Ajker Patrika

আমি জুটিপ্রথায় বিশ্বাস করি না: ফেরদৌস

খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আমি জুটিপ্রথায় বিশ্বাস করি না: ফেরদৌস

ফেরদৌস-মৌসুমী বাংলা ছবির আলোচিত জুটি। অনেকদিন পর এ জুটিকে পর্দায় আনতে চাচ্ছেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। এ ছবিতে অভিনয়ের কথা কি চূড়ান্ত?

ঈদের আগে ঝন্টু ভাই বলেছিলেন, আমাকে আর মৌসুমীকে নিয়ে একটা দুর্দান্ত গল্প রেডি করেছেন। তারপর তো লকডাউন শুরু হয়ে গেল। তাঁর সঙ্গে এর আগে আমি একটা ছবি করেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের উপরে। তিনি তো আমার খুবই পছন্দের একজন মানুষ। যদি ঝন্টু ভাই ওইরকম কোনো ছবির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন, অবশ্যই করব। কিন্তু এখনো কিছু ফাইনাল হয়নি। আপনাকে কে বললো?

এফডিসিতে এটা নিয়ে আলাপ করছিলেন কয়েকজন। সেখান থেকে জানতে পারলাম।

আমাকে বলেছে, ‘তোকে আর মৌসুমীকে নিয়ে একটা অসাধারণ গল্প রেডি করছি। আমার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গল্প।’ শুনে খুব ভালো লেগেছে আমার।

ফেরদৌসের মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পরিচালনায় ‘পৃথিবী আমারে চায় না’আপনার লেখালেখির খবরও শুনলাম যে, আপনি একটা বই লিখছেন ‘এই গল্প সত্য নয়’ নামে। আগামী মেলায় বাজারে আসার কথা। কতদূর এগোল লেখার কাজ?

আমি আসলে এমনি এমনি লিখি মাঝেমাঝে। আমার একটা ভ্রমণ কাহিনি, তার সঙ্গে দুটো কাল্পনিক চরিত্র জুড়ে দিয়ে একটা বই লিখছি। ফিকশন টাইপের আরকি। তো দেখি, এবার বইমেলায় প্রকাশের ইচ্ছা আছে। লিখতে আমার বেশ প্রবলেম হয়। আমি তো হাতে লিখি। কাগজে কলমে। ধৈর্য হারিয়ে ফেলি মাঝে মধ্যে। টাইপ করে লিখতে পারি না। টাইপ করে লিখলে আমার ইমোশনটা আসে না।

 

শোবিজের প্রায় সবাই অনেকদিন ধরে ঘরবন্দি। ধীরে ধীরে কাজ শুরু হচ্ছে। আপনিও তো শুটিং শুরু করলেন…

হৃদি হকের পরিচালনায় ‘১৯৭১: সেই সব দিন’ ছবির কাজ শুরু করলাম আজ (গতকাল) থেকে। সাভার ক্যান্টনমেন্টে হচ্ছে শুটিং। এ ছবিতে আমি অভিনয় করছি সঞ্জু চরিত্রে, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। এর আগেও আমি সরকারি অনুদানে কিংবা অনুদানের বাইরেও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্পের ছবিতে অভিনয় করেছি। কিন্তু মনে হচ্ছে যে ‘১৯৭১: সেই সব দিন’ আমার করা মুক্তিযুদ্ধের গল্পের ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ভালো ছবি।

বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতার অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন ফেরদৌসনতুন প্ল্যাটফর্ম এসেছে। মূলধারার ছবির বাইরেও ওয়েব ফিল্ম তৈরি হচ্ছে। চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতারা কাজ করছেন। আপনার কি মনে হয়, এতে সিনেমাহলের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে?

আমার কাছে মনে হচ্ছে, মহামারীর যে অবস্থা এখন, আরো যদি রিকভার করে, তাহলে আরো কিছু হল খুলবে। ইতিমধ্যে কিছু মাল্টিপ্লেক্স তৈরি হয়েছে। আরও কিছু তৈরি হওয়ার কথা। সেই হিসেবে এই যে নতুন মাধ্যমগুলো আসছে, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, সেটা খুবই ইতিবাচক। এজন্য যে, আর্টিস্ট-টেকনিশিয়ানদের কাজের পরিধি বাড়ছে। যেটা খুব দরকার ছিল। কারণ গত দেড় দুই বছর ধরে শিল্পী-কলাকুশলী যারা পার-ডে হিসেবে কাজ করেন, তাদের খুব বাজে অবস্থা যাচ্ছিল। এক্ষেত্রে ওয়েব সিরিজ, ওয়েব ফিল্ম হওয়াতে কাজের বিস্তার ঘটেছে। এরমধ্যে আমরা অবশ্যই কোয়ালিটিফুল কিছু কাজ পাচ্ছি, পেয়েছি এবং পাব। কনটেন্টগুলো যদিও এখন অন্যরকম হচ্ছে, এ মুহূর্তে যে ধরনের কনটেন্ট বেশি চলছে, থ্রিলার-অ্যাকশন টাইপের। কিন্তু আমার কাছ মনে হয়, কিছুদিনের মধ্যে আরও জীবনঘনিষ্ঠ কনটেন্ট আমরা পাব। যেগুলো নিয়ে হয়তো মানুষ সাধারণত ফিল্ম করার সাহস করে না।

মিট্টি নামের একটি বলিউডের ছবিতেও অভিনয় করেছেন ফেরদৌসমানে টিভি-সিনেমা হল-ওয়েব; মাধ্যম যেটাই হোক, কনটেন্টের মানই শেষ কথা?

ডেফিনেটলি। আমরা তো কখনো ভাবিনি যে, মোবাইল হাতে নিয়ে ছবি দেখব। আমাদের জেনারেশনেই কিন্তু আমরা অনেককিছু দেখলাম। আমরা থার্টি ফাইভে কাজ করেছি, ডিজিটালিও করলাম, আবার এখন ওয়েব কনটেন্টেও কাজ করছি। এরপরও যদি নতুন কিছু চলে আসে, সে মাধ্যমেও হয়তো আমরা কাজ করব। মাধ্যম আসতে থাকবে। মাধ্যমের সাথে সাথে নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। অভিনয় স্টাইলে, মেকিংয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। এই ব্যাপারে সচেতন হতে হবে সবাইকে।

আপনাকে যদি ওয়েব ফিল্ম বা সিরিজে কাজের অফার দেওয়া হয়। করবেন?

নিশ্চয়ই করব। যদি ওয়েব কনটেন্টে আমি যাই, সেক্ষেত্রে আমি প্রেফার করবো একবারেই আউট অব দ্য বক্স কনটেন্ট। যে ধরনের চরিত্র আমি করিনি, এবং আমাকে কেউ কখনো দেখেইনি এমন চরিত্র দিয়ে আমি ওয়েব কনটেন্টে আসতে চাই।

১৯৯৮ সালে বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত ‘হঠাৎ বৃষ্টি’ ছবিতে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ফেরদৌসপরিবর্তন আর ফেরদৌস—অনেকটা সমার্থক। নিজেকে প্রতিনিয়ত বদলেছেন। এক ধরনের চরিত্রে আটকে থাকেননি। এইসময়ে ফেরদৌসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা কী?

আমি সবসময় চেষ্টা করি নিজেকে ভেঙে গড়ার। আমি কখনোই মনোটনি হতে চাই না। এজন্য আমি জুটি প্রথায়ও বিশ্বাসী না। কারণ আমাদের দেশে যেভাবে জুটি তৈরি করা হতো, জুটিটাকে মনোটোনাস করে ফেলত। যখন ফেরদৌস-শাবনূর চলতে থাকলো কিংবা ফেরদৌস-মৌসুমী, তখন একই টাইপের ছবি আসতো। একপর্যায়ে জুটির ওপর নির্ভরশীল হয়ে যান পরিচালকরা। এজন্য জুটিপ্রথায় প্রথম থেকেই বিশ্বাসী ছিলাম না। আমি সবসময় ভেঙে ভেঙে কাজ করি। ফেরদৌস মানেই আরবান ফিল্ম করবে, মডার্ন ফিল্ম করবে… সেই ধারণা থেকে বেরিয়ে একেবারেই অফট্র্যাকের কাজ করেছি আমি। ডোমের চরিত্র করেছি, কৃষকের চরিত্র করেছি, চোরের চরিত্র, জুয়াড়ির চরিত্র; নানান ধরনের কাজে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করেছি। এটাই নিজের সাথে আমার নিজের একধরনের লড়াই।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: খায়রুল বাসার নির্ঝর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদা পারভীনের জন্মদিনে শিল্পকলায় বিশেষ আয়োজন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
ফরিদা পারভীন। ছবি: সংগৃহীত
ফরিদা পারভীন। ছবি: সংগৃহীত

শিষ্যদের মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তাই লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। মনের বাসনা ব্যক্ত করে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘সাঁইজি যেমন তাঁর শিষ্যদের মাঝে বেঁচে আছেন, আমার মাঝে আমার গুরু বেঁচে আছেন, তেমনি আমার অচিন পাখির ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আমি বেঁচে থাকতে চাই।’ আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর ফরিদা পারভীনের জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তাঁর গড়া অচিন পাখি সংগীত একাডেমি।

আগামীকাল বুধবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে থাকবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন। আমন্ত্রিত অতিথিরা কথায় কথায় তুলে ধরবেন শিল্পীর জীবনের নানা অধ্যায়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন। উদ্বোধন করবেন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। সভাপতিত্ব করবেন ফরিদা পারভীনের জীবনসঙ্গী ও বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম।

ফরিদা পারভীনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর, নাটোরে। পাঁচ বছর বয়সে মাগুরায় কমল চক্রবর্তীর কাছে গানের হাতেখড়ি ফরিদা পারভীনের। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাঁর পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। ক্যারিয়ারে নজরুলগীতি, দেশাত্মবোধকসহ নানা ধরনের গান করলেও তিনি মূলত জনপ্রিয়তা পেয়েছেন লালনসংগীতে। সংগীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ফরিদা পারভীন পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩), জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কারসহ (২০০৮) অসংখ্য পুরস্কার।

এ বছর ১৩ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ফরিদা পারভীন। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুভমিতা ও ঊষা উত্থুপের কণ্ঠে সাবরিনার গান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শুভমিতা, সাবরিনা রুবিন ও ঊষা উত্থুপ। ছবি: সংগৃহীত
শুভমিতা, সাবরিনা রুবিন ও ঊষা উত্থুপ। ছবি: সংগৃহীত

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সুনাম কুড়িয়েছেন লেখক ও গীতিকার ডা. সাবরিনা রুবিন। রাশিয়া, আমেরিকা, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গান। তাঁর লেখা নতুন দুই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ভারতের কণ্ঠশিল্পী শুভমিতা ও ঊষা উত্থুপ। শুভমিতা গেয়েছেন ‘এখানেই সব কিছু শেষ হোক’ শিরোনামের গান। সংগীত আয়োজন করেছেন কলকাতার দেব গৌতম। সম্প্রতি দেব গৌতমের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে গানটি। এ ছাড়া নতুন বছরের শুরুতে প্রকাশ পাবে সাবরিনার লেখা ঊষা উত্থুপের গাওয়া নতুন একটি গান।

সাবরিনা বলেন, ‘শুভমিতার গাওয়া গানটি নিয়ে ইতিমধ্যেই ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। নতুন বছরে আসছে আমার লেখা ও ঊষা উত্থুপের গাওয়া নতুন গান। আমার বিশ্বাস, এ গানটিও শ্রোতাদের মন জয় করবে।’

বাংলাদেশে সাবরিনার লেখা গান গেয়েছেন শুভ্র দেব, শান শায়খ, তাসনিম স্বর্ণাসহ অনেকে। ভারতের মালয়ালাম সিনেমায়ও কাজ করেছেন সাবরিনা। পাশাপাশি তামিল সিনেমায় বাংলা গীতিকথা লিখেছেন তিনি। তাঁর গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ভারতের শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা, ঊষা উত্থুপ, দেব গৌতমসহ অনেকে।

সাহিত্য অঙ্গনে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাবরিনা রুবিন পেয়েছেন ইয়াসির আরাফাত ওয়ার্ল্ড পিস অ্যাওয়ার্ড, চেকভ ব্রোঞ্জ অনার, গুজরাট সাহিত্য একাডেমি অ্যাওয়ার্ড ও মোটিভেশনাল স্ট্রিপস অনার, মুনির মেজিয়েদ অ্যাওয়ার্ড ইন লিটারেচার, তাজাকিস্তানের সিপে অ্যাওয়ার্ড, রবীন্দ্রনাথ সম্মাননাসহ অনেক আন্তর্জাতিক সম্মাননা। আমাজন প্রকাশ করেছে তাঁর লেখা গায়ক শুভ্র দেবের বায়োগ্রাফি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তিন প্রজন্মের গল্পে নতুন ধারাবাহিক ‘পরম্পরা’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সংবাদ সম্মেলনে ‘পরম্পরা’র শিল্পী ও কলাকুশলীরা। ছবি: সংগৃহীত
সংবাদ সম্মেলনে ‘পরম্পরা’র শিল্পী ও কলাকুশলীরা। ছবি: সংগৃহীত

নতুন বছরের শুরুতে নতুন ধারাবাহিক নিয়ে আসছে দীপ্ত টিভি। তিন প্রজন্মের জীবনবোধ, মূল্যবোধ ও সম্পর্কের টানাপোড়েনকে কেন্দ্র করে নির্মিত ধারাবাহিকটির নাম ‘পরম্পরা’। পরিচালনা করেছেন আশিস রায়। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ডলি জহুর, শতাব্দী ওয়াদুদ, সুষমা সরকার, শাফিউল রাজ, নূপুর আহসান, জান্নাতুল ফেরদৌস কাজল, কাজী রাজু, মিলি বাসার, সানজিদা মিলা, শানারেই দেবী শানু প্রমুখ। ৩ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহের শনি থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিন রাত ৯টা ৩০ মিনিটে প্রচারিত হবে ধারাবাহিকটি।

পরম্পরার চিত্রনাট্য লিখেছেন আফিফা মোহসিনা অরণি, সংলাপ রচনা করেছেন সরোয়ার সৈকত। গল্পে দেখা যাবে ইংল্যান্ডে বেড়ে ওঠা নাহিয়ান দীর্ঘদিন পর ঢাকায় ফিরে এসে নিজেকে নতুন সামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশে মানিয়ে নিতে হিমশিম খায়। তার আধুনিক জীবনযাপন ও চিন্তাভাবনার সঙ্গে যৌথ পরিবারের সদস্যদের ঐতিহ্যগত দৃষ্টিভঙ্গির দ্বন্দ্ব শুরু হয়। একই ছাদের নিচে তিন প্রজন্মের ভালোবাসা, সংঘাত, মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা এবং সম্পর্কের গভীরতা ধীরে ধীরে গল্পকে নিয়ে যায় নানা আবেগী মোড়ে।

নতুন এই ধারাবাহিক নিয়ে গতকাল দীপ্ত টিভির প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন দীপ্ত টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফারুক, পরিচালক আশিস রায়, দীপ্ত টিভির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ পরম্পরার শিল্পী ও কলাকুশলীরা। সেখানে ধারাবাহিকটির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন সংশ্লিষ্টরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফিরে দেখা /কনসার্টে অস্থিরতার বছর

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ০২
ঢাকার কনসার্টে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার কনসার্টে আতিফ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত

দেশের সংগীতাঙ্গনে ২০২৫ সাল বিশেষ কোনো সুখবর বয়ে আনতে পারেনি। নতুন গান প্রকাশ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। নতুন গান প্রকাশ না করলেও বছরজুড়ে শিল্পীরা দর্শকদের কাছাকাছি থাকেন লাইভ কনসার্ট দিয়ে। এ বছর কনসার্ট নিয়েও ছিল অস্থিরতা। নিরাপত্তা ইস্যুতে প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় একের পর এক কনসার্ট বাতিল হয়েছে।

ভিনদেশি সংস্কৃতি রুখে দিতে গত ১১ এপ্রিল চার বিভাগীয় শহরে স্বাধীনতা কনসার্টের আয়োজন করা হয়। প্রথমে কনসার্টের তারিখ এক দিন পেছানো হলেও পরবর্তী সময়ে পুরো আয়োজনই বাতিল করা হয়। ১১ এপ্রিল পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জাহিদের কনসার্ট আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। মেলোডি আনলিশড নামের এ কনসার্টে দেশের বেশ কয়েকজন শিল্পী ও ব্যান্ডের গাওয়ার কথা ছিল। এতে অংশ নিতে শিল্পী ঢাকায়ও এসেছিলেন। তবে অনুষ্ঠানের ঘণ্টাখানেক আগে আয়োজনটি বাতিল করা হয়।

ঢাকায় এসেও দর্শকদের গান শোনাতে পারেননি পাকিস্তানের আরেক সংগীতশিল্পী আলী আজমত। ‘লিজেন্ডস লাইভ ইন ঢাকা’ শীর্ষক এ কনসার্টে জেমসেরও গাওয়ার কথা ছিল। তবে ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্থগিত ও পরে বাতিল করা হয় আয়োজনটি। পাকিস্তানের জনপ্রিয় ব্যান্ড জালের কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল ২৮ নভেম্বর। ‘সাউন্ড অব সোল’ শিরোনামের এ কনসার্টে আরও পারফর্ম করার কথা ছিল দেশের দুই ব্যান্ড ওয়ারফেজ ও লেভেল ফাইভের। সেটিও বাতিল হয়ে যায়। ভারতীয় সংগীতশিল্পী অনুভ জৈনের কনসার্ট হওয়ার কথা ছিল ১২ ডিসেম্বর। আয়োজনের সপ্তাহ দুয়েক আগে এটিও বাতিল হয়ে যায়। এর আগে বাতিল হয়েছে পাকিস্তানি ব্যান্ড কাভিশের কনসার্ট।

এ ছাড়া, ১৩ ডিসেম্বর মেইন স্টেজ আয়োজিত এক কনসার্টে গান শোনানোর কথা ছিল আতিফ আসলামের। তিনি ঢাকায়ও এসেছিলেন। প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় কনসার্টটি হয়নি। তার বদলে কয়েকটি প্রাইভেট কনসার্টে গান শুনিয়ে ঢাকা ছাড়েন আতিফ। তবে যে কনসার্ট বাতিলের খবর দেশ-বিদেশে সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তৈরি করেছে, সেটা জেমসের কনসার্ট। গত শুক্রবার ফরিদপুর জেলা স্কুলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সেখানে গাওয়ার কথা ছিল জেমসের। গান শোনাতে যথাসময়ে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। তবে বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলা ও ইটবৃষ্টির মুখে কনসার্টটি বাতিল হয়ে যায়, শেষ পর্যন্ত গান না গেয়েই ফরিদপুর ছাড়েন জেমস।

দেশের কনসার্টে যখন অনিশ্চয়তা চলছিল, তখন শিল্পীরা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বিদেশে। যুক্তরাষ্ট্রে সংগীতসফরে গিয়েছিলেন জেমস, আসিফ আকবর, বাপ্পা মজুমদার, প্রতীক হাসান, প্রীতম হাসান, ব্যান্ড অর্থহীন ও মাইলস। অস্ট্রেলিয়ায় গান শুনিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ ও তানযীর তুহীন। সিঙ্গাপুরে গাইতে গিয়েছিলেন কনা। আর্ক, শিরোনামহীন, ওয়ারফেজ, অ্যাশেজ, মিলাসহ একাধিক ব্যান্ড ও শিল্পী কনসার্ট করেছেন কানাডায়।

বছরজুড়ে যেসব গান নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ঈশান মজুমদার ও শুভেন্দু দাস শুভর ‘গুলবাহার’, কোনাল-নিলয়ের ‘ময়না’, পান্থ কানাইয়ের ‘সেই এক সময় ছিল’, সাইফ জোহানের ‘কিছু মানুষ মরে যায় পঁচিশে’, শিরোনামহীন ব্যান্ডের ‘এই অবেলায় ২’, ইমরানের ‘পারব না তোমাকে ছাড়তে’ ইত্যাদি। কোক স্টুডিও বাংলায় রুনা লায়লার গাওয়া ‘মাস্ত কালান্দার’, তানযীর তুহীনের ‘ক্যাফে’, হাবিবের ‘মহা জাদু’ এবং অঙ্কনের গাওয়া ‘লং ডিসট্যান্স লাভ’ উপভোগ করেছেন শ্রোতারা।

সিনেমায় এ বছর হাতে গোনা কয়েকটি গান আলোচিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তাণ্ডব সিনেমায় প্রীতম ও জেফারের গাওয়া ‘লিচুর বাগানে’, বরবাদ সিনেমায় প্রীতম ও দোলার ‘চাঁদমামা’, জ্বীন থ্রি সিনেমায় ইমরান ও কনার ‘কন্যা’। জংলি সিনেমার ‘ও বন্ধু গো শোনো’, দাগির ‘একটুখানি মন’ গান দুটিও প্রশংসিত হয়েছে। এ ছাড়া, হৃদয়ের কথা নাটকে হাবিব-ন্যান্‌সির গাওয়া ‘আমার দিনগুলো সব যায় হারিয়ে আঁধারে’, আশিকি নাটকে কনা-সজীবের গাওয়া ‘যদি মনটা চুরি করি’ এবং ‘গুলমোহর’ ওয়েব সিরিজে তানযীর তুহীনের গাওয়া ‘সুরের হাহাকার’ গানগুলো শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত