Ajker Patrika

হামলার মুখে নাগরিকদের নিরাপদ রাখে ইসরায়েলের ‘মামাদ’ কৌশল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ১৬: ৪৩
ইসরায়েলের একটি শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন ভীত সন্ত্রস্ত এক নারী। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলের একটি শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন ভীত সন্ত্রস্ত এক নারী। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল একটি যুদ্ধপ্রবণ দেশ। তাই নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে সেখানে রাষ্ট্রীয় অগ্রাধিকার হিসেবে দেখা হয়। দীর্ঘদিন ধরে চলমান আঞ্চলিক উত্তেজনা, বিশেষ করে গাজা ও লেবাননের সঙ্গে সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলে, শত্রুপক্ষের রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঝুঁকি দেশটিতে অত্যন্ত প্রকট।

এই বাস্তবতায় ইসরায়েল সরকার একটি সুসংগঠিত ও কার্যকর সুরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। এর মাধ্যমে হামলার মুখে সাধারণ মানুষকে দ্রুত আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের পর ইসরায়েল সরকার গৃহনির্মাণে ‘মামাদ’ নামে একটি নিরাপত্তা নির্দেশিকা জারি করে। মূলত এর মাধ্যমে প্রতিটি বসতিতে একটি ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকক্ষ অন্তর্ভুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়। এটি একটি কংক্রিটে মোড়ানো ঘর, যা গ্যাস, বিস্ফোরণ ও ধ্বংসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী। শহুরে বসতিতে প্রতিটি নতুন ফ্ল্যাটেই এখন এই কক্ষ থাকে এবং পুরোনো ভবনগুলোতেও ধাপে ধাপে এটি সংযোজনের কাজ চলছে।

এ ছাড়া শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়েই নয়, ইসরায়েলজুড়ে রয়েছে হাজার হাজার সরকারি শেল্টার, যা সাধারণত খোলাই থাকে কিংবা জরুরি সংকেতে অতি দ্রুত খুলে দেওয়া হয়। স্কুল, হাসপাতাল, অফিস এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও শেল্টারের ব্যবস্থা রয়েছে। ‘হোম ফ্রন্ট কমান্ড’ নামে একটি সামরিক শাখা নাগরিকদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়—হামলার সময় কোথায় এবং কীভাবে নিরাপদে আশ্রয় নিতে হবে।

শেল্টারে পৌঁছানোর সময়সীমাও অঞ্চলভেদে নির্ধারিত। গাজা সীমান্তের কাছে বসবাসকারীদের সাইরেন বাজানোর পর মামাদে আশ্রয় নিতে মাত্র ১৫ সেকেন্ড সময় থাকে। আর তেলআবিব ও জেরুজালেমের মতো শহরে এই সময় ৩০ থেকে ৯০ সেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে। দেশের প্রত্যেক নাগরিক জানে—সংকেত শোনামাত্রই কোথায় দৌড়াতে হবে।

তবে এই উন্নত ব্যবস্থার মধ্যেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিশেষ করে পুরোনো বা গরিব এলাকায় অনেক সময় পর্যাপ্ত শেল্টার না থাকায় কিছু মানুষ ঝুঁকির মধ্যে থাকে। এ ছাড়া একসঙ্গে বহু মানুষ শেল্টারে আশ্রয় নিতে চাইলে ভিড় ও বিশৃঙ্খলাও দেখা দেয়।

ইসরায়েলের একটি বাড়িতে তৈরি ’মামাদ’
ইসরায়েলের একটি বাড়িতে তৈরি ’মামাদ’

এ ছাড়া ইসরায়েলের ভেতরে থাকা কিছু ফিলিস্তিনি শহরে আশ্রয়কেন্দ্রের ঘাটতি দেখা গেছে সাম্প্রতিক হামলাগুলোতে। এ বিষয়ে সম্প্রতি ইরানের হামলার মুখে উত্তর ইসরায়েল থেকে বিবিসি অনলাইনের সংবাদদাতা লোন ওয়েলস বলেন, ‘হামলার সতর্কতা দিয়ে যখন সাইরেন বেজে উঠল, তখন আমরা ছিলাম তামরা শহরে—উত্তর ইসরায়েলের হাইফার কাছাকাছি। এই শহরে কোনো সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র নেই।’

পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ওয়েলস জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা একটি অস্থায়ী আশ্রয়ে ছুটে যান, জানালাবিশিষ্ট ওই কেন্দ্রের বহিরাংশ উন্মুক্ত এবং পাতলা ইট দিয়ে তৈরি। এটি ছিল এমন একটি বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে—গত শনিবারের এক হামলায় যে বাড়িটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ওই হামলায় একই পরিবারের চারজন আরব-ইসরায়েলি নারী নিহত হয়েছেন।

যদি এমন কোনো স্থানে আবার হামলা হয়, তাহলে এ ধরনের পাতলা ইটের কাঠামো নিশ্চিতভাবেই ধসে পড়বে আশ্রয়ে থাকা মানুষের ওপর।

মামাদে আশ্রয় নেওয়া একটি ইসরায়েলি পরিবার। ছবি: সংগৃহীত
মামাদে আশ্রয় নেওয়া একটি ইসরায়েলি পরিবার। ছবি: সংগৃহীত

ওয়েলস বলেন, ‘আমরা আশপাশে তীব্র শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম, আশ্রয়কেন্দ্রের দেয়ালগুলো কাঁপছিল। ভেতরে থাকা পরিবারগুলো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল—কেউ প্রার্থনা করছিল, কেউ কাঁদছিল, আবার কেউ একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছিল প্রতিটি বিস্ফোরণের শব্দে।’

ওই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে নানামুখী ভয় কাজ করছিল বলেও জানান বিবিসি সংবাদদাতা। একদিকে নিজেদের সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যু, অন্যদিকে সংঘাতের প্রভাব নিজেদের বাড়ির সীমানায় পৌঁছে যাওয়া এবং আশপাশে কোনো নিরাপদ আশ্রয় না থাকায় নিরাপত্তাহীনতা আরও তীব্র হয়েছে।

২০২৪ সালে ‘ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দেশটির আরব শহরগুলোতে পর্যাপ্ত সুরক্ষাকাঠামো সরবরাহে ইসরায়েল ব্যর্থ হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলের আরব বসতিগুলোর ৪৬ শতাংশ মানুষ এমন ভবনে বসবাস করেন, যেখানে কোনো সুরক্ষিত আশ্রয়কেন্দ্র নেই। আর ইসরায়েলের মোট জনসংখ্যার কথা বিবেচনা করলে এ ধরনের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছে ২৬ শতাংশ মানুষ।

তবু দেশটির ‘আয়রন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির সঙ্গে ‘মামাদ’ কৌশল মিলে ইসরায়েলের নাগরিকদের সুরক্ষাব্যবস্থা এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইন্দোনেশিয়ায় নার্সিং হোমে আগুনে ১৬ জনের মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ায় একটি নার্সিং হোমে আগুন লেগে ১৬ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার এএফপির প্রতিবেদনে স্থানীয় এক কর্মকর্তার বরাতে জানানো হয়, উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী মানাদোর একটি নার্সিং হোমে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে।

শহরটির ফায়ার অ্যান্ড রেস্কিউ এজেন্সির প্রধান জিমি রোটিনসুলু জানান, নার্সিং হোমটিতে স্থানীয় সময় রোববার রাত ৮টা ৩১ মিনিটে আগুন লাগার খবর পান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এ ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৩ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন।

জিমি জানান, ভুক্তভোগীদের অনেক দেহ তাঁদের ঘরের ভেতরেই পাওয়া গেছে। তিনি আরও যোগ করেন, সন্ধ্যায় যখন আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন বয়স্ক বাসিন্দাদের অনেকেই সম্ভবত তাদের নিজ নিজ ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।

কর্তৃপক্ষ ১২ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে এবং তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় সম্প্রচার মাধ্যম মেট্রো টিভি-তে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, আগুন নার্সিং হোমটিকে পুরোপুরি গ্রাস করে নিয়েছে এবং স্থানীয়রা এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করছেন।

১৭ হাজারেরও বেশি দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই দ্বীপরাষ্ট্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খুব একটা বিরল নয়। চলতি মাসেই ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় একটি সাততলা অফিস ভবনে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২২ জন নিহত হন। ২০২৩ সালে দেশটির পূর্বাঞ্চলে একটি নিকেল প্রক্রিয়াকরণ কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাঁজা চাষে লাইসেন্স ফি কমাল পাকিস্তান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে। ছবি: এএফপি
গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে। ছবি: এএফপি

গাঁজা চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের লাইসেন্স ফি কমানোর অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তানের সরকার। দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় গাঁজা চাষের এই ফি কমাচ্ছে ক্যানাবিস রেগুলেটরি অথরিটি (সিআরএ)।

এছাড়া, শিল্পজাত হেম্প ও হেম্প বীজের তেলের ওপর থেকে আবগারি শুল্ক তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ফুল-স্পেকট্রাম ক্যানাবিডিওল (CBD) ও টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (THC)-এর ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সরকারি নথি বরাতে দ্য ডন জানিয়েছে, সিআরএ গাঁজা চাষের লাইসেন্স ফি ৬ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করেছে এবং গাঁজা প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্স ফি ১৫ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ১০ লাখ রুপি নির্ধারণ করেছে।

এছাড়া হেম্প প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্স ফি ৭ লাখ রুপি থেকে কমিয়ে ৫ লাখ রুপি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ফুল-স্পেকট্রাম ক্যানাবিডিওল ও টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনলের ওপর আবগারি শুল্ক প্রতি কেজিতে ৩ হাজার রুপি থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার রুপি করা হয়েছে।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, ২২ ডিসেম্বর আবগারি, কর ও মাদকদ্রব্য বিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে আরও বলা হয়, ওই বৈঠকটি ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত উপ-কমিটির বৈঠকের ধারাবাহিকতা ছিল, যেখানে এসব পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছিল।

নথি অনুযায়ী, সিআরএ-এর বৈঠকে খাইবার পাখতুনখোয়ার জন্য প্রস্তাবিত হেম্প মডেল কমিটির সামনে উপস্থাপন করা হয়। এ সময় আবগারি, কর ও মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সচিব এবং স্বাস্থ্য সচিব জোর দিয়ে বলেন, ব্যবসা পরিচালনাকে সহজ করা এবং বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিতে প্রস্তাবিত মডেলটি আরও সরল করা প্রয়োজন।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, খাইবার পাখতুনখোয়ায় স্বনামধন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরীক্ষামূলকভাবে হেম্প চাষের লাইসেন্স দেওয়া হবে এবং এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান কৃষকদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করবে।

হেম্প চাষ ও প্রক্রিয়াকরণের লাইসেন্সের আবেদন ফরম, টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল (টিএইচসি) নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ ফরম, পর্যায়ক্রমিক পরিদর্শন ফরমসহ অন্যান্য বাধ্যতামূলক রেজিস্টার অনুমোদন করেছে সিআরএ।

শিল্প ও কৃষকদের যৌথ উদ্যোগে বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট (বিওআই) এবং শিল্প বিভাগ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। কৃষকদের নিবন্ধন ব্যক্তিগত বা সমবায় কোম্পানি হিসেবে উভয় ক্ষেত্রেই ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে।

হেম্প বীজ আমদানি ও এর শংসাপত্রের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সপ্রাপ্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ওপর রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত গাঁজা চাষ ও প্রক্রিয়াকরণ আপাতত স্থগিত রাখা হবে এবং ওষুধ শিল্পের প্রয়োজনীয় গাঁজা নিয়ন্ত্রণ ও এর পণ্য ব্যবস্থাপনা পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটির (ডিআরএপি) চাহিদা ও মানদণ্ডের আলোকে বিবেচনা করা হবে।

নথিতে আরও বলা হয়, ক্যানাবিস মডেল প্রণয়ন এবং ক্যানাবিস সংক্রান্ত বিধিবিধান পুনর্বিবেচনার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে একটি উপকমিটি গঠন করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উত্তেজনা: শিখ ও হিন্দু বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হাতাহাতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিক্ষোভকারী শিখদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ওসমান হাদির ছবিও দেখা যায়। ছবি: এক্স
বিক্ষোভকারী শিখদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে ওসমান হাদির ছবিও দেখা যায়। ছবি: এক্স

লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে গত শনিবার একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বেশ উত্তেজনা তৈরি হয়। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত নির্যাতনের প্রতিবাদে আয়োজিত এই সমাবেশে স্বাধীন খালিস্তানপন্থী শিখ অধিকার কর্মী এবং একদল হিন্দু বিক্ষোভকারী মুখোমুখি হলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্রিটিশ পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আয়োজকদের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি দৈনিক ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আয়োজিত সমাবেশে খালিস্তান রেফারেন্ডাম অভিযানের সমন্বয়ক পরমজিৎ সিং পাম্মা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে হরদীপ সিং নিজ্জার এবং শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি দেখা গেছে। সমাবেশের একপর্যায়ে ভারতীয় এক হিন্দু বিক্ষোভকারীর সঙ্গে পাম্মার কথা-কাটাকাটি এবং পরে হাতাহাতি শুরু হয়। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সেখানে দায়িত্বরত মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেন এবং দুই পক্ষকে আলাদা করে দেন।

বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রবেশপথের কাছে একটি কর্ডন তৈরি করে তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যান। এ সময় তাঁরা ভারত সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দেন। বিশেষ করে হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যা এবং অন্যান্য শিখ নেতাদের খুনের পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, ভারত সরকার পরমজিৎ সিং পাম্মাকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড টেররিস্ট’ বা অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করলেও পাম্মা ও তাঁর সমর্থকেরা এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

গত বছরের জুনে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার খুন হওয়ার পর থেকে ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরম আকার ধারণ করেছে। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গেও ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে মার্কিন বিচার বিভাগ।

লন্ডনের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সেই বৈশ্বিক উত্তেজনার ছায়া দেখা গেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, কোনো বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি এবং পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি।

খালিস্তান আন্দোলনের শিকড় ১৯৪৭ সালের ভারত ভাগ এবং পাঞ্জাব বিভাজনের সময় পর্যন্ত বিস্তৃত। স্বাধীন শিখ রাষ্ট্রের দাবিতে এই আন্দোলন দশকের পর দশক ধরে চলে আসছে। এই আন্দোলন বর্তমানে বৈশ্বিক রাজনীতিতে ভারত-কানাডা এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সংবেদনশীল ইস্যু হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসরায়েল কেন প্রথম দেশ হিসেবে সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসরায়েলের স্বীকৃতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে সোমালিল্যান্ড। ছবি: এএফপি
ইসরায়েলের স্বীকৃতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে সোমালিল্যান্ড। ছবি: এএফপি

ইসরায়েল কেন সোমালিয়া থেকে স্বাধীন হতে চাওয়া সোমালিল্যান্ডকে প্রথম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিল—এই প্রশ্ন ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। আফ্রিকার হর্ন অঞ্চলের স্বঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েল শুধু একটি কূটনৈতিক সিদ্ধান্তই নেয়নি, বরং মধ্যপ্রাচ্য ও লোহিত সাগর ঘিরে চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই স্বীকৃতির পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক—এই তিনটি প্রধান কারণ। সোমালিল্যান্ডের অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত। এটি এডেন উপসাগরের তীরে অবস্থিত এবং ইয়েমেনের খুব কাছেই, যেখানে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা সক্রিয়। চলতি বছরে হুতি ও ইসরায়েলের মধ্যে একাধিকবার হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। গাজায় ইসরায়েলি অভিযানের প্রতিবাদে হুতিরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালায়। জবাবে ইয়েমেনের সানা ও হোদেইদায় হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামলা চালায় ইসরায়েল।

এই প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের গবেষক ডেভিড মাকোভস্কি প্রশ্ন তুলেছেন—সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে কি ইসরায়েল সেখানে সামরিক সুবিধা বা গোয়েন্দা উপস্থিতির পথ খুলেছে? বিশেষ করে হুতি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

ইসরায়েলের গণমাধ্যম ‘চ্যানেল ১২’ জানিয়েছে, সোমালিল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আব্দিরাহমান মোহাম্মদ আবদুল্লাহি গোপনে একাধিকবার ইসরায়েল সফর করেছেন। গত অক্টোবরে তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ ও মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে নেতানিয়াহু এই স্বীকৃতির ক্ষেত্রে মোসাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

তবে এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে সোমালিয়া ও আফ্রিকান ইউনিয়ন। মিসর ও ফিলিস্তিনসহ কয়েকটি আরব দেশও এর সমালোচনা করেছে। অতীতে গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোর করে সোমালিল্যান্ডে স্থানান্তরের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, যদিও সোমালিল্যান্ডের কর্মকর্তারা এই ধরনের কোনো যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি ইসরায়েলের জন্য অর্থনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। সোমালিল্যান্ডের বন্দরনগরী বেরবেরা ইসরায়েলকে লোহিত সাগরে প্রবেশের সুযোগ দিতে পারে। এমন হলে বৈশ্বিক বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাব আল-মানদেব প্রণালির ওপর নজরদারি চালাতে পারবে ইসরায়েল। তবে সব মিলিয়ে, সোমালিল্যান্ডকে স্বীকৃতি দিয়ে ইসরায়েল ইতিহাস তৈরি করলেও এর পূর্ণ প্রভাব ও ফলাফল এখনো স্পষ্ট নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপি নেত্রী মনজিলা ঝুমার

এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন মওলানা ভাসানীর নাতি

আজকের রাশিফল: অন্যের নামে সঙ্গীকে ডেকে হুলুস্থুল বাধাবেন, হঠাৎ অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা

‘জেবু’কে নিয়ে মানুষের কৌতূহল দেখে অবাক জাইমা, দীর্ঘ পোস্টে লিখলেন অনুভূতি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত