মো. আরমান বিন আজিজ

চোখে ছানি পড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন। অবশ্য বিভিন্ন কারণে যেকোনো বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে। তবে সাধারণত বয়স্কদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। যখন চোখে ছানি পড়বে তখন আপনার চারপাশের সবকিছুই ম্লান হয়ে আসবে, সবকিছুই অস্পষ্ট বা কুয়াশাচ্ছন্ন দেখবেন। সাধারণত আমরা যাকে চোখে পর্দা পড়া বলে থাকি, প্রকৃত অর্থে তা হচ্ছে চোখে ছানি পড়া।
চোখে ছানি পড়া
সারা বিশ্বে অন্ধত্বের প্রধান কারণ চোখে ছানি পড়া। চোখের ভেতরের স্বচ্ছ প্রাকৃতিক লেন্সটি বিভিন্ন কারণে ঘোলা হতে থাকে। ঘোলা হতে হতে যখন দৃষ্টি শক্তিতে সমস্যা দেখা দেয়, তখন সেটিকেই ছানি পড়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অনেকের ধারণা, বৃদ্ধ বয়সে চোখে ছানি পড়ে। আসলে এটা ভুল ধারণা। যেকোনো বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে। চোখের যত্নে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করলে এ ধরনের সমস্যা থাকে না বরং চোখ সুস্থ ও সুন্দর থাকে।
চোখে ছানি পড়া কত প্রকার
১. অর্জিত (Acquired) ২. জন্মগত (Congenial)
অর্জিত ছানির কারণ
⦁ ধুলোবালুতে থাকলে চোখে ময়লা পড়ে জমা হওয়া
⦁ প্রতিদিন চোখ পরিষ্কার না করা বা চোখের যত্ন না নেওয়া
⦁ চোখে কোনো ধরনের আঘাত পাওয়া
⦁ দীর্ঘদিন স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ সেবন করা
⦁ দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিস রোগ থাকা
⦁ বয়সজনিত কারণ। এ কারণে বৃদ্ধ বয়সে ৮০ মানুষের চোখে ছানি পড়া রোগ হয়।
চোখে ছানি পড়ার লক্ষণ
⦁ দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে আসা
⦁ কোনো দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর লাল নীল অথবা রঙিন দেখা যাওয়া
⦁ কোনো কিছু ঝাপসা ঝাপসা দেখা
⦁ চোখের কালো মণি ধূসর বা সাদা হওয়া
⦁ চশমা ব্যবহার করলে তার পাওয়ার পরিবর্তন হওয়া
⦁ একটি জিনিসকে দুই বা ততোধিক দেখা
⦁ দৃষ্টি সীমানায় কালো দাগ দেখা
⦁ আলোতে চোখ বন্ধ হয়ে আসা ইত্যাদি চোখে ছানি পড়া রোগের লক্ষণ হতে পারে।
চোখে ছানি পড়া রোগের কারণ
বয়সজনিত লেন্সের গঠনগত পরিবর্তন হলো ছানি রোগের প্রধান কারণ। এ ছাড়াও চোখের আঘাত, ঘন ঘন চোখের প্রদাহ, অপুষ্টি, অনিয়ন্ত্রিত স্টেরয়েড বা হরমোন থেরাপি, ধূমপান এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ইত্যাদি কারণেও ছানি রোগ হতে পারে।
চোখে ছানি পড়া রোগের চিকিৎসা
আমাদের চোখে স্বচ্ছ একটি লেন্স রয়েছে। যার ভেতর দিয়ে আলো চোখের পেছনের রেটিনায় বা দৃষ্টি সংবেদনশীল অংশে গিয়ে পড়ে এবং দৃষ্টির অনুভূতি তৈরি হয়। কাচ যেমন অস্বচ্ছ হয়ে গেলে তার ভেতর দিয়ে কোনো কিছু দেখা যায় না, তেমনি চোখের লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে গেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। চোখের ছানি পড়া রোগ হলো আমাদের দেশের রিভারসিবল বা নিবারণযোগ্য অন্ধত্বের প্রধান কারণ।
চোখে ছানি পড়া রোগের একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে অস্ত্রোপচার বা অপারেশন করা। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অস্বচ্ছ লেন্সের বদলে কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেওয়া হয়। সময় মতো অস্ত্রোপচার না করলে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে ছানি অপারেশন এখন অনেক কম সময়ে এবং সেলাইবিহীন উপায়ে করা সম্ভব। সেসব উপায়ের একটি হলো স্মল ইনসিশন ছানি অপারেশন যা এসআইসিএস (SICS) নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে মাত্র ৫-৬ মিলিমিটার কেটে তার ভেতর দিয়ে ছানি অপসারণ ও কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করা হয়। অন্যটি হলো ফ্যাকো ইমালসিফিকেশন (Phaco) টেকনিক। এটি আরও আধুনিক প্রক্রিয়া, যাতে আরও অল্প কেটে তার মাধ্যমে ফ্যাকো মেশিন ব্যবহার করে ছানি অপসারণ ও কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। ফ্যাকো সার্জারির সুবিধা হলো, রোগী অনেক দ্রুত অপারেশন পরবর্তীতে তাঁর স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যেতে পারেন এবং অপারেশনের পর চশমার পাওয়ার পরিবর্তন অনেক কম হয়।
কোন বয়সে চোখে ছানি পড়া রোগ হয়
সাধারণত বয়স্ক লোকের চোখে ছানি পড়ে। তবে ওপরে উল্লিখিত কারণে যে কোনো বয়সে চোখে ছানি পড়া রোগ হতে পারে। পারিবারিকভাবে এ রোগের ইতিহাস থাকলে এবং গর্ভাবস্থায় জীবাণুর সংক্রমণ ঘটলে জন্মগত ছানি নিয়েও শিশুর জন্ম হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে চোখে ছানি পড়া রোগের কারণে চোখ ট্যারা (Squint) হয়ে যেতে পারে।
চোখে ছানি পড়া রোগ প্রতিরোধে করণীয়
যেহেতু বয়সজনিত পরিবর্তনের কারণে চোখে ছানি পড়া রোগ হয় তাই বয়সজনিত ছানি রোগ প্রতিরোধে তেমন কিছু করার নেই। তবে নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস, ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ, চোখের প্রদাহের দ্রুত চিকিৎসা, অনিয়ন্ত্রিত হরমোন জাতীয় ওষুধ ও ধূমপান বর্জনের মাধ্যমে চোখে ছানি পড়া রোগের আশঙ্কা কমিয়ে আনা সম্ভব।
চোখে ছানি পড়া দূর করার সহজ উপায়
চোখের ছানি ধীর গতিতে বাড়ে। যখন এটা তীব্র ও অসহনীয় আকার ধারণ করে তখন মানুষ এর প্রতিকারের উপায় খুঁজতে থাকে। চোখের ছানি অপারেশন করে ভালো ফল পাওয়া যায়। যদিও অনেকেই জানেন না যে সহজ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেও চোখে ছানি পড়া রোগ ঠিক করা যায়। তবে চোখের ছানি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলেই কেবল প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এর প্রতিকার করা সম্ভব। প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণের পূর্বে একজন চক্ষু চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে আপনার সমস্যাটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে কি না।
চোখের সার্বিক সুস্থ থাকা কিছু পুষ্টির ওপর নির্ভর করে। যেমন ভিটামিন এ এবং সি, ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারটিনয়েড, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। খাবারে থাকা এ উপাদানগুলো আপনার চোখের দৃষ্টি সাবলীল রাখতে সাহায্য করবে। খাদ্যাভ্যাসে কিছু পুষ্টিকর খাবার রাখলে তা দীর্ঘ সময়ের জন্য আপনার চোখের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারবে।
চোখে ছানি পড়া দূর করতে যা খাবেন
আগেই বলা হয়েছে, পুষ্টিকর খাবার খেলে তা আপনার চোখের বিভিন্ন সমস্যাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য দূরে রাখবে। চোখে ছানি পড়া দূর করতে যে খাবারগুলো খেতে হবে, সেগুলো হলো:
রসুন
রসুনের গুনাগুণ বর্ণনাতীত। চোখে ছানি পড়া রোগের জন্য রসুন জাদুর মতো কাজ করে। চোখের লেন্সটি সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে যে রকম পরিষ্কার মনে হবে, রসুন ঠিক সেই কাজটি করে থাকে। তাই প্রতিদিন রসুনের ২-৩টি কোয়া খেতে হবে।
কাঁচা সবজি
কাঁচা সবজি পুষ্টিকর। বিশেষ করে ভিটামিন এ-এর উৎস হিসেবে পরিচিত খাবারগুলো চোখের স্বাস্থ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় লেবুর রস ও অলিভ অয়েল মিশ্রিত সালাদ রাখুন। বিভিন্ন রঙের সবজি চোখে ছানি পড়া সমস্যা সমাধানের জন্য উপকারী।
সবুজ শাক ও সবজি
আমাদের দেশের বিভিন্ন রকম সবুজ শাক পাওয়া যায়। যেমন, পালং, পুঁই শাক, কচু শাক, সরিষা শাক, লাউ শাক ইত্যাদি। এসব সবুজ শাকে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই সঙ্গে এগুলো ম্যাংগানিজের খুব ভালো উৎস। এগুলো চোখের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখের রেটিনাকে রক্ষা করতেও সাহায্য করে সবুজ শাক। দৃষ্টিশক্তি ভালো করতেও সাহায্য করে এগুলো। শাক বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চোখে ছানি পড়া রোগ প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিন কোনো না কোনো শাক খেতে হবে।
দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতে হলে প্রতিদিন সবুজ শাকের সঙ্গে সবুজ অন্যান্য সবজিও খেতে হবে। যেমন, পাতা কপি, শালগম, বরবটি, পেঁপে ইত্যাদি। সবুজ শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, লুটেইন এবং ম্যাংগানিজ থাকে যা চোখের জন্য অনেক উপকারী।
পালংশাক
পালংশাকে প্রচুর ভিটামিন এ রয়েছে যা চোখের কর্নিয়া রক্ষা করে। এতে থাকা লুটেইন সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে চোখ রক্ষা করে এবং ম্যাংগানিজ চোখের দৃষ্টি উন্নয়নে সাহায্য করে। বেশি উপকারিতা পেতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পালংশাকের জুস খাওয়া খেতে পারেন। এ ছাড়া পালংশাক বিভিন্ন সালাদে দিয়ে অথবা রান্না করেও খাওয়া যেতে পারে।
দুধ ও কাজুবাদাম
চোখে ছানি পড়লে চোখ জ্বালা পোড়া করে এবং লাল হয়ে যায়। বিশুদ্ধ দুধের মধ্যে সারা রাত কাজুবাদাম ভিজিয়ে রেখে সেই দুধ যদি চোখের পাতায় লাগানো হয় তাহলে চোখের জ্বালা পোড়া করা এবং লাল হয়ে যাওয়া কমে যায়।
গ্রিন টি
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় গ্রিন টি চমৎকার কাজ করে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা চোখকে সজীব রাখে।
গম ঘাস
গম ঘাস বা গমের কচি চারা চোখে ছানি পড়া রোগ দূর করতে সক্ষম। এ জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গম ঘাসের জুস রাখুন।
জাম বা বেরি জাতীয় ফল
জাম জাতীয় ফল বিশেষ করে ব্লু বেরি এন্থোসায়ানসাইড সমৃদ্ধ। এর ফ্লাভনয়েড চোখের রেটিনা ও লেন্সকে জারণ এর হাত থেকে রক্ষা করে।
পেঁপে
পেঁপের মধ্যে যে এনজাইম থাকে তা প্রোটিন জাতীয় খাবার হজমে সহায়তা করে। চোখে ছানি আছে এমন অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তাঁদের প্রোটিন হজমে সমস্যা থাকে। এই প্রোটিন চোখের লেন্সে গিয়ে জমা হয়ে ছানি তৈরি করতে পারে। তাই ছানি প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত পেঁপে খাওয়া উচিত।
ভিটামিন সি
কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হলো, শরীরের অন্যান্য অঙ্গের চেয়ে চোখের লেন্স ভিটামিন সি বেশি ধারণ করে। যদি চোখে ছানি হয়ে থাকে তাহলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে সম্পূরক ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।
লেখক: চিকিৎসক এবং সাবেক ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও প্রশিক্ষক, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

চোখে ছানি পড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন। অবশ্য বিভিন্ন কারণে যেকোনো বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে। তবে সাধারণত বয়স্কদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। যখন চোখে ছানি পড়বে তখন আপনার চারপাশের সবকিছুই ম্লান হয়ে আসবে, সবকিছুই অস্পষ্ট বা কুয়াশাচ্ছন্ন দেখবেন। সাধারণত আমরা যাকে চোখে পর্দা পড়া বলে থাকি, প্রকৃত অর্থে তা হচ্ছে চোখে ছানি পড়া।
চোখে ছানি পড়া
সারা বিশ্বে অন্ধত্বের প্রধান কারণ চোখে ছানি পড়া। চোখের ভেতরের স্বচ্ছ প্রাকৃতিক লেন্সটি বিভিন্ন কারণে ঘোলা হতে থাকে। ঘোলা হতে হতে যখন দৃষ্টি শক্তিতে সমস্যা দেখা দেয়, তখন সেটিকেই ছানি পড়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অনেকের ধারণা, বৃদ্ধ বয়সে চোখে ছানি পড়ে। আসলে এটা ভুল ধারণা। যেকোনো বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে। চোখের যত্নে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করলে এ ধরনের সমস্যা থাকে না বরং চোখ সুস্থ ও সুন্দর থাকে।
চোখে ছানি পড়া কত প্রকার
১. অর্জিত (Acquired) ২. জন্মগত (Congenial)
অর্জিত ছানির কারণ
⦁ ধুলোবালুতে থাকলে চোখে ময়লা পড়ে জমা হওয়া
⦁ প্রতিদিন চোখ পরিষ্কার না করা বা চোখের যত্ন না নেওয়া
⦁ চোখে কোনো ধরনের আঘাত পাওয়া
⦁ দীর্ঘদিন স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ সেবন করা
⦁ দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিস রোগ থাকা
⦁ বয়সজনিত কারণ। এ কারণে বৃদ্ধ বয়সে ৮০ মানুষের চোখে ছানি পড়া রোগ হয়।
চোখে ছানি পড়ার লক্ষণ
⦁ দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে আসা
⦁ কোনো দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর লাল নীল অথবা রঙিন দেখা যাওয়া
⦁ কোনো কিছু ঝাপসা ঝাপসা দেখা
⦁ চোখের কালো মণি ধূসর বা সাদা হওয়া
⦁ চশমা ব্যবহার করলে তার পাওয়ার পরিবর্তন হওয়া
⦁ একটি জিনিসকে দুই বা ততোধিক দেখা
⦁ দৃষ্টি সীমানায় কালো দাগ দেখা
⦁ আলোতে চোখ বন্ধ হয়ে আসা ইত্যাদি চোখে ছানি পড়া রোগের লক্ষণ হতে পারে।
চোখে ছানি পড়া রোগের কারণ
বয়সজনিত লেন্সের গঠনগত পরিবর্তন হলো ছানি রোগের প্রধান কারণ। এ ছাড়াও চোখের আঘাত, ঘন ঘন চোখের প্রদাহ, অপুষ্টি, অনিয়ন্ত্রিত স্টেরয়েড বা হরমোন থেরাপি, ধূমপান এবং অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ইত্যাদি কারণেও ছানি রোগ হতে পারে।
চোখে ছানি পড়া রোগের চিকিৎসা
আমাদের চোখে স্বচ্ছ একটি লেন্স রয়েছে। যার ভেতর দিয়ে আলো চোখের পেছনের রেটিনায় বা দৃষ্টি সংবেদনশীল অংশে গিয়ে পড়ে এবং দৃষ্টির অনুভূতি তৈরি হয়। কাচ যেমন অস্বচ্ছ হয়ে গেলে তার ভেতর দিয়ে কোনো কিছু দেখা যায় না, তেমনি চোখের লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে গেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। চোখের ছানি পড়া রোগ হলো আমাদের দেশের রিভারসিবল বা নিবারণযোগ্য অন্ধত্বের প্রধান কারণ।
চোখে ছানি পড়া রোগের একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে অস্ত্রোপচার বা অপারেশন করা। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অস্বচ্ছ লেন্সের বদলে কৃত্রিম লেন্স বসিয়ে দেওয়া হয়। সময় মতো অস্ত্রোপচার না করলে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে ছানি অপারেশন এখন অনেক কম সময়ে এবং সেলাইবিহীন উপায়ে করা সম্ভব। সেসব উপায়ের একটি হলো স্মল ইনসিশন ছানি অপারেশন যা এসআইসিএস (SICS) নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে মাত্র ৫-৬ মিলিমিটার কেটে তার ভেতর দিয়ে ছানি অপসারণ ও কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করা হয়। অন্যটি হলো ফ্যাকো ইমালসিফিকেশন (Phaco) টেকনিক। এটি আরও আধুনিক প্রক্রিয়া, যাতে আরও অল্প কেটে তার মাধ্যমে ফ্যাকো মেশিন ব্যবহার করে ছানি অপসারণ ও কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। ফ্যাকো সার্জারির সুবিধা হলো, রোগী অনেক দ্রুত অপারেশন পরবর্তীতে তাঁর স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যেতে পারেন এবং অপারেশনের পর চশমার পাওয়ার পরিবর্তন অনেক কম হয়।
কোন বয়সে চোখে ছানি পড়া রোগ হয়
সাধারণত বয়স্ক লোকের চোখে ছানি পড়ে। তবে ওপরে উল্লিখিত কারণে যে কোনো বয়সে চোখে ছানি পড়া রোগ হতে পারে। পারিবারিকভাবে এ রোগের ইতিহাস থাকলে এবং গর্ভাবস্থায় জীবাণুর সংক্রমণ ঘটলে জন্মগত ছানি নিয়েও শিশুর জন্ম হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে চোখে ছানি পড়া রোগের কারণে চোখ ট্যারা (Squint) হয়ে যেতে পারে।
চোখে ছানি পড়া রোগ প্রতিরোধে করণীয়
যেহেতু বয়সজনিত পরিবর্তনের কারণে চোখে ছানি পড়া রোগ হয় তাই বয়সজনিত ছানি রোগ প্রতিরোধে তেমন কিছু করার নেই। তবে নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস, ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ, চোখের প্রদাহের দ্রুত চিকিৎসা, অনিয়ন্ত্রিত হরমোন জাতীয় ওষুধ ও ধূমপান বর্জনের মাধ্যমে চোখে ছানি পড়া রোগের আশঙ্কা কমিয়ে আনা সম্ভব।
চোখে ছানি পড়া দূর করার সহজ উপায়
চোখের ছানি ধীর গতিতে বাড়ে। যখন এটা তীব্র ও অসহনীয় আকার ধারণ করে তখন মানুষ এর প্রতিকারের উপায় খুঁজতে থাকে। চোখের ছানি অপারেশন করে ভালো ফল পাওয়া যায়। যদিও অনেকেই জানেন না যে সহজ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেও চোখে ছানি পড়া রোগ ঠিক করা যায়। তবে চোখের ছানি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলেই কেবল প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এর প্রতিকার করা সম্ভব। প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসরণের পূর্বে একজন চক্ষু চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে আপনার সমস্যাটি প্রাথমিক পর্যায়ে আছে কি না।
চোখের সার্বিক সুস্থ থাকা কিছু পুষ্টির ওপর নির্ভর করে। যেমন ভিটামিন এ এবং সি, ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারটিনয়েড, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। খাবারে থাকা এ উপাদানগুলো আপনার চোখের দৃষ্টি সাবলীল রাখতে সাহায্য করবে। খাদ্যাভ্যাসে কিছু পুষ্টিকর খাবার রাখলে তা দীর্ঘ সময়ের জন্য আপনার চোখের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারবে।
চোখে ছানি পড়া দূর করতে যা খাবেন
আগেই বলা হয়েছে, পুষ্টিকর খাবার খেলে তা আপনার চোখের বিভিন্ন সমস্যাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য দূরে রাখবে। চোখে ছানি পড়া দূর করতে যে খাবারগুলো খেতে হবে, সেগুলো হলো:
রসুন
রসুনের গুনাগুণ বর্ণনাতীত। চোখে ছানি পড়া রোগের জন্য রসুন জাদুর মতো কাজ করে। চোখের লেন্সটি সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে যে রকম পরিষ্কার মনে হবে, রসুন ঠিক সেই কাজটি করে থাকে। তাই প্রতিদিন রসুনের ২-৩টি কোয়া খেতে হবে।
কাঁচা সবজি
কাঁচা সবজি পুষ্টিকর। বিশেষ করে ভিটামিন এ-এর উৎস হিসেবে পরিচিত খাবারগুলো চোখের স্বাস্থ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় লেবুর রস ও অলিভ অয়েল মিশ্রিত সালাদ রাখুন। বিভিন্ন রঙের সবজি চোখে ছানি পড়া সমস্যা সমাধানের জন্য উপকারী।
সবুজ শাক ও সবজি
আমাদের দেশের বিভিন্ন রকম সবুজ শাক পাওয়া যায়। যেমন, পালং, পুঁই শাক, কচু শাক, সরিষা শাক, লাউ শাক ইত্যাদি। এসব সবুজ শাকে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই সঙ্গে এগুলো ম্যাংগানিজের খুব ভালো উৎস। এগুলো চোখের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখের রেটিনাকে রক্ষা করতেও সাহায্য করে সবুজ শাক। দৃষ্টিশক্তি ভালো করতেও সাহায্য করে এগুলো। শাক বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চোখে ছানি পড়া রোগ প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিন কোনো না কোনো শাক খেতে হবে।
দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতে হলে প্রতিদিন সবুজ শাকের সঙ্গে সবুজ অন্যান্য সবজিও খেতে হবে। যেমন, পাতা কপি, শালগম, বরবটি, পেঁপে ইত্যাদি। সবুজ শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, লুটেইন এবং ম্যাংগানিজ থাকে যা চোখের জন্য অনেক উপকারী।
পালংশাক
পালংশাকে প্রচুর ভিটামিন এ রয়েছে যা চোখের কর্নিয়া রক্ষা করে। এতে থাকা লুটেইন সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে চোখ রক্ষা করে এবং ম্যাংগানিজ চোখের দৃষ্টি উন্নয়নে সাহায্য করে। বেশি উপকারিতা পেতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পালংশাকের জুস খাওয়া খেতে পারেন। এ ছাড়া পালংশাক বিভিন্ন সালাদে দিয়ে অথবা রান্না করেও খাওয়া যেতে পারে।
দুধ ও কাজুবাদাম
চোখে ছানি পড়লে চোখ জ্বালা পোড়া করে এবং লাল হয়ে যায়। বিশুদ্ধ দুধের মধ্যে সারা রাত কাজুবাদাম ভিজিয়ে রেখে সেই দুধ যদি চোখের পাতায় লাগানো হয় তাহলে চোখের জ্বালা পোড়া করা এবং লাল হয়ে যাওয়া কমে যায়।
গ্রিন টি
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় গ্রিন টি চমৎকার কাজ করে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা চোখকে সজীব রাখে।
গম ঘাস
গম ঘাস বা গমের কচি চারা চোখে ছানি পড়া রোগ দূর করতে সক্ষম। এ জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গম ঘাসের জুস রাখুন।
জাম বা বেরি জাতীয় ফল
জাম জাতীয় ফল বিশেষ করে ব্লু বেরি এন্থোসায়ানসাইড সমৃদ্ধ। এর ফ্লাভনয়েড চোখের রেটিনা ও লেন্সকে জারণ এর হাত থেকে রক্ষা করে।
পেঁপে
পেঁপের মধ্যে যে এনজাইম থাকে তা প্রোটিন জাতীয় খাবার হজমে সহায়তা করে। চোখে ছানি আছে এমন অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, তাঁদের প্রোটিন হজমে সমস্যা থাকে। এই প্রোটিন চোখের লেন্সে গিয়ে জমা হয়ে ছানি তৈরি করতে পারে। তাই ছানি প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত পেঁপে খাওয়া উচিত।
ভিটামিন সি
কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হলো, শরীরের অন্যান্য অঙ্গের চেয়ে চোখের লেন্স ভিটামিন সি বেশি ধারণ করে। যদি চোখে ছানি হয়ে থাকে তাহলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে সম্পূরক ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।
লেখক: চিকিৎসক এবং সাবেক ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও প্রশিক্ষক, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
১ দিন আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
১ দিন আগেফিচার ডেস্ক

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।
উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।
যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।
উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।
উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।
উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

চোখে ছানি পড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন। অবশ্য বিভিন্ন কারণে যেকোনো বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে। তবে সাধারণত বয়স্কদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। যখন চোখে ছানি পড়বে তখন আপনার চারপাশের সবকিছুই ম্লান হয়ে আসবে, সবকিছুই অস্পষ্ট বা কুয়াশাচ্ছন্ন দেখবেন।
২৮ নভেম্বর ২০২১
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
১ দিন আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
১ দিন আগেআলমগীর আলম

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।
২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।
৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।
৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।
৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—
উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।
প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

চোখে ছানি পড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন। অবশ্য বিভিন্ন কারণে যেকোনো বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে। তবে সাধারণত বয়স্কদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। যখন চোখে ছানি পড়বে তখন আপনার চারপাশের সবকিছুই ম্লান হয়ে আসবে, সবকিছুই অস্পষ্ট বা কুয়াশাচ্ছন্ন দেখবেন।
২৮ নভেম্বর ২০২১
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
১ দিন আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
১ দিন আগেফিচার ডেস্ক

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার এমন এক সমস্যা, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি ঘুমের মধ্যে অবচেতন অবস্থায় রান্নাঘরে চলে যায় এবং খাবার খেতে শুরু করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তার এই ঘটনা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র স্মৃতি থাকে না। সাধারণত এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতি রাতেই এমনটা করে। এক রাতে একাধিকবারও ঘুমের ঘোরে খাওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসের বিচিত্র রূপ
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির খাওয়ার ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত ঘুমের ঘোরে খাওয়ার সময় তিন ধরনের ঘটনা ঘটে।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া: আক্রান্ত হওয়া মানুষ সাধারণত ক্যান্ডি, চিপস অথবা কেকের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ে।
অস্বাভাবিক সংমিশ্রণের খাবার খাওয়া: অনেক সময় তারা অত্যন্ত অদ্ভুত ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংমিশ্রণ তৈরি করে। যেমন সিগারেটে মাখন মাখিয়ে খাওয়া কিংবা অন্য কোনো অখাদ্য বস্তু খাওয়া।
দ্রুততম সময়ে খাবার খাওয়া: বিছানা থেকে রান্নাঘর হয়ে পুনরায় বিছানায় ফিরে আসার পুরো প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শেষ হতে পারে। ফলে তারা খুব দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলে।
ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব
এসআরইডির প্রভাব কেবল ঘুমের ব্যাঘাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি দীর্ঘ মেয়াদে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এসব প্রভাবের মধ্যে আছে—
কেন এমন হয়
এসআরইডির নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ না থাকলেও বেশ কিছু বিষয় লক্ষণীয়। যেমন—
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: বিষণ্নতা বা ঘুমের সমস্যার জন্য ব্যবহৃত কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের প্রভাবে এটি হতে পারে।
অন্যান্য রোগ: রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো সমস্যা এর পেছনে থাকতে পারে।
জীবনযাত্রা: অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম এবং অ্যালকোহল অথবা মাদক ত্যাগের পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রতিকার ও ব্যবস্থাপনা
এই রহস্যময় সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি। এর প্রতিকারে যা করা যেতে পারে—
সূত্র: সিএনএন হেলথ, এএসএসএম

চোখে ছানি পড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন। অবশ্য বিভিন্ন কারণে যেকোনো বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে। তবে সাধারণত বয়স্কদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। যখন চোখে ছানি পড়বে তখন আপনার চারপাশের সবকিছুই ম্লান হয়ে আসবে, সবকিছুই অস্পষ্ট বা কুয়াশাচ্ছন্ন দেখবেন।
২৮ নভেম্বর ২০২১
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ দিন আগে
দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়।
১ দিন আগেডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী

দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কাশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট এবং চিকিৎসাযোগ্য ছয়টি কারণ থাকে।
কফ ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা
অ্যাজমার একটি বিশেষ ধরন এটি। এতে সাধারণ অ্যাজমার মতো শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ বা সাঁ সাঁ শব্দ না-ও থাকতে পারে; বরং অবিরাম শুকনো কাশিই এর প্রধান এবং অন্যতম উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। এই ধরনের কাশি সাধারণত রাতে বেশি হয় এবং ধুলাবালি, ঠান্ডা বাতাস, ঘরবাড়ির অ্যালার্জেন, এমনকি ঋতু পরিবর্তনের সময় শীতের শুরুতেও উপসর্গ তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
উপসর্গ বারবার দেখা দিলে চিকিৎসক শ্বাসক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করতে পারেন। স্পাইরোমেট্রি ফুসফুসের ক্ষমতা এবং বায়ুপ্রবাহ পরিমাপ করে, যা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) মতো অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে উপযোগী ইনহেলার সাময়িক ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে এ রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
পোস্টন্যাসাল ড্রিপ
নাক কিংবা সাইনাসে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গলার পেছন দিকে গড়িয়ে যায়। এই মিউকাস গলার সংবেদনশীল নার্ভগুলো উত্তেজিত করে। ফলে শুকনো ও বিরক্তিকর কাশি হয়। শোয়ার সময় মিউকাস গলায় জমে বলে এটি রাত ও ভোরে বেশি হয়। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরও কাশি দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-সর্দি, সাইনোসাইটিস, নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সমস্যা, নাক বন্ধ বা ধুলাবালিতে সংবেদনশীলতা যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশির অন্যতম প্রচলিত উৎস এই পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
জিইআরডি
পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে এলে টক ঢেকুর, বুকজ্বালা, গলায় জ্বালাপোড়া এবং সঙ্গে ধারাবাহিক কাশি দেখা দিতে পারে। মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া, চকলেট, কফি, টক খাবার—এসব জিইআরডি বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও ঝুঁকির মাত্রা বাড়ায়। জিইআরডি নিয়ন্ত্রণে আনলে অনেক ক্ষেত্রে কাশি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
ভাইরাল সংক্রমণের পর দীর্ঘস্থায়ী কাশি
অনেক সময় সর্দি-জ্বরের উপসর্গ সেরে গেলেও শ্বাসনালি কিছুদিন অতি সংবেদনশীল থাকে। এর ফলে কাশি স্থায়ী হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই ধীরে ধীরে এর উপসর্গ কমে আসে। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা এবং আদা, লেবু, মধু, লবঙ্গ বা দারুচিনিযুক্ত গরম চা উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এসিই ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো কাশির কারণ হতে পারে। নিয়মিত কাশির কারণ খুঁজেনা পেলে ওষুধের ইতিহাস পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক বিকল্প ওষুধ বেছে নেন।
ধূমপান
দীর্ঘদিন ধূমপান, বিশেষত প্রতিদিন ২০টি সিগারেট বা ২০ বছর অথবা তার বেশি সময় ধরে ধূমপান ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্রনিক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।
দীর্ঘস্থায়ী বা অবিরাম কাশি সব সময় গুরুতর রোগের লক্ষণ না হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। উপসর্গ যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে কারণ নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সহকারী অধ্যাপক (ইএনটি), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

দীর্ঘদিনের শুকনো কাশি একটি বিরক্তিকর সমস্যা। অনেক সময় সাধারণ সর্দি-জ্বরের পরেও সপ্তাহের পর সপ্তাহ কিংবা কখনো মাসের পর মাস স্থায়ী হতে পারে এ ধরনের কাশি। ফলে দৈনন্দিন কাজে অস্বস্তি, ঘুমের ব্যাঘাত, মানসিক চাপ ও কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়। কাশি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট এবং চিকিৎসাযোগ্য ছয়টি কারণ থাকে।
কফ ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা
অ্যাজমার একটি বিশেষ ধরন এটি। এতে সাধারণ অ্যাজমার মতো শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ বা সাঁ সাঁ শব্দ না-ও থাকতে পারে; বরং অবিরাম শুকনো কাশিই এর প্রধান এবং অন্যতম উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। এই ধরনের কাশি সাধারণত রাতে বেশি হয় এবং ধুলাবালি, ঠান্ডা বাতাস, ঘরবাড়ির অ্যালার্জেন, এমনকি ঋতু পরিবর্তনের সময় শীতের শুরুতেও উপসর্গ তীব্র হয়ে উঠতে পারে।
উপসর্গ বারবার দেখা দিলে চিকিৎসক শ্বাসক্রিয়া পরীক্ষার মাধ্যমে কারণ নির্ণয় করতে পারেন। স্পাইরোমেট্রি ফুসফুসের ক্ষমতা এবং বায়ুপ্রবাহ পরিমাপ করে, যা হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজের (সিওপিডি) মতো অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজন হলে রোগ নিয়ন্ত্রণে উপযোগী ইনহেলার সাময়িক ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়। সঠিক সময়ে এ রোগ শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা গেলে দীর্ঘ মেয়াদে জটিলতার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
পোস্টন্যাসাল ড্রিপ
নাক কিংবা সাইনাসে অতিরিক্ত মিউকাস তৈরি হলে তা ধীরে ধীরে গলার পেছন দিকে গড়িয়ে যায়। এই মিউকাস গলার সংবেদনশীল নার্ভগুলো উত্তেজিত করে। ফলে শুকনো ও বিরক্তিকর কাশি হয়। শোয়ার সময় মিউকাস গলায় জমে বলে এটি রাত ও ভোরে বেশি হয়। তবে ঘুম থেকে ওঠার পরও কাশি দেখা যায়। অ্যালার্জিজনিত হাঁচি-সর্দি, সাইনোসাইটিস, নাকের হাড় বাঁকা হওয়ার সমস্যা, নাক বন্ধ বা ধুলাবালিতে সংবেদনশীলতা যাঁদের আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়। দীর্ঘস্থায়ী শুকনো কাশির অন্যতম প্রচলিত উৎস এই পোস্টন্যাসাল ড্রিপ।
জিইআরডি
পাকস্থলীর অ্যাসিড ওপরের দিকে উঠে এলে টক ঢেকুর, বুকজ্বালা, গলায় জ্বালাপোড়া এবং সঙ্গে ধারাবাহিক কাশি দেখা দিতে পারে। মসলাদার খাবার, ভাজাপোড়া, চকলেট, কফি, টক খাবার—এসব জিইআরডি বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়াও ঝুঁকির মাত্রা বাড়ায়। জিইআরডি নিয়ন্ত্রণে আনলে অনেক ক্ষেত্রে কাশি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
ভাইরাল সংক্রমণের পর দীর্ঘস্থায়ী কাশি
অনেক সময় সর্দি-জ্বরের উপসর্গ সেরে গেলেও শ্বাসনালি কিছুদিন অতি সংবেদনশীল থাকে। এর ফলে কাশি স্থায়ী হতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের সময় এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। সাধারণত বিশেষ চিকিৎসা ছাড়াই ধীরে ধীরে এর উপসর্গ কমে আসে। হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা এবং আদা, লেবু, মধু, লবঙ্গ বা দারুচিনিযুক্ত গরম চা উপসর্গ কমাতে সহায়তা করে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এসিই ইনহিবিটর শ্রেণির ওষুধ অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো কাশির কারণ হতে পারে। নিয়মিত কাশির কারণ খুঁজেনা পেলে ওষুধের ইতিহাস পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনে চিকিৎসক বিকল্প ওষুধ বেছে নেন।
ধূমপান
দীর্ঘদিন ধূমপান, বিশেষত প্রতিদিন ২০টি সিগারেট বা ২০ বছর অথবা তার বেশি সময় ধরে ধূমপান ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে বছরের বিভিন্ন সময়ে ক্রনিক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর অবস্থায় রূপ নিতে পারে। ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মূল উপায়।
দীর্ঘস্থায়ী বা অবিরাম কাশি সব সময় গুরুতর রোগের লক্ষণ না হলেও উপেক্ষা করা উচিত নয়। উপসর্গ যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে কারণ নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সহকারী অধ্যাপক (ইএনটি), সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

চোখে ছানি পড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন। অবশ্য বিভিন্ন কারণে যেকোনো বয়সেই চোখে ছানি পড়তে পারে। তবে সাধারণত বয়স্কদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে। যখন চোখে ছানি পড়বে তখন আপনার চারপাশের সবকিছুই ম্লান হয়ে আসবে, সবকিছুই অস্পষ্ট বা কুয়াশাচ্ছন্ন দেখবেন।
২৮ নভেম্বর ২০২১
শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
১ দিন আগে
তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
১ দিন আগে
ঘুমের ঘোরে হাঁটার কথা আমরা অনেকে শুনেছি। কিন্তু ঘুমের ঘোরে খাওয়ার কথা কি শুনেছেন? চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় স্লিপ-রিলেটেড ইটিং ডিসঅর্ডার। এই উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছোট ঘটনা একটি জটিল স্বাস্থ্যগত সমস্যা। এটি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তার পরিবারের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
১ দিন আগে