Ajker Patrika

ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ১২ অনিয়মের অভিযোগ ছাত্র ইউনিয়নের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ১২ অনিয়মের অভিযোগ ছাত্র ইউনিয়নের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ‘অগণতান্ত্রিক, অনিয়মে পূর্ণ ও প্রশ্নবিদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। একই সঙ্গে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচন ঘিরে অনিয়ম ও অসংগতি-সংক্রান্ত ১২টি অভিযোগ তুলে ধরেছে তারা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ নিয়ে কথা বলেন সংগঠনটির নেতারা।

ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম তুলে ধরে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি ও নির্বাচনে প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘টিএসসিসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছাড়াই ভোটার তালিকায় স্বাক্ষর দেওয়া এবং নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ব্যালট সরবরাহ করা হয়েছে। ভোটার তালিকা ও সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশের আবেদন করা হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ব্যবহৃত ব্যালটে কোনো ক্রমিক নম্বর ছিল না। ছাপানো, সরবরাহ করা, বাতিল ও ফেরত ব্যালটের হিসাব প্রকাশ করা হয়নি। ব্যালট কোথায় ছাপানো হয়েছে, তা প্রকাশ করা হয়নি। নকল ব্যালট ফাঁসের অভিযোগ রয়েছে। নীলক্ষেতে একটি ছাপাখানায় বিপুলসংখ্যক অরক্ষিত ব্যালট পেপার উদ্ধার হলেও প্রশাসনের তদারকি ছিল না এবং ওএমআর মেশিনে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। এক প্রার্থীর ভোট সফটওয়্যারে অন্য প্রার্থীকে প্রদর্শিত হয়েছে।

‘এ ছাড়া ভোট গণনা-পরবর্তী সফটওয়্যার পরীক্ষায় ভোটার ও প্রার্থীদের উপস্থিত রাখা হয়নি। ভোটের আগের রাতে এজেন্ট তালিকা প্রকাশ করে অনেক প্রার্থীর প্রস্তাবিত এজেন্ট বাদ দেওয়া হয়। ভোটারদের আঙুলে অমোচনীয় কালি ব্যবহার করা হয়নি। একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোট দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ভোট গণনায় গড়িমসি, নির্দিষ্ট প্রার্থীর অবৈধ উপস্থিতি ও পোলিং এজেন্টদের দূরে রাখা হয়েছে। পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগে অস্পষ্টতা ছিল। প্রশাসন কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ভুয়া অভিযোগ তুলে নির্বাচন প্রভাবিত করেছেন। অস্বচ্ছ ব্যালট বক্স ব্যবহার, মার্কার সংকট ও বলপেন দিয়ে ভোট গ্রহণের কারণে বহু ভোট গণনায় বাদ পড়েছে।’

মেঘমল্লার বসু আরও বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে বারবার অবহিত করা হলেও প্রশাসন ইচ্ছা করে কালক্ষেপণ করেছে। ফলে এ বছরের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন একটি অগণতান্ত্রিক, অনিয়মে পূর্ণ ও প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে।

‘এ দুর্বিষহ সময়ে আমাদের পাশে থাকা সব শিক্ষার্থী, ভোটার, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মী এবং গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আদর্শে বিশ্বাসী মানুষের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তবে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকেই একটি বিশেষ মহল আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে এবং নির্বাচনের দিন ভুয়া প্রেস-পাস ব্যবহারসহ নানা উপায়ে নির্বাচন প্রভাবিত করেছে। প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ব্যর্থতার কারণে অনিয়ম সমাধান হয়নি। ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।’

মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন, তাদের অধিকার ও স্বার্থরক্ষায় লড়াই অব্যাহত রাখব। সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অনিয়ম শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশিত ভোটাধিকারকে ব্যাহত করেছে। তবু আমরা আন্দোলন-সংগ্রামের পথেই আছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...