ফারুক মেহেদী, ঢাকা

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের সরকারি ভবনগুলোর সামনে প্রতিদিন বিকেলে মৌসুমি ফল বিক্রি করেন সুমন আহমেদ। তাঁর আয়ের প্রধান উৎস এটাই। জিনিসপত্রের দাম কত বাড়ল, সেই হিসাব তিনি না জানলেও বাজারে চাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গিয়ে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য নিয়েছিল সরকার। কিন্তু সেই লক্ষ্য ছাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি এখন আকাশচুম্বী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো–বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, গত জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ শতাংশ। অর্থাৎ যে পণ্যটি গত বছরের জানুয়ারিতে ১০০ টাকায় কেনা যেত। এই তথ্য যখন তার কাছে তুলে ধরা হল, হতাশ সুমন মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে চলে গেল। জিনিসপত্রের লাগামহীন দামে চাপে পিষ্ট হকার সুমনের মত অসংখ্য মানুষের হতাশা দীর্ঘশ্বাসে পরিণত হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি কমিয়ে রাখার কোনো কৌশলই ঠিকমত কাজ করছে না। বিবিএসের তথ্য–উপাত্ত বলছে, গত আগস্ট থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কখনই ৯ শতাংশের নিচে নামেনি। জানুয়ারিতে তা ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও তেমন একটা অগ্রগতি নেই। বিবিএসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর চূড়ান্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। করোনাকালীন মন্দার সময় বাদ দিলে গত ১৩ বছরের মধ্যে এ অর্জন সবচেয়ে কম। যদিও সরকার বলেছিল, এ প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার হবে সাড়ে ৭ শতাংশ।
ফলে দেখা যাচ্ছে, জিনিসপত্রের দাম সহনীয় পর্যায়ে রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি সরকারি–বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতির আকার বাড়ানো– প্রধান দুটি লক্ষ্যের কোনোটিই অর্জন করতে পারেনি সরকার। অর্থবছরের সময়ও চলে গেছে অনেকটা।
মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের বৃদ্ধির প্রভাব কী
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্প্রতি ঘোষিত মুদ্রানীতিতে সুদের হার বাড়িয়ে টাকার প্রবাহ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশ্বাস, এতে মানুষের হাতে নগদ টাকা কমে যাবে। ফলে, তারা খরচ কমিয়ে দেবে। এতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। কিন্তু গত এক মাসে মূল্যস্ফীতি উল্টো বেড়েছে। রমজান মাস সামনে রেখে চাল, তেল, চিনিসহ কয়েকটি পণ্যের শুল্ক কমিয়েছে সরকার। কিন্তু এরই মধ্যে প্রায় সব পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদ ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী মনে করেন, মুদ্রানীতির সনাতন কৌশলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কারণ, এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে খাদ্যবর্হিভূত পণ্যের দাম কমানো।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘খাদ্যপণ্যের দাম কমাতে হলে সরবরাহ বাড়াতে হবে। এখানে চালের দাম বাড়লেই সব পণ্যের দাম বাড়ে। সুদের হারের ওপর ভরসা করে বসে থাকলে কাজ হবে না। আর ব্যবসায়ীদের যখন খুশি দাম বাড়ানোর যে স্বেচ্ছাচারিতা– সেটা থামাতে হবে।’
সরকারের পদক্ষেপের যে প্রভাব প্রবৃদ্ধিতে
সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা নিয়ে সংশয়ের যেমন বাস্তবতা আছে, তেমনি তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও আঘাত হানতে পারে। টাকার প্রবাহ কমানোর ফলে ব্যবসায়ী–উদ্যোক্তারা ঠিকমত ঋণ পাচ্ছেন না। তারা নতুন বিনিয়োগে যেতে পারছেন না। এতে ব্যবসা সম্প্রসারণ বা নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমদানি ব্যাপক হারে কমে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য–উপাত্ত বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধেও (জুলাই-ডিসেম্বর) আমদানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে একই সময়ে তা ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছিল। অর্থনীতির স্থবিরতার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার বাড়ানোর কথা ভাবছে। জানুয়ারি-মার্চ সময়ে এলসি খোলার হার ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এরই মধ্যে দুর্বল কৌশলের নেতিবাচক প্রভাব জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে পড়তে শুরু করেছে। মানুষের কাজের সুযোগ কমছে। বেকার মানুষের লাইন ধীর্ঘ হচ্ছে। বিবিএসের সবশেষ তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে ২৩ লাখেরও বেশি মানুষ চাকুরি খুঁজছে।
অর্থনীতির গতি শ্লথ হওয়ায় বিনিয়োগের গতিও কম। ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ ৩৬ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট এফডিআই এসেছে ৯১৩ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া নিট বিনিয়োগ ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার থেকে ৬৭০ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
এমন পরিস্থিতির জন্য সময়োপযোগী ও বিনিয়োগবান্ধব মুদ্রানীতির অভাবকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরূপাক্ষ পাল। তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘খুবই বাজে মুদ্রনীতি’ গ্রহণ করেছে। ‘স্মার্ট’ নামক সুদের হার আরোপের কৌশল নিচ্ছে ‘আনস্মার্ট’ সময়ে। এগুলো সুফল দেবে না।
ড. বিরূপাক্ষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক সকল সংকট থেকে মুক্তি পাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক মুক্তির পথ খুঁজছে। দেশে নতুন ‘স্থিতিশীল সরকার’ এসেছে, এখন অর্থনীতিতে চাহিদা পূরণের সময়। অথচ উল্টো সুদের হার বাড়িয়ে দিয়ে হাত–পা গুটিয়ে বসে থাকছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে মোট আমদানির ৭৫ শতাংশই শিল্পের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও মধ্যবর্তী পণ্য, সেখানে সুদের হার বাড়ানো প্রবৃদ্ধিকে আটকে দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। জোর করে ডলারের দর ধরে রেখে হুন্ডিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সংকটটা এখন সর্দি হিসেবে আছে, এটা কিছুদিন পরে নিউমোনিয়ায় পরিণত হবে।’
স্লথ অর্থনীতি রাজস্বে যে প্রভাব ফেলছে
ব্যবসা–বাণিজ্যের গতি কমার ফলে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, রাজস্ব ঘাটতি ২৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
রাজস্ব খাতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমদানি কমার ফলে ব্যাংকের এলসি কমিশন থেকে রাজস্ব কমে গেছে। অথচ লক্ষ্যমাত্রা ধরার সময় রাজস্বের বড় উৎসই মনে করা হয়েছিল এলসি কমিশনকে। এলসি কমিশন কমা মানে তো ব্যাংকেরও ব্যবসা কমে যাওয়া। তাদের আয় কমা মানে, আমাদের রাজস্ব কমে যাওয়া। আর রাজস্ব কমলে, সরকারের ব্যয় কাটছাঁট করতে হয় অথবা ধার করতে হয়।’
রাজস্ব আয় কমার ফলে, সরকারের ধার বাড়ছে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না ঠিকমত। পরিকল্পনা কমিশনের সবশেষ তথ্য বলছে, ইতিহাসের সবচেয়ে কম এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে। এই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এর আগের কোনো অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এত কম এডিপি বাস্তবায়িত হয়নি। সামনে এডিপির বড় একটি অংক কাটছাঁট করতে হবে। আর এসবই জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার উপসর্গ।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের সরকারি ভবনগুলোর সামনে প্রতিদিন বিকেলে মৌসুমি ফল বিক্রি করেন সুমন আহমেদ। তাঁর আয়ের প্রধান উৎস এটাই। জিনিসপত্রের দাম কত বাড়ল, সেই হিসাব তিনি না জানলেও বাজারে চাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গিয়ে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশে বেঁধে রাখার লক্ষ্য নিয়েছিল সরকার। কিন্তু সেই লক্ষ্য ছাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি এখন আকাশচুম্বী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো–বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, গত জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ শতাংশ। অর্থাৎ যে পণ্যটি গত বছরের জানুয়ারিতে ১০০ টাকায় কেনা যেত। এই তথ্য যখন তার কাছে তুলে ধরা হল, হতাশ সুমন মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে চলে গেল। জিনিসপত্রের লাগামহীন দামে চাপে পিষ্ট হকার সুমনের মত অসংখ্য মানুষের হতাশা দীর্ঘশ্বাসে পরিণত হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি কমিয়ে রাখার কোনো কৌশলই ঠিকমত কাজ করছে না। বিবিএসের তথ্য–উপাত্ত বলছে, গত আগস্ট থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কখনই ৯ শতাংশের নিচে নামেনি। জানুয়ারিতে তা ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। এর মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
এদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও তেমন একটা অগ্রগতি নেই। বিবিএসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর চূড়ান্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। করোনাকালীন মন্দার সময় বাদ দিলে গত ১৩ বছরের মধ্যে এ অর্জন সবচেয়ে কম। যদিও সরকার বলেছিল, এ প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার হবে সাড়ে ৭ শতাংশ।
ফলে দেখা যাচ্ছে, জিনিসপত্রের দাম সহনীয় পর্যায়ে রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি সরকারি–বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতির আকার বাড়ানো– প্রধান দুটি লক্ষ্যের কোনোটিই অর্জন করতে পারেনি সরকার। অর্থবছরের সময়ও চলে গেছে অনেকটা।
মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের বৃদ্ধির প্রভাব কী
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্প্রতি ঘোষিত মুদ্রানীতিতে সুদের হার বাড়িয়ে টাকার প্রবাহ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশ্বাস, এতে মানুষের হাতে নগদ টাকা কমে যাবে। ফলে, তারা খরচ কমিয়ে দেবে। এতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। কিন্তু গত এক মাসে মূল্যস্ফীতি উল্টো বেড়েছে। রমজান মাস সামনে রেখে চাল, তেল, চিনিসহ কয়েকটি পণ্যের শুল্ক কমিয়েছে সরকার। কিন্তু এরই মধ্যে প্রায় সব পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদ ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী মনে করেন, মুদ্রানীতির সনাতন কৌশলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কারণ, এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে খাদ্যবর্হিভূত পণ্যের দাম কমানো।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘খাদ্যপণ্যের দাম কমাতে হলে সরবরাহ বাড়াতে হবে। এখানে চালের দাম বাড়লেই সব পণ্যের দাম বাড়ে। সুদের হারের ওপর ভরসা করে বসে থাকলে কাজ হবে না। আর ব্যবসায়ীদের যখন খুশি দাম বাড়ানোর যে স্বেচ্ছাচারিতা– সেটা থামাতে হবে।’
সরকারের পদক্ষেপের যে প্রভাব প্রবৃদ্ধিতে
সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা নিয়ে সংশয়ের যেমন বাস্তবতা আছে, তেমনি তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও আঘাত হানতে পারে। টাকার প্রবাহ কমানোর ফলে ব্যবসায়ী–উদ্যোক্তারা ঠিকমত ঋণ পাচ্ছেন না। তারা নতুন বিনিয়োগে যেতে পারছেন না। এতে ব্যবসা সম্প্রসারণ বা নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমদানি ব্যাপক হারে কমে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য–উপাত্ত বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধেও (জুলাই-ডিসেম্বর) আমদানি কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে একই সময়ে তা ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছিল। অর্থনীতির স্থবিরতার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার বাড়ানোর কথা ভাবছে। জানুয়ারি-মার্চ সময়ে এলসি খোলার হার ৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এরই মধ্যে দুর্বল কৌশলের নেতিবাচক প্রভাব জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে পড়তে শুরু করেছে। মানুষের কাজের সুযোগ কমছে। বেকার মানুষের লাইন ধীর্ঘ হচ্ছে। বিবিএসের সবশেষ তথ্য বলছে, দেশে বর্তমানে ২৩ লাখেরও বেশি মানুষ চাকুরি খুঁজছে।
অর্থনীতির গতি শ্লথ হওয়ায় বিনিয়োগের গতিও কম। ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ ৩৬ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট এফডিআই এসেছে ৯১৩ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া নিট বিনিয়োগ ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার থেকে ৬৭০ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
এমন পরিস্থিতির জন্য সময়োপযোগী ও বিনিয়োগবান্ধব মুদ্রানীতির অভাবকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বিরূপাক্ষ পাল। তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘খুবই বাজে মুদ্রনীতি’ গ্রহণ করেছে। ‘স্মার্ট’ নামক সুদের হার আরোপের কৌশল নিচ্ছে ‘আনস্মার্ট’ সময়ে। এগুলো সুফল দেবে না।
ড. বিরূপাক্ষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক সকল সংকট থেকে মুক্তি পাচ্ছে, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক মুক্তির পথ খুঁজছে। দেশে নতুন ‘স্থিতিশীল সরকার’ এসেছে, এখন অর্থনীতিতে চাহিদা পূরণের সময়। অথচ উল্টো সুদের হার বাড়িয়ে দিয়ে হাত–পা গুটিয়ে বসে থাকছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে মোট আমদানির ৭৫ শতাংশই শিল্পের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও মধ্যবর্তী পণ্য, সেখানে সুদের হার বাড়ানো প্রবৃদ্ধিকে আটকে দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। জোর করে ডলারের দর ধরে রেখে হুন্ডিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সংকটটা এখন সর্দি হিসেবে আছে, এটা কিছুদিন পরে নিউমোনিয়ায় পরিণত হবে।’
স্লথ অর্থনীতি রাজস্বে যে প্রভাব ফেলছে
ব্যবসা–বাণিজ্যের গতি কমার ফলে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, রাজস্ব ঘাটতি ২৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
রাজস্ব খাতের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমদানি কমার ফলে ব্যাংকের এলসি কমিশন থেকে রাজস্ব কমে গেছে। অথচ লক্ষ্যমাত্রা ধরার সময় রাজস্বের বড় উৎসই মনে করা হয়েছিল এলসি কমিশনকে। এলসি কমিশন কমা মানে তো ব্যাংকেরও ব্যবসা কমে যাওয়া। তাদের আয় কমা মানে, আমাদের রাজস্ব কমে যাওয়া। আর রাজস্ব কমলে, সরকারের ব্যয় কাটছাঁট করতে হয় অথবা ধার করতে হয়।’
রাজস্ব আয় কমার ফলে, সরকারের ধার বাড়ছে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না ঠিকমত। পরিকল্পনা কমিশনের সবশেষ তথ্য বলছে, ইতিহাসের সবচেয়ে কম এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে। এই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এর আগের কোনো অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এত কম এডিপি বাস্তবায়িত হয়নি। সামনে এডিপির বড় একটি অংক কাটছাঁট করতে হবে। আর এসবই জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার উপসর্গ।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৬ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি সরকারি–বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতির আকার বাড়ানোর লক্ষ্য ছিল সরকারের। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের অভাব ও উচ্চ সুদের হারের প্রভাবের সম্মিলিত ফসল হিসেবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও শ্লথ প্রবৃদ্ধির ফাঁদে আটকে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৬ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি সরকারি–বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতির আকার বাড়ানোর লক্ষ্য ছিল সরকারের। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের অভাব ও উচ্চ সুদের হারের প্রভাবের সম্মিলিত ফসল হিসেবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও শ্লথ প্রবৃদ্ধির ফাঁদে আটকে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি সরকারি–বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতির আকার বাড়ানোর লক্ষ্য ছিল সরকারের। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের অভাব ও উচ্চ সুদের হারের প্রভাবের সম্মিলিত ফসল হিসেবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও শ্লথ প্রবৃদ্ধির ফাঁদে আটকে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৬ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি সরকারি–বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতির আকার বাড়ানোর লক্ষ্য ছিল সরকারের। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগের অভাব ও উচ্চ সুদের হারের প্রভাবের সম্মিলিত ফসল হিসেবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও শ্লথ প্রবৃদ্ধির ফাঁদে আটকে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১০ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৬ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগে