Ajker Patrika

শস্য সংগ্রহের বস্তাতেই ঠিকাদার-কর্মকর্তার ‘ভূত’

  • ৭ লাখ বস্তা সরবরাহের কথা, সময় শেষ। এ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ২ লাখ।
  • বস্তার যে ওজন হওয়ার কথা, তার চেয়ে ৪০-৫০ গ্রাম কম ওজনের বস্তা দেওয়া হয়েছে।
  • নতুন দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যবহৃত এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের সিলযুক্ত বস্তা সরবরাহ।
  • তদন্ত কমিটি হয়েছে। সেই কমিটি প্রতিবেদন দিচ্ছে না। মিথ্যা প্রতিবেদন দিতে চাপ।
রিমন রহমান, রাজশাহী 
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ১১
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অনিয়ম এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিপাকে পড়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। ফসল সংগ্রহের লক্ষ্যে সাত লাখ বস্তা সরবরাহের জন্য রাজশাহী বিভাগের সঙ্গে যে দুটি প্রতিষ্ঠান চুক্তি করেছে, তারা বস্তা সরবরাহ করছে না। এ পর্যন্ত যে দুই লাখ বস্তা সরবরাহ করেছে, সেগুলো নিম্নমানের। এ ব্যাপারে যে তদন্ত হয়েছে, সেই কমিটি প্রতিবেদন দিচ্ছে না।

খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলেছে, নিম্নমানের খালি বস্তা সরবরাহ এবং গ্রহণ করার ব্যাপারে খাদ্য বিভাগ ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের একটি ‘দুষ্টচক্র’ কাজ করছে। ফলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আসছে না।

খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ফসল সংগ্রহের লক্ষ্যে ৩০ কেজি ধারণক্ষমতার এক লাখ পিস বস্তা সরবরাহের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সিয়াম টেক্সটাইল অ্যান্ড জুট। আর ছয় লাখ বস্তা সরবরাহের কার্যাদেশ পায় মেসার্স হারুন অ্যান্ড সন্স নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান। অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, মেসার্স হারুন অ্যান্ড সন্সের রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুর খাদ্যগুদামে ৫০ হাজার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা খাদ্যগুদামে ২ লাখ ৫০ হাজার, রহনপুর খাদ্যগুদামে ১ লাখ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর খাদ্যগুদামে ২ লাখ খালি বস্তা সরবরাহ করবে। শর্ত অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে এক লাখ পিস বস্তা সরবরাহ করেছে। তবে এই বস্তাও ত্রুটিপূর্ণ। যে ওজনের বস্তা চাওয়া হয়েছিল, তার চেয়ে ৪০ গ্রাম কম ওজনের বস্তা সরবরাহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া চুক্তিপত্র পরিপন্থী বেলবিহীন লুজ অবস্থায় নিম্নমানের বস্তা সরবরাহ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বস্তাগুলো কর্তৃপক্ষ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর খাদ্যগুদামে সরবরাহ করা এক লাখ বস্তার প্রায় অধিকাংশই নিম্নমানের এবং কম ওজনের হওয়ায় কমিটির সদস্য সংশ্লিষ্ট প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর করেননি। বস্তা গ্রহণ কমিটির সদস্য গোমস্তাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, তিনি বাইরে ছিলেন। বস্তা তাঁকে না দেখিয়েই সই করার জন্য চাপাচাপি করা হচ্ছিল। তবে তিনি না দেখে সই করেননি।

এদিকে ২৯ ডিসেম্বরের গোদাগাড়ী উপজেলার খেতুর খাদ্যগুদামে ৫০ হাজার বস্তা দেওয়ার কথা ছিল। এই খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হাসান গত সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁর গুদামে হারুন অ্যান্ড সন্সের ৩০ কেজি ধারণক্ষম ৫০ হাজার বস্তা দেওয়ার কথা ছিল। এখ পর্যন্ত সেই বস্তা সরবরাহ করা হয়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা খাদ্যগুদাম প্রায় দুই মাস আগে মেসার্স সিয়াম টেক্সাইল অ্যান্ড জুট থেকে এক লাখ পিস খালি বস্তা গ্রহণ করে। নির্দেশ অনুসারে সেখান থেকে ২৪ হাজার পিস বস্তা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর খাদ্যগুদামে পাঠানো হয়। এরপর ধরা পড়ে, বস্তাগুলো নিম্নমানের। বস্তার ওজন হওয়ার কথা ছিল ৩৩০ গ্রাম, তবে সরবরাহ করা বস্তার ওজন ২৮০ গ্রাম।

এ ছাড়া সরবরাহ করা বস্তাগুলোর বেশির ভাগ ব্যবহৃত স্টেনসিলযুক্ত। ওলটানো, ব্যবহৃত এসব বস্তায় বিভিন্ন মিলের নাম লেখা আছে। অভিযোগ, স্বল্প টাকায় এই বস্তা কিনে সরবরাহ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আমনুরা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেশমা ইয়াসমিন সোমবার বলেন, ‘মালগুলো সঠিক নয়।’ তিনি এ ব্যাপারে জেলা বস্তা গ্রহণ কমিটির আহ্বায়কের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

বস্তা সরবরাহের শেষ সময় ছিল ২৯ ডিসেম্বর। তবে এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ বস্তা সরবরাহ করেনি মেসার্স হারুন অ্যান্ড সন্স। নিম্নমানের বস্তা সরবরাহ এবং অবশিষ্ট পাঁচ লাখ বস্তা সরবরাহ না করার ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে হারুন অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারীর ছেলে ফয়সাল রশিদ পলক ঢাকার তাঁদের কার্যালয়ে গিয়ে কথা বলতে বলেন। একপর্যায়ে তিনি বলেন, তাঁরা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন। এ সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না।

বস্তা নিতে চাপ

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য বিভাগ প্রতি পিস বস্তা কিনছে ৫৩ টাকায়। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করছে পুরোনো বস্তা। ব্যবহৃত এই বস্তা ১৫ টাকায় কিনতে পাওয়া যায়। আবার ৩৩০ গ্রাম ওজনের বস্তার চেয়ে কম ওজনের ছোট বস্তা সরবরাহ করেও অনিয়ম করা হয়েছে। সূত্র বলছে, এরপরও খাদ্য অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা বস্তা গ্রহণে চাপ সৃষ্টি করছেন। তাই ত্রুটিপূর্ণ বস্তা নিয়ে তদন্ত হলেও কমিটি প্রতিবেদন দেয়নি। ফলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। সময় পেরিয়ে গেলেও অবশিষ্ট পাঁচ লাখ বস্তা আদায় করা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ বিভাগের পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘হারুন অ্যান্ড সন্স যদি বস্তা না দিয়ে থাকে, সেটা তার লোকসান। সরকারের কোনো ক্ষতি নেই। প্রতিষ্ঠানটি মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছে। আমরা জরিমানা করে মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছি। বস্তা না দিলে সে কালোতালিকাভুক্ত হবে। তার জামানতের ১৬ লাখ টাকা সে পাবে না।’

আমনুরায় নিম্নমানের বস্তা সরবরাহের ব্যাপারে জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সেখানে একটি তদন্ত কমিটি গেছে। তারা এখনো প্রতিবেদন পেশ করেনি। মহাপরিচালক স্যার বলছেন, প্রতিবেদন পাওয়ার আগে তো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। প্রতিবেদনের জন্য তাদের তাগাদা দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহে আগুন, আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার দুই আসামি। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার দুই আসামি। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার মামলায় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের কাশর এলাকা থেকে আশিকুর রহমান ও কাইয়ুমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশ ও র‍্যাবের অভিযানে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আশিকুর রহমান (২৫) ও কাইয়ুম (২৫)। এর আগে আরও ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. লিমন সরকার (১৯), মো. তারেক হোসেন (১৯), মো. মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিজুম উদ্দিন (২০), আলমগীর হোসেন (৩৮), মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬), মো. আজমল হাসান সগীর (২৬), মো. শাহিন মিয়া (১৯) ও মো. নাজমুল (২১)।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জেলা পুলিশের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

এর আগে গত শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় মামলা করার পর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপুকে গণপিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে তাঁর মরদেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাত আড়াইটার দিকে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। দুই বছর ধরে তিনি এই কোম্পানিতে কাজ করছিলেন।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। কেন ওই যুবককে পুলিশের হাতে না দিয়ে জনতার হাতে তুলে দেওয়া হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি 
আজ সকালে ভালুকা উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ভালুকা উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় একটি কারখানার শ্রমিককে বাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় পিএ নিট কম্পোজিট লিমিটেডের সামনে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, গাজীপুর এলাকা থেকে কারখানার নিজস্ব বাসে করে শ্রমিকেরা ভালুকায় আসার পথে সৌখিন পরিবহনের একটি বাস শ্রমিকবাহী বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের সঙ্গে সৌখিন পরিবহনের চালকের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে আমিনুল ইসলাম নামের এক শ্রমিক সৌখিন পরিবহনের বাসে উঠে চালকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটিতে জড়ান। পরে তাঁকে ওই বাসের মধ্যে আটক রেখে বাসটি ময়মনসিংহের দিকে চলে যায় বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকেরা।

এর প্রতিবাদে কারখানার শ্রমিকেরা প্রায় এক ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শ্রমিকেরা সৌখিন পরিবহনের কয়েকটি বাস আটকে রেখে অন্য যানবাহন ছেড়ে দেন।

ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘এক শ্রমিককে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে শ্রমিকেরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। সৌখিন পরিবহনের বাসগুলো আটকে রাখা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাতির আক্রমণ থেকে সুরক্ষায় কাপ্তাই বন বিভাগের সতর্কতামূলক কার্যক্রম

কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়কে সতর্কবার্তা লিখে দেওয়া হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়কে সতর্কবার্তা লিখে দেওয়া হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাঙামাটির কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কে বন্য হাতির চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্কতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে কাপ্তাই বন বিভাগ। সম্প্রতি ওই সড়কে বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণহানির ঘটনার পর এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ফেরার পথে বন্য হাতির আক্রমণে ঝর্ণা চাকমা ও সবিতা চাকমা নামে দুই নারী নিহত হন। এই ঘটনার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং সড়কটিতে হাতির চলাচল বাড়তে থাকে।

কাপ্তাই বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, বন বিভাগের পক্ষ থেকে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানে সোলার ফেন্সিং কার্যকর করা হয়েছে। পাশাপাশি সোলার ফেন্সিংয়ের আওতার বাইরে থাকা কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়কে জনসাধারণের নিরাপত্তার জন্য সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন ও সড়কে সতর্কবার্তা লিখে দেওয়া হয়েছে।

ওমর ফারুক স্বাধীন আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশনায় হাতি চলাচলের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ও রোডমার্কিং করা হয়েছে। একই সঙ্গে কাপ্তাই রেঞ্জের পক্ষ থেকে নিয়মিত টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের বন্য হাতির চলাচল সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে, যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে সূর্যের দেখা নেই, বাড়ছে শীতের তীব্রতা

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
সকালে রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা খুব কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকালে রাস্তাঘাটে মানুষের আনাগোনা খুব কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় গতকাল শনিবার থেকে আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশা না থাকলেও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে যাওয়া হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে।

তীব্র শীতের কারণে কাজে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শীতের প্রভাব পড়েছে হাটবাজারেও। অধিকাংশ বাজারে দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে সকাল ১০টার পর। পেটের তাগিদে অনেকেই ঘরের বাইরে বের হলেও কাজ না পেয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন। অপর দিকে শিশু ও বৃদ্ধরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

দৌলতপুর উপজেলায় নিজস্ব আবহাওয়া অফিস না থাকায় জেলার কুমারখালী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল থেকে শুরু হওয়া এই আবহাওয়া আরও এক দিন, অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে। মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হলেও তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকবে। রোববার কুষ্টিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনমজুর মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ঠান্ডা ও মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে আজ কাজে যেতে পারিনি। তা ছাড়া আমার ঠান্ডাজনিত রোগ আছে, তাই বাইরে বের হওয়াও কষ্টকর।’

উপজেলার মথুরাপুর বাজারের অটোরিকশাচালক মামুন হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে মানুষের আনাগোনা কম। অফিসগামী যাত্রী ছাড়া তেমন কেউ বাইরে বের হচ্ছে না। শীতের কারণে যাতায়াত কমে গেছে, আয়ও আগের তুলনায় অনেক কম।’

কুষ্টিয়ার কুমারখালী আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, ঘন কুয়াশা না থাকলেও মেঘাচ্ছন্ন আকাশের কারণে দু-এক দিন এমন আবহাওয়া থাকতে পারে। তবে দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিলতে পারে এবং মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়া আরও উন্নত হবে।

এদিকে শীতের প্রভাবে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ জ্বর, সর্দি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, শীত থেকে বাঁচতে সবাইকে গরম পোশাক পরতে এবং অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের সব সময় গরম পোশাকে রাখতে এবং গরম খাবার খাওয়াতে বলা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত