Ajker Patrika

অনলাইনে প্রেম, ভারতীয় যুবক রংপুরে এসে জানলেন প্রেমিকা বিবাহিত

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি
সোহেল আলী।  ছবি: সংগৃহীত
সোহেল আলী। ছবি: সংগৃহীত

প্রেমের টানে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে আসেন সোহেল আলী নামের কলকাতার এক বিবাহিত যুবক। বাংলদেশে এসে জানতে পারেন, তাঁর প্রেমিকাও বিবাহিত। প্রেমিকার বাড়িতে স্থানীয় লোকজনের হাতে ধরা পড়ায় ঘটে বিপত্তি। পরে রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানা-পুলিশ ভারতীয় নাগরিক সোহেল আলীকে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠায়।

আজ সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে লালমনিরহাট বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল রোববার রাতে ভারতীয় নাগরিক সোহেল আলীকে (৩২) ইমিগ্রেশনে নিয়ে আসে রংপুর মেট্রোপলিটন হারাগাছ থানা-পুলিশ। আজ সকালে ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিক সোহেল বর্ডার পার হয়ে চেংরাবান্ধা ইমিগ্রেশনে চলে যান। তিনি বলেন, ভারতীয় নাগরিক সোহেলের বিষয়ে হারাগাছ থানা-পুলিশ বলতে পারবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর বিভাগ) মারুফ আহমেদ জানান, ভারতের কলকাতার মুর্শিদাবাদের কবলদিতলা গ্রামের মরজেম মণ্ডলের ছেলে সোহেল আলীর সঙ্গে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকার এক প্রবাসীর স্ত্রীর অনলাইনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক বছরের বেশি সময় ধরে অনলাইনে তাঁদের কথাবার্তা হয়।

গত শুক্রবার (৪ জুলাই) ভারতীয় নাগরিক সোহেল পাসপোর্ট ও ভিসার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করে রাজশাহীর পবা উপজেলায় মামাতো ভাই রফিকের বাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে গত শনিবার রাত ১১টার দিকে সোহেল রংপুরের হারাগাছায় প্রেমিকার বাড়িতে দেখা করতে আসেন।

স্থানীয় লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে সেনাবাহিনীকে জানান। খবর পেয়ে রাতেই ওই নারীর বাড়ি থেকে ভারতীয় নাগরিক সোহেলকে আটক করে সেনাবাহিনী।

পরে গতকাল হারাগাছ থানা পুলিশের কাছে ভারতীয় নাগরিক সোহেলকে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী। খবর পেয়ে রাতে হারাগাছ থানায় সোহেলের খোঁজ নিতে আসেন রাজশাহী পবার উপজেলার স্বজনেরা। রাজশাহী পবার ডাঙ্গিপাড়া গ্রামের রফিক মিয়া জানান, ভারতীয় নাগরিক সোহেল তাঁর মামাতো ভাই।

গত শনিবার তিনি রাজশাহীতে যাওয়ার কথা বলে বের হন এবং রাতে মোবাইলে জানান রংপুরে আছেন। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে জানতে পারেন, সোহেল পরকীয়া করতে গিয়ে প্রেমিকার বাড়িতে ধরা পড়েছেন।

রফিক মিয়া বলেন, সোহেল বিবাহিত এবং তিনি ভারতে প্রাইভেট কারচালক। বাংলাদেশে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে পরকীয় করাটা ঠিক হয়নি। তিনি যেমন কাজ করেছেন, তেমন ফল পেয়েছেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর বিভাগ) মারুফ আহমেদ বলেন, ওই নারী থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে জানিয়েছেন আটক ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে তাঁর কোনো অভিযোগ নেই। পরে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে গতকাল রাতে থানা-পুলিশের হেফাজতে ভারতীয় নাগরিক সোহেলকে বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে তিনি নিজ দেশে চলে গেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারকালে টেকনাফে ১৭ জনকে উদ্ধার

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
উদ্ধারকৃত ১৭ জন। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধারকৃত ১৭ জন। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের সময় মানবপাচার চক্রের হাত থেকে ১৭ জনকে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

টেকনাফ–২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যেম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, গত শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন রাজারছড়া এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি। এ সময় একটি ট্রলারকে ঘিরে ফেলে বিজিবি সদস্যরা। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা রাতের অন্ধকারে সাঁতরে পালিয়ে যায়। পরে ট্রলারটি তল্লাশি করে ৭ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৬ শিশুসহ মোট ১৭ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, উন্নত জীবন, উচ্চ বেতনের চাকরি ও স্বল্প খরচে বিদেশে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মানব পাচারকারী চক্রটি তাঁদের সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। উদ্ধারকৃত ব্যক্তিদেরকে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে মা-ছেলের মৃত্যু

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার সোনাতলায় ট্রেনে কাটা পড়ে মা-ছেলে মারা গেছেন। এ সময় তাঁদেরকে উদ্ধার করতে গিয়ে আরও এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন রনি বেগম (৩০) ও তাঁর ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১০)। তাঁরা পার্শ্ববর্তী গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দৌহাইল গ্রামের বাসিন্দা। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাতলা রেলস্টেশনের অদূরে ছয়ঘড়িয়াপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রনি বেগম তাঁর ছেলেকে নিয়ে সোনাতলা বাজারে কোচিং সেন্টারে যাচ্ছিলেন। রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটার সময় লালমনিরহাটগামী পদ্মরাগ ট্রেন দেখে রনি বেগম আত্মহত্যার জন্য ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ছেলে ইয়াসিন আরাফাত তার মাকে উদ্ধার করতে গেলে মা-ছেলে দুজনেই ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন। এই দৃশ্য দেখে পথচারী তাজুল ইসলাম (৬৫) মা-ছেলেকে উদ্ধার করতে গেলে তিনিও ট্রেনের ধাক্কায় আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে।

পুলিশ জানায়, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, রনি বেগম মানসিক রোগী ছিলেন। তিনি এর আগেও বাড়িতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন জানান, মা-ছেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চকরিয়ায় ডিম বিক্রেতার পাথর নিক্ষেপে ভাঙল ট্রেনের কাচ

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি   
পাথর নিক্ষেপের ফলে ট্রেনের খাবারের কোচের জানালার কাচ ভেঙে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাথর নিক্ষেপের ফলে ট্রেনের খাবারের কোচের জানালার কাচ ভেঙে যায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের চকরিয়া স্টেশনে সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চকরিয়া রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের এক যাত্রীকে লক্ষ্য করে এক তরুণ ডিম বিক্রেতা পাথর নিক্ষেপ করেন। এতে ট্রেনের খাবারের কোচের জানালার কাচ ভেঙে যায়।

চকরিয়া রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা সৈকত এক্সপ্রেস ট্রেনটি চকরিয়া রেলস্টেশনে পৌঁছায় শনিবার রাত পৌনে ১১টায়। এ সময় একজন ভাসমান ডিম বিক্রেতা ট্রেনে ডিম বিক্রি করছিলেন। একজন যাত্রী ওই বগিতে ডিম বিক্রেতাকে যেতে নিষেধ করেন। এতে ডিম বিক্রেতার সঙ্গে ওই যাত্রীর কথা-কাটাকাটি হয়।

একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ট্রেনের অন্য যাত্রীরা এগিয়ে এলে ডিম বিক্রেতা চলে যান। এরপর ট্রেন চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিলে ডিম বিক্রেতা বগি লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মারেন। পাথরটি ট্রেনের খাবারের কোচের জানালায় লাগলে কাচ ভেঙে যায়। এতে খাবারের কোচের একজন সহকারী সামান্য আহত হন।

এ ব্যাপারে চকরিয়া রেলস্টেশনের ইনচার্জ মো. ফরহাদ বিন জাফর চৌধুরী বলেন, সৈকত এক্সপ্রেস চকরিয়া স্টেশনে পৌঁছানোর পর এক যাত্রী ডিম বিক্রেতাকে বগিতে যেতে বারণ করেন। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যাত্রীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার সময় ওই ডিম বিক্রেতা বগিতে পাথর ছুড়ে মারেন, সেটি লেগে খাবারের কোচের জানালার কাচ ভেঙে যায়।

ফরহাদ আরও বলেন, এই ঘটনার খবর পাওয়ার পর স্টেশনের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখে পাথর নিক্ষেপকারী ওই ডিম বিক্রেতাকে শনাক্ত করা হয়। তাঁর নাম মনসুর আলম। তাঁর বাড়ি সাহারবিল আব্দুল জব্বার সিকদারপাড়া গ্রামে। এ বিষয়ে রেল প্রশাসন ও রেল পুলিশকে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষ: ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চাঁদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় মেঘনা নদীতে দুই লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত ১১টায় বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর নদীবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) বাবু লাল বৈদ্য বাদী হয়ে হাইমচর থানায় এই মামলা করেন। এতে ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অন্য ১০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি।

মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন মো. ফিরোজ খান (৫৩), মো. কামাল হোসেন (৫৫), মো. মনিরুল ইসলাম (৪৩), মো. সুলতান খান (৪৫), মো. মিন্টু (২৮), মো. সোহেল (৪০), মহিন হাওলাদার (২৫) ও মো. মনিরুজ্জামান (৪০)। এই আটজন এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের কর্মচারী। মামলায় আরও ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এদিকে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের চার কর্মচারী মিন্টু, সোহেল, মহিন হাওলাদার ও মনিরুজ্জামানকে চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হাসান বলেন, বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর নদীবন্দরের পক্ষে দায়ের করা মামলার তদন্ত ও পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করবে নৌ পুলিশ।

নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের গ্রেপ্তার চার আসামিকে ঝালকাঠি থেকে গতকাল চাঁদপুর নৌ থানায় আনা হয়। আজ তাদেরকে চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষে চার যাত্রী নিহত এবং আহত হয় বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত