Ajker Patrika

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কানাডায় আকর্ষণীয় ১০টি বৃত্তি

আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২৩, ১২: ৩৬
বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কানাডায় আকর্ষণীয় ১০টি বৃত্তি

উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা এখন বেশ জনপ্রিয়। পছন্দের হলেও জীবনযাত্রার ব্যয় সেখানে অনেক বেশি। বৃত্তি ছাড়া অর্থ ব্যয় করে কানাডায় পড়াশোনা করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। ভালো বৃত্তি নিয়ে স্বল্প ব্যয়ে পড়াশোনা করা যায়- এমন আকর্ষণীয় ১০টির বৃত্তির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো। এসব বৃত্তির মাধ্যমে কানাডায় উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করা যাবে। 

প্রেসিডেন্ট স্কলারশিপ ফর ওয়ার্ল্ড লিডারস
উইনিপেগ ইউনিভার্সিটি থেকে এই বৃত্তি দেওয়া হয়। মনোনীত শিক্ষার্থীরা পাঁচ হাজার কানাডিয়ান ডলার বৃত্তি পেতে পারেন। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এই বৃত্তি পেতে হলে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ নম্বর (দ্বাদশ শ্রেণির শীর্ষ ৬টি বিষয়ে প্রাপ্ত গড় নম্বর) থাকতে হবে। 

আবেদনপত্র, ব্যক্তিগত তথ্য, রেফারেন্স ও পাঠ্যক্রমের তথ্যের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় স্কোর থাকতে হবে। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের গুণাবলি দেখাতে হবে। প্রমাণের জন্য সনদ দেখাতে হবে।

আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। 

ভ্যানিয়ার কানাডা গ্রাজুয়েট স্কলারশিপ
পিএইচডির শিক্ষার্থীরা তিন বছরের জন্য প্রতিযোগিতামূলক এটা পেতে পারেন। এর আওতায় ৫০ হাজার কানাডিয়ান ডলার মিলবে। তহবিলের ওপর নির্ভর করে বছরে সর্বোচ্চ ১৬৬ জনকে এই বৃত্তি দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য গবেষণা, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বা প্রকৌশল, সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিষয়ে গবেষণায় আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এমডি/পিএইচডি বা এমবিএ/পিএইচডির মতো যৌথ প্রোগ্রামের প্রার্থী বা প্রথম ডক্টরেট ডিগ্রির জন্যও শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোনীত হতে হবে। 

একাডেমিক স্কোর, গবেষণা করার সক্ষমতা ও নেতৃত্বের গুণাবলির ওপর ভিত্তি করে এই বৃত্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

অন্টারিও গ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ 
এর আওতায় টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্টারিও প্রদেশের ছাত্রদের প্রতি সেশনে পাঁচ হাজার কানাডিয়ান ডলার বৃত্তি দেওয়া হয়। এই বৃত্তির অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীদের মোট খরচের এক-তৃতীয়াংশ মেটানো যাবে। প্রতিটি বৃত্তির মেয়াদ এক বছর। কোর্সের ওপর ভিত্তি করে পরপর দুই বা তিনটি সেশনে এই বৃত্তি মিলতে পারে। মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য দুই বছর ও পিএইচডির জন্য এই বৃত্তির মেয়াদ চার বছর পর্যন্ত বাড়তে পারে।

কানাডার নাগরিকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ছাত্ররাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। আবেদনকারীকে অবশ্যই টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন স্নাতক ডিগ্রির আওতাধীন হতে হবে। 

আবেদনপত্র, নম্বরপত্র, পুরস্কার, প্রকাশিত গবেষণা, অধ্যয়নের পরিকল্পনা ও দুটি একাডেমিক রেফারেন্সের ওপর ভিত্তিতে বৃত্তির জন্য প্রথম ধাপের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে আবেদন করতে 

কুইবেক সরকারের মেধা বৃত্তি
বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষায় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ কয়েকটি বৃত্তি দিয়ে থাকে কুইবেক সরকার। এর অধীনে, শিক্ষার্থীরা বাড়তি টিউশন ফিসহ, স্বাস্থ্য ও হাসপাতাল বিমার খরচ থেকে অব্যাহতি পাবে। পিএইচডির ছাত্ররা তিন বছর পর্যন্ত ২৫ হাজার কানাডিয়ান ডলার বৃত্তি পাবে। পোস্ট-ডক্টরাল শিক্ষার্থী পাবেন ৩৫ হাজার কানাডিয়ান ডলার। আর স্বল্পমেয়াদি গবেষণা ও পেশাগত উন্নয়নের জন্য তিন হাজার কানাডিয়ান ডলার পাওয়া যায়।

কুইবেক ইউনিভার্সিটিতে ডক্টরেট, পোস্ট-ডক্টরাল বা স্বল্পমেয়াদি পেশাগত কোর্সে পড়তে আগ্রহীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। এর জন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই কলেজ পর্যায়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের আওতাধীন হতে হবে। 

শিক্ষার্থীদের আবেদন প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করবে এবং তারপর সরকারের কাছে পাঠাবে। এই বৃত্তি পেতে ওয়েবসাইটে  আবেদন করতে হবে।

উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডা এখন বেশ জনপ্রিয়। পছন্দের হলেও জীবনযাত্রার ব্যয় সেখানে অনেক বেশিব্যান্টিং পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ
কানাডার নাগরিকদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ব্যান্টিং পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। এর আওতায় দুই বছরের জন্য ৭০ হাজার কানাডিয়ান ডলার দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে গবেষকরা ভ্রমণ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে মাঠপর্যায়ে গবেষণাও চালাতে পারবেন।

স্বাস্থ্য, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, প্রকৌশল, সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে গবেষণা করতে আগ্রহীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। শিক্ষার্থীদের গবেষণা এবং নেতৃত্বের দক্ষতা, আবেদনকারীর প্রস্তাবিত গবেষণা কর্মসূচির গুণমান ও প্রার্থীর প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে প্রার্থীদের সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করবে বাছাই কমিটি। বৃত্তির ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে।

ডিক মার্টিন স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড
কানাডিয়ান সেন্টার ফর অকুপেশনাল হেলথ অ্যান্ড সেফটি প্রতিবছর ডিক মার্টিন স্কলারশিপের জন্য অর্থ প্রদান করে। এর আওতায় স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক কোর্সে শিক্ষার্থীদের তিন হাজার কানাডিয়ান ডলার দেওয়া হবে। বিজয়ী প্রতি ছাত্রের একাডেমিক প্রতিষ্ঠানকে ৫০০ কানাডিয়ান ডলার দেওয়া হবে।

কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে অকুপেশনাল হেলথ অ্যান্ড সেফটি এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোর্স পড়ার জন্য শিক্ষার্থীরা বৃত্তির আবেদন করতে পারেন। খনি নিরাপত্তা, শিল্প ও পেশাগত নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়ে ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট এবং ডিগ্রি কোর্সের জন্য এ বৃত্তি প্রযোজ্য। 

প্রবন্ধ, কভার লেটার ও আবেদনপত্রের ভিত্তিতে প্রার্থীদের নির্বাচন করা হবে। প্রার্থীদের প্রতিরক্ষাবিষয়ক এবং প্রযুক্তিগত প্রবন্ধ জমা দিতে হবে। প্রবন্ধ জমা দেওয়ার সময়সীমা প্রতি বছরের ৩১ জানুয়ারি। প্রবন্ধগুলো বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়বস্তু (৫০ শতাংশ), ব্যবহারিক মান (২০ শতাংশ), তত্ত্ব মান (২০ শতাংশ) ও উপস্থাপনার (১০ শতাংশ) ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা এই লিংক থেকে  আবেদন করতে পারবেন।

আইডিআরসি রিসার্চ স্কলারশিপ
জলবায়ু সহনশীল খাদ্য ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন, শিক্ষা ও বিজ্ঞান, উন্নয়ন গবেষণায় নৈতিকতা, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, নীতি ও মূল্যায়ন এবং টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি বিষয়ে গবেষণার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ সেন্টার (আইডিআরসি) বৃত্তি দিয়ে থাকে। এই বৃত্তির আওতায় দুটি জায়গায় চাকরির ব্যবস্থা থাকবে। এর মধ্যে অটোয়ায় বৃত্তিপ্রাপ্তরা পূর্ণ সময়ে নন-ইউনিয়ন কর্মচারী হিসেবে বিবেচিত হবে; বেতন ৪২ হাজার ৩৩ ডলার থেকে ৪৮ হাজার ৬৫৯ কানাডিয়ান ডলার পর্যন্ত। আর কেনিয়ার নাইরোবিতে খণ্ডকালীন চাকরি, বেতন হবে ২০ লাখ ৩২ হাজার ৭২ থেকে ৩২ লাখ ৪ হাজার ৫২০ কেনিয়ান শিলিং। 

নিম্ন বা মধ্যম আয়ের দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা কানাডায় পূর্ণ সময় কাজের জন্য বৈধ ওয়ার্ক পারমিটসহ আবেদন করতে পারেন। তবে আবেদনকারীকে অবশ্যই কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করতে হবে বা অধ্যয়ন করতে হবে। 

আগ্রহী আবেদনকারীকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কোর্সসহ মাঠ পর্যায়ের গবেষণা করতে হবে। তবে মাঠ পর্যায়ের গবেষণা তিন মাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। গবেষণার মান ও শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রার্থীদের নির্বাচন করা হবে। এই বৃত্তির জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা ওপরের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারবেন।

পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ
অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক বৃত্তিটিতে কানাডিয়ান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরাও আবেদন করতে পারবে। গবেষকদের জন্য বৃত্তিটির মেয়াদ তিন বছর। নির্বাচিত প্রার্থীরা টিউশন ও জীবনযাত্রার খরচ বাবদ প্রতি বছর ৪০ হাজার কানাডিয়ান ডলার পাবে। এ ছাড়া ভাষা শিক্ষা, ভ্রমণ ও বাসস্থান, ফাউন্ডেশনের লিডারশিপ প্রোগ্রাম ও গবেষণা, নেটওয়ার্কিং ও গবেষণার সঙ্গে সম্পর্কিত ভ্রমণের জন্য প্রতি বছরে ২০ হাজার পর্যন্ত কানাডিয়ান ডলার পাবেন গবেষকরা। 

কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন কোর্সে আন্তর্জাতিক প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য ভালো রেজাল্ট থাকতে হবে। সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে বাছাই করা আবেদনকারীদের দলীয় চর্চায় অংশ নিতে হবে এবং পরে তাঁদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। এটি সরকারি ভাষায় (ইংরেজি/ফরাসি) পরিচালিত হবে। প্রার্থীদের দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে ভাষা বেছে নেওয়া যাবে। প্রার্থীরা এই ওয়েবসাইটে আবেদন করতে পারবে। 

কুইন এলিজাবেথ স্কলারশিপ
রিডো হল ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় কানাডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা ও অধ্যয়নের জন্য কুইন এলিজাবেথ বৃত্তি দেয়। এই বৃত্তির অধীনে ১৬ লাখ কানাডিয়ান ডলার পাওয়া যাবে। প্রতিটি প্রস্তাবিত প্রকল্পে সর্বোচ্চ তিন লাখ কানাডিয়ান ডলার বৃত্তি মিলবে। চলতি বছরের আবেদনের সময়সীমা ছিল ২১ জুলাই। 

কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে গবেষণায় আগ্রহী শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। অন্য কোথাও পড়তে আগ্রহী কানাডিয়ান শিক্ষার্থীরাও এই বৃত্তি পাবেন। 

নির্বাচন পদ্ধতি: প্রার্থীদের জমা দেওয়া আবেদনের মান ও একাডেমিক পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হবে। আবেদনকারী কানাডার যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমর্থনের/অনুমতির চিঠি জমা দিতে হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা ওয়েবসাইটে আবেদন করতে পারবেন। 

অন্যান্য বৃত্তি
এনএসইআরসি ইনডিজেনাস ও স্টুডেন্ট অ্যাম্বাসেডরস স্কলারশিপসহ আরও বেশ কিছু বৃত্তি আছে। অন্টারিও, কুইবেক, আটলান্টিক কানাডা এবং ওয়েস্টার্ন কানাডাসহ বিভিন্ন এলাকায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার জন্য কানাডা সরকার প্রাদেশিক বৃত্তি দিয়ে থাকে। এই বৃত্তিগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সরকারি ওয়েবসাইটগুলোর দিকে চোখ রাখতে হবে। 

এ ছাড়া গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট বৃত্তি, আলবার্টা গ্র্যাজুয়েট এক্সিলেন্স বৃত্তি, ম্যানিটোবা আর্টস কাউন্সিল বৃত্তি, আটলান্টিক কানাডা ক্রেডিট ইউনিয়ন বার্সারি প্রোগ্রাম, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব নিউ ব্রান্সউইক বৃত্তি, আইইইই বৃত্তি, স্নাতক স্টুডেন্ট বৃত্তি, ম্যানিটোবা আর্টস কাউন্সিল বৃত্তি, সাসকেচেওয়ান নার্সেস ফাউন্ডেশন বার্সারি বৃত্তি, সাসকেচেওয়ান উদ্ভাবন এবং সুযোগ বৃত্তি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

শিক্ষার্থীরা বিশেষ বৃত্তি চিহ্নিত করতে তাঁদের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট উল্লেখ করতে পারেন। এডুকানাডা ওয়েবসাইটসহ সরকারি সংস্থাগুলো কানাডার বৃত্তির খবর প্রচার করে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

দীপু চন্দ্র দাসের পরিবারের দায়িত্ব নিল সরকার

হাদি হত্যা মামলা: ফয়সালদের ৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

এই মব আক্রমণগুলো হাওয়া থেকে ঘটেনি—জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের ক্ষোভ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ইশতেহারে অগ্রাধিকার দ্বিতীয় ক্যাম্পাস

  • ছাত্রদলের প্যানেলের ১৩ দফা ও শিবিরের প্যানেলের ২১ দফা অঙ্গীকার।
  • নিরাপদ ক্যাম্পাসের প্রতিশ্রুতি উভয় প্যানেলের।
  • সরে দাঁড়ালেন তিন স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী।
  জবি প্রতিনিধি
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ এবং ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল।

ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ১৩ দফার ইশতেহারে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস দ্রুত বাস্তবায়ন ও আবাসন-সংকট নিরসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমান ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য রক্ষা ও আধুনিকায়ন, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণসহ ২১ দফা অঙ্গীকার করেছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী এ কে এম রাকিব ইশতেহার পাঠ করেন। পরে প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থী পর্যায়ক্রমে ইশতেহারের বিভিন্ন দফা উপস্থাপন করেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ১৩ দফার মধ্যে রয়েছে—গণতান্ত্রিক ও সুরক্ষিত ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ; আবাসন-সংকটের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান; মূল ক্যাম্পাসের অবকাঠামোগত সংস্কার, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন; দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করা; পরিবহন ও যাতায়াতব্যবস্থার মানোন্নয়ন; স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতকরণ; মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যবিমা; শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন; প্রশাসনিক সেবা সহজ ও দ্রুততর করা; কর্মসংস্থান ও ক্যারিয়ার উন্নয়ন; ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ; নারী শিক্ষার্থীর অধিকার সুরক্ষা; বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সবুজায়ন; আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ।

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. রিয়াজুল ইসলাম নিজেদের ইশতেহার পাঠ করেন। পরে প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থী পর্যায়ক্রমে ইশতেহারের বিভিন্ন দফা উপস্থাপন করেন।

শিবির-সমর্থিত প্যানেলের ২১ দফার মধ্যে রয়েছে—স্বপ্নের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস, আবাসন-সংকট নিরসন, বর্তমান ক্যাম্পাসের ঐতিহ্য রক্ষা ও আধুনিকায়ন, নিরাপদ ক্যাম্পাস, বিশ্বমানের শিক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষা, গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা, শিক্ষার্থীবান্ধব লাইব্রেরি ও সেমিনার, স্বাস্থ্যসেবা, নারীর জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, ছাত্রী হল, ন্যায্যমূল্যে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পরিবহন সেবা, খেলাধুলা ও শরীরচর্চা, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণ, ধর্মীয় স্বাধীনতা, আইনি সেবা ও মানবাধিকার সুরক্ষা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা, ক্যারিয়ার লঞ্চপ্যাড, অন্তর্ভুক্তিমূলক সংগঠন ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহি।

সরে দাঁড়ালেন তিন স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী

গতকাল ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের সংবাদ সম্মেলনে ভিপি পদপ্রার্থী এ কে এম রাকিবকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী চন্দন কুমার দাস, রাকিব হাসান ও মাশরুফ আহম্মেদ। তাঁরা বলেন, জবিয়ানদের অধিকার রক্ষার এই লড়াইয়ে অনৈক্যের কোনো স্থান নেই। বৃহত্তর স্বার্থে শক্তিশালী নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা এ কে এম রাকিবকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।

সরে দাঁড়ানো স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী মাশরুফ আহম্মেদ বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছিলাম, তবে রাকিব ভাই দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাই শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা তাঁর প্রাপ্য হোক।’

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী রাকিব হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায় ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবিতে রাকিব ভাইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বৃহত্তর স্বার্থ ও ঐক্যের জন্য আমি তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’

ইশতেহারের বাস্তবায়ন চান শিক্ষার্থীরা

নির্বাচনের পর প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয়, সেই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিয়া নোভা বলেন, ‘আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে শুধু আমাদের সমস্যাগুলোর সমাধান চাই। প্রার্থীরা যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তা যেন নির্বাচন শেষে বাস্তবায়িত হয়, এটাই আমাদের কামনা।’

আরেক শিক্ষার্থী আশিক বলেন, ‘আমরা শুধু কথা চাই না, আমরা চাই কাজ। নির্বাচনের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো যেন বাস্তবে দেখা যায়।’

নতুন তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণা চলবে। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ ডিসেম্বর এবং ভোট গণনা ও ফল ঘোষণা হবে ৩০ অথবা ৩১ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

দীপু চন্দ্র দাসের পরিবারের দায়িত্ব নিল সরকার

হাদি হত্যা মামলা: ফয়সালদের ৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

এই মব আক্রমণগুলো হাওয়া থেকে ঘটেনি—জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের ক্ষোভ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৪৭
প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করে প্রজ্ঞাপন

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের বেতন একাদশ থেকে বাড়িয়ে দশম গ্রেডে নির্ধারণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে স্বাক্ষর করেন উপসচিব (বিদ্যালয়-২) রাজীব কুমার সরকার।

এদিন এই প্রজ্ঞাপন জারি হলেও নতুন গ্রেডে বেতন ১৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষককে গেল ২৭ অক্টোবর গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদা দিয়ে তাঁদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। এরপর ৬৫ হাজার ৫০২টি প্রধান শিক্ষকদের সবগুলো পদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ২৮ জুলাই অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ ও অক্টোবরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এসব প্রধান শিক্ষক পদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীত করার সম্মতি দিয়েছিল।

পরে গত ১১ নভেম্বর অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ এ প্রস্তাবে সম্মতি জানায়।

৩ ডিসেম্বর প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায়ও প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়।

এদিকে প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে নির্ধারণের সিদ্ধান্তকে ‘যুগান্তকারী’ আখ্যা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ উদ্যোগ প্রধান শিক্ষকদের ‘আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত’ এবং তাঁদের ‘সামাজিক মর্যাদা সুসংহত’ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

এর ফলে প্রধান শিক্ষকেরা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে আরও ‘সৃজনশীল ও উদ্দীপ্ত’ ভূমিকা রাখবেন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ‘আরও উন্নত ও গতিশীল’ শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করা হয় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

মন্ত্রণালয় বলছে, প্রধান শিক্ষকেরা অন্যান্য শিক্ষক, অভিভাবক ও সব স্তরের অংশীজনদের সহায়তায় প্রাথমিক শিক্ষার মান ‘কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে’ উন্নীত করবেন বলে প্রত্যাশা করছে সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

দীপু চন্দ্র দাসের পরিবারের দায়িত্ব নিল সরকার

হাদি হত্যা মামলা: ফয়সালদের ৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

এই মব আক্রমণগুলো হাওয়া থেকে ঘটেনি—জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের ক্ষোভ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি

রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৬
অবসর ভাতায় অনিয়ম, ক্ষতি ১২৫০ কোটি
ছবি: সংগৃহীত

অবসর ভাতার আবেদন করতে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবশ্যই ইনডেক্স (পরিচয় শনাক্তকারী নম্বর) থাকতে হবে। এই শর্ত ঠিক রেখেই জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া ইনডেক্সধারীদের অবসর ভাতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি আবেদন না করেও অনেকে এই ভাতা পেয়েছেন। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের অর্থ ব্যয় এবং পরিচালনায় এমন অনেক অনিয়ম ও অসংগতি পেয়েছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের বিশেষ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অনিয়মে প্রায় ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে আইন লঙ্ঘন করে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানত ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের (সিএজি) অধীন শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের এই নিরীক্ষা প্রতিবেদন সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনটির সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (নিরীক্ষা ও আইন অনুবিভাগ) জহিরুল ইসলাম ১৪ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি এখনো হাতে পাননি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অবসর সুবিধা দেওয়া শুরু হয়েছে ২০০৫ সাল থেকে। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকেরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। সারা দেশে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ৫ লাখের বেশি।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৭৫টি আবেদন অনিষ্পন্ন রয়েছে। এর মধ্যে স্কুলপর্যায়ের ২৭ হাজার ৮৬২টি, কলেজের ১৭ হাজার ২৭৮টি, মাদ্রাসার ১২ হাজার ৯৬৮টি এবং কারিগরির শিক্ষকদের ৬ হাজার ৬৬৭টি।

আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসেবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানি বা গচ্ছিত অর্থের লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি।

শিক্ষা অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ১৮ জন ভুয়া ইনডেক্সধারীকে বোর্ড তহবিল থেকে ১ কোটি ৪২ লাখ ৭৮ হাজার ৫৬৭ টাকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা পরিশোধের আগে ইনডেক্স যাচাই আবশ্যক। অথচ ইনডেক্স যাচাই না করে ভুয়া ইনডেক্সের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এসব অর্থ আদায় করে বোর্ডের তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করেছে নিরীক্ষা দল।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর ভাতা প্রাপ্তির আবেদন না করলেও এবং বোর্ড থেকে ব্যাংকে কোনো অ্যাডভাইস না পাঠালেও তাঁদের অনুকূলে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯৭ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া একই ইনডেক্সধারীকে একাধিকবার অবসর সুবিধা দেওয়ায় বোর্ডের ১ কোটি চার লাখ ৭২ হাজার ৮৬১ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাল আবেদনপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন হিসাবে ৫৮ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮ টাকা এবং ভুয়া ইনডেক্স নম্বর ব্যবহার করে সফটওয়্যার ভেন্ডরের মাধ্যমে ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৭৭৫ টাকা পরিশোধের তথ্যও উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বোর্ডের আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে না রেখে বেসরকারি ব্যাংকে রাখা আমানতের টাকা ফেরত না পাওয়ায় বোর্ডের আর্থিক ক্ষতি ৬৩৯ কোটি ৬০ লাখ ৬১ হাজার ৭২৫ টাকা। এসব টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জমা করা আবশ্যক বলে সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য আদায় করা ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ৭২ হাজার ৪৪০ টাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের তহবিল থেকে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিলে জমা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমপিওর চেক নগদায়নপূর্বক নির্ধারিত সময়ে ৫২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭৩ টাকা জমা হয়নি। স্থায়ী তহবিলের প্রাপ্ত সুদ চলতি তহবিলে জমা না দেওয়ায় ৫৬ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার ৫২৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া তহবিল যথাযথভাবে সংরক্ষণ না হওয়ায় ৯১ লাখ ৩৫ হাজার, যথাযথ নিয়মে হিসাবভুক্ত না করায় ২৯ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার ১৫৭ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

পরামর্শক বাবদ বিল পরিশোধ করায় অনিয়মিত ব্যয় ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৪৮০ টাকা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রাপ্যতা না থাকলেও সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮০ টাকা পারিতোষিক দেওয়া হয়েছে। আবার অতিরিক্ত অবসর সুবিধা পরিশোধ করায় ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৮২৪ টাকা, ভ্যাট না কাটায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৫৩ টাকা, চেকের ব্যবহার না থাকলেও এ খাতে ব্যয় দেখিয়ে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬৫ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এসব ব্যয়কে প্রতিবেদনে আর্থিক ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করে এসব অর্থ আদায় করে বোর্ড তহবিলে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রতিবেদনে উৎসে কর না কাটায় ১ লাখ ৬ হাজার ১১ টাকা, ক্রয় সিলিং না মেনে ২৬ লাখ ১৬ হাজার ৩০৪ টাকার অতিরিক্ত ব্যয়, বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা না মেনে ১ কোটি ৮ লাখ ২৮ হাজার ৭০৭ টাকা ব্যয় এবং আর্থিক ক্রয়সীমার অতিরিক্ত ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৪১ টাকা ব্যয়ের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে অবসর সুবিধা বোর্ডের তহবিল ব্যবস্থাপনা ও সম্পাদিত কার্যাবলির প্রতিবেদন প্রণয়ন না করা এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন বোর্ডের আইন ও প্রবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বোর্ড কর্তৃক ক্যাশবই ও স্টক রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা হয়নি। তহবিল প্রাপ্তি নিশ্চিত না করে অধিক হারে পরিশোধের অঙ্গীকার করার অবসর সুবিধা বোর্ডের দায় উত্তরোত্তর বাড়ছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনের আপত্তিগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্যসচিব (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. জাফর আহম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নিরীক্ষার আপত্তিগুলোর জবাব দেওয়া হয়েছে। সে আলোকে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

দীপু চন্দ্র দাসের পরিবারের দায়িত্ব নিল সরকার

হাদি হত্যা মামলা: ফয়সালদের ৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

এই মব আক্রমণগুলো হাওয়া থেকে ঘটেনি—জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের ক্ষোভ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনের পর রমজান, আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা কবে?

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।  ছবি: আজকের পত্রিকা
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আগামী বছরের (২০২৬) মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার সময়সূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, গণভোট ও পবিত্র রমজান মাস বিবেচনায় নিয়ে আগামী এপ্রিল বা মে মাসে এই পাবলিক পরীক্ষা আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে এমন আভাস পাওয়া গেছে। এর আগে একসময় ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষা শুরুর রেওয়াজ থাকলেও করোনা মহামারি ও পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপঞ্জিতে পরিবর্তন আসে।

২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষাকে আবারও ফেব্রুয়ারিতে ফিরিয়ে আনা হয়। সে বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এরপর ২০২৪ সালের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের পর রমজানের কারণে ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি শুরু করতে পারেনি শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরে ঈদুল ফিতরের পর ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছিল ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা।

আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালে নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে। তবে অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসের প্রশ্নে এ পরীক্ষায় বসতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির আজ বিকেলে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি, যাতে সরকার যেকোনো সময় বললে পরীক্ষা নিতে পারি। পরীক্ষার ব্যাপারে কিছু চিন্তাভাবনা, কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকার সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দিলে আমরা পরীক্ষা নেব।’

এহসানুল কবির আরও বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, এর মধ্যে কীভাবে পরীক্ষা হবে। এরপর রমজান। এসএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষা কোন সময় আয়োজিত হবে, সে সিদ্ধান্ত সরকারের। তাই পরীক্ষা কবে শুরু হতে পারে, সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না।’

এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ‘গত বছর এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এপ্রিলে। এবার এপ্রিলেও শুরু হতে পারে, মে মাসেও শুরু হতে পারে। আবার এপ্রিল-মে মাসে ঘূর্ণিঝড়-বন্যার একটা বিষয় আছে। এসএসসি পরীক্ষা কবে হবে, সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত। আমরা প্রস্তুতি রাখছি, সরকারের সিদ্ধান্ত পেলে পরীক্ষার আনুষ্ঠিকতা শুরু হবে।’

গত বছর ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে এসএসসি ও সমমানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা এবং ১৫ থেকে ২২ মে ব্যবহারিক পরীক্ষা আয়োজনের পরিল্পনা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ১৪ ও ১৫ মের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। পরে তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হয় ২৮ মে। আর ২৯ মে থেকে ৪ জুন পর্যন্ত নেওয়া হয় ব্যবহারিক পরীক্ষা। এরপর ২৬ জুন থেকে শুরু হয় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা।

এদিকে, ৩১ ডিসেম্বর থেকে এসএসসির ফরম পূরণ শুরু হবে। বিলম্ব ফি ছাড়া ফরম পূরণ চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। পরীক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা হারে বিলম্ব ফিসহ অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে ২০২৬ সালের ১২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। বিলম্বসহ অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪৩৫ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণে এ ফি দিতে হবে। আর ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি ২ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

ভাড়াটে চোরদের নিয়ে ষাঁড় চুরি করছিলেন স্ত্রী, বাধা দেওয়ায় স্বামীকে হত্যা: পুলিশ

দীপু চন্দ্র দাসের পরিবারের দায়িত্ব নিল সরকার

হাদি হত্যা মামলা: ফয়সালদের ৮ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

এই মব আক্রমণগুলো হাওয়া থেকে ঘটেনি—জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞের ক্ষোভ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত