বিভুরঞ্জন সরকার

২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা দিবস। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই রাজনৈতিক দলটির। ১৯৪৯ থেকে ২০২৪। দীর্ঘ সময়। দীর্ঘ পথপরিক্রমা। জন্মলগ্নে নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ।
১৯৫৪ সালে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামেই দলটির পরিচিতি এবং বিস্তৃতি ঘটতে থাকে। এই দলের প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, উদ্যোগী ছিলেন, তাঁরা সবাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন। পাকিস্তান জন্ম নেওয়ার দুই বছর না যেতেই কেন একটি নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম দিতে হলো, তা অবশ্যই ভাবার বিষয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার গর্ভজাত দল নয়।
ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরতেই এই দলের জন্ম। তাই এটা বলা যায় যে জনগণের প্রয়োজনে, জনগণের দল হিসেবেই আওয়ামী লীগের জন্ম ও বেড়ে ওঠা।বাংলাদেশের মানুষ সবাই হয়তো আওয়ামী লীগ করে না, অনেকেই আছে বরং চরম আওয়ামী লীগবিরোধী। কিন্তু আওয়ামী লীগকে নাকচ করা বা বাতিল করার উপায় কারও নেই। বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগকে আলাদা করা যাবে না। আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ হারলে বাংলাদেশ হারে—এটা কোনো বুলিমাত্র নয়।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বদানকারী দল মুসলিম লীগ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গণবিরোধী ভূমিকা এবং প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের রাজনীতির পাকে জড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানের পূর্ব অংশে মুসলিম লীগ রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত মাওলানা আকরম খাঁ এবং খাজা নাজিমুদ্দিনের হাতে। উপেক্ষিত হন মুসলিম লীগের মধ্যে উদার ও অগ্রসর চিন্তার ব্যক্তিরা। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিম, শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেকে ছিলেন এই ধারায়। তাঁরাই মূলত আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী ভূমিকা রাখেন। প্রতিষ্ঠার ছয় বছরের মাথায় দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ রাখা হয়।
আওয়ামী লীগকে দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত অবদান সবচেয়ে বেশি। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাঁকে যতই জনগণের সামনে শত্রু বা ভিলেন বানানোর চেষ্টা করেছে, তাঁকে বারবার কারাগারে নিয়েছে, বিনা বিচারে আটক রেখেছে, দেশের মানুষ ততই তাঁকে আপনজন ভেবেছে, নায়ক হিসেবে গ্রহণ করেছে। যারা শেখ মুজিবকে গুরুত্বহীন করে তোলার চেষ্টা করেছে, মানুষের কাছে তারাই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।
১৯৬৬ সালে ৬ দফা ঘোষণা, ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার, শেখ মুজিবের মুক্তি পাওয়া, বঙ্গবন্ধু হওয়া, সত্তরের নির্বাচনে অভূতপূর্ব জয় এবং তারপর একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান—সবই সম্ভব করে তুলেছে এ দেশের মানুষ। বঙ্গবন্ধু যেমন মানুষের অনিঃশেষ ভালোবাসা পেয়েছেন, তেমনি তিনিও দেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন, একটু বেশিই ভালোবেসেছেন। মানুষকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে তিনি রাজনীতির হিসাব-নিকাশ করেননি। রাজনীতি ছিল যাঁর জীবন। তিনি মানুষকে বিশ্বাস-ভালোবাসার বেলায় থাকলেন বেহিসাবি। ইতিহাসের কী মারাত্মক স্ববিরোধ!
শেখ মুজিবকে জীবন দিতে হয়েছে তিনি যে দেশের স্বাধীনতার ধারাবাহিক সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই স্বাধীন দেশেরই একদল বিশ্বাসঘাতকের হাতে। তাঁর কি কোনো বড় ভুল ছিল? তিনি কি বুঝতে পারেননি যে দুধকলা দিয়ে কালসাপ পুষছেন? তিনি বুঝতেন, জানতেনও। কারা তাঁর শত্রু, কারা গোপনে অস্ত্র শাণ দিচ্ছে, সেসব তিনি জানতেন। বিশ্বাস করতে চাইতেন না। ভাবতেন, সব ঠিক হয়ে যাবে।
কিছুই ঠিক হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলো। দেশের রাজনীতি চলে গেল একাত্তর-পূর্ব ধারায়।
মুজিববিহীন দেশে দিশেহারা অবস্থায় একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের হাল ধরলেন তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। যে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছিল পঁচাত্তরের খুনিচক্র, মুজিব হত্যার প্রধান বেনিফিশিয়ারি জিয়াউর রহমান, সেই আওয়ামী লীগ কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যারা দম্ভ করে বলত, আওয়ামী লীগ আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তাদের দম্ভ চূর্ণ হয়েছে। তাদেরই বরং ক্ষমতায় ফেরার আশা প্রায় দুরাশায় পরিণত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের উত্থান-পতনের সঙ্গে বাঙালি জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য জড়িত। এই দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় নিশ্চিত করেছে। আবার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের নতুন সমৃদ্ধিযাত্রা। বাংলাদেশকে আজ আর বিশ্বসম্প্রদায় দুর্যোগ-দুর্বিপাক এবং ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো দেশ মনে করে না। বাংলাদেশ আজ আত্মশক্তিতে বলীয়ান মর্যাদাসম্পন্ন একটি দেশ। উন্নয়ন সহায়ক দেশ ও প্রতিষ্ঠানের অন্যায় চাপ, পরামর্শ উপেক্ষা করার সাহসও বাংলাদেশ অর্জন করেছে।
পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েসহ যেসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দৃশ্যমান হয়ে উঠছে, তা কার্যত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম বাংলাদেশেরই ছবি। একসময়ের সাহায্যনির্ভর বাংলাদেশ এখন অন্য দেশের সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
তার মানে কি বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নেই? আওয়ামী লীগ যা করছে, সব ভালো? না, তা অবশ্যই নয়। আওয়ামী লীগের ভেতরেও নানা সংকট আছে। সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে আদর্শের সংকট। আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্র ও উদারতার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, অন্যদের চেয়ে আলাদা বৈশিষ্ট্য উজ্জ্বল করে তুলেছে, সেখানে এখন তৈরি হয়েছে ফাটল। আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতাই এখন প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে।
এ কথা ঠিক, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ ও দেশের মানুষের দুর্দশা-দুর্গতি বাড়ে। সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী রাজনীতি ফণা তোলে, আবার এটাও অসত্য নয় যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য যে নীতিহীন আপসকামী ভূমিকা নিচ্ছে, সেটা আসলে দেশের আত্মশক্তিও দুর্বল করছে। আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতি-অনৈতিকতা শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপন করছে। মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ। তাই যেকোনো মূল্যে জনগণের মধ্যে আস্থা ধরে রাখার কাজে আওয়ামী লীগকে সফল হতেই হবে। সময়ের দাবি বা প্রয়োজন পূরণে আওয়ামী লীগ কখনো ব্যর্থ হয়নি। দেশের যেকোনো সংকটকালে যখনই প্রশ্ন এসেছে, আওয়ামী লীগ সংকট মোকাবিলার সক্ষমতা দেখাতে পারবে তো?
আওয়ামী লীগ কিন্তু তা পেরেছে। আওয়ামী লীগ পেরেছে বলেই অন্যরা হেরেছে। অন্যরা হেরেছে বলে দেশের কোনো ক্ষতি হয়নি। দেশের হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আওয়ামী লীগ। হৃৎপিণ্ড উপড়ে নিলে যেমন মানুষ বাঁচে না, তেমনি আওয়ামী লীগও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় হেলাফেলা করলে বাংলাদেশেরও কার্যত নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীরা টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। কিন্তু দেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন নানা কারণে উঠছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের বিজ্ঞানমুখী এবং যুক্তিবাদী হওয়ার ডাক দিয়েছেন। কিন্তু আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে কি মানুষকে ধর্মমুখী করে তোলার চেষ্টা করছে না? ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিষয়। রাজনীতি থেকে ধর্মকে দূরে রাখার যে নীতি বঙ্গবন্ধু অনুসরণ করতেন, আজকের আওয়ামী লীগ কি সেই ধারায় দৃঢ় আছে?
পরগাছাকে বঙ্গবন্ধু ভয় করতেন। পরগাছা রাজনীতিবিদদের প্রতি ছিল তাঁর ঘৃণা। কিন্তু ক্ষমতার রাজনীতির নানা মেরুকরণে এখন আওয়ামী লীগেও ঢুকে পড়েছে আগাছা-পরগাছা, যাদের বলা হচ্ছে হাইব্রিড, কাউয়া। দলের মধ্যে যেসব প্রাণঘাতী ভাইরাস ঢুকেছে, তাদের পরাস্ত করার সংগ্রাম শুরু করতে হবে আওয়ামী লীগকে। করোনাভাইরাস অদৃশ্য শক্তি, আওয়ামী লীগের ভাইরাস দৃশ্যমান, সহজে শনাক্ত করা সম্ভব। অদৃশ্য শত্রুকে পরাভূত করার সংগ্রামে সফল হওয়া গেলে দৃশ্যমান শত্রু মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ সফল হবে না কেন?
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা দিবস। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই রাজনৈতিক দলটির। ১৯৪৯ থেকে ২০২৪। দীর্ঘ সময়। দীর্ঘ পথপরিক্রমা। জন্মলগ্নে নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ।
১৯৫৪ সালে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামেই দলটির পরিচিতি এবং বিস্তৃতি ঘটতে থাকে। এই দলের প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, উদ্যোগী ছিলেন, তাঁরা সবাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন। পাকিস্তান জন্ম নেওয়ার দুই বছর না যেতেই কেন একটি নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম দিতে হলো, তা অবশ্যই ভাবার বিষয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার গর্ভজাত দল নয়।
ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরতেই এই দলের জন্ম। তাই এটা বলা যায় যে জনগণের প্রয়োজনে, জনগণের দল হিসেবেই আওয়ামী লীগের জন্ম ও বেড়ে ওঠা।বাংলাদেশের মানুষ সবাই হয়তো আওয়ামী লীগ করে না, অনেকেই আছে বরং চরম আওয়ামী লীগবিরোধী। কিন্তু আওয়ামী লীগকে নাকচ করা বা বাতিল করার উপায় কারও নেই। বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগকে আলাদা করা যাবে না। আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ হারলে বাংলাদেশ হারে—এটা কোনো বুলিমাত্র নয়।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্বদানকারী দল মুসলিম লীগ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই গণবিরোধী ভূমিকা এবং প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের রাজনীতির পাকে জড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানের পূর্ব অংশে মুসলিম লীগ রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় রক্ষণশীল হিসেবে পরিচিত মাওলানা আকরম খাঁ এবং খাজা নাজিমুদ্দিনের হাতে। উপেক্ষিত হন মুসলিম লীগের মধ্যে উদার ও অগ্রসর চিন্তার ব্যক্তিরা। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিম, শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেকে ছিলেন এই ধারায়। তাঁরাই মূলত আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী ভূমিকা রাখেন। প্রতিষ্ঠার ছয় বছরের মাথায় দলের নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ রাখা হয়।
আওয়ামী লীগকে দেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত অবদান সবচেয়ে বেশি। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাঁকে যতই জনগণের সামনে শত্রু বা ভিলেন বানানোর চেষ্টা করেছে, তাঁকে বারবার কারাগারে নিয়েছে, বিনা বিচারে আটক রেখেছে, দেশের মানুষ ততই তাঁকে আপনজন ভেবেছে, নায়ক হিসেবে গ্রহণ করেছে। যারা শেখ মুজিবকে গুরুত্বহীন করে তোলার চেষ্টা করেছে, মানুষের কাছে তারাই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।
১৯৬৬ সালে ৬ দফা ঘোষণা, ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার, শেখ মুজিবের মুক্তি পাওয়া, বঙ্গবন্ধু হওয়া, সত্তরের নির্বাচনে অভূতপূর্ব জয় এবং তারপর একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদান—সবই সম্ভব করে তুলেছে এ দেশের মানুষ। বঙ্গবন্ধু যেমন মানুষের অনিঃশেষ ভালোবাসা পেয়েছেন, তেমনি তিনিও দেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন, একটু বেশিই ভালোবেসেছেন। মানুষকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে তিনি রাজনীতির হিসাব-নিকাশ করেননি। রাজনীতি ছিল যাঁর জীবন। তিনি মানুষকে বিশ্বাস-ভালোবাসার বেলায় থাকলেন বেহিসাবি। ইতিহাসের কী মারাত্মক স্ববিরোধ!
শেখ মুজিবকে জীবন দিতে হয়েছে তিনি যে দেশের স্বাধীনতার ধারাবাহিক সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই স্বাধীন দেশেরই একদল বিশ্বাসঘাতকের হাতে। তাঁর কি কোনো বড় ভুল ছিল? তিনি কি বুঝতে পারেননি যে দুধকলা দিয়ে কালসাপ পুষছেন? তিনি বুঝতেন, জানতেনও। কারা তাঁর শত্রু, কারা গোপনে অস্ত্র শাণ দিচ্ছে, সেসব তিনি জানতেন। বিশ্বাস করতে চাইতেন না। ভাবতেন, সব ঠিক হয়ে যাবে।
কিছুই ঠিক হয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলো। দেশের রাজনীতি চলে গেল একাত্তর-পূর্ব ধারায়।
মুজিববিহীন দেশে দিশেহারা অবস্থায় একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের হাল ধরলেন তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। যে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছিল পঁচাত্তরের খুনিচক্র, মুজিব হত্যার প্রধান বেনিফিশিয়ারি জিয়াউর রহমান, সেই আওয়ামী লীগ কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যারা দম্ভ করে বলত, আওয়ামী লীগ আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তাদের দম্ভ চূর্ণ হয়েছে। তাদেরই বরং ক্ষমতায় ফেরার আশা প্রায় দুরাশায় পরিণত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের উত্থান-পতনের সঙ্গে বাঙালি জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য জড়িত। এই দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় নিশ্চিত করেছে। আবার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের নতুন সমৃদ্ধিযাত্রা। বাংলাদেশকে আজ আর বিশ্বসম্প্রদায় দুর্যোগ-দুর্বিপাক এবং ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো দেশ মনে করে না। বাংলাদেশ আজ আত্মশক্তিতে বলীয়ান মর্যাদাসম্পন্ন একটি দেশ। উন্নয়ন সহায়ক দেশ ও প্রতিষ্ঠানের অন্যায় চাপ, পরামর্শ উপেক্ষা করার সাহসও বাংলাদেশ অর্জন করেছে।
পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েসহ যেসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দৃশ্যমান হয়ে উঠছে, তা কার্যত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম বাংলাদেশেরই ছবি। একসময়ের সাহায্যনির্ভর বাংলাদেশ এখন অন্য দেশের সাহায্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
তার মানে কি বাংলাদেশের কোনো সমস্যা নেই? আওয়ামী লীগ যা করছে, সব ভালো? না, তা অবশ্যই নয়। আওয়ামী লীগের ভেতরেও নানা সংকট আছে। সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে আদর্শের সংকট। আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্র ও উদারতার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, অন্যদের চেয়ে আলাদা বৈশিষ্ট্য উজ্জ্বল করে তুলেছে, সেখানে এখন তৈরি হয়েছে ফাটল। আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতাই এখন প্রধান বিষয় হয়ে উঠেছে।
এ কথা ঠিক, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ ও দেশের মানুষের দুর্দশা-দুর্গতি বাড়ে। সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী রাজনীতি ফণা তোলে, আবার এটাও অসত্য নয় যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য যে নীতিহীন আপসকামী ভূমিকা নিচ্ছে, সেটা আসলে দেশের আত্মশক্তিও দুর্বল করছে। আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-মন্ত্রী-এমপির দুর্নীতি-অনৈতিকতা শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপন করছে। মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ। তাই যেকোনো মূল্যে জনগণের মধ্যে আস্থা ধরে রাখার কাজে আওয়ামী লীগকে সফল হতেই হবে। সময়ের দাবি বা প্রয়োজন পূরণে আওয়ামী লীগ কখনো ব্যর্থ হয়নি। দেশের যেকোনো সংকটকালে যখনই প্রশ্ন এসেছে, আওয়ামী লীগ সংকট মোকাবিলার সক্ষমতা দেখাতে পারবে তো?
আওয়ামী লীগ কিন্তু তা পেরেছে। আওয়ামী লীগ পেরেছে বলেই অন্যরা হেরেছে। অন্যরা হেরেছে বলে দেশের কোনো ক্ষতি হয়নি। দেশের হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আওয়ামী লীগ। হৃৎপিণ্ড উপড়ে নিলে যেমন মানুষ বাঁচে না, তেমনি আওয়ামী লীগও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় হেলাফেলা করলে বাংলাদেশেরও কার্যত নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারীরা টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। কিন্তু দেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে কি না, সে প্রশ্ন নানা কারণে উঠছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের বিজ্ঞানমুখী এবং যুক্তিবাদী হওয়ার ডাক দিয়েছেন। কিন্তু আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে কি মানুষকে ধর্মমুখী করে তোলার চেষ্টা করছে না? ধর্ম মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিষয়। রাজনীতি থেকে ধর্মকে দূরে রাখার যে নীতি বঙ্গবন্ধু অনুসরণ করতেন, আজকের আওয়ামী লীগ কি সেই ধারায় দৃঢ় আছে?
পরগাছাকে বঙ্গবন্ধু ভয় করতেন। পরগাছা রাজনীতিবিদদের প্রতি ছিল তাঁর ঘৃণা। কিন্তু ক্ষমতার রাজনীতির নানা মেরুকরণে এখন আওয়ামী লীগেও ঢুকে পড়েছে আগাছা-পরগাছা, যাদের বলা হচ্ছে হাইব্রিড, কাউয়া। দলের মধ্যে যেসব প্রাণঘাতী ভাইরাস ঢুকেছে, তাদের পরাস্ত করার সংগ্রাম শুরু করতে হবে আওয়ামী লীগকে। করোনাভাইরাস অদৃশ্য শক্তি, আওয়ামী লীগের ভাইরাস দৃশ্যমান, সহজে শনাক্ত করা সম্ভব। অদৃশ্য শত্রুকে পরাভূত করার সংগ্রামে সফল হওয়া গেলে দৃশ্যমান শত্রু মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ সফল হবে না কেন?
লেখক: জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা দিবস। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই রাজনৈতিক দলটির। ১৯৪৯ থেকে ২০২৪। দীর্ঘ সময়। দীর্ঘ পথপরিক্রমা। জন্মলগ্নে নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ।
২৩ জুন ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা দিবস। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই রাজনৈতিক দলটির। ১৯৪৯ থেকে ২০২৪। দীর্ঘ সময়। দীর্ঘ পথপরিক্রমা। জন্মলগ্নে নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ।
২৩ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা দিবস। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই রাজনৈতিক দলটির। ১৯৪৯ থেকে ২০২৪। দীর্ঘ সময়। দীর্ঘ পথপরিক্রমা। জন্মলগ্নে নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ।
২৩ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা দিবস। ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই রাজনৈতিক দলটির। ১৯৪৯ থেকে ২০২৪। দীর্ঘ সময়। দীর্ঘ পথপরিক্রমা। জন্মলগ্নে নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ।
২৩ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫