Ajker Patrika

টাঙ্গাইলে বন ঘিরে ৩০৭ অবৈধ করাতকল

  • জেলার ৫ উপজেলায় বনভূমির পরিমাণ ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৬ একর।
  • প্রতিদিন বনের কাঠ চেরাই করা হচ্ছে; পাচার হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।
  • জরিমানা করলেও থেমে নেই অবৈধ করাতকলে কাঠ চেরাইয়ের কাজ।
আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৭: ৪৭
মুন্সিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে থাকা গাছ কাটছেন শ্রমিকেরা। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা
মুন্সিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে থাকা গাছ কাটছেন শ্রমিকেরা। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের মধুপুর, ঘাটাইল ও সখীপুরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার বনভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫০০ করাতকল। এর মধ্যে ৩ শতাধিক করাতকলই অবৈধ। এ সব করাতকলে প্রতিদিন বনের কাঠ চেরাই করা হচ্ছে। পরে সেগুলো পাচার করা হচ্ছে ঢাকা-গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। এদিকে কমছে বনের গাছ, কিছু কিছু এলাকায় গাছ কমে গিয়ে কৃষি ফসলের খেতে পরিণত হয়েছে বনভূমি।

বন বিভাগের হিসাবমতে, জেলায় ৪৭০টি করাতকল রয়েছে। এর মধ্যে ৩০৭টিই অবৈধ। জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগ অনুমোদনহীন করাতকল মালিকদের জরিমানা করলেও থেমে নেই অবৈধ করাতকলে কাঠ চেরাইয়ের কাজ।

জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ৫টি উপজেলায় বনভূমির পরিমাণ ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৬ একর। এসব বনাঞ্চল ঘিরেই গড়ে উঠেছে ৪৭০টি করাতকল। যার মধ্যে অবৈধ ৩০৭টি। ওই করাতকলগুলোতে প্রতিদিন অবৈধভাবে বনের কাঠ চেরাই করে ট্রাকে ভরে ঢাকা ও গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। বনাঞ্চলের গাছ কেটে পাচারের ফলে মধুপুর বনাঞ্চলসহ আশপাশের বনাঞ্চল অনেকটাই বৃক্ষশূন্য হয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, জেলার মধুপুরে সাড়ে ৪৫ হাজার একর বনাঞ্চলের মধ্যে ৩৫ হাজার একর বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়েছে। আনারস, কলা, ড্রাগনসহ নানা কৃষি ফসলের খেতে পরিণত হয়েছে বনভূমি। বাকি ১০ হাজার একরও ক্ষয়িষ্ণু। ঘাটাইল, সখীপুর বনাঞ্চলেও বনের ভেতরে গড়ে উঠেছে করাতকল। প্রতিদিন ওই করাতকলে বনজসম্পদ চেরাই ও পাচার হচ্ছে।

বন বিভাগের হিসাবমতে, মধুপুর উপজেলায় ৯০টি করাতকলের মধ্যে ৭৩টিরই লাইসেন্স নেই। সখীপুর বনাঞ্চলে অবৈধ ৪২টি করাতকল। এর মধ্যে বহেড়াতৈল রেঞ্জে ২৮, হাতিয়ায় ৭ ও বাঁশতৈল রেঞ্জে ৭টি। অন্যদিকে ঘাটাইলে ৭৭টি করাতকলের মধ্যে নিবন্ধন নেই ৫৯টির। পৌরসভা ও এর আশপাশের এলাকায় মাত্র ১৮টি করাতকল ছাড়া বাকিগুলো বনাঞ্চলের আশপাশে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের অসাধু ব্যক্তিরা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে করাতকলমালিকদের নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনার সুযোগ করে দেন। করাতকলগুলোতে বনাঞ্চলের কাঠ চেরাই করে প্রতিদিনই ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করেন ব্যবসায়ীরা।

অবৈধ করাতকলসংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় ট্রাকভর্তি চেরাই বা গোলাই কাঠ পাঠাতে আগের দিন রেকি করে নেন পাচারকারিরা। যে গন্তব্যে কাঠ যাবে, সেই গন্তব্যে যাওয়ার পথে দায়িত্বরত পুলিশ বা বনের টহল প্রদানকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের চাহিদামতো টাকা দিয়ে আসা হয়। তাঁরা টাকা গ্রহণের সময় একটি সাংকেতিক চিহ্ন দিয়ে দেন। পরদিন কাঠবোঝাই ট্রাক যাওয়ার সময় টহল পুলিশকে ওই সংকেত জানালেই ট্রাক ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যথা হলেই ট্রাক আটক করা হয়।

অবৈধ করাতকলমালিকদের দাবি, তাঁরা কয়েকবার লাইসেন্সের জন্য আবেদন দিয়েও বন বিভাগসহ ও সংশ্লিষ্টদের সাড়া পাচ্ছেন না।

মধুপুর পৌর শহরের স মিলমালিক আব্দুল বারেক বলেন, ‘আমরা নিয়ম মেনেই স মিলের ব্যবসা করতে চাই। আমরা নিয়ম অনুসারে আবেদন করেছি। আবেদনের সঙ্গে পরিবেশের ছাড়পত্র, ভূমির প্রত্যয়নপত্র প্রয়োজন হয়। কিন্তু বারবার ঘুরেও ওই ছাড়পত্র পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়েই আমরা লাইসেন্সের আবেদন করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লাইসেন্স দিলে সরকারও রাজস্ব পাবে। আমরাও নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারব।’

এ বিষয়ে পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) বিভাগীয় সমন্বয়কারী গৌতম চন্দ্র চন্দ বলেন, করাতকল বিধিমালা ২০১২ অনুযায়ী, সংরক্ষিত, রক্ষিত ও সরকারি বনভূমির সীমানা থেকে ১০ কিলোমিটারের (কিমি) মধ্যে করাতকল স্থাপন নিষিদ্ধ। এই বিধি লঙ্ঘন করলে জেল-জরিমানার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু টাঙ্গাইলের বেশির ভাগ করাতকলই অবৈধ। এগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে উচ্ছেদ করে মালপত্র জব্দ না করলে বনাঞ্চল সম্পূর্ণ বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়বে। পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাবে।

মধুপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আঞ্জুম পিয়া বলেন, মধুপুরে অবৈধ করাতকলগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি পৌর এলাকার চারটি অবৈধ করাতকলমালিককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, করাতকল স্থাপনের নির্দিষ্ট বিধিমালা রয়েছে। করাতকল অনুমোদনের জন্য পরিবেশের ছাড়পত্র, ভূমির প্রত্যয়নপত্রসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি যুক্ত করে আবেদন করতে হয়। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আবেদন পর্যালোচনার ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে ওই করাতকল অবশ্যই বনাঞ্চলের সীমানার ১০ কিলোমিটার দূরে হতে হবে। অবৈধভাবে স্থাপিত করাতকল উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়ে থাকে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ১৬টি করাতকল উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা
হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।

গত কয়েক দিন পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৩ ডিগ্রির ঘরে থাকছে। ফলে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। আজ শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশায় ঢাকা চারদিক। সুনসান নীরবতায় গরম কাপড় পরে প্রয়োজনীয় কাজে বের হয়েছে লোকজন। কেউ কেউ মাঠে করছেন হালচাষ। এরই মধ্যে পূর্ব আকাশে সূর্য দেখা দিলেও নেই প্রখর রোদ।

পঞ্চগড় সদর উপজেলার তালমা এলাকার গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, ‘সকাল-বিকেল খুব ঠান্ডা পড়ে। ঘর থেকে বের হলেই যেন বাতাসে শরীর কেঁপে ওঠে। বাচ্চাদের নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ঠান্ডা লাগলে হাসপাতালে যেতে হয় বারবার।’

একই এলাকার দিনমজুর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শীতে কাজ পাওয়া কষ্ট হয়ে গেছে। সকালে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না, হাত-পা জমে থাকে। ঠান্ডায় শরীর ঠিকমতো সাড়া না দেওয়ায় কাজের গতি কমে গেছে।’

স্কুলছাত্রী তানজিলা আক্তার বলে, ‘সকালে কলেজ ও প্রাইভেটে যেতে খুব সমস্যা হয়। ঠান্ডা এমন যে হাতে গ্লাভস ছাড়া সাইকেল চালানো যায় না। শীত যেমন বাড়ছে, তেমনি অসুস্থ হওয়ার ভয়ও বাড়ছে।’

জেলার আশপাশ এলাকায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হঠাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনজনিত অ্যালার্জিতে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার এই বড় পার্থক্য শরীরের ওপর চাপ ফেলে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গলায় রশি পেঁচানো নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ডোবায় নছিমনচালকের লাশ পাওয়া যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ওমর আলী শেখ (৫০) নামের এক নছিমনচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে মোবারকগঞ্জ চিনিকল ফার্মের সড়কের ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণ, নছিমনচালককে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত ওমর আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার হাটবেলাটপুর গ্রামের ছাত্তার শেখের ছেলে।

বারোবাজারের ইসমাইল নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বারোবাজারে শ্রমিকের কাজ করতাম। কিছুদিন আগে ওমর আলী নছিমন কিনেছে। সে বারোবাজারের মাছের ভাড়া টানে। সকালে তার মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ হচ্ছিল না। পরে জানতে পারি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির গলায় ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ রয়েছে। এ ছাড়া রশি দিয়ে তাঁর গলা পেঁচানো। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত