Ajker Patrika

‘১২ বছর হয়ে গেল, আর কত অপেক্ষা’, ফেলানীর মায়ের আহাজারি

কুড়িগ্রাম ও নাগেশ্বরী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮: ৪৯
‘১২ বছর হয়ে গেল, আর কত অপেক্ষা’, ফেলানীর মায়ের আহাজারি

‘আমার মাইয়াডারে গুলি কইরা বিএসএফ পাখির মতো মাইরা কাঁটাতারে ঝুলাইয়া রাইখছে। মাইয়াডার কত রক্ত যে মাটিত পড়ছে, তার কোনো কিনারা নাই। ১২ বছর হইয়া গেল, তারও বিচার পাইলাম না। বিচারের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে।’ শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সীমান্তে নিহত কিশোরী ফেলানীর মা জাহানারা বেগম। 

কাল ৭ জানুয়ারি ফেলানী হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু কান্না থামেনি মা জাহানারা বেগমের। মাঝেমধ্যেই মেয়ে হারানোর স্মৃতি তাঁকে তাড়া করে, তখন শুধু নীরবে কাঁদেন। এই দুঃসহ স্মৃতির ভার আর তিনি বইতে পারছেন না। প্রতিবছরের এ সময় সেই কষ্ট আরও বেড়ে যায়। কারণ, এ সময় সংবাদকর্মীরা ভিড় করেন বাড়িতে। তাঁদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। স্মৃতি খুঁড়ে বেদনা জাগান তাঁরা। কিন্তু ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচার কবে হবে—সেই উত্তর পান না তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছা, এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দেখে যাওয়া। 

বিলম্বিত বিচারে হতাশ ক্ষুব্ধ ফেলানীর বাবা–মা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বিচার করতে আর কত দিন লাগবে? ফেলানী হত্যার পর সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠন খোঁজ নিলেও এখন আর কেউ খোঁজ নেয় না। আমার অন্য ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুব বিপদে আছি। পরিবারে কারও চাকরির ব্যবস্থা করলে দুবেলা খেয়ে-পরে বাঁচতে পারতাম।’

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে বাড়ি হলেও জীবিকার প্রয়োজনে ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতে বঙ্গাইগাঁও গ্রামে। দেশে ফেলানীর বিয়ে দেবেন বলে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে মেয়েকে নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে রওনা দেন নূরুল ইসলাম। ৭ জানুয়ারি ভোরে ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের ওপর দিয়ে মই বেয়ে পার হওয়ার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ছোড়া গুলি লাগে ফেলানীর শরীরে। গুলিবিদ্ধ ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলে ছটফট করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নিথর দেহ কাঁটাতারের ওপর ঝুলে থাকে সাড়ে চার ঘণ্টা। ফেলানীর ঝুলন্ত মরদেহের ছবি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ফেলানী হত্যার বিচার এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারতের ওপর চাপ বাড়ে। 

ফেলানীর কবরের ফলক দেখাচ্ছে মা জাহানারা। ছবি: আজকের পত্রিকাএর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফের বিশেষ আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেন বিএসএফের বিশেষ আদালত। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনর্বিচারের দাবি জানান ফেলানীর বাবা। ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত আবারও আত্মস্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেন। রায়ের পরে একই বছরের ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট করেন। ওই বছরের ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬-১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি। এরপর ২০১৯-২০ সালে কয়েকবার শুনানির তারিখ ধার্য হলেও এখন পর্যন্ত তা সম্পন্ন হয়নি। 

কাঁটাতারে দীর্ঘ সময় ঝুলে ছিল ফেলানীর মরদেহ। ছবি: আজকের পত্রিকাফেলানী হত্যাকাণ্ডে তাঁর পরিবারকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি মামলার প্রয়োজনে একাধিকবার ভারতে গেছেন কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও মানবাধিকারকর্মী এস এম আব্রাহাম লিংকন। এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে আব্রাহাম লিংকন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে করা রিটটি নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। প্রত্যাশা করছি, ভারতের আদালত দ্রুত রিট আবেদনটির শুনানি কার্যতালিকায় নিয়ে আসবেন এবং একটি ইতিবাচক রায় দেবেন।’ 

ফেলানীর কবর। ছবি: আজকের পত্রিকাতিনি আরও বলেন, ‘ভারতের উচ্চ আদালতে আমরা বৃহত্তর স্বার্থে রিট আবেদন করেছি। শান্তিপূর্ণ সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ পারিপার্শ্বিক অনেক বিষয় এখানে জড়িত রয়েছে। ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের পাশাপাশি আমাদের প্রত্যাশা, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নেমে আসুক। সীমান্তে যেন আর কোনো নিরপরাধ মানুষের প্রাণ না ঝরে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির স্মরণে নলছিটিতে অর্ধবেলা দোকানপাট বন্ধ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি
নলছিটিতে বন্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটিতে বন্ধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় তাঁর নিজ এলাকা ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলাজুড়ে চলছে শোকের মাতম। পরিবার ও এলাকাবাসীর কান্না ও আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। অল্প বয়সে শরিফ ওসমান হাদির এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনেরা।

শরিফ ওসমান হাদির স্মরণে আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নলছিটি উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে উপজেলার সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। পাশাপাশি সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

এই উপলক্ষে সকালে নলছিটি উপজেলা ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে শহরে মাইকিং করা হয়।

নলছিটি পৌর বস্ত্র ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি নেওয়াজ হোসাইন বলেন, নলছিটি উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে সব ব্যবসায়ীরা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির প্রতি সম্মান জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেছেন। তিনি আরও বলেন, জাতীয় বীর শরিফ ওসমান হাদির পরিচিতি ও সুখ্যাতি এখন আর শুধু নলছিটিতে সীমাবদ্ধ নয়, তা সারা দেশে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ী শাহাদাত ফকির, রফিকুল ইসলাম ও জিয়াউল কবীর মিঠু বলেন, ‘শরিফ ওসমান হাদি একজন জাতীয় বীর। তাঁর জন্মভূমি নলছিটি হওয়ায় আমরা গর্বিত। তাঁর স্মরণে ব্যবসায়ী সমিতির এই উদ্যোগকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, চার দম্পতি ও ১ বৃদ্ধা আটক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয়রা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার জাবাখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত গোলাম হোসেন (৬০) উপজেলার জাবাখালী গ্রামের মৃত হামিজ উদ্দীন মোড়লের ছেলে। আটক ব্যক্তিরা হলেন জাবাখালী গ্রামের সেলিম মোড়ল (৫০), সাইফুল মোড়ল (৩৫), ফারুক মোড়ল (৩২), রেজাউল মোড়ল (৪০), রেজাউলের স্ত্রী মাছুমা বেগম (৩৫), সেলিম মোড়লের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০), সাইফুল মোড়লের স্ত্রী মাহফুজা বেগম (৩০), ফারুক মোড়লের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৩০) ও এমান আলীর স্ত্রী সফুরা বেগম (৬৫)। আটকের পর উত্তেজিত জনতা তাঁদের ঘরবাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গোলাম হোসেনের ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বাড়ির সামনে চলাচলের পথের অনেকাংশ দখল করে রাখায় প্রতিবেশী রেজাউল মোড়ল, সাইফুল মোড়লসহ অন্যদের সঙ্গে গোলাম হোসেনের বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। পরে গোলাম হোসেন সাতক্ষীরা আদালতে মামলা করেন। মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হওয়ায় প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শনিবার সকালে বাড়ির সামনে কাজ করছিলেন গোলাম হোসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে প্রতিপক্ষরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গোলাম হোসেনকে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে শ্যামনগর হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, পথের জমি নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি। শ্যামনগর থানায় একটি হত্যা মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হত্যাসহ ১১ মামলার আসামি যশোরের

যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা ‘টাক’ মিলন ঢাকায় গ্রেপ্তার

­যশোর প্রতিনিধি
যশোরে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলন। ছবি: সংগৃহীত
যশোরে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলন। ছবি: সংগৃহীত

যশোর যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে ‘টাক’ মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর রামপুরা থেকে যশোর ডিবির একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ বলছে, মিলন যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ১১টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

আজ শনিবার যশোর ডিবি বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায়। বিকেলে পুলিশ মিলনকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে মিলন যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে শহরে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মিলন আত্মগোপনে ছিলেন।

যশোর ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মিলনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ রয়েছে। ডিবির একটি দল মিলনের অবস্থান শনাক্ত করে রাজধানীর রামপুরা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে আদালতে হাজির করলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

ডিবি ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে দুবাই থেকে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দেশে ফেরার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এরপর তিনি জামিনে বের হন। ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মদ্যপ অবস্থায় তিনজন সহযোগীসহ ফের গ্রেপ্তার হয়ে আবারও কারাগার থেকে জামিনে বের হন।

মিলনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম সোহাগকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা মামলা রয়েছে। এ ছাড়া তিনি ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রাতে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের তদন্তে তাঁর নাম আসে।

পুলিশ জানিয়েছে, যশোর শহরের পালবাড়ি মোড়ে রয়েল কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ক্যাসিনোর (জুয়া) কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে মিলনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের বাড়িতে অন্তত ১০ বার ককটেল হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মিলনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দলটির নেতাদের অভিযোগ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম ইনকিলাব মঞ্চের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০৭
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শরিফ ওসমান হাদির জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শরিফ ওসমান হাদির জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির খুনিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা জানতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি। তা না হলে পদত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের।

আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শরিফ ওসমান হাদির জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এদিকে, ওসমান হাদির দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর আজ বিকেলে শাহবাগে জড়ো হতে থাকে ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ছাত্র-জনতা। পরে বিকেল ৫টার দিকে শাহবাগেও একই দাবি জানান আবদুল্লাহ আল জাবের।

সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব বলেন, ‘খুনি, খুনের পরিকল্পনাকারী, সহায়তাকারী এবং পুরো চক্রকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং সহকারী উপদেষ্টা (প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী) খোদা বখস চৌধুরী জনতার সম্মুখে এসে এই খুনের ব্যাপারে গত এক সপ্তাহে তাঁরা কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা জনসম্মুখে জানাতে হবে।’

জানাজার আগে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব বলেন, ‘যদি তাঁরা জানাতে না পারেন, তবে তাঁদের পদত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা ইনকিলাব মঞ্চ কোনোভাবেই ওসমান হাদির রক্ত বৃথা যেতে দেব না।’

ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, ‘আমার ভাইয়ের রক্তের বদলা নেওয়ার জন্য এ জানাজায় দাঁড়িয়েছি। শরিফ ওসমান হাদিকে এক সপ্তাহ আগে গুলি করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত তার খুনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কি খুনিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আপনাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে? তারা (সরকার) কি আমাদের জানিয়েছে খুনি কোন জায়গায় রয়েছে?’ এ সময় উপস্থিত জনতা না বলে চিৎকার করেন।

জাবের বলেন, ‘এখানে খুনি একজন নয়, পুরো একটি খুনি চক্র কাজ করেছে। খুনি, খুনের পরিকল্পনাকারী, খুনের সহায়তাকারী এবং পুরো খুনি চক্রকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’

জাবের বলেন, সিভিল, মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা আওয়ামী লীগের দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে।

জাবের বলেন, এই রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে শরিফ ওসমান হাদির পরিবারের পাঁচ সদস্যদের (ভাই ও বোন) যদি রক্ত লাগে তাঁরা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। তবুও এই খুনিদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

কারও প্রচারণায় পড়ে সহিংসতায় না জড়ানোর আহ্বান জানান ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানাব কখন, কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ময়মনসিংহে পিটিয়ে হত্যা: র‍্যাবের অভিযানে আটক ৭

বাম, শাহবাগী, ছায়ানট, উদীচীকে তছনছ করে দিতে হবে: জাবি ছাত্রশিবির সেক্রেটারি

ওসমান হাদির জানাজা: ১০০০ বডি ওর্ন ক্যামেরা পরবেন পুলিশ সদস্যরা

বিএনপি নেতার ঘরে তালা মেরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু, দগ্ধ ৩

মাগুরায় বিটিভির মহাপরিচালক ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জোহার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত