Ajker Patrika

‘বগুড়ায় ডাকঘরের ভল্ট কেটে টাকা লুট করেন শফিকুল একাই’

বগুড়া প্রতিনিধি
‘বগুড়ায় ডাকঘরের ভল্ট কেটে টাকা লুট করেন শফিকুল একাই’

‘ভারতীয় গরুর ব্যবসা এবং মৌসুমে আমের ব্যবসার আড়ালে টাকা লুট করেন তিনি। তবে কোনো বাসা বাড়ি থেকে নয়, টাকা লুট করেন ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে। আর এই কাজে সঙ্গে কাউকে নিতেন না। নিজেই পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করতেন।’

শফিকুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সম্পর্কে এসব তথ্য দিয়েছেন বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত শফিকুল ইসলাম নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার পশ্চিম করমডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে। গতকাল বুধবার রাতে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘শফিকুল গ্রেপ্তারের পর তাঁর হেফাজত থেকে একটি নোটবুক উদ্ধার করা হয়। সেখানে কোন মাসে, কোন জেলার, কোন প্রতিষ্ঠানের টাকা লুট করবে তাঁর তালিকা ছিল। সেই অনুযায়ী পরবর্তী টার্গেট ছিল বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর মন্দির। নোটবুকে লেখা রয়েছে ভবানীপুর মন্দিরের সিন্দুকে নগদ টাকা ছাড়াও বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না রয়েছে।’

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘গত ২৩ এপ্রিল (রোববার) রাতে বগুড়া প্রধান ডাকঘরের নৈশ প্রহরীর দায়িত্বে থাকা অফিস সহায়ক প্রশান্ত আচার্যকে খুন করে, ভল্ট কেটে ৮ লাখ টাকা লুট করেন শফিকুল একাই। ডাকঘরের টাকা লুটের জন্য গত ১২ মার্চ থেকে পরিকল্পনা করেন তিনি। বগুড়া ছাড়াও ঢাকা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁতেও একই কায়দায় এর আগে টাকা লুট করেছেন তিনি। এমনকি ভারতেও টাকা লুট করতে গিয়ে ধরা পরে এক বছরের কারা ভোগ করতে হয় শফিকুল। তাঁর নামে বিভিন্ন জেলায় টাকা লুটের ৯টি মামলা থাকলেও সহজে জামিন পেয়ে যান প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে একাই জড়িত থাকার জন্য। কারণ একাই টাকা লুট করায় প্রথমে ডাকাতি মামলা হলেও পরে তা চুরি মামলায় রূপান্তর হয়।’

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘বগুড়া প্রধান ডাকঘরের টাকা লুটের পর ভল্ট কাটার কাজে ব্যবহৃত শান মেশিন (কাটার) ও তার প্যাকেটসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ফেলে রেখে চলে যান। সেই শান মেশিনের প্যাকেটে থাকা কিউআর কোড ধরেই পুলিশ টাকা লুটের রহস্য উদ্ঘাটন করে।’

শফিকুল ইসলাম ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্থানীয় পাথারি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) ছিলেন। এবার ওই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ইচ্ছাও ছিল তাঁর। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া শফিকুলের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে ঢাকার বনানীতে জনতা ব্যাংকের ভল্ট কেটে টাকা লুটসহ ৯টি মামলা চলমান।

ডাকঘরের ভল্ট লুটের ঘটনার বর্ণনায় গ্রেপ্তারকৃত শফিকুলের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সুদীপ কুমার বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া শফিকুল খুবই চতুর ও সাহসী। গত ১২ মার্চ মোটরসাইকেল যোগে বগুড়ায় আসেন। বগুড়া শহরের সাতমাথায় প্রধান ডাকঘরের সামনে মোটরসাইকেল রেখে ডাকঘরে প্রবেশ করেন। এরপর ডাকঘরে ভোল্টের অবস্থান, সিসি ক্যামেরা, প্রবেশ ও বের হওয়ার ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ফিরে যান। এরপর ১৫ মার্চ পুনরায় মোটরসাইকেল যোগে বগুড়ায় পৌঁছে, সদর থানার পেছনে বিআরটিসি মার্কেট থেকে গ্রিল ও ভল্ট কাটার যন্ত্রপাতি কেনেন। এরপর ২০ এপ্রিল বাসযোগে রাত ১০টার দিকে বগুড়ায় পৌঁছে রাতভর ডাকঘরের আশপাশে ঘোরাঘুরি করেন। রাত ৩টার দিকে প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকেন। এরপর ডাকঘর চত্বরে গ্যারেজ ও মসজিদের কোনায় লুকিয়ে ছিলেন। সকাল ৬টার দিকে গার্ড কেচি গেট খুলে রেখে বাইরে প্রস্রাব করতে গেলে, শফিকুল ডাকঘরে প্রবেশ করে দোতলায় সিঁড়ি ঘরে লুকিয়ে থাকেন। এ সময় সঙ্গে নিয়ে যাওয়া শুকনা খাবার, সিগারেট ও পানি পান করেন। শুক্রবার দুপুরে গার্ড নামাজে গেলে শফিকুল সিঁড়ি ঘর থেকে নেমে গ্রিল কেটে ভল্টের রুমে প্রবেশ করেন। এই সময়ে সে সিসি টিভি ক্যামেরার লাইন কেটে দেওয়া এবং ভল্টের দরজার একাংশ কেটে ফেলার কাজ করেন। কিন্তু ভল্টের ভেতরে ঢুকতে পারে না। সন্ধ্যার পর গার্ড কেচি গেট খুলে রেখে ডাকঘর চত্বরে ঘোরাফেরা করার সুযোগে তিনি কৌশলে সেখান থেকে বের হয়ে বাড়ি যান।’ 

অর্থ লুটের কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামএসপি আরও বলেন, ‘ঈদের পরদিন রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাসযোগে বগুড়ায় পৌঁছে রাত ২টার দিকে ডাকঘরের উত্তর পাশের প্রাচীর টপকে ডাকঘর চত্বরে ঢোকেন। এরপর ডাকঘরের নিচতলার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢোকেন। শফিকুল ভল্টের দরজা পুরোটা খুলতে না পেরে একটি বড় রড ভল্টের কাটা অংশ দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে ভেতরে থাকা একটি কাঠের কেবিনেটে রাখা ১০০ টাকা ও ৫০ টাকার নোট (৮ লাখ টাকা) নিতে থাকেন। এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিস সহায়ক প্রশান্ত কুমার আচার্য্য (৪৩) ঘুম থেকে জেগে উঠলে শফিকুলের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে প্রশান্তের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করেন শফিকুল। পরে তাঁর একটি হাত বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। সকাল ৭টার দিকে মৃত প্রশান্তের প্যান্টের পকেট থেকে চাবি নিয়ে দরজা খুলে বের হয়ে যান শফিকুল।’

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পুলিশ ঘটনার সংবাদ পেয়ে ডাকঘরে গিয়ে যেসব আলামত উদ্ধার করে তার মধ্যেই ছিল কিউআর কোড সংবলিত শান মেশিনের প্যাকেট। এ ছাড়া ডাকঘরের সিসিটিভি ক্যামেরা অকেজো করার আগের কিছু চিত্র তাদের হাতে আসে। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত চালিয়ে শনাক্ত করা হয় আসামিকে। এরপর তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যাকাণ্ডসহ টাকা লুটের বিষয়টি স্বীকার করেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন-শুধু দেশেই নয়, ভারতে গিয়েও একাই টাকা লুট করতে গিয়ে ধরা পড়ে এক বছর কারা ভোগ করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষকের ঘরে ১২ ফুট লম্বা গাঁজার গাছ, আটক

বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের বিরামপুরে গাঁজার গাছসহ আটক ব্যক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় ১২ ফুট উচ্চতার একটি গাঁজার গাছসহ এক কৃষককে আটক করেছে পুলিশ। পরে আজ শুক্রবার তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

বিরামপুর থানার জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) সাজিদুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জোতবাণী ইউনিয়নের চাকুল গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় মৃত দছির উদ্দিনের ছেলে আজিজার রহমানের (৪৫) বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘর থেকে গাঁজার গাছটি জব্দ করা হয়।

পরে আজিজার রহমানকে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়, গাছটির উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট, ওজন ১০ কেজি এবং আনুমানিক মূল্য এক লাখ টাকা।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। আজ আসামিকে দিনাজপুর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিস্ফোরক মামলায় আওয়ামী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জেলে

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনোয়ার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনার চাটমোহরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে চাটমোহর থানার পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ও রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আজ শুক্রবার দুপুরে বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নবীর উদ্দিন মোল্লা (৭০) এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও পৌর সদরের মধ্য শালিখা মহল্লার বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন (৫৪)।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের বামনগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা নবীর উদ্দিন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া একই দিন রাতে মধ্য শালিখা মহল্লার নিজ বাড়ি থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই দুজনের বিরুদ্ধে চাটমোহর থানায় বিস্ফোরক মামলা রয়েছে। আজ সকালে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রামেকে মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মতো মানসিক রোগীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। হাসপাতালটির বহির্বিভাগে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানসিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে ভর্তি রাখার প্রয়োজন থাকলেও সেটি সম্ভব হতো না। কিছু কিছু রোগী রাখা হতো মেডিসিন বিভাগেই।

এবার প্রতিষ্ঠার ৬৭ বছর পর হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ মনোরোগ ওয়ার্ড চালু হলো। এ ওয়ার্ডে ২৫টি শয্যা আছে। এর মধ্যে পুরুষদের জন্য ১০টি, নারীদের জন্য সাতটি, শিশু-কিশোরদের জন্য পাঁচটি এবং উচ্চ পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি শয্যা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রোগীদের থেরাপি ও কাউন্সেলিং রুমসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করা হয়েছে এ ওয়ার্ডে।

রামেক হাসপাতালের সদ্যবিদায়ী পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদের উদ্যোগে হাসপাতালের পুরাতন আইসিইউ ভবনে এই ওয়ার্ড করা হয়েছে। গত বুধবার তিনি এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামসহ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী মার্চেই ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) থেকে একটি প্রতিনিধিদল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরিদর্শনে আসবে। তারা মনোরোগ বিভাগের ওয়ার্ড না পেলে কলেজের পয়েন্ট কমবে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের অ্যাক্রেডিটেশনেও সমস্যা হতে পারে। তখন এ কলেজের শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যাওয়ার সুযোগ কমবে। এ ছাড়া এফসিপিএস এবং ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্যও এই ওয়ার্ডটি জরুরি ছিল।

তাই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে এই ওয়ার্ড চালু করার জন্য হাসপাতাল পরিচালকের কাছে অনুরোধ করা হয়। সবকিছু শুনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ এই ওয়ার্ড চালুর উদ্যোগ নেন। ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মোস্তফা আলী।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এ হাসপাতালে যে ৬৭ বছরেও মানসিক রোগীদের জন্য ওয়ার্ড চালু হয়নি, এটিই অবাক করার বিষয়। প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি চালু করেছি। এখন থেকে এ অঞ্চলের মানসিক রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা নিতে পারবে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহাম্মদ রামেক হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি। এরপর তিনি হাসপাতাল ও রোগীদের কল্যাণে নতুন অনেক উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করেছেন। হাসপাতালকে করে তুলেছেন রোগীবান্ধব। বাড়িয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মান। বৃহস্পতিবার তিনি নতুন পরিচালক পি কে এম মাসুদ-উল-ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

মানসিক রোগীদের জন্য নতুন ওয়ার্ড চালুর আগে গেল ২৩ অক্টোবর শুধু সাপে কাটা রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করেন শামীম আহাম্মদ। এরপর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে একজন সাপে কাটা রোগীরও মৃত্যু হয়নি। আগে প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হতো এ হাসপাতালে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মান্নাকে ৩৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’

শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ২০
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ফাইল ছবি

আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা খেলাপি ঋণ পরিশোধে ‘কলব্যাক নোটিশ’ জারি করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, বগুড়া শাখা। গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এ নোটিশ ইস্যু করা হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করা হলে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে। ব্যাংকের নোটিশ অনুযায়ী, ২০১০ সালে ২২ কোটি টাকার বিনিয়োগ অনুমোদন করা হলেও মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বর্তমানে মোট বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। নোটিশে বলা হয়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজ একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও মান্না ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ পরিশোধ করেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের কোনো চেষ্টাও করেননি তিনি।

গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
গত বুধবার ইসলামী ব্যাংক, বগুড়া শাখার প্রধান মো. তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে এই নোটিশ ইস্যু করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া শাখাপ্রধান তৌহিদ রেজা স্বাক্ষরিত নোটিশে আরও বলা হয়, ‘মঞ্জুরিপত্রের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি ডিলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও আপনাকে/আপনাদেরকে মৌখিকভাবে, ব্যক্তিগতভাবে ও মোবাইল ফোনে বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও আপনি/আপনারা তা পরিশোধ করেননি। ইতিপূর্বে আপনাকে লিখিতভাবে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে, তবুও বিনিয়োগের দায় পরিশোধ করেননি। আপনার/আপনাদের লেনদেনের পরিস্থিতি দেখে আমাদের কাছে অনুমিত হচ্ছে যে, আপনার/আপনাদের সঙ্গে আমাদের আর ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অতএব, আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিনিয়োগের সমুদয় দায় ৩৮৪.৭৬ মিলিয়ন টাকা পরিশোধ করে হিসাবসমূহ নিষ্পত্তি করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকবে।’

এদিকে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। কিন্তু গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) তৃতীয় অধ্যায় (নির্বাচন) ১২(১)(ঠ) ধারা অনুসারে কোনো ঋণগ্রহীতা খেলাপি হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।

এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ আছে, এটা সঠিক। তবে চিঠির বিষয়ে এখনো কিছু জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত