খায়রুল বাসার নির্ঝর

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন। ‘পথের পাঁচালী’তে দুর্গা-অপু-সর্বজয়া-হরিহর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ইন্দির ঠাকুরণও তেমনি।
এই খানিকটা নিশ্চল, অসহায়, আশ্রয়হীন, সর্বজয়ার চোখে স্বার্থপর ইন্দির ঠাকুরণ ভারতীয় উপমহাদেশের নারীর প্রতীক তো বটেই, প্রতিনিধিত্ব করে তৎকালীন সমাজ বাস্তবতারও। ইন্দির ঠাকুরণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন চুনিবালা দেবী। তাঁর সরল-স্বাভাবিক, অথচ আশ্চর্য অভিনয়ক্ষমতা তো লোকে দেখেছেই ‘পথের পাঁচালী’তে, দেখছে এখনও। সত্যজিৎ রায় এই বৃদ্ধাকে কোথা থেকে, কীভাবে পেলেন, সে এক গল্প বৈকি!
সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আমরা ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবীর গল্পে দিকে তাকাতে চাই আরেকবার। এই বৃদ্ধা ছবিটির জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, স্বয়ং সত্যজিৎ বলে গেছেন—‘চুনিবালা দেবীকে নিয়ে কাজ করার সময় বারবার এই কথাটাই মনে হয়েছে যে, এঁর সন্ধান না পেলে আমাদের পথের পাঁচালি হতো না।’ তাঁর মুখে এমন কথা এল কেন? সেটা জানার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ‘পথের পাঁচালী’র শুরুতে।
ইন্দির ঠাকুরণকে পাওয়া যাচ্ছে না
সব প্রস্তুত। অপু, দুর্গা, হরিহর, সর্বজয়া—এ চরিত্রগুলোতে কারা কাজ করবেন; সেটা নির্বাচন হয়ে গেছে। বাকি কাস্টিংগুলোও মোটামুটি সত্যজিৎ রায়ের মাথায় আছে। শুধু নেই ইন্দির ঠাকুরণ। বিভূতিভূষণ যেভাবে চরিত্রটির বর্ণনা দিয়েছেন উপন্যাসে, ‘পঁচাত্তর বৎসরের বৃদ্ধা, গাল তোবড়াইয়া গিয়াছে, মাজা ঈষৎ ভাঙিয়া শরীর সামনের দিকে ঝুঁকে পড়িয়াছে। দূরের জিনিস আগের মতো ঠাহর হয় না’—এমন চরিত্রের কাউকে পাওয়া মুশকিলই।
বিশেষ করে সত্যজিৎ আগেই যখন পত্রিকায় ঘোষণা দিয়ে ফেলেছেন, সিদ্ধান্তও পাকাপাকি যে, ‘এ ছবিতে মেকআপ ব্যবহার করা হবে না।’ আর তা ছাড়া চেহারাই তো সবটা নয়। অন্য সমস্যাও আছে। এত বয়স্ক একজন মহিলা, শুটিংয়ের ধকল সহ্য করতে পারবেন কি না, সংলাপ ঠিকঠাক মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না, এসব ব্যাপারও তো আছে।
এদিকে ইন্দির ঠাকুরণকে রেখেই শুরু হয়ে গেছে ছবির কাজ। ভেতরে ভেতরে খোঁজ চলছে। খোঁজ মিলছে না, সে চিন্তাও আছে।
চরিত্রের খোঁজে পাইকপাড়ায়
‘পথের পাঁচালী’র সেজো ঠাকুরণ যিনি, রেবা দেবী, তিনি সত্যজিৎ রায়কে খোঁজ জানালেন এক বৃদ্ধার। তাঁর নাম চুনিবালা দেবী। এক রোববার। সকালবেলা। ঠিকানা জোগাড় করে সত্যজিৎ রায় ছুটলেন পাইকপাড়ায়। বর্ণনা ঠিকঠাক, যেভাবে ইন্দির ঠাকুরণের বর্ণনা উপন্যাসে দিয়েছেন বিভূতিভূষণ। এখন দেখতে হবে বাদবাকি বিষয়গুলো।
সত্যজিৎ জানতে চাইলেন, ‘আপনি ছড়া জানেন? আবৃত্তি করতে পারেন?’ উত্তর, ‘ঘুমপাড়নি মাসিপিসি’ ছড়ার দশ-বারো লাইনের বেশি আমি কখনো শুনিনি।’ চুনিবালা ছড়াটির আদি সংস্করণ পড়ে গেলেন গড়গড় করে। অর্থাৎ, সংলাপ মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না—এ আশঙ্কা আর থাকল না।
পরের প্রশ্ন—‘এখান থেকে ভোর ছ’টায় রওনা হয়ে পনেরো মাইল দূরে গ্রামে গিয়ে শুটিং করে আবার সন্ধ্যেবেলা সেই পনেরো মাইল পথ মোটরে ফিরে আসতে পারবেন?’ চুনিবালার উত্তরে অনেকখানি দৃঢ়তা, ‘খু-উ-ব’।
একেই বলে আন্তরিকতা!
ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবী, একদিন সত্যজিৎকে বলেছিলেন—‘আপনারা যখন তরুণীকে মেকআপ করে বুড়ি না সাজিয়ে আমাকে বেছে নিয়েছেন, তখনই বুঝেছি কোনদিকে আপনাদের ঝোঁক।’ অর্থাৎ চুনিবালা কিন্তু ঠিকই সত্যজিতের কাজের ধরনটা ধরে ফেলেছিলেন। শুরুতেই।
তাই তিনি সবসময় সচেতন থাকতেন, শুধু ক্যামেরার সামনের সময়টুকুতেই নয়। বাইরেও, নানান খুঁটিনাটি ব্যাপারে। গল্পে ইন্দিরের তো স্বভাব থাকে যে, ছেঁড়াফাঁড়া শাড়িতে গিঁট বেঁধে চালিয়ে নেওয়া। অবশ্য স্বভাবও বলা চলে না। এ ছাড়া তাঁর উপায়ও নেই। ইউনিট থেকে চুনিবালাকে একটা ছেঁড়া থান দেওয়া হলো। বলাও হলো, ‘আপনি ইচ্ছেমতো গেরো বেঁধে ছিদ্রগুলোর একটা ব্যবস্থা করে নেবেন।’
কিছুদিন কাজের পর ছেঁড়া শাড়িটি এমন অবস্থায় পৌঁছাল যে, ওটা আর পরার মতো থাকল না। একদিন সত্যজিৎ রায় শুনলেন, চুনিবালা কাকে যেন বলছেন, ‘এ কাপড়ের যে দশা এতে লজ্জা ঢাকা যায় না।’
তড়িঘড়ি করে আরেকটা থান এনে ছেঁড়ার মাত্রা খানিকটা কমিয়ে তাঁকে দেওয়া হলো। কিন্তু ইন্দিরের বেশে পরদিন যখন চুনিবালা সেটে এলেন, নতুন নয়, পরনে পুরোনো থানটাই!
বৃদ্ধার আশ্চর্য স্মৃতিশক্তি
মাঝেমধ্যে টিমের তো ভুল হতোই। হয়ও। হতো না চুনিবালার। একেবারে নিখুঁত কন্টিউনিটি মনে রাখতেন তিনি।
‘আমার ডান হাত যে ভিজে ছিল সেদিন?’ ‘কই, আমার মুখে ঘাম দিলেন না?’ ‘এ শটে তো আমার গায়ে চাদর থাকবে না।’ ‘আমার পুঁটলি কি ডান হাতে ছিল? না, পুঁটলি বাঁ-হাতে দিন। ঘটি ডান হাতে...’ প্রায়ই এ ধরনের খুঁটিনাটি, অথচ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো ধরিতে দিতেন চুনিবালা।
দুটো মৃত্যু দৃশ্য
চুনিবালা সত্যজিৎকে বললেন, ‘বইয়ে আছে বুড়ি চণ্ডীমণ্ডপে মরছে। আপনি দেখাচ্ছেন বাঁশবনে। ধার্মিক বুড়ি, তার কি বাঁশবনে মরাটা ভালো দেখায়?’ বই, মানে বিভূতিভূষণের মূল উপন্যাসে এটা আছে। চুনিবালা সেটা পড়েছেন, অথবা শুনেছেন কারও কাছ থেকে। সত্যজিৎ যখন উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র বানাচ্ছেন, তখন কিছু পার্থক্য তো এসেই যাবে। ঘটনার, স্থানের, মানসিকতার।
চুনিবালা সবই মেনেছিলেন, কেবল এই মৃত্যুর বেলায় এসে খানিকটা আপত্তি করে বসলেন। সত্যজিৎ বোঝাতে চেষ্টা করলেন, ‘বাঁশবনে মৃতদেহের আবিষ্কার অপু-দুর্গার শিশুমনে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, ছবি ও নাটকের দিক থেকে তার মূল্য অনেক।’ অবশেষে চুনিবালা মানলেন।
দৃশ্য এ রকম—বাগানে বুড়ি হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে আছেন। দুর্গা বুড়িকে ওইভাবে বসে থাকতে দেখে মনে করে যে, বুড়ি ঘুমিয়েছে। ফলে সে কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দেয়। বুড়ির মৃতদেহ ধপ করে মাটিতে পড়ে। এই দৃশ্য কতখানি বাস্তব হয়ে উঠবে, কতখানি আবেদন সৃষ্টি করবে; সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে চুনিবালার ওপর।
সত্যজিৎ লিখছেন, ‘তিনি যদি গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করে তাঁর দেহকে মাটিতে ফেলতে পারেন, তবেই শট-এর ও অভিনয়ের সার্থকতা।’ চুনিবালা কতখানি স্বার্থকভাবে, গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনাকে কতখানি হেলায় উড়িয়ে দিয়ে অভিনয় করেছিলেন, তার প্রমাণ তো আমরা ‘পথের পাঁচালী’তে পাই-ই।
আরেকটি ঘটনা। এটাও মৃত্যুর। ইন্দির ঠাকুরণ মারা গেছেন। তাঁর শবযাত্রা। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানের দিকে—দৃশ্যটি এমন। সকাল পর্যন্ত চুনিবালা জানেন না, এমন একটি শট তাঁকে দিতে হবে। ভোর পাঁচটা। মেঠো রাস্তায় শটের তোড়জোড় চলছে। ট্যাক্সিতে করে পৌঁছলেন চুনিবালা।
সত্যজিৎ রায় ‘কোনোমতে সাহস সঞ্চয় করে’ তাঁকে বললেন, ‘আজ আপনাকে খাটে চড়াবো।’ চুনিবালা বিচলিত হলেন না। রাগলেনও না—‘বেশ তো, এ অভিজ্ঞতা আর ক’জনের হয়? আমার আপত্তি নেই।’
বাঁশের খাট। মাদুর বিছানো হলো তার ওপর। চুনিবালাকে শুইয়ে, চাদরে মুড়ে, দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হলো। তারপর শুরু হলো কাজ। আসল ঘটনা এর পরই। শট শেষ। খাট নামানো হয়েছে মাটিতে। বাঁধনও খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চুনিবালা দেবীর আর নড়চড় নেই। ব্যাপার কী?
অজানা আশঙ্কায় সবাই পরস্পরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করেন। খারাপ কিছু ঘটল না তো! হঠাৎ ধড়ফড় করে উঠে বসলেন চুনিবালা, ‘শট হয়ে গেছে? কই, আমাকে তো কেউ বলেনি! আমি তাই মড়া হয়ে পড়ে আছি।’
ঘটনা শেষ করে সত্যজিৎ রায় বলছেন, ‘আশ্চর্য অভিনয়!’

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন। ‘পথের পাঁচালী’তে দুর্গা-অপু-সর্বজয়া-হরিহর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ইন্দির ঠাকুরণও তেমনি।
এই খানিকটা নিশ্চল, অসহায়, আশ্রয়হীন, সর্বজয়ার চোখে স্বার্থপর ইন্দির ঠাকুরণ ভারতীয় উপমহাদেশের নারীর প্রতীক তো বটেই, প্রতিনিধিত্ব করে তৎকালীন সমাজ বাস্তবতারও। ইন্দির ঠাকুরণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন চুনিবালা দেবী। তাঁর সরল-স্বাভাবিক, অথচ আশ্চর্য অভিনয়ক্ষমতা তো লোকে দেখেছেই ‘পথের পাঁচালী’তে, দেখছে এখনও। সত্যজিৎ রায় এই বৃদ্ধাকে কোথা থেকে, কীভাবে পেলেন, সে এক গল্প বৈকি!
সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আমরা ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবীর গল্পে দিকে তাকাতে চাই আরেকবার। এই বৃদ্ধা ছবিটির জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, স্বয়ং সত্যজিৎ বলে গেছেন—‘চুনিবালা দেবীকে নিয়ে কাজ করার সময় বারবার এই কথাটাই মনে হয়েছে যে, এঁর সন্ধান না পেলে আমাদের পথের পাঁচালি হতো না।’ তাঁর মুখে এমন কথা এল কেন? সেটা জানার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ‘পথের পাঁচালী’র শুরুতে।
ইন্দির ঠাকুরণকে পাওয়া যাচ্ছে না
সব প্রস্তুত। অপু, দুর্গা, হরিহর, সর্বজয়া—এ চরিত্রগুলোতে কারা কাজ করবেন; সেটা নির্বাচন হয়ে গেছে। বাকি কাস্টিংগুলোও মোটামুটি সত্যজিৎ রায়ের মাথায় আছে। শুধু নেই ইন্দির ঠাকুরণ। বিভূতিভূষণ যেভাবে চরিত্রটির বর্ণনা দিয়েছেন উপন্যাসে, ‘পঁচাত্তর বৎসরের বৃদ্ধা, গাল তোবড়াইয়া গিয়াছে, মাজা ঈষৎ ভাঙিয়া শরীর সামনের দিকে ঝুঁকে পড়িয়াছে। দূরের জিনিস আগের মতো ঠাহর হয় না’—এমন চরিত্রের কাউকে পাওয়া মুশকিলই।
বিশেষ করে সত্যজিৎ আগেই যখন পত্রিকায় ঘোষণা দিয়ে ফেলেছেন, সিদ্ধান্তও পাকাপাকি যে, ‘এ ছবিতে মেকআপ ব্যবহার করা হবে না।’ আর তা ছাড়া চেহারাই তো সবটা নয়। অন্য সমস্যাও আছে। এত বয়স্ক একজন মহিলা, শুটিংয়ের ধকল সহ্য করতে পারবেন কি না, সংলাপ ঠিকঠাক মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না, এসব ব্যাপারও তো আছে।
এদিকে ইন্দির ঠাকুরণকে রেখেই শুরু হয়ে গেছে ছবির কাজ। ভেতরে ভেতরে খোঁজ চলছে। খোঁজ মিলছে না, সে চিন্তাও আছে।
চরিত্রের খোঁজে পাইকপাড়ায়
‘পথের পাঁচালী’র সেজো ঠাকুরণ যিনি, রেবা দেবী, তিনি সত্যজিৎ রায়কে খোঁজ জানালেন এক বৃদ্ধার। তাঁর নাম চুনিবালা দেবী। এক রোববার। সকালবেলা। ঠিকানা জোগাড় করে সত্যজিৎ রায় ছুটলেন পাইকপাড়ায়। বর্ণনা ঠিকঠাক, যেভাবে ইন্দির ঠাকুরণের বর্ণনা উপন্যাসে দিয়েছেন বিভূতিভূষণ। এখন দেখতে হবে বাদবাকি বিষয়গুলো।
সত্যজিৎ জানতে চাইলেন, ‘আপনি ছড়া জানেন? আবৃত্তি করতে পারেন?’ উত্তর, ‘ঘুমপাড়নি মাসিপিসি’ ছড়ার দশ-বারো লাইনের বেশি আমি কখনো শুনিনি।’ চুনিবালা ছড়াটির আদি সংস্করণ পড়ে গেলেন গড়গড় করে। অর্থাৎ, সংলাপ মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না—এ আশঙ্কা আর থাকল না।
পরের প্রশ্ন—‘এখান থেকে ভোর ছ’টায় রওনা হয়ে পনেরো মাইল দূরে গ্রামে গিয়ে শুটিং করে আবার সন্ধ্যেবেলা সেই পনেরো মাইল পথ মোটরে ফিরে আসতে পারবেন?’ চুনিবালার উত্তরে অনেকখানি দৃঢ়তা, ‘খু-উ-ব’।
একেই বলে আন্তরিকতা!
ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবী, একদিন সত্যজিৎকে বলেছিলেন—‘আপনারা যখন তরুণীকে মেকআপ করে বুড়ি না সাজিয়ে আমাকে বেছে নিয়েছেন, তখনই বুঝেছি কোনদিকে আপনাদের ঝোঁক।’ অর্থাৎ চুনিবালা কিন্তু ঠিকই সত্যজিতের কাজের ধরনটা ধরে ফেলেছিলেন। শুরুতেই।
তাই তিনি সবসময় সচেতন থাকতেন, শুধু ক্যামেরার সামনের সময়টুকুতেই নয়। বাইরেও, নানান খুঁটিনাটি ব্যাপারে। গল্পে ইন্দিরের তো স্বভাব থাকে যে, ছেঁড়াফাঁড়া শাড়িতে গিঁট বেঁধে চালিয়ে নেওয়া। অবশ্য স্বভাবও বলা চলে না। এ ছাড়া তাঁর উপায়ও নেই। ইউনিট থেকে চুনিবালাকে একটা ছেঁড়া থান দেওয়া হলো। বলাও হলো, ‘আপনি ইচ্ছেমতো গেরো বেঁধে ছিদ্রগুলোর একটা ব্যবস্থা করে নেবেন।’
কিছুদিন কাজের পর ছেঁড়া শাড়িটি এমন অবস্থায় পৌঁছাল যে, ওটা আর পরার মতো থাকল না। একদিন সত্যজিৎ রায় শুনলেন, চুনিবালা কাকে যেন বলছেন, ‘এ কাপড়ের যে দশা এতে লজ্জা ঢাকা যায় না।’
তড়িঘড়ি করে আরেকটা থান এনে ছেঁড়ার মাত্রা খানিকটা কমিয়ে তাঁকে দেওয়া হলো। কিন্তু ইন্দিরের বেশে পরদিন যখন চুনিবালা সেটে এলেন, নতুন নয়, পরনে পুরোনো থানটাই!
বৃদ্ধার আশ্চর্য স্মৃতিশক্তি
মাঝেমধ্যে টিমের তো ভুল হতোই। হয়ও। হতো না চুনিবালার। একেবারে নিখুঁত কন্টিউনিটি মনে রাখতেন তিনি।
‘আমার ডান হাত যে ভিজে ছিল সেদিন?’ ‘কই, আমার মুখে ঘাম দিলেন না?’ ‘এ শটে তো আমার গায়ে চাদর থাকবে না।’ ‘আমার পুঁটলি কি ডান হাতে ছিল? না, পুঁটলি বাঁ-হাতে দিন। ঘটি ডান হাতে...’ প্রায়ই এ ধরনের খুঁটিনাটি, অথচ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো ধরিতে দিতেন চুনিবালা।
দুটো মৃত্যু দৃশ্য
চুনিবালা সত্যজিৎকে বললেন, ‘বইয়ে আছে বুড়ি চণ্ডীমণ্ডপে মরছে। আপনি দেখাচ্ছেন বাঁশবনে। ধার্মিক বুড়ি, তার কি বাঁশবনে মরাটা ভালো দেখায়?’ বই, মানে বিভূতিভূষণের মূল উপন্যাসে এটা আছে। চুনিবালা সেটা পড়েছেন, অথবা শুনেছেন কারও কাছ থেকে। সত্যজিৎ যখন উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র বানাচ্ছেন, তখন কিছু পার্থক্য তো এসেই যাবে। ঘটনার, স্থানের, মানসিকতার।
চুনিবালা সবই মেনেছিলেন, কেবল এই মৃত্যুর বেলায় এসে খানিকটা আপত্তি করে বসলেন। সত্যজিৎ বোঝাতে চেষ্টা করলেন, ‘বাঁশবনে মৃতদেহের আবিষ্কার অপু-দুর্গার শিশুমনে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, ছবি ও নাটকের দিক থেকে তার মূল্য অনেক।’ অবশেষে চুনিবালা মানলেন।
দৃশ্য এ রকম—বাগানে বুড়ি হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে আছেন। দুর্গা বুড়িকে ওইভাবে বসে থাকতে দেখে মনে করে যে, বুড়ি ঘুমিয়েছে। ফলে সে কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দেয়। বুড়ির মৃতদেহ ধপ করে মাটিতে পড়ে। এই দৃশ্য কতখানি বাস্তব হয়ে উঠবে, কতখানি আবেদন সৃষ্টি করবে; সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে চুনিবালার ওপর।
সত্যজিৎ লিখছেন, ‘তিনি যদি গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করে তাঁর দেহকে মাটিতে ফেলতে পারেন, তবেই শট-এর ও অভিনয়ের সার্থকতা।’ চুনিবালা কতখানি স্বার্থকভাবে, গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনাকে কতখানি হেলায় উড়িয়ে দিয়ে অভিনয় করেছিলেন, তার প্রমাণ তো আমরা ‘পথের পাঁচালী’তে পাই-ই।
আরেকটি ঘটনা। এটাও মৃত্যুর। ইন্দির ঠাকুরণ মারা গেছেন। তাঁর শবযাত্রা। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানের দিকে—দৃশ্যটি এমন। সকাল পর্যন্ত চুনিবালা জানেন না, এমন একটি শট তাঁকে দিতে হবে। ভোর পাঁচটা। মেঠো রাস্তায় শটের তোড়জোড় চলছে। ট্যাক্সিতে করে পৌঁছলেন চুনিবালা।
সত্যজিৎ রায় ‘কোনোমতে সাহস সঞ্চয় করে’ তাঁকে বললেন, ‘আজ আপনাকে খাটে চড়াবো।’ চুনিবালা বিচলিত হলেন না। রাগলেনও না—‘বেশ তো, এ অভিজ্ঞতা আর ক’জনের হয়? আমার আপত্তি নেই।’
বাঁশের খাট। মাদুর বিছানো হলো তার ওপর। চুনিবালাকে শুইয়ে, চাদরে মুড়ে, দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হলো। তারপর শুরু হলো কাজ। আসল ঘটনা এর পরই। শট শেষ। খাট নামানো হয়েছে মাটিতে। বাঁধনও খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চুনিবালা দেবীর আর নড়চড় নেই। ব্যাপার কী?
অজানা আশঙ্কায় সবাই পরস্পরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করেন। খারাপ কিছু ঘটল না তো! হঠাৎ ধড়ফড় করে উঠে বসলেন চুনিবালা, ‘শট হয়ে গেছে? কই, আমাকে তো কেউ বলেনি! আমি তাই মড়া হয়ে পড়ে আছি।’
ঘটনা শেষ করে সত্যজিৎ রায় বলছেন, ‘আশ্চর্য অভিনয়!’
খায়রুল বাসার নির্ঝর

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন। ‘পথের পাঁচালী’তে দুর্গা-অপু-সর্বজয়া-হরিহর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ইন্দির ঠাকুরণও তেমনি।
এই খানিকটা নিশ্চল, অসহায়, আশ্রয়হীন, সর্বজয়ার চোখে স্বার্থপর ইন্দির ঠাকুরণ ভারতীয় উপমহাদেশের নারীর প্রতীক তো বটেই, প্রতিনিধিত্ব করে তৎকালীন সমাজ বাস্তবতারও। ইন্দির ঠাকুরণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন চুনিবালা দেবী। তাঁর সরল-স্বাভাবিক, অথচ আশ্চর্য অভিনয়ক্ষমতা তো লোকে দেখেছেই ‘পথের পাঁচালী’তে, দেখছে এখনও। সত্যজিৎ রায় এই বৃদ্ধাকে কোথা থেকে, কীভাবে পেলেন, সে এক গল্প বৈকি!
সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আমরা ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবীর গল্পে দিকে তাকাতে চাই আরেকবার। এই বৃদ্ধা ছবিটির জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, স্বয়ং সত্যজিৎ বলে গেছেন—‘চুনিবালা দেবীকে নিয়ে কাজ করার সময় বারবার এই কথাটাই মনে হয়েছে যে, এঁর সন্ধান না পেলে আমাদের পথের পাঁচালি হতো না।’ তাঁর মুখে এমন কথা এল কেন? সেটা জানার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ‘পথের পাঁচালী’র শুরুতে।
ইন্দির ঠাকুরণকে পাওয়া যাচ্ছে না
সব প্রস্তুত। অপু, দুর্গা, হরিহর, সর্বজয়া—এ চরিত্রগুলোতে কারা কাজ করবেন; সেটা নির্বাচন হয়ে গেছে। বাকি কাস্টিংগুলোও মোটামুটি সত্যজিৎ রায়ের মাথায় আছে। শুধু নেই ইন্দির ঠাকুরণ। বিভূতিভূষণ যেভাবে চরিত্রটির বর্ণনা দিয়েছেন উপন্যাসে, ‘পঁচাত্তর বৎসরের বৃদ্ধা, গাল তোবড়াইয়া গিয়াছে, মাজা ঈষৎ ভাঙিয়া শরীর সামনের দিকে ঝুঁকে পড়িয়াছে। দূরের জিনিস আগের মতো ঠাহর হয় না’—এমন চরিত্রের কাউকে পাওয়া মুশকিলই।
বিশেষ করে সত্যজিৎ আগেই যখন পত্রিকায় ঘোষণা দিয়ে ফেলেছেন, সিদ্ধান্তও পাকাপাকি যে, ‘এ ছবিতে মেকআপ ব্যবহার করা হবে না।’ আর তা ছাড়া চেহারাই তো সবটা নয়। অন্য সমস্যাও আছে। এত বয়স্ক একজন মহিলা, শুটিংয়ের ধকল সহ্য করতে পারবেন কি না, সংলাপ ঠিকঠাক মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না, এসব ব্যাপারও তো আছে।
এদিকে ইন্দির ঠাকুরণকে রেখেই শুরু হয়ে গেছে ছবির কাজ। ভেতরে ভেতরে খোঁজ চলছে। খোঁজ মিলছে না, সে চিন্তাও আছে।
চরিত্রের খোঁজে পাইকপাড়ায়
‘পথের পাঁচালী’র সেজো ঠাকুরণ যিনি, রেবা দেবী, তিনি সত্যজিৎ রায়কে খোঁজ জানালেন এক বৃদ্ধার। তাঁর নাম চুনিবালা দেবী। এক রোববার। সকালবেলা। ঠিকানা জোগাড় করে সত্যজিৎ রায় ছুটলেন পাইকপাড়ায়। বর্ণনা ঠিকঠাক, যেভাবে ইন্দির ঠাকুরণের বর্ণনা উপন্যাসে দিয়েছেন বিভূতিভূষণ। এখন দেখতে হবে বাদবাকি বিষয়গুলো।
সত্যজিৎ জানতে চাইলেন, ‘আপনি ছড়া জানেন? আবৃত্তি করতে পারেন?’ উত্তর, ‘ঘুমপাড়নি মাসিপিসি’ ছড়ার দশ-বারো লাইনের বেশি আমি কখনো শুনিনি।’ চুনিবালা ছড়াটির আদি সংস্করণ পড়ে গেলেন গড়গড় করে। অর্থাৎ, সংলাপ মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না—এ আশঙ্কা আর থাকল না।
পরের প্রশ্ন—‘এখান থেকে ভোর ছ’টায় রওনা হয়ে পনেরো মাইল দূরে গ্রামে গিয়ে শুটিং করে আবার সন্ধ্যেবেলা সেই পনেরো মাইল পথ মোটরে ফিরে আসতে পারবেন?’ চুনিবালার উত্তরে অনেকখানি দৃঢ়তা, ‘খু-উ-ব’।
একেই বলে আন্তরিকতা!
ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবী, একদিন সত্যজিৎকে বলেছিলেন—‘আপনারা যখন তরুণীকে মেকআপ করে বুড়ি না সাজিয়ে আমাকে বেছে নিয়েছেন, তখনই বুঝেছি কোনদিকে আপনাদের ঝোঁক।’ অর্থাৎ চুনিবালা কিন্তু ঠিকই সত্যজিতের কাজের ধরনটা ধরে ফেলেছিলেন। শুরুতেই।
তাই তিনি সবসময় সচেতন থাকতেন, শুধু ক্যামেরার সামনের সময়টুকুতেই নয়। বাইরেও, নানান খুঁটিনাটি ব্যাপারে। গল্পে ইন্দিরের তো স্বভাব থাকে যে, ছেঁড়াফাঁড়া শাড়িতে গিঁট বেঁধে চালিয়ে নেওয়া। অবশ্য স্বভাবও বলা চলে না। এ ছাড়া তাঁর উপায়ও নেই। ইউনিট থেকে চুনিবালাকে একটা ছেঁড়া থান দেওয়া হলো। বলাও হলো, ‘আপনি ইচ্ছেমতো গেরো বেঁধে ছিদ্রগুলোর একটা ব্যবস্থা করে নেবেন।’
কিছুদিন কাজের পর ছেঁড়া শাড়িটি এমন অবস্থায় পৌঁছাল যে, ওটা আর পরার মতো থাকল না। একদিন সত্যজিৎ রায় শুনলেন, চুনিবালা কাকে যেন বলছেন, ‘এ কাপড়ের যে দশা এতে লজ্জা ঢাকা যায় না।’
তড়িঘড়ি করে আরেকটা থান এনে ছেঁড়ার মাত্রা খানিকটা কমিয়ে তাঁকে দেওয়া হলো। কিন্তু ইন্দিরের বেশে পরদিন যখন চুনিবালা সেটে এলেন, নতুন নয়, পরনে পুরোনো থানটাই!
বৃদ্ধার আশ্চর্য স্মৃতিশক্তি
মাঝেমধ্যে টিমের তো ভুল হতোই। হয়ও। হতো না চুনিবালার। একেবারে নিখুঁত কন্টিউনিটি মনে রাখতেন তিনি।
‘আমার ডান হাত যে ভিজে ছিল সেদিন?’ ‘কই, আমার মুখে ঘাম দিলেন না?’ ‘এ শটে তো আমার গায়ে চাদর থাকবে না।’ ‘আমার পুঁটলি কি ডান হাতে ছিল? না, পুঁটলি বাঁ-হাতে দিন। ঘটি ডান হাতে...’ প্রায়ই এ ধরনের খুঁটিনাটি, অথচ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো ধরিতে দিতেন চুনিবালা।
দুটো মৃত্যু দৃশ্য
চুনিবালা সত্যজিৎকে বললেন, ‘বইয়ে আছে বুড়ি চণ্ডীমণ্ডপে মরছে। আপনি দেখাচ্ছেন বাঁশবনে। ধার্মিক বুড়ি, তার কি বাঁশবনে মরাটা ভালো দেখায়?’ বই, মানে বিভূতিভূষণের মূল উপন্যাসে এটা আছে। চুনিবালা সেটা পড়েছেন, অথবা শুনেছেন কারও কাছ থেকে। সত্যজিৎ যখন উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র বানাচ্ছেন, তখন কিছু পার্থক্য তো এসেই যাবে। ঘটনার, স্থানের, মানসিকতার।
চুনিবালা সবই মেনেছিলেন, কেবল এই মৃত্যুর বেলায় এসে খানিকটা আপত্তি করে বসলেন। সত্যজিৎ বোঝাতে চেষ্টা করলেন, ‘বাঁশবনে মৃতদেহের আবিষ্কার অপু-দুর্গার শিশুমনে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, ছবি ও নাটকের দিক থেকে তার মূল্য অনেক।’ অবশেষে চুনিবালা মানলেন।
দৃশ্য এ রকম—বাগানে বুড়ি হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে আছেন। দুর্গা বুড়িকে ওইভাবে বসে থাকতে দেখে মনে করে যে, বুড়ি ঘুমিয়েছে। ফলে সে কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দেয়। বুড়ির মৃতদেহ ধপ করে মাটিতে পড়ে। এই দৃশ্য কতখানি বাস্তব হয়ে উঠবে, কতখানি আবেদন সৃষ্টি করবে; সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে চুনিবালার ওপর।
সত্যজিৎ লিখছেন, ‘তিনি যদি গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করে তাঁর দেহকে মাটিতে ফেলতে পারেন, তবেই শট-এর ও অভিনয়ের সার্থকতা।’ চুনিবালা কতখানি স্বার্থকভাবে, গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনাকে কতখানি হেলায় উড়িয়ে দিয়ে অভিনয় করেছিলেন, তার প্রমাণ তো আমরা ‘পথের পাঁচালী’তে পাই-ই।
আরেকটি ঘটনা। এটাও মৃত্যুর। ইন্দির ঠাকুরণ মারা গেছেন। তাঁর শবযাত্রা। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানের দিকে—দৃশ্যটি এমন। সকাল পর্যন্ত চুনিবালা জানেন না, এমন একটি শট তাঁকে দিতে হবে। ভোর পাঁচটা। মেঠো রাস্তায় শটের তোড়জোড় চলছে। ট্যাক্সিতে করে পৌঁছলেন চুনিবালা।
সত্যজিৎ রায় ‘কোনোমতে সাহস সঞ্চয় করে’ তাঁকে বললেন, ‘আজ আপনাকে খাটে চড়াবো।’ চুনিবালা বিচলিত হলেন না। রাগলেনও না—‘বেশ তো, এ অভিজ্ঞতা আর ক’জনের হয়? আমার আপত্তি নেই।’
বাঁশের খাট। মাদুর বিছানো হলো তার ওপর। চুনিবালাকে শুইয়ে, চাদরে মুড়ে, দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হলো। তারপর শুরু হলো কাজ। আসল ঘটনা এর পরই। শট শেষ। খাট নামানো হয়েছে মাটিতে। বাঁধনও খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চুনিবালা দেবীর আর নড়চড় নেই। ব্যাপার কী?
অজানা আশঙ্কায় সবাই পরস্পরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করেন। খারাপ কিছু ঘটল না তো! হঠাৎ ধড়ফড় করে উঠে বসলেন চুনিবালা, ‘শট হয়ে গেছে? কই, আমাকে তো কেউ বলেনি! আমি তাই মড়া হয়ে পড়ে আছি।’
ঘটনা শেষ করে সত্যজিৎ রায় বলছেন, ‘আশ্চর্য অভিনয়!’

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন। ‘পথের পাঁচালী’তে দুর্গা-অপু-সর্বজয়া-হরিহর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ইন্দির ঠাকুরণও তেমনি।
এই খানিকটা নিশ্চল, অসহায়, আশ্রয়হীন, সর্বজয়ার চোখে স্বার্থপর ইন্দির ঠাকুরণ ভারতীয় উপমহাদেশের নারীর প্রতীক তো বটেই, প্রতিনিধিত্ব করে তৎকালীন সমাজ বাস্তবতারও। ইন্দির ঠাকুরণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন চুনিবালা দেবী। তাঁর সরল-স্বাভাবিক, অথচ আশ্চর্য অভিনয়ক্ষমতা তো লোকে দেখেছেই ‘পথের পাঁচালী’তে, দেখছে এখনও। সত্যজিৎ রায় এই বৃদ্ধাকে কোথা থেকে, কীভাবে পেলেন, সে এক গল্প বৈকি!
সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে আমরা ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবীর গল্পে দিকে তাকাতে চাই আরেকবার। এই বৃদ্ধা ছবিটির জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, স্বয়ং সত্যজিৎ বলে গেছেন—‘চুনিবালা দেবীকে নিয়ে কাজ করার সময় বারবার এই কথাটাই মনে হয়েছে যে, এঁর সন্ধান না পেলে আমাদের পথের পাঁচালি হতো না।’ তাঁর মুখে এমন কথা এল কেন? সেটা জানার জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে ‘পথের পাঁচালী’র শুরুতে।
ইন্দির ঠাকুরণকে পাওয়া যাচ্ছে না
সব প্রস্তুত। অপু, দুর্গা, হরিহর, সর্বজয়া—এ চরিত্রগুলোতে কারা কাজ করবেন; সেটা নির্বাচন হয়ে গেছে। বাকি কাস্টিংগুলোও মোটামুটি সত্যজিৎ রায়ের মাথায় আছে। শুধু নেই ইন্দির ঠাকুরণ। বিভূতিভূষণ যেভাবে চরিত্রটির বর্ণনা দিয়েছেন উপন্যাসে, ‘পঁচাত্তর বৎসরের বৃদ্ধা, গাল তোবড়াইয়া গিয়াছে, মাজা ঈষৎ ভাঙিয়া শরীর সামনের দিকে ঝুঁকে পড়িয়াছে। দূরের জিনিস আগের মতো ঠাহর হয় না’—এমন চরিত্রের কাউকে পাওয়া মুশকিলই।
বিশেষ করে সত্যজিৎ আগেই যখন পত্রিকায় ঘোষণা দিয়ে ফেলেছেন, সিদ্ধান্তও পাকাপাকি যে, ‘এ ছবিতে মেকআপ ব্যবহার করা হবে না।’ আর তা ছাড়া চেহারাই তো সবটা নয়। অন্য সমস্যাও আছে। এত বয়স্ক একজন মহিলা, শুটিংয়ের ধকল সহ্য করতে পারবেন কি না, সংলাপ ঠিকঠাক মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না, এসব ব্যাপারও তো আছে।
এদিকে ইন্দির ঠাকুরণকে রেখেই শুরু হয়ে গেছে ছবির কাজ। ভেতরে ভেতরে খোঁজ চলছে। খোঁজ মিলছে না, সে চিন্তাও আছে।
চরিত্রের খোঁজে পাইকপাড়ায়
‘পথের পাঁচালী’র সেজো ঠাকুরণ যিনি, রেবা দেবী, তিনি সত্যজিৎ রায়কে খোঁজ জানালেন এক বৃদ্ধার। তাঁর নাম চুনিবালা দেবী। এক রোববার। সকালবেলা। ঠিকানা জোগাড় করে সত্যজিৎ রায় ছুটলেন পাইকপাড়ায়। বর্ণনা ঠিকঠাক, যেভাবে ইন্দির ঠাকুরণের বর্ণনা উপন্যাসে দিয়েছেন বিভূতিভূষণ। এখন দেখতে হবে বাদবাকি বিষয়গুলো।
সত্যজিৎ জানতে চাইলেন, ‘আপনি ছড়া জানেন? আবৃত্তি করতে পারেন?’ উত্তর, ‘ঘুমপাড়নি মাসিপিসি’ ছড়ার দশ-বারো লাইনের বেশি আমি কখনো শুনিনি।’ চুনিবালা ছড়াটির আদি সংস্করণ পড়ে গেলেন গড়গড় করে। অর্থাৎ, সংলাপ মুখস্ত রাখতে পারবেন কি না—এ আশঙ্কা আর থাকল না।
পরের প্রশ্ন—‘এখান থেকে ভোর ছ’টায় রওনা হয়ে পনেরো মাইল দূরে গ্রামে গিয়ে শুটিং করে আবার সন্ধ্যেবেলা সেই পনেরো মাইল পথ মোটরে ফিরে আসতে পারবেন?’ চুনিবালার উত্তরে অনেকখানি দৃঢ়তা, ‘খু-উ-ব’।
একেই বলে আন্তরিকতা!
ইন্দির ঠাকুরণ, মানে চুনিবালা দেবী, একদিন সত্যজিৎকে বলেছিলেন—‘আপনারা যখন তরুণীকে মেকআপ করে বুড়ি না সাজিয়ে আমাকে বেছে নিয়েছেন, তখনই বুঝেছি কোনদিকে আপনাদের ঝোঁক।’ অর্থাৎ চুনিবালা কিন্তু ঠিকই সত্যজিতের কাজের ধরনটা ধরে ফেলেছিলেন। শুরুতেই।
তাই তিনি সবসময় সচেতন থাকতেন, শুধু ক্যামেরার সামনের সময়টুকুতেই নয়। বাইরেও, নানান খুঁটিনাটি ব্যাপারে। গল্পে ইন্দিরের তো স্বভাব থাকে যে, ছেঁড়াফাঁড়া শাড়িতে গিঁট বেঁধে চালিয়ে নেওয়া। অবশ্য স্বভাবও বলা চলে না। এ ছাড়া তাঁর উপায়ও নেই। ইউনিট থেকে চুনিবালাকে একটা ছেঁড়া থান দেওয়া হলো। বলাও হলো, ‘আপনি ইচ্ছেমতো গেরো বেঁধে ছিদ্রগুলোর একটা ব্যবস্থা করে নেবেন।’
কিছুদিন কাজের পর ছেঁড়া শাড়িটি এমন অবস্থায় পৌঁছাল যে, ওটা আর পরার মতো থাকল না। একদিন সত্যজিৎ রায় শুনলেন, চুনিবালা কাকে যেন বলছেন, ‘এ কাপড়ের যে দশা এতে লজ্জা ঢাকা যায় না।’
তড়িঘড়ি করে আরেকটা থান এনে ছেঁড়ার মাত্রা খানিকটা কমিয়ে তাঁকে দেওয়া হলো। কিন্তু ইন্দিরের বেশে পরদিন যখন চুনিবালা সেটে এলেন, নতুন নয়, পরনে পুরোনো থানটাই!
বৃদ্ধার আশ্চর্য স্মৃতিশক্তি
মাঝেমধ্যে টিমের তো ভুল হতোই। হয়ও। হতো না চুনিবালার। একেবারে নিখুঁত কন্টিউনিটি মনে রাখতেন তিনি।
‘আমার ডান হাত যে ভিজে ছিল সেদিন?’ ‘কই, আমার মুখে ঘাম দিলেন না?’ ‘এ শটে তো আমার গায়ে চাদর থাকবে না।’ ‘আমার পুঁটলি কি ডান হাতে ছিল? না, পুঁটলি বাঁ-হাতে দিন। ঘটি ডান হাতে...’ প্রায়ই এ ধরনের খুঁটিনাটি, অথচ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারগুলো ধরিতে দিতেন চুনিবালা।
দুটো মৃত্যু দৃশ্য
চুনিবালা সত্যজিৎকে বললেন, ‘বইয়ে আছে বুড়ি চণ্ডীমণ্ডপে মরছে। আপনি দেখাচ্ছেন বাঁশবনে। ধার্মিক বুড়ি, তার কি বাঁশবনে মরাটা ভালো দেখায়?’ বই, মানে বিভূতিভূষণের মূল উপন্যাসে এটা আছে। চুনিবালা সেটা পড়েছেন, অথবা শুনেছেন কারও কাছ থেকে। সত্যজিৎ যখন উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র বানাচ্ছেন, তখন কিছু পার্থক্য তো এসেই যাবে। ঘটনার, স্থানের, মানসিকতার।
চুনিবালা সবই মেনেছিলেন, কেবল এই মৃত্যুর বেলায় এসে খানিকটা আপত্তি করে বসলেন। সত্যজিৎ বোঝাতে চেষ্টা করলেন, ‘বাঁশবনে মৃতদেহের আবিষ্কার অপু-দুর্গার শিশুমনে যে ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, ছবি ও নাটকের দিক থেকে তার মূল্য অনেক।’ অবশেষে চুনিবালা মানলেন।
দৃশ্য এ রকম—বাগানে বুড়ি হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে আছেন। দুর্গা বুড়িকে ওইভাবে বসে থাকতে দেখে মনে করে যে, বুড়ি ঘুমিয়েছে। ফলে সে কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দেয়। বুড়ির মৃতদেহ ধপ করে মাটিতে পড়ে। এই দৃশ্য কতখানি বাস্তব হয়ে উঠবে, কতখানি আবেদন সৃষ্টি করবে; সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে চুনিবালার ওপর।
সত্যজিৎ লিখছেন, ‘তিনি যদি গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনা অগ্রাহ্য করে তাঁর দেহকে মাটিতে ফেলতে পারেন, তবেই শট-এর ও অভিনয়ের সার্থকতা।’ চুনিবালা কতখানি স্বার্থকভাবে, গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনাকে কতখানি হেলায় উড়িয়ে দিয়ে অভিনয় করেছিলেন, তার প্রমাণ তো আমরা ‘পথের পাঁচালী’তে পাই-ই।
আরেকটি ঘটনা। এটাও মৃত্যুর। ইন্দির ঠাকুরণ মারা গেছেন। তাঁর শবযাত্রা। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানের দিকে—দৃশ্যটি এমন। সকাল পর্যন্ত চুনিবালা জানেন না, এমন একটি শট তাঁকে দিতে হবে। ভোর পাঁচটা। মেঠো রাস্তায় শটের তোড়জোড় চলছে। ট্যাক্সিতে করে পৌঁছলেন চুনিবালা।
সত্যজিৎ রায় ‘কোনোমতে সাহস সঞ্চয় করে’ তাঁকে বললেন, ‘আজ আপনাকে খাটে চড়াবো।’ চুনিবালা বিচলিত হলেন না। রাগলেনও না—‘বেশ তো, এ অভিজ্ঞতা আর ক’জনের হয়? আমার আপত্তি নেই।’
বাঁশের খাট। মাদুর বিছানো হলো তার ওপর। চুনিবালাকে শুইয়ে, চাদরে মুড়ে, দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হলো। তারপর শুরু হলো কাজ। আসল ঘটনা এর পরই। শট শেষ। খাট নামানো হয়েছে মাটিতে। বাঁধনও খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চুনিবালা দেবীর আর নড়চড় নেই। ব্যাপার কী?
অজানা আশঙ্কায় সবাই পরস্পরের দিকে মুখ চাওয়াচাওয়ি করেন। খারাপ কিছু ঘটল না তো! হঠাৎ ধড়ফড় করে উঠে বসলেন চুনিবালা, ‘শট হয়ে গেছে? কই, আমাকে তো কেউ বলেনি! আমি তাই মড়া হয়ে পড়ে আছি।’
ঘটনা শেষ করে সত্যজিৎ রায় বলছেন, ‘আশ্চর্য অভিনয়!’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দেশজুড়ে। শোক প্রকাশ করে তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন সংগীতশিল্পী পুতুল।
১৫ ঘণ্টা আগে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
১৬ ঘণ্টা আগে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
১৭ ঘণ্টা আগে
শিষ্যদের মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তাই লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। মনের বাসনা ব্যক্ত করে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘সাঁইজি যেমন তাঁর শিষ্যদের মাঝে বেঁচে আছেন...
২১ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও। শোক জানিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি ভাগ করেছেন সংগীতশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল।
খালেদা জিয়াকে প্রথমবার দেখার স্মৃতি জানিয়ে ফেসবুকে পুতুল লেখেন, ‘জীবনে প্রথম তাঁকে দেখেছিলাম শৈশবে; ছুঁয়েছিলাম তাঁর তুলতুলে হাত। কী অভূতপূর্ব সেই অনুভূতি! বিজয়ী হয়ে যত না আনন্দ হয়েছিল, তার চাইতে কোনো অংশে কম ছিল না তাঁকে ছুঁতে পারার আনন্দ। পুরস্কার নিতে নিতে তাকিয়েছিলাম তাঁর চোখ দুটোর দিকে। মনে হয়েছিল এক মোম দিয়ে গড়া মানবী আমার সামনে দাঁড়িয়ে হাসছেন। ধূসর চুল আর শুভ্র শাড়িতে মনে হয়েছিল রাষ্ট্রপ্রধান হতে হলে বোধ হয় এতটাই আভিজাত্য নিজের ভেতর ধারণ করতে হয়।’
বড় হওয়ার পার খালেদা জিয়ার সামনে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে পুতুলের। সেই স্মৃতির কথা জানিয়ে পুতুল লেখেন, ‘বড় হওয়ার পর আবার গান গেয়েছি তাঁর সামনে। তত দিনে সংগীতাঙ্গনে পেশাদার শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছি। তিনি মঞ্চে বসে, তার ঠিক কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে একই মঞ্চে গাইছি। তিনি আদর করেছিলেন সেদিন আমার পরিবেশনা শেষে। বুঝেছিলাম তিনি একজন সংস্কৃতিপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী।’
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পুতুল লেখেন, ‘একটা অধ্যায়ের শেষ হলো। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ওপারে চলে গেছেন, যিনি এ দেশের লাখো তরুণীকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সাধারণ একজন গৃহবধূ হয়েও আত্মবিশ্বাসের জোরে অসাধারণ হয়ে ওঠা যায়। শুধু অসাধারণ নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। জন্ম থেকে রাজনীতির কেবল দীর্ঘ প্রেক্ষাপট থাকলেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়, এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে নিজের প্রজ্ঞা আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে তিনবার তিনি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভালো থাকবেন মাননীয়া। ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে...।’

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও। শোক জানিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি ভাগ করেছেন সংগীতশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল।
খালেদা জিয়াকে প্রথমবার দেখার স্মৃতি জানিয়ে ফেসবুকে পুতুল লেখেন, ‘জীবনে প্রথম তাঁকে দেখেছিলাম শৈশবে; ছুঁয়েছিলাম তাঁর তুলতুলে হাত। কী অভূতপূর্ব সেই অনুভূতি! বিজয়ী হয়ে যত না আনন্দ হয়েছিল, তার চাইতে কোনো অংশে কম ছিল না তাঁকে ছুঁতে পারার আনন্দ। পুরস্কার নিতে নিতে তাকিয়েছিলাম তাঁর চোখ দুটোর দিকে। মনে হয়েছিল এক মোম দিয়ে গড়া মানবী আমার সামনে দাঁড়িয়ে হাসছেন। ধূসর চুল আর শুভ্র শাড়িতে মনে হয়েছিল রাষ্ট্রপ্রধান হতে হলে বোধ হয় এতটাই আভিজাত্য নিজের ভেতর ধারণ করতে হয়।’
বড় হওয়ার পার খালেদা জিয়ার সামনে গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে পুতুলের। সেই স্মৃতির কথা জানিয়ে পুতুল লেখেন, ‘বড় হওয়ার পর আবার গান গেয়েছি তাঁর সামনে। তত দিনে সংগীতাঙ্গনে পেশাদার শিল্পী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছি। তিনি মঞ্চে বসে, তার ঠিক কয়েক হাত দূরে দাঁড়িয়ে একই মঞ্চে গাইছি। তিনি আদর করেছিলেন সেদিন আমার পরিবেশনা শেষে। বুঝেছিলাম তিনি একজন সংস্কৃতিপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী।’
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পুতুল লেখেন, ‘একটা অধ্যায়ের শেষ হলো। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ওপারে চলে গেছেন, যিনি এ দেশের লাখো তরুণীকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সাধারণ একজন গৃহবধূ হয়েও আত্মবিশ্বাসের জোরে অসাধারণ হয়ে ওঠা যায়। শুধু অসাধারণ নয়, দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। জন্ম থেকে রাজনীতির কেবল দীর্ঘ প্রেক্ষাপট থাকলেই প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়, এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে নিজের প্রজ্ঞা আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে তিনবার তিনি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভালো থাকবেন মাননীয়া। ইতিহাস আপনাকে মনে রাখবে...।’

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন।
২৩ এপ্রিল ২০২১
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
১৬ ঘণ্টা আগে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
১৭ ঘণ্টা আগে
শিষ্যদের মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তাই লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। মনের বাসনা ব্যক্ত করে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘সাঁইজি যেমন তাঁর শিষ্যদের মাঝে বেঁচে আছেন...
২১ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন।
ফেসবুকে জয়া আহসান লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য।’
জয়া আরও লেখেন, ‘রাজনীতিতে মত-পথের বিরোধ থাকবে। কিন্তু সামরিক শাসনবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বেগম জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তাঁর আত্মা চিরপ্রশান্তি লাভ করুক।’
গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। আজ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টার মারা যান তিনি।

বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন।
ফেসবুকে জয়া আহসান লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য।’
জয়া আরও লেখেন, ‘রাজনীতিতে মত-পথের বিরোধ থাকবে। কিন্তু সামরিক শাসনবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বেগম জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তাঁর আত্মা চিরপ্রশান্তি লাভ করুক।’
গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। আজ ৩০ ডিসেম্বর সকাল ৬টার মারা যান তিনি।

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন।
২৩ এপ্রিল ২০২১
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দেশজুড়ে। শোক প্রকাশ করে তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন সংগীতশিল্পী পুতুল।
১৫ ঘণ্টা আগে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
১৭ ঘণ্টা আগে
শিষ্যদের মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তাই লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। মনের বাসনা ব্যক্ত করে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘সাঁইজি যেমন তাঁর শিষ্যদের মাঝে বেঁচে আছেন...
২১ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

আজ ৩০ ডিসেম্বর ভোর ৬টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
ফেসবুকে ব্যান্ড তারকা নগরবাউল জেমস লেখেন, ‘শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। মহান আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত করেন—আমিন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’
শাকিব খান লেখেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।’
জয়া আহসান লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য। রাজনীতিতে মত-পথের বিরোধ থাকবে। কিন্তু সামরিক শাসনবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে খালেদা জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তাঁর আত্মা চিরপ্রশান্তি লাভ করুক।’
অপু বিশ্বাস লেখেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই চিরবিদায় যেন মহাকালের সাক্ষী হয়ে রইল। একজন মহীয়সী নারীর প্রস্থান যেন যুগে যুগে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে লেখা থাকবে। বিনম্র শ্রদ্ধা।’
শবনম বুবলী লেখেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর বিদেহী আত্মা চিরশান্তিতে থাকুক। আমিন।’
সিয়াম আহমেদ লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
নুসরাত ফারিয়া লেখেন, ‘আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুন এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।’
নির্মাতা আশফাক নিপুন লেখেন, ‘আল্লাহ আপনাকে জান্নাত নসিব করুন। আপনি ছিলেন ধৈর্য, আভিজাত্য এবং হার না মানার এক অনন্য প্রতীক; এমনকি প্রতিপক্ষের অমানবিক আচরণের মুখেও আপনি দমে যাননি। এই জাতি আপনাকে সব সময় গর্বের সঙ্গে মনে রাখবে।’
অনেক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন খালেদা জিয়া। ভুগছিলেন শারীরিক বিভিন্ন জটিলতায়। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ছিলেন চিকিৎসাধীন। সেখানেই মারা যান তিনি।

আজ ৩০ ডিসেম্বর ভোর ৬টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
ফেসবুকে ব্যান্ড তারকা নগরবাউল জেমস লেখেন, ‘শোক ও বিনম্র শ্রদ্ধা। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। মহান আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত করেন—আমিন। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’
শাকিব খান লেখেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।’
জয়া আহসান লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বড় দুঃসময়ে বিদায় নিলেন। সামনে নির্বাচন আর গণতন্ত্রের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে। তাঁর উপস্থিতির মূল্যই ছিল অসামান্য। রাজনীতিতে মত-পথের বিরোধ থাকবে। কিন্তু সামরিক শাসনবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে খালেদা জিয়া ছিলেন প্রধান একটি চরিত্র, সাহসে ও নেতৃত্বে উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গে দেশের দীর্ঘ রাজনৈতিক আন্দোলনের একটি অধ্যায় শেষ হলো। তাঁর আত্মা চিরপ্রশান্তি লাভ করুক।’
অপু বিশ্বাস লেখেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই চিরবিদায় যেন মহাকালের সাক্ষী হয়ে রইল। একজন মহীয়সী নারীর প্রস্থান যেন যুগে যুগে বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে লেখা থাকবে। বিনম্র শ্রদ্ধা।’
শবনম বুবলী লেখেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর বিদেহী আত্মা চিরশান্তিতে থাকুক। আমিন।’
সিয়াম আহমেদ লেখেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’
নুসরাত ফারিয়া লেখেন, ‘আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুন এবং জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন।’
নির্মাতা আশফাক নিপুন লেখেন, ‘আল্লাহ আপনাকে জান্নাত নসিব করুন। আপনি ছিলেন ধৈর্য, আভিজাত্য এবং হার না মানার এক অনন্য প্রতীক; এমনকি প্রতিপক্ষের অমানবিক আচরণের মুখেও আপনি দমে যাননি। এই জাতি আপনাকে সব সময় গর্বের সঙ্গে মনে রাখবে।’
অনেক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন খালেদা জিয়া। ভুগছিলেন শারীরিক বিভিন্ন জটিলতায়। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ছিলেন চিকিৎসাধীন। সেখানেই মারা যান তিনি।

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন।
২৩ এপ্রিল ২০২১
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দেশজুড়ে। শোক প্রকাশ করে তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন সংগীতশিল্পী পুতুল।
১৫ ঘণ্টা আগে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
১৬ ঘণ্টা আগে
শিষ্যদের মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তাই লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। মনের বাসনা ব্যক্ত করে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘সাঁইজি যেমন তাঁর শিষ্যদের মাঝে বেঁচে আছেন...
২১ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

শিষ্যদের মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তাই লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। মনের বাসনা ব্যক্ত করে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘সাঁইজি যেমন তাঁর শিষ্যদের মাঝে বেঁচে আছেন, আমার মাঝে আমার গুরু বেঁচে আছেন, তেমনি আমার অচিন পাখির ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আমি বেঁচে থাকতে চাই।’ আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর ফরিদা পারভীনের জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তাঁর গড়া অচিন পাখি সংগীত একাডেমি।
আগামীকাল বুধবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে থাকবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন। আমন্ত্রিত অতিথিরা কথায় কথায় তুলে ধরবেন শিল্পীর জীবনের নানা অধ্যায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন। উদ্বোধন করবেন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। সভাপতিত্ব করবেন ফরিদা পারভীনের জীবনসঙ্গী ও বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম।
ফরিদা পারভীনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর, নাটোরে। পাঁচ বছর বয়সে মাগুরায় কমল চক্রবর্তীর কাছে গানের হাতেখড়ি ফরিদা পারভীনের। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাঁর পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। ক্যারিয়ারে নজরুলগীতি, দেশাত্মবোধকসহ নানা ধরনের গান করলেও তিনি মূলত জনপ্রিয়তা পেয়েছেন লালনসংগীতে। সংগীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ফরিদা পারভীন পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩), জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কারসহ (২০০৮) অসংখ্য পুরস্কার।
এ বছর ১৩ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ফরিদা পারভীন। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

শিষ্যদের মাঝে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। তাই লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন অচিন পাখি সংগীত একাডেমি। মনের বাসনা ব্যক্ত করে ফরিদা পারভীন বলেছিলেন, ‘সাঁইজি যেমন তাঁর শিষ্যদের মাঝে বেঁচে আছেন, আমার মাঝে আমার গুরু বেঁচে আছেন, তেমনি আমার অচিন পাখির ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আমি বেঁচে থাকতে চাই।’ আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর ফরিদা পারভীনের জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে তাঁর গড়া অচিন পাখি সংগীত একাডেমি।
আগামীকাল বুধবার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে থাকবে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন। আমন্ত্রিত অতিথিরা কথায় কথায় তুলে ধরবেন শিল্পীর জীবনের নানা অধ্যায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানা এবং শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক রেজাউদ্দিন স্টালিন। উদ্বোধন করবেন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। সভাপতিত্ব করবেন ফরিদা পারভীনের জীবনসঙ্গী ও বংশীবাদক গাজী আবদুল হাকিম।
ফরিদা পারভীনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর, নাটোরে। পাঁচ বছর বয়সে মাগুরায় কমল চক্রবর্তীর কাছে গানের হাতেখড়ি ফরিদা পারভীনের। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাঁর পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। ক্যারিয়ারে নজরুলগীতি, দেশাত্মবোধকসহ নানা ধরনের গান করলেও তিনি মূলত জনপ্রিয়তা পেয়েছেন লালনসংগীতে। সংগীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ফরিদা পারভীন পেয়েছেন একুশে পদক (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩), জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কারসহ (২০০৮) অসংখ্য পুরস্কার।
এ বছর ১৩ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ফরিদা পারভীন। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

ইন্দির ঠাকুরণ অতিশয় বৃদ্ধা। বিধবা। স্বামী-সন্তানহীন। ভাইয়ের ইচ্ছায় পিতৃপ্রদত্ত ভিটার এক ঘরে তাঁর আশ্রয়। দুর্গা-অপুর পিসি তিনি। এ ভিটার বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো জায়গাও নেই তাঁর। আপনও কেউ নেই। দুর্গা-অপুকে তিনি নিজের সন্তানের মতোই দেখেন।
২৩ এপ্রিল ২০২১
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে দেশজুড়ে। শোক প্রকাশ করে তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন সংগীতশিল্পী পুতুল।
১৫ ঘণ্টা আগে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
১৬ ঘণ্টা আগে
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশজুড়ে। শোক জানাচ্ছেন শোবিজের তারকারাও।
১৭ ঘণ্টা আগে