কামরুল হাসান

ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় তখন খুব চুরি হতো। ডিএইচএল বা ফেডএক্সের মতো আন্তর্জাতিক কুরিয়ার অত সহজলভ্য ছিল না। সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল ডাক বিভাগের পার্সেল সার্ভিস। প্রবাসীরা পার্সেল সার্ভিসে যেসব পণ্য দেশে স্বজনদের কাছে পাঠাতেন, ডাক বিভাগের কিছু অসাধু কর্মচারী সেসবের কিছু কিছু অনায়াসে সাবাড় করে দিতেন। ছোটখাটো ঘটনা প্রায়ই ঘটত, তবে বড় চুরির ঘটনা হলে থানা-পুলিশ করা হতো। তখন ক্রাইম রিপোর্টাররাও খবর পেতেন।
এ রকম একটি চুরির ঘটনা কাভার করতে গেছি ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায়। তো সব দেখেশুনে কর্মকর্তাদের বক্তব্য নিতে গেলাম ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেলের (ডিপিএমজি) রুমে। এই পদে তখন ছিলেন নামকরা রম্যলেখক আতাউর রহমান। তাঁর কক্ষের দরজা খোলা দেখে ঢুকে পড়লাম। তিনিও খুব ভালো ব্যবহার করলেন এবং সময় দিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন।
কথা শেষে বেরিয়ে আসার মুখে একটা ভিজিটিং কার্ড চাইলেন। মানিব্যাগ থেকে একটা কার্ড বের করে তাঁর হাতে দিতেই সেটার দিকে তাকিয়ে চেয়ার থেকে লাফিয়ে উঠলেন। ডান হাত দিয়ে টেবিলের ওপর একটি চাটি মেরে বেশ উচ্চ স্বরে বলে উঠলেন, ‘আরে...আপনি ক্রাইম রিপোর্টার? আমি জীবনে প্রথম ক্রাইম রিপোর্টার দেখলাম। আমার ধারণা ছিল, ক্রাইম রিপোর্টাররা দেখতে চোর চোর!’
এ রকম একজন উচ্চপদস্থ আমলা ও লেখকের মুখে এমন কথা শুনে খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তো আমি দেখতে কী রকম?’ তিনি আমার দিকে তাকিয়ে চট করে বলে দিলেন, ‘আপনি দেখতে বোকা বোকা।’
আমি ভেবেছিলাম, মুখের সামনে আমাকে নিয়ে হয়তো ভালো কিছু বলবেন। তখন বয়স কম, একটুতেই মন খারাপ হয়। সেই খারাপ মন নিয়ে অফিসে গিয়ে এক সহকর্মীকে বললাম। তিনি শুনে বললেন, ‘মন খারাপ কইরেন না। ক্রাইম রিপোর্টারদের ভাবমূর্তি অনেকটা পুলিশের মতো, কেউ ভালো চোখে দেখে না।’ এ ঘটনার বছর চারেক পরে এক শীর্ষ সন্ত্রাসীও আমাকে সেই একই কথা বলেছিলেন। সেবার অবশ্য অত মন খারাপ হয়নি।
সেই মন খারাপ নিয়ে পরদিন আবার গেলাম ডাক বিভাগে সেই বড় চুরির ঘটনার ফলোআপ করতে। আবারও সেই আতাউর রহমানের কক্ষে। তবে আগের দিনের চেয়ে তিনি আরও ভালো ব্যবহার করলেন। বায়তুল মোকাররম থেকে স্যান্ডউইচ আর লাচ্ছি এনে খাওয়ালেন। পাশে বসিয়ে এটা-সেটা জানতে চাইলেন। খুশি হয়ে বারবার বলছিলেন, আমার নিউজ তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে। আমি একটু অবাক হলাম; কারণ, পুরো নিউজটা ছিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ডিপিএমজি হিসেবে তার দায় আতাউর রহমানের ওপরও বর্তায়। সেই দায় তিনি কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। কিন্তু তিনি সেসবে মাতলেন না। আমাকে বললেন, ‘আজ ডাক বিভাগের একটি মজার জিনিস আপনাকে দেখাব।’ বললাম, কী জিনিস? চলেন—বলেই তিনি হাঁটতে শুরু করলেন।
গুলিস্তানে জিপিও ভবনের ভেতরটা অনেকটা পুরোনো স্কুল ভবনের মতো। মাঝখানে বিশাল ফাঁকা জায়গা রেখে চারদিকে ভবন উঠেছে। বাইরে থেকে সেটা একেবারেই বোঝা যায় না। আতাউর রহমান বসতেন জিপিওর পূর্ব দিকে, যেটা বায়তুল মোকাররমের উল্টো দিকে। আর আমরা গেলাম পশ্চিম দিকের শেষ মাথার দোতলায়। সামনে আতাউর রহমান আর পেছনে আমি। যে কক্ষটির সামনে গেলাম, তার সামনে লেখা আরএলও—রিটার্ন লেটার অফিস। ডাক বিভাগে এর আগে আমি অনেকবার এসেছি, কিন্তু এ রকম কোনো বিভাগের নাম শুনিনি, দেখিনি। সেই অফিসের ভেতরে ডিপিএমজিকে দেখে হুলুস্থুল পড়ে গেল। তিনি আরএলওর ম্যানেজারকে ডেকে বললেন, আমি যা জানতে চাই, সব যেন বলা হয়। এরপর আমাকে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় বললেন, ‘আপনি কথা বলেন, সব বুঝতে পারবেন।’
আগেই বলেছি, আরএলও নিয়ে আমার কোনো ধারণা ছিল না। প্রথমেই জানতে চাইলাম, এই অফিসের কাজ কী? ম্যানেজার আমাকে বললেন, সারা দেশের মানুষ যেসব চিঠি পাঠায়, সেগুলোর মধ্যে অনেক চিঠি কখনো প্রাপকের হাতে পৌঁছায় না ভুল বা অস্পষ্ট ঠিকানার কারণে। সেসব চিঠি ফেরত আসে জিপিওতে। আরএলও শাখা এসব চিঠি খুলে পড়ে দেখে, প্রাপক বা প্রেরকের নাম-ঠিকানা পেলে তাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। আর কারও ঠিকানা না থাকলে সেই চিঠি বছর শেষে পুড়িয়ে ফেলা হয়। তখন চিঠির ভেতরে নানা পণ্য পাঠানোর রেওয়াজ ছিল। ঠিকানাবিহীন সেসব পণ্য বছর শেষে নিলামে তোলা হয়। ম্যানেজারের কথা শুনে বেশ মজা পাচ্ছিলাম। মনে হলো, এ নিয়ে ভালো একটি ফিচার হতে পারে—‘যে চিঠি কোনো দিন পৌঁছাবে না প্রাপকের হাতে’। ম্যানেজারকে বললাম, এই অফিসের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাই। ব্যবস্থা করে দিলেন।
ম্যানেজারের পাশের একটি কক্ষে ঢুকে দেখি বিশাল কক্ষটির টেবিলের ওপরে হাজার হাজার চিঠির স্তূপ। ছয়-সাতজন মিলে সেই সব চিঠি পড়ছেন। কথা শুনে বুঝলাম, এঁদের কাজই হলো চিঠি পড়া। সারা দিন ধরে তাঁরা শুধু মানুষের চিঠিই পড়েন। আমি কিছু চিঠি পড়তে চাইলে কেউ আপত্তি করলেন না। একটি চিঠির খামের ওপরে লেখা—তারিন, রোকেয়া হল। রোকেয়া হলের বহু তারিনের ভিড়ে প্রকৃত তারিনকে খুঁজে পায়নি ডাকপিয়ন। আরেক চিঠির ঠিকানা—গেদু চাচা, ঢাকা। একটির ঠিকানা মামুন, আজিমপুর; আরেকটির ঠিকানা তাহমিনা, বাসাবো। কেউ চিঠিতে পাঠিয়েছেন বিদেশি মুদ্রা, কেউবা ইমিটেশনের গয়না। নতুন স্ত্রীর জন্য শাড়ি-ব্লাউজ পাঠিয়েছেন একজন ভুল ঠিকানায়। এক প্রেমিকা প্রিয়জনের জন্য পাঠিয়েছেন সোহাগী ঠোঁটের লিপস্টিকের ছাপ। একজন রক্ত দিয়ে নাম লিখেছেন ‘ছালেহা’।
আরএলওর লোকেরা বললেন, প্রেমের বেশির ভাগ চিঠিতে থাকে ফুলের পাপড়ি, একটি বা দুটি করে। গ্রামের এক স্ত্রী অভিমান করে শহরের স্বামীকে লিখেছেন, ‘তুমি কেমন জানি হয়ে যাচ্ছ’। ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন হারাগাছার রুবিনা। নোয়াখালীর জয়নাল শহরে চাকরিজীবী ছেলেকে লিখেছেন, ‘টাকা না পাঠালে আমরা না খেয়ে মরে যাব, বাবা’। কেউ একজন বোনের আত্মহত্যার খবর দিয়েছেন চিঠিতে। লেখাপড়া না জানা এক মায়ের পক্ষে একজন লিখেছেন, ‘তোমার মায়ের শরীরটা খুব খারাপ, দেখতে চাইলে শিগগির বাড়ি এসো’। চিঠিগুলো পড়তে পড়তে মন খারাপ হয়ে গেল।
এসব আকুতিভরা চিঠি পড়তে পড়তে পাশে বসা একজন চিঠি নিয়ে একটি মজার গল্পও শোনালেন। বললেন, কয়েক বছর আগে এক বেকার যুবক আকাশের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তাতে লিখেছিলেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে তিন শ টাকা দাও, না দিলে আমি না খেয়ে মরে যাব।’ তো সেই চিঠি দেখে সবার দয়া হলো। তাঁরা ১০ টাকা করে চাঁদা তুলে ২০০ টাকা সেই যুবকের ঠিকানায় পাঠিয়ে দিলেন। কিছুদিন পর আবার চিঠি এল। সেই যুবক এবার আল্লাহর কাছে লিখেছেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার কষ্টের কথা শুনে ঠিকই ৩০০ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ডাক বিভাগের চোরের দল তা থেকে ১০০ টাকা মেরে দিয়েছে।’ আমি এ চিঠির কথা শুনে হাসতে হাসতে বেরিয়ে এলাম।
আরএলও শাখা নিয়ে ১৯৯৭ সালের এপ্রিলে একটি ফিচার ছাপা হয়েছিল জনকণ্ঠে। আতাউর রহমান সে জন্য ফোন করে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন। তারপর অনেক বছর আর জিপিওতে যাওয়া হয়নি। বছর চারেক আগে বায়তুল মোকাররমের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা না পেয়ে ঢুকলাম জিপিওর ভেতরে, সেখানে অনেক জায়গা। মনে হলো একবার আরএলও শাখাটা ঘুরে আসি। গিয়ে দেখি, পুরো চিঠির দপ্তরটা একটা ভাঙা রঙ্গমঞ্চ। সব ফাঁকা, কোনো চিঠি নেই কারও হাতে। সবাই বললেন, বোনের আদরমাখা আর মায়ের আকুতিভরা চিঠি কেউ আর ডাক বিভাগে দেন না। হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ই-মেইলের যুগে আরএলও বড্ড সেকেলে হয়ে গেছে। মহাদেব সাহার মতো কেউ আর বলেন না, ‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও, মিথ্যা করে হলেও বলো, ভালোবাসি’। মনে হলো, হাতে লেখা চিঠির যেন মৃত্যু ঘটেছে। শুধু শেষ যাত্রাটাই বাকি।
আরও পড়ুন:

ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় তখন খুব চুরি হতো। ডিএইচএল বা ফেডএক্সের মতো আন্তর্জাতিক কুরিয়ার অত সহজলভ্য ছিল না। সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল ডাক বিভাগের পার্সেল সার্ভিস। প্রবাসীরা পার্সেল সার্ভিসে যেসব পণ্য দেশে স্বজনদের কাছে পাঠাতেন, ডাক বিভাগের কিছু অসাধু কর্মচারী সেসবের কিছু কিছু অনায়াসে সাবাড় করে দিতেন। ছোটখাটো ঘটনা প্রায়ই ঘটত, তবে বড় চুরির ঘটনা হলে থানা-পুলিশ করা হতো। তখন ক্রাইম রিপোর্টাররাও খবর পেতেন।
এ রকম একটি চুরির ঘটনা কাভার করতে গেছি ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায়। তো সব দেখেশুনে কর্মকর্তাদের বক্তব্য নিতে গেলাম ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেলের (ডিপিএমজি) রুমে। এই পদে তখন ছিলেন নামকরা রম্যলেখক আতাউর রহমান। তাঁর কক্ষের দরজা খোলা দেখে ঢুকে পড়লাম। তিনিও খুব ভালো ব্যবহার করলেন এবং সময় দিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন।
কথা শেষে বেরিয়ে আসার মুখে একটা ভিজিটিং কার্ড চাইলেন। মানিব্যাগ থেকে একটা কার্ড বের করে তাঁর হাতে দিতেই সেটার দিকে তাকিয়ে চেয়ার থেকে লাফিয়ে উঠলেন। ডান হাত দিয়ে টেবিলের ওপর একটি চাটি মেরে বেশ উচ্চ স্বরে বলে উঠলেন, ‘আরে...আপনি ক্রাইম রিপোর্টার? আমি জীবনে প্রথম ক্রাইম রিপোর্টার দেখলাম। আমার ধারণা ছিল, ক্রাইম রিপোর্টাররা দেখতে চোর চোর!’
এ রকম একজন উচ্চপদস্থ আমলা ও লেখকের মুখে এমন কথা শুনে খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তো আমি দেখতে কী রকম?’ তিনি আমার দিকে তাকিয়ে চট করে বলে দিলেন, ‘আপনি দেখতে বোকা বোকা।’
আমি ভেবেছিলাম, মুখের সামনে আমাকে নিয়ে হয়তো ভালো কিছু বলবেন। তখন বয়স কম, একটুতেই মন খারাপ হয়। সেই খারাপ মন নিয়ে অফিসে গিয়ে এক সহকর্মীকে বললাম। তিনি শুনে বললেন, ‘মন খারাপ কইরেন না। ক্রাইম রিপোর্টারদের ভাবমূর্তি অনেকটা পুলিশের মতো, কেউ ভালো চোখে দেখে না।’ এ ঘটনার বছর চারেক পরে এক শীর্ষ সন্ত্রাসীও আমাকে সেই একই কথা বলেছিলেন। সেবার অবশ্য অত মন খারাপ হয়নি।
সেই মন খারাপ নিয়ে পরদিন আবার গেলাম ডাক বিভাগে সেই বড় চুরির ঘটনার ফলোআপ করতে। আবারও সেই আতাউর রহমানের কক্ষে। তবে আগের দিনের চেয়ে তিনি আরও ভালো ব্যবহার করলেন। বায়তুল মোকাররম থেকে স্যান্ডউইচ আর লাচ্ছি এনে খাওয়ালেন। পাশে বসিয়ে এটা-সেটা জানতে চাইলেন। খুশি হয়ে বারবার বলছিলেন, আমার নিউজ তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে। আমি একটু অবাক হলাম; কারণ, পুরো নিউজটা ছিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ডিপিএমজি হিসেবে তার দায় আতাউর রহমানের ওপরও বর্তায়। সেই দায় তিনি কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। কিন্তু তিনি সেসবে মাতলেন না। আমাকে বললেন, ‘আজ ডাক বিভাগের একটি মজার জিনিস আপনাকে দেখাব।’ বললাম, কী জিনিস? চলেন—বলেই তিনি হাঁটতে শুরু করলেন।
গুলিস্তানে জিপিও ভবনের ভেতরটা অনেকটা পুরোনো স্কুল ভবনের মতো। মাঝখানে বিশাল ফাঁকা জায়গা রেখে চারদিকে ভবন উঠেছে। বাইরে থেকে সেটা একেবারেই বোঝা যায় না। আতাউর রহমান বসতেন জিপিওর পূর্ব দিকে, যেটা বায়তুল মোকাররমের উল্টো দিকে। আর আমরা গেলাম পশ্চিম দিকের শেষ মাথার দোতলায়। সামনে আতাউর রহমান আর পেছনে আমি। যে কক্ষটির সামনে গেলাম, তার সামনে লেখা আরএলও—রিটার্ন লেটার অফিস। ডাক বিভাগে এর আগে আমি অনেকবার এসেছি, কিন্তু এ রকম কোনো বিভাগের নাম শুনিনি, দেখিনি। সেই অফিসের ভেতরে ডিপিএমজিকে দেখে হুলুস্থুল পড়ে গেল। তিনি আরএলওর ম্যানেজারকে ডেকে বললেন, আমি যা জানতে চাই, সব যেন বলা হয়। এরপর আমাকে তাঁদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় বললেন, ‘আপনি কথা বলেন, সব বুঝতে পারবেন।’
আগেই বলেছি, আরএলও নিয়ে আমার কোনো ধারণা ছিল না। প্রথমেই জানতে চাইলাম, এই অফিসের কাজ কী? ম্যানেজার আমাকে বললেন, সারা দেশের মানুষ যেসব চিঠি পাঠায়, সেগুলোর মধ্যে অনেক চিঠি কখনো প্রাপকের হাতে পৌঁছায় না ভুল বা অস্পষ্ট ঠিকানার কারণে। সেসব চিঠি ফেরত আসে জিপিওতে। আরএলও শাখা এসব চিঠি খুলে পড়ে দেখে, প্রাপক বা প্রেরকের নাম-ঠিকানা পেলে তাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। আর কারও ঠিকানা না থাকলে সেই চিঠি বছর শেষে পুড়িয়ে ফেলা হয়। তখন চিঠির ভেতরে নানা পণ্য পাঠানোর রেওয়াজ ছিল। ঠিকানাবিহীন সেসব পণ্য বছর শেষে নিলামে তোলা হয়। ম্যানেজারের কথা শুনে বেশ মজা পাচ্ছিলাম। মনে হলো, এ নিয়ে ভালো একটি ফিচার হতে পারে—‘যে চিঠি কোনো দিন পৌঁছাবে না প্রাপকের হাতে’। ম্যানেজারকে বললাম, এই অফিসের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাই। ব্যবস্থা করে দিলেন।
ম্যানেজারের পাশের একটি কক্ষে ঢুকে দেখি বিশাল কক্ষটির টেবিলের ওপরে হাজার হাজার চিঠির স্তূপ। ছয়-সাতজন মিলে সেই সব চিঠি পড়ছেন। কথা শুনে বুঝলাম, এঁদের কাজই হলো চিঠি পড়া। সারা দিন ধরে তাঁরা শুধু মানুষের চিঠিই পড়েন। আমি কিছু চিঠি পড়তে চাইলে কেউ আপত্তি করলেন না। একটি চিঠির খামের ওপরে লেখা—তারিন, রোকেয়া হল। রোকেয়া হলের বহু তারিনের ভিড়ে প্রকৃত তারিনকে খুঁজে পায়নি ডাকপিয়ন। আরেক চিঠির ঠিকানা—গেদু চাচা, ঢাকা। একটির ঠিকানা মামুন, আজিমপুর; আরেকটির ঠিকানা তাহমিনা, বাসাবো। কেউ চিঠিতে পাঠিয়েছেন বিদেশি মুদ্রা, কেউবা ইমিটেশনের গয়না। নতুন স্ত্রীর জন্য শাড়ি-ব্লাউজ পাঠিয়েছেন একজন ভুল ঠিকানায়। এক প্রেমিকা প্রিয়জনের জন্য পাঠিয়েছেন সোহাগী ঠোঁটের লিপস্টিকের ছাপ। একজন রক্ত দিয়ে নাম লিখেছেন ‘ছালেহা’।
আরএলওর লোকেরা বললেন, প্রেমের বেশির ভাগ চিঠিতে থাকে ফুলের পাপড়ি, একটি বা দুটি করে। গ্রামের এক স্ত্রী অভিমান করে শহরের স্বামীকে লিখেছেন, ‘তুমি কেমন জানি হয়ে যাচ্ছ’। ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন হারাগাছার রুবিনা। নোয়াখালীর জয়নাল শহরে চাকরিজীবী ছেলেকে লিখেছেন, ‘টাকা না পাঠালে আমরা না খেয়ে মরে যাব, বাবা’। কেউ একজন বোনের আত্মহত্যার খবর দিয়েছেন চিঠিতে। লেখাপড়া না জানা এক মায়ের পক্ষে একজন লিখেছেন, ‘তোমার মায়ের শরীরটা খুব খারাপ, দেখতে চাইলে শিগগির বাড়ি এসো’। চিঠিগুলো পড়তে পড়তে মন খারাপ হয়ে গেল।
এসব আকুতিভরা চিঠি পড়তে পড়তে পাশে বসা একজন চিঠি নিয়ে একটি মজার গল্পও শোনালেন। বললেন, কয়েক বছর আগে এক বেকার যুবক আকাশের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তাতে লিখেছিলেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে তিন শ টাকা দাও, না দিলে আমি না খেয়ে মরে যাব।’ তো সেই চিঠি দেখে সবার দয়া হলো। তাঁরা ১০ টাকা করে চাঁদা তুলে ২০০ টাকা সেই যুবকের ঠিকানায় পাঠিয়ে দিলেন। কিছুদিন পর আবার চিঠি এল। সেই যুবক এবার আল্লাহর কাছে লিখেছেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার কষ্টের কথা শুনে ঠিকই ৩০০ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ডাক বিভাগের চোরের দল তা থেকে ১০০ টাকা মেরে দিয়েছে।’ আমি এ চিঠির কথা শুনে হাসতে হাসতে বেরিয়ে এলাম।
আরএলও শাখা নিয়ে ১৯৯৭ সালের এপ্রিলে একটি ফিচার ছাপা হয়েছিল জনকণ্ঠে। আতাউর রহমান সে জন্য ফোন করে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন। তারপর অনেক বছর আর জিপিওতে যাওয়া হয়নি। বছর চারেক আগে বায়তুল মোকাররমের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা না পেয়ে ঢুকলাম জিপিওর ভেতরে, সেখানে অনেক জায়গা। মনে হলো একবার আরএলও শাখাটা ঘুরে আসি। গিয়ে দেখি, পুরো চিঠির দপ্তরটা একটা ভাঙা রঙ্গমঞ্চ। সব ফাঁকা, কোনো চিঠি নেই কারও হাতে। সবাই বললেন, বোনের আদরমাখা আর মায়ের আকুতিভরা চিঠি কেউ আর ডাক বিভাগে দেন না। হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ই-মেইলের যুগে আরএলও বড্ড সেকেলে হয়ে গেছে। মহাদেব সাহার মতো কেউ আর বলেন না, ‘করুণা করে হলেও চিঠি দিও, মিথ্যা করে হলেও বলো, ভালোবাসি’। মনে হলো, হাতে লেখা চিঠির যেন মৃত্যু ঘটেছে। শুধু শেষ যাত্রাটাই বাকি।
আরও পড়ুন:

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৯ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় তখন খুব চুরি হতো। ডিএইচএল বা ফেডএক্সের মতো আন্তর্জাতিক কুরিয়ার অত সহজলভ্য ছিল না। সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল ডাক বিভাগের পার্সেল সার্ভিস। প্রবাসীরা পার্সেল সার্ভিসে যেসব পণ্য দেশে
২৩ জুলাই ২০২২
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় তখন খুব চুরি হতো। ডিএইচএল বা ফেডএক্সের মতো আন্তর্জাতিক কুরিয়ার অত সহজলভ্য ছিল না। সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল ডাক বিভাগের পার্সেল সার্ভিস। প্রবাসীরা পার্সেল সার্ভিসে যেসব পণ্য দেশে
২৩ জুলাই ২০২২
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৯ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় তখন খুব চুরি হতো। ডিএইচএল বা ফেডএক্সের মতো আন্তর্জাতিক কুরিয়ার অত সহজলভ্য ছিল না। সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল ডাক বিভাগের পার্সেল সার্ভিস। প্রবাসীরা পার্সেল সার্ভিসে যেসব পণ্য দেশে
২৩ জুলাই ২০২২
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৯ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় তখন খুব চুরি হতো। ডিএইচএল বা ফেডএক্সের মতো আন্তর্জাতিক কুরিয়ার অত সহজলভ্য ছিল না। সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসা ছিল ডাক বিভাগের পার্সেল সার্ভিস। প্রবাসীরা পার্সেল সার্ভিসে যেসব পণ্য দেশে
২৩ জুলাই ২০২২
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
১৯ ঘণ্টা আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৪ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৬ দিন আগে