Ajker Patrika

অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি, বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের খাবার খাওয়ার ধরন দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের খাবার খাওয়ার ধরন দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে খাদ্যতালিকায় ক্রমাগত বেড়েই চলেছে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার। এ ধরনের খাদ্য গ্রহণ কমাতে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, এ ধরনের খাদ্য স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের খাবার খাওয়ার ধরন দ্রুত বদলে যাচ্ছে। তাজা, প্রাকৃতিক খাবার থেকে সরে মানুষ ঝুঁকছে সস্তা, অত্যন্ত প্রক্রিয়াজাত তৈরি খাবারের দিকে। এর ফলে বাড়ছে স্থূলতা ও বিষণ্নতাসহ নানা দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি।

মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেট–এ প্রকাশিত লেখায় গবেষকেরা বলেন, সরকারগুলোকে এখন আরও সক্রিয় হতে হবে। অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারে সতর্কবার্তা ও উচ্চ কর আরোপ করতে হবে যাতে সেখান থেকে পাওয়া অর্থ পুষ্টিকর খাবারের সহজলভ্যতা বাড়াতে ব্যয় করা যায়।

তবে কিছু বিজ্ঞানী বলছেন, এই পর্যালোচনা দিয়ে সরাসরি প্রমাণ করা যায় না যে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা ও ট্রায়াল প্রয়োজন।

অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার বা আল্ট্রা-প্রসেসড ফুড (ইউপিএফ) বলতে এমন খাবারকে বোঝায়, যেগুলোতে পাঁচটির বেশি এমন উপাদান থাকে—ইমালসিফায়ার, প্রিজারভেটিভ, অ্যাডিটিভ, রং ও কৃত্রিম মিষ্টি।

সসেজ, চিপস, পেস্ট্রি, বিস্কুট, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ, ফিজি ড্রিংকস, আইসক্রিম, পাউরুটি এ ধরনের খাবার।

বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, এসব শিল্পোৎপাদিত খাবারের ব্যবহার বিশ্বজুড়ে বাড়ছে। এর ফলে খাদ্যতালিকার মান আরও খারাপ হচ্ছে। কারণ এসব খাবারে সাধারণত অতিরিক্ত চিনি ও অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে। আর ফাইবার ও প্রোটিনের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম থাকে।

স্বাস্থ্যের ওপর অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রভাব নিয়ে ১০৪টি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে ৪৩ জন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ এই পর্যালোচনাটি তৈরি করেছেন।

এতে দেখা যায়, অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের সঙ্গে কমপক্ষে ১২ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার সম্পর্ক রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে টাইপ-২ ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, কিডনি রোগ, বিষণ্নতা এবং যেকোনো কারণে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি।

খাবার শ্রেণিবিন্যাসের নোভা (NOVA) সিস্টেম তৈরি করেছিলেন ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্লোস মন্টেইরো। এই গবেষণা পর্যালোচনার একজন লেখক তিনি। মন্টেইরো বলেন, অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার বিশ্বব্যাপী খাদ্যাভ্যাস বদলে দিচ্ছে, তাজা ও সামান্য প্রক্রিয়াজাত খাবারকে সরিয়ে দিচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে।

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের খাবারের এই পরিবর্তন চালাচ্ছে শক্তিশালী বহুজাতিক করপোরেশনগুলো। এসব অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবারকে অগ্রাধিকার দিয়ে তারা বিপুল মুনাফা করে। ব্যাপক বিপণন ও রাজনৈতিক লবিংয়ের জোরে তারা এমন সব কার্যকর জনস্বাস্থ্যনীতিকে ঠেকিয়ে দেয়, যা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসকে উৎসাহিত করতে পারত।’

পর্যালোচনার সহ-লেখক অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ফিলিপ বেকার বলেন, ‘এর সমাধান হলো দৃঢ় বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য প্রতিক্রিয়া যেমনটা তামাক শিল্পকে চ্যালেঞ্জ করার বেলায় দেখা গেছে।’

অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার কীভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে তা ব্যাখ্যা করে এমন পর্যাপ্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এখনো নেই সেটা পর্যালোচনায় স্বীকার করা হয়েছে। তবে গবেষকদের মতে, মানুষের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে বৈশ্বিক পর্যায়ে পদক্ষেপ নেওয়া বিলম্বিত করা উচিত নয়।

কিছু বিজ্ঞানী মন্তব্য করেছেন, মানুষের খাদ্যতালিকায় এ ধরনের খাবারের প্রভাব আলাদা করে দেখা কঠিন। কারণ জীবনযাপন, আচরণ, আর্থিক সামর্থ্যসহ আরও অনেক বিষয় এতে ভূমিকা রাখে।

নোভা শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতির সমালোচকেরা বলেন, এটি খাবারের পুষ্টিগুণের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় খাবারটি কতটা প্রক্রিয়াজাত তার ওপর। তাঁরা বলেন, হোলগ্রেইন পাউরুটি, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল, লো-ফ্যাট দই, শিশুদের ফর্মুলা দুধ এবং ফিশ ফিঙ্গার সবগুলোই নোভা অনুযায়ী অতি-প্রক্রিয়াজাত, কিন্তু এগুলোর মধ্যে অনেক ভালো দিকও রয়েছে।

ওপেন ইউনিভার্সিটির অ্যাপ্লাইড স্ট্যাটিস্টিক্সের এমেরিটাস অধ্যাপক কেভিন ম্যাকনওয়ে বলেন, ‘এ ধরনের গবেষণা একটি সম্পর্ক খুঁজে পেতে পারে, কিন্তু কারণ বা ফলাফল সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে না। এখনো সন্দেহের যথেষ্ট জায়গা আছে এবং আরও গবেষণা থেকে স্পষ্টতা পাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় অন্তত কিছু অতিমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাবার কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তবে এতে নিশ্চিতভাবেই প্রমাণিত হয় না যে সব ধরনের অতিমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাবার রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।’

অতিমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাবারের কোনো উপাদান বা বৈশিষ্ট্য রোগ সৃষ্টি করছে বা রোগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে তা এখনো পরিষ্কার নয়।

ইউনিভার্সিটি অব অ্যাবারডিনের অধ্যাপক জুলস গ্রিফিন বলেছেন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। এটি আমাদের স্বাস্থ্যে কীভাবে প্রভাব ফেলে তা বুঝতে আরও গবেষণার জরুরি প্রয়োজন আছে।

শিল্পখাতের প্রতিনিধিত্বকারী ফুড অ্যান্ড ড্রিঙ্ক ফেডারেশন (এফডিএফ) বলছে, অতিমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাবার জমাট মটরশুটি বা সম্পূর্ণ দানার রুটি মতো খাবারের মতোই একটি সুষম খাদ্যের অংশ হতে পারে।

এফডিএফ-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কেট হ্যালিওয়েল বলেন, ‘আমরা যেসব খাবার ও পানীয় কিনি সরকারি নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেগুলোকে আরও স্বাস্থ্যসম্মত করতে কোম্পানিগুলো বহু বছর ধরে বিভিন্ন পরিবর্তন এনে চলেছে।’

পণ্যে থাকা চিনি ও লবণের পরিমাণ ২০১৫ সাল থেকে এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে বলে জানান তিনি।

এ বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যের সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি কমিটি অন নিউট্রিশন (এসএসিএন) জানিয়েছিল, অতিমাত্রায় প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খাওয়া এবং নানান স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে যে সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে, তা উদ্বেগের।

তবে কমিটি আরও জানায়, এসব খাবার আসলে প্রক্রিয়াজাত হওয়ার কারণেই অস্বাস্থ্যকর কি না, নাকি অনেক খাবারেই উচ্চমাত্রার ক্যালরি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, লবণ ও ফ্রি সুগার থাকার কারণেই অস্বাস্থ্যকর, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

যুক্তরাজ্য সরকারের বর্তমান খাদ্যবিষয়ক পরামর্শ হলো—ফল, সবজি ও আঁশযুক্ত খাদ্য বেশি খাওয়া এবং চিনি, ফ্যাট ও লবণ কম খাওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওজন কমাতে অনুপ্রেরণা ধরে রাখবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৫
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।

নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।

জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া

যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।

পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা

ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।

যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়

ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।

সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব

পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

বাধা এলে যা করতে হবে

জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।

তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্‌যাপন করুন

এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

সূত্র: হেলথ লাইন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতে থাইরয়েড রোগীরা যা করবেন

ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম 
শীতে থাইরয়েড রোগীরা যা করবেন

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।

হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ

  • ওজন বেড়ে যাওয়া
  • ঘুম কম হওয়া
  • শীত শীত ভাব
  • সন্তান ধারণে সমস্যা
  • বিষণ্নতা

শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা

কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।

শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।

শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়

গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।

ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।

খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।

মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।

শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন

থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র‍্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।

নিয়মিত ফলোআপ

৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।

এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সবজির পুষ্টিগুণ পাওয়ার সঠিক উপায়

মো. ইকবাল হোসেন
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।

এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।

শাকসবজি কাটার পরে ধোয়া

আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।

অনেক সময় ধরে রান্না করা

শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।

শাকসবজির রং বজায় রাখুন

প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।

কাটার পর দ্রুত রান্না করুন

অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।

ধারালো বঁটি বা ছুরি ব্যবহার করুন

শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।

বড় টুকরা করে কাটুন

সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।

খোসাসহ রান্না করতে হবে

গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।

ভাজা ভাজা করবেন না

শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত

ডা. মো. আরমান হোসেন রনি 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।

কারণ

শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

কী ঘটে

শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—

মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।

চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।

ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

লক্ষণ

শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:

অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া

  • বমি
  • খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া
  • খিঁচুনি
  • শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া
  • অচেতনতা বা কোমা

চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—

  • এক বা উভয় চোখে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনাল রক্তক্ষরণ
  • ⁠প্রি-রেটিনাল, ইনট্রা-রেটিনাল ও সাব-রেটিনাল রক্তক্ষরণ
  • কখনো কখনো অপটিক ডিস্ক এডিমা

রোগনির্ণয়

শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—

  • চোখের রেটিনা পরীক্ষা
  • সিটি স্ক্যান বা এমআরআই
  • নিউরোলজিক্যাল মূল্যায়ন
  • শিশুর ইতিহাস ও সামাজিক প্রেক্ষাপট মূল্যায়ন

চিকিৎসা

এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—

  • শিশুর জীবন রক্ষা ও সাপোর্টিভ কেয়ার
  • খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণ
  • মস্তিষ্কের ভেতরের চাপ কমানো
  • নিউরোসার্জন ও পেডিয়াট্রিশিয়ানের তত্ত্বাবধান
  • চোখের জটিলতার জন্য চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া।

চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব

শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—

  • যথাযথ মেডিকো-লিগ্যাল ডকুমেন্টেশন
  • সংশ্লিষ্ট চাইল্ড প্রোটেকশন সার্ভিস বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানানো
  • ভবিষ্যতে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর সামান্তা শারমিনের রহস্যময় পোস্ট

তাসনিম জারার পদত্যাগের পর তিন এনসিপি নেত্রীর রহস্যময় পোস্ট

জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার যে ব্যাখ্যা দিলেন আখতার

জামায়াতের সঙ্গে জোটে আপত্তি এনসিপির ৩০ নেতার, নাহিদকে চিঠি

রাতে শাহবাগে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে যা বললেন ডিএমপি কমিশনার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত