Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের সুতি ট্রাউজারের বাজারে শীর্ষ রপ্তানিকারক বাংলাদেশ, ধারে কাছে নেই কেউ

যুক্তরাষ্ট্রের সুতি প্যান্টের বাজারে বাংলাদেশের জায়গা দখলের অবস্থানে নেই কোনো দেশ। প্রতীকী ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের সুতি প্যান্টের বাজারে বাংলাদেশের জায়গা দখলের অবস্থানে নেই কোনো দেশ। প্রতীকী ছবি

পুরুষদের সুতি প্যান্ট, ওভারঅল এবং শর্টস বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সারা বছরই এসব পোশাকে চাহিদা স্থিতিশীল থাকায় এগুলো গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্যে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এসব পোশাক সরবরাহে মূল ভূমিকা পালন করে।

তবে প্রতিযোগিতার মাত্রা নির্ভর করে মূল্য নির্ধারণ, বাণিজ্যনীতি এবং উৎপাদন দক্ষতার ওপর। চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফাইবার টু ফ্যাশন বাজারের পরিবর্তিত অবস্থানে প্রধান রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান পর্যালোচনা করেছে। যেখানে দেখা গেছে, চীনের ওপর মার্কিন শুল্ক আরোপিত হওয়ায় বাংলাদেশের জন্য মার্কিন বাজারে এই পণ্য রপ্তানিতে আরও বড় অংশ দখলের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

পুরুষদের সুতি প্যান্ট, ওভারঅল ও শর্টস উৎপাদনে বাংলাদেশ অসাধারণ প্রতিযোগিতামূলক দক্ষতা অর্জন করেছে, যার প্রতিফলন দেখা যায় রিভিলড কম্প্যারেটিভ অ্যাডভান্টেজেস বা তুলনামূলক সুবিধার সূচকে (আরসিএ—আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে ব্যবহৃত একটি সূচক, যা বাণিজ্য প্যাটার্নের ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবা উৎপাদন ও রপ্তানিতে একটি দেশের আপেক্ষিক শক্তি পরিমাপ করে।)। এই সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট ১৩১ দশমিক ৯১। এর মানে হলো, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এই পণ্য উৎপাদনে বিশেষভাবে দক্ষ।

বাংলাদেশ প্রতি কেজি মাত্র ১৩ দশমিক ৫৩ ডলার ইউনিট মূল্য বা ইউভিআর (ইউভিআর—ইউনিট ভ্যালু রিয়ালাইজেশন বলতে বোঝায় রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট পণ্যের প্রতি ইউনিটের দামের অর্থনৈতিক মূল্য। অর্থাৎ, প্রতি একক রপ্তানি করে কত টাকা পাওয়া গেল, সেটাই ইউনিট ভ্যালু রিয়ালাইজেশন।) নিশ্চিত করে এই পণ্য সরবরাহ করছে, যা অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। আরসিএ-এর উচ্চমান ও কম ইউভিআর-এর কারণে বাংলাদেশ এই খাতে শীর্ষ সরবরাহকারী হিসেবে আধিপত্য ধরে রেখেছে। কম খরচে উৎপাদন ও প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণ বাংলাদেশকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে রেখেছে।

মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী মেক্সিকো। কিন্তু দেশটির আরসিএ মাত্র ১ দশমিক ০৫ হওয়ায় দেশটি খুব একটা শক্ত প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দিতে পারে না ক্রেতাদের। এ ছাড়া, মেক্সিকোর বাংলাদেশের তুলনায় বেশি, প্রতি কেজিতে ১৪ দশমিক ৬৪ ডলার। ফলে মূল্য প্রতিযোগিতায় মেক্সিকো অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থানে আছে।

অধিকন্তু, ২০২৫ সালের ৪ মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে (যদিও যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো রপ্তানি চুক্তির আওতাভুক্ত পণ্য এতে অন্তর্ভুক্ত নয়)। এই শুল্ক বৃদ্ধির ফলে মেক্সিকোর প্রতিযোগিতার সক্ষমতা আরও কমে যাবে, বিশেষ করে বাংলাদেশ যখন কম খরচে সুতি পোশাক সরবরাহ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছাকাছি হওয়ায় মেক্সিকো কিছুটা সুবিধা পেলেও শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এটি পুরো বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এই পণ্যের অন্যতম উৎপাদক দেশ ভিয়েতনাম বাজার সম্প্রসারণে আগ্রহী হলেও উচ্চ মূল্যের চ্যালেঞ্জের কারণে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছে। ভিয়েতনামের আরসিএ ২ দশমিক ০৭, যা একটি মাঝারি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা নির্দেশ করে। তবে দেশটির ইউভিআর অত্যন্ত বেশি, প্রতি কেজিতে ব্যয় ২০ দশমিক ৬৩ ডলার, যা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। যদিও সরবরাহ চেইন দক্ষতার কারণে লজিস্টিকস পারফরম্যান্স সূচকে (এলপিআই) সূচকে ভিয়েতনাম কিছুটা এগিয়ে, তবে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধার ঘাটতি ও উচ্চ মূল্যের কারণে এটি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দুর্বল অবস্থানে আছে।

শক্তিশালী প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা থাকার পরও বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পাকিস্তান। পাকিস্তান উচ্চ আরসিএ, ৫৪ দশমিক ০৫ নিয়ে এই বাজারে শক্ত প্রতিযোগী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। দেশটির ইউভিআর প্রতি কেজিতে ১২ দশমিক ৮০ ডলার, যা বাংলাদেশের তুলনায় সামান্য কম, তবে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। কম খরচের কারণে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে।

চীন প্রতিযোগিতায় দুর্বল এবং শুল্ক চাপের কারণে আরও সংকটে পড়েছে। চীনের আরসিএ মাত্র শূন্য দশমিক ৪৬, যা দেখায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের প্রতিযোগিতা অনেকটাই দুর্বল। তবে চীনের ইউভিআর অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম, মাত্র ৯ দশমিক ২৩ ডলার প্রতি কেজি।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতির ফলে চীনের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা কমে যাচ্ছে। ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত চীনা রপ্তানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। ৪ মার্চের পর এই শুল্কহার ২০ শতাংশে উন্নীত হবে। ফলে চীনা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে এবং প্রতিযোগিতায় আরও পিছিয়ে পড়বে।

প্রথম দফায় ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে চীনের ইউভিআর বেড়ে প্রতি কেজিতে ১০ দশমিক ১৫ ডলারে দাঁড়াতে পারে, যার ফলে উৎপাদন ও রপ্তানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। পরের ধাপে ২০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হলে ইউভিআর আরও বেড়ে ১১ দশমিক ০৮ ডলার প্রতি কেজি বা তার বেশি হতে পারে। এর ফলে চীনের তুলনামূলক কম দামি পণ্যও উচ্চমূল্যের পণ্য হিসেবে বিবেচিত হবে, যা প্রতিযোগিতায় তাদের আরও পিছিয়ে দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ শীর্ষে আছে। কারণ, বাংলাদেশ একই সঙ্গে সবচেয়ে বেশি আরসিএ ১৩১ দশমিক ৯১ ও বলা চলে, সবচেয়ে (দুই একটি দেশ বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে) কম ইউভিআর নিশ্চিত করছে। কম খরচে উৎপাদন ও উচ্চ পরিমাণ রপ্তানি সক্ষমতা বাংলাদেশকে এই খাতে সবার থেকে এগিয়ে রেখেছে।

পাকিস্তান প্রতিযোগিতায় শক্ত অবস্থানে থাকলেও, বাংলাদেশের বাজার দখল করা কঠিন। ভিয়েতনাম ও মেক্সিকো উচ্চ ইউভিআর এবং দুর্বল আরসিএ-এর কারণে স্পষ্টতই পিছিয়ে। চলতি বছরের ২ এপ্রিল নতুন শুল্কনীতি ঘোষিত হলে মেক্সিকোর প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা আরও কমে যেতে পারে। চীন তার ঐতিহাসিক অবস্থান হারাচ্ছে। ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধির ফলে চীনা পণ্যগুলোর খরচ বেড়ে যাচ্ছে, ফলে এটি কম দামি পোশাক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারছে না।

নতুন মার্কিন শুল্ক কাঠামোর আলোকে বাংলাদেশই সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। কম উৎপাদন ব্যয়, উচ্চ প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে স্থিতিশীল রপ্তানি প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ আরও বড় বাজার শেয়ার দখল করতে সক্ষম হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সোনার দাম ভরিতে ১৪৭০ টাকা বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠক করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ৩ হাজার ৪৪২ টাকা এবং ১২ ডিসেম্বর ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫০ টাকা। এই দাম বাড়ানোর ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে এখন আবার দাম বাড়ানো হলো।

এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৪১১ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ২১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ২৪৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৬৩ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯০০ টাকা।

বিষয়:

দামসোনা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেভরনের সহায়তায় সিলেটে ৬০ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ফেরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
শেভরন-এসএমআইএল প্রকল্পে ৬০ প্রতিবন্ধীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

শেভরন বাংলাদেশের সহায়তায় বাস্তবায়িত এসএমআইএল (SMILE) প্রকল্পের আওতায় ‘রিস্টোরিং মোবিলিটি: আর্টিফিশিয়াল লিম্ব সাপোর্ট’ উদ্যোগের সমাপনী অনুষ্ঠান সম্প্রতি গ্র্যান্ড সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিলেট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৬০ শারীরিক প্রতিবন্ধী উপকারভোগীর মধ্যে কৃত্রিম অঙ্গ (প্রোস্থেটিক) ও অর্থোটিক ডিভাইস বিতরণ করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে পুনর্বাসন ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত থাকা এই উপকারভোগীরা কৃত্রিম অঙ্গ পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পেলেন। জালালাবাদ ডিজেবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের (জেডিআরসিএইচ) সহযোগিতায় এই উদ্যোগ পরিচালিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সমন্বয় ও মনিটরিং উইংয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট প্রধান এ কে এম আরিফ আক্তার, সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন এবং জেডিআরসিএইচ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান রোটারিয়ান পিপি ইঞ্জিনিয়ার শোয়াইব আহমেদ মতিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘কৃত্রিম অঙ্গ সহায়তা শুধু চিকিৎসা নয়, এটি প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনযাত্রায় মৌলিক পরিবর্তন আনে। শেভরন বাংলাদেশ, সুইসকন্টাক্ট ও জেডিআরসিএইচের যৌথ উদ্যোগ চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে এনে উপকারভোগীদের জীবনে নতুন আশার দ্বার খুলে দিয়েছে।’

শেভরন বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রেসিডেন্ট এরিক এম ওয়াকার বলেন, ‘বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এ ধরনের বিশেষায়িত পুনর্বাসন সেবার পর্যাপ্ত সুযোগ পায় না। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সেবা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। উপকারভোগীদের প্রতিটি অগ্রযাত্রাই একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ।’

সুইসকন্টাক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর হেলাল হোসেন বলেন, ‘এই প্রকল্প কেবল চলাচল সক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়নি; এটি উপকারভোগীদের কর্মজীবনে ফেরা, শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেছে—যা সমাজে অন্তর্ভুক্তি আরও সুদৃঢ় করেছে।’

করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পরিচালক মুহাম্মদ ইমরুল কবির বলেন, ‘শেভরন তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত জ্বালানি অংশীদার। আমাদের অঙ্গীকার কেবল জ্বালানি সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়। এসএমআইএল প্রকল্পের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা চলাচল সক্ষমতা ও মানবিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারে কাজ করছি। বাংলাদেশে আমাদের সামাজিক বিনিয়োগ কার্যক্রম জাতিসংঘ ঘোষিত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের মধ্যে ৯টির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে উপকারভোগীরা তাঁদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়ার ফলে তাঁরা আবার স্বাভাবিক চলাচল, আত্মনির্ভরতা ও আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন। এই ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রভাব পরিবার ও সমাজেও ছড়িয়ে পড়ছে।

গৃহস্থালি আয় স্থিতিশীল হওয়া ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির ফলে এর ইতিবাচক প্রভাব পরিবার ও সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে—যা কমিউনিটির স্থিতিশীলতা ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শেভরন বাংলাদেশ ও সুইসকন্টাক্ট এসএমআইএল প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই ও প্রভাবশালী উন্নয়ন উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে তারা অর্থোটিক ও প্রোস্থেটিক সহায়তা প্রয়োজন, এমন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন নিশ্চিত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আরও ১৪ কোটি ১৫ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলো থেকে অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করেছে। আজ সোমবার ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার (১৪১.৫ মিলিয়ন) কেনা হয়েছে। ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ দশমিক ২৯ থেকে ১২২ দশমিক ৩০ টাকা আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ দশমিক ৩০ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ১১ ডিসেম্বর ১৬টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলার (১৪৯ মিলিয়ন) কেনা হয়েছিল। এ সময় প্রতি ডলারের বিনিময়হার ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ১২২ টাকা ২৯ পয়সা। আর কাট-অফ রেট ছিল ১২২ টাকা ৯ পয়সা। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত নিলামপদ্ধতিতে মোট ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার (২.৮০ বিলিয়ন) সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র জানান, আজ ১৩টি ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ১৫ লাখ মার্কিন ডলার কেনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দিনে ১৭২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল সরকার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বাজার সহনীয় করতে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়িয়েছে সরকার। আজ সোমবার থেকে দৈনিক ১৭ হাজার ২৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে; যা আগে ছিল ৬ হাজার টন করে।

আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা যায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। তিন দিনের ব্যবধানে ১২০ টাকার পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৭ ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়। শুরুতে প্রতিদিন ৫০ জন আমদানিকারককে ৩০ টন করে মোট ১ হাজার ৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস পর এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

তবে এরপরও বাজারে দাম না কমলে আমদানির অনুমতির পরিমাণ বাড়ানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমদানি আরও বাড়ানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর থেকে প্রতিদিন ২০০ জনকে ৩০ টন করে ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়, যা আজ থেকে আরও বাড়িয়ে ১৭ হাজার ২৫০ টন করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর দুই দিনের জন্য প্রতিদিন ৫৭৫টি করে আইপি (আমদানি অনুমতি) ইস্যু করা হবে। প্রতিটি আইপিতে আগের ন্যায় সর্বোচ্চ ৩০ টন পেঁয়াজের অনুমোদন দেওয়া হবে। আবেদনের বিষয় আগের ন্যায় বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গত ১ আগস্ট থেকে যেসব আমদানিকারক আমদানি অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন, তাঁরাই কেবল এই দুই দিন আবেদন পুনরায় দাখিল করতে পারবেন। একজন আমদানিকারক একবারের জন্য আবেদনের সুযোগ পাবেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংয়ের অতিরিক্ত উপপরিচালক (আমদানি) বনি আমিন খান বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর আজ আমরা ৫৭৫ জনকে আমদানির অনুমোদন দিয়েছি। অনুমোদন নিয়ে এ দিন আমদানিকারকেরা ঋণপত্র খুলতে পেরেছেন। যদিও দুই দিনের কথা বলা হয়েছে, তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে সময় আরও বাড়বে। এর আগে গত শনিবার থেকে প্রতিদিন ৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়ে আসছিলাম আমরা।’

দেশে সাধারণত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। সে হিসাবে যেদিন ঋণপত্র খোলেন, সেদিনই আমদানি করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মেডিকেলে চান্স না পেয়ে’ ৩৩ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের তারে শুয়ে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, দাবি স্বজনদের

সিঙ্গাপুর যাত্রার আগে হাদির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানাল মেডিকেল বোর্ড

তাইওয়ানে যুদ্ধে জড়ালে চীনের কাছে হারতে পারে যুক্তরাষ্ট্র— পেন্টাগনের গোপন নথি ফাঁস

হাদিকে নিয়ে সিঙ্গাপুরের পথে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত