Ajker Patrika

ময়মনসিংহের ১১ আসন: বিএনপির দ্বন্দ্বে সুবিধায় জামায়াত

  • ১১ আসনের ৯টিতে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।
  • ৯টির মধ্যে ৫টিতে বঞ্চিতদের অনুসারীদের বিক্ষোভ-অবরোধ।
  • জোটের জন্য একটি ছেড়ে দিয়ে বাকি ১০টিতে প্রচারে জামায়াত।
  • কোন্দল সত্ত্বেও বৃহৎ স্বার্থে সবাই দলের জন্য কাজ করবে, দাবি বিএনপির।
ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ  
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ০১
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জাকির হোসেন, মোতাহার হোসেন তালুকদার, মতিউর রহমান আকন্দ, কামরুল হাসান ও কামরুল আহসান। ছবি: সংগৃহীত
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, জাকির হোসেন, মোতাহার হোসেন তালুকদার, মতিউর রহমান আকন্দ, কামরুল হাসান ও কামরুল আহসান। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনের ৯টিতেই দলের প্রাথমিক মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। এগুলোর মধ্যে ৫টিতেই সরব মনোনয়নবঞ্চিতরা। দলীয় সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ, অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন বঞ্চিত ব্যক্তিদের অনুসারীরা। আরও একাধিক আসনে দলের মধ্যকার গ্রুপিংয়ে বিপাকে পড়তে পারে বিএনপি। অন্যদিকে জোটসঙ্গীদের জন্য একটি ছেড়ে দিয়ে জেলার বাকি ১০টি আসনে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। বিভিন্ন স্থানে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধের সুবিধা পেতে পারেন তাঁরা।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দলীয় কোন্দল থাকলেও বৃহৎ স্বার্থে সবাই এক হয়ে বিএনপিকে জেতাতে কাজ করবে। জামায়াত ধারে-কাছেও থাকবে না।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘৫ আগস্টের পর জামায়াতের জনপ্রিয়তা কয়েক গুণ বেড়েছে। কারণ, আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মানুষকে হয়রানি বা চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ নেই। ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যেই জনগণ দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেবে।’

ময়মনসিংহ-১

হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তবে এখানে বিএনপির তিনটি গ্রুপ সক্রিয়। প্রিন্সের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে এলাকায় বিশাল মিছিল করেছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সালমান ওমর রুবেলের অনুসারীরা। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলা আমির মাহফুজুর রহমান মুক্তা। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হতে পারেন মাওলানা তাজুল ইসলাম।

ময়মনসিংহ-২

এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তারাকান্দার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন তালুকদার। তবে তাঁর প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে নিয়মিত নানা কর্মসূচি পালন করছেন সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল বাসার আকন্দের অনুসারীরা। ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী আনোয়ার হাসান সুজন। ইসলামী আন্দোলন থেকে মুফতি গোলাম মাওলা ভুইয়া, খেলাফত মজলিস থেকে মতিউর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস থেকে মুফতি মোহাম্মদুল্লাহ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে আবু রায়হান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

ময়মনসিংহ-৩

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে এখানে আলোচনায় ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আহম্মেদ তায়েবুর রহমান হিরন। তবে গৌরীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে শেষ পর্যন্ত দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পান প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসাইন। প্রতিবাদে উপজেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ, অবরোধ ও ভাঙচুর করে হিরনের অনুসারীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিরনসহ পাঁচজনকে বহিষ্কার করা হলেও প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন হিরনের অনুসারীরা। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলা আমির মাওলানা বদরুজ্জামান। নেতা-কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তিনি।

ময়মনসিংহ-৪

ময়মনসিংহ মহানগর ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিকে এই অঞ্চলের রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হলেও পরে তা স্থগিত করা হয়। তবে এলাকায় আবু ওয়াহাব আকন্দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রোকনুজ্জামান সরকার এবং ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করছে তাঁদের অনুসারীরা। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর আমির কামরুল আহসান এমরুল নিয়মিত গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এনসিপি থেকে ডা. জাহেদুল করিম এবং আশিকিন রাজনের নাম শোনা যাচ্ছে।

ময়মনসিংহ-৫

মুক্তাগাছা উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই জাকির হোসেন বাবলু। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। এখানে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে।

ময়মনসিংহ-৬

কৃষিনির্ভর ফুলবাড়িয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী আকতারুল আলম ফারুক। তবে দলের বিবদমান তিন পক্ষের বৈরিতা তাঁর জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। এর সুবিধা পেতে পারেন জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী কামরুল হাসান মিলন।

ময়মনসিংহ-৭

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশাল উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর শাখার নায়েবে আমির আসাদুজ্জামান সোহেল।

ময়মনসিংহ-৮

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী আয়নাঘরের ভুক্তভোগী প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু। এই আসনে দলের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক এমপি শাহ নূরুল কবীর শাহীন। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলা আমির মঞ্জুরুল হক হাসান।

ময়মনসিংহ-৯

এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক ইয়াসের খান চৌধুরী। তবে নান্দাইল উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটিতে বিএনপি পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত। জামায়াত থেকে এখনো এখানে কাউকে সবুজসংকেত দেওয়া হয়নি। এখানে তাঁরা ইসলামি দলগুলোর জোট থেকে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চানকে সমর্থন দিতে পারেন।

ময়মনসিংহ-১০

গফরগাঁও উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে বিএনপির ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। তবে দল থেকে এখনো কাউকে সবুজসংকেত দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী দলের উপজেলা আমির ইসমাইল হোসেন।

ময়মনসিংহ-১১

শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত ভালুকা উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটিতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ফখরুদ্দীন আহম্মেদ বাচ্চু। তবে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে এলাকায় মশাল মিছিল করেছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ মুর্শেদ আলমের অনুসারীরা। জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী উপজেলার আমির সাইফ উল্লাহ পাঠান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাকচাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

জামালপুর প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জামালপুর পৌর এলাকার বেলটিয়ায় টাঙ্গাইল-জামালপুর মহাসড়কে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।  

নিহত ব্যক্তিরা হলেন জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের চর জালালের পাড়া গ্রামের শফিকুলের ছেলে বাবু ওরফে দিপু এবং জালাল উদ্দিনের ছেলে রাসেল হোসেন। আহত হয়েছেন একই এলাকার শ্যামল মিয়া। হতাহত তিনজনই চাচা-ভাতিজা।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাতে কেন্দুয়ার বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে জেলা শহরের যাচ্ছিলেন তিনজন। বেলটিয়া এলাকায় পৌঁছালে টাঙ্গাইলগামী একটি মরিচবোঝাই ট্রাক তাঁদের মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়। এতে সড়কে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনজন। তাঁদেরকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দিপু ও রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত শ্যামলকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জামাল উদ্দিন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে দুজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। একজন আহত ছিলেন। তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জামালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘লাশের ময়নাতদন্ত চলছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলমান। আমরা ট্রাকটি আটক করেছি, কিন্তু চালক পালিয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তরমুজ ‘বিপ্লবে’ সারসংকট

  • হিজলা ও মেহেদীগঞ্জে গত বছরের তুলনায় ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে এবার তরমুজের চাষ হচ্ছে।
  • লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি তরমুজের চাষ হওয়ায় সারসংকট দেখা দিয়েছে।
  • ডিলাররা বস্তাপ্রতি সারের দাম সাড়ে তিন শ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন।
  • পটুয়াখালী ও ভোলা থেকে মৌসুমি চাষিরা এসে এই সংকট সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ।
খান রফিক, বরিশাল 
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫৫
বরিশালের হিজলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়জালিয়া এলাকায় তরমুজ খেত। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশালের হিজলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়জালিয়া এলাকায় তরমুজ খেত। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত চরে রসালো ফল তরমুজ চাষে ‘বিপ্লব’ ঘটেছে। গত বছর উপজেলা দুটিতে ২০৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর তা সাড়ে তিন গুণ বেড়ে ৭০০ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এর ফলে দুই উপজেলায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সারের সংকট দেখা দিয়েছে। সুযোগ নিচ্ছেন সারের পরিবেশকেরা (ডিলার)। তাঁরা বিভিন্ন ধরনের সারের মূল্য বস্তাপ্রতি সাড়ে তিন শ টাকা পর্যন্ত বেশি নিচ্ছেন বলে কৃষকেরা অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি বাড়তি টাকা দিয়েও সময়মতো সার মিলছে না।

কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভিন্ন উপজেলা থেকে মৌসুমি চাষিরা এই দুই উপজেলায় ঢুকে ব্যাপক তরমুজ চাষ শুরু করায় কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সারের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।

হিজলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের তরমুজচাষি আলাউদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি গলাচিপা থেকে এসে তরমুজ চাষের জন্য চরের প্রায় ৩০ একর জমি ইজারা নিয়েছেন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী সার পাচ্ছেন না। তাঁর দরকার ১০০ বস্তা, অথচ স্থানীয় ডিলাররা দিচ্ছেন ১০ বস্তা। তার ওপর দামও বেশি।

আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রতি বস্তা ইউরিয়া ১ হাজার ৪০০ টাকা, টিএসপি ১ হাজার ৩৫০, ড্যাব ১ হাজার ৪০০ দরে কিনেছি; যা সরকার নির্ধারিত মূল্যের অনেক বেশি।’

আরেক তরমুজচাষি কেনান হোসেন বলেন, ‘হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ সীমান্তের বাউসিয়ার চরে ৩০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী থেকে এসে নতুন এ জমিতে চাষ করতে গিয়ে সারসংকটের মুখে পড়তে হয়েছে। প্রতি বস্তা ড্যাপ সার সরকারনির্ধারিত ১ হাজার ৫০ টাকার পরিবর্তে ১ হাজার ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। টিএসপি ১ হাজার ৩৫০ টাকার স্থলে ১ হাজার ৬৮০ এবং ইউরিয়া ১ হাজার ৩৫০ টাকার স্থলে ১ হাজার ৩৮০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমার ১০০ বস্তা সার লাগবে, কিন্তু ডিলার দিয়েছে ৫০ বস্তা। এখন তরমুজের চারা বড় হওয়ার সময়। পর্যাপ্ত সার না দিলে তরমুজের ফলন ভালো হবে না।’

জানা গেছে, জেলার হিজলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বড়জালিয়া, মেমানিয়া এবং মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুর, আলিমাবাদ, জাঙ্গালিয়া, চরগোপালপুর, দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়নে ব্যাপক তরমুজের চাষ শুরু হয়েছে।

জানতে চাইলে হিজলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহসানুল হাবিব আল জনি বলেন, ‘সরকারনির্ধারিত প্রতি বস্তা ইউরিয়ার খুচরা মূল্য ১ হাজার ৩৫০, টিএসপির বস্তা ১ হাজার ৩৫০, ড্যাপ ১ হাজার ৫০ টাকা। ডিলাররা কৃষকদের কাছ থেকে সারের মূল্য বেশি নিলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আহসানুল হাবিব আল জনি বলেন, ‘গত বছর হিজলায় মাত্র ৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছিল। কিন্তু এ বছর আবাদ হচ্ছে ২০০ হেক্টর জমিতে। এর কারণ হলো অন্য উপজেলা থেকে মৌসুমি চাষিরা এসে তরমুজ চাষ শুরু করেছেন।’

এদিকে মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুর ইউনিয়নের তরমুজচাষি সোহাগ জমাদ্দার বলেন, ‘এবার তিন একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। কিন্তু সারের দাম বেশি। চাহিদামতো পাওয়াও যাচ্ছে না।’

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর বসু বলেন, ‘গত বছর মেহেন্দীগঞ্জে ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছিল। এবার ৩০০ হেক্টর বেড়ে মোট ৫০০ হেক্টরে আবাদ হচ্ছে। এখানে ভোলা ও পটুয়াখালীর চাষিরা এসে তরমুজ চাষ করছেন। যে কারণে এ বছর চাহিদার চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টন সার বেশি লাগতে পারে। মৌসুমি চাষিরা যখন সার বেশি চান, তখন হয়তো ডিলার সেই সুযোগ নিচ্ছেন। তবু আমরা সারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে তদারকি করব।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশালের উপপরিচালক মোসাম্মৎ মরিয়ম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে নতুন নতুন এলাকায় এবার তরমুজ আবাদ হচ্ছে। এ জন্য আমরা অতিরিক্ত সার চেয়েছি। তবে ডিলাররা অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগ বুঝে বেশি টাকা নিচ্ছেন কি না জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মৎস্যজীবী পরিচয়ে পুকুর ইজারা যুবলীগ নেতার

  • জেলে থাকা যুবলীগ নেতার সমিতির নামে দুটি পুকুর ইজারা দেওয়া হয়।
  • একই সঙ্গে ওই নেতার ভাইয়ের সমিতিও পুকুর ইজারা পেয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫৮
মৎস্যজীবী পরিচয়ে পুকুর ইজারা যুবলীগ নেতার

রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ৮ মে কারাগারে যান রায়হান আলী। ছিলেন ৪ জুন পর্যন্ত। অথচ এই সময়ের মধ্যে তাঁর নামে খাসপুকুর ইজারা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি যাচাই-বাছাই ছাড়াই আবেদন মঞ্জুরও করেছে। তাঁর নামে ইজারা দেওয়া হয়েছে ৯ বিঘার দুটি পুকুর।

পুকুর ইজারা পাওয়া রায়হান আলী রাজশাহী জেলা যুবলীগের সহসম্পাদক। তাঁর বাবা গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস। অয়েজ উদ্দিন গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র ছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে তিনি পলাতক। তাঁর ছেলেকে সরকারি পুকুর ইজারা দেওয়ার ঘটনা জানাজানি হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

রায়হানের মামলা ও পুকুর ইজারাসংক্রান্ত নথিপত্রে দেখা গেছে, গোদাগাড়ী থানা পোড়ানোর মামলায় গত ৮ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন যুবলীগ নেতা রায়হান আলী। এ সময় আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান। এরপর ১৯ মে গোদাগাড়ী উপজেলার সরকারি খাসপুকুর ইজারা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

কারাগারে যাওয়া রায়হান আলী প্রকৃত মৎস্যচাষি না হয়েও আওয়ামী আমলে প্রভাব খাটিয়ে আশার আলো মৎস্যচাষি লিমিটেড নামের একটি সমবায় সমিতির নিবন্ধন নেন। হয়ে যান সমিতির সভাপতিও। তিনি জেলে যাওয়ার পর পুকুর ইজারার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে এ সমিতির নামে তিনটি পুকুর ইজারা নিতে আবেদন জমা দেওয়া হয়। আবেদনে স্বাক্ষরও ছিল রায়হান আলীর।

২৭ অক্টোবর উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটি রায়হানের আশার আলো সমিতির নামে দুটি পুকুর ইজারা দেয়। সমিতিটি মোহনপুর ইউনিয়নের ৫৬ নম্বর কোচারপাড়া মৌজার ১ নম্বর খাসখতিয়ানভুক্ত ২৪৯ নম্বর দাগের ১ দশমিক ৫৮ একরের একটি পুকুর এবং ৬৭ নম্বর আইহাই মৌজার ৫০০ নম্বর দাগের দেড় একরের আরেকটি পুকুর ইজারা পায়। আশার আলো ৭৯ নম্বর মিরপুর মৌজার ২৭২ নম্বর দাগের শূন্য দশমিক ৯৯ একরের আরেকটি পুকুর ইজারা চেয়েছিল। এ পুকুর ইজারা দেওয়া হয়েছে সারাংপুর মধ্যপাড়া মৎস্যচাষি সমিতির নামে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী একটি সমিতিকে দুটির বেশি পুকুর ইজারা দেওয়া যায় না। তাই মিরপুরের পুকুরটি সারাংপুর মধ্যপাড়া সমিতির নামে দেওয়া হয়েছে। পুকুর তিনটি পেয়েছে একই চক্র। সারাংপুর মধ্যপাড়া সমিতিরও সভাপতি যুবলীগ নেতা রায়হান আলীর বড় ভাই তাইনুস আলী। তিনিও প্রকৃত মৎস্যচাষি নন। তিনি গোদাগাড়ী সরকারি কলেজের একজন শিক্ষক।

এদিকে যুবলীগ নেতা রায়হান আলী ২ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এবং উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সদ্য যোগদান করা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুস সাদাত রত্নকে লিখিতভাবে জানান, তিনি পুকুর ইজারা গ্রহণের সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁর স্বাক্ষর জালিয়াতি করা হয়েছে। ইজারা বাতিলের আবেদনও জানান তিনি।

তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই তিন পুকুর হাতিয়ে নিয়েছে পৌর এলাকার সারেংপুর মহল্লার মাহফুজ বারীর সিন্ডিকেট। মাহফুজ বারীও প্রকৃত মৎস্যচাষি নন। পেশায় তিনি কাপড় ব্যবসায়ী।

যোগাযোগ করা হলে জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়টি আংশিক স্বীকার করে মাহফুজুল বারী বলেন, ‘আমি জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত কি না, সে বিষয়ে কিছু বলব না। ব্যস্ত আছি। পরে এ বিষয়ে আপনাকে ফোন দিয়ে জানাব।’ পরে আর ফোন দেননি তিনি।

ইউএনও ও উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নাজমুস সাদাত রত্ন বলেন, ‘এ ঘটনা আগের ইউএনওর সময়ের। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ নিতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টাঙ্গাইলের ৮টি আসন

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

  • বঞ্চিতদের চাপে কিছুটা ব্যাকফুটে বিএনপির প্রার্থীরা।
  • সমানতালে গ্রামগঞ্জে সভা-সমাবেশ করে চলেছেন তাঁরা।
  • ভোটারদের মন জয়ে কাজ করছেন জামায়াতের প্রার্থীরা।
  • ভোটের মাঠে বড় ফ্যাক্টর লতিফ সিদ্দিকী ও কাদের সিদ্দিকী।
আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের আটটি আসনের মধ্যে সাতটিতে গত ৩ নভেম্বর দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে বিএনপি। এর পর থেকেই মনোনয়নপ্রাপ্ত আর বঞ্চিতদের পাল্টাপাল্টি মিছিল-মিটিং, দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে। এতে বদলে যায় সেখানকার ভোটের পরিস্থিতি। সব শেষ গতকাল বৃহস্পতিবার বাকি থাকা টাঙ্গাইল-৫ আসনেও দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। এসব আসনে বিদ্রোহীদের চাপে যোগ-বিয়োগ মেলাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ভোটার থেকে শুরু করে দলীয় নেতা-কর্মীরা। মনোনীতরা ঐক্যের ডাক দিলেও বঞ্চিতরা মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে এখনো সরব রয়েছেন।

এদিকে জামায়াতে ইসলামী টাঙ্গাইলের ৮টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে নীরবে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল-৮ ও টাঙ্গাইল-৪ আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ও তাঁর বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী ভোটের মাঠে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আটটি আসনে এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গণঅধিকার পরিষদ তিনটি এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ও গণসংহতি আন্দোলন ২টি করে আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নির্বাচনী জোটের হিসাবে প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন বলে জানিয়েছেন নেতারা।

টাঙ্গাইল-১ আসনে বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে ফকির মাহবুব আনাম স্বপনকে। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠঘাট চষে বেড়ানোর পাশাপাশি মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ করে চলেছেন দিনরাত। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে স্বপন ফকিরের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁরা দুজনই বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য।

এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মোন্তাজ আলী সুশৃঙ্খল ও দলবদ্ধভাবে নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রার্থী সাইদুল ইসলাম আপন প্রচারাভিযানে রয়েছেন।

টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিএনপির সব নেতা-কর্মী তাঁর প্রতি আস্থা রেখে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই আসনে জামায়াতের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শাকিলউজ্জামান জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক নাসির। মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং এই আসনে তিনবারের সাবেক এমপি। তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা নাসিরকে বয়কটের ডাক দিয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। এ আসনে জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি হোসনি মোবারক বাবুল জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লা হায়দার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান মতিন। মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু। উভয়েই সমানতালে গ্রামগঞ্জে সভা-সমাবেশ করে চলেছেন। এই আসনে পাঁচবার নির্বাচিত এমপি ও সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করেছিলেন।

এই আসনে জামায়াতের মনোনয়ন পেয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও টাঙ্গাইল জেলা জামায়াতের নায়েব আমির খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মাঠ গোছাতে ব্যস্ত।

টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপি গতকাল বৃহস্পতিবার প্রার্থী ঘোষণা করে। এখানে দলীয় প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী অন্যরা হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, সাবেক সহসভাপতি ছাইদুল হক ছাদু, জেলা ছাত্রদল ও যুবদলের সাবেক সভাপতি আহমেদুল হক শাতিল। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী হয়েছেন জেলা জামায়াতের আমির আহসান হাবিব মাসুদ। তিনি ব্যাপকভাবে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন রবিউল আউয়াল লাভলু। টাঙ্গাইলের আটটি আসনের মধ্যে এই আসনেই বিএনপির সবচেয়ে বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ার পর তাঁদের সক্রিয় প্রতিক্রিয়া দেখা না গেলেও ২৯ নভেম্বর লাভলুর সমর্থকদের সঙ্গে মনোনয়নবঞ্চিত জুয়েল সরকারের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এই আসনে জামায়াতের মনোনয়ন পেয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ডা. এ কে এম আব্দুল হামিদ।

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিক। এই আসনে একাধিক ব্যক্তি বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত হলেও হাল ছাড়েননি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক-বিষয়ক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব। তিনি মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে দলের জেলা শাখার শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ তালুকদার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) ব্যাপক জটিল অঙ্কের আসন। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান। মনোনয়নবঞ্চিতরা স্বতন্ত্র প্রার্থী শিল্পপতি সালাউদ্দিন আলমগীর রাসেলের হয়ে কাজ করছেন। এরই মধ্যে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক খালেক মন্ডলের সঙ্গে কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন আযম খান। এই দ্বন্দ্ব এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে কয়েক শ নেতা-কর্মী বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন।

এই আসনে দুবারের সাবেক এমপি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী। তিনি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। বঙ্গবীর নির্বাচনে এলে নির্বাচনী হিসাব-নিকাশ নতুন করে সাজাবে বাসাইল-সখীপুরের বাসিন্দারা।

এই আসনে জামায়াতের মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির জেলা শাখার সহসাধারণ সম্পাদক ও বাসাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি দুই উপজেলাতেই প্রচার চালাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

লন্ডনে চিকিৎসা যাত্রায় খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ১৪ জন, তালিকায় ছয় চিকিৎসক ও দুই এসএসএফ

ভারতে পা রাখলেন পুতিন, নিয়ম ভেঙে ‘কোলাকুলি’ করলেন মোদি

ঢাকার তিনটিসহ আরও ২৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা বাকি থাকল

মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত