Ajker Patrika

রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা: শিক্ষার্থীদের থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা: শিক্ষার্থীদের থেকে তিনগুণ ভাড়া আদায়ের অভিযোগ 

রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ফটকে রিকশায় যেতে সময় লাগে সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট। কিলো তিনেক এ পথের ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার সময় এ পথে একবার যেতেই সময় লাগছে অন্তত দেড় ঘণ্টা। একবার গন্তব্যে যেতেই ছয়গুণ বেশি সময় লাগার কারণে ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে তিন থেকে চারগুণ বেশি। অনেকে আবার এর চেয়েও বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।

আজ সোমবার সকাল থেকে রাবিতে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এ দিন চার শিফটে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়। এই ইউনিটটিতে ১ হাজার ৫৯৪টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৫ হাজার ৮৫০ জন। এত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়েছেন আবার ফিরেছেন। তাই শহরজুড়েই দেখা দেয় যানজট।

রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নগরীজুড়ে ট্রাফিক জ্যামসরেজমিনে দেখা গেছে, ভর্তি পরীক্ষার প্রভাব পড়েছে পুরো শহরেই। নগরীর সাহেববাজার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়মুখী সব সড়কেই রিকশা-অটোরিকশার জট। এর মধ্যে নগরীর শিরোইল এলাকায় টার্মিনালের বাস সড়কে পার্কিং এবং ভদ্রা মোড়ে বাসে যাত্রী ওঠানামা করার কারণে এ দুই এলাকায় দুপাশে অসহনীয় যানজট লেগে থাকছে। শিরোইল ও ভদ্রা মোড় পার হতেই রিকশা-অটোরিকশার কমপক্ষে ৪০ মিনিট সময় লাগছে।

এরপর তালাইমারী মোড় থেকে গাড়ির চাকা যেন নড়েই না। তালাইমারী-অক্ট্রোয় মোড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ফটক পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার রাস্তা পেরোতেই আরও ৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগছে। সাহেববাজার কিংবা রেলগেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে অন্তত দেড় ঘণ্টা লাগছে অতিরিক্ত রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের চাপের কারণে।

অসহনীয় এই যানজটের কারণে প্রচুর রিকশা-অটোরিকশা ঢুকে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের রাস্তায়। নগরীর ভদ্রা মোড় হয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) পেছন দিক দিয়ে রাবির কৃষি অনুষদের সামনে দিয়ে চারুকলার দিকে গাড়িগুলো চলাচল করছে। কৃষি অনুষদ থেকে স্টেশন বাজার হয়েও গাড়ি চলাচল করছে। এই রাস্তাতেও যানজট দেখা গেছে।

রিকশাচালক মো. মারুফ জানান, সোমবার সকালে তিনি সাহেববাজার থেকে একবার রাবি ক্যাম্পাসে যান। সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। স্বাভাবিক সময়ে এই রাস্তায় সময় লাগে ১৫ মিনিট। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকার কারণে ভাড়া বৃদ্ধি করতে হয়েছে। ৪০ টাকার ভাড়া এখন তিনি নিচ্ছেন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। সময় বেশি লাগছে বলে ভাড়াও বেশি।

 রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নগরীজুড়ে ট্রাফিক জ্যামতবে অভিযোগ পাওয়া গেছে, কোনো কোনো রিকশা-অটোরিকশাচালক একেবারেই অস্বাভাবিকভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন ভর্তি–ইচ্ছুকদের কাছ থেকে। মাত্র কয়েক কিলোমিটারের পথের জন্য ২০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যাত্রীর চাপ ও যানজটের কারণে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলোতেও ১৫ টাকার ভাড়া এখন হয়ে গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

জামালপুর থেকে আসা ভর্তি পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম জানান, প্রথমবারের মতো তিনি রাজশাহী এসেছেন। রাজশাহী শহরের কিছুই চেনেন না। সাহেববাজার থেকে ক্যাম্পাসে যেতে রিকশায় তার কাছে নেওয়া হয়েছে ১৮০ টাকা। প্রথমে ভেবেছিলেন অনেক দূরের পথ। কিন্তু পরে দেখেন দূরত্ব বেশি না। তবে রাস্তায় তীব্র যানজটের কারণে সময় লেগেছে বেশি। সময়মতো পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছানোর তাগিদে তিনি বেশি টাকাতেই এসেছেন বলে জানান।

বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অটোরিকশা চালক মো. কালু বলেন, ‘আমরা ৫০০ টাকা জমায় গাড়ি চালাই। গাড়ি চলুক বা না চলুক মহাজনকে এই টাকা দিতেই হবে। এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থাকছি যানজটের কারণে। ভাড়া মারতে পারছি না। এখন ভাড়া বেশি না নিলে মহাজনকেও দিতে পারব না, নিজেরও কিছু থাকবে না। বাধ্য হয়েই বেশি নিচ্ছি।’

সড়কের যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেছে। তারপরও যানজট নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। হঠাৎ করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়েও কাউকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। সিটি করপোরেশন এই শহরের রিকশা-অটোরিকশার ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়। তবে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে সিটি করপোরেশন কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানালেন সিটি করপোরেশনের রিকশা-অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভাপতি সরিফুল ইসলাম বাবু।

রাবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নগরীজুড়ে ট্রাফিক জ্যামতিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই পরীক্ষার সময় বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টা ঘটে। সব রিকশা-অটোরিকশা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক চলাচল শুরু করার কারণে তীব্র যানজটও হয়। এই অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়। আমরা চেষ্টা করি। কিন্তু এটা ঠেকাতে পারি না। এবারও কয়েক দিন আগে আমরা বসেছিলাম। বলেছিলাম, পরীক্ষার্থীরা আমাদের মেহমান। তাদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া যাবে না। এতে রাজশাহীর সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। কিন্তু অতিরিক্ত টাকা ঠিকই নেওয়া হচ্ছে। আমরাও কিছু করতে পারছি না। এটাই বাস্তবতা।’

রাজশাহী ইজিবাইক চালক সমিতির সভাপতি মো. রাশেদ বলেন, ‘আমরা একতাবদ্ধ না। চালকদের একক কোনো সংগঠনও গড়ে ওঠেনি। কেউ কারও কথা শোনে না। ফলে যে যার মতো ভাড়া আদায় করে। আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘যারা পরীক্ষা দিতে আসছে তারা অতিথি। যানজটের জন্য একটু ক্ষতি হলেও দু-একদিনের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া ঠিক না। যারা বেশি নেয়, তাদের গাড়ি জব্দ করা উচিত। ট্রাফিক পুলিশই এ ব্যবস্থা নিতে পারে।’

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার অনির্বাণ চাকমাকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা চলবে। তিন হাজার ৯৩০টি আসনের বিপরীতে এবার পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা দেবেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪ জন পরীক্ষার্থী। তাদের অনেকের সঙ্গে অভিভাবকও রাজশাহী এসেছেন। বাড়তি মানুষের যাতায়াতের চাপে রাজশাহীতে দেখা দিয়েছে যানজট। প্রতিবছর পরীক্ষা চলাকালীন সময়টিতেই শহরে এমন যানজট থাকে। ভাড়া নিয়েও থাকে নৈরাজ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ নিহত ৩

গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রেললাইন দিয়ে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে নানি-নাতনিসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে টঙ্গী-ভৈরব রেলপথের আড়িখোলা রেলস্টেশনসংলগ্ন টেকপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নারীরা হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভার দেওয়ালেরটেক গ্রামের মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাদিয়া বেগম (২৪), একই এলাকার বাবু মিয়ার মেয়ে অনাদি আক্তার (১৩) এবং নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মরজাল এলাকার বাসিন্দা কমলা বেগম (৫৫)। নিহত কমলা বেগম ও অনাদি আক্তার সম্পর্কে নানি-নাতনি এবং সাদিয়া বেগম তাঁদের প্রতিবেশী ছিলেন।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আড়িখোলা রেলব্রিজ এলাকায় রেললাইনের ওপর দিয়ে তিনজন হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নোয়াখালীগামী ‘উপকূল এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি চলে আসে। এ সময় তাঁরা রেলব্রিজের ওপর থাকায় সেখান থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। পরে ট্রেনটি তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যায়। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই কমলা বেগম ও সাদিয়া বেগমের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় অনাদি আক্তারকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জিয়াউর রহমান জানান, অনাদি আক্তারকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল হক জানান, এটি রেলওয়ের আওতাধীন দুর্ঘটনা হওয়ায় রেলওয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

রেলওয়ে নরসিংদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল সম্পন্ন করেছি। নিহত নারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়নাতদন্তে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আরাকান আর্মিদের জন্য নেওয়া হচ্ছিল ১৫০০ মশারি, আটক ৫

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি  
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
মশারিসহ জব্দ করা মালপত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

বান্দরবানের থানচি উপজেলায় দুটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি নৌকার ইঞ্জিনের পাখা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় নৌকাগুলো তল্লাশি করে এসব জিনিস জব্দ করে বিজিবি। এসব মশারি ও ইঞ্জিনের পাখা বান্দরবানের থানচির বড় মদক সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির জন্য নেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবি। এ ঘটনায় নৌকা দুটি থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের থানচি থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন থোয়াই হ্লা চিং মারমা, উমং সাইং মারমা, হ্লাচিংথোয়াই মারমা, উক্যছাইন মারমা ও মো. ইউনুস।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিজিবি বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ানের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেনের জানান, নিজস্ব গোয়েন্দা সূত্রে তাঁরা জেনেছেন, দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওষুধ, কাপড়, জুতা, মোজা, মশারি, নৌকা ইঞ্জিনের পাখা ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ মিয়ানমারের আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করছে একটি সিন্ডিকেট চক্র। পাচারকারীদের ধরতে সীমান্তের বিজিবি চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

জাকির হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার তিন্দুমুখ বিজিবি চেকপোস্ট অতিক্রম করার সময় মালবাহী তিনটি ইঞ্জিন নৌকা দেখে বিজিবির সদস্যদের সন্দেহ হয়। এ সময় নৌকা থামাতে বললে একটি নৌকা দ্রুত চলে যায়। বাকি দুটি নৌকা তল্লাশি করে ১ হাজার ৫০০টি মশারি, ১২০টি ইঞ্জিন বোটসহ অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নলছিটি লঞ্চঘাট ওসমান হাদির নামে নামকরণ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
নলছিটি লঞ্চঘাট ।  ছবি: আজকের পত্রিকা
নলছিটি লঞ্চঘাট । ছবি: আজকের পত্রিকা

নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাট এখন থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামে পরিচিত হবে। জন্মস্থান ও শৈশবের স্মৃতিতে গাথা এই লঞ্চঘাট তাঁর নামের সঙ্গে চিরস্থায়ীভাবে যুক্ত হলো।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (২৫ ডিসেম্বর) জানান, শহীদ ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবনসংগ্রামের সঙ্গে লঞ্চঘাট এলাকার নিবিড় সম্পর্ক থাকার কারণে এটি তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে টার্মিনালের সংস্কার ও রঙের কাজ চলমান রয়েছে।

আগামী শনিবার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ঘাটটি পরিদর্শন করবেন বলেও জানান তিনি।

নলছিটি লঞ্চঘাট শহীদ ওসমান হাদির জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঘাট থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে তার পৈতৃক বাড়ি। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা এবং লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এই ঘাট ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী।

ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, ‘আমরা চাইছিলাম হাদির স্মরণে এমন কিছু হোক, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।’

ব্যবসায়ী শাহাদত আলম ফকির যোগ করেন, ‘এই ঘাটে আমরা হাদিকে ছোটবেলা থেকে দেখেছি। সে এখানকারই ছেলে ছিল। আজ তার নামে ঘাটের নামকরণ হওয়ায় আমরা গর্বিত।’

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, ‘হাদি এই এলাকার সন্তান। এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই তার স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। লঞ্চঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে, সে এখানেই চিরদিন বেঁচে থাকবে।’

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাঁকে প্রথমে ঢাকায় ভর্তি করা হয় এবং পরে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান ওসমান হাদি। পরবর্তীকালে তাঁর মরদেহ দেশে আনা হয় এবং সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে) সমাহিত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত