারে না।’
তবে বড় প্রতিবন্ধকতা এখন ইসরায়েল নিজেই। ২০ মাসের যুদ্ধে ক্লান্ত জনতা, অনেককেই বারবার সেনাবাহিনীতে ডাকা হয়েছে, পরিবার ও পেশা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজায় এখনো অন্তত ২০ জন জিম্মি জীবিত এবং অনেক লাশ ফেরত আনা হয়নি। সঙ্গে আছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব নিয়ে বিভক্তি। বিরোধীদের সামরিক ও নিরাপত্তা খাত থেকে সরিয়ে দেওয়া, বিচারব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে বিতর্ক ও গাজার যুদ্ধ শেষ করতে না পারাসহ ইত্যাদি কারণে দেশ বিভক্ত।
ওরেন বলেন, ব্যথা, ক্লান্তি আর অনিশ্চয়তা—এই তিনেই ইসরায়েলি সমাজ ডুবে আছে এখন।
তবে ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ইয়োহানান প্লেসনার মনে করেন, তবু এখানে বোঝাপড়াটা স্পষ্ট। এই সংঘাতই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এপ্রিলের এক জরিপ বলছে, অর্ধেকের বেশি ইহুদি ইসরায়েলি ইরানের ওপর হামলার পক্ষে, এমনকি আমেরিকার সমর্থন না থাকলেও।
ইসরায়েল বহু বছর ধরে ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা ও হামাস, হিজবুল্লাহ, হুতি প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। তারা ‘ঘাস কাটা’ কৌশলে হামলা করেছে, সরবরাহ বন্ধ করেছে। কিন্তু ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের আক্রমণে সেই কৌশল ব্যর্থ হয়। এরপর তারা ধারাবাহিকভাবে হামাস ও হিজবুল্লাহকে দমন করে।
এতে নিরাপত্তা মহলে নতুন উপলব্ধি আসে, ঝুঁকি নিয়ে হলেও হুমকি চিরতরে দূর করাই একমাত্র পথ। প্লেসনার বলেন, এটা কেবল মধ্যপ্রাচ্যে আরও এক দফা সহিংসতা নয়। এটা অনেক বড় মনস্তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক ঘটনা। এখন কেবল ইরানই বাকি।
ইসরায়েলের লক্ষ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের মতো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নয়; বরং নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াইয়ে তারা সীমিত লক্ষ্য নির্ধারণ করে সফল হয়। ২ মাসের মধ্যে হিজবুল্লাহ পিছু হটে। কিন্তু গাজায় এই কৌশল ছিল না। হামাসকে ধ্বংস করার ঘোষণা থাকলেও যুদ্ধ-পরবর্তী শাসনব্যবস্থা নিয়ে পরিকল্পনা ছিল না। ফলে ২০ মাস ধরে চলা অভিযানে গাজায় প্রায় ৫৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তবু যুদ্ধের শেষ নেই।
গাজার যুদ্ধ নিয়ে দেশে আস্থা কমছে। আন্তর্জাতিক সমর্থনও হ্রাস পেয়েছে। শিশুর মৃত্যু ও দুর্ভিক্ষের ছবি বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলকে একঘরে করে ফেলেছে।
তেল আবিবভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড্যানি সিট্রিনোভিচ বলেন, ইরানে প্রাথমিক সাফল্যে ইসরায়েলে যে উল্লাস দেখা যাচ্ছে, তা দ্রুত বদলে যেতে পারে যদি ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রাখে।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক সাফল্য অনেক সময় কূটনৈতিকভাবে কাজে আসেনি। ১৯৮২ সালে বৈরুতে দ্রুত অগ্রসর হয়ে তারা ২০০০ সাল পর্যন্ত লেবাননে আটকে ছিল। ১৯৬৭ সালের জয়ও ১৯৭৩ সালের আকস্মিক হামলায় অনেকটাই ম্লান হয়।
এখন নেতানিয়াহুর বড় চ্যালেঞ্জ ইরানে কৌশলগত সাফল্যকে স্থায়ী কূটনৈতিক বিজয়ে রূপ দেওয়া। ইরান দুর্বল, কিন্তু এখনো একটি বড় এবং অটল প্রতিপক্ষ। নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প চান, তারা যেন এক দুর্বল অবস্থায় আলোচনায় বসে। কিন্তু ইরান না-ও বসতে পারে।
সিট্রিনোভিচ বলেন, ‘ইসরায়েলকে এখনই ভাবতে হবে, কীভাবে এই যুদ্ধের ইতি টানবে। আমাদের যুদ্ধ শুরুর আগেই ‘প্রস্থান কৌশল’ নিয়ে ভাবতে শুরু করা উচিত।’

এক বছর আগে গাজায় আগ্রাসনে নেমে বেশ চাপে ছিল ইসরায়েল। আটকে পড়া জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে দেশের মধ্যে বিক্ষোভ, ইরানের ভাড়াটে বাহিনীর চতুর্মুখী আক্রমণ, আর ওয়াশিংটনের চাপ ছিল যুদ্ধ থামাতে। তবে এবার ইরানে আক্রমণ শুরু করার পর তেমন কোনো অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নেই দেশটি।
ইসরায়েল নিজের খায়েশ মোতাবেক মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দেওয়ার অভিযানে নেমেছে। ট্রাম্প প্রশাসনকে অনেকটা বাধ্য করছে এই নতুন বাস্তবতার সঙ্গে তাল মেলাতে। ইসরায়েল চতুর্থ দিনে এসে ইরানের বিরুদ্ধে হামলা আরও জোরদার করেছে। তবে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ বিশ্ববাজারে অস্থিরতা ও ভূরাজনৈতিক পুনর্বিন্যাস ঘটাতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে পারে।
দুঃসাহসিক গোয়েন্দা অভিযান ও তীব্র সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল কার্যত হামাস ও হিজবুল্লাহকে নিষ্ক্রিয় করেছে এবং একই সঙ্গে সিরিয়ায় আসাদ শাসনের পতন ঘটিয়েছে। এখন তারা সরাসরি তেহরানকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার আড়ালে ইসরায়েল চালিয়েছে এক নজিরবিহীন হামলা। এর লক্ষ্য কেবল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধূলিস্যাৎ করে দেওয়া নয়, বরং দেশটির ধর্মভিত্তিক শাসনব্যবস্থাকে উপড়ে ফেলা।
এই সংঘাত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিশ্রুত কূটনৈতিক পথের কাঁটাও। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে ছিলেন। তবে সে পথে কোনো সাফল্য না আসায় এখন তিনি ইসরায়েলি হামলার প্রশংসা করেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘এখনই চুক্তিতে না এলে ইরানের কিছুই বাকি থাকবে না।’
মধ্যপ্রাচ্যে নাক না গলানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া ট্রাম্প এখন ইরানি পাল্টা আক্রমণ থেকে ইসরায়েলকে রক্ষায় যুদ্ধজাহাজ ও জঙ্গি বিমান পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। ইরান যদি আমেরিকান ঘাঁটি বা পারস্য উপসাগরের জ্বালানি রপ্তানিতে বাধা দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে পড়তে পারে।
তবে এখন পর্যন্ত ভয়ংকর রকমের বিস্তৃত যুদ্ধ শুরু হয়নি। ইরান ইসরায়েলের দিকে প্রচুর ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে, কিন্তু তেমন কোনো কার্যকর ফল আসেনি। ইসরায়েলি নেতারা এখন অবশ্যম্ভাবী বিজয়ের কথাও বলছেন, যা মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতাকে বদলে দিতে পারে।
শুক্রবার ইরানিদের উদ্দেশে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনাদের মুক্তির দিন এখন খুব কাছেই। সেই দিন এলে ইসরায়েলি ও ইরানিরা তাদের প্রাচীন বন্ধুত্ব পুনর্গঠন করবে। একসঙ্গে আমরা শান্তি, সমৃদ্ধি ও আশার ভবিষ্যৎ গড়ব।’
যুক্তরাষ্ট্র দেশীয় সংকট ও অন্য ভূরাজনৈতিক হুমকি নিয়ে ব্যতিব্যস্ততার মধ্যে ইসরায়েলের এই সাহসী আক্রমণ চালিয়েছে। সেটি অনেকটা মার্কিন স্বার্থের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ফলে ইসরায়েলকে না করতে পারছেন না ট্রাম্প। আগের নির্ধারিত মার্কিন কূটনৈতিক রীতিনীতিকে উপেক্ষা করে তিনি নিজস্ব বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করেছেন।
ক্ষমতায় আসার আগে গাজায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন ট্রাম্প। তবে ইউক্রেন ও ইরান সংকট মাথাচাড়া দেওয়ার পর তার মনোযোগে বিচ্যুতি ঘটেছে। গাজাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা বললেও তাতে আগ্রহ হারিয়েছেন। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েও থেমে গেছেন। ফলে নেতানিয়াহু সহজেই নিজের পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
ইসরায়েলের সামনে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ। ইরান যে বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করেছে এবং তার চারপাশে জোট তৈরি করেছে, তা ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। তাই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করা এখন জরুরি।
গত কয়েক দিনে ইসরায়েল ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে, এতে তারা ইচ্ছামতো হামলা চালাতে পারছে। তবে এখনো পর্যন্ত তারা ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো—যেমন শক্তভাবে সুরক্ষিত ফোরদৌ কেন্দ্র বা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ইউরেনিয়াম মজুত ধ্বংস করতে পারেনি।
সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জোনাথন প্যানিকফ বলেন, ইসরায়েল ও ইরান—উভয়ের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই যুদ্ধে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বেঁচে থাকে কি না তার ওপর।
রোববার দুপুর পর্যন্ত ইসরায়েল ৫০ ঘণ্টায় ২৫০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন এখনো ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেনি—যা মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির বড় পরিবর্তন।
পূর্বের বাইডেন প্রশাসন হামলার মাত্রা কমাতে ইসরায়েলের ওপর চাপ দিয়েছিল, যাতে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমে, গাজার যুদ্ধ থামে এবং হিজবুল্লাহর সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমিত হয়। ইরান ও ইসরায়েলের সরাসরি সংঘাতে বাইডেন প্রশাসন চাইত, ইসরায়েল যেন ইরানের পারমাণবিক বা জ্বালানি খাতে হামলা না করে।
এবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে বারবার বলেছিলেন, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে ধৈর্য ধরুন, যাতে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু নেতানিয়াহু যখন তাকে স্মরণ করিয়ে দেন, যে নির্ধারিত দুই মাসের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে, তখন ট্রাম্প সম্মতি দেন।
সাবেক ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত মাইকেল ওরেন বলেন, ‘এই যুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে ইতি টানার চেয়ে বড় ভুল আর কিছু হতে পারে না।’
তবে বড় প্রতিবন্ধকতা এখন ইসরায়েল নিজেই। ২০ মাসের যুদ্ধে ক্লান্ত জনতা, অনেককেই বারবার সেনাবাহিনীতে ডাকা হয়েছে, পরিবার ও পেশা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজায় এখনো অন্তত ২০ জন জিম্মি জীবিত এবং অনেক লাশ ফেরত আনা হয়নি। সঙ্গে আছে নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব নিয়ে বিভক্তি। বিরোধীদের সামরিক ও নিরাপত্তা খাত থেকে সরিয়ে দেওয়া, বিচারব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে বিতর্ক ও গাজার যুদ্ধ শেষ করতে না পারাসহ ইত্যাদি কারণে দেশ বিভক্ত।
ওরেন বলেন, ব্যথা, ক্লান্তি আর অনিশ্চয়তা—এই তিনেই ইসরায়েলি সমাজ ডুবে আছে এখন।
তবে ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ইয়োহানান প্লেসনার মনে করেন, তবু এখানে বোঝাপড়াটা স্পষ্ট। এই সংঘাতই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এপ্রিলের এক জরিপ বলছে, অর্ধেকের বেশি ইহুদি ইসরায়েলি ইরানের ওপর হামলার পক্ষে, এমনকি আমেরিকার সমর্থন না থাকলেও।
ইসরায়েল বহু বছর ধরে ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা ও হামাস, হিজবুল্লাহ, হুতি প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে। তারা ‘ঘাস কাটা’ কৌশলে হামলা করেছে, সরবরাহ বন্ধ করেছে। কিন্তু ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের আক্রমণে সেই কৌশল ব্যর্থ হয়। এরপর তারা ধারাবাহিকভাবে হামাস ও হিজবুল্লাহকে দমন করে।
এতে নিরাপত্তা মহলে নতুন উপলব্ধি আসে, ঝুঁকি নিয়ে হলেও হুমকি চিরতরে দূর করাই একমাত্র পথ। প্লেসনার বলেন, এটা কেবল মধ্যপ্রাচ্যে আরও এক দফা সহিংসতা নয়। এটা অনেক বড় মনস্তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক ঘটনা। এখন কেবল ইরানই বাকি।
ইসরায়েলের লক্ষ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের মতো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা নয়; বরং নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াইয়ে তারা সীমিত লক্ষ্য নির্ধারণ করে সফল হয়। ২ মাসের মধ্যে হিজবুল্লাহ পিছু হটে। কিন্তু গাজায় এই কৌশল ছিল না। হামাসকে ধ্বংস করার ঘোষণা থাকলেও যুদ্ধ-পরবর্তী শাসনব্যবস্থা নিয়ে পরিকল্পনা ছিল না। ফলে ২০ মাস ধরে চলা অভিযানে গাজায় প্রায় ৫৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, তবু যুদ্ধের শেষ নেই।
গাজার যুদ্ধ নিয়ে দেশে আস্থা কমছে। আন্তর্জাতিক সমর্থনও হ্রাস পেয়েছে। শিশুর মৃত্যু ও দুর্ভিক্ষের ছবি বিশ্বজুড়ে ইসরায়েলকে একঘরে করে ফেলেছে।
তেল আবিবভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড্যানি সিট্রিনোভিচ বলেন, ইরানে প্রাথমিক সাফল্যে ইসরায়েলে যে উল্লাস দেখা যাচ্ছে, তা দ্রুত বদলে যেতে পারে যদি ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রাখে।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের সামরিক সাফল্য অনেক সময় কূটনৈতিকভাবে কাজে আসেনি। ১৯৮২ সালে বৈরুতে দ্রুত অগ্রসর হয়ে তারা ২০০০ সাল পর্যন্ত লেবাননে আটকে ছিল। ১৯৬৭ সালের জয়ও ১৯৭৩ সালের আকস্মিক হামলায় অনেকটাই ম্লান হয়।
এখন নেতানিয়াহুর বড় চ্যালেঞ্জ ইরানে কৌশলগত সাফল্যকে স্থায়ী কূটনৈতিক বিজয়ে রূপ দেওয়া। ইরান দুর্বল, কিন্তু এখনো একটি বড় এবং অটল প্রতিপক্ষ। নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প চান, তারা যেন এক দুর্বল অবস্থায় আলোচনায় বসে। কিন্তু ইরান না-ও বসতে পারে।
সিট্রিনোভিচ বলেন, ‘ইসরায়েলকে এখনই ভাবতে হবে, কীভাবে এই যুদ্ধের ইতি টানবে। আমাদের যুদ্ধ শুরুর আগেই ‘প্রস্থান কৌশল’ নিয়ে ভাবতে শুরু করা উচিত।’

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে একটি এলাকায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। আজ রোববার পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে। চলতি ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় এটি দ্বিতীয় বড় ধরনের গোলাগুলির ঘটনা।
২ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলের বন্দিশিবিরে ফিলিস্তিনি কয়েদিদের ওপর কেমন অকথ্য নির্যাতন আর যৌন নিগ্রহ চলছে, তার প্রমাণ মিলল দুজনের অভিজ্ঞতায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে বন্দী নির্যাতনের যে হাড় হিম করা বিবরণ উঠে এসেছে, তাঁরা নিজেরাই তার শিকার।
২ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার সব দুয়ারই যখন রুদ্ধ, তখন প্রতিবাদের রাজপথই দলের একমাত্র ভরসা। তাই তিনি কর্মী-সমর্থকদের রাজপথের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি নামসর্বস্ব বা ‘শেল’ কোম্পানি গাজার নিরুপায় ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার কাজে সহায়তা করছে। মানবিক সহায়তার নামে বিপুল অর্থের বিনিময়ে দেশত্যাগে প্ররোচিত করার এই প্রক্রিয়াটিকে ভূখণ্ডটি থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘জাতিগত নিধনের’ অংশ হিসেবে দেখা
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে একটি এলাকায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। আজ রোববার পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে। চলতি ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় এটি দ্বিতীয় বড় ধরনের গোলাগুলির ঘটনা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, পুলিশ প্রথমে ১০ জন নিহতের কথা বললেও পরে সংখ্যাটি সংশোধন করে ৯ জনের কথা জানায়। জোহানেসবার্গ থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বেকার্সডাল এলাকায় এই হামলার উদ্দেশ্য এখনো পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা রাস্তায় সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, হামলাকারীরা দুটি গাড়িতে করে এসে প্রথমে একটি পানশালার ক্রেতাদের ওপর গুলি ছোড়ে এবং পালানোর সময়ও পথে যাকে পেয়েছে, তাকেই লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
প্রাদেশিক পুলিশের কমিশনার মেজর জেনারেল ফ্রেড কেকানা জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনলাইন গাড়ি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের একজন চালকও রয়েছেন, যিনি ওই সময় পানশালার বাইরে অবস্থান করছিলেন। পুলিশ জানায়, হামলাকারীদের ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বড় কয়েকটি সোনার খনির কাছে দরিদ্র এলাকা বেকার্সডালের একটি অনানুষ্ঠানিক পানশালার পাশে এই গুলির ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দক্ষিণ আফ্রিকা বর্তমানে সংগঠিত অপরাধী চক্র এবং দুর্নীতির এক ভয়াবহ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে গোলাগুলি এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত গ্যাংস্টারদের সংঘাত এবং অনানুষ্ঠানিক ব্যবসাগুলোর মধ্যকার প্রতিযোগিতার কারণেই এই সহিংসতা বাড়ছে, যা দেশটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ খুনের হারের তালিকায় ঠেলে দিয়েছে।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর রাজধানী প্রিটোরিয়ার কাছে একটি হোটেলে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়ে তিন বছরের এক শিশুসহ ১২ জনকে হত্যা করে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই স্থানে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হতো। সে সময় পুলিশের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার আথলেন্দা ম্যাথে বলেন, ‘ওই হোটেলে একদল লোক মদ্যপান করছিল। হঠাৎ তিনজন অজ্ঞাত বন্দুকধারী সেখানে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে।’
তিনি নিশ্চিত করেন, ২৫ জনকে গুলি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই ১০ জন এবং হাসপাতালে আরও একজন মারা যায়। আহত ১৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে এবং ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে একটি এলাকায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। আজ রোববার পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে। চলতি ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় এটি দ্বিতীয় বড় ধরনের গোলাগুলির ঘটনা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, পুলিশ প্রথমে ১০ জন নিহতের কথা বললেও পরে সংখ্যাটি সংশোধন করে ৯ জনের কথা জানায়। জোহানেসবার্গ থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বেকার্সডাল এলাকায় এই হামলার উদ্দেশ্য এখনো পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা রাস্তায় সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার গুলি চালিয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, হামলাকারীরা দুটি গাড়িতে করে এসে প্রথমে একটি পানশালার ক্রেতাদের ওপর গুলি ছোড়ে এবং পালানোর সময়ও পথে যাকে পেয়েছে, তাকেই লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
প্রাদেশিক পুলিশের কমিশনার মেজর জেনারেল ফ্রেড কেকানা জানিয়েছেন, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনলাইন গাড়ি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের একজন চালকও রয়েছেন, যিনি ওই সময় পানশালার বাইরে অবস্থান করছিলেন। পুলিশ জানায়, হামলাকারীদের ধরতে চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বড় কয়েকটি সোনার খনির কাছে দরিদ্র এলাকা বেকার্সডালের একটি অনানুষ্ঠানিক পানশালার পাশে এই গুলির ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দক্ষিণ আফ্রিকা বর্তমানে সংগঠিত অপরাধী চক্র এবং দুর্নীতির এক ভয়াবহ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে গোলাগুলি এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত গ্যাংস্টারদের সংঘাত এবং অনানুষ্ঠানিক ব্যবসাগুলোর মধ্যকার প্রতিযোগিতার কারণেই এই সহিংসতা বাড়ছে, যা দেশটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ খুনের হারের তালিকায় ঠেলে দিয়েছে।
এর আগে ৬ ডিসেম্বর রাজধানী প্রিটোরিয়ার কাছে একটি হোটেলে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়ে তিন বছরের এক শিশুসহ ১২ জনকে হত্যা করে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই স্থানে অবৈধভাবে মদ বিক্রি করা হতো। সে সময় পুলিশের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার আথলেন্দা ম্যাথে বলেন, ‘ওই হোটেলে একদল লোক মদ্যপান করছিল। হঠাৎ তিনজন অজ্ঞাত বন্দুকধারী সেখানে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে।’
তিনি নিশ্চিত করেন, ২৫ জনকে গুলি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই ১০ জন এবং হাসপাতালে আরও একজন মারা যায়। আহত ১৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ বছর বয়সী একটি ছেলে এবং ১৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।

এক বছর আগে গাজায় আগ্রাসনে নেমে বেশ চাপে ছিল ইসরায়েল। আটকে পড়া জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে দেশের মধ্যে বিক্ষোভ, ইরানের ভাড়াটে বাহিনীর চতুর্মুখী আক্রমণ, আর ওয়াশিংটনের চাপ ছিল যুদ্ধ থামাতে। তবে এবার ইরানে আক্রমণ শুরু করার পর তেমন কোনো অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নেই দেশটি।
১৬ জুন ২০২৫
ইসরায়েলের বন্দিশিবিরে ফিলিস্তিনি কয়েদিদের ওপর কেমন অকথ্য নির্যাতন আর যৌন নিগ্রহ চলছে, তার প্রমাণ মিলল দুজনের অভিজ্ঞতায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে বন্দী নির্যাতনের যে হাড় হিম করা বিবরণ উঠে এসেছে, তাঁরা নিজেরাই তার শিকার।
২ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার সব দুয়ারই যখন রুদ্ধ, তখন প্রতিবাদের রাজপথই দলের একমাত্র ভরসা। তাই তিনি কর্মী-সমর্থকদের রাজপথের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি নামসর্বস্ব বা ‘শেল’ কোম্পানি গাজার নিরুপায় ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার কাজে সহায়তা করছে। মানবিক সহায়তার নামে বিপুল অর্থের বিনিময়ে দেশত্যাগে প্ররোচিত করার এই প্রক্রিয়াটিকে ভূখণ্ডটি থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘জাতিগত নিধনের’ অংশ হিসেবে দেখা
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসরায়েলের বন্দিশিবিরে ফিলিস্তিনি কয়েদিদের ওপর কেমন অকথ্য নির্যাতন আর যৌন নিগ্রহ চলছে, তার প্রমাণ মিলল দুজনের অভিজ্ঞতায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে বন্দী নির্যাতনের যে হাড় হিম করা বিবরণ উঠে এসেছে, তাঁরা নিজেরাই তার শিকার।
গত মাসে জাতিসংঘের কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার তাদের গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। তাদের মতে, ইসরায়েলি জেলগুলোতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর যে সুপরিকল্পিত এবং ব্যাপক নির্যাতন চলছে, তা এখন কার্যত ‘রাষ্ট্রীয় নীতিতে’ পরিণত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে হামলার পর থেকে এই পরিস্থিতির ভয়াবহতা বেড়েছে বহুগুণ। ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠনগুলোও একে একটি ‘পদ্ধতিগত’ প্রথা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ইসরায়েল অবশ্য সরকারিভাবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু অধিকারকর্মীদের দাবি, ৭ অক্টোবরের সেই রক্তক্ষয়ী হামলা আর গাজায় আটকে থাকা জিম্মিদের দুরবস্থা নিয়ে ইসরায়েলি নাগরিকদের ভেতর যে তীব্র আক্রোশ জন্মেছে, তার সুযোগ নিচ্ছে ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ। একধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি সেখানে জেঁকে বসেছে, বিশেষ করে যারা হামাসকে সামান্যতম সমর্থন জুগিয়েছে, তাদের ওপর নেমে আসছে পৈশাচিক নিগ্রহ।
গত বছর একটি সামরিক কারাগারের সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। সেখানে দেখা যায়, গাজার এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে রক্ষীরা যৌন নির্যাতন করছে। সেই ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক ও রাজনৈতিক মহলে ছি ছি রব পড়ে যায়, পদত্যাগ করেন বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা।
৪৬ বছরের সামি আল-সাইয়ি এখন একটি আসবাবপত্রের দোকানে কাজ করেন। কিন্তু একসময় তাঁর পরিচয় ছিল অন্য। অধিকৃত পশ্চিম তীরের তুলকারেম শহরে তিনি সাংবাদিকতা করতেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইসরায়েলি সেনারা তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর অপরাধ? তিনি বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হামাস বা অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করে দিতেন।

কোনো চার্জশিট বা অভিযোগ ছাড়াই সামিকে ১৬ মাস বন্দী করে রাখা হয়। ইসরায়েলের কুখ্যাত ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন’ বা প্রশাসনিক আটক ব্যবস্থার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে এ বছরের গ্রীষ্মে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। উত্তর ইসরায়েলের মেগিদ্দো কারাগারে থাকাকালে ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ তাঁর ওপর যে অকথ্য নির্যাতন চলে, তার বিবরণ দিতে গিয়ে সামির গলা বন্ধ হয়ে আসে।
সামি জানান, রক্ষীরা তাঁকে বিবস্ত্র করে একটি ব্যাটন বা লাঠি দিয়ে ধর্ষণ করে। রক্ষণশীল ফিলিস্তিনি সমাজে এমন নির্যাতনের কথা স্বীকার করা সামাজিকভাবে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা জেনেও তিনি মুখ খুলেছেন। সামি বলেন, ‘সেখানে পাঁচ-ছয়জন রক্ষী ছিল। তারা অট্টহাসি দিচ্ছিল। এক রক্ষী আমাকে টিটকারি দিয়ে জিজ্ঞেস করল—‘কেমন লাগছে? মজা পাচ্ছো তো? দাঁড়াও, তোমার বউ, বোন, মা আর বন্ধুদেরও এখানে নিয়ে আসব, তাদের সঙ্গেও খেলব আমরা।’
যন্ত্রণায় কুঁকড়ে থাকা সামি তখন মনে মনে শুধু মৃত্যু কামনা করছিলেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, মরে গেলেই তো সব শেষ হয়ে যায়। সেই ব্যাটন দিয়ে ধর্ষণের শারীরিক যন্ত্রণার চেয়েও মনের ভেতর যে ধিক্কার জন্মাচ্ছিল, তা সহ্য করা কঠিন ছিল। সঙ্গে ছিল জান্তব নির্যাতন।’
প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলা সেই নারকীয় উল্লাসের সময় রক্ষীরা তাঁর যৌনাঙ্গেও প্রচণ্ড আঘাত করেছিল। সামি জানান, জেলের ভেতরে মারধর চলত প্রায় প্রতিদিন, তবে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছিল ওই একবার। বিবিসি ইসরায়েল প্রিজন সার্ভিসের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে, তারা একটি দায়সারা বিবৃতি পাঠায়। সেখানে বলা হয়, তারা আইন মেনেই বন্দীদের দেখাশোনা করে এবং সামির এসব অভিযোগ সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এমনকি এই ঘটনার কোনো তদন্ত হয়েছে কি না বা সামির কোনো চিকিৎসা-সংক্রান্ত নথি আছে কি না, সেসব প্রশ্নেও তারা নীরব থেকেছে।

বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি সদে তিমান সামরিক কারাগারের একটি ঘটনা গোটা ইসরায়েলকে বিভক্ত করে দিয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্টে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গাজার এক বন্দীকে ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। এতে ওই ব্যক্তির মলদ্বার মারাত্মকভাবে জখম হয়।
এই ঘটনায় পাঁচজন ইসরায়েলি রিজার্ভ সেনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত মাসে তারা টেলিভিশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকও করে, যেখানে চারজন সেনা কালো মুখোশ পরে এসেছিল। কেবল একজন তার মুখোশ খুলে বলে, তার কোনো ভয় নেই। তারা সবাই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করে।
এই ভিডিওটি ফাঁস করেছিলেন খোদ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ আইনজীবী মেজর জেনারেল ইফাত তোমের-ইয়েরুশালমি। পরে অবশ্য তিনি পদত্যাগ করেন। তিনি বলেছিলেন, বন্দীদের নিয়ে যারা মিথ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে, তাদের স্বরূপ উন্মোচনের জন্যই তিনি এটা করেছিলেন।
তবে এই ঘটনা নিয়ে ইসরায়েলি রাজনীতির অন্দরমহলে এখন অন্য হাওয়া বইছে। কট্টর-ডানপন্থীরা ওই অভিযুক্ত পাঁচ সেনার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করছে। এমনকি পার্লামেন্ট বা নেসেটেও এই নিয়ে হয়েছে তুলকালাম। লিকুদ পার্টির নেতা হ্যানোক মিলউইডস্কিকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, বন্দীকে ধর্ষণ করা কি কোনোভাবেই বৈধ হতে পারে? তিনি তখন চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘চুপ করো! হামাসের ওই খুনিদের (নুখবা) ওপর সবকিছুই বৈধ। সবকিছুই জায়েজ।’
এক জনমত জরিপেও উঠে এসেছে এক ভয়ংকর তথ্য। অধিকাংশ ইসরায়েলি নাগরিক মনে করেন, গাজার বন্দীদের ওপর নির্যাতন চালালেও সৈন্যদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত করা উচিত নয়।
পশ্চিম তীরের বাসিন্দা আহমেদ (ছদ্মনাম) ১১ সন্তানের বাবা। ৭ অক্টোবরের হামলার সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেওয়ার অপরাধে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচারে তাঁর এক বছরের জেল আর ৩ হাজার শেকেল জরিমানা হয়। মুক্তির পর তিনি শুনিয়েছেন এক অকল্পনীয় লাঞ্ছনার কথা।
আহমেদ বলেন, ‘তিনজন রক্ষী আমাকে বাথরুমে নিয়ে গেল। পুরো নগ্ন করে আমাকে মেঝেতে শুইয়ে দিল। একজন বিশালদেহী রক্ষী আমার মাথার ওপর দাঁড়িয়ে ছিল, পাছে আমি নড়াচড়া করি। তারপর আমি শুনলাম কেউ একজন একটা কুকুরের সঙ্গে কথা বলছে। কুকুরটার নাম তারা রেখেছিল মেসি।’
আহমেদ এরপর যা বর্ণনা করলেন, তা যেকোনো সভ্য মানুষকে শিউরে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। রক্ষীরা সেই কুকুরটিকে আহমেদের ওপর লেলিয়ে দিয়ে তাঁকে যৌন লাঞ্ছনা ও অপমানিত করে। আহমেদ বলেন, ‘আমি যত চিৎকার করছিলাম, তারা তত বেশি আমাকে মারছিল। আমি প্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।’ মুক্তি পাওয়ার ১২ দিন আগে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। আহমেদ জানিয়েছেন, তাঁর কাছে কোনো মেডিকেল রিপোর্ট নেই। কারণ, কারাগারের ভেতরে তাদের কোনো চিকিৎসা দেওয়া হতো না।
বর্তমানে ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে বন্দী ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যা ৭ অক্টোবরের আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এদের অনেকের বিরুদ্ধেই কোনো আনুষ্ঠানিক চার্জশিট নেই। জাতিসংঘের রিপোর্টে হামাসের হামলার যেমন নিন্দা করা হয়েছে, তেমনি গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে ইসরায়েলের গাজায় চালানো হত্যাযজ্ঞ ও বন্দী নির্যাতনের বিষয়ে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

ইসরায়েলের বন্দিশিবিরে ফিলিস্তিনি কয়েদিদের ওপর কেমন অকথ্য নির্যাতন আর যৌন নিগ্রহ চলছে, তার প্রমাণ মিলল দুজনের অভিজ্ঞতায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে বন্দী নির্যাতনের যে হাড় হিম করা বিবরণ উঠে এসেছে, তাঁরা নিজেরাই তার শিকার।
গত মাসে জাতিসংঘের কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চার তাদের গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল। তাদের মতে, ইসরায়েলি জেলগুলোতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের ওপর যে সুপরিকল্পিত এবং ব্যাপক নির্যাতন চলছে, তা এখন কার্যত ‘রাষ্ট্রীয় নীতিতে’ পরিণত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে হামলার পর থেকে এই পরিস্থিতির ভয়াবহতা বেড়েছে বহুগুণ। ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি মানবাধিকার সংগঠনগুলোও একে একটি ‘পদ্ধতিগত’ প্রথা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ইসরায়েল অবশ্য সরকারিভাবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু অধিকারকর্মীদের দাবি, ৭ অক্টোবরের সেই রক্তক্ষয়ী হামলা আর গাজায় আটকে থাকা জিম্মিদের দুরবস্থা নিয়ে ইসরায়েলি নাগরিকদের ভেতর যে তীব্র আক্রোশ জন্মেছে, তার সুযোগ নিচ্ছে ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ। একধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি সেখানে জেঁকে বসেছে, বিশেষ করে যারা হামাসকে সামান্যতম সমর্থন জুগিয়েছে, তাদের ওপর নেমে আসছে পৈশাচিক নিগ্রহ।
গত বছর একটি সামরিক কারাগারের সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। সেখানে দেখা যায়, গাজার এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে রক্ষীরা যৌন নির্যাতন করছে। সেই ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক ও রাজনৈতিক মহলে ছি ছি রব পড়ে যায়, পদত্যাগ করেন বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা।
৪৬ বছরের সামি আল-সাইয়ি এখন একটি আসবাবপত্রের দোকানে কাজ করেন। কিন্তু একসময় তাঁর পরিচয় ছিল অন্য। অধিকৃত পশ্চিম তীরের তুলকারেম শহরে তিনি সাংবাদিকতা করতেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইসরায়েলি সেনারা তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর অপরাধ? তিনি বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে হামাস বা অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করে দিতেন।

কোনো চার্জশিট বা অভিযোগ ছাড়াই সামিকে ১৬ মাস বন্দী করে রাখা হয়। ইসরায়েলের কুখ্যাত ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন’ বা প্রশাসনিক আটক ব্যবস্থার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে এ বছরের গ্রীষ্মে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। উত্তর ইসরায়েলের মেগিদ্দো কারাগারে থাকাকালে ২০২৪ সালের ১৩ মার্চ তাঁর ওপর যে অকথ্য নির্যাতন চলে, তার বিবরণ দিতে গিয়ে সামির গলা বন্ধ হয়ে আসে।
সামি জানান, রক্ষীরা তাঁকে বিবস্ত্র করে একটি ব্যাটন বা লাঠি দিয়ে ধর্ষণ করে। রক্ষণশীল ফিলিস্তিনি সমাজে এমন নির্যাতনের কথা স্বীকার করা সামাজিকভাবে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা জেনেও তিনি মুখ খুলেছেন। সামি বলেন, ‘সেখানে পাঁচ-ছয়জন রক্ষী ছিল। তারা অট্টহাসি দিচ্ছিল। এক রক্ষী আমাকে টিটকারি দিয়ে জিজ্ঞেস করল—‘কেমন লাগছে? মজা পাচ্ছো তো? দাঁড়াও, তোমার বউ, বোন, মা আর বন্ধুদেরও এখানে নিয়ে আসব, তাদের সঙ্গেও খেলব আমরা।’
যন্ত্রণায় কুঁকড়ে থাকা সামি তখন মনে মনে শুধু মৃত্যু কামনা করছিলেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমার কেবলই মনে হচ্ছিল, মরে গেলেই তো সব শেষ হয়ে যায়। সেই ব্যাটন দিয়ে ধর্ষণের শারীরিক যন্ত্রণার চেয়েও মনের ভেতর যে ধিক্কার জন্মাচ্ছিল, তা সহ্য করা কঠিন ছিল। সঙ্গে ছিল জান্তব নির্যাতন।’
প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলা সেই নারকীয় উল্লাসের সময় রক্ষীরা তাঁর যৌনাঙ্গেও প্রচণ্ড আঘাত করেছিল। সামি জানান, জেলের ভেতরে মারধর চলত প্রায় প্রতিদিন, তবে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছিল ওই একবার। বিবিসি ইসরায়েল প্রিজন সার্ভিসের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে, তারা একটি দায়সারা বিবৃতি পাঠায়। সেখানে বলা হয়, তারা আইন মেনেই বন্দীদের দেখাশোনা করে এবং সামির এসব অভিযোগ সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। এমনকি এই ঘটনার কোনো তদন্ত হয়েছে কি না বা সামির কোনো চিকিৎসা-সংক্রান্ত নথি আছে কি না, সেসব প্রশ্নেও তারা নীরব থেকেছে।

বন্দী নির্যাতনের অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি সদে তিমান সামরিক কারাগারের একটি ঘটনা গোটা ইসরায়েলকে বিভক্ত করে দিয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্টে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গাজার এক বন্দীকে ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। এতে ওই ব্যক্তির মলদ্বার মারাত্মকভাবে জখম হয়।
এই ঘটনায় পাঁচজন ইসরায়েলি রিজার্ভ সেনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। গত মাসে তারা টেলিভিশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকও করে, যেখানে চারজন সেনা কালো মুখোশ পরে এসেছিল। কেবল একজন তার মুখোশ খুলে বলে, তার কোনো ভয় নেই। তারা সবাই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করে।
এই ভিডিওটি ফাঁস করেছিলেন খোদ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ আইনজীবী মেজর জেনারেল ইফাত তোমের-ইয়েরুশালমি। পরে অবশ্য তিনি পদত্যাগ করেন। তিনি বলেছিলেন, বন্দীদের নিয়ে যারা মিথ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে, তাদের স্বরূপ উন্মোচনের জন্যই তিনি এটা করেছিলেন।
তবে এই ঘটনা নিয়ে ইসরায়েলি রাজনীতির অন্দরমহলে এখন অন্য হাওয়া বইছে। কট্টর-ডানপন্থীরা ওই অভিযুক্ত পাঁচ সেনার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করছে। এমনকি পার্লামেন্ট বা নেসেটেও এই নিয়ে হয়েছে তুলকালাম। লিকুদ পার্টির নেতা হ্যানোক মিলউইডস্কিকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, বন্দীকে ধর্ষণ করা কি কোনোভাবেই বৈধ হতে পারে? তিনি তখন চিৎকার করে বলেছিলেন, ‘চুপ করো! হামাসের ওই খুনিদের (নুখবা) ওপর সবকিছুই বৈধ। সবকিছুই জায়েজ।’
এক জনমত জরিপেও উঠে এসেছে এক ভয়ংকর তথ্য। অধিকাংশ ইসরায়েলি নাগরিক মনে করেন, গাজার বন্দীদের ওপর নির্যাতন চালালেও সৈন্যদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত করা উচিত নয়।
পশ্চিম তীরের বাসিন্দা আহমেদ (ছদ্মনাম) ১১ সন্তানের বাবা। ৭ অক্টোবরের হামলার সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দেওয়ার অপরাধে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিচারে তাঁর এক বছরের জেল আর ৩ হাজার শেকেল জরিমানা হয়। মুক্তির পর তিনি শুনিয়েছেন এক অকল্পনীয় লাঞ্ছনার কথা।
আহমেদ বলেন, ‘তিনজন রক্ষী আমাকে বাথরুমে নিয়ে গেল। পুরো নগ্ন করে আমাকে মেঝেতে শুইয়ে দিল। একজন বিশালদেহী রক্ষী আমার মাথার ওপর দাঁড়িয়ে ছিল, পাছে আমি নড়াচড়া করি। তারপর আমি শুনলাম কেউ একজন একটা কুকুরের সঙ্গে কথা বলছে। কুকুরটার নাম তারা রেখেছিল মেসি।’
আহমেদ এরপর যা বর্ণনা করলেন, তা যেকোনো সভ্য মানুষকে শিউরে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। রক্ষীরা সেই কুকুরটিকে আহমেদের ওপর লেলিয়ে দিয়ে তাঁকে যৌন লাঞ্ছনা ও অপমানিত করে। আহমেদ বলেন, ‘আমি যত চিৎকার করছিলাম, তারা তত বেশি আমাকে মারছিল। আমি প্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।’ মুক্তি পাওয়ার ১২ দিন আগে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। আহমেদ জানিয়েছেন, তাঁর কাছে কোনো মেডিকেল রিপোর্ট নেই। কারণ, কারাগারের ভেতরে তাদের কোনো চিকিৎসা দেওয়া হতো না।
বর্তমানে ইসরায়েলি কারাগারগুলোতে বন্দী ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যা ৭ অক্টোবরের আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এদের অনেকের বিরুদ্ধেই কোনো আনুষ্ঠানিক চার্জশিট নেই। জাতিসংঘের রিপোর্টে হামাসের হামলার যেমন নিন্দা করা হয়েছে, তেমনি গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে ইসরায়েলের গাজায় চালানো হত্যাযজ্ঞ ও বন্দী নির্যাতনের বিষয়ে।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান

এক বছর আগে গাজায় আগ্রাসনে নেমে বেশ চাপে ছিল ইসরায়েল। আটকে পড়া জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে দেশের মধ্যে বিক্ষোভ, ইরানের ভাড়াটে বাহিনীর চতুর্মুখী আক্রমণ, আর ওয়াশিংটনের চাপ ছিল যুদ্ধ থামাতে। তবে এবার ইরানে আক্রমণ শুরু করার পর তেমন কোনো অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নেই দেশটি।
১৬ জুন ২০২৫
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে একটি এলাকায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। আজ রোববার পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে। চলতি ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় এটি দ্বিতীয় বড় ধরনের গোলাগুলির ঘটনা।
২ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার সব দুয়ারই যখন রুদ্ধ, তখন প্রতিবাদের রাজপথই দলের একমাত্র ভরসা। তাই তিনি কর্মী-সমর্থকদের রাজপথের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি নামসর্বস্ব বা ‘শেল’ কোম্পানি গাজার নিরুপায় ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার কাজে সহায়তা করছে। মানবিক সহায়তার নামে বিপুল অর্থের বিনিময়ে দেশত্যাগে প্ররোচিত করার এই প্রক্রিয়াটিকে ভূখণ্ডটি থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘জাতিগত নিধনের’ অংশ হিসেবে দেখা
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার সব দুয়ারই যখন রুদ্ধ, তখন প্রতিবাদের রাজপথই দলের একমাত্র ভরসা। তাই তিনি কর্মী-সমর্থকদের রাজপথের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়েছে, তোশাখানা-২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়ার পর শনিবার ইসলামাবাদে খাইবার পাখতুনখাওয়া হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে পিটিআই মহাসচিব সালমান আকরাম রাজা এই বার্তা পৌঁছে দেন।
সাংবাদিকদের রাজা জানান, দলের আইনজীবীদের তথ্যমতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, আসন্ন বিচারকাজের জন্য জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে আদালতকক্ষে এমনকি পরিবারের সদস্যদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং বিচারকেরা দূর থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে হাজিরা দেবেন।
তিনি বলেন, আদালতের বিদ্যমান আদেশে ইমরান খানের জন্য উন্মুক্ত ও সুষ্ঠু বিচারের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল, অথচ মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার তাঁর নির্ধারিত সাক্ষাৎগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়মিত সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে সরকারের যে দাবি, তাকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজা।
রাজার ভাষ্যমতে, খান বলেছেন তিনি নিজের অবস্থান থেকে ‘একচুলও’ নড়বেন না এবং প্রয়োজনে শাহাদাত বরণ করতে হলেও মানুষের মুক্তির জন্য তিনি প্রস্তুত। খানকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘বিচারের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে, আদালতের শুনানি হচ্ছে না এবং ন্যায়বিচার এখন আর নাগালের মধ্যে নেই; তাই প্রতিবাদই একমাত্র পথ।’
তিনি আরও জানান, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা সব রাজবন্দী, বিশেষ করে নারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন—জনগণকে এখন তাদের অধিকার আদায়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। এদিন ইমরান খান তাঁর আইনজীবী সালমান সাফদারের সঙ্গে স্বল্প সময়ের জন্য সাক্ষাৎ করেছেন বলেও নিশ্চিত করেন রাজা। তাঁর অভিযোগ, রায় দেওয়া হয়েছে খানের অনুপস্থিতিতে এবং তাঁর আইনজীবী দলের কাউকে উপস্থিত থাকার সুযোগ না দিয়েই।
রাজা বলেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা রাজপথের আন্দোলনের প্রস্তুতির ডাক দিয়েছেন। স্ত্রী বুশরা বিবির কারাদণ্ড নিয়ে তিনি ভীষণ ব্যথিত। তাঁর দাবি, কেবল তাঁর স্ত্রী হওয়ার কারণেই বুশরা বিবিকে জেলে ভরা হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার তোশাখানা মামলায় দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীকে দেওয়া সাজার তীব্র সমালোচনা করেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং বেশ কয়েকজন বিরোধী দলীয় নেতা। এই রায়কে তাঁরা গভীর অবিচারের দৃষ্টান্ত বলে অভিহিত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে দলটির পক্ষ থেকে এই রায়কে ‘ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। উল্লেখ করা হয়, রায় ঘোষণার সময় ইমরান খান নাকি আদিয়ালা জেলের ভেতরে স্থাপিত আদালতেই উপস্থিত ছিলেন।
পিটিআই জানিয়েছে, ইমরান খানের পরিবারের সদস্যদের আদালতকক্ষে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। এই রুদ্ধদ্বার বিচারপ্রক্রিয়াকে ‘অবাধ বা সুষ্ঠু কোনোটাই নয়’ বলে অভিহিত করে তারা অভিযোগ করে, এটি কার্যত ছিল ‘মিলিটারি ট্রায়াল’ বা সামরিক বিচার।
পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা ওমর আইয়ুব এক্সে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানে আইনের শাসন বলে কিছুর অস্তিত্ব নেই।’ বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির প্রধান আখতার মঙ্গল প্রশ্ন তুলেছেন, তোশাখানা-সংক্রান্ত বিষয় বা দেশকে বিভক্ত করার মতো কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের কেন একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হয়নি। তিনি বলেন, ‘যাঁরা দেশ ও সংবিধান ভেঙেছেন, তাঁদের গার্ড অব অনার দেওয়া হয়েছে।’ তিনি এই পরিস্থিতিকে ‘অবিচারের স্পষ্ট উদাহরণ’ বলে আখ্যা দেন।
তেহরিক তাহাফ্ফুজ আইন-ই-পাকিস্তানের নেতা আল্লামা নাসির আব্বাস বলেছেন, এই রায় জনগণের অধিকার ও সংসদ উভয়কেই খাটো করেছে। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীদের মনোবল ভেঙে দিতেই সরকার এমন অপচেষ্টা চালাচ্ছে। একই দলের নেতা মোস্তফা নওয়াজ খোকার যুক্তি দেন, এই নিপীড়ন কেবল রাজনীতিবিদদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। উদাহরণ হিসেবে তিনি ইমান মাজারি, মতিউল্লাহ জান এবং বিচারপতি জাহাঙ্গীরির আইনি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন।
পিটিআইয়ের ফেরদৌস শামীম নকভি বলেন, এই রায় বিচারব্যবস্থার ত্রুটিগুলোকে উন্মোচিত করে দিয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দল হয়তো আদালত বর্জনের কথা ভাবতে পারে। তাঁর দাবি, কর্মীদের বিরুদ্ধে ৬৫ হাজার মামলা রয়েছে এবং ‘মিথ্যা রায়গুলো বিপজ্জনক ব্যবধান তৈরি করছে’।
অন্যদিকে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এই রায়ের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করার আগে আদালত যথেষ্ট প্রমাণ পর্যালোচনা করেছেন। তাঁর দাবি, ওই দম্পতি দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন এবং রায়টি সুষ্ঠু হয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের দুর্নীতির মামলায় সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই তোশাখানা মামলায় খানের কারাদণ্ড কার্যকর হবে।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার সব দুয়ারই যখন রুদ্ধ, তখন প্রতিবাদের রাজপথই দলের একমাত্র ভরসা। তাই তিনি কর্মী-সমর্থকদের রাজপথের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়েছে, তোশাখানা-২ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়ার পর শনিবার ইসলামাবাদে খাইবার পাখতুনখাওয়া হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে পিটিআই মহাসচিব সালমান আকরাম রাজা এই বার্তা পৌঁছে দেন।
সাংবাদিকদের রাজা জানান, দলের আইনজীবীদের তথ্যমতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, আসন্ন বিচারকাজের জন্য জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে আদালতকক্ষে এমনকি পরিবারের সদস্যদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং বিচারকেরা দূর থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে হাজিরা দেবেন।
তিনি বলেন, আদালতের বিদ্যমান আদেশে ইমরান খানের জন্য উন্মুক্ত ও সুষ্ঠু বিচারের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল, অথচ মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার তাঁর নির্ধারিত সাক্ষাৎগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়মিত সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে বলে সরকারের যে দাবি, তাকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজা।
রাজার ভাষ্যমতে, খান বলেছেন তিনি নিজের অবস্থান থেকে ‘একচুলও’ নড়বেন না এবং প্রয়োজনে শাহাদাত বরণ করতে হলেও মানুষের মুক্তির জন্য তিনি প্রস্তুত। খানকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘বিচারের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে, আদালতের শুনানি হচ্ছে না এবং ন্যায়বিচার এখন আর নাগালের মধ্যে নেই; তাই প্রতিবাদই একমাত্র পথ।’
তিনি আরও জানান, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা সব রাজবন্দী, বিশেষ করে নারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন—জনগণকে এখন তাদের অধিকার আদায়ে রুখে দাঁড়াতে হবে। এদিন ইমরান খান তাঁর আইনজীবী সালমান সাফদারের সঙ্গে স্বল্প সময়ের জন্য সাক্ষাৎ করেছেন বলেও নিশ্চিত করেন রাজা। তাঁর অভিযোগ, রায় দেওয়া হয়েছে খানের অনুপস্থিতিতে এবং তাঁর আইনজীবী দলের কাউকে উপস্থিত থাকার সুযোগ না দিয়েই।
রাজা বলেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা রাজপথের আন্দোলনের প্রস্তুতির ডাক দিয়েছেন। স্ত্রী বুশরা বিবির কারাদণ্ড নিয়ে তিনি ভীষণ ব্যথিত। তাঁর দাবি, কেবল তাঁর স্ত্রী হওয়ার কারণেই বুশরা বিবিকে জেলে ভরা হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার তোশাখানা মামলায় দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীকে দেওয়া সাজার তীব্র সমালোচনা করেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং বেশ কয়েকজন বিরোধী দলীয় নেতা। এই রায়কে তাঁরা গভীর অবিচারের দৃষ্টান্ত বলে অভিহিত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে দলটির পক্ষ থেকে এই রায়কে ‘ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। উল্লেখ করা হয়, রায় ঘোষণার সময় ইমরান খান নাকি আদিয়ালা জেলের ভেতরে স্থাপিত আদালতেই উপস্থিত ছিলেন।
পিটিআই জানিয়েছে, ইমরান খানের পরিবারের সদস্যদের আদালতকক্ষে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। এই রুদ্ধদ্বার বিচারপ্রক্রিয়াকে ‘অবাধ বা সুষ্ঠু কোনোটাই নয়’ বলে অভিহিত করে তারা অভিযোগ করে, এটি কার্যত ছিল ‘মিলিটারি ট্রায়াল’ বা সামরিক বিচার।
পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা ওমর আইয়ুব এক্সে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানে আইনের শাসন বলে কিছুর অস্তিত্ব নেই।’ বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির প্রধান আখতার মঙ্গল প্রশ্ন তুলেছেন, তোশাখানা-সংক্রান্ত বিষয় বা দেশকে বিভক্ত করার মতো কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের কেন একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হয়নি। তিনি বলেন, ‘যাঁরা দেশ ও সংবিধান ভেঙেছেন, তাঁদের গার্ড অব অনার দেওয়া হয়েছে।’ তিনি এই পরিস্থিতিকে ‘অবিচারের স্পষ্ট উদাহরণ’ বলে আখ্যা দেন।
তেহরিক তাহাফ্ফুজ আইন-ই-পাকিস্তানের নেতা আল্লামা নাসির আব্বাস বলেছেন, এই রায় জনগণের অধিকার ও সংসদ উভয়কেই খাটো করেছে। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীদের মনোবল ভেঙে দিতেই সরকার এমন অপচেষ্টা চালাচ্ছে। একই দলের নেতা মোস্তফা নওয়াজ খোকার যুক্তি দেন, এই নিপীড়ন কেবল রাজনীতিবিদদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। উদাহরণ হিসেবে তিনি ইমান মাজারি, মতিউল্লাহ জান এবং বিচারপতি জাহাঙ্গীরির আইনি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন।
পিটিআইয়ের ফেরদৌস শামীম নকভি বলেন, এই রায় বিচারব্যবস্থার ত্রুটিগুলোকে উন্মোচিত করে দিয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দল হয়তো আদালত বর্জনের কথা ভাবতে পারে। তাঁর দাবি, কর্মীদের বিরুদ্ধে ৬৫ হাজার মামলা রয়েছে এবং ‘মিথ্যা রায়গুলো বিপজ্জনক ব্যবধান তৈরি করছে’।
অন্যদিকে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এই রায়ের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করার আগে আদালত যথেষ্ট প্রমাণ পর্যালোচনা করেছেন। তাঁর দাবি, ওই দম্পতি দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন এবং রায়টি সুষ্ঠু হয়েছে। তিনি আরও যোগ করেন, ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের দুর্নীতির মামলায় সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই তোশাখানা মামলায় খানের কারাদণ্ড কার্যকর হবে।

এক বছর আগে গাজায় আগ্রাসনে নেমে বেশ চাপে ছিল ইসরায়েল। আটকে পড়া জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে দেশের মধ্যে বিক্ষোভ, ইরানের ভাড়াটে বাহিনীর চতুর্মুখী আক্রমণ, আর ওয়াশিংটনের চাপ ছিল যুদ্ধ থামাতে। তবে এবার ইরানে আক্রমণ শুরু করার পর তেমন কোনো অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নেই দেশটি।
১৬ জুন ২০২৫
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে একটি এলাকায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। আজ রোববার পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে। চলতি ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় এটি দ্বিতীয় বড় ধরনের গোলাগুলির ঘটনা।
২ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলের বন্দিশিবিরে ফিলিস্তিনি কয়েদিদের ওপর কেমন অকথ্য নির্যাতন আর যৌন নিগ্রহ চলছে, তার প্রমাণ মিলল দুজনের অভিজ্ঞতায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে বন্দী নির্যাতনের যে হাড় হিম করা বিবরণ উঠে এসেছে, তাঁরা নিজেরাই তার শিকার।
২ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি নামসর্বস্ব বা ‘শেল’ কোম্পানি গাজার নিরুপায় ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার কাজে সহায়তা করছে। মানবিক সহায়তার নামে বিপুল অর্থের বিনিময়ে দেশত্যাগে প্ররোচিত করার এই প্রক্রিয়াটিকে ভূখণ্ডটি থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘জাতিগত নিধনের’ অংশ হিসেবে দেখা
৫ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি নামসর্বস্ব বা ‘শেল’ কোম্পানি গাজার নিরুপায় ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার কাজে সহায়তা করছে। মানবিক সহায়তার নামে বিপুল অর্থের বিনিময়ে দেশত্যাগে প্ররোচিত করার এই প্রক্রিয়াকে ভূখণ্ডটি থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘জাতিগত নিধনের’ অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক অনুসন্ধানে গত মাসে গাজা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫৩ জন যাত্রী নিয়ে যাওয়া রহস্যময় ফ্লাইটের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এতে দেখা যায়, ‘আল-মাজদ ইউরোপ’ নামের একটি অনিবন্ধিত ফ্রন্ট অর্গানাইজেশন এই কাজের নেপথ্যে রয়েছে। যারা ভুয়া মানবিক সহায়তার দাবি করে আসছিল।
গত ১৩ নভেম্বর এই ফিলিস্তিনিরা জোহানেসবার্গ ও প্রিটোরিয়ার ওআর তাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। তাদের পাসপোর্টে ইসরায়েলের কোনো ডিপারচার বা বহির্গমন সিল না থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্ত পুলিশ তাদের প্রবেশাধিকার দিতে অস্বীকার করে। ১২ ঘণ্টা উড়োজাহাজে আটকে থাকার পর অবশেষে তাদের নামার অনুমতি দেওয়া হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ‘মানবিক কারণে’ তাদের গ্রহণের কথা স্বীকার করলেও জানান, তাঁর সরকার বিষয়টি তদন্ত করবে। দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের সমর্থক হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের সন্দেহ, এই লোকগুলোকে গাজা উপত্যকা থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘বের করে দেওয়া’ হয়েছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এর আগে প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, তাঁরা ফিলিস্তিনিদের গাজা ত্যাগের বিষয়টিকে ‘স্বেচ্ছা হিজরত’ হিসেবে সমর্থন করেন। তবে বাস্তবে এটি জোরপূর্বক উচ্ছেদ ছাড়া আর কিছুই নয়। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনিদের গাজা ত্যাগে উৎসাহিত করতে একটি বিতর্কিত ব্যুরো গঠন করে, যার প্রধান করা হয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপপরিচালক ইয়াকভ ব্লিটস্টাইনকে। সে সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ দাবি করেছিলেন, গাজার ৪০ শতাংশ বাসিন্দা ‘দেশত্যাগে আগ্রহী’।
এর ঠিক আগের মাসে আল-মাজদ ইউরোপ তাদের ওয়েবসাইট চালু করে। সেখানে বলা হয়, তারা মুসলিম দেশগুলোতে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে এবং বিশেষ করে ‘গাজাবাসীদের গাজা থেকে বের হতে’ সাহায্য করছে। তারা গাজায় ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য ক্লিনিক এবং ফিলিস্তিনি চিকিৎসকদের বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা করার মিথ্যা দাবিও করে।
দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়া সেই ফ্লাইটের এক যাত্রী নিজের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, অনলাইনে লিংক পেয়ে তিনি এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সংস্থাটি শুধু গাজা থেকে বের হওয়ার পথই নয়, নিরাপত্তা ও চিকিৎসার আশ্বাসও দিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘শুরুতে তারা বলেছিল এটি ফ্রি। এরপর জনপ্রতি ১ হাজার ৪০০ ডলার চাইল। শেষ পর্যন্ত সেই দাম ২ হাজার ৫০০ ডলারে গিয়ে ঠেকেছিল।’
আল জাজিরার সংগ্রহ করা সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে, জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ২ হাজার ডলার পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। যাত্রীদের গোপনীয়তা বজায় রাখার কঠোর শর্ত দেওয়া হয়েছিল এবং ফ্লাইটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে বিস্তারিত জানানো হতো।
যাত্রীরা জানিয়েছে, তাদের দক্ষিণ গাজার কারেম আবু সালেম (ইসরায়েলে যেটিকে কেরেম শালম বলা হয়) ক্রসিংয়ে যেতে বলা হয়েছিল। সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়া হয় এবং ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাসে করে ইলাত শহরের কাছে র্যামন বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজকর্মী নাইজেল ব্রাঙ্কেন আফ্রিকায় ওই যাত্রীদের সহায়তা করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই অভিযানে ইসরায়েলের জড়িত থাকার স্পষ্ট ছাপ রয়েছে...এটি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার একটি প্রক্রিয়া।’ উদ্বাস্তুরা জানায়, ফ্লাইটে ওঠার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তারা জানত না তাদের গন্তব্য কোথায়।
ফ্লাইইউ নামক একটি নতুন এয়ারলাইনসের বিমানে তাদের তোলা হয়, যদিও তাদের নথিপত্রে কোনো বহির্গমন সিল ছিল না। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই এয়ারলাইনসটি ইসরায়েলি বিমানবন্দর থেকে রোমানিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এমন আরও অনেক ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
আল-মাজদ ইউরোপ নিজেদের ২০১০ সালে জার্মানিতে প্রতিষ্ঠিত একটি মানবিক ফাউন্ডেশন হিসেবে দাবি করে, যাদের প্রধান কার্যালয় অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায়। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে এটি একটি প্রতারণা। জার্মানি বা ইউরোপের কোনো ডেটাবেসে এই নামে কোনো কোম্পানির অস্তিত্ব নেই। জেরুজালেমের নথিতেও তাদের দেওয়া ঠিকানার কোনো হদিস মেলেনি; গুগল ম্যাপে ওই স্থানে একটি হাসপাতাল ও ক্যাফে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে এই সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই ফিলিস্তিনি মুখ শনাক্ত করা হয়েছে। একজন মুয়াদ হিশাম সাইদাম, যাকে গাজায় সংস্থাটির মানবিক প্রকল্পের ম্যানেজার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেখা গেছে, ২০২৪ সালের মে মাসে তাঁর স্ত্রী দেশত্যাগের সাহায্যের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। এক বছর পর সাইদাম একটি রোমানিয়ান বিমানে ওঠার ছবি পোস্ট করে জানান তিনি গাজা ছাড়ছেন।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিনি সম্ভবত ২০২৫ সালের ২৭ মে র্যামন বিমানবন্দর থেকে বুদাপেস্টের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, তাঁর পরিবার বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় আছে, তবে আল-মাজদ ইউরোপের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের বিষয়টি অস্পষ্ট। দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম কেবল ‘আদনান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যার কোনো ডিজিটাল উপস্থিতি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
১৩ নভেম্বর জোহানেসবার্গ ফ্লাইটের দিনই আল-মাজদ তাদের ওয়েবসাইট থেকে অংশীদার কোম্পানিগুলোর একটি তালিকা মুছে ফেলে। আল জাজিরা সেটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সেখানে রেডক্রসের মতো প্রথিতযশা সংস্থার নাম থাকলেও একটি নাম নজর কাড়ে—‘ট্যালেন্ট গ্লোবাস।’ ২০২৪ সালে এস্তোনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এই রিক্রুটিং কোম্পানির তহবিলে ছিল মাত্র ৩৫০ ডলার। এর পরিচালক টম লিন্ড একজন ইসরায়েলি ও এস্তোনীয় নাগরিক।
ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজের রিপোর্টেও টম লিন্ডের নাম এসেছে গাজা ত্যাগের ফ্লাইটের সমন্বয়ক হিসেবে। ২০২৫ সালের মে মাসে লিন্ড দাবি করেন, তিনি ‘ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তায়’ মনোনিবেশ করেছেন এবং অনেক মানুষকে গাজা থেকে সরাতে সাহায্য করেছেন। তবে তাঁর কোম্পানির অন্য তিন কর্মীর ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া ‘স্টক ইমেজ’ বা ভুয়া ছবি হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।
আল-মাজদ ইউরোপ আসলে একটি ভুয়া মানবিক সংস্থা। প্রশ্ন উঠেছে, এই আড়ালে তারা আসলে কী লুকাতে চাইছে? প্রকাশ্যে ইসরায়েল ‘স্বেচ্ছা হিজরত’ পরিকল্পনা থেকে পিছু হটার কথা বললেও আল জাজিরার অনুসন্ধান বলছে ভিন্ন কথা। এই গোপন ফ্লাইটগুলো কি গাজাকে জনশূন্য করার কোনো বড় পরিকল্পনারই অংশ?

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি নামসর্বস্ব বা ‘শেল’ কোম্পানি গাজার নিরুপায় ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার কাজে সহায়তা করছে। মানবিক সহায়তার নামে বিপুল অর্থের বিনিময়ে দেশত্যাগে প্ররোচিত করার এই প্রক্রিয়াকে ভূখণ্ডটি থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘জাতিগত নিধনের’ অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক অনুসন্ধানে গত মাসে গাজা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫৩ জন যাত্রী নিয়ে যাওয়া রহস্যময় ফ্লাইটের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এতে দেখা যায়, ‘আল-মাজদ ইউরোপ’ নামের একটি অনিবন্ধিত ফ্রন্ট অর্গানাইজেশন এই কাজের নেপথ্যে রয়েছে। যারা ভুয়া মানবিক সহায়তার দাবি করে আসছিল।
গত ১৩ নভেম্বর এই ফিলিস্তিনিরা জোহানেসবার্গ ও প্রিটোরিয়ার ওআর তাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। তাদের পাসপোর্টে ইসরায়েলের কোনো ডিপারচার বা বহির্গমন সিল না থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্ত পুলিশ তাদের প্রবেশাধিকার দিতে অস্বীকার করে। ১২ ঘণ্টা উড়োজাহাজে আটকে থাকার পর অবশেষে তাদের নামার অনুমতি দেওয়া হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ‘মানবিক কারণে’ তাদের গ্রহণের কথা স্বীকার করলেও জানান, তাঁর সরকার বিষয়টি তদন্ত করবে। দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের সমর্থক হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের সন্দেহ, এই লোকগুলোকে গাজা উপত্যকা থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘বের করে দেওয়া’ হয়েছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এর আগে প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, তাঁরা ফিলিস্তিনিদের গাজা ত্যাগের বিষয়টিকে ‘স্বেচ্ছা হিজরত’ হিসেবে সমর্থন করেন। তবে বাস্তবে এটি জোরপূর্বক উচ্ছেদ ছাড়া আর কিছুই নয়। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনিদের গাজা ত্যাগে উৎসাহিত করতে একটি বিতর্কিত ব্যুরো গঠন করে, যার প্রধান করা হয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপপরিচালক ইয়াকভ ব্লিটস্টাইনকে। সে সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ দাবি করেছিলেন, গাজার ৪০ শতাংশ বাসিন্দা ‘দেশত্যাগে আগ্রহী’।
এর ঠিক আগের মাসে আল-মাজদ ইউরোপ তাদের ওয়েবসাইট চালু করে। সেখানে বলা হয়, তারা মুসলিম দেশগুলোতে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে এবং বিশেষ করে ‘গাজাবাসীদের গাজা থেকে বের হতে’ সাহায্য করছে। তারা গাজায় ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য ক্লিনিক এবং ফিলিস্তিনি চিকিৎসকদের বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা করার মিথ্যা দাবিও করে।
দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়া সেই ফ্লাইটের এক যাত্রী নিজের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, অনলাইনে লিংক পেয়ে তিনি এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সংস্থাটি শুধু গাজা থেকে বের হওয়ার পথই নয়, নিরাপত্তা ও চিকিৎসার আশ্বাসও দিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘শুরুতে তারা বলেছিল এটি ফ্রি। এরপর জনপ্রতি ১ হাজার ৪০০ ডলার চাইল। শেষ পর্যন্ত সেই দাম ২ হাজার ৫০০ ডলারে গিয়ে ঠেকেছিল।’
আল জাজিরার সংগ্রহ করা সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে, জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ২ হাজার ডলার পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। যাত্রীদের গোপনীয়তা বজায় রাখার কঠোর শর্ত দেওয়া হয়েছিল এবং ফ্লাইটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে বিস্তারিত জানানো হতো।
যাত্রীরা জানিয়েছে, তাদের দক্ষিণ গাজার কারেম আবু সালেম (ইসরায়েলে যেটিকে কেরেম শালম বলা হয়) ক্রসিংয়ে যেতে বলা হয়েছিল। সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়া হয় এবং ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাসে করে ইলাত শহরের কাছে র্যামন বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজকর্মী নাইজেল ব্রাঙ্কেন আফ্রিকায় ওই যাত্রীদের সহায়তা করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই অভিযানে ইসরায়েলের জড়িত থাকার স্পষ্ট ছাপ রয়েছে...এটি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার একটি প্রক্রিয়া।’ উদ্বাস্তুরা জানায়, ফ্লাইটে ওঠার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তারা জানত না তাদের গন্তব্য কোথায়।
ফ্লাইইউ নামক একটি নতুন এয়ারলাইনসের বিমানে তাদের তোলা হয়, যদিও তাদের নথিপত্রে কোনো বহির্গমন সিল ছিল না। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই এয়ারলাইনসটি ইসরায়েলি বিমানবন্দর থেকে রোমানিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এমন আরও অনেক ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
আল-মাজদ ইউরোপ নিজেদের ২০১০ সালে জার্মানিতে প্রতিষ্ঠিত একটি মানবিক ফাউন্ডেশন হিসেবে দাবি করে, যাদের প্রধান কার্যালয় অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায়। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে এটি একটি প্রতারণা। জার্মানি বা ইউরোপের কোনো ডেটাবেসে এই নামে কোনো কোম্পানির অস্তিত্ব নেই। জেরুজালেমের নথিতেও তাদের দেওয়া ঠিকানার কোনো হদিস মেলেনি; গুগল ম্যাপে ওই স্থানে একটি হাসপাতাল ও ক্যাফে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে এই সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই ফিলিস্তিনি মুখ শনাক্ত করা হয়েছে। একজন মুয়াদ হিশাম সাইদাম, যাকে গাজায় সংস্থাটির মানবিক প্রকল্পের ম্যানেজার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেখা গেছে, ২০২৪ সালের মে মাসে তাঁর স্ত্রী দেশত্যাগের সাহায্যের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। এক বছর পর সাইদাম একটি রোমানিয়ান বিমানে ওঠার ছবি পোস্ট করে জানান তিনি গাজা ছাড়ছেন।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিনি সম্ভবত ২০২৫ সালের ২৭ মে র্যামন বিমানবন্দর থেকে বুদাপেস্টের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, তাঁর পরিবার বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় আছে, তবে আল-মাজদ ইউরোপের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের বিষয়টি অস্পষ্ট। দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম কেবল ‘আদনান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যার কোনো ডিজিটাল উপস্থিতি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
১৩ নভেম্বর জোহানেসবার্গ ফ্লাইটের দিনই আল-মাজদ তাদের ওয়েবসাইট থেকে অংশীদার কোম্পানিগুলোর একটি তালিকা মুছে ফেলে। আল জাজিরা সেটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সেখানে রেডক্রসের মতো প্রথিতযশা সংস্থার নাম থাকলেও একটি নাম নজর কাড়ে—‘ট্যালেন্ট গ্লোবাস।’ ২০২৪ সালে এস্তোনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এই রিক্রুটিং কোম্পানির তহবিলে ছিল মাত্র ৩৫০ ডলার। এর পরিচালক টম লিন্ড একজন ইসরায়েলি ও এস্তোনীয় নাগরিক।
ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজের রিপোর্টেও টম লিন্ডের নাম এসেছে গাজা ত্যাগের ফ্লাইটের সমন্বয়ক হিসেবে। ২০২৫ সালের মে মাসে লিন্ড দাবি করেন, তিনি ‘ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তায়’ মনোনিবেশ করেছেন এবং অনেক মানুষকে গাজা থেকে সরাতে সাহায্য করেছেন। তবে তাঁর কোম্পানির অন্য তিন কর্মীর ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া ‘স্টক ইমেজ’ বা ভুয়া ছবি হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।
আল-মাজদ ইউরোপ আসলে একটি ভুয়া মানবিক সংস্থা। প্রশ্ন উঠেছে, এই আড়ালে তারা আসলে কী লুকাতে চাইছে? প্রকাশ্যে ইসরায়েল ‘স্বেচ্ছা হিজরত’ পরিকল্পনা থেকে পিছু হটার কথা বললেও আল জাজিরার অনুসন্ধান বলছে ভিন্ন কথা। এই গোপন ফ্লাইটগুলো কি গাজাকে জনশূন্য করার কোনো বড় পরিকল্পনারই অংশ?

এক বছর আগে গাজায় আগ্রাসনে নেমে বেশ চাপে ছিল ইসরায়েল। আটকে পড়া জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে দেশের মধ্যে বিক্ষোভ, ইরানের ভাড়াটে বাহিনীর চতুর্মুখী আক্রমণ, আর ওয়াশিংটনের চাপ ছিল যুদ্ধ থামাতে। তবে এবার ইরানে আক্রমণ শুরু করার পর তেমন কোনো অভ্যন্তরীণ বা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নেই দেশটি।
১৬ জুন ২০২৫
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উপকণ্ঠে একটি এলাকায় বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে। আজ রোববার পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে। চলতি ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় এটি দ্বিতীয় বড় ধরনের গোলাগুলির ঘটনা।
২ ঘণ্টা আগে
ইসরায়েলের বন্দিশিবিরে ফিলিস্তিনি কয়েদিদের ওপর কেমন অকথ্য নির্যাতন আর যৌন নিগ্রহ চলছে, তার প্রমাণ মিলল দুজনের অভিজ্ঞতায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে বন্দী নির্যাতনের যে হাড় হিম করা বিবরণ উঠে এসেছে, তাঁরা নিজেরাই তার শিকার।
২ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ন্যায়বিচার পাওয়ার সব দুয়ারই যখন রুদ্ধ, তখন প্রতিবাদের রাজপথই দলের একমাত্র ভরসা। তাই তিনি কর্মী-সমর্থকদের রাজপথের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
৪ ঘণ্টা আগে