Ajker Patrika

বিধিনিষেধে বাংলাদেশের রপ্তানিতে তেমন প্রভাব দেখছেন না ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ১২: ৩৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভারত স্থলবন্দর হয়ে দেশটিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। তৈরি পোশাকের চালান নিয়ে যাওয়া কিছু ট্রাক ভারতে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসতে শুরু করেছে। তবে ভারতের শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিতে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।

সাধারণত প্রতিদিন সীমান্তে প্রচুর ট্রাকের ভিড় থাকে। শীতকালে এই সংখ্যা দৈনিক ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর একটি বড় অংশ নেপাল ও ভুটানে শীতের পোশাক বহনকারী ট্রাক। ভারত স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক বাণিজ্য বন্ধ করলেও নেপাল ও ভুটানে চালান পাঠানো যাবে।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানি বন্ধ করার পর ভারতও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়। হিলি ও বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে চাল রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। বাংলাদেশের উচ্চ ট্রানজিট চার্জও দুই দেশের মধ্যে অসন্তোষের কারণ। এর ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো তাদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি এবং কাঁচামাল সংগ্রহে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

তবে সব মিলিয়ে পোশাক খাতে এই বন্দর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব স্বল্পমেয়াদী হবে। কারণ, বাংলাদেশ এখনও শুল্কমুক্ত সুবিধায় ভারতে পোশাক রপ্তানি করতে পারে, যেখানে অন্যান্য দেশকে প্রায় ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। ভারতে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু পণ্যের ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, ভারতীয় ফাস্ট মুভিং কনজ্যুমার গুডস বা এফএমসিজি (যা খুব দ্রুত ও কম দামে বিক্রি হয়) কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, তাদের ব্যবসা আগের ‘মতোই’ রয়ে গেছে। এমনকি, যাদের বাংলাদেশে দেশে বিনিয়োগ আছে, তাদের ক্ষেত্রেও।

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘এইচঅ্যান্ডএম, জারা, প্রাইমার্ক, ইউনিক্লো এবং ওয়ালমার্টের মতো শীর্ষস্থানীয় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশ থেকে পোশাক সংগ্রহ করে, যার কিছু অংশ ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রবেশ করে। ভারতীয় উৎপাদনকারীরা দীর্ঘদিন ধরে অসম প্রতিযোগিতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। তারা স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত কাপড়ের উপর ৫ শতাংশ জিএসটি (এক ধরনের শুল্ক) দেন, যেখানে বাংলাদেশি সংস্থাগুলো চীন থেকে শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানি করে এবং ভারতে বিক্রির জন্য রপ্তানি প্রণোদনা পায়—এতে তারা আনুমানিক ১০-১৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য কম ধরার সুবিধা পায়।’

ভারতের অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের মহাসচিব মিথিলেশ্বর ঠাকুর বলেন, ‘তবে আসল সমস্যা হল বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের (সাফটার) অধীনে ভারতে শুল্কমুক্ত সুবিধা এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে কম মজুরি ও ভর্তুকি ব্যবস্থার কারণে কম উৎপাদন খরচের সুবিধা পাচ্ছে।’

তবে বাংলাদেশের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারকরা, বিশেষ করে ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগগুলো আসলে লাভবান হতে পারে। ১৭ মে ভারত আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাংলাদেশ মুম্বাইয়ের নক সেবা এবং কলকাতার (কিদারপুর ও হলদিয়া) বন্দর ছাড়া আর কোনো স্থল বা সমুদ্রবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারবে না। ফলে বাংলাদেশকে যদি পোশাক সমুদ্রপথে পাঠাতে হয় তাহলে পরিবহন খরচ বাড়বে এবং ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমতে পারে। সমুদ্রপথে পরিবহন স্থলপথের চেয়ে ধীরগতির হওয়ায় পণ্য পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে।

এই বিষয়ে মিথিলেশ্বর ঠাকুর বলেন, ‘এর ফলে লিড টাইম বাড়তে পারে এবং ভারতীয় খুচরা বিক্রেতা ও ভোক্তাদের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হতে পারে।’

একই বিষয়ে ক্লথিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি সন্তোষ কাটারিয়া বলেন, পোশাক আমদানিতে বন্দর নিষেধাজ্ঞাকে আমরা স্বাগত জানাই। কারণ, এটি ‘এখানে (ভারতে) কম দামি পোশাকের অনিয়ন্ত্রিত প্রবাহ নিয়ে শিল্পের দীর্ঘদিনের উদ্বেগ দূর করবে।’ তিনি এই সিদ্ধান্তকে ‘সময়োপযোগী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি ‘ভারতের পোশাক উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীলতা বাড়াবে।’

বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি মূলত কিছু নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে হয়ে থাকে। যেমন—পুরুষদের কটন ট্রাউজার এবং সিন্থেটিক ফাইবারের জ্যাকেট/ব্লেজার। এগুলো স্থানীয়ভাবে স্টাইল ইউনিয়ন এবং মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার ও জারার মতো অনেক খুচরা চেইন ও ব্র্যান্ডের জন্য আমদানি করা হয়।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশ থেকে মোট পোশাক রপ্তানি করেছে ৬৭৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৫৯৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের চেয়ে ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। মিথিলেশ্বরঠাকুর বলেন, ‘এর মধ্যে শুধু পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানির পরিমাণ ছিল ৫১৫ দশমিক ৩ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশ থেকে ভারতে মোট পোশাক আমদানির প্রায় ৭৬ শতাংশ।’

ফলে স্থলবন্দরের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের প্রবেশাধিকার সীমিত হতে পারে। বিশেষ করে, এর কারণে বাংলাদেশের মাঝারি আকারের পোশাক কারখানাগুলো প্রভাবিত হতে পারে। এই কারখানাগুলো রপ্তানির জন্য স্থলপথের উপর নির্ভরশীল। কারণ, এই পথ পরিবহনের জন্য সস্তা এবং কার্যকর, বিশেষ করে ছোট চালানের জন্য।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যেহেতু কলকাতা এবং নব সেবা সমুদ্রবন্দর দিয়ে পোশাক আমদানি এখনও অনুমোদিত, তাই দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব মূলত নির্ভর করবে স্থলবন্দর থেকে তৈরি পোশাক আমদানি কত দ্রুত এবং কী পরিমাণে সমুদ্রবন্দরে স্থানান্তরিত হয় তার উপর।

তবে ভারতের এফএমসিজি কোম্পানিগুলো আমদানি নিষেধাজ্ঞার তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব দেখছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি এফএমসিজি কোম্পানির এক ঊর্ধ্বতন নির্বাহী দ্য হিন্দু বিজনেসলাইনকে বলেছেন, ‘দেশের (ভারতের) বেশিরভাগ এফএমসিজি কোম্পানি যারা বিনিয়োগ করেছে, তারা স্থানীয় বাজারের জন্যই উৎপাদন করে। তাই, আমদানি নিষেধাজ্ঞার তাদের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা কম।’

এদিকে, ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের প্রকল্প/সহযোগিতায় জড়িত ভারতীয় রেলওয়ে সংস্থাগুলো নির্মাণ ও কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কারণে বিলম্বের সম্মুখীন হতে পারে। রেলওয়ে প্রকল্পের জন্য পণ্য ও উপকরণ চলাচলের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা বাড়তে পারে, যা প্রকল্পের সময়সীমাকে প্রভাবিত করতে পারে।

ভারতীয় রেলওয়ের রপ্তানি শাখা রাইটসের ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৬০ কোটি রুপির ক্রয়াদেশ ছিল। এর মধ্যে প্রধান আন্তর্জাতিক অর্ডারগুলো হলো—বাংলাদেশের জন্য ৯০০ কোটি রুপির ২০০টি যাত্রীবাহী কোচ, মোজাম্বিকের জন্য ৩০০ কোটি রুপির ১০টি লোকোমোটিভ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে তিনটি অর্ডার (প্রতিটি ৩টি লোকোমোটিভের জন্য) প্রায় ১৫০ কোটি রুপি।

এই বিষয়ে অবগত এক ব্যক্তি বলেছেন, ‘লোকোমোটিভ ও কোচ উভয় সরবরাহের প্রাথমিক কাজ এরই মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। উপরন্তু, আন্তঃদেশীয় প্রতিনিধি দলের সফর এবং চলমান দ্বিপাক্ষিক আলোচনা প্রকল্প সমন্বয় ও বাস্তবায়নকে আরও শক্তিশালী করছে।’

২০২৫ অর্থবছরে, বাংলাদেশে ভারতীয় ইস্পাত রপ্তানি—মূলত অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য—৪২৫ কোটি টাকা বা ৫ লাখ ৬ হাজার টন ছিল। এর মধ্যে ৩ লাখ ৬৩ হাজার টন স্পঞ্জ আয়রন অন্তর্ভুক্ত ছিল। এক ব্যবসায়ী বলেছেন, ‘স্পঞ্জ আয়রন বা বিলেটের নির্বাচিত সরবরাহ ব্যতীত বাংলাদেশ থেকে সাধারণত খুব বেশি ফিনিশড স্টিলের অর্ডার আসে না।’ তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে, এই রপ্তানিও প্রভাবিত হতে পারে বলে অনুমান তাঁর।

তথ্যসূত্র: দ্য হিন্দু বিজনেসলাইন ও ফিন্যানসিয়াল এক্সপ্রেস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু

বন্ধ সব পোশাক কারখানা, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বন্ধ সব পোশাক কারখানা, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণিবিতানগুলো বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।

চিঠিতে বিজিএমইএ বলে, ‘দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প কারখানায় আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’

পৃথক বিবৃতিতে বিজিএমইএ বলেছে, বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানে আগামীকাল এক দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সারা দেশের বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়।

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিজিএমইএ ছাড়াও শোক জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), টেক্সটাইল মিলের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

এ ছাড়া শোক জানিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ), রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব), কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসসহ (বেসিস) আরও অনেক সংগঠন।

সংগঠনগুলো পৃথক বার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তারা খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত চেয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল: আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।

দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।

এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরের খেজুর রস: লক্ষ্য ১২০ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন

জাহিদ হাসান, যশোর
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।

শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।

উৎপাদন ও বাজারের চিত্র

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।

গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ

যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।

ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।

উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।

কৃষি বিভাগের উদ্যোগ

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত