Ajker Patrika

খাদ্য মজুতে টান, বাড়ছে ঝুঁকি

  • দৈনিক মজুত কমছে ১৫ হাজার টনের বেশি
  • দৈনিক সংগ্রহ মাত্র ১ হাজার ৭১৪ টন
  • ৫ দিনে সংগ্রহ হয়েছে ২৪ হাজার টন
  • চার মাসে মজুত কমেছে ৮ লাখ টন
রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ০১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে চাল ও গমের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে, একই সঙ্গে কমেছে খাদ্যশস্য আমদানি। ফলে সরকারি গুদামে খাদ্যের মজুত কমে আসছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের ধীরগতি এবং আমদানি কমায় দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না হলে বাজারে চালের দাম বাড়তে পারে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি গুদামে মজুত ছিল ১১ লাখ ৬৭ হাজার টন খাদ্যশস্য। কিন্তু ৩ ডিসেম্বর তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৯০ হাজার টনে। হিসাব অনুযায়ী, মাত্র পাঁচ দিনের ব্যবধানে গুদামে মজুত কমেছে ৭৭ হাজার টন। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার টনের বেশি খাদ্য মজুত কমছে। অথচ দৈনিক সংগ্রহ হচ্ছে মাত্র ১ হাজার ৭১৪ টন। বর্তমান মজুতের মধ্যে চাল রয়েছে ৬ দশমিক ৬৯ লাখ টন, গম ৪ দশমিক ২০ লাখ টন এবং ধান মাত্র ১ হাজার টন। অথচ চার মাস আগেও সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত ছিল প্রায় ১৮ লাখ টন, যা বর্তমানের প্রায় দ্বিগুণ। অর্থাৎ এই সময়ে সরকারি গুদামে খাদ্যের মজুত কমেছে ৮ লাখ টন।

অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে

চলতি আমন মৌসুমে ১০ লাখ টন ধান, চাল ও গম সংগ্রহের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। তবে ১৭ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিনে সরকারি গুদামে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২৪ হাজার টন, যা দৈনিক গড়ে ১ হাজার ৭১৪ টন। অথচ দৈনিক সংগ্রহ হওয়ার কথা ১১ হাজার টনের বেশি। এই ধীরগতির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও সংগ্রহের গতি কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে মন্ত্রণালয়ের সংগ্রহ বিভাগের কর্মকর্তারা তেমন কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তাঁরা সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

চাহিদার তুলনায় আমদানিতে ধস

দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতি মাসে গড়ে ৫ লাখ ৫২ হাজার টন খাদ্য আমদানি করা প্রয়োজন। তবে চলতি অর্থবছরে আমদানির গতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ৬৬ দশমিক ২৮ লাখ টন খাদ্য আমদানি হয়েছে, যার পুরোটাই গম। তবে চাল আমদানির হার খুব কম।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে সরকারিভাবে কোনো চাল আমদানি হয়নি, তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০ লাখ ৫৬ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছিল। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে আমদানি হয়েছে মাত্র ২২ লাখ ৬২ হাজার ২২০ টন খাদ্য, যা মোট চাহিদার ৩১ শতাংশ। এদিকে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি হয়েছে মাত্র ২৩ হাজার ৩১০ টন, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

বর্তমানে সরকারি মজুত যে পরিমাণে রয়েছে, তা কোনোভাবেই পর্যাপ্ত নয়। সরকারের উচিত দ্রুত আমন সংগ্রহের গতি বাড়ানো। কমপক্ষে ১৫ লাখ টন চাল সংগ্রহ করে মজুত করতে হবে। ড. জাহাঙ্গীর আলম খান, কৃষি অর্থনীতিবিদ

বিশ্লেষকেরা বলছেন, আমদানির এই ধীরগতির ফলে দেশে খাদ্য মজুতের ঘাটতি হতে পারে, যার প্রভাব বাজারে সরবরাহের চাপ বাড়াবে এবং উচ্চমূল্যস্ফীতি আরও তীব্র হতে পারে। খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী জুলাই নাগাদ সরকারি গুদামে ১১ লাখ টন খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সরকারের চাল আমদানি শুল্ক তুলে দেওয়ার পরও বেসরকারি আমদানিকারকদের অনীহা এবং বৈশ্বিক বাজারের উচ্চমূল্যের কারণে আমদানি আশানুরূপ হয়নি। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি, বিশেষ করে চালের আমদানি বাড়ানোর মাধ্যমে খাদ্য মজুতের ঘাটতি পূরণ করা।

কী করতে হবে

কৃষি অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, দেশে খাদ্যনিরাপত্তা জোরদার করতে হলে সারা বছর চালের মোট উৎপাদনের কমপক্ষে ১০ শতাংশ সরকারকে ক্রয়ের মাধ্যমে মজুত করতে হবে। সে হিসাবে দেশে সরকারি মজুত হওয়া উচিত ৪০ লাখ টনের বেশি। আর সব সময় চালের সরকারি মজুত থাকা দরকার সাড়ে ১২ লাখ টন। কারণ, দেশে প্রতি মাসে ২৫ লাখ টন চালের চাহিদা রয়েছে। সে হিসাবে কমপক্ষে ১৫ দিনের মজুত থাকলে খাদ্যনিরাপত্তা থাকে। বাজারে দাম বাড়লে এবং কোনো দুর্যোগ দেখা দিলে তা কাজে লাগাতে পারবে সরকার।

জানতে চাইলে কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমানে সরকারি মজুত যে পরিমাণে রয়েছে, তা কোনোভাবেই পর্যাপ্ত নয়। তিনি আরও বলেন, সরকারের উচিত দ্রুত আমন সংগ্রহের গতি বাড়ানো। কমপক্ষে ১৫ লাখ টন চাল সংগ্রহ করে মজুত করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সংকট মোকাবিলায় সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ধান-চাল সংগ্রহের গতি ত্বরান্বিত করতে হবে। বেসরকারি আমদানিকারকেরা সাড়া না দিলে সরকারকে জিটুজি ভিত্তিতে চাল আমদানি করতে হবে। যেকোনো আপৎকালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে গুদামে কমপক্ষে ১৫ দিনের খাদ্য মজুত রাখতে হবে। অন্যথায়, বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধি ও খাদ্যসংকটের ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে।

সরকারের আশ্বাস

খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমন মৌসুমে ফলন ভালো হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু

বন্ধ সব পোশাক কারখানা, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বন্ধ সব পোশাক কারখানা, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল বুধবার দেশের সব পোশাক কারখানা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাকমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। আজ মঙ্গলবার পোশাকমালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে জানাজার আগপর্যন্ত দেশের বিপণিবিতানগুলো বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি।

চিঠিতে বিজিএমইএ বলে, ‘দেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ও এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প কারখানায় আগামীকাল বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’

পৃথক বিবৃতিতে বিজিএমইএ বলেছে, বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত সব পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানে আগামীকাল এক দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দীনের স্বাক্ষর করা এক চিঠিতে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সারা দেশের বিপণিবিতান ও দোকানপাট বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়।

ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিজিএমইএ ছাড়াও শোক জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), টেক্সটাইল মিলের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।

এ ছাড়া শোক জানিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ), রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব), কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসসহ (বেসিস) আরও অনেক সংগঠন।

সংগঠনগুলো পৃথক বার্তায় বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। তারা খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত চেয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্য ধারণ করতে বলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল: আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।

দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।

এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরের খেজুর রস: লক্ষ্য ১২০ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন

জাহিদ হাসান, যশোর
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।

শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।

উৎপাদন ও বাজারের চিত্র

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।

গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ

যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।

ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।

উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।

কৃষি বিভাগের উদ্যোগ

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত